ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সম্মতি ছাড়া কোনও প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি, খোঁড়াখুঁড়ির শর্ত ভঙ্গ করে মহানগরীতে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিএমপি।
আজ বুধবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সই করা এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা মহানগরীর রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি করে বিভিন্ন কাজ দিনের পরিবর্তে রাতে সঠিকভাবে দ্রুত সম্পাদনে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, কিছু কিছু সংস্থা/ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিনের বেলা বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করে থাকে, যা পুনঃমেরামত করতে অনেক সময় ৭/৮ মাস লেগে যায়। প্রায় সবক্ষেত্রে যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা তৈরি না করেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়। সব খোঁড়াখুঁড়ির ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি জায়গা কর্তন করা হয়। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির সময় ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য দিক-নির্দেশনা সম্বলিত সাইনবোর্ড লাগানোর বিধান থাকলেও তা করা হয় না। এক লেনে খোঁড়াখুঁড়ি করে মাটি/আবর্জনা অন্য লেনে ফেলে রাখার ফলে দুই লেনের যান চলাচল ব্যাহত হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনেকক্ষেত্রে একইসঙ্গে রাস্তার উভয় পাশে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা হয়, ফলে রাস্তা উভয় দিক থেকে সরু হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে রাতে রাঙা খোঁড়াখুঁড়ি করলেও কাটা অংশ সঠিকভাবে ভরাট বা লোহার শিট না দেওয়ার ফলে দিনের বেলায় সে রাস্তায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। অনেকক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান/সংস্থা ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী (যেমন-ক্যাবল/পাইপ ইত্যাদি) সংগ্রহ করার আগেই রাস্তা খনন করে দীর্ঘদিন ফেলে রাখে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বা ডাইভারশনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয় না।
এসব কারণে ঢাকা মহানগরীর যানজট বৃদ্ধি পেয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি হয় এবং যানবাহন রাস্তায় অলসভাবে বসে থাকার ফলে শ্রমঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়। ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি/কাটাকাটির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা এবং ঠিকাদারকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ডিএমপি সদর দপ্তরের সম্মতি ছাড়া রাস্তা কাটাকাটি ও খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু না করা। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টার মধ্যে কোনো রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ না করা। এক্ষেত্রে রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করে সকালে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে।
রাস্তা কাটার আগে যেসব বিষয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে
১) কাজ শুরু এবং শেষ করার সময় (অর্থাৎ কোন তারিখে কাজ শুরু এবং শেষ হবে তা) পূর্বেই ঘোষণা করতে হবে এবং ওই সময়ের মধ্যে অবশ্যই কাজ শেষ করতে হবে।
২) রাস্তা খননের স্থান ও এর আগে-পরে ২০০ মিটার পর্যন্ত যথাযথ ট্রাফিক নির্দেশনা এবং ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট লাগাতে হবে।
৩) নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক জনবল অবশ্যই নিয়োগ করতে হবে।
৪) পথচারী এবং যানবাহন চলাচলের জন্য অবশ্যই বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) কাটা রাস্তা ব্যবহার উপযোগী করার জন্য লোহার শিট রাস্তা কাটার আগেই সেখানে আনতে হবে।
৬) রাস্তার একটা লেন রাতের বেলা কাটা যেতে পারে, তবে সেটা অবশ্যই সূর্যোদয়ের আগেই ব্যবহার উপযোগী করতে হবে।
৭) কোনো অবস্থাতেই একই রাস্তার উভয় পাশে একসঙ্গে খোঁড়াখুঁড়ি করা যাবে না।
৮) ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের প্রতিনিধিসহ রাতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করতে হবে।
৯) কোনো রাস্তা রাত্রিকালে সর্বোচ্চ ৭ দিন খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করা যাবে এবং পরবর্তী তিন রাতের মধ্যে মেরামত করে দিতে হবে, এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সংখ্যক শ্রমিক ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদারদের সহযোগিতা কামনা করছে। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি রাস্তা কাটাকাটি, খোঁড়াখুঁড়ির এসব শর্ত ভঙ্গ করে ঢাকা মহানগরী এলাকায় যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, তাহলে সংশ্লিষ্ট কাজ বন্ধ করাসহ ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে।
রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ ৪ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। গতকাল শুক্রবার রাতে গোয়েন্দা তথ্যে অভিযান চালিয়ে তাদের এই মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. নজরুল ইসলাম ওরফে সোহেল রানা (৩৪), মো. আল মামুন (৩২), মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ওমর ফারুক (৪৬) ও ফারুকের স্ত্রী তানিয়া (৩২)।
ডিএনসি বলছে, গ্রেপ্তাররা পেশাদার মাদক কারবারি চক্রের সদস্য। চক্রটি বায়িং হাউজ ও আবাসন ব্যবসার আড়ালে রমরমা মাদক ব্যবসা করে আসছিল। জব্দ করা মাদকের চালানটি রাজধানীতে এযাবৎ কালের জব্দ করা সবচেয়ে বড় চালান।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, প্রায় ৩ মাস আগে ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয় গোপন সংবাদে জানতে পারে একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র বায়িং হাউজ এবং আবাসন ব্যবসার আড়ালে টেকনাফ থেকে বিলাসবহুল গাড়ীতে ইয়াবার বড় বড় চালান ঢাকায় আনছে। পরে এসব ইয়াবা রাজধানীর শহরের বিভিন্ন অভিজাত এলাকায়সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারী মাদক ব্যবসায়ীদের সরবরাহ করছে। এমন তথ্যে ডিএনসি কর্মকর্তারা তখন থেকেই তাদের উপর কড়া নজরদারী করে আসছিল।
সর্বশেষ প্রায় এক সপ্তাহ আগে জানা যায়, চক্রটি আসন্ন ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঁচারের উদ্যোগ নিয়েছে। শুক্রবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের একটি টিম হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ১ লাখ ৬০ হাজার পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। এসময় একটি হুন্দাই প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫-৪৫৫০) জব্দ করা হয়।
অভিযানে প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তা ধাওয়া করে মাদক বহনকারী গাড়িটি আটক করা হয় জানিয়ে উপ পরিচালক আরও বলেন, আটকের পর তাদের গাড়ি তল্লাশি করে কিছু পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে গোয়েন্দাসূত্রে নিশ্চিত হয়ে প্রাইভেটকারের প্যানেলের ঝালাই করা অংশটি খুলে এই ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়েছে।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে শামীম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। মাদক কারবারিরা অর্জিত অর্থ দিয়ে বায়িং হাউজ ও আবাসন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। মাদক ব্যবসা থেকে অর্জিত অর্থ মানি লন্ডারিং করা হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান এই ডিএনসি কর্মকর্তা।
রাজধানীর মিরপুরে পল্লবী এলাকায় সেলিম (৩৫) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের দাবি, স্থানীয় মাদক কারবারিরা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
শুক্রবার সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে সেলিমকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত সেলিম এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর ১১ পল্লবীর বিহারী ক্যাম্প ওয়াপদা কলোনি বিল্ডিংয়ে থাকতেন।
স্থানীয়রা জানান, ইফতারের পরপরই ওয়াপদা বিল্ডিংয়ের পাশে মাঠে শত্রুতার জেরে সেলিমকে কুপিয়ে ফেলে রাখে। পরে তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায়।
হাসপাতালে নিহতের আত্মীয় আশিকুর রহমান ও খালা ইয়াসমিন দাবি করেন, স্থানীয় মাদক কারবারি পারভিন, রনি, জনি, সীমা ও রানীসহ আরও বেশ কয়েকজন শত্রুতার জেরে সেলিমকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
রাজধানীতে খিলগাঁও, মুগদা ও হাতিরঝিল এলাকায় পৃথক ঘটনায় ৪ কিশোরীসহ ৫ জনকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তির করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে তাদের ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়ক ডা. সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ঢাকার পৃথক এলাকা থেকে ৫ ভুক্তভোগীকে ওসিসিতে ভর্তি করার জন্য নিয়ে আসে পুলিশ। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদের ফরেনসিক পরীক্ষা আগামীকাল শনিবার করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চার কিশোরীসহ ৫ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর কয়েকটি থানায় পৃথক মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে মুগদা থানায় তিন কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা হয়। পুলিশ বলছে, ভুক্তভোগী তিন কিশোরীর বয়স যথাক্রমে- ১২, ১৩ ও ১৫ বছর।
এ বিষয়ে মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আল আমিন জানান, গত বুধবার (১৯ মার্চ) ইফতারের পর ১২ বছরের কিশোরীকে জব্বার নামে এক প্রতিবেশী বাসায় একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করে। পরে অভিযুক্ত জব্বারকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই এলাকায় গত মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ১৩ বছরের অন্য এক কিশোরীকে প্রতিবেশী পিন্টু চন্দ্র দাস ছাদে নিয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনার সময় কিশোরীর বাবা-মা বাসার বাইরে ছিলেন। এ ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত পিন্টু দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দুই জনকে আদালতে পাঠালে তারা দায় স্বীকার করেছেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া মুগদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ মার্চ ১৫ বছরের এক কিশোরী নিজ বাসায় ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় মামলার পর সিয়াম আহমেদ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস মাহমুদ জানান, বেশ কয়েকদিন আগে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণ করা হয়। এ রকম অভিযোগে গত বুধবার ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করে। মামলার পর ওই দিনই কিশোরীকে খিলগাঁও ত্রিমোহনী এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলিফকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত আলিফের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এর জেরে তারা দুজন গত মাসে পালিয়ে যায়। পরে কিশোরীর পরিবার অপহরণ মামলা করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাজু জানান, বুধবার ২২ বছরে এক তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় আসামিকে ধরার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। গ্রেপ্তারের স্বার্থে আসামির নাম জানানো যাচ্ছে না বলে জানান তিনি। মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি আরও জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি ওই তরুণীর পূর্ব পরিচিত। বিয়ের আশ্বাসে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিকে ধরতে চেষ্টা চলছে।
আসন্ন ঈদুল ফিতর উৎসবমুখর ও নিরাপদ পরিবেশে উদযাপন এবং ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। বুধবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখা থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, পুলিশকে সহায়তা দিতে ইতোমধ্যে অক্সিলারি পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পুলিশের পদক্ষেপের পাশাপাশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতাবোধ তৈরি করা গেলে, সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে ও অপরাধ দমনে অধিকতর সফল হওয়া সম্ভব।
ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে নগরবাসীকে অনুরোধ করা হয়েছে।
নিরাপত্তা নির্দেশনাগুলো হলো–
১.বাসাবাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, ব্যাংক-বিমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত রক্ষীদের ডিউটি জোরদার করতে হবে এবং যেকোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা নজরদারির ব্যবস্থা রাখতে হবে। সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা তদারক করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে একসঙ্গে ছুটি না দিয়ে একটি অংশকে দায়িত্বপালনে নিয়োজিত রাখা যেতে পারে।
২.বাসাবাড়ি ও প্রতিষ্ঠান ত্যাগের আগে দরজা-জানালা সঠিকভাবে তালাবদ্ধ করে যেতে হবে। প্রয়োজনে একাধিক তালা ব্যবহার করা যেতে পারে। দরজা-জানালা দুর্বল অবস্থায় থাকলে তা মেরামত করে যথাসম্ভব সুরক্ষিত করতে হবে।
৩.বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে এবং স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সচল থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
৪.বাসাবাড়ির মূল দরজায় অটোলক ও নিরাপত্তা অ্যালার্মযুক্ত তালা ব্যবহার করা যেতে পারে।
৫.রাতে বাসা ও প্রতিষ্ঠানের চারপাশ পর্যাপ্ত আলোকিত রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬.অর্থ, মূল্যবান সামগ্রী ও দলিল নিরাপদ স্থানে বা নিকট আত্মীয়ের হেফাজতে রেখে যেতে হবে। প্রয়োজনে ব্যাংক লকারের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
৭.বাসাবাড়ি ত্যাগের আগে যে সব প্রতিবেশী/পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসী ঢাকায় অবস্থান করবেন তাদের বাসার প্রতি লক্ষ্য রাখতে অনুরোধ করতে হবে এবং ফোনে তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে।
৮.ভাড়াটিয়াদের আগেই বাসার মালিককে ঈদ উপলক্ষে বাসা ত্যাগের বিষয়টি জানাতে হবে।
৯.অনুমতি ছাড়া কেউ যেন বাসা বা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে না পারে এ বিষয়ে বাসা বা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তাকর্মীকে সতর্ক করতে হবে ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে হবে।
১০.বাসাবাড়ি বা প্রতিষ্ঠান ত্যাগের আগে লাইট, ফ্যানসহ অন্যান্য ইলেকট্রিক লাইনের সুইচ, পানির ট্যাপ, গ্যাসের চুলা ইত্যাদি বন্ধ করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
১১.বাসা বা প্রতিষ্ঠানের গাড়ির গ্যারেজ সুরক্ষিত রাখতে হবে।
১২.বাসার জানালা-দরজার পাশে কোনও গাছ থাকলে অবাঞ্ছিত শাখা-প্রশাখা কেটে ফেলতে হবে যাতে অপরাধীরা গাছের শাখা-প্রশাখা ব্যবহার করে বাসায় প্রবেশ করতে না পারে।
১৩.মহল্লা বা বাড়ির সামনে সন্দেহজনক কাউকে ঘোরাফেরা করতে দেখলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও থানাকে জানাতে হবে।
১৪.ঈদে মহল্লা বা বাসায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে থাকলে বা ঘটার সম্ভাবনা থাকলে তা স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও জানাতে হবে।
জরুরী প্রয়োজনে পুলিশি সহায়তার জন্য ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৩২০-০৩৭৮৪৫; ০১৩২০-০৩৭৮৪৬, ২২৩৩৮১১৮৮, ০২৪৭১১৯৯৮৮, ০২৯৬১৯৯৯৯ এবং জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ যোগাযোগ করতে অনুরোধ জানিয়েছে ডিএমপি।
জননিরাপত্তা বিধান ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি। এছাড়া বিভিন্ন থানায় মামলা হয়েছে ৬৩টি।
মঙ্গলবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত ১২ টা থেকে সোমবার রাত ১২ টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের ৫০ থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭ টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। তার মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি টিম দায়িত্ব পালন করে।
টহল টিমগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল পেট্রোল টিম ৪৭৯টি, ফুট পেট্রোল টিম ৭৩টি ও হোন্ডা পেট্রোল টিম ১১৫টি। এছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি কর্তৃক ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়।
গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত মোট ১৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১০ জন ডাকাত, ১১ জন পেশাদার ছিনতাইকারী, তিনজন চাঁদাবাজ, আটজন চোর, ১২ জন মাদক কারবারি, ২৯ জন পরোয়ানাভূক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত অপরাধী।
অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার, একটি পিকআপ, পাঁচটি মোটর সাইকেল, পাচঁটি মোবাইল ফোন, আটটি চাকু, একটি চাপাতি, একটি বড় ছুরি, একটি লোহার রেঞ্জ, একটি লোহার রড, দুটি ককটেল সদৃশ বস্তু, একটি সিপিইউ, একটি মনিটর ও একটি প্রিন্টার উদ্ধার করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে দুই হাজার ১৩২ পিস ইয়াবা, ১৮ গ্রাম হেরোইন ও ২০০ গ্রাম গাঁজা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৫৪টি মামলা করা হয়। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
রাজধানীর ওয়ারী থেকে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি জাল নোট ও জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ একটি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওয়ারীর আর কে মিশন রোডের একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি-উত্তরা বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. সাইদুর রহমান (৩২) ও মো. মেহেদী হাসান (২৫)।
ডিবি জানায়, গোপন সংবাদে জানা যায়- আর, কে মিশন রোডের ৮ নম্বর গলির একটি ভবনের ৬ তলায় কয়েকজন জাল নোট ব্যবসায়ী দেশী-বিদেশী জাল নোট ও জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামসহ অবস্থান করছে। এমন সংবাদে ভবনটিতে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে একজন পালিয়ে যায়, তবে দুজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে ১০০০ ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের ৩৮ লাখ ৫২ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ৭৭ হাজার ১০০ ভারতীয় রুপির জাল নোট, একটি সিপিইউ, একটি মনিটর, প্রিন্টারের ৮টি অব্যবহৃত কালির কৌটা, ১০০ পিস ফয়েল পেপার (সিকিউরিটি ফিতা), দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে, তারা দীর্ঘদিন ধরে জাল নোট তৈরি করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করতো। আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে তারা বিপুল পরিমাণ জাল নোট তৈরি করে সরবরাহ করার জন্য রেখেছিলি।
রাজধানীর তেজগাঁও, মিরপুর ও উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টা করার সময় পাঁচ ছিনতাইকারীকে আটক করেছে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ। পুলিশ বলছে আটকরা পেশাদার ছিনতাইকারী।
তাদের কাছ থেকে নগদ এক লাখ দুইশত টাকা, তিন পুরিয়া হেরোইন, একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আটকরা হলেন- মো. সাজ্জাত হোসেন ওরফে সাগর (৪২), মো. ওয়াসিম আকরাম (৩৫), মো. সুমন (৩০), মো. সুলতান মাহমুদ খান (৪৫) ও মোহাম্মদ শান্ত (২৯)।
ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার তেজগাঁও সাতরাস্তা ক্রসিংয়ের উত্তর সিগন্যালের যাত্রী ছাউনির সামনে নিয়মিত ট্রাফিক দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক তেজগাঁও জোনের সার্জেন্ট মো. সোহরাব হোসাইন। বেলা আনুমানিক ১১টা ৪০ মিনিটে একটি বাসে যাত্রী ওঠার সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী একজন যাত্রীর টাকা ছিনতাই করে পালাচ্ছিল। ভুক্তভোগীর চিৎকারে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট মো. সোহরাব হোসাইনের বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হলে তিনি তাৎক্ষণিক উপস্থিত জনসাধারণের সহযোগিতায় ধাওয়া করে তিন ছিনতাইকারী সাজ্জাত হোসেন ওরফে সাগর, ওয়াসিম আকরাম ও সুমনকে আটক ও ছিনতাই হওয়া নগদ এক লাখ টাকা উদ্ধার করেন।
একই দিন রাজধানীর মিরপুর সাড়ে এগারো এলাকায় সেতারা টাওয়ারের সামনে দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক মিরপুর-জোনের সার্জেন্ট মো. রবিন রানা। দায়িত্ব পালনকালে রাত পৌনে ৯ টার দিকে একজন পথচারীর চিৎকার শুনে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে ছিনতাইকারী মো. সুলতান মাহমুদ খানকে ধাওয়া করে আটক করেন।
অন্যদিকে, ওই দিন রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় রাত সোয়া ১২ টার দিকে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে ছিনতাইকারী মোহাম্মদ শান্তকে জনসাধারণের সহযোগিতায় আটক করেন ট্রাফিক উত্তরা-পূর্ব জোনের সার্জেন্ট শাহাদাত হোসেন শান্ত। এ সময় তার হেফাজত থেকে তিন পুরিয়া হেরোইন, একটি স্ক্রু ড্রাইভার, নগদ দুইশত টাকা ও একটি ছিনতাইকৃত মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
আটকদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মাগুরায় নির্যাতনে মারা যাওয়া সেই শিশুসহ সব ধর্ষণের বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ ও ছাত্রনেতাদের নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে কাফন মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। মিছিল পূর্ববর্তী সমাবেশে সব রাজনৈতিক দল ও ছাত্রসংগঠনগুলোকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কারের কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে কাফন মিছিলটি ভিসি চত্বর ঘুরে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে সমাপ্ত হয়। মিছিলে বেশ কয়েকজনকে কাফনের কাপড় মুড়িয়ে ও কয়েকজনের শরীরে কাফনের কাপড় পেঁচিয়ে থাকতে দেখা যায়।
এ সময় নেতা-কর্মীরা- ‘ধর্ষকের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও পুড়িয়ে দাও’; ‘জাস্টিস জাস্টিস’; ‘দফা এক দাবি এক, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
কাফন মিছিলের পূর্বে ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, ৫ আগস্টের পর গত ৬ মাসে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক হয়নি। মাগুরার পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্ষণ হয়েছে। এমনকি ঢাবিতেও নারী শিক্ষার্থীর ওপর নিপীড়ন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে প্রধান উপদেষ্টার কাছে যেতে চাইলে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। ঢাবিতে সেদিন রাতভর মব তৈরি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা রাস্তায় হাঁটার সময় নিরাপত্তা পাচ্ছি না। নারী বন্ধুদের জন্য ভীতির পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে চলছে। হাসিনার আমলে দেখতাম, মন্ত্রী বা অন্যরা ব্যর্থ হলে জনগণ তাদের পদত্যাগ চাইলেও সেটা সম্ভব হতো না। এখন জনগণের সরকার ক্ষমতায়, তবুও জনগণ চাওয়ার পরেও ব্যর্থ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না। আমরা এই ব্যর্থ উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি। আমি বলব তাকে জনগণের সামনে জবাব দিতে হবে। অন্যথায় বোঝা যাবে তিনি জুলাইকে ধারণ করেন না।
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিশ লাখ টাকার জাল নোট ও জাল নোট তৈরির সরঞ্জামসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও জালনোট নোট তৈরির জন্য ব্যবহৃত উন্নতমানের প্রিন্টার, স্ক্যানার, কাগজ ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশ বলছে, ঈদের বাজারকে টার্গেট করে এই টাকা বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা ছিল চক্রের সদস্যদের।
এ বিষয়ে আগামীকাল শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে গণমাধ্যমকে এক বার্তা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করবেন লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসিম উদ্দিন।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চক্রটি জাল নোট তৈরি ও বাজারে সরবরাহ করে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাদের অবস্থান শনাক্ত করে এবং বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আওয়ামী লীগের নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ মামলার আসামীকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া আসামীর নাম- গোলাম মোস্তফা। তিনি জাহাঙ্গীর কবির নানকের অন্যতম সহযোগী। তার নামে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫ টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো হলো- মোহাম্মদপুর থানার মামলা নম্বর-৬৯, রামপুরা থানার মামলা নম্বর-১৮, বাড্ডা থানার মামলা নম্বর-১৬, ক্যান্টমেন্ট থানার মামলা নম্বর-১৬ ও চকবাজার থানার মামলা নম্বর-৫৬।
পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, জানুয়ারীর ১৪ তারিখ ৫ মামলার আসামী ও আওয়ামীলীগের সাংসদ জাহাঙ্গীর কবির নানকে সহযোগী গোলাম মোস্তফা ও হাফিজুর রহমান লিকুর অন্যতম ক্যাশিয়ার এবং বৈষম্যবিরোধী একাধিক মামলার আসামী আনিসুর রহমান সোহাগ রাত ১০ টায় মোহাম্মদপুর থানায় প্রবেশ করে ওসি আলি ইফতেখার হাসানের সঙ্গে মিটিং করেন। ওসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর থেকে তারা মামলার আসামী হয়েও এলাকায় নিয়মিত ঘুরে বেড়ান। গতকাল বুধবার এদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেও ওসির নির্দেশে তাকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছে ওসির অধস্তন অফিসাররা।
সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল ১১ টায় লালমাটিয়া এলাকার বি ব্লকের ৭ নম্বর রোডের ওপর সকাল ১১টায় মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫ মামলার আসামী গোলাম মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করতে যায়। তাকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পড়ানোর পর আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামীকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আসামী ছিনিয়ে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। এছাড়াও, আসামীকে গ্রেপ্তারের পর আসামী মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে ফোন করেন। এ সময় ওসি আসামীকে ধরতে যাওয়া অফিসারদের ফোন করে আসামীকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে নির্দেশ দেন। আসামীকে কেন ধরতে গেছে এমন ধমক দিয়ে অফিসারদের তিনি শাসন করেন।
প্রতক্ষ্যদর্শী শরীফুল জানান, সকাল ১১ টায় বেশ কয়েকজন অফিসারসহ পুলিশের একটি টিম রাস্তা থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় আশপাশে থাকা ৮-১০ জন সিকিউরিটি গার্ড ও আশপাশে কয়েকজন এসে পুলিশের ওপর আতর্কিত হামলা করে। তাদের ওপর হামলার পরও তারা ওই লোককে হাতকড়া পরায়। তখন পুলিশ দেখলাম ফোনে কার সাথে কথা বলার পর তার হাতকড়া খুলে দিয়েছে। পরে পুলিশের কাছ থেকে জানতে পারলাম, ওই লোকের নামে বৈষম্যবিরোধে আন্দোলনের একাধিক মামলা আছে। মনে হয়েছে সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয় কয়েকজন মিলে পুলিশকে মেরে ফেলবে। এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন তারা।
পুলিশের ওপর হামলায় অংশ নেওয়া সিকিউরিটি গার্ড দেলোয়ার জানান, সকাল ১১ টার দিকে এভোরেজ স্কুলের মালিক আমাদের স্যার গোলাম মোস্তফা স্কুল থেকে বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে গাড়িতে উঠছিল। এ সময় পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করতে চেয়েছিল। ওই সময় তার এক হাতে হাতকড়াও লাগায়। সাথে সাথে আমরা যারা ছিলাম সবাই পুলিশকে ঘেরাও করে ধরে তাকে ভিতরে নিয়ে যাই। ওই সময় পুলিশের সাথে আমাদের লোকজনের ধাক্কাধাক্কি হয়। তখন মোবাইল ফোনে আমাদের কর্তৃপক্ষ থানার ওসিকে বিষয়টি জানালে পুলিশ তার হাতকড়া খুলে দিয়ে চলে যায়। এ সময় দেলোয়ারের সাথে যুক্ত হয় আরও দুই সিকিউরিটি গার্ড হাফিজ ও রেজা। তারা জানান, পুলিশের এতো বড় সাহস কোন কিছু ছাড়া আমাদের সামনে থেকে আমাদের স্যারকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাবে। গ্রেপ্তার করতে আসছে দেখে আমরা সবাই পুলিশকে উল্টা আটক করেছি। তাদেরকে ওই সময় ওয়ারেন্ট দেখাতে বলেছি। তারা মোবাইলে কাগজ দেখায়। কোন কাগজপত্র সাথে নিয়ে আসে নাই।
এ ঘটনায় তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা জানান, সকালের দিকে মোহাম্মদপুর থানার একটি টিম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ৫ মামলার আসামীকে গ্রেপ্তার করতে লালমাটিয়া এলাকায় যায়। আসামী গ্রেপ্তার করার বিষয়টি আমি অবগত। কিন্তু আসামী গ্রেপ্তারের সময় ওই আসামীর লোকজন মব সৃষ্টি করে আমাদের পুলিশের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ আসামীকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে বাধ্য হয়। বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। আমরা খুব শিগগিরই আসামীর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, আমার কাছে এমন কোনো তথ্য নেই। যতটুকু জানি থানা পুলিশ আসামি থাকার তথ্য পেয়ে গিয়েছিল কিন্তু তাকে পায়নি। আসামীকে ছেড়ে দেওয়া বা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার বিষয়ে আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি। তদন্ত করে দেখছি বিষয়টা।
জননিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে রাজধানীতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপি।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে ১৪ জন ডাকাত, ১২ জন পেশাদার সক্রিয় ছিনতাইকারী, তিন জন চাঁদাবাজ, ১২ জন চোর, ৯ জন মাদক কারবারি, ৩১ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত অপরাধী। এসময় রাজধানীর বিভিন্ন থানায় মামলা দায়ের হয়েছে ৫৫টি।
আজ বুধবার ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রের বরাতে তিনি জানান, গত সোমবার রাত ১২টা থেকে মঙ্গলবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫০টি থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। এরমধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি টিম দায়িত্ব পালন করে। টহল টিমগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল পেট্রোল টিম ৪৭৯টি, ফুট পেট্রোল টিম ৭৩টি ও হোন্ডা পেট্রোল টিম ১১৫টি। এছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি কর্তৃক ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়।
পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ স্থানে দুই পালায় সিটিটিসির ১৪টি, তিন পালায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটেন (এটিইউ) ১২টি এবং ডিএমপির সঙ্গে রাতে র্যাবের ১০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। এছাড়াও ডিএমপির সঙ্গে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন কর্তৃক ২০টি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়।
ডিসি জানান এসময় মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত মোট ১৯৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের মধ্যে রয়েছে ১৪ জন ডাকাত, ১২ জন পেশাদার সক্রিয় ছিনতাইকারী, তিন জন চাঁদাবাজ, ১২ জন চোর, ৯ জন মাদক কারবারি, ৩১ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত অপরাধী।
অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত সাতটি চাপাতি, ছয়টি চাকু, একটি চায়নিজ কুড়াল, একটি রামদা, একটি দা, দুটি ডিক স্টপার, তিনটি মোবাইলফোন, একটি ব্লুটুথ, পাঁচটি বাল্ব, ১০টি লোহার নাট, একটি প্লায়ার্স, একটি সেলাই রেঞ্জ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ১১৬ পিস ইয়াবা, দুই গ্রাম হেরোইন ও এক কেজি ৫২৫ গ্রাম গাঁজা। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৫৫টি মামলা দায়ের করা হয়।
হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়াকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দম্পতি নাজিম হোসেন (২১) ও রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি (২৩) দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ বুধবার তাদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসময় তারা ঘটনার দায় স্বীকার করে সেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উত্তরখান থানার এসআই জাহিদুল হাসান। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আলমের আদালতে আসামি নাজিম হোসেন ও ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জেরিফার জেরিনের আদালতে আসামি রুপা বেগম ওরফে জান্নাতি স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ১১ মার্চ ফরিদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে দম্পতিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি চাবির রিং ও একটি ব্যাংকের ভিসা কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গত ১০ মার্চ রাত ২টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে হাবীবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ভূঁইয়া উত্তরখান থানার পুরানপাড়া বাতান এলাকার একটি ছয়তলা ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে খুন হন। এ খুনের ঘটনায় তার ছোট ভাই মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ভূঁইয়া বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় ১১ মার্চ মামলা করেন।