রাজধানীর শান্তিনগরের বেইলি রোডে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার নামে একটি শপিং মলের বেজমেন্টে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটের সময় খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ৬ টা ৫৮ মিনিটের সময় ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পরে একে একে ৯টি ইউনিট গিয়ে আগুন নেভাতে কাজ করে। ১ ঘন্টা পর ৭টা ৪৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আর আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা হয় রাত ৮টা ৩৮ মিনিটের দিকে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এ ঘটনায় ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও ২ জন শিশু। তবে আগুন লাগার এ ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা মো. শাহজাহান সিকদার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও ২ জন শিশু রয়েছে।
এর আগে তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে আমাদের কাছে সংবাদ আসে শান্তিনগরের একটি রেস্টুরেন্টে আগুন লেগেছে। তবে রেস্টুরেন্টে নয় বেইলি রোডে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার শপিং মলের বেজমেন্টে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। ভবনটি বহুতল, নিচতলায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রচণ্ড ধোঁয়ার কারণে ভবনের ছাদে অনেকে আটকা পড়েছেন।
সন্ধ্যা ৭টা ৫২ মিনিটের মধ্যে আটকে থাকা সাতজনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর তিনি জানান, এ ঘটনায় মোট ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও ২ জন শিশু রয়েছে।
আগুন লাগার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ভিডিওতে দেখা যায়, তীব্র কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে গেছে। লোকজন ছোটাছুটি করছেন।
ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার নামের ওই বহুতল ভবনের বিভিন্ন তলায় রেস্টুরেন্ট, পোশাক, প্রসাধনীসহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান রয়েছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ নামক বহুতল ভবনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক ও তার পরিবারের পাঁচজনসহ ৪৬ মারা গেছেন। কিছুদিন পরই সৈয়দ মোবারকের ইটালি যাওয়ার কথা ছিল। ওই দিন রাত ৮টার দিকে মোবারক তার স্ত্রী স্বপ্না, মেয়ে সৈয়দা তাশফি, ছেলে সৈয়দা নূর ও সৈয়দ আব্দুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে ‘কাচ্চি ভাই’রেস্টুরেন্টে খাওয়ার জন্য যান। ভবনটিতে বেশকিছু ফাস্টফুড ও রেস্টুরেন্ট ছিল। নিহতদের বেশিরভাগই ওখানে রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে আগুনের ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে বেশিরভাগ মারা যান।
ফায়র সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী-গত ২০২৪ সালে জানুয়ারিতে সারা দেশে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩৭২টি। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে হয়েছে ৩ হাজারটি। এর আগের বছর জানুয়ারিতে অগ্নিকাণ্ডের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৬৪৬টি। ফেব্রুয়ারিতে ছিল ২ হাজার ৭১৩টি।
২০২৩ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিদর্শন করা ৫৮টি মার্কেট, সুপার মার্কেট ও শপিংমলগুলোর অগ্নি ঝুঁকি সংক্রান্ত পরিসংখানে দেখা যায়, অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ৯টি, মাঝারী ঝুঁকিপূর্ণ ১৪টি ও ঝুঁকিপূর্ণ ৩৫টি। পরিদর্শন করা ভবনগুলোর মধ্যে ৬০ দশমিক ৩৪ শতাংশ ঝুঁকিপুর্ণ, অতি ঝুঁকিপূর্ণ ১৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অর্থাৎ মোট ঝুকি পুর্ণ স্থাপনা ৭৫ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং সন্তোষজনক ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ (১৪টি প্রতিষ্ঠান)।
অপরদিকে, একই বছর সারাদেশে ৫ হাজার ৩৭৪টি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এরমধ্যে ৩১ দশমিক ৫২ শতাংশ (১৬৯৪টি) ঝুঁকিপুর্ণ, ৭ দশমিক ৮৯ শতাংশ (৪২৪টি) অতি ঝুঁকিপুর্ণ প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ মোট ঝুকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ৩৯ দশকি ৪১। আর সন্তোষজনক প্রতিষ্ঠান ৫৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ (৩২৫৬টি)।
আগুন লাগার ঘটনায় বহুতল ভবনটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা না থাকার কথা জানা যায়।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা আরও জানান, আমাদের দেশ শিল্পায়নের দিকে যাচ্ছে। উন্নতমানের নান্দনিক সামগ্রী তৈরীসহ বিভিন্ন কাজে ক্যামিক্যাল এজেন্ট ব্যবহার বেশি হচ্ছে। এর ফলে অগ্নি ঝুঁকি বাড়ছে বলে জানা ফায়ার সার্ভসের কর্মকর্তারা। শীতকাল পার হওয়ার পর বসন্তে বৃষ্টির প্রবনতা শুরু হলেও প্রকৃতিতে একটা পরিবর্তন হয়। আবহাওয়া শুষ্ক হয়ে যায়, টেম্পারেচার (তাপমাত্রা) বাড়ে। গাছের পাতা ঝরে যায়, অনেক সময় জীবন্ত গাছও শুকিয়ে যায়। আর যেসব দাহ্য বস্তু রয়েছে সেসব আরও শুকিয়ে যায়।
শীতকালে আবহাওয়া ঠান্ডা থাকে। দাহ্য বস্তুর জ্বলে উঠার প্রবনতা ভেতরে থাকলেও বাইরে তেমন থাকে না। শীতের পর বৃষ্টি শুরু হলেও টেম্পারেচার বেড়ে যাওয়ায় দাহ্যবস্তু ভেতর থেকে শুকিয়ে থাকে এবং বাইরে টেম্পারেচার বেড়ে যাওয়ার ফলে দাহ্য বস্তুর জ্বলে উঠার প্রবনতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৬ মে) ঢাকায় এলে তাকে পথে পথে অভ্যর্থনা জানাবেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাবেন। এতে বিপুল জনসমাগক হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এসব এলাকায় যানজট হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। রবিবার (৫ মে) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর ক্ষেত্রে বিএনপি ও এর বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে কারা কোথায় অবস্থান নেবেন, তারা কী করতে পারবেন, কী করতে পারবেন না, সে বিষয়ে কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন রিজভী।
বিএনপির এই নেতার নির্দেশনা অনুযায়ী, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি অবস্থান করবে বিমানবন্দর থেকে লো মেরিডিয়েন হোটেল পর্যন্ত। ছাত্রদল অবস্থান করবে লো মেরিডিয়েন হোটেল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত। যুবদল অবস্থান করবে খিলক্ষেত থেকে হোটেল র্যাডিসন পর্যন্ত। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি অবস্থান করবে হোটেল র্যাডিসন থেকে আর্মি স্টেডিয়াম পর্যন্ত।
স্বেচ্ছাসেবক দল অবস্থান করবে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে বনানী কবরস্থান পর্যন্ত। কৃষক দল অবস্থান করবে বনানী কবরস্থান থেকে কাকলী মোড় পর্যন্ত। শ্রমিক দল অবস্থান করবে কাকলী মোড় থেকে বনানীর শেরাটন হোটেল পর্যন্ত। ওলামা দল, তাঁতীদল, জাসাস, মৎস্যজীবী দল অবস্থান করবে শেরাটন হোটেল থেকে বনানী কাঁচাবাজার পর্যন্ত।
মুক্তিযোদ্ধা দলসহ সব পেশাজীবী সংগঠন অবস্থান করবে বনানী কাঁচাবাজার থেকে গুলশান-২ পর্যন্ত। মহিলা দল অবস্থান করবে গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা গুলশান-২ নম্বর গোলচত্বর থেকে গুলশান অ্যাভিনিউ রোড পর্যন্ত অবস্থান করবেন। আর বিভিন্ন জেলা থেকে আগত নেতা-কর্মীরা যার যার সুবিধামতো স্থানে অবস্থান নেবেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সব নেতা-কর্মী দলীয় পতাকা ও জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তার এক পাশে দাঁড়াবেন। বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেলে যাওয়া যাবে না। হেঁটে হেঁটেও যাওয়া যাবে না। এ ছাড়া বিমানবন্দর ও বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবনে কেউ প্রবেশ করতে পারবেন না।
এসব অঞ্চলে যানজট হলে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা; জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক গুলশান) মিজানুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন থেকে আগমন উপলক্ষে এয়ারপোর্ট থেকে গুলশান পর্যন্ত ব্যাপক গেদারিং হতে পারে। যদি হয়, তাহলে বিকল্প কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এ-সংক্রান্ত বৈঠক করা হয়েছে। যাতে যান চলাচল ব্যাহত না হয়, এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে যদি ব্যাহত হয়, তখন বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিকল্প ব্যবস্থা কি হতে পারে জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে একটি সিম্পোজিয়াম আয়োজন করছে বাংলাদেশি জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়া (বিজেআইএম)। এতে অংশ নেবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিক ও গবেষকরা। আগামী শনিবার (৩ মে) বিকাল ৩টায় ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকার অডিটরিয়ামে এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বিজেআইএমের আহ্বায়ক স্যাম জাহান ও সদস্য সচিব মোহাম্মদ আলী মাজেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ আফটার দ্য মনসুন আপরাইজিং : দ্য মিডিয়া ল্যান্ডস্ক্যাপ’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামটি তিনটি সেশনে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম সেশনে বিজেআইএম প্রতিষ্ঠার পর থেকে এর অর্জনের একটি সারসংক্ষেপ ও পরিকল্পনার রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে।
দ্বিতীয় সেশনে বিজেআইএমের একজন সদস্যের পরিচালনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে একটি উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। এতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, রাজনীতি, কূটনীতি, ভবিষ্যৎ, আমলাতন্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে যে কোনো প্রশ্ন করা যাবে।
তৃতীয় সেশনে দেশের নেতৃত্বস্থানীয় সাংবাদিক, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্টদের নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা হবে। এতে অংশ নেবেন- প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর প্রতিনিধি সেলিম সামাদ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন, ইরাবতী ইংরেজির প্রতিবেদক মুক্তাদির রশিদ, ডেইলি স্টারের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাইমা ইসলাম, বাংলাদেশ সরকার গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান গবেষক এম আবুল কালাম আজাদ ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ওমর ফারুক।
সিম্পোজিয়ামে সাংবাদিক, গবেষক, শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিকসহ সর্বসাধারণ মানুষের যে কেউ অংশ নিতে পারবে। তবে আসন সংখ্যা সীমিত হওয়ায় আগ্রহীদের দ্রুত নাম, বয়স, পেশা ও যোগাযোগ নম্বরসহ [email protected]এ প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে।
রাজধানীর খিলগাঁওয়ের দক্ষিণ বনশ্রী এলাকা থেকে অপহরণের পরদিন ভিকারুননিসা নূন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৩) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় অপহরণের অভিযোগে ওই ছাত্রীর বাড়ির চাকরিচ্যুত নিরাপত্তাকর্মী আবু হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এছাড়া অপহৃত ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না তা জানতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার ধলপুর থেকে অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণকারী আবু হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আজ শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাদী হাসান।
মামলার এজাহারের বরাতে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ওই স্কুলছাত্রী দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে। ওই বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন আবু হোসেন। মেয়েটি স্কুলে যাওয়া-আসার পথে তিনি নানারকম প্রলোভন দেখাতেন ও উত্ত্যক্ত করতেন। বাড়ির মালিককে বিষয়টি জানানো হলে তিনি নিরাপত্তাকর্মীকে চাকরিচ্যুত করেন। এরপরও আবু হোসেন মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করেননি। গত বুধবার বিকেলে মেয়েটি বাসার সামনের দোকানে গেলে সেখান থেকে তাকে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে অপহরণ করা হয়।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই স্কুলছাত্রীর বাবা মেয়েকে অপহরণের অভিযোগে খিলগাঁও থানায় মামলা করেন। মামলায় বাসার নিরাপত্তাকর্মীকে তিনি আসামি করেন। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে গত বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে যাত্রাবাড়ীর ধলপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত আবু হোসেনকে গ্রেপ্তার ও অপহৃত স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। ওই ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না তা জানতে প্রয়োজনীয় ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে ধর্ষণের প্রমাণ পেলে গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও আনা হবে। এছাড়া গ্রেপ্তার আবু হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেছেন, প্রধান সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধ করতে ডিএনসিসি ও ডিএমপি যৌথভাবে কাজ করছে। ঢাকা শহরের ভিতরে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে শিগগিরই অভিযান শুরু হবে।
তিনি জানান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ইতোমধ্যে অটোরিকশা তৈরির ওয়ার্কশপ ও চার্জিং স্টেশনের তালিকা করেছে। শিগগিরই রাতে অভিযান করে এগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুর পল্লবীতে রাস্তা, ফুটপাত ও নর্দমা নির্মাণকাজের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএনসিসির ৬, ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের আওতাধীন এলাকায় ৭টি প্যাকেজে মোট ২০ কিলোমিটার রাস্তা, ৩৪ কিলোমিটার নর্দমা ও ১৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।
মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘বিভিন্ন এলাকার বাড়ির মালিক সমিতিকে অনুরোধ করব আপনারা আপনাদের এলাকায় অবৈধ অটোরিকশা ঢুকতে দেবেন না। আপনাদের আবাসিক এলাকাগুলো যে পরিকল্পনা করে করা হয়েছে, সেই পরিকল্পনার বাহিরে কিছু করতে দেবেন না। আবাসিক এলাকায় কোনো বাণিজ্যিক কাজ করতে দেবেন না। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে আপনারা স্থানীয় কমিউনিটি সোচ্চার হলে অবৈধ অটোরিকশা, অবৈধ হকার বন্ধ করা সহজ হবে।’
নগরবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা বিভিন্ন হাউজিং কোম্পানি থেকে প্লট কেনার আগে মৌজা ম্যাপ চেক করে দেখবেন জলাধার কিনা। জলাধার হলে দয়া করে সেই প্লট কিনবেন না। জলাধার হলে পরবর্তী সময় সেই প্লট পেতে ঝামেলা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সবাই একসময় ভাবতেন পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় কোনোদিন পাকা রাস্তা হবে না। এই এলাকায় শুধু গোডাউন ভাড়া দেওয়া হতো একসময়। পরিকল্পিতভাবে মাঠের জায়গা রাখা হয়নি, কোনো গাছ লাগানো হয়নি। ইস্টার্ন হাউজিংয়ের ভিতর দিয়ে খাল ছিল। আমরা নাগরিক সমাজ আন্দোলন করেছি সেই খাল উদ্ধারের জন্য, মামলা পর্যন্ত করা হয়েছিল। ৭টি প্যাকেজের নির্মাণকাজ শেষ হলে এই এলাকার যোগাযোগব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন হবে এবং জলাবদ্ধতাও দূর হবে।’
প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়েছে। আজ শনিবার সন্ধ্যায় ডিএমটিসিএলের দায়িত্বশীল সূত্র গণমাধ্যমকে বিষয়টি জানিয়েছেন। জানা গেছে, ৬টা ৫৫ মিনিটে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
এর আগে বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে বিকেল ৫টার পর পর মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, মেট্রোরেলের ওভারহেড ক্যাটেনারিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে পুরো লাইনে থাকা ট্রেনগুলো আটকে যায়। ভোগান্তিতে পরেন যাত্রীরা। সে সময় যাত্রীরা সামাজিক মাধ্যমে তাদের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করেন।
যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মেট্রো রেল চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। আজ শনিবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে মেট্রো রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর ১১ নম্বর স্টেশনে দেখা যায়, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে টিকিট কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। সব যাত্রীকে ট্রেন থেকে নামিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন তারা।
স্টেশনের দায়িত্বরতরা জানান, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে মেট্রো রেল চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।
মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান করে মেট্রোরেল চলাচলের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
রাজধানী ঢাকার বাতাস দিন দিন বিষাক্ত হয়ে উঠছে, যা শিশু, বয়স্ক এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা মানুষের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ঢাকা এখন ১৪তম স্থানে আছে। যা শহরের পরিবেশগত সংকটের গভীরতা প্রকাশ করে।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ছিল ১২৬। এই মাত্রার বাতাসকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা শিশু, বয়স্ক এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন এমন মানুষের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
পাকিস্তানের লাহোর, ইরাকের বাগদাদ ও ভারতের দিল্লি ও যথাক্রমে ২৭৩, ২৩৯ ও ১৯৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে।1
বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুসারে, ঢাকার বাতাস সবসময়ই বিশ্বের সবচেয়ে অস্বাস্থ্যকর তালিকার উপরের দিকে থাকে। কখনও কখনও তা ঝুঁকিপূর্ণও হয়ে ওঠে।
যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেটা বেড়ে ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে চলে এলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। ৩০১ এর বেশি হলে ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।
একিউআই সূচক ৫টি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো- অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
২০২৩ সালে বাংলাদেশে পিএম ২.৫ মাইক্রোনের গড় ঘনত্ব ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বার্ষিক বায়ুমান নির্দেশনার চেয়ে ১৬ গুণ বেশি।
২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ুদূষণের ৩টি প্রধান উৎস হলো— ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দূষণে শহরটি ক্রমাগত বসবাসের অযোগ্য হলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সটি আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত কাজ করবে।
রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার তাদের গাইবান্ধা ও চট্টগ্রাম থেকে পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার করে র্যাব ও পুলিশ।
এর মধ্যে এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মো. মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গাইবান্ধা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩ এবং ৩ নম্বর আসামি মাহাথির হাসানকে (২০) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানা পুলিশ।
বিকেলে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সারওয়ার মাহাথির হাসানের গ্রেপ্তারের বিষয়িটি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
র্যাব-১৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে জনা যায়, পাভেজ হত্যা মামলার এজহারনামীয় ১ নম্বর আসামি মেহেরাজ ইসলাম গাইবান্ধায় অবস্থান করছে। পরে গতকাল বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গাইবান্ধা সদরের ভবানীপুর গ্রামে অভিযান চলানো হয়। অভিযানে এরশাদ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে মেহরাজ ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বনানী থানার ওসি মো. রাসেল সারওয়ার দৈনিক বাংলাকে বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যে পারভেজ হত্যা মামলার ৩ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মাহাথির হাসানের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে গতকাল সকালে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বনানী থানায় আনা হয়েছে।
এর আগে গত রোববার রাতে পারভেজ হত্যা মামলায় তিন আসামিকে রাজধানীর মহাখালী ও আশপাশের এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা হলেন- আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯)। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া গত সোমবার রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে হৃদয় মিয়াজি (২৩) নামে মামলার এজহারনামীয় আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব ১ ও র্যাব-১১ ব্যাটালিয়নের যৌথ দল। পরে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। সব মিলিয়ে পারভেজ হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে একটি দোকানে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। একই সময় পারভেজ তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাসছিলেন। ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীর অভিযোগ পারভেজ তাদের দেখে হাসছিলেন। তাদের মধ্যে একজন প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী পিয়াসের বান্ধবী। পরে বান্ধবীরা মুঠোফোনে খবর দিলে পিয়াস ও তার দুই বন্ধু মেহরাজ ও মাহথির এসে পারভেজের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়ান। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়।
একপর্যায়ে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসার করে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার পর পারভেজকে একদল যুবক ছুরিকাঘাত করে। তার বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পরদিন রোববার তার ভাই হুমায়ুন কবির প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতসহ আট জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত পরিচয় ২৫-৩০ জনের বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করেন।
বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজেএ) নামে বরাদ্দ দেওয়া ভবনের একাংশ অবৈধভাবে দখল ও ভাড়া দেওয়ার প্রতিবাদে
আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন করেছেন সংগঠনটির সদস্যরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারন সম্পাদক খুরশিদ আলম, সহ-সভাপতি রাশেদুল হক, কোষাধক্ষ্য আলমগীর হোসেন এবং বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে এম মহাসিন ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার এবং বিশিষ্ট আলোকচিত্র সাংবাদিক রফিকুর রহমানসহ বিপিজেএর সদস্যরা মানববন্ধন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিপিজেএ সভাপতি বলেছে, ‘ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের দোসর আফরোজা হক ও তাঁর বহিরাগত সহযোগী নিজামী গং বিপিজেএ–এর নামে সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দেওয়া বাড়ির একাংশ জোরপূর্বক দখলে রেখে অবৈধভাবে ভাড়া আদায় করছেন, এছাড়াও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা গত ২০ এপ্রিল রাতের আঁধারে উক্ত বাড়ির দ্বিতীয় তলায় হাতুড়ি দিয়ে ভবনের অবকাঠামো ভেঙে ভেঙে ফেলেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা জনাব আদিলুর রহমানের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের তৃতীয় তলায় বসবাসকারী আফরোজা হক ও তার বহিরাগত সহযোগী নিজামী গং দের নিয়ে অবৈধভাবে চতুর্থ তলা নির্মাণ করেন এবং ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া দেন, যা সরকারি বরাদ্দ আইনে পরিপন্থী। এ কারণে তৃতীয় তলার বসবাসকারী বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা ও বরাদ্দ বাতিলসহ উচ্ছেদের দাবি জানায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।
ইতিপূর্বেও আফরোজা হক ও তার বহিরাগত সহযোগী নিজামী গং ভবনে বিশাল আকৃতির শেখ মুজিবের ছবি সম্বলিত পোস্টারটা টানিয়ে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ যুবলীগ ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহায়তায় এ ভবন দখলের অপচেষ্টা চালায়। এখনো সেই ধারাবাহিকতায় এখনো অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি একটি রাজনৈতিক দলের ব্যানার টানিয়ে অবৈধভাবে ভবনের দ্বিতীয় তলা তাদের কাছে ভাড়া দিয়েছে। পরবর্তীতে গত বিশ এপ্রিল ২০২৫ ইং তারিখে রাতের আঁধারে দ্বিতীয় তালার অবকাঠামো হামার দিয়ে ভেঙে ফেলে। তখন নিচ তলায় অবস্থানরত ফটো সাংবাদিকরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে।
বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীর বাড্ডার নতুনবাজারে রামপুরা-কুড়িল সড়কের ওপরই এক পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা। এতে যান চলাচলের জায়গা সরু হয়ে যাওয়ায় সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এই আন্দোলন করেন পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এ ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বর্জ্যে ভরা ট্রাকগুলো সড়কের পাশে রাখা হয়েছে। সেগুলোর পাশেই ছড়িয়ে আছে ময়লার স্তূপ। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পোশাক পরিহিত কর্মীরা নিজ নিজ ভ্যান উল্টে সড়কের ওপর ময়লা ফেলে দিচ্ছেন।
বর্জ্যের কারণে সড়কে কিছু স্থান প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে গাড়িগুলোকে ধীরে ধীরে পাশ কাটিয়ে যেতে হচ্ছে, এতে যান চলাচলে মারাত্মকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে, সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। আর বর্জ্যের দুর্গন্ধে এই পথে চলাচল করা পথচারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক পরিচ্ছন্নতাকর্মী বলেন, বারবার বলার পরও আমাদের বেতন পরিশোধ করেনি সংশ্লিষ্টরা। শেষে দাবি আদায় করতে আমরা রাস্তায় ময়লা ফেলে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের আশ্বাস পেলেই আমরা সড়ক থেকে ময়লা তুলে সরিয়ে নেবো।
এ ঘটনায় ডিএনসিসির মুখপাত্র মকবুল হোসাইন বলেন, পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলন করছে, কিন্তু তাদের পাওনা সিটি কর্পোরেশনের কাছে নয়। তাদের দাবি তাদের পরিচালনা করা ঠিকাদার বা ইজারা যারা নিয়েছে তাদের কাছে। কেন তাদের বকেয়ে বেতন পরিশোধ করা হয়নি সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানানো হবে।
মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে রাজধানীর তেজগাঁও প্রধান সড়ক অবরোধ করে রেখে প্রতিবাদ করছেন কোহিনুর ক্যামিকেল কোম্পানির কারখানার শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরের পর থেকে সড়কটি বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
কারখানার কসমেটিকস বিভাগের বাবু নামে এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মহানবী হজরত মুহাম্মদকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রমিকরা প্রতিবাদ করেন।পরে তারা প্রধান সড়কে নেমে বিক্ষোভ ও অবরোধ করেন।
এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শতশত মানুষ। মহাখালী থেকে আসা যাওয়ার সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে।
শ্রমিকদের দাবি হচ্ছে, সেই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার পাশাপাশি তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে এসেছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছেন। বারবার তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো পরিস্থিতি শান্ত হয়নি।
তারা আরও বলেন, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ঠিক বিপরীত পাশে সড়কে কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানির অবস্থান। সেই কারখানাটির গেটের সামনে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করছেন। বিকেল ৪ টা ৫০ মিনিটে সেনাবাহিনীর একজন অফিসার এসে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, কারখানাটির কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন। সেই ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণের পাশাপাশি আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
এমন বিষয় জানানোর পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা কারখানাটির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোন ভাঙচুর বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মহাখালী জোনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (ট্রাফিক) দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাস্তা ব্লকের কারণে তেজগাঁও সাত রাস্তাসহ আশেপাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী এসব অভিযানে সন্ত্রাস বিরোধ আইনসহ বিভিন্ন অপরাধে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- অনিক (৩০), ইমরান (২৯), মারুফ (২৫), রাজু (১৯), সাক্কু (৪৮), মন্জু (২৪), রাসেল (৩৩), আব্দুল নুর (১৯), রাকিব (১৭), এনামুল হোসেন অনিক (২৮), নিলয় (২০) ও সাফিন (১৯)।
আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, গত শুক্রবার মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে সন্ত্রাস বিরোধ আইনে ৩ জন, চুরির মামলায় ৩ জন, মাদক মামলায় ৩ জন, নারী ও শিশু বিষয়ক মামলায় একজন ও ডিএমপি মামলায় ২ জন রয়েছেন।
গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।