টানা বৃষ্টি এবং আন্দোলন-অবরোধে রাজধানী ঢাকাবাসীর নগর জীবন বিষিয়ে উঠেছে। একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে যানবানবাহনের গতি কমে গিয়ে মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি ঢাকায় চলমান বিভিন্ন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধের কারণে যানজটের মাত্রা বেড়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
বেশ কিছুদিন ধরে তীব্র দাবদাহের পর গত কয়েক দিন থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ (বৃহস্পতিবার) সকালেও ঢাকায় বৃষ্টি নামে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এদিন সকালে ঢাকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে টানা মৌসুমি বর্ষণে ঢাকার অলিগলির পাশাপাশি প্রধান সড়কগুলোরও অনেকাংশ তলিয়ে যায়। কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের পর এই বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে এলেও ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এদিন সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে ধীর হয়ে গেছে যানবাহনের গতি।
এদিকে, বিভিন্ন দাবিতে ঢাকার কয়েকটি স্থানে আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রাজধানীর শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে দিনব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন।
একই সময়ে, সকাল ১০টা থেকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবন থেকে হাইকোর্ট এলাকা ও মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে তীব্র যানজট; সবকিছু মিলিয়ে নাকাল নগরবাসী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ও অফিসফেরত, পথচারী, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। অফিসকর্মীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। ছাতা থাকলেও ভারি বর্ষণের কারণে আধভেজা হয়ে অফিসের পথে রওনা দিতে হয় অনেককে।
এদিন ভারি বৃষ্টিপাতে নিউমার্কেট এলাকার সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা ও তীব্র যানযট সৃষ্টি হয়। এতে জনবহুল নিউমার্কেটের স্বাভাবিক ব্যবসা কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে আলী খান নামে নিউমার্কেট এলাকার এক হকার বলেন, ‘সকালে মাত্র দোকান খুলেছি, তার কিছু পরেই বৃষ্টি নামল। বৃষ্টি হলেই এই রাস্তায় পানি উঠে যায়, দোকানপাট খোলা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘গত ৪-৫ বছর ধরেই নিউমার্কেট এলাকার এই অবস্থা দেখে আসছি। সিটি করপোরেশন এই বিষয়ে অবশ্যই জানে, তারপরও তারা এ নিয়ে কোনো কাজ করে না। এ কারণে আমাদের কষ্টও আর ফুরায় না।’