ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৫০ হাজার ১২ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করেছেন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এই তথ্য অনুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত মোট ২ লাখ ৫০ হাজার ১২ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন। এই নিবন্ধনকারীদের মধ্যে ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৮১ জন পুরুষ ভোটার ও ২১ হাজার ২৩১ জন নারী ভোটার রয়েছেন।
দেশভিত্তিক নিবন্ধনের মধ্যে রয়েছে— সৌদি আরবে ৬৩ হাজার ৩৪ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ২০ হাজার ৪৯ জন, কাতারে ১৬ হাজার ৩২৬ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৪ হাজার ৮৬৩ জন, মালয়েশিয়ায় ১৩ হাজার ৭৪১ জন, সিঙ্গাপুরে ১৩ হাজার ১৬৫ জন, যুক্তরাজ্যে ১২ হাজার ১৪ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯ হাজার ৫৪৯ জন, কানাডায় ৯ হাজার ৫০১ জন, ওমানে ৯ হাজার ৪৫৩ জন, ইতালিতে ৮ হাজার ৩৯০ ও অস্ট্রেলিয়ায় ৮ হাজার ৩৭ জন।
৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঠিকানা সংশোধনের সময় বৃদ্ধি: প্রবাসী বাংলাদেশিদের পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে ঠিকানা সংশোধন করার জন্য ৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত রোববার ইসি থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এ সংক্রান্ত এক বার্তায় তথ্যটি জানানো হয়েছে।
আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের ‘টিম লিডার’ সালীম আহমাদ খান বাসসকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইসি থেকে এক বার্তায় বলা হয়েছে, প্রবাসীদের বিশেষ অনুরোধে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে ভুল কিংবা অসম্পূর্ন ঠিকানা সংশোধন করার সুযোগ বাংলাদেশ সময় ৯ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই তারিখের পর ঠিকানা সংশোধনের আর কোনো সুযোগ থাকবে না।
সরকারি চাকরিজীবীরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ও নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নিবন্ধন করতে পারবেন।
এ বিষয়ে ইসি বার্তায় বলা হয়েছে, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত ভোটার, নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবী এবং আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারগণ নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ-এর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারবেন।
এই বার্তায় আরও বলা হয়, বিস্তারিত জানতে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট (www.ecs.gov.bd)-তে ভিজিট করুন।’
প্রবাসীদের সঠিক ঠিকানা প্রদান করার আহ্বান: পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের সময় সঠিক ঠিকানা দেওয়ার জন্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এ বিষয়ে ইসি থেকে এক বার্তায় বলা হয়েছে, ‘পোস্টাল ব্যালট পেতে হলে, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে নিবন্ধনের সময় আপনার অবস্থানকালীন দেশের প্রচলিত নিয়মানুযায়ী সঠিক ঠিকানা প্রদান করুন। প্রয়োজনে কর্মস্থল অথবা পরিচিত জনের ঠিকানা প্রদান করুন। সঠিক ও পূর্নাঙ্গ ঠিকানা প্রদান ব্যতিরেকে পোস্টাল ব্যালট পেপার ভোটারগণের নিকট প্রেরণ করা সম্ভব হবে না।’
আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের সময় বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এর আগে, ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া বিশ্বের সব দেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছিল।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১০ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন, যা রেকর্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ইসির জনসংযোগ শাখা ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর সিইসিসহ পূর্ণ কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। রেওয়াজ অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পরপরই জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি। তবে এবার সরাসরি সম্প্রচারের পরিবর্তে ভাষণটি রেকর্ড করে প্রচার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা সম্প্রচার করা যায়। উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৎকালীন সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সরাসরি সম্প্রচারে তফসিল ঘোষণা করেছিলেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১০ ডিসেম্বর ভাষণ রেকর্ড করা হলেও তফসিল ঘোষণা হতে পারে পরদিন অর্থাৎ ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে। আর কাঙ্ক্ষিত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে আগামী ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে কমিশন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে। আসন্ন ভাষণে সিইসি জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানাবেন এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রার্থীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে, পবিত্র রমজান মাস শুরুর আগেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং একই সঙ্গে গণভোট আয়োজনের পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিনই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে। এবার সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে ভোটগ্রহণের ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ভোটের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে এবং গোপন কক্ষ বা সিক্রেট বুথের সংখ্যা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, এবারের ভোটগ্রহণ সকাল সাড়ে ৭টায় শুরু হয়ে একটানা চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। অতীতে মক ভোটিংয়ের অভিজ্ঞতা ও মাঠ পর্যায়ের মতামত বিশ্লেষণ করে বুথ সংকট এড়াতে প্রতিটি কক্ষে একাধিক গোপন কক্ষ স্থাপন করা হবে। প্রয়োজনে বারান্দা বা অন্য কোনো স্থানে অস্থায়ী বুথ তৈরি করে ভোটারদের নির্বিঘ্ন ভোটদান নিশ্চিত করা হবে। এছাড়া গণভোটের বিষয়টি ভোটারদের কাছে সহজবোধ্য করতে প্রতিটি কেন্দ্রে বড় আকারে গণভোটের প্রশ্ন ঝুলিয়ে রাখা হবে। পঙ্গু, প্রবীণ ও গর্ভবতী ভোটারদের জন্য বিশেষ সুবিধার নির্দেশনাও থাকবে।
নির্বাচন ব্যবস্থাপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ব্যালট পেপার পাঠানো নিয়ে এবার আগের নিয়মে ফিরছে কমিশন। ‘রাতের ভোট’ বিতর্ক এড়াতে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানোর নিয়ম চালু করলেও, বর্তমান কমিশন ভোটের আগের রাতেই কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, কমিশন আত্মবিশ্বাসী যে অতীতের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। যথাযথ নজরদারি ও কঠোর সুপারভিশনের মাধ্যমে কোনো ব্যত্যয় ঘটতে দেওয়া হবে না বলেই তিনি আশ্বস্ত করেন।
এদিকে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) থেকেই প্রবাসী ভোটারদের জন্য ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ শুরু হয়েছে, যা আগামী পরশুর মধ্যে বিদেশে পাঠানো শুরু হবে। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর ১৫ দিন পর্যন্ত দেশের ভেতর থেকে পোস্টাল ব্যালটের জন্য আবেদন করা যাবে। ভোটের দিন সাধারণ ছুটি থাকলেও ইসির প্রয়োজনে ব্যাংক ও ডাকঘর খোলা রাখা হবে। ভোটগ্রহণে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপাতত রিজার্ভে রাখা হবে।
রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা কোনো দলের বিশেষ অবস্থার চেয়ে নির্বাচন কমিশন তাদের পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনা ও সরকারের ঘোষিত সময়সূচিকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ধারণা, আগামী ১১ ডিসেম্বর নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হলে, হাতে ৬০ দিন সময় রেখে ১১ অথবা ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোটের তফসিল চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ইতোমধ্যেই জানিয়েছেন- সপ্তাহের যেকোনো একদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল-পূর্ব কার্যক্রমের প্রায় সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে দশম কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিবাচন কমিশনার এসব তথ্য জানান। সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চার নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সানাউল্লাহ বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে রীতি অনুযায়ী কিছু কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। এর অংশ হিসেবে পুরো কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। এছাড়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারের তফসিল ঘোষণা বিষয়ক বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের কাছে সোমবার পত্র পাঠানো হবে।
তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার আগে প্রয়োজনীয় বেশিরভাগ কাজই সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি জানান, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন ভোট শুরু হবে সকাল সাড়ে ৭টায় এবং চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এর ফলে ভোটাররা সকালে আধা ঘণ্টা এবং বিকেলেও আধা ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় পাবেন।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরে আরেকটি তালিকা পাঠানো হবে, যেখানে পোস্টাল ভোট প্রদানকারীদের (ওসিবি এবং আইসিপিভি) ইমপ্রিন্ট যুক্ত থাকবে। এছাড়া মাঠ পর্যায় থেকে যে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা এবং পোলিং অফিসারের তালিকা পাঠানো হয়েছে, সেটি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ভোটকর্মী হিসেবে যুক্ত করা হবে। বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপাতত নিয়োগ না দিয়ে রিজার্ভে রাখা হবে; একান্ত প্রয়োজন হলে তাদের বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সানাউল্লাহ বলেন, দুটি নির্বাচন-জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট একসঙ্গে আয়োজন করতে সময় ও ব্যবস্থাপনায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনী সামগ্রী পরিবহনের বিষয়ে তিনি বলেন, আগের মতোই নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট পেপারসহ সব সামগ্রী ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। এ ছাড়া ভোটের দিন যাতে কোনো জটিলতা না হয়, সে জন্য কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় লজিস্টিকসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, ভোটকক্ষে ভোটারদের সুবিধার জন্য একাধিক সিক্রেট বুথ স্থাপন করা হবে। যেখানে বুথ বাড়ানোর পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে না, সেখানে আলাদা করে অতিরিক্ত বুথ তৈরি করা হবে। পূর্বে অনুষ্ঠিত মক ভোটিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং মাঠপর্যায়ে ভোট পরিচালনাকারী কর্মকর্তাদের মতামত বিবেচনায় এনে এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
গণভোট সংক্রান্ত প্রচারণার বিষয়ে তিনি জানান, সরকার বিস্তৃত কর্মসূচি গ্রহণ করছে এবং নির্বাচন কমিশন এই প্রচারণায় প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে প্রবেশের আগেই গণভোটের প্রশ্ন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পান, সে জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে বড় আকারে ছাপানো গণভোট ব্যালট লাইনের সামনে টানিয়ে রাখা হবে। পঙ্গু, বয়স্ক, গর্ভবতী নারীসহ বিশেষ সহায়তা প্রয়োজন এমন ভোটারদের জন্য কেন্দ্রগুলোতে আলাদা নির্দেশনা থাকবে, যাতে তারা সহজে ভোট দিতে পারেন।
সূত্র : বাসস
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো প্রায় সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এখন ভোট আয়োজনের চূড়ান্ত পদক্ষেপ নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। এরই প্রেক্ষিতে নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল কবে ঘোষণা করা হবে তা নির্ধারণে বৈঠকে বসেছে ইসি।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বেলা পৌনে ১১টার দিকে বৈঠকটি শুরু হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ১০-তম কমিশন সভায় অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসি কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব মো. মঈন উদ্দীন খান জানিয়েছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল কবে হবে তা নির্ধারণে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাও রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে তফসিল কবে ঘোষণা হবে ও ভোটের সম্ভাব্য তারিখ কবে হতে পারে জানতে চাইলে আব্দুর রহমানেল মাউসদ গনমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ভোটের কয়েকটি তারিখ আলোচনা করেছি। আগামী রবিবার (৭ ডিসেম্বর) এ নিয়ে আমাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমরা বলছি আগামী সপ্তাহের রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার, এর মধ্যে যেকোনো দিন তফসিল ঘোষণা করে দেব এবং তা (তফসিল) হঠাৎ করেই হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি থাকলেও এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাংবাদিকদের এক কর্মশালায় ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ কথা জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তা ধরে প্রস্তুতি নিয়ে ডিসেম্বরের প্রথম ভাগে তফসিল ঘোষণার পরিকল্পনা ছিল ইসির।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
এবার ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও হবে। সেই নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে জাতীয় বৈঠক করে কমিশন। ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আখতার আহমেদ বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়ে আয়োজিত মিটিংয়ে ছিলাম।’
তফসিল ঘোষণার প্রসঙ্গে আখতার আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন এখন পর্যন্ত তফসিল ঘোষণার দিন নির্ধারণ করতে পারেনি।’ তবে নির্বাচন আয়োজনে ইসি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে ভুল তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে অনুরোধ করি, সঠিক তথ্যটা দেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জনান, এটাই জেনে রাখুন যে, নিশ্চয়ই নির্বাচনের ব্যাপারে জোর প্রস্তুতি চলছে।
সাংবাদিকদের নিয়ে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ (সর্বশেষ সংশোধনীসহ); সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ (সর্বশেষ সংশোধনীসহ) এবং নির্বাচন কর্মকর্তা (বিশেষ বিধান) আইন, ১৯৯১ এর পরিচিতি’ শিরোনামের কর্মশালায় বক্তব্য দেন আখতার আহমেদ। এ প্রশিক্ষণ আয়োজন করে ইউএনডিপি ও রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং গণভোট আয়োজনে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ উপলক্ষে ঢেলে সাজানো হচ্ছে প্রশাসন। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোও জোরেশোরে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ কোনো কোনো দল তফশিল ঘোষণার আগেভাগেই প্রাথমিকভাবে প্রার্থী মনোনয়ন করে রেখেছে। এখন অপেক্ষা শুধু তফসিল ঘোষণার।
এদিকে, তফসিল ঘোষণার লক্ষ্যে রোববার (৭ ডিসেম্বর) কমিশন সভা আহ্বান করেছে এ এম এম নাছিরউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। ওই দিন তফশিল এবং ভোটের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে। তফসিল ঘোষণার আগে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ইসি। ১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, রোববার (৭ ডিসেম্বর) তফশিল ঘোষণার উদ্দেশে কমিশনের সভা আহ্বান করা হয়েছে। আশা করছি ওই দিনের বৈঠকে আমরা সবকিছুই চূড়ান্ত করতে পারব।
নির্বাচন সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পুরো জাতি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। ভোট বঞ্চিত জনগণ ভোট দিতে প্রস্তুত। আশা করছি ইসির ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই তফসিল ঘোষণা করবে। উৎসবের আনন্দে দেশে ভোট হবে।
ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একইদিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ঘোষণার অংশ হিসেবে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করতে চায় ইসি। সে লক্ষ্যে নির্বাচনের জন্য ৪২ হাজার ৭৬১টি কেন্দ্র নির্দিষ্ট করেছে ইসি। প্রকাশ হয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জনের ভোটার তালিকা।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত কেন্দ্রগুলোর মধ্যে লাল বা অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৮ হাজার ৭৪৬টি, হলুদ বা ঝুঁকিপূর্ণ ১৬ হাজার ৩৫৯টি, সবুজ বা সাধারণ ১৭ হাজার ৬৫৬টি। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে থাকবে দুই থেকে তিনজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্য। আর সাধারণ কেন্দ্রে থাকবে একজন সদস্য। ৮ বিভাগের মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ২ হাজার ৬৭৫টি। এরপরই রয়েছে চট্টগ্রামে ১ হাজার ৪৪০টি। বিভাগের মতো মেট্রোপলিটনেও অতি ঝুঁকিপূর্ণ সবচেয়ে বেশি ঢাকায় ৬৯৫টি। দ্বিতীয় স্থানে চট্টগ্রামে ৩১২টি। এ পর্যন্ত ৬০ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে পুলিশ।
এদিকে, নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ ছাড়াও সেনা, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে ৮ লাখ সদস্য নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনে ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী প্রতিটি কেন্দ্রে ফোর্স মোতায়েন করা হবে। যেগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে ফোর্স বেশি থাকবে আর যেখানে কম ঝুঁকি সেখানে কম ফোর্স থাকবে। এ লক্ষ্যে আমরা নির্বাচন প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
শাহাদাত হোসেন আরও বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন আয়োজন আমাদের সবার দায়িত্ব। শুধু পুলিশ নয়, অন্যান্য সরকারি সংস্থা, সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল এবং জনসাধরণ একসঙ্গে একটা টিম হয়ে কাজ করতে পারি, তাহলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।’
তবে সারা দেশে হত্যা-ছিনতাইসহ অপরাধ বেড়ে যাওয়া এবং থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার না হওয়ায় নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক এয়ার কমোডর (অব.) ইশফাক ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘অস্ত্র উদ্ধার করা যাচ্ছে না, এটা একটা দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা। সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যদি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব দেয়া হয় এবং আইনের ভেতরে থেকে যদি তারা দায়িত্ব পালন করে- আমার মনে হয় না কোনো ধরনের শঙ্কা তৈরি হবে।’
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ বলেছেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথচলার রূপরেখার সূত্রপাত হতে যাচ্ছে।’
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সাংবাদিকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ’ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই ক্ষত কাটিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু মনে রাখতে হবে এটি একটি সমন্বিত ও জাতীয় উদ্যোগ। দেশের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতেই হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।’
নির্বাচন সংক্রান্ত তথ্য প্রচারে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকরা আমাদের কাজের একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নির্বাচনের বড় নিয়ামক শক্তি সাংবাদিকরা। আশা করছি, এই প্রশিক্ষণে সাংবাদিকরা উপকৃত হবেন।’
নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ইসি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)-এর সভাপতি কাজী জেবেল, সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিক ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অনেকে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে অংশ নিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’অ্যাপের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার নিবন্ধন করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইটে প্রকাশিত পোস্টাল ভোটিং আপডেট তথ্যানুযায়ী, ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে ৩ ডিসেম্বর (বুধবার) সকাল ১০টা পর্যন্ত মোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬১ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন করেছেন বলে জানা যায়।
নিবন্ধনকারীদের মধ্যে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৯১ জন পুরুষ ভোটার এবং ১৭ হাজার ৫৭০ জন নারী ভোটার।
দেশভিত্তিক নিবন্ধনের মধ্যে রয়েছে- সৌদি আরবে ২১ হাজার ৫১৬ জন, যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ হাজার ৬৭৩ জন, সিঙ্গাপুরে ৯ হাজার ৮৩৯ জন, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯ হাজার ৪২০ জন, যুক্তরাজ্যে ৮ হাজার ৯৬৭ জন, কানাডায় ৮ হাজার ৮৯৪ জন, মালয়েশিয়ায় ৭ হাজার ৭৪২ জন, অস্ট্রেলিয়ায় ৭ হাজার ৬৩৮ জন, জাপানে ৬ হাজার ৮৫১ জন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৬ হাজার ৩৯৪ জন।
ইসি সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। এর আগে ১৮ ডিসেম্বর রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে প্রবাসী ভোটারদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া বিশ্বের সব দেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, ‘আউট অফ কান্ট্রি ভোটিং এর ব্যাপারে আমরা বলেছিলাম ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা। ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ২৫ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্ট্যান্ডার্ড টাইম অনুযায়ী আমরা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত আরো এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। কারণ, অনেকে প্রবাসীরা বলেছেন সময় বাড়ালে ভালো হতো। আমরাও দেখলাম সময় বাড়ানোর সুযোগ আছে, তাই সময় বাড়ানো হল। এখন সারা বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকেই আমাদের এই অ্যাপ ডাউনলোড করে যে কেউ ভোট দেওয়ার জন্য ভোটার নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন ।’
ইসি সচিব আরও জানান, নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া সরকারি কর্মকর্তা, আইনি হেফাজতে থাকা ভোটার এবং নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীদের জন্যও ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং (আইসিপিভি) প্রক্রিয়া চালু করা হবে। আইসিপিভি ইনকান্ট্রি পোস্টাল ভোটের বিষয়ে তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৫ দিন মেয়াদে আমরা নিবন্ধন প্রক্রিয়াটা চালু করব বলে তিনি উল্লেখ করেন।
গত ১৮ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ উদ্বোধন করেন এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৪৮টি নির্দিষ্ট দেশে ভোটার নিবন্ধনের সময়সূচি ঘোষণা করেন।
পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য প্রবাসী ভোটারকে অবশ্যই যেখান থেকে ভোট দেবেন সে দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে।
নিবন্ধনের জন্য প্রথমে গুগল প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোর থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে।
ব্যবহারকারী বাংলা বা ইংরেজি ভাষা নির্বাচন করে অ্যাপে নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্দেশনাবলী দেখতে পারবেন। বিদেশে ব্যালট প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সঠিক ঠিকানা প্রদান অপরিহার্য।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট নিয়ে এখন পুরো ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে এই নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সাংবিধানিক সংস্থাটি। সে ক্ষেত্রে আগামী ৭ ডিসেম্বরের পর যেকোনো দিন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে কমিশন। ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সামনে রেখেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সমন্বিত নিরাপত্তাসহ নেওয়া হয়েছে একগুচ্ছ পরিকল্পনা। এসব পরিকল্পনার বিষয় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান, পুলিশের আইজিসহ সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফলে রাজনীতির মাঠেও নির্বাচনী পরিবেশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
ইসি সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচন নিয়ে কয়েক দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০ অক্টোবর ইসিতে প্রথম বৈঠক হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এমএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে রুদ্ধদ্বার ওই বৈঠকে সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। চলতি মাসে আরেকবার এ ধরনের বৈঠক হওয়ার কথা আছে।
এদিকে, ২ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেছেন, ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখ রোববার এবং ১২ তারিখ বৃহস্পতিবার। সে হিসেবে মঙ্গলবারের (১০ ফেব্রুয়ারি) দিকে সংসদ নির্বাচন হতে পারে।
জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট কবে নাগাদ হবে—এ প্রশ্নের জবাবে ইসি আনোয়ারুল বলেন, ফেব্রুয়ারির সেকেন্ড উইক। ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হলেও অসুবিধা নেই। এক্ষেত্রে ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন পরে কিংবা ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে এক-দুদিন আগেও হতে পারে। অর্থাৎ মাঝামাঝি কোনো সময় হতে পারে।
এদিকে, তফসিল ঘোষণা ও ভোটের তারিখ নিয়ে আগামী রোববার কমিশন সভা হবে। সেখানেই সব তারিখ নির্ধারণ করা হবে। এক্ষেত্রে দু-তিন দিন সময় রেখে বা বৃহস্পতিবারের দিকে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
ভোটগ্রহণের সময়ও বাড়ানোর কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন। আনোয়ারুল ইসলাম জানান, যেহেতু সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একদিনে হবে, তাই গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। আবার ভোটের সময়ও এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ৯ ঘণ্টা করা হতে পারে। এজন্য সকাল-বিকেলে দুদিকেই সময় বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে।
ইসি আনোয়ারুল আরও বলেন, এখন সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, সেটা এগিয়ে সাড়ে ৭টা হতে পারে। আবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে, সেটা বাড়িয়ে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে।
এর আগে কমিশনের প্রথম বৈঠকে ২২টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, নাশকতা প্রতিরোধে সবাইকে সজাগ থাকা, জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোট করতে গেলে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে পরিবর্তন নিয়ে আসা এবং বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকা।
এছাড়া নির্বাচনপূর্ব কিছু অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হলে সে ক্ষেত্রে বাহিনীগুলোকে আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া, নির্বাচন কার্যালয় ও নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা।
এখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়েই মূলত আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু হবে। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া, যাচাই-বাছাই, প্রার্থিতা প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দের সুযোগ পাবেন। তফসিলের মাধ্যমেই নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারিত হবে। ফলে নির্বাচন নিয়ে সব শঙ্কাও কেটে যাচ্ছে।
এদিকে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের সার্বিক প্রস্তুতিতে ‘সন্তোষ প্রকাশ করেছেন’ ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে এ নির্বাচন একটি বড় সুযোগ। সংসদ ও গণভোট পরিচালনার লক্ষ্যে ইসির একটি মহড়াও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনের প্রাক-প্রস্তুতির দেখে আমি অভিভূত। সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের সার্বিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে তা করা হয়েছে।
এবারের ভোটে ইইউয়ের বড় একটি প্রতিনিধি দল পর্যবেক্ষণে থাকছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ২ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন মিলার। বৈঠকে সিইসি জানিয়েছেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট এবং ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।
ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ইসির সক্ষমতা ও অঙ্গীকারের বিষয়টি তুলে ধরেন মাইকেল মিলার। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের অঙ্গীকার ও পেশাদারত্ব এবং ভোট পরিচালনার সক্ষমতা দেখতে পেয়েছি। ২০২৬ সালে বিশ্বের বড় একটি নির্বাচন হচ্ছে বাংলাদেশে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবারের নির্বাচনে একটি খুব বড় নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন নিয়োজিত রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সুষ্ঠু ভোটে ইইউর সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে মিলার বলেন, এবারের ভোটে নানা ধরনের সহযোগিতা দিয়ে আসছে ইইউ। এ ধারা অব্যাহত রাখার বিষয়ে ইইউয়ের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে ভোটার তালিকা চূড়ান্তকরণের কাজ চলমান থাকায় নিজ নামসহ সাতটি বিষয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের আবেদন আপাতত বিবেচনা করবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। স্থগিত থাকা সাতটি বিষয় হলো নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, পেশা, জন্মতারিখ, ভোটারের ঠিকানা ও ছবি।
সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে ব্রিফিংকালে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘এনআইডি সংশোধনের বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছে। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করার কারণে এই সাতটি বিষয়ে এখন কোনো পরিবর্তন করা যাবে না। কারণ এগুলো পরিবর্তন হলে ভোটার তালিকায় প্রভাব পড়বে।’
তিনি বলেন, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়গুলো পুনরায় উন্মুক্ত করা হবে এবং তখন সংশোধনের আবেদন বিবেচনা করা হবে।
সচিব জানান, স্বামী বা স্ত্রীর নাম, বৈবাহিক অবস্থা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ধর্ম, প্রতিবন্ধিতার ধরণ, ভোটার ঠিকানা ছাড়া অন্যান্য ঠিকানা, টেলিফোন ও মোবাইল নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য সংশোধনের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে স্থগিত থাকা সাতটি বিষয়ে এ মুহূর্তে কোনো সংশোধন করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, নতুন এনআইডি নিবন্ধন কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে এবং এতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। নতুন ভোটার নিবন্ধনও চলমান থাকবে।
এর আগে, গত ২৪ নভেম্বর ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এস এম হুমায়ুন কবীর বাসসকে জানিয়েছিলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও প্রিন্ট কার্যক্রম শুরু হওয়ায় ভোটার এলাকা স্থানান্তর বা মাইগ্রেশন কার্যক্রমও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে সংশোধনের যেসব আবেদন আসবে, সেগুলো প্রসেস করা হবে, তবে ফল বা অনুমোদন এখন দেওয়া হবে না। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর ফল প্রকাশ করা হবে। ২৪ নভেম্বর বিকেল ৪টার আগে যেগুলোর ফল প্রস্তুত হয়েছে, সেগুলোই আবেদনকারীরা পেয়ে যাবেন।
এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে পুরো বিশ্ব এই সিগন্যাল পাবে যে দেশ আসলে স্থিতিশীল হবে কি না; দেশে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ট্রানজিশনটা ‘পিসফুল ওয়ে’তে হচ্ছে কি না। আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে পিসফুলি এই ট্রানজিশনটা ঘটানো। যদি আমরা এটা পিসফুলি করতে না পারি অস্থীতিশীলতা কিন্তু থেকে যাবে।
গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনীতি সম্মেলন ২০২৫’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেকে শিক্ষা খাতের সংস্কারের কথা বলছেন এবং আমি এটার সাথে একমত। আমি মনে করি আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে হবে। আমাদের গত ১৬ বছর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, অর্থনৈতিক খাতে আমরা রাতারাতি সেটা পরিবর্তন করতে পারব না। সেটা করার চেষ্টাও করা উচিত না। আমার কাছে মনে হয় না সেটা এক বছর, দেড় বছর বা ১৮ মাসে সম্ভব। এটার জন্য আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা লাগবে।
তিনি আরও বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পেছনে জনগণ এবং বিশেষত তরুণরা যে রাজপথে নেমে এসেছিল... কোন অর্থনৈতিক অনুপ্রেরণা এবং আকাঙ্ক্ষা এবং লক্ষ্যের ভিত্তিতে তারা নেমে এসেছিল, আমরা যদি এর অনুসন্ধান করতে পারি এবং সেই সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি তাহলে পরবর্তী ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে আমাদের যে অর্থনৈতিক সংস্কার, সেটা আমরা সম্পন্ন করতে পারব।
নাহিদ বলেন, তরুণরা প্রথম বিদ্রোহ করল ভ্যাট বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয়ত ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং’ ২৪-এর আন্দোলনটা প্রথমে শুরু হয়েছিল ’১৮ সালের আন্দোলনের স্পৃহায়। সেখানেও মূলত চাকরির আন্দোলন, কর্মসংস্থানের আন্দোলন এবং সেই সময় কোটার একটা সুরাহা করা হয়েছিল এবং ওই বছরই আরেকটি বড় আন্দোলন হয়, যেটাকে আমরা কিশোর বিদ্রোহ হিসেবে আখ্যায়িত করি, সেটা হচ্ছে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন।
তিনি বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনটা মূলত হচ্ছে নগর পরিকল্পনার প্রশ্ন। অর্থাৎ আমরা ঢাকা শহরে এবং পুরো দেশে আমাদের মেট্রোপলিটন সিটিগুলোতে যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এই মানুষের জীবন-জীবিকাটা কী রকম? আমাদের শহরে বায়ুদূষণ, পরিবেশদূষণ, ট্রাফিক জ্যাম, দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি এবং কর্মসংস্থানহীনতা, বাসাভাড়া অনেক বেড়ে যাচ্ছে। এই পুরো ইকোনমিক সিস্টেমের মধ্য দিয়ে কিন্তু ঢাকা শহরের মধ্যবিত্তকে নিম্নবিত্তকে জীবনযাপন করতে হয়। ফলে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনটা ছিল সেই একদম নগর পরিকল্পনার গোড়ার প্রশ্নটা, যেই নগরকে আমরা আমাদের মতো সজ্জিত করতে পারিনি।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রবাসীদের মধ্যে ভোট দেওয়ার ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। আসন্ন এই নির্বাচনে বিভিন্ন দেশ থেকে ভোট দেওয়ার জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপে প্রবাসী নিবন্ধন ছাড়াল ৮৬ হাজার। নির্দিষ্ট সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রবাসীদের ঠিকানায় ব্যালট পেপার পাঠিয়ে দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গতকাল শনিবার ইসির ওয়েবসাইট থেকে বিষয়টি জানা গেছে।
এবারই প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালটে ভোট নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রবাসী, আইনি হেফাজতে থাকা ব্যক্তি, ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতরা এ ব্যবস্থায় ভোট দিতে পারবেন। এজন্য অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। গত ১৯ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু হয়েছে, চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
যেসব দেশে নিবন্ধন চলছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে— দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা, চীন, মিসর, মোজাম্বিক, লিবিয়া, মরিশাস, হংকং, ব্রাজিল, উগান্ডা, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়া, বতসোয়ানা, কেনিয়া, রুয়ান্ডা, আলজেরিয়া, অ্যাঙ্গোলা, তানজানিয়া, সোমালিয়া, ঘানা, গিনি, মরক্কো, দক্ষিণ সুদান, চিলি, সিয়েরা লিওন, ইকুয়েডর, তাইওয়ান, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গাম্বিয়া, পেরু, জিম্বাবুয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ইত্যাদি। এসব দেশ থেকে মোট নিবন্ধন করেছেন (সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত) ৮৬ হাজার ১৩২ প্রবাসী।
ইসি জানিয়েছে, অ্যাপে নিবন্ধনকারীদের ঠিকানায় পোস্টাল ব্যালট ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ভোটার ভোট দিয়ে ফিরতি খামে তা আবার রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠাবেন।
উল্লেখ্য, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এক্ষেত্রে ৫০ লাখ প্রবাসী ভোট টানার টার্গেট নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে সংস্থাটি।