ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে ৩০০ সংসদীয় আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার সংশোধিত তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার রাতে ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘হাইকোর্ট বিভাগে দায়েরকৃত রিট পিটিশন নম্বর ১৫৫৩৭/২০২৫ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল নম্বর ৪৬৭৬/২০২৫-এ প্রদত্ত রায় ও আদেশ অনুসরণে পূর্বে প্রকাশিত সীমানা পুনর্নির্ধারণের প্রজ্ঞাপন আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। এর ফলে বাগেরহাট জেলায় একটি আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং গাজীপুর জেলা থেকে একটি আসন কমানো হয়েছে। সংশোধনের পর মোট ৩০০ আসনের পুনর্নির্ধারিত সীমানার হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করা হলো।’
ইসি সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনা ও আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই আসনসীমা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে আসন বিন্যাস আরো যৌক্তিক ও সুনির্দিষ্ট হয়।সূত্র- বাসস
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে সবার জন্য সমান সুযোগ বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সব ধরনের প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং কেউ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইসি সচিব এসব কথা বলেন। তিনি জানান, নির্বাচনের মাঠ সবার জন্য সমান রাখতে প্রয়োজনীয় পরিপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দলগুলো নিশ্চয়ই সহায়তা করবে, তবে কেউ নিয়ম না মানলে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।
পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান প্রসঙ্গে সচিব তথ্য দেন যে, ইতিমধ্যে তিন লাখ ১০ হাজার ৪১৪ জন প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন এবং গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাচ্ছে। ভোটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা তপশিল ঘোষণার পর ১৬ বা ১৭ ডিসেম্বর থেকে, কারাবন্দিরা ২১ থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের মোতায়েনের পর নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে সীমানা সংক্রান্ত আইনি জটিলতা ও প্রশাসনের রদবদল নিয়েও কথা বলেন ইসি সচিব। গাজীপুর ও বাগেরহাটের আসন সংক্রান্ত ইসির গেজেট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ অবৈধ ঘোষণা করায়, আদালতের আদেশ মেনেই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এছাড়া নির্বাচনের সময় প্রশাসনের রদবদল একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও, তা নির্বাচন কমিশনের অনুমতি, সম্মতি বা পরামর্শের ভিত্তিতেই করা হবে বলে তিনি স্পষ্ট করেন।
মাগুরায় জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় ঐতিহাসিক নোমানী ময়দান থেকে বিশাল এক বর্ণাঢ্য নির্বাচনী প্রচারণা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মিছিলে অংশ নেওয়া বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী একই পোশাকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে অংশ নেন, যা পুরো কর্মসূচিতে আলাদা বৈশিষ্ট্য তৈরি করে।
শুরুতে নোমানী ময়দানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাগুরা জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাঈদ আহমেদ বাচ্চু। জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা মারুফ কারখীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মাগুরা-১ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ও সাবেক জেলা আমির আলহাজ্ব আব্দুল মতিন, মাগুরা–২ আসনের মনোনীত প্রার্থী সহকারী অধ্যাপক মাওলানা এমবি বাকের, জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুর রহমান, ইসলামী ছাত্র শিবিরে জেলা সভাপতি মোঃ আমিনউদ্দীন আশিকসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল নির্বাচনী মিছিল বের হয়। মিছিলটি ভায়না মোড় হয়ে ঢাকা রোড প্রদক্ষিণ করে চৌরঙ্গী মোড়ে এসে জেলা জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমীর সহকারী অধ্যাপক মাওলানা সাইদ আহমেদ বাচ্চু আনুষ্ঠানিক ভাবে শেষ করেন। হাজার হাজার নেতা–কর্মীর স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে শহরব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়।
নেতারা বলেন, জনগণের অধিকার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই তাদের এই কর্মসূচি। তারা শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন থেকে শুরু করে ভোটগ্রহণের দুদিন পর পর্যন্ত দেশের প্রতিটি উপজেলা ও থানায় ন্যূনতম দুইজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়, আসন্ন সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর আওতায় আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়গুলো তদারকি করতে এবং নির্বাচনী পরিবেশ সুষ্ঠু রাখতে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়োগের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এদিকে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা উপলক্ষে আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। গতকাল বুধবার তার ভাষণ রেকর্ড করা হয়েছে, যা আজ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে একযোগে সম্প্রচার করা হবে। সিইসি তার ভাষণে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণার পাশাপাশি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করবেন বলে জানা গেছে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষণা করা হচ্ছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ‘জুলাই সনদ’ নিয়ে গণভোটের তফসিল। আজ সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে এই তফসিল ঘোষণা করবেন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ গতকাল সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সিইসির এই ভাষণটি একযোগে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার এবং বিভিন্ন বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সম্প্রচার করা হবে। জানা গেছে, ভাষণটি ইতোমধ্যে রেকর্ড সম্পন্ন হয়েছে। তফসিল ঘোষণার দীর্ঘদিনের প্রথা মেনে গতকাল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সিইসি ও চার নির্বাচন কমিশনার। এর আগে গত রবিবার প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এবং তারও আগে বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে। এবারের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতকৃত চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী দেশে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৮ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ২৩৪ জন। চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাদের অন্তর্ভুক্ত করেই এই চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন।
আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) রাত ৯টায় পৌর শহরের নিজ বাসভবন প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন। এ সময় বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের তার সমর্থক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আমার প্রতি জনপদের মানুষের বিশ্বাস ও আস্থা আছে, সে জন্য আমি মানুষের পাশের থাকার প্রতিজ্ঞা নিয়েছি উল্লেখ করে মতবিনিময় সভায় দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন বলেন, আমার জীবনের বাকি দিনগুলো আমি জনগণের সাথে থাকতে চাই, জনগণের জন্য কাজ করতে চাই। সে জন্য আপনাদের অকুণ্ঠ সমর্থনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় (সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর) কাঙ্ক্ষিত যে উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। অবকাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়য়নের দিক দিয়ে দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে সুনামগঞ্জ। আমরা এর পরিবর্তন চাই, বৈষম্যের নিরসন চাই। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ সার্বিক বিষয়ে আমি সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে চাই। সুনামগঞ্জের মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে সে জন্য সন্ত্রাস- চাঁদাবাজমুক্ত ও সম্প্রীতির সুনামগঞ্জ চাই, আর এ জন্যই আমি নির্বাচন করতে চাই।
দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি, বর্তমান জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চারবারের চেয়ারম্যান, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ্বম্ভরপুর) আসনে তিনি বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৪টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সুনামগঞ্জ-৪ আসনে বিএনপির দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুলের নাম ঘোষণা করেন। ওইদিন রাতেই এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন দেওয়ান জয়নুল জাকেরীন।
অবশেষে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে যাচ্ছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই তফসিল ঘোষণা করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আজ বুধবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সিইসি তার ভাষণটি রেকর্ড করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারের কারিগরি দল এই ভাষণ রেকর্ড করে। রেকর্ড সম্পন্ন হওয়ার পর সিইসি তার কক্ষে অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়ে একটি বৈঠক করেন। ওই বৈঠক শেষেই ইসি সচিব সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তফসিল ঘোষণার চূড়ান্ত সময়টি জানান।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় রেকর্ড করা হবে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইসি সচিব আখতার হোসেন। তিনি জানান, ভাষণ রেকর্ডের পর নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল ঘোষণার চূড়ান্ত সময় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে আজ দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সিইসি, চার কমিশনার ও ইসি সচিব। সেখানে নির্বাচনের পূর্বপ্রস্তুতি ও সার্বিক কার্যক্রম সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে অবহিত করা হয়। ইসি সচিব জানান, কমিশনের কার্যক্রমে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অর্থবহ নির্বাচন আয়োজনে তাঁর এখতিয়ার অনুযায়ী সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। সাক্ষাতে গত জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি তুলে ধরা হয়।
একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ক্ষেত্রে কারিগরি ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, সে বিষয়ে রাষ্ট্রপতি বিস্তারিত জানতে চান। বিশেষ করে ব্যালট পেপারের রং, বিতরণ পদ্ধতি, মক ভোটিং এবং ভোট গণনার প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া ভোটগ্রহণের নতুন সময়সীমা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করার বিষয়টিকেও রাষ্ট্রপতি যৌক্তিক বলে মত দিয়েছেন। পাশাপাশি ‘আউট অব কান্ট্রি ভোটিং’ এবং ‘ইন কান্ট্রি পোস্টাল ভোট’-এর প্রযুক্তিগত কাঠামো স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে তৈরি করার বিষয়টি জেনে তিনি প্রশংসা করেন।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জোরালো আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নির্বাচনের সময়সূচি পেছানো বা এগিয়ে আনার মতো কোনো পরিস্থিতি বর্তমানে নেই। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবনে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার প্রতি তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের ১৩ মাস পেরিয়ে গেলেও হয়তো তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনো বাধা অনুভব করছেন। তবে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ মানুষের পালস বা মনোভাব থেকে এটা স্পষ্ট যে, তিনি দেশে ফিরলে তার জন্য কোনো সমস্যা সৃষ্টির সুযোগ নেই।
বক্তব্যে জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ায় নির্বাচন কমিশনের কঠোর সমালোচনা করেন সারজিস আলম। তিনি মন্তব্য করেন, জাতীয় পার্টিকে সুযোগ দেওয়া মানে জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করা। জাতীয় পার্টিকে আওয়ামী লীগের মতোই অভিহিত করে তিনি বলেন, দলটি ভারতে গিয়ে দাসত্ব করেছে এবং তাদের পরামর্শে দেশের মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী হয়ে এমপি হওয়া ও সুযোগ-সুবিধা নেওয়া এই দলটিকেও আওয়ামী লীগের মতোই বিচারের মুখোমুখি করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
সভায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক কৃষিবিদ গোলাম মর্তুজা সেলিমসহ ঠাকুরগাঁও জেলার নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিচারিক দায়িত্ব পালনের জন্য ৩০০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চেয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতির খাসকামরায় অনুষ্ঠিত এক একান্ত বৈঠকে তিনি এই সহায়তা চান। বৈঠকে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ নির্বাচনী কার্যক্রমে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
তফসিল ঘোষণার আগে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করার প্রচলিত রেওয়াজ অনুযায়ী মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে সুপ্রিম কোর্টে যান সিইসি। এ সময় তার সঙ্গে কেবল নির্বাচন কমিশনের সচিব উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, বৈঠকে নির্বাচনকালীন বিচারকদের ম্যাজিস্ট্রেসি দায়িত্ব পালনের বিষয়টি ছাড়াও সীমানা পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত মামলা নিয়ে আলোচনা হয়। বিশেষ করে তফসিল ঘোষণার পর রিট আবেদনের কারণে যেন নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে বিচার বিভাগের সহায়তা চাওয়া হয়।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সিইসির জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ চূড়ান্ত করা হয়েছে এবং তা রেকর্ড ও প্রচারের জন্য বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামীকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) অথবা বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিনক্ষণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় অথবা পরদিন বৃহস্পতিবার এই তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
নির্বাচন কমিশনার জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের সবকিছু ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতার অংশ হিসেবে আগামীকাল বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাবে নির্বাচন কমিশন। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ওই সাক্ষাতের পরই বুধবার সন্ধ্যায় কিংবা বৃহস্পতিবার সুবিধাজনক সময়ে নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করা হবে।
ইসি মাছউদ আরও উল্লেখ করেন, আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতার বিষয়টিকে কমিশন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সহায়তার আহ্বান থাকবে তফসিল ঘোষণার ভাষণে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সুপ্রিম কোর্টে গেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে নির্বাচন ভবন থেকে সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি।
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত রিট এবং প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া নিয়ে প্রার্থীরা প্রায়ই আদালতের দ্বারস্থ হন। নির্বাচনের আগে এসব আইনি জটিলতা নিরসন ও বিচার বিভাগের সহায়তার বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সিইসির গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সিইসির এই সাক্ষাৎ বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে অবহিত করার পাশাপাশি সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে এসেছে পুরো কমিশন। এছাড়া আগামীকাল বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। ৩০০ আসনের মধ্যে অন্তত ১৫ জন নারী প্রার্থী রাখার কথা থাকলেও প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঘোষিত প্রাথমিক তালিকায় নারীদের উপস্থিতি অত্যন্ত নগণ্য। বিএনপি তাদের প্রাথমিক তালিকায় ২৭২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করলেও সেখানে নারী রয়েছেন মাত্র ১১ জন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও বেশ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দল এখন পর্যন্ত কোনো নারী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি।
সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন নারীদের প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীদের জন্য ১০০টি আসন সংরক্ষণের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। পরবর্তীতে দলগুলোর সম্মতিতে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী দেওয়ার একটি ‘ভদ্রোচিত বোঝাপড়া’ বা অলিখিত চুক্তি হয়। জুলাই সনদে উল্লেখ করা হয়, পরবর্তী নির্বাচনে প্রতিটি দল ন্যূনতম ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী দেবে এবং পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে। কিন্তু প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, সেই অঙ্গীকার রক্ষায় দলগুলোর মধ্যে চরম অনীহা কাজ করছে।
বিএনপির ঘোষিত তালিকায় নারী প্রার্থীর সংখ্যা ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানিয়েছেন, এখনো বেশ কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে এবং চূড়ান্ত তালিকায় নারী প্রার্থীর সংখ্যা বাড়তে পারে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় পরামর্শ সভায় ৪২ শতাংশ নারী সদস্য থাকলেও সংসদ নির্বাচনে এখনো কোনো নারী প্রার্থী দেওয়া হয়নি। দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. হামিদুর রহমান আযাদ জানিয়েছেন, সময় এখনো শেষ হয়নি এবং মিত্রদের সঙ্গে সমঝোতার পর প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সূত্রমতে, ঢাকা-১৮ আসনে একজন নারী প্রার্থীকে বিবেচনা করছে দলটি।
জুলাই সনদ প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ড. বদিউল আলম মজুমদার আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংস্কারের অঙ্গীকার রক্ষার নজির খুব একটা নেই। দলগুলো নিজেরাই ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু এখন তা রক্ষা না করলে অঙ্গীকার ভঙ্গের সংস্কৃতিতেই দেশ আটকে থাকবে। এনসিপি, এবি পার্টি ও জেএসডির মতো দলগুলোর তালিকায় কিছু নারী প্রার্থীর নাম থাকলেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিসের মতো ধর্মভিত্তিক দলগুলোর তালিকায় কোনো নারী নেই।
নারী নেত্রী ও বিশ্লেষকরা রাজনৈতিক দলগুলোর এই আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী হলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় তাদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে দলগুলো উদাসীন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শেহরীন আমিন ভূঁইয়া মোনামী উল্লেখ করেন, গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও অবদান থাকলেও রাষ্ট্রপরিচালনার কাঠামোতে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।