নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতি করে এমন কোনো কর্মকাণ্ডে ছাড় দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। তিনি বলেছেন, নির্বাচন উপলক্ষে চোরাগুপ্তা হামলা করে কেউ যেন পালাতে না পারে সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ইসির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা পর্যালোচনায় সিইসির সঙ্গে বৈঠক করেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানরা। বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রথমবারের মতো তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক। বৈঠকে তফসিলের পর সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন ও দিক নির্দেশনা নিয়ে কথা হয়েছে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ থেকে। এর বাইরেও কেউ চাইলে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
সভার শুরুতে শহীদ ওসমান হাদি, শান্তি মিশনে ৬ শহীদসহ কয়েকজনের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয় বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যুতে আগাম বার্তাসহ কেন সেটি রোধ করা গেল না সে বিষয়ে আইনের মধ্য থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যেন এমন পরিস্থিতি আর না হয়।
তিনি বলেন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, গোলাবারুদ উদ্ধার দল ও প্রার্থীর মাঝে আস্থার পরিবেশ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে সেগুলো করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর ১৩ তারিখ থেকেই অভিযান চলছে। প্রতিদিন সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। সবমিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয়ের কাজ চলছে। অতিদ্রুত যৌথ অভিযান শুরু হবে।
সানাউল্লাহ বলেন, দল ও প্রার্থীদের আচরণবিধি প্রতিপালনে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। কিছু ঘটনা নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করছে। তবে মূল দলগুলোর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি। ওসমান হাদির ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত কাজ তরান্বিত করতে নির্দেশনা দিয়েছি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে যেকোনো ঘটনাই নির্বাচনের অংশের মধ্য পড়ে। ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডে নির্বাচনে উৎসবের আমেজে ব্যাঘাত ঘটলেও ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হবে না। শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলার মতো এমন কোনো ঘটনা আর যেন না হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সে বিষয়ে ইসি নির্দেশনা দিয়েছে।
এদিকে সিইসির সঙ্গে বৈঠকে সুষ্ঠু সুন্দর ও অংশগ্রহণ নির্বাচনে জন্য ইসিকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধানরা।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এখন থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে।
রবিবার (২১ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের ইসি ভবনের অডিটোরিয়ামে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, যারা দস্যুতা করতে চায়, যারা আমার ভাইকে হত্যা করতে চায়, যারা ভোটে বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তাদের প্রতি মানবিক হব না। এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে। যারা আবেগ ব্যবহার করে অপকর্ম করেছে, তার প্রতিদান তারা পাবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতি করে এমন বিষয়কে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশন। এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান চালু হবে। তারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আটক শুরু করবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে বগুড়া-৭ (গাবতলী-শাজাহানপুর) আসন থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে বগুড়া শহরের গোহাইল রোডে অবস্থিত জেলা নির্বাচন অফিস থেকে বেগম জিয়ার পক্ষে এই মনোনয়ন ফরমটি উত্তোলন করেন তাঁর নির্বাচনী সমন্বয়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু। দীর্ঘ সময় পর দলীয় প্রধানের নির্বাচনে ফেরার এই খবরে বগুড়া জেলা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু সংবাদমাধ্যমকে জানান, বগুড়া-৭ আসনটি বেগম খালেদা জিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী দুর্গ হিসেবে পরিচিত, যেখান থেকে তিনি টানা তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি দাবি করেন, সাধারণ মানুষ তাঁদের প্রিয় নেত্রীকে আবারও সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে এবং ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। নির্বাচনী সমন্বয়ক হিসেবে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, এবার ভোটাররা বেগম খালেদা জিয়াকে আগের যেকোনো সময়ের চেয়েও বেশি এবং রেকর্ড পরিমাণ ভোট উপহার দিয়ে বিজয়ী করবেন।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বগুড়ার তৃণমূল পর্যায়েও ব্যাপক নির্বাচনি তৎপরতা শুরু হয়েছে। নেতাকর্মীরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার সরাসরি অংশগ্রহণ দলের জন্য বড় ধরনের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। বগুড়া-৭ আসনের সাধারণ মানুষের আবেগ ও ভালোবাসাকে পুঁজি করে বিএনপি এবার একটি বিশাল জয়ের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনি মাঠে নামার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। এর আগে সকালে তারেক রহমানের পক্ষেও বগুড়া-৬ আসন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিল, যা নিয়ে পুরো জেলায় এখন নির্বাচনি আমেজ বিরাজ করছে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়া জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা তৌফিকুর রহমানের কাছ থেকে তারেক রহমানের পক্ষে এই মনোনয়ন ফরমটি উত্তোলন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি তাদের নির্বাচনি কার্যক্রম ধাপে ধাপে গুছিয়ে আনছে এবং এরই মধ্যে দেশের ২৭৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। তারেক রহমানের মূল লক্ষ্য হলো যেকোনো মূল্যে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করা, আর সেই লক্ষ্যেই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিশেষ দিকনির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
নির্বাচনি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিক রুদ্ধদ্বার বৈঠক ও ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সবশেষ গতকাল শনিবার সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৯০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর সঙ্গে দিনব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসব বৈঠকে প্রার্থীদের জনসম্পৃক্ত অতিগুরুত্বপূর্ণ আটটি দফা নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাওয়ার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমদসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা প্রার্থীদের নির্বাচনি কৌশল ও আচরণবিধি প্রতিপালন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মো. জকরিয়ার তত্ত্বাবধানে মনোনয়ন ফরম পূরণ ও আইনি বিষয়গুলো নিয়ে প্রার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান নিজেই এসব সভায় সভাপতিত্ব করছেন এবং মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম তদারকি করছেন। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান দেশে ফেরার আগেই নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রাথমিক প্রস্তুতি ও আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে চায় দলটি। মূলত একটি সুশৃঙ্খল ও শক্তিশালী নির্বাচনি প্রচারণার মাধ্যমে রাজপথের পাশাপাশি ভোটের লড়াইয়েও নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য জানান দিতে প্রস্তুত হচ্ছে বিএনপি। তারেক রহমানের দেশে ফেরার পর এই নির্বাচনি উদ্দীপনা আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলে দলটির নীতিনির্ধারকরা আশা প্রকাশ করছেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে কেন্দ্র করে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে তিন বাহিনী প্রধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, রোববার দুপুর ১২টায় প্রথমে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করবেন সিইসি। এরপর দুপুর আড়াইটায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সিইসির সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠেয় এসব সভায় নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত থাকবেন।
সভার প্রধান আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে—নির্বাচন পূর্ববর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে যৌথ বাহিনীর অভিযান এবং প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলের জন্য প্রণীত আচরণ বিধিমালা-২০২৫ অনুযায়ী আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়গুলো। সভা শেষে তিন বাহিনী প্রধান ও পুলিশ প্রধানসহ নির্বাচন কমিশনাররা সার্বিক পরিস্থিতি ও যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই চলবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি এবং ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপর ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল সংশোধন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংশোধিত তফশিলে মূলত রিটার্নিং কর্মকর্তার আদেশের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তির সময়সীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে।
সংশোধিত সময়সূচি অনুযায়ী, প্রার্থীদের আপিল করার সময় দুই দিন কমিয়ে আনা হয়েছে। পূর্বে আপিল করার সময়সীমা ৫ থেকে ১১ জানুয়ারি নির্ধারণ করা থাকলেও, সংশোধনের পর তা ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, আপিল নিষ্পত্তির সময়সীমা দুই দিন বাড়ানো হয়েছে। আগে যা ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি ছিল, তা পরিবর্তন করে এখন ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হতে আর মাত্র ১০ দিন বাকি রয়েছে। ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, আগামী ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হবে।
উল্লেখ্য, গত ১১ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফশিল ঘোষণা করেছিলেন। গত ১৮ ডিসেম্বর তফশিল সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে এই সংশোধনী আনে নির্বাচন কমিশন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামসহ সম্ভাব্য ৮ প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে প্রার্থীদের পক্ষে মনোনয়ন সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের জন্য বিএনপির প্রার্থী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৪ আসনের জন্য জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার হোসেন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন।
এছাড়া একই দিন জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন চট্টগ্রাম-৬ আসনের জন্য বিএনপির প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৪ আসনে জন্য জামায়াতের প্রার্থী মো. শাহাদাত হোসেন এবং চট্টগ্রাম-১৫ আসনের জন্য জামায়াতের প্রার্থী মো. শাহজাহান চৌধুরী।
সব মিলিয়ে এদিন চট্টগ্রামের তিন রিটার্নিং কর্মকর্তার মধ্যে দুজনের কার্যালয় থেকে মোট ৭ জনের মনোনয়নপত্র নেওয়ার খবর এসেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম-১১ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে একজন ফরম সংগ্রহ করেছেন বলে জানান অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসাইন।
এ আসন থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ইস্রাফিল খসরুর পক্ষে এ মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন আমির খসরুর ব্যক্তিগত সহকারী মো. সেলিম।
সেলিম গণমাধ্যমকে বলেন, চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর জন্য এবং চট্টগ্রাম-১১ আসন থেকে তার ছেলে ইস্রাফিল খসরুর পক্ষে আমি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি।
এর আগে গত সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-৮ আসনে এরশাদ উল্লাহর পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। যিনি গত নভেম্বরে নির্বাচনী গণসংযোগে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। এছাড়া ওইদিন চট্টগ্রাম ১০ আসন থেকে এক স্বতন্ত্র প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
চট্টগ্রাম সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির উদ্দিন জানান, এখন পর্যন্ত ৮ প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ তারিখ আগামী ২৯ ডিসেম্বর। এর মধ্যে আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে বিএনপি ১৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করলেও এখনো চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) ও চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) আসনে কোন প্রার্থী ঘোষণা করেনি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ আগামী ২৯ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়েরের শেষ তারিখ ১১ জানুয়ারি। কমিশনে দায়ের করা আপিল নিষ্পত্তির তারিখ ১২ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি। নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ১২ ফেব্রুয়ারি।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন দুই সম্ভাব্য প্রার্থী। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে পৃথকভাবে এই আবেদন জানান কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
কাজী রেহা কবির সিগমা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনসহ অন্য কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, কিশোরগঞ্জ-৪ আসনে তার ব্যাপক জনসমর্থন থাকলেও গণসংযোগে ভীতি সৃষ্টি ও বাধা দিতে অষ্টগ্রাম থানা পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে। গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে তার কর্মী মো. কিয়ামত আলীকে পুরোনো একটি মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যদিও তিনি এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন না। সিগমা দাবি করেন, কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি অবিলম্বে এ ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে সিইসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অন্যদিকে, এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নিরাপত্তা সংক্রান্ত শঙ্কার কথা তুলে ধরেন। তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ তাকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না।
প্রার্থীদের নিরাপত্তা শঙ্কা প্রসঙ্গে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, ব্যারিস্টার ফুয়াদ পুলিশের অসহযোগিতার বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। কমিশন সার্বিকভাবে সব প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনে সবাই বিজয়ী হতে পারবেন না, জনগণ যাকে ভোট দেবেন তিনিই জিতবেন। এ সময় তিনি সব প্রার্থী ও সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের অবহিত করতে যাচ্ছেন পররাষ্ট্র সচিব রাষ্ট্রদূত আসাদ আলম সিয়াম। আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এই ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই আয়োজনে বিদেশি কূটনীতিকদের পাশাপাশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনরাও উপস্থিত থাকবেন। মূলত আসন্ন জাতীয় নির্বাচনসহ বাংলাদেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি ও প্রস্তুতি তুলে ধরাই হবে এই ব্রিফিংয়ের মূল উদ্দেশ্য।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, পররাষ্ট্র সচিব তার বক্তব্যে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, নির্বাচনী রোডম্যাপ এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিস্তারিত অবহিত করবেন। একইসঙ্গে দেশের বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করা হবে। এছাড়া একটি আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ তৈরিতে সরকার যে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, সেই বিষয়টিও কূটনীতিকদের সামনে গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হতে পারে বলে জানা গেছে।
সৌদি আরবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সভা-সমাবেশ ও প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় বাংলাদেশি নাগরিকদের আটক হওয়ার ঘটনা ঘটছে। রিয়াদের বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সম্প্রতি সৌদি আরবের বিভিন্ন এলাকায় ইসতেরাহা, হলরুম, হোটেল-রেস্তোরাঁ কিংবা ব্যক্তিগত বাসা-বাড়িতে অননুমোদিতভাবে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নির্বাচনি সভা-সমাবেশ আয়োজনের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া দলবদ্ধভাবে প্রচারণায় অংশ নেওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপরাধমূলক ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বেশ কয়েকজন বাংলাদেশিকে আটক করেছে।
এমতাবস্থায়, দূতাবাস প্রবাসীদের সৌদি আরবের আইনকানুন ও বিধিবিধান কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে। একইসঙ্গে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া যেকোনো ধরনের সভা-সমাবেশ আয়োজন, দলবদ্ধ প্রচারণা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ১৭৫ থেকে ২০০ জনের মতো পর্যবেক্ষক আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
সচিব জানান, নির্বাচন পর্যবেক্ষণের বিষয়ে ইইউ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে একটি প্রশাসনিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য আইভার্স ইজাপসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে। ব্রাসেলস থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের পর বিষয়টি প্রকাশ করা হয়েছে।
চুক্তির আওতায় পর্যবেক্ষক দলকে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক সহায়তা এবং যাতায়াতের সুবিধা প্রদান করবে কমিশন। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের মতো বিশেষ এলাকাগুলোতে স্থানীয় নিরাপত্তা প্রোটোকল কঠোরভাবে মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সঙ্গে আনবেন এবং কাজ শেষে তা ফেরত নিয়ে যাবেন। এছাড়া তারা বাংলাদেশের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা মেনেই তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ইইউ ছাড়াও তুরস্ক এবং আরও কয়েকটি সংস্থা থেকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে প্রস্তাবনা পাওয়া গেছে বলেও জানান ইসি সচিব।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ভোট দিতে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৩১৫ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা এ নিবন্ধনে অংশ নিচ্ছেন। পাশাপাশি নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত এবং নিজ ভোটার এলাকার বাইরে অবস্থানরত সরকারি চাকরিজীবীরাও এই অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করছেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত দেশের সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে ৪৫ হাজার ৪৪০ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, মোট নিবন্ধনকারীদের মধ্যে ৪ লাখ ২৯ হাজার ৯৬৫ জন পুরুষ ও ২৮ হাজার ৩৪৮ জন নারী ভোটার এখন পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন।
সৌদি আরবের প্রবাসীরা সর্বোচ্চ নিবন্ধন করেছেন, ১ লাখ ১৭ হাজার ১১৭ জন। এছাড়া, কাতারে ৪২ হাজার ২০১, মালয়েশিয়ায় ২৯ হাজার ৭৯৩, ওমানে ২৮ হাজার ৯১৫, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২৩ হাজার ২৫, যুক্তরাষ্ট্রে ২২ হাজার ৬৪০, সিঙ্গাপুরে ১৬ হাজার ৬৯৮, যুক্তরাজ্যে ১৬ হাজার ২৬১, কুয়েতে ১৪ হাজার ৮৫৯, ইতালিতে ১২ হাজার ৪৯৯, কানাডায় ১০ হাজার ৬৫১, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৯ হাজার ৭৯৭ এবং অস্ট্রেলিয়ায় ৮ হাজার ৬৪৬ জন ভোটার নিবন্ধন করেছেন।
আউট অব কান্ট্রি ভোটিং সিস্টেম অ্যান্ড ইমপ্লিমেন্টেশন (ওসিভি-এসডিআই) প্রকল্পের টিম লিডার সালীম আহমাদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রবাসীদের কাছে পৌঁছানোই প্রধান চ্যালেঞ্জ। আমরা দূতাবাসগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে প্রবাসীদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে দূতাবাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং হয়।’
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী দায়িত্বে নিয়োজিত এবং নিজ ভোটার এলাকার বাইরে থাকা সরকারি চাকরিজীবীদের নিবন্ধন পুরোপুরি শুরু হয়েছে। ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোট (আইসিপিভি)-এর মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোটার নিবন্ধন করতে পারবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
তিনি আরও জানান, ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিংয়ে খরচ পড়বে মাত্র ২২ টাকা, যেখানে প্রবাসীদের জন্য গড়ে খরচ হবে ৭০০ টাকা।
সালীম আহমাদ খান বলেন, এই গতিতে নিবন্ধন চললে পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপে প্রবাসী ভোটারের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ লাখ হতে পারে।
সরকারি চাকরিজীবীরা তফসিল ঘোষণার পর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের এক বার্তায় বলা হয়, ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট-২০২৬ উপলক্ষে নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী, নিজ ভোটার এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী এবং আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি জানান, এ চুক্তির আওতায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য আইভার্স ইজাবসের নেতৃত্বে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার আগে ও পরে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় ১৭৫ থেকে ২০০ জন পর্যবেক্ষক এসে নির্বাচন কমিশনের সার্বিক সহায়তায় এ পর্যবেক্ষণের কাজ করবেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের উদ্দেশে ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসি সচিব বলেন, ‘এই চুক্তির আলোকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কাছে নির্বাচনে কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একটা ডেলিগেশন পাঠাবেন। তাদের সঙ্গে আমাদের যে একটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে সে চুক্তির আওতায় আমরা তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিবো।’
এক্ষেত্রে আমরা তাদেরকে শুধু একটা জিনিসই অনুরোধ করেছি, সেটা হচ্ছে যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে লোকাল প্রোটোকল মানতে হবে। যেমন - পার্বত্য চট্টগ্রামে লোকাল প্রোটোকল প্রয়োজনীয় হলে সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে বলে জানান তিনি।
গত ১৫ ডিসেম্বর চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলেও তার অনুমোদন ১৬ ডিসেম্বর রাতে পাবার কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলেও তার অনুমোদন হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দপ্তরে, বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে। মঙ্গলবার রাতেই তারা অনুমোদন দিয়ে আমাদের বার্তা পাঠিয়েছেন।’
এ বিষয়ে ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, খুব দ্রুতই এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।