রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫
১৩ পৌষ ১৪৩২

মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ২৭৮০, জমা দিলেন ৩১ জন: শেষ সময় আগামীকাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৮:৪২

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে এ পর্যন্ত সারাদেশে ২ হাজার ৭৮০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল পর্যন্ত এই বিপুল সংখ্যক প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করলেও এখন পর্যন্ত তা জমা দেওয়ার হার বেশ কম। নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, সংগ্রহকৃত ২ হাজার ৭৮০টি ফরমের বিপরীতে মাত্র ৩১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র চূড়ান্তভাবে দাখিল করেছেন।

নির্বাচন কমিশনের ১০টি প্রশাসনিক অঞ্চলের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৫০৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে জমা দিয়েছেন মাত্র ২ জন। এর পরেই কুমিলল্লা অঞ্চলে ৪০৫ জন এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৩৩৯ জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে খুলনায় ৩০২ জন, রংপুরে ২৮৩ জন, রাজশাহীতে ২৬৯ জন, চট্টগ্রামে ২৪০ জন, বরিশালে ১৬১ জন এবং ফরিদপুর অঞ্চলে ১৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। সবচেয়ে কম ১২৭ জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন সিলেট অঞ্চলে। দাখিলের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলে যথাক্রমে ৮ ও ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে রাজশাহী ও কুমিলল্লা অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীই তাঁদের ফরম জমা দেননি।

নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করেছে যে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার জন্য হাতে আর মাত্র এক দিন সময় বাকি আছে। আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে সকল প্রার্থীকে তাঁদের সংগৃহীত ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। ফলে শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অফিসগুলোতে ব্যাপক ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে আপিল করা যাবে এবং ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সেসব আপিল নিষ্পত্তি হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং পরদিন ২২ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। সব শেষে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও নথিপত্র গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সকল দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।


তারেক রহমানের ভোটার আবেদন অনুমোদন করল নির্বাচন কমিশন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক রুহুল আমিন মল্লিক এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় পর দেশের মাটিতে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় যুক্ত হলেন তিনি।

এর আগে গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভোটার নিবন্ধনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেন তারেক রহমান। দুপুর ১টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছান এবং আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ প্রদানের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন আজ তাঁর এই আবেদনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করল।

তারেক রহমানের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও একই দিনে ভোটার নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। জাইমা ও জোবায়দা রহমান দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ইটিআই ভবনে প্রবেশ করে ১২টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের অন্তর্গত গুলশান এলাকার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।

ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ করে শনিবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে ইটিআই ভবন ত্যাগ করেন তারেক রহমান। এ সময় ভবনের বাইরে ও রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী তাঁকে মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানান। তারেক রহমানও গাড়িতে ওঠার আগে হাত নেড়ে তাঁদের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার অভিবাদন গ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে তাঁর এই ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়াটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথে একটি বড় আইনি অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মূলত নাগরিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হওয়ার লক্ষ্যেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।


জাতীয় সংসদ নির্বাচন: কক্সবাজার-১ আসনে মনোনয়ন জমা দিলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৭:৫৮
চকরিয়া - পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।

আজ (২৮ ডিসেম্বর ) চকরিয়া উপজেলার সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ইউএনও বরাবর তিনি এই মনোনয়নপত্র জমা দেন।

​মনোনয়নপত্র জমাদানকালে উপস্থিত ছিলেন-কক্সবাজার জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক,কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী (খোকন মিয়া),মাতামুহুরী (সাংগঠনিক) উপজেলা বিএনপি সভাপতি জামিল ইব্রাহীম চৌধুরী,পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি বাহাদুর শাহ,চকরিয়া পৌরসভা বিএনপি সভাপতি নুরুল ইসলাম হায়দার,চকরিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী,পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন,চকরিয়া পৌরসভা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম,মাতামুহুরি (সাংগঠনিক) উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হেফাজতুর রহমান টিপুসহ বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে আমরা আশাবাদী। চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষই নির্ধারণ করবে তাদের নিরাপদ নেতৃত্ব।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ) শাহীন দেলোয়ার দৈনিক বাংলা কে বলেন, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে ৪ জন। জমা দিয়েছেন একজন। আগামীকাল (২৯ ডিসেম্বর ) মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ তারিখ।

উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর বিএনপি কক্সবাজার -১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের তফশিল অনুযায়ী আগামীকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের কাজ চলবে বলে জানান নির্বাচন অফিসার।


নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ হারালেন মাহমুদুর রহমান মান্না

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পথ কার্যত রুদ্ধ হয়ে গেল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার। ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার ও সিআইবি স্থগিত চেয়ে করা তাঁর আপিল আবেদনের ওপর আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত কোনো অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ না দিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনের আগে কোনো আইনি সুরক্ষা না পাওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি।

জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত তাঁকে ঋণখেলাপির দায় থেকে মুক্ত থাকতে হয়। আগামীকাল সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় আজ রবিবারের মধ্যেই মান্নার ঋণখেলাপি তকমা থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু বিচারপতি রেজাউল হকের চেম্বার আদালত আজ কোনো স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় আইনিভাবে তিনি এখনো ঋণখেলাপি হিসেবেই বহাল আছেন। এর ফলে আইনত তাঁর পক্ষে আর এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্না তাঁর নাম ঋণখেলাপির তালিকা থেকে সরাতে এবং সিআইবি রিপোর্ট স্থগিত করতে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তবে হাইকোর্ট সেই রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিলে তিনি চেম্বার জজ আদালতের দ্বারস্থ হন। আজকের শুনানিতে মান্নার পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার আহসানুল করিম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক সুমন এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আইন অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের পূর্বের দিনেও তিনি ঋণখেলাপি থাকায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আর কোনো আইনগত সুযোগ তাঁর নেই।

এদিকে মান্নার ঋণসংক্রান্ত জটিলতা আরও ঘনীভূত হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের একটি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে। জানা গেছে, ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদনের ক্ষেত্রে নথিপত্র জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় গত ২১ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁর পূর্বের স্যাংশন লেটার বাতিল করে দেয়। এই অভিযোগ এবং আইনি লড়াইয়ের মাঝেই নির্বাচনের সুযোগ হাতছাড়া হলো বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। গত কয়েকদিন ধরে তিনি এই সংকট কাটাতে দেশবাসীর কাছে অর্থ সাহায্যও চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে আইনি বাধাটি আর অতিক্রম করা সম্ভব হলো না। এর ফলে বগুড়া-২ আসন থেকে তাঁর নির্বাচনের পরিকল্পনা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।


প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের বৈঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছে বিএনপির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিইসির কার্যালয়ে এই বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।

বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। অন্যদিকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।

বৈঠকের সুনির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি, নির্বাচনী পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভোটার নিবন্ধন এবং নির্বাচনী কার্যক্রম গুছিয়ে আনার প্রেক্ষাপটে ইসির সঙ্গে দলটির এই সাক্ষাৎ বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে। সভা শেষে বিএনপির প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে ব্রিফিং করার কথা রয়েছে। মূলত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইসির সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক যোগাযোগের অংশ হিসেবেই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।


মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ সময় আগামীকাল; সময় বাড়ানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায়। আজ রোববার নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় বাড়ানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, এখন পর্যন্ত মূল সময়সূচিই বহাল রয়েছে। তবে যদি দেশের সকল রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে, তবেই কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের লক্ষে কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে প্রস্তাবক ও সমর্থকসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারবেন। এই সময়ে কোনো ধরনের জনসমাবেশ, মিছিল বা মোটরসাইকেল শো-ডাউন করা যাবে না; অন্যথায় একে আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে। সিইসি ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই ও আপিল নিষ্পত্তি শেষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি। এরপর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং প্রার্থীরা ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবেন।

মনোনয়নপত্র জমার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বেশ কিছু আইনি ও দাপ্তরিক নথি দাখিল করতে হবে। দলীয় প্রার্থীদের জন্য দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দলীয় মনোনয়নের মূল কপি বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে (যদি আগে সংসদ সদস্য নির্বাচিত না হয়ে থাকেন) সংশ্লিষ্ট আসনের মোট ভোটারের অন্তত এক শতাংশের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর তালিকা নির্দিষ্ট ছকে জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও প্রতিটি আসনের জন্য জামানত বাবদ ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট বা ট্রেজারি চালানের প্রমাণপত্র অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে।

প্রার্থীদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল করতে হবে, যেখানে সম্পদের বিবরণ, বার্ষিক আয়-ব্যয় এবং ফৌজদারি মামলার তথ্য উল্লেখ থাকতে হবে। সেই সাথে সর্বশেষ আয়কর রিটার্নের কপি, সম্পদের বিবরণী (আইটি-১০বি) এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্রের মূল কপির সাথে দুই সেট ফটোকপি, তিন কপি সত্যায়িত পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং প্রার্থী ও প্রস্তাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ভোটার তালিকার সংশ্লিষ্ট অংশ জমা দেওয়া আবশ্যক। এ ছাড়াও নির্বাচনের ব্যয় পরিচালনার জন্য প্রার্থীর নিজের বা এজেন্টের নামে খোলা একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রদান করতে হবে। মূলত একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতেই কমিশন এই শর্তগুলো পালনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।


ভোলা-২ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম দাখিল

আপডেটেড ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১৩:৪১
ভোলা জেলা প্রতিনিধি

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন- দৌলতখান) আসনে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো: হাফিজ ইব্রাহিম।

রবিবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার (ইউএনও) মনোরঞ্জন বর্মন এ মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেন।

দীর্ঘদিন পর নির্বাচনমুখী এই আয়োজন ঘিরে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। এর আগে উপজেলা সড়কে হাফিজ ইব্রাহিমের বাসভবন কুড়ালিয়া হাউজে মনোয়ন পত্র দাখিল উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।

দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্নার মাগফেরাত কামনা, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও নেক হায়াৎ কামনা, এবং তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহিমের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। একই সঙ্গে ভোলা-২ আসনের মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ভোলার স্বনামধন্য আলেম বাটামারা দরবার শরীফের বর্তমান গদিনীশিন পীরসাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ মহিবুল্যাহ।

দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন, ভোলা জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আল এমরান খোকন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কাজী মো: আজম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান কবির, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী আকবর হাওলাদার, দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইকবাল হোসেন প্রমূখ।


তারেক রহমানের সম্মানে ঢাকা-১৭ আসন ছাড়লেন পার্থ, লড়বেন ভোলা-১ থেকে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের নির্বাচনী সমীকরণে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এই আসনটি থেকে প্রাথমিকভাবে বিএনপির মিত্র দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের নির্বাচন করার কথা ছিল এবং তিনি দীর্ঘদিন সেখানে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। তবে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) এই আসন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসায় পার্থ এই আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়েই তিনি এই ছাড় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

আন্দালিব রহমান পার্থ এই বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “ঢাকা-১৭ আসনের জন্য তারেক ভাই-ই হচ্ছেন সেরা বা বেস্ট প্রার্থী। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের জায়গা থেকে আমি এই আসন থেকে আর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিনি।” তিনি মনে করেন, তারেক রহমানের সরাসরি অংশগ্রহণ এই আসনে দল ও জোটের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে পার্থ জানান যে, তিনি ইতিমধ্যে তাঁর পৈতৃক এলাকা ভোলা-১ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য গতকালই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এদিকে, ঢাকা-১৭ আসন থেকে তারেক রহমানের পক্ষে আজ সকালে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার আজ সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে এই মনোনয়ন ফরমটি সংগ্রহ করেন। বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর দপ্তর থেকে এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং রাজধানীর এই অভিজাত আসন থেকে সরাসরি নির্বাচনের ঘোষণা রাজনৈতিক মহলে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। মূলত জোটের অভ্যন্তরীণ সমঝোতা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি শরিক দলের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমেই এই রদবদলটি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আন্দালিব রহমান পার্থের এই সিদ্ধান্ত জোটের ঐক্যকে যেমন সুসংহত করল, তেমনি ঢাকা-১৭ ও ভোলা-১ উভয় আসনেই নির্বাচনী আমেজকে আরও বাড়িয়ে দিল। বর্তমানে মনোনয়নপত্র জমাদান ও পরবর্তী নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি ও এর মিত্র দলগুলোর প্রার্থীরা।


ঢাকা-১৭ আসনে চমক দেখাতে চায় বিএনপি: তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনে বড় ধরনের চমক দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে এই আসন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। তারেক রহমানের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এই মনোনয়ন ফরমটি উত্তোলন করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে তারেক রহমানের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের এই প্রক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা-১৭ আসনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় করার পরিকল্পনা করছে দলের হাইকমান্ড। তবে এই আসনটি নিয়ে শরিক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের সঙ্গে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। পার্থ আগে থেকেই এই আসনটিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সূত্রমতে, বিএনপি পার্থকে তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি যদি বিএনপিতে যোগ দেন, তবে ঢাকা-১৭ আসনটি তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যথায়, বিএনপি তাঁকে ভোলা সদর আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে। তবে এ বিষয়ে আজ বা আগামীকাল সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে বিএনপি।

এদিকে, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বিএনপিতে যোগদানের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিএনপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি এবং তিনি তাঁর নিজ দল বিজেপির প্রতীক নিয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন। ফলে ঢাকা-১৭ আসনে তারেক রহমান বনাম পার্থের এক সম্ভাব্য লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এরপর আগামী মঙ্গলবার থেকে রোববার পর্যন্ত চলবে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে এবং ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সেসব আপিল নিষ্পত্তি হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তারেক রহমানের এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী সমীকরণকে আমূল বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।


১৫ বছরে দেশে প্রকৃত অর্থে কোনো নির্বাচন হয়নি : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভোলা প্রতিনিধি

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সকল রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা আশা করছি, একটি অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, এ নির্বাচনের বিশেষ গুরুত্বের কয়েকটি কারণ রয়েছে। সত্যিকার অর্থে গত ১৫ বছরে দেশে কোনো নির্বাচন হয়নি। যদি নির্বাচনের কথা বলা হয়, তাহলে সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৮ সালে। এর অর্থ হলো, বিপুল সংখ্যক জনগণ, যাদের বয়স ৩০ বছরের নিচে বা আশপাশে, তারা কখনো নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাননি।

শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১২টার দিকে ভোলা শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ‘ভোটের গাড়ি’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) প্রত্যেকটি মানুষ যেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দেখতে পায়। আমরা মনে করি, এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণেই আমরা চাই, মানুষ যেন তার ইচ্ছামতো ভোট দিতে পারে। আমি আপনাদের স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, এই সরকার কোনো দলের পক্ষে নয়। আগামী পরশুদিন মনোনয়ন সংগ্রহের শেষ দিন। তখন আপনারা জানতে পারবেন কারা কারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে সবাই ভোট দিয়ে আপনাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছু বিশেষ দাবিদাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তনটি হয়েছে (আওয়ামী লীগ সরকার পতন)। যে পরিবর্তনের জন্য আমাদের ছেলে-মেয়েরা জীবন দিয়েছে। তাদের দাবিদাওয়াকে সামনে রেখে আমরা একটি ছোটখাটো তালিকা তৈরি করেছি। শতভাগ প্রতিফলিত হয়েছে- তা নয়, তবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকাটি প্রথমবারের মতো জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে, যাতে আপনারা বলতে পারেন এসব পরিবর্তন আপনারা চান কি চান না।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, আলাদাভাবে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। তালিকার শতভাগ বিষয়ের মধ্যে যদি আপনারা ৮০ থেকে ৯০ ভাগ বিষয়ে একমত হন, তাহলে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিতে পারবেন। আর একমত না হলে ‘না’ ভোট দেওয়ার সুযোগও থাকবে। সামনে আমাদের আপামর জনগণের দুটি দায়িত্ব রয়েছে কী কী পরিবর্তন চান বা চান না, সে বিষয়ে মতামত দেওয়ার। যদি পরিবর্তন চান, তাহলে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে পরবর্তী বাংলাদেশের ওপর। কারণ, পরবর্তী বাংলাদেশে যারা জনপ্রতিনিধি হয়ে আসবেন, তারা আপনাদের মতামতকে মূল্যায়ন করবেন।

‘আরেকটি বিষয় হলো, দেশ যে স্বাভাবিক লাইন থেকে সরে গিয়েছিল, তা আবার যথাযথ স্থানে ফিরিয়ে আনা। যাতে আপনাদের অধিকার থেকে কেউ বঞ্চিত করতে না পারে, সে ধরনের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। পরবর্তী সংসদের দায়িত্ব থাকবে এসব বিষয় নিয়ে কাজ করা। আপনাদের মতামতকে আপনাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের পক্ষে অগ্রাহ্য করা সম্ভব হবে না, কারণ কিছুদিন পর ভোটের জন্য তাদের আবার আপনাদের কাছেই যেতে হবে।’

অনুষ্ঠানে ভোলার জেলা প্রশাসক ডা. শামীম রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভোলার পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার। এছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।


পার্বত্য তিন জেলার ৩৪ ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টার ব্যবহার করবে ইসি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় দুর্গম ভোটকেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হেলিকপ্টার ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি—এই তিন জেলায় মোট ৩৪টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী মালামাল পরিবহন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আনা-নেওয়ার কাজে এ হেলিকপ্টার সহায়তা নেওয়া হবে।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) ইসির উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা যায়। ইতোমধ্যে এ চিঠি সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারকে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ১১টি ভোটকেন্দ্রে, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় ২০টি ভোটকেন্দ্রে এবং খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ০৩টি ভোটকেন্দ্র, মোট ৩টি পার্বত্য জেলার ৩৪টি ভোটকেন্দ্রের ১০৯টি ভোটকক্ষের নির্বাচনী মালামাল, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদসাদের (আনসার ও ভিডিপি সদস্যসহ) উপজেলা সদর হতে ভোটকেন্দ্রে প্রেরণ এবং উপজেলা সদরে ফেরত আনার জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা প্রয়োজন হবে।

নির্বাচনী দ্রব্যাদির পরিমান এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা, বিদ্যমান হেলিকপ্টারের ধারণ ক্ষমতা, আবহাওয়া ইত্যাদি বিবেচনায় যাতায়াতের তারিখ ও প্রাসঙ্গিক বিষয় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের সাথে আলোচনাক্রমে নির্ধারণের জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে।

ইসি জানায়, পার্বত্য এলাকা ছাড়াও দ্বীপ, হাওর-বাওর বা অন্যান্য দুর্গম অঞ্চলে সম্ভাব্য উদ্ধার তৎপরতা এবং ব্যালট পেপারসহ অন্যানা নির্বাচনী মালামাল তাৎক্ষণিকভাবে প্রেরণের জন্য তেজগাঁও হেলিপ্যাডে দুটি হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডবাই রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।

নির্বাচনী এলাকার শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, র‍্যাব, আর্মড পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের তাৎক্ষণিক প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চাহিদার ভিত্তিতে হেলিকপ্টার ব্যবহারের ব্যবস্থাও রাখা হবে। এসব হেলিকপ্টার ব্যবহারের ব্যয় চাহিদা প্রাপ্তি সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বাজেট থেকে বরাদ্দ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি। এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হেলিকপ্টার সার্ভিস প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা ও অনুরোধ জানানো হয়েছে এ চিঠির মাধ্যমে।

উল্লেখ্য, আগামী বছর ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে।


ঋণখেলাপি না হতে জনগনের কাছে ৩৬ কোটি টাকা চাইলেন মান্না

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। ৩৬ কোটি টাকার খেলাপি ঋণের জালে আটকে যাওয়ায় তাঁর নির্বাচনে প্রার্থিতা বাতিলের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে এই সংকট থেকে উত্তরণ এবং নির্বাচনী লড়াইয়ে টিকে থাকতে দেশের মানুষের কাছে ৩৬ কোটি টাকা সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভাবনীয় আহ্বান জানান।

মান্না তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জে একটি হিমাগারের ব্যবসায়িক অংশীদার ছিলেন। গত ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী নাজমুল কাদির শাহজাহান দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, যাঁর নামে একাধিক মামলা রয়েছে। শিবগঞ্জের ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে নেওয়া ৩৬ কোটি টাকা ঋণের মূল স্বাক্ষরকারী ছিলেন ওই পলাতক সহযোগী। মান্না জানান, তিনি ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ব্যাংকে আবেদন করলেও একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় আইনি জটিলতা তৈরি করা হয়েছে যাতে তিনি নির্বাচন থেকে ছিটকে পড়েন। এক্ষেত্রে তিনি সরাসরি বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনের বিএনপি নেতাদের প্রভাব ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন।

নিজের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, সাধারণত ব্যাংকের পাওনা পরিশোধ করলেই ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নাম কাটানো সম্ভব। তাই তিনি দেশবাসীর কাছে অনুরোধ করেন, যদি কেউ এক বছরের জন্য তাঁকে এই ৩৬ কোটি টাকা দিয়ে সহায়তা করেন, তবে তিনি ঋণখেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে পারবেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া শেষে তাঁর সচল ব্যবসা থেকে এই অর্থ ফেরত দেওয়া সম্ভব হবে। মান্না স্পষ্ট করে বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি তাঁর পূর্ণ শক্তি নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চান এবং এটি তাঁর একটি গণতান্ত্রিক অধিকার।

আইনি প্রক্রিয়ার বিষয়ে মান্না জানান, আগামীকাল রোববার এই সংক্রান্ত একটি বিষয়ে আদালতে রায় হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি সেখানে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ব্যক্ত করলেও অভিযোগ করেন যে, এর আগে তাঁর পক্ষে আসা আদেশগুলো রাজনৈতিক প্রভাবে স্থগিত করা হয়েছে। তিনি মনে করেন, বিচারব্যবস্থা এখনো কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রভাবিত হচ্ছে। যদি কালকের রায় তাঁর বিপক্ষে যায়, তবে তিনি উচ্চ আদালতের চেম্বার জজ বরাবর আবেদনসহ আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। মূলত একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে দাবি করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। সংবাদ সম্মেলনে নাগরিক ঐক্যের অন্যান্য শীর্ষ নেতারা উপস্থিত থেকে তাঁর এই বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানান।


ঢাকা-১৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিলেন মহিউদ্দিন রনি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও আলোচিত আন্দোলনকারী মহিউদ্দিন রনি। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে তিনি এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।

ভিডিও বার্তায় নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে রনি বলেন, “ভারতীয় আধিপত্যবাদ এবং ভিনদেশি সব ধরনের আগ্রাসনমুক্ত একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে আমি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসন থেকে স্বতন্ত্র এমপি প্রার্থী হিসেবে কাজ করতে চাই।” তিনি মনে করেন, সাধারণ মানুষের অধিকার রক্ষা এবং দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই নির্বাচনে তাঁর অংশগ্রহণ জরুরি।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার প্রাথমিক ধাপ হিসেবে সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্দিষ্ট সংখ্যক ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকার প্রয়োজন হয়। এ বিষয়ে রনি জানান, আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তাঁকে এই সমর্থকদের তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হবে। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশাল এই কাজ সম্পন্ন করতে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার অর্থাৎ—এয়ারপোর্ট, উত্তরা, খিলক্ষেত, আশকোনা, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও তুরাগ এলাকার অন্তত ২০০ জন স্বেচ্ছাসেবী ও শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতা কামনা করেছেন। যারা মাঠ পর্যায়ে সাধারণ ভোটারদের কাছ থেকে সমর্থন সংগ্রহে তাঁকে সহায়তা করবেন।

উল্লেখ্য, মহিউদ্দিন রনি এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দীর্ঘ একক ও যৌথ আন্দোলনের মাধ্যমে দেশজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। এবার সরাসরি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে নতুন এক অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন। তাঁর এই ঘোষণা উত্তরার রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তরুণ ও সাধারণ ভোটারদের একটি বড় অংশ রনির এই সাহসী উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন। এখন দেখার বিষয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় জনসমর্থন সংগ্রহ করে তিনি চূড়ান্তভাবে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামতে পারেন কি না।


ঢাকা-৯ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন ডা. তাসনিম জারা

আপডেটেড ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ২০:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ডা. জারা উল্লেখ করেন, বর্তমান সময়ের বাস্তবিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে তিনি কোনো নির্দিষ্ট দল বা জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ার যে প্রতিশ্রুতি তিনি দেশবাসীকে দিয়েছিলেন, তা রক্ষা করতেই এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর এই অবস্থান।

ডা. তাসনিম জারা তাঁর পোস্টে স্বীকার করেন যে, একটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়ার ক্ষেত্রে যে সাংগঠনিক শক্তি, সুসংগঠিত কর্মী বাহিনী এবং প্রশাসনিক নিরাপত্তা সুবিধা পাওয়া যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় তিনি সেসব সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। তবুও সাধারণ মানুষের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে তিনি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, “আপনাদের মেয়ে হিসেবে আমার সততা ও নিষ্ঠার ওপর ভিত্তি করে যদি আপনারা স্নেহ ও সমর্থন দেন, তবেই আমি সেবা করার সুযোগ পাব।”

নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তাঁর প্রার্থিতা বৈধ করার জন্য আইনি বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী ঢাকা-৯ আসনের ৪ হাজার ৬৯৩ জন ভোটারের সমর্থনযুক্ত স্বাক্ষর প্রয়োজন। এই বিপুল পরিমাণ স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ আগামীকাল থেকেই শুরু করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ডা. জারা মনে করেন, মাত্র এক দিনে এত মানুষের সমর্থন সংগ্রহ করা বেশ কঠিন হলেও এলাকাবাসী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকলে এটি সফল করা সম্ভব। এই কাজে সহযোগিতার জন্য তিনি একটি ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে আগ্রহীদের যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

আর্থিক স্বচ্ছতার নজির দেখিয়ে ডা. তাসনিম জারা তাঁর ফেসবুক পোস্টে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, এর আগে তাঁর নির্বাচনী তহবিলের জন্য যারা অর্থ অনুদান দিয়েছিলেন, তাঁর এই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে কেউ যদি অর্থ ফেরত পেতে চান, তবে তাঁদের তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। অনুদান প্রদানকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি অর্থ ফেরতের জন্য একটি বিশেষ অনলাইন ফর্মের লিংক শেয়ার করেছেন। বিকাশের মাধ্যমে পাঠানো অর্থ এবং ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা অনুদান ফেরতের প্রক্রিয়া সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিত তথ্য প্রদান করেছেন। ডা. জারার এই সিদ্ধান্ত এবং স্বচ্ছতা রাজনৈতিক মহলে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মূলত জনগণের ওপর ভরসা করেই তিনি রাজধানীর এই গুরুত্বপূর্ণ আসনে স্বতন্ত্রভাবে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।


banner close