আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে তাঁর পক্ষে এই মনোনয়ন ফরম দাখিল করা হয়।
তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্রটি জমা দেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার। এ সময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম এবং দলের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে তারেক রহমানের সরাসরি নির্বাচনি লড়াইয়ে নামার এই প্রক্রিয়াটি রাজনৈতিক মহলে এক বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-১৭ আসন থেকে তারেক রহমানের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর এই আসন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির মিত্র দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এর পরিবর্তে তিনি তাঁর পৈতৃক এলাকা ভোলা-১ আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। ব্যারিস্টার পার্থ ইতিপূর্বেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোলা-১ আসন থেকে বিএনপির সমর্থনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আজই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় রাজধানীর এই হাই-প্রোফাইল আসনটিকে ঘিরে এখন ব্যাপক নির্বাচনি আমেজ বিরাজ করছে। তারেক রহমানের এই অংশগ্রহণ বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করেছে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষরের পরিবর্তে টিপসই দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় তাঁর পক্ষে নির্ধারিত আসনগুলোতে দাপ্তরিক এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, বেগম খালেদা জিয়া এবার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে নির্বাচনে লড়বেন, যার মধ্যে রয়েছে বগুড়া-৭, দিনাজপুর-৩ এবং ফেনী-১ আসন।
ইতিমধ্যে খালেদা জিয়ার পক্ষে দিনাজপুর-৩ আসনের মনোনয়নপত্রটি গতকাল রবিবার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। দিনাজপুর জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এই ফরমটি দাখিল করেন। আজ সোমবার বগুড়া-৭ আসনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন তাঁর উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু ও জেলা বিএনপির সভাপতি। একই দিনে ফেনী-১ আসনের মনোনয়নপত্র জমা দেবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু। মূলত বয়স ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার তিনি স্বাক্ষরের পরিবর্তে টিপসই ব্যবহার করেছেন বলে জানা গেছে।
জিয়া পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষেও আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তিনি বগুড়া-৬ এবং রাজধানীর অভিজাত আসন ঢাকা-১৭ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারেক রহমানের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্যরা আজ এই ফরমগুলো সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করবেন। দীর্ঘ সময় পর শীর্ষ নেতৃত্বের এমন সরাসরি অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
তফসিল অনুযায়ী, সংগৃহীত সকল মনোনয়নপত্র আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারির মধ্যে যাচাই-বাছাই করা হবে। বৈধ প্রার্থীদের তালিকা থেকে নাম প্রত্যাহারের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ জানুয়ারি। এরপরের দিন অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। মূলত আজকের দিনটি প্রার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিকেল ৫টার পর আর কোনো মনোনয়নপত্র গ্রহণের সুযোগ থাকবে না। বর্তমানে সারা দেশে বিএনপি ও জোটের প্রার্থীরা তাঁদের প্রয়োজনীয় নথিপত্র নিয়ে নির্বাচন কার্যালয়ে ভিড় জমাচ্ছেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় আজ সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) শেষ হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তাঁদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রবিবার পর্যন্ত সারা দেশে ৩ হাজার ১১৪ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও দাখিল করেছেন মাত্র ১৬৬ জন। তবে শেষ দিনে আজ সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ নিবন্ধিত ৫৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত থাকায় দলটি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় কোনো প্রার্থী ৫ জনের বেশি ব্যক্তিকে সাথে নিতে পারবেন না এবং কোনো প্রকার মিছিল বা শোডাউন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থনসূচক তালিকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও সাবেক সংসদ সদস্যদের ক্ষেত্রে তা শিথিল রাখা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমার সময় জামানত বাবদ ৫০ হাজার টাকা এবং প্রয়োজনীয় হলফনামা ও দলিলাদি যুক্ত করা বাধ্যতামূলক।
মনোনয়নপত্র জমার সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, এমন প্রশ্নে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানিয়েছেন যে, এখন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যদি দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে সময়ের প্রয়োজন মনে করে এবং কমিশনকে অনুরোধ জানায়, তবে বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভোটের মূল তারিখ অর্থাৎ ১২ ফেব্রুয়ারি অপরিবর্তিত রেখেই যাচাই-বাছাই ও আপিলের সময় থেকে দু-একদিন সমন্বয় করে নেওয়া সম্ভব হতে পারে বলে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তফশিল অনুযায়ী, আজ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হলে আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগৃহীত মনোনয়নপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করবেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এরপর কোনো প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হলে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে তারা নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন, যা নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ জানুয়ারি এবং ২১ জানুয়ারি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। প্রতীক পাওয়ার পর ২২ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারবেন যা চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। সবশেষে ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে সারা দেশের নির্বাচনী এলাকাগুলোতে শেষ মুহূর্তের ব্যাপক প্রস্তুতি ও রাজনৈতিক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) এবং বগুড়া-৬ (সদর) আসনের মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে তিনি সশরীরে উপস্থিত হয়ে এই দুটি আসনের দলীয় মনোনয়নপত্রে স্বাক্ষর করেন।
বিএনপির মিডিয়া সেল এই তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছে, দীর্ঘ ১৭ বছর ৩ মাস প্রবাসে থাকার পর দেশে ফিরে এটিই তারেক রহমানের প্রথম কোনো নির্বাচনী দাপ্তরিক বা প্রশাসনিক কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ। সন্ধ্যায় সংশ্লিষ্ট দুটি আসনের নির্বাচনী সমন্বয়কদের নিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সভায় বসেন তিনি। সভা শেষে তিনি নিজ হাতে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্ধারিত ফরমে স্বাক্ষর সম্পন্ন করেন।
তারেক রহমানের এই সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর অভিজাত এলাকা ঢাকা-১৭ এবং তাঁর পৈতৃক এলাকা বগুড়া-৬ আসন থেকে তাঁর প্রার্থিতা সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্বাচনী সমীকরণকে আমূল বদলে দেবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় আজই যাবতীয় আইনি ও দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা। তাঁর এই পদক্ষেপে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মূলত দীর্ঘ নির্বাসন শেষে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তিনি দেশের সক্রিয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সুসংহত করার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন নওগাঁ-৫ (সদর) আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মনোনীত প্রার্থী মনিরা শারমিন। আজ রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন। মনিরা শারমিন দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর নওগাঁ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়েছিল এনসিপি। সেই তালিকায় নওগাঁ-৫ আসনে মনিরা শারমিনের নাম ছিল। তাঁর এই আকস্মিক সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে স্থানীয় রাজনীতি ও দলটির অভ্যন্তরে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জেলায় এনসিপি মনোনীত অন্য প্রার্থীরা হলেন—নওগাঁ-১ (পোরশা-সাপাহার-নিয়ামতপুর) আসনে কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক কৈলাশ চন্দ্র রবিদাস, নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামুইরহাট) আসনে জেলা কমিটির আহ্বায়ক মাহফুজার রহমান চৌধুরী, নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বাদলগাছী) আসনে পরিমল চন্দ্র উরাও এবং নওগাঁ-৪ (মান্দা) আসনে জেলা সদস্য আব্দুল হামিদ। নওগাঁ-৬ আসনে দলটির পক্ষ থেকে আগে থেকেই কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। মনিরা শারমিনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ফলে নওগাঁ-৫ আসনের নির্বাচনী সমীকরণে নতুন মোড় নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ধারাবাহিক পদত্যাগ ও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর মিছিলে এবার নওগাঁর এই নেত্রীর নামও যুক্ত হলো।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে এ পর্যন্ত সারাদেশে ২ হাজার ৭৮০ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর থেকে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল পর্যন্ত এই বিপুল সংখ্যক প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করলেও এখন পর্যন্ত তা জমা দেওয়ার হার বেশ কম। নির্বাচন কমিশনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক এ এস এম হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, সংগ্রহকৃত ২ হাজার ৭৮০টি ফরমের বিপরীতে মাত্র ৩১ জন প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র চূড়ান্তভাবে দাখিল করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের ১০টি প্রশাসনিক অঞ্চলের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকা অঞ্চলে সর্বোচ্চ ৫০৯ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন, যার মধ্যে জমা দিয়েছেন মাত্র ২ জন। এর পরেই কুমিলল্লা অঞ্চলে ৪০৫ জন এবং ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৩৩৯ জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন। অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে খুলনায় ৩০২ জন, রংপুরে ২৮৩ জন, রাজশাহীতে ২৬৯ জন, চট্টগ্রামে ২৪০ জন, বরিশালে ১৬১ জন এবং ফরিদপুর অঞ্চলে ১৪১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। সবচেয়ে কম ১২৭ জন প্রার্থী ফরম সংগ্রহ করেছেন সিলেট অঞ্চলে। দাখিলের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত ফরিদপুর ও বরিশাল অঞ্চলে যথাক্রমে ৮ ও ৭ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, যা অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা বেশি। তবে রাজশাহী ও কুমিলল্লা অঞ্চলে এখন পর্যন্ত কোনো প্রার্থীই তাঁদের ফরম জমা দেননি।
নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করেছে যে, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার জন্য হাতে আর মাত্র এক দিন সময় বাকি আছে। আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে সকল প্রার্থীকে তাঁদের সংগৃহীত ফরম পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের পর কোনো মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। ফলে শেষ দিনে মনোনয়নপত্র জমার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন অফিসগুলোতে ব্যাপক ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হওয়ার পর আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে যাচাই-বাছাই কার্যক্রম। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে আপিল করা যাবে এবং ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সেসব আপিল নিষ্পত্তি হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং পরদিন ২২ জানুয়ারি থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করতে পারবেন। সব শেষে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বর্তমানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ও নথিপত্র গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সকল দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক রুহুল আমিন মল্লিক এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘ ১৭ বছরেরও বেশি সময় পর দেশের মাটিতে ফিরে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় যুক্ত হলেন তিনি।
এর আগে গতকাল শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ভোটার নিবন্ধনের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করেন তারেক রহমান। দুপুর ১টার দিকে তিনি সেখানে পৌঁছান এবং আঙুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ প্রদানের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দেন। এ সময় নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে কমিশন আজ তাঁর এই আবেদনটি চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করল।
তারেক রহমানের পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং কন্যা ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও একই দিনে ভোটার নিবন্ধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন। জাইমা ও জোবায়দা রহমান দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ইটিআই ভবনে প্রবেশ করে ১২টা ৪৫ মিনিটের মধ্যে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের অন্তর্গত গুলশান এলাকার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছেন।
ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ করে শনিবার দুপুর ১টা ১৮ মিনিটের দিকে ইটিআই ভবন ত্যাগ করেন তারেক রহমান। এ সময় ভবনের বাইরে ও রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মী তাঁকে মুহুর্মুহু স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানান। তারেক রহমানও গাড়িতে ওঠার আগে হাত নেড়ে তাঁদের এই অকৃত্রিম ভালোবাসার অভিবাদন গ্রহণ করেন। দীর্ঘ প্রবাস জীবনের অবসান ঘটিয়ে তাঁর এই ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়াটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথে একটি বড় আইনি অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মূলত নাগরিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় হওয়ার লক্ষ্যেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ।
আজ (২৮ ডিসেম্বর ) চকরিয়া উপজেলার সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ইউএনও বরাবর তিনি এই মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মনোনয়নপত্র জমাদানকালে উপস্থিত ছিলেন-কক্সবাজার জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, চকরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এনামুল হক,কক্সবাজার জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী (খোকন মিয়া),মাতামুহুরী (সাংগঠনিক) উপজেলা বিএনপি সভাপতি জামিল ইব্রাহীম চৌধুরী,পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সভাপতি বাহাদুর শাহ,চকরিয়া পৌরসভা বিএনপি সভাপতি নুরুল ইসলাম হায়দার,চকরিয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক এম মোবারক আলী,পেকুয়া উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোছাইন,চকরিয়া পৌরসভা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম,মাতামুহুরি (সাংগঠনিক) উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হেফাজতুর রহমান টিপুসহ বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
মনোনয়নপত্র দাখিল শেষে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করা হবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে আমরা আশাবাদী। চকরিয়া-পেকুয়ার মানুষই নির্ধারণ করবে তাদের নিরাপদ নেতৃত্ব।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ) শাহীন দেলোয়ার দৈনিক বাংলা কে বলেন, মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছে ৪ জন। জমা দিয়েছেন একজন। আগামীকাল (২৯ ডিসেম্বর ) মনোনয়ন ফরম জমা দেয়ার শেষ তারিখ।
উল্লেখ্য, গত ৩ নভেম্বর বিএনপি কক্সবাজার -১ আসনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে। নির্বাচন কমিশনের তফশিল অনুযায়ী আগামীকাল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের কাজ চলবে বলে জানান নির্বাচন অফিসার।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার পথ কার্যত রুদ্ধ হয়ে গেল নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নার। ঋণখেলাপির তালিকা থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার ও সিআইবি স্থগিত চেয়ে করা তাঁর আপিল আবেদনের ওপর আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। তবে শুনানি শেষে আদালত কোনো অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ না দিয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) দিন ধার্য করেছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনের আগে কোনো আইনি সুরক্ষা না পাওয়ায় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছেন তিনি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা ম্যানুয়েল অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগের দিন পর্যন্ত তাঁকে ঋণখেলাপির দায় থেকে মুক্ত থাকতে হয়। আগামীকাল সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন হওয়ায় আজ রবিবারের মধ্যেই মান্নার ঋণখেলাপি তকমা থেকে মুক্তি পাওয়া জরুরি ছিল। কিন্তু বিচারপতি রেজাউল হকের চেম্বার আদালত আজ কোনো স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় আইনিভাবে তিনি এখনো ঋণখেলাপি হিসেবেই বহাল আছেন। এর ফলে আইনত তাঁর পক্ষে আর এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
এর আগে মাহমুদুর রহমান মান্না তাঁর নাম ঋণখেলাপির তালিকা থেকে সরাতে এবং সিআইবি রিপোর্ট স্থগিত করতে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তবে হাইকোর্ট সেই রিট আবেদনটি সরাসরি খারিজ করে দিলে তিনি চেম্বার জজ আদালতের দ্বারস্থ হন। আজকের শুনানিতে মান্নার পক্ষে অংশ নেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ব্যারিস্টার আহসানুল করিম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক সুমন এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. উজ্জ্বল হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, আইন অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের পূর্বের দিনেও তিনি ঋণখেলাপি থাকায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আর কোনো আইনগত সুযোগ তাঁর নেই।
এদিকে মান্নার ঋণসংক্রান্ত জটিলতা আরও ঘনীভূত হয়েছে ইসলামী ব্যাংকের একটি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে। জানা গেছে, ঋণ পুনঃতফসিলের আবেদনের ক্ষেত্রে নথিপত্র জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় গত ২১ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাঁর পূর্বের স্যাংশন লেটার বাতিল করে দেয়। এই অভিযোগ এবং আইনি লড়াইয়ের মাঝেই নির্বাচনের সুযোগ হাতছাড়া হলো বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের। গত কয়েকদিন ধরে তিনি এই সংকট কাটাতে দেশবাসীর কাছে অর্থ সাহায্যও চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ মুহূর্তে আইনি বাধাটি আর অতিক্রম করা সম্ভব হলো না। এর ফলে বগুড়া-২ আসন থেকে তাঁর নির্বাচনের পরিকল্পনা এখন চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছে বিএনপির একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিইসির কার্যালয়ে এই বৈঠকটি শুরু হয়। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। অন্যদিকে বিএনপির প্রতিনিধিদলে নজরুল ইসলাম খান ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া।
বৈঠকের সুনির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি, নির্বাচনী পরিবেশ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো নিয়ে সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্বের ভোটার নিবন্ধন এবং নির্বাচনী কার্যক্রম গুছিয়ে আনার প্রেক্ষাপটে ইসির সঙ্গে দলটির এই সাক্ষাৎ বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করছে। সভা শেষে বিএনপির প্রতিনিধিদলের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে ব্রিফিং করার কথা রয়েছে। মূলত একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে ইসির সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর ধারাবাহিক যোগাযোগের অংশ হিসেবেই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হলো।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায়। আজ রোববার নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমার সময় বাড়ানোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, এখন পর্যন্ত মূল সময়সূচিই বহাল রয়েছে। তবে যদি দেশের সকল রাজনৈতিক দল সম্মিলিতভাবে সময় বাড়ানোর অনুরোধ করে, তবেই কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।
নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালনের লক্ষে কমিশন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় প্রার্থী বা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে প্রস্তাবক ও সমর্থকসহ সর্বোচ্চ পাঁচজন ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারবেন। এই সময়ে কোনো ধরনের জনসমাবেশ, মিছিল বা মোটরসাইকেল শো-ডাউন করা যাবে না; অন্যথায় একে আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য করা হবে। সিইসি ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর যাচাই-বাছাই ও আপিল নিষ্পত্তি শেষে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি। এরপর ২১ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং প্রার্থীরা ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা চালানোর সুযোগ পাবেন।
মনোনয়নপত্র জমার ক্ষেত্রে প্রার্থীদের বেশ কিছু আইনি ও দাপ্তরিক নথি দাখিল করতে হবে। দলীয় প্রার্থীদের জন্য দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত দলীয় মনোনয়নের মূল কপি বাধ্যতামূলক। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ক্ষেত্রে (যদি আগে সংসদ সদস্য নির্বাচিত না হয়ে থাকেন) সংশ্লিষ্ট আসনের মোট ভোটারের অন্তত এক শতাংশের সমর্থনসূচক স্বাক্ষর তালিকা নির্দিষ্ট ছকে জমা দিতে হবে। এ ছাড়াও প্রতিটি আসনের জন্য জামানত বাবদ ৫০ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফট বা ট্রেজারি চালানের প্রমাণপত্র অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে।
প্রার্থীদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ৩০০ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল করতে হবে, যেখানে সম্পদের বিবরণ, বার্ষিক আয়-ব্যয় এবং ফৌজদারি মামলার তথ্য উল্লেখ থাকতে হবে। সেই সাথে সর্বশেষ আয়কর রিটার্নের কপি, সম্পদের বিবরণী (আইটি-১০বি) এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। মনোনয়নপত্রের মূল কপির সাথে দুই সেট ফটোকপি, তিন কপি সত্যায়িত পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং প্রার্থী ও প্রস্তাবকের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ও ভোটার তালিকার সংশ্লিষ্ট অংশ জমা দেওয়া আবশ্যক। এ ছাড়াও নির্বাচনের ব্যয় পরিচালনার জন্য প্রার্থীর নিজের বা এজেন্টের নামে খোলা একটি নির্দিষ্ট ব্যাংক হিসাবের তথ্য প্রদান করতে হবে। মূলত একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতেই কমিশন এই শর্তগুলো পালনে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন- দৌলতখান) আসনে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রার্থী ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মো: হাফিজ ইব্রাহিম।
রবিবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম দাখিল করেন। বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার (ইউএনও) মনোরঞ্জন বর্মন এ মনোনয়ন ফরম গ্রহণ করেন।
দীর্ঘদিন পর নির্বাচনমুখী এই আয়োজন ঘিরে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। এর আগে উপজেলা সড়কে হাফিজ ইব্রাহিমের বাসভবন কুড়ালিয়া হাউজে মনোয়ন পত্র দাখিল উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।
দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠানে মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মোনাজাতে দেশ ও জাতির শান্তি, গণতন্ত্রের পুনঃপ্রতিষ্ঠা, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্নার মাগফেরাত কামনা, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও নেক হায়াৎ কামনা, এবং তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহিমের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। একই সঙ্গে ভোলা-২ আসনের মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য দোয়া করা হয়। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন ভোলার স্বনামধন্য আলেম বাটামারা দরবার শরীফের বর্তমান গদিনীশিন পীরসাহেব আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মোঃ মহিবুল্যাহ।
দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠানে উপজেলা ও পৌর বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলেন, ভোলা জেলা বিএনপির যুগ্ন আহ্বায়ক ফজলুর রহমান বাচ্চু মোল্লা, বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আল এমরান খোকন, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. কাজী মো: আজম, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান কবির, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়কারী আকবর হাওলাদার, দৌলতখান উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ইকবাল হোসেন প্রমূখ।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনের নির্বাচনী সমীকরণে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। এই আসনটি থেকে প্রাথমিকভাবে বিএনপির মিত্র দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের নির্বাচন করার কথা ছিল এবং তিনি দীর্ঘদিন সেখানে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণাও চালিয়েছিলেন। তবে আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) এই আসন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশগ্রহণের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসায় পার্থ এই আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়েই তিনি এই ছাড় দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
আন্দালিব রহমান পার্থ এই বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, “ঢাকা-১৭ আসনের জন্য তারেক ভাই-ই হচ্ছেন সেরা বা বেস্ট প্রার্থী। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের জায়গা থেকে আমি এই আসন থেকে আর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করিনি।” তিনি মনে করেন, তারেক রহমানের সরাসরি অংশগ্রহণ এই আসনে দল ও জোটের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। একই সঙ্গে পার্থ জানান যে, তিনি ইতিমধ্যে তাঁর পৈতৃক এলাকা ভোলা-১ আসন থেকে নির্বাচনের জন্য গতকালই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এদিকে, ঢাকা-১৭ আসন থেকে তারেক রহমানের পক্ষে আজ সকালে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার আজ সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সেগুনবাগিচায় ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে এই মনোনয়ন ফরমটি সংগ্রহ করেন। বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর দপ্তর থেকে এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং রাজধানীর এই অভিজাত আসন থেকে সরাসরি নির্বাচনের ঘোষণা রাজনৈতিক মহলে এক নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। মূলত জোটের অভ্যন্তরীণ সমঝোতা এবং শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি শরিক দলের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমেই এই রদবদলটি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আন্দালিব রহমান পার্থের এই সিদ্ধান্ত জোটের ঐক্যকে যেমন সুসংহত করল, তেমনি ঢাকা-১৭ ও ভোলা-১ উভয় আসনেই নির্বাচনী আমেজকে আরও বাড়িয়ে দিল। বর্তমানে মনোনয়নপত্র জমাদান ও পরবর্তী নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বিএনপি ও এর মিত্র দলগুলোর প্রার্থীরা।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী) আসনে বড় ধরনের চমক দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে এই আসন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। তারেক রহমানের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার সেগুনবাগিচায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে এই মনোনয়ন ফরমটি উত্তোলন করেন। দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরে তারেক রহমানের সরাসরি নির্বাচনে অংশগ্রহণের এই প্রক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
বিএনপির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা-১৭ আসনের মাধ্যমে তারেক রহমানকে নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় করার পরিকল্পনা করছে দলের হাইকমান্ড। তবে এই আসনটি নিয়ে শরিক দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থের সঙ্গে কিছুটা জটিলতা তৈরি হয়েছে। পার্থ আগে থেকেই এই আসনটিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সূত্রমতে, বিএনপি পার্থকে তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি যদি বিএনপিতে যোগ দেন, তবে ঢাকা-১৭ আসনটি তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যথায়, বিএনপি তাঁকে ভোলা সদর আসন ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারে। তবে এ বিষয়ে আজ বা আগামীকাল সোমবারের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে বিএনপি।
এদিকে, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ বিএনপিতে যোগদানের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিএনপিতে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি এবং তিনি তাঁর নিজ দল বিজেপির প্রতীক নিয়েই নির্বাচনী লড়াইয়ে নামবেন। ফলে ঢাকা-১৭ আসনে তারেক রহমান বনাম পার্থের এক সম্ভাব্য লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। এরপর আগামী মঙ্গলবার থেকে রোববার পর্যন্ত চলবে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া। মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারির মধ্যে এবং ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারির মধ্যে সেসব আপিল নিষ্পত্তি হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তারেক রহমানের এই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষ মুহূর্তে নির্বাচনী সমীকরণকে আমূল বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।