মায়ের চিকিৎসার কারণে বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতের হায়দারাবাদে অবস্থান করছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। যে কারণে এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো এখনও দেখা হয়ে ওঠেনি এই চিত্রনায়কের।
তাই তো দেশের বাইরে থেকে দেশকে ও বাংলা সিনেমাকে মিস করছেন এই চিত্রনায়ক। এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সেই অনুভূতিই ব্যক্ত করেছেন তিনি।
এবার ঈদে মুক্তি পাওয়া পরাণ, দিন- দ্য ডে ও সাইকো সিনেমার তিনটি পোস্টার শেয়ার করে বাপ্পী লেখেন, ‘বাংলাদেশকে মিস করছি। মিস করছি বাংলা সিনেমাকে। ভাবছেন নীরব কেন আপনাদের বাপ্পী? প্রিয় ভক্তবৃন্দ- এ মুহূর্তে আমার পুরোপুরি মনোযোগ মায়ের সুস্থতা নিয়ে। ঈদের আগেই ভারতের হায়দারাবাদে এসেছি।’
‘যদিও শত ব্যস্ততার মাঝে ঈদের সিনেমার খবর রাখতে ভুল করিনি। জেনেছি দর্শক আমাদের সিনেমাগুলো দারুণভাবে গ্রহণ করেছে। আপনাদের আশীর্বাদে সব ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জুলাই ঢাকার পথে মাকে নিয়ে রওনা হবো। এসেই কথা দিচ্ছি সিনেমাগুলো দেখা শেষ করব। জয় হোক বাংলা সিনেমার।’
এদিকে বাপ্পীর হাতে রয়েছে জয় বাংলা, কুস্তিগির, শত্রুসহ একাধিক সিনেমা। এর মধ্যে জয় বাংলা ও কুস্তিগিরের শুটিংও শেষ করেছেন এই চিত্রনায়ক।
বলিউড নিয়ে প্রায়ই নিজের মতামত প্রকাশ করে থাকে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রি। তবে পরিচালকের শেষ টুইট বলছে, তিনি জোরালো কটাক্ষ করেছেন শাহরুখ খান আর সালমান খানকে।
বিবিসি নিউজ ওয়ার্ল্ড-এর একটি টুইট রি-টুইট করেছেন তিনি। যেখানে কথা বলা হয়েছে কেন বলিউডের ‘কিং’ শাহরুখ। আর এই টুইটের জবাব দিয়ে বিবেক লিখলেন, ‘যতদিন বলিউডে কিং, বাদশা আর ভাইজানরা থাকবে, ততদিন এটা ডুববে। এটাকে সাধারণের ইন্ডাস্ট্রি বানান সাধারণের গল্প দিয়ে। তাহলেই দেখবেন গ্লোবাল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির তকমা পাচ্ছেন।’
শাহরুখ খান যেমন পরিচিত বলিউডের কিং হিসেবে, তেমনই ১৯৯৯ সালে তিনি একটি সিনেমা করেছিলেন ‘বাদশা’ নামে। সালমান খান ২০১৬ সালে কাজ করেছেন ‘সুলতান’-এ। তবে বিবেকের এই টুইট একেবারেই ভালোভাবে নেয়নি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। বিশেষ করে শাহরুখ আর সালমান ভক্তরা। বলা ভালো, একেবারে ধুইয়ে দিয়েছেন পরিচালককে।
বছরের শুরুতেই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে আসেন বিবেক। ১৯৯০ সালে উপত্যকায় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ওপর হওয়া অত্যাচারই এই ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী। ছবিটি বক্স অফিসে সাড়া ফেলে দিয়েছিল।
আর শাহরুখ-সালমানের কথা বলতে গেলে এখন ভাইজানের হাতে আছে ‘কাভি ইদ কাভি দিওয়ালি’, ‘টাইগার ৩’। আর শাহরুখকে দেখা যাবে ‘পাঠান’, ‘ডানকি’ আর ‘জাওয়ান’ ছবিতে।
বহুজাতিক প্রসাধন সংস্থার বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন তিনি। অমিতাভ বচ্চনের নাতনি নভ্যা নভেলি নন্দা এরই মধ্যে তার কাজের ভিডিওর প্রথম ঝলক শেয়ার করেছেন বন্ধুবান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে। প্রথম কাজ দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে কতটা সাড়া ফেলতে পারেন তিনি তা নিয়েই এখন জল্পনা।
অমিতাভ-কন্যা শ্বেতা নন্দার মেয়ে নভ্যাকে ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, কাজের পোশাকে, সামনে ল্যাপটপ রেখে কাজ করতে। একই সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন ‘সেল্ফ ওয়ার্থ’ প্রসঙ্গে। তবে এ বিজ্ঞাপন কবে প্রকাশ হবে সে খবর এখনও জানা যায়নি।
এদিকে নভ্যার আত্মপ্রকাশে অভিনন্দন জানিয়ে বচ্চন-কন্যা শ্বেতা আদরের মেয়েকে বলেছেন, ‘এর থেকে অনেক বেশি প্রাপ্য তোমার।’ প্রিয় বন্ধু শাহরুখ-কন্যা সুহানা তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিস্ময়চিহ্ন দিয়ে। আরেক বন্ধু অনন্যা পান্ডেও ভালোবাসা জানিয়েছেন বন্ধুর উদ্দেশে।
পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসায় ভরে গিয়েছে নভ্যার বিনোদনের জগতে প্রথম পথচলা। যদিও দাদু অমিতাভ বচ্চন তার প্রিয় নাতনির পর্দায় প্রথম আত্মপ্রকাশ নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেননি।
‘জীবনে প্রথম হলে গিয়ে কোনো সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি! এখন
সাইকো/পরাণ/নাকি দিন- দ্য ডে দেখা উচিত হবে আমার?’ ফেসবুকে বাংলা চলচ্চিত্র নামের একটি গ্রুপে এমডি কবির হোসাইন সম্রাট নামের একজন দর্শক জানতে চেয়েছেন। নতুন হোক কিংবা পুরোনো দর্শক, এবারের ঈদ সিনেমা হলে মানুষ টানতে সক্ষম হয়েছে, এটি বোঝা গেল বেশ ভালোভাবেই। অনলাইন কিংবা অফলাইন- দুই জায়গাতেই শোনা গেছে খাদের কিনারে পড়ে যাওয়া বাংলা সিনেমা নিয়ে আশা জাগানিয়া গান। হচ্ছে আলোচনা, সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক।
গত কয়েক বছর ধরেই দেদার হল কমছে। হাতে গোনা যা আছে তার অবস্থাও তথৈবচ। একটু আয়েশ করে ছবি দেখা যায়, এমন হলো মাত্র কয়েকটা। ওদিকে কমছে ছবি নির্মাণও। নায়ক-নায়িকা আর এফডিসিপাড়া গরম নির্বাচন নিয়ে। বাংলা চলচ্চিত্রের এমন বেহাল দশায় শেষ পেড়েকটি মারল করোনা। করোনাকালীন মানুষের অনভ্যস্ততা তৈরি হয়ে যায় সিনেমা হলে যাওয়ার। বন্ধ হয়ে যায় কয়েকটি সিনেমা হলও। এমন যখন অবস্থা, তখন ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেল কয়েকটি ছবি। কিন্তু আশানুরূপ ফল নেই। ঈদুল ফিতরই ছবি মুক্তির সবচেয়ে বড় উৎসব। ছিল শাকিবের মতো তারকা নায়ক ও তরুণ সিয়ামের ছবিও। তবু সিনেমা হলে আশানুরূপ দর্শক হয়নি। এ অবস্থায় বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা।
কিন্তু ঈদুল আজহায় এসে ঠিক চিত্রটা উল্টে গেল। আগেই ঘোষণা হয় এবার মুক্তি পাবে দেশের বহুল আলোচিত মিন্নি-রিফাত-নয়ন বন্ড-কাণ্ড নিয়ে বানানো সিনেমা ‘পরাণ’। যদিও বলা হয়নি যে এটা ওই ঘটনা অবলম্বনে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা নিয়ে সিনেমা হওয়ায় দর্শকের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। ফলাফলও তাই। ঈদুল আজহায় দর্শক জমিয়ে দেখছেন শরিফুল রাজ, বিদ্যা সিনহা মিম ও ইয়াশ রোহান অভিনীত এই ছবি। শুধু তা-ই নয়, হাউসফুল যাচ্ছে ছবিটি। বাড়ছে হলের সংখ্যা। শুধু তা-ই নয়, ঢাকার বাইরেও ‘পরাণ’ নিয়ে চলছে উন্মাদনা। ছবির পরিচালক রায়হান রাফি জানিয়েছেন, সিনেমাটিকে ঘিরে ময়মনসিংহের দর্শকদের মধ্যে ছিল বাড়তি আগ্রহ। ট্রেলার প্রকাশের পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রহের উত্তাপ আঁচ করা যাচ্ছিল। বাস্তবেও তা-ই দেখা গেছে।
শুধু তা-ই নয়, টিকিটের হাহাকারও দেখল বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘পরাণ’ নিয়ে এক ভক্ত তার অভিমত ব্যক্ত করেছেন এভাবে: “টিকিটের ক্রাইসিসের কষ্ট এক নিমিষেই মিলিয়ে গেছে। এমন মুভির টিকিট পেতে একটু কষ্ট না পেলে ঠিক জমত না। ‘পরাণ’ সিনেমার প্রশংসার জন্য বাংলা অভিধান ঘাঁটতে হবে মনে হচ্ছে। এক কথায় অসাধারণ-অসাধারণ-অসাধারণ!’
ওদিকে শতকোটি টাকার বাজেট নিয়ে ‘দিন- দ্য ডে’ সিনেমা নিয়ে হাজির অনন্ত-বর্ষা জুটি। যদিও অনেক দর্শক তাদের নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করলেও ছবি বানানোতে শতকোটির বাজেট যে চোখে পড়বে, এ ভারি বলেছেন কেউ কেউ। লোকেশন, ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস, ঝকঝকে প্রিন্ট, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন- এসব নিয়ে যে অনন্ত চেষ্টা করেছেন, সে প্রশংসা করেছেন অনেক দর্শক।
ছবিটি চলছেও বেশ। এই ছবি নিয়েও চলছে টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা গেছে, ভক্তরা টিকিটসংকট নিয়ে অভিযোগ করেছেন অনন্ত জলিলের কাছে। শুধু তা-ই নয়, ছবিটি দেখে অভিনেত্রী ভাবনা তার অনুভূতি শেয়ার করেছেন ফেসুবকে। তিনি লিখেছেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিন দেখে এলাম দিন The day। আমাদের দেশের দর্শকের জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। বিগ বাজেট, কৃষ্ণ সাগরে অ্যাকশন সিন, ইরান, তুরস্কের সব বিখ্যাত লোকেশনে শুটিং।
আর নিজের দেশকে অন্যের দেশে বড় করা, এমন ছবি আমরা বলিউডে দেখি। তবে অন্য দেশের পুলিশের মুখে বাংলাদেশের পুলিশের সম্মান, শক্তি এবারই প্রথম। আর বর্ষাকে দেখতে এত সুন্দর লেগেছে মুভিতে। প্রতিটা গান দেখে মনে হচ্ছিল এমন একটা গান আমি কবে করব।’
তুলনামূলক একটু কম আলোচনায় পূজা চেরী ও রোশান অভিনীত ‘সাইকো’। তবে পরিচালক অনন্য মামুন জানিয়েছেন, ঢাকার বাইরে ছবিটি চলছে ভালো।