প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।
বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।
আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?
বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফরম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।
নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’
আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।
আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।
অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।
ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।
বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।
এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’
ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’
নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত শিশু-কিশোরদের প্রতিভা অন্বেষণমূলক জাতীয় অনুষ্ঠান ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’-এ নৃত্য বিভাগের সাধারণ নৃত্য শাখায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে নাজিফা হোসেন স্বাধিকা।
প্রায় ১৮ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয় সেরা ৫ প্রতিযোগীর মধ্যে। স্বাধিকা ঢাকা বিভাগীয় বাছাইয়ে সেরা হয়। এরপর সেরা দশ বাছাইয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। সেরা দশ প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে সেরা ৫-এ স্থান করে নেয় উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাজিফা হোসেন স্বাধিকা।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতায় সারাদেশের হাজারো শিশু অংশ নেয়। নাচ, গান, আবৃত্তি, কৌতুক, গল্প বলা, অভিনয়সহ মোট ১২টি বিভাগে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্চলিক ও বিভাগীয় পর্ব শেষে নির্বাচিত প্রতিযোগীদের নিয়ে হয় চূড়ান্ত পর্ব।
২০ বছর বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হওয়া বিটিভির জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’। দেশের শিশু-কিশোরদের মেধা, প্রতিভা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সেই সুযোগ তৈরি করেছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক দিলারা বেগম। তার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী স্বাধিকার এই বড় অর্জনে শিশু একাডেমি গর্বিত। তার আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য সকলের দোয়া প্রার্থনা করেছেন তিনি।
স্বাধিকার সাফল্যে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এবং উদয়ন স্কুল ও কলেজ পরিবার উভয়ই আনন্দিত ও গর্বিত। উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘প্রতিযোগিতা নিজেকে আবিষ্কারের এক সুযোগ। বিটিভির জনপ্রিয় প্রতিযোগিতা ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ দেশের শিশু-কিশোরদের মেধা, প্রতিভা ও সৃজনশীলতা বিকাশে সেই সুযোগ তৈরি করেছে। নাজিফার অর্জন আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। তার ভবিষ্যৎ আরও উজ্জ্বল হোক এই আমাদের প্রত্যাশা।’
নিয়মিত অনুশীলন, শৃঙ্খলা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বাধিকা নিজেকে শিশু-কিশোর নৃত্য প্রতিভাদের মধ্যে বিশেষভাবে আলাদা করে তুলেছে। তার এই অর্জন দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শিশু প্রতিভা বিকাশে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
প্রথমবারের মতো কমেডিয়ান চরিত্রে অভিনয় করলেন জনপ্রিয় অভিনেতা মোশাররফ করিম। এবার তিনি স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান হিসেবে হাজির হবেন।
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকির অরিজিনাল ফিল্ম ‘ডিমলাইট’–এ এমন এক নতুন রূপে দেখা যাবে তাকে। গত ২০ নভেম্বর চরকির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছিল, ‘মোশাররফ করিম চরকিতে ফিরছেন আরও একটি নতুন রূপে! কিন্তু কী নিয়ে?’
দর্শকদের আগ্রহ পূরণ করতে ২৩ নভেম্বর আরেকটি পোস্টে জানানো হয়, ‘লাইফটাই একটা জোক, আর সবচেয়ে বড় জোক মিডলাইফ ক্রাইসিস।’ এই দুটি পোস্ট থেকে ডিমলাইট ফিল্মটি নিয়ে ধারণা করা যায়।
এই চলচ্চিত্রে কমেডিকে আশ্রয় করে একজন পুরুষ চরিত্রের মিডলাইফ ক্রাইসিসের মতো সমস্যা দেখানোর চেষ্টা আছে বলে জানান নির্মাতা শরাফ আহমেদ জীবন।
তিনি বলেন, ‘প্রচুর আলো এবং ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছু দেখা যায় না। কিছু দেখতে চাইলে পরিমিত আলো প্রয়োজন। আমাদের জীবনে নানা সমস্যা আছে, সেগুলোর কিছু দেখা যায়, কিছু দেখা যায় না। সেই না দেখতে পাওয়া সমস্যাগুলো সহজভাবে দর্শকদের দেখাতে প্রয়োজন ডিমলাইট। আশা করছি ফিল্মটি দেখলে দর্শকরা ডিমলাইটের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।’
২৫ নভেম্বর প্রকাশিত অফিশিয়াল পোস্টারে নিশ্চিত করা হয়, এটি মিনিস্ট্রি অব লাভ প্রজেক্টের ষষ্ঠ চলচ্চিত্র। পোস্টারের ক্যাপশনে লেখা ছিল, ‘মিডলাইফ ক্রাইসিস, থুক্কু ডিমলাইট ক্রাইসিস!’ যেখানে নির্মাতারা মিডলাইফ ক্রাইসিসকে প্রতীকের মাধ্যমে ‘ডিমলাইট ক্রাইসিস’ হিসেবে ব্যাখ্যা করেন।
সম্পর্কের নানা দিকের গল্প বলার প্রয়াসে মিনিস্ট্রি অব লাভ প্রজেক্টের যাত্রা। এর পঞ্চম সিনেমা মুক্তির এক বছর পর মুক্তি পেতে যাচ্ছে ষষ্ঠ সিনেমা ‘ডিমলাইট’। আগের রেশ নিয়ে স্বাভাবিকভাবে ডিমলাইটেও সম্পর্কের গল্প বলা হয়েছে।
নির্মাতা জানান, মিডলাইফ ক্রাইসিসটাকেই প্রতিকীরূপে ‘ডিমলাইট ক্রাইসিস’ হিসেবে বলার চেষ্টা করেছেন তারা। আর এই ক্রাইসিসে ভোগা মানুষটি হলেন স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ান মোশাররফ করিম।
সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন শরাফ আহমেদ জীবন। সহ-প্রযোজনায় রয়েছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ছবিয়াল’। গল্প, সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন নাহিদ হাসনাত। সিনেমাটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরিচালক শরাফ আহমেদ নিজেই। মোশাররফ করিমের সঙ্গে আরও অভিনয় করেছেন তানজিকা আমিন ও পারসা ইভানা।
মামলা, আইনি জটিলতা যেন পিছু ছাড়ছে না শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের। তানজিন তিশা, মেহজাবিনের পর এবার সেই দলে যোগ হলো অভিনেত্রী পপির নাম। মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তার চাচাতো বোনজামাই মো. তারেক আহমেদ চৌধুরী।
গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইলিয়াছ আলী মণ্ডলের মাধ্যমে খুলনা ও ঢাকার ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশ পাঠানো হয়।
তারেক আহমেদ বলেন, ‘সাদিকা পারভীন পপি আমার স্ত্রী সম্পর্কের আত্মীয়। তিনি বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার যদি কোন অভিযোগ থাকে, তাহলে পারিবারিকভাবে কথা বলতে পারেন কিংবা আইনিভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু তিনি সেটা না করে বিভিন্ন মাধ্যমে আমার নামে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছেন। সেজন্য আইনিভাবে তাকে এই বিষয়গুলো আমি জানিয়েছি।’
তারেক আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘এর আগেও তিনি (পপি) আমাকে দোষারোপ করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছিল। ফলে আমি তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছি।’
পপিকে পাঠানো আইনি নোটিশে বলা হয়, ‘একটি সম্পত্তি নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। ওই সম্পত্তিটি সাদিকা পারভীন পপির প্রয়াত চাচার মালিকানাধীন ছিল, যা একটি বৈধ হেবা দলিলের মাধ্যমে তারেক আহমেদ চৌধুরীর স্ত্রী এবং তার মাকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় এবং তারা আইনগতভাবে উক্ত সম্পত্তির মালিক হন। আমার মক্কেল উক্ত সম্পত্তির কোনো আইনগত উত্তরাধিকারী নন এবং উক্ত সম্পত্তির ওপর তার কোনো দখল, মালিকানা বা আইনি স্বার্থ নেই; সম্পত্তিটির হস্তান্তর ও বণ্টন সম্পূর্ণরূপে উক্ত হেবা দলিল ও প্রযোজ্য উত্তরাধিকার আইনের অধীন পরিচালিত হয়। আমার মক্কেলের সঙ্গে উক্ত সম্পত্তিগত বিরোধের কোনো আইনগত বা বাস্তবিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও, নোটিশ গ্রহীতা গত ২১ নভেম্বর প্রচারিত সময় টিভির অনুষ্ঠানে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর অভিযোগ করেছেন এবং তা প্রকাশ করেছেন।’
আইনজীবী ইলিয়াছ আলী বলেন, ‘সময় টিভিতে পপি বলেছেন, আমার মক্কেল তাকে তার নিজ এলাকায় চলাফেরায় বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে উক্ত সম্পত্তিতে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশে এমনটি করছেন।’
পপির ধারাবাহিক, বিদ্বেষমূলক ও ভিত্তিহীন জনসমক্ষে প্রদত্ত অভিযোগসমূহ তারেক আহমেদ চৌধুরীর পেশাগত অবস্থান ও নৈতিক সুনামকে গুরুতরভাবে হুমকির মুখে ফেলছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে নোটিশো অভিযোগ করা হয়।
আইনজীবীর ভাষ্য অনুযায়ী, নোটিশ দেওয়ার ৭ দিনের মধ্যে নির্দেশনা পালন না করলে পপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি ব্যবস্থা ও মানহানি মামলাসহ সব আইনানুগ প্রতিকার নেওয়া হবে।
বহু বছর ধরে সম্পর্কে রয়েছেন টলিউড সুপারস্টার দেব ও নায়িকা রুক্মিণী মৈত্র, তাদের সম্পর্ক নিয়ে চলেছে বহু চর্চা। তাদের প্রেমের গল্প, একসঙ্গে একাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করা, এমনকি দুই পরিবারের অনুষ্ঠানেও তাদের নিয়মিত উপস্থিতি সবকিছুই বারবার ইঙ্গিত দেয় তাদের গভীর সম্পর্কের।
কিন্তু কবে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হবেন? এই প্রশ্নটিই যেন তাদের পিছু ছাড়ে না। এই তারকা জুটিকে যেখানেই দেখা যায়, সেখানেই ভক্ত ও সংবাদমাধ্যম থেকে এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে আসে। সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে এক অনুরাগীর কাছ থেকে আবারও একই প্রশ্নের মুখোমুখি হন রুক্মিণী মৈত্র।
বিয়ে সংক্রান্ত প্রশ্ন শুনে নায়িকা বেশ মজার ছলেই জবাব দেন। তিনি বলেন, যেদিন আমাদের সবাই এই প্রশ্ন করা বন্ধ করে দেবে, সেদিন আমরা হঠাৎ করেই সকলকে চমকে দেব। সবাই তখন খুবই আশ্চর্য হয়ে যাবে।’
অন্যদিকে, এক সাক্ষাৎকারে দেবকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি কী টলিউডের সালমান খান? অর্থাৎ ভাইজানের মতো তিনিও কী আজীবন ব্যাচেলর জীবন কাটানোর পরিকল্পনা করছেন?
উত্তরে দেব বলেন, ‘আমি কোন খান হতে চাই না। দেব হয়েই আমি বেশ ভালো আছি। যেখানে আছি, যার সঙ্গে আছি, বেশ ভালোই আছি। তবে এর মানে এই নয় যে আমি আজীবন সিঙ্গল ব্যাচেলর লাইফ লিড করব। বিয়ে সম্পূর্ণ ভাগ্যের ব্যাপার। তবে আমি যে বিয়ে করতে চাই না, এমনটা নয়। অবশ্যই করব। বর্তমানে এ নিয়ে একটি গোপন পরিকল্পনা চলছে, সবাই সেই বিষয়ে জানতে পারবে।’
বেশ কয়েক মাস ধরে ‘ডন ৩’ নির্মাণ নিয়ে আলোচনা চলছিল। সিনেমাটির পরিচালক ফারহান আখতার অবশেষে নতুন করে মুখে খুলেছেন। তিনি জানান, নতুন ডনে মূল চরিত্রে দেখা যাবে রণবীর সিংকেই। আগামী বছরে ছবির শুটিং শুরু হবে।
সিনেমাটির পরিচালক ফারহান আখতার ফিল্মফেয়ারের এক সাক্ষাৎকারে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমরা আগামী বছর সিনেমাটির শুটিং শুরু করব। এটাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় আপডেট যা আমি আপনাদের দিতে পারি।
পরিচালকের এমন তথ্যের পর বহুল প্রতীক্ষিত ছবিটি আবার ট্র্যাকে ফিরে এসেছে এবং জনপ্রিয় ডন ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতি দর্শকদের আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।
ফারহান আখতার তার নতুন মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘১২০ বাহাদুর’-এর প্রচারের ব্যস্ত সময় পার করছে। এই যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্রটি ২১ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে। ভারত-চীন যুদ্ধ ১৯৬২ ও মেজর শাইতান সিং ভাটির বাস্তব কাহিনীভিত্তিক সিনেমা এটি। সিনেমাটি ইতোমধ্যেই দর্শক ও সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
‘ডন ৩’ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গুঞ্জন চলছিল যে সিনেমাটি সম্ভবত বাতিল হয়েছে। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির পরবর্তী অংশের ঘোষণা ২০২৩ সালের আগস্টে আসে। এরপর থেকেই বিষয়টি আলোচনায় ছিল। ফারহানের নিশ্চিতকরণ প্রমাণ করে যে প্রজেক্টটি আসছে।
নতুন অংশটি ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য একটি নতুন অধ্যায় সূচিত করবে। রণবীর সিং ডনের চরিত্রে অভিনয় করবেন। পূর্বে শাহরুখ খান ২০০৬ সালের ‘ডন’ ও ২০১১ সালের ‘ডন ২’-এ করেছেন। শাহরুখের অভিনয় এখনও ভক্তদের কাছে জনপ্রিয়। তারও আগে ‘ডন’ ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অমিতাভ বচ্চন অভিনয় করেছেন। তাই রণবীরের অভিনয় কতোটা জমজমাট হবে সে নিয়ে আলোচনা চলছে।
অমিতাভ বচ্চন, শাহরুখ খান হয়ে শেষে ডন এসে পড়ল রণবীরের কাঁধে। মুনিয়া ও আলফার পর এবার ডন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে রণবীরের বিপরীতে অভিনয় করবেন শর্বরী।
কথা দিয়ে কথা না রাখার মতো ঘটনা আগে কখনও চোখে পড়েনি। এবার সত্যি কথার বরখেলাপ হয়ে গেল। ২২ নভেম্বর ‘তুমিহীনা’ গানটি প্রকাশ করার ঘোষণা দিয়ে কথা রাখতে পারলেন না শিল্পী মৌমিতা তাসরিন নদী। অবশ্য এ ক্ষেত্রে নদীকে দোষারোপ করা যাবে না, কারণ গান প্রকাশ না করার বিষয়টি সত্যি ভেবে দেখার মতো। কারণ শ্রোতাপ্রিয় এই শিল্পী চাননি ভূমিকম্প আতঙ্কের মাঝে নতুন কোন গান প্রকাশ করে দর্শক-শ্রোতার বিরূপ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়তে।
এও সত্যি যে এ নিয়ে কিছু ভক্তের মন খারাপ হতেই পারে, বিশেষ করে যারা অনেকদিন থেকে প্রহর গুনছিলেন নদীর নতুন গানের। নদীর কথাও তো অযৌক্তিক নয়; যেখানে উঠে এসেছে বাস্তবতা নিয়ে কিছু প্রশ্ন। আপনারাই বলুন, যখন ভক্ত-অনুরাগারীকে আনন্দ দিতে, তাদের মুখে হাসি ফোটাতে বিশেষ কোন আয়োজন করছেন আর ঠিক সেই সময়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হলো, তাহলে কী করবেন? জানি, এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকে বলবেন, তারা তাদের সমস্ত আয়োজন পিছিয়ে দেবেন। কারণ, ভয়াবহ কিংবা অস্বস্তিকর কোন পরিস্থিতিতে আর যাই হোক, কারও কোন প্রত্যাশা পূরণ করা যায় না। নদীও সেই কাজটিই করেছেন। পিছিয়ে দিয়েছেন তার নতুন একক গানের প্রকাশনা। এ নিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টও দিয়েছেন। লিখেছেন, ‘২১ নভেম্বর ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পের কারণে অনেকের অনেক রকম ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক মানুষ এখনও আতঙ্কিত, অনেকে মানসিক আঘাত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না। আর এমনই একটা সময়ে অর্থাৎ ২২ নভেম্বর আমার নতুন গান ‘তুমিহীনা’ প্রকাশিত হবার কথা ছিল। এই পরিস্থিতিতে, এই মন-মানসিকতায় গান প্রকাশ আপাতত স্থগিত রাখা হলো। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে সময়মতো গান প্রকাশের পরবর্তী তারিখ জানানো হবে। তার আগে এটাই চাওয়া, সবাই পরিবারের সঙ্গে থাকুন। যা যা সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত, তা অবশ্যই করুন। বাকিটা সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহ।’
নদীর এই কথা থেকে তার মানবিক হৃদয়ের পরিচয় যেমন পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় নামের সার্থকতা। নদী মানেই এঁকেবেঁকে চলা জলস্রোত। কেন সেই জলস্রোত এঁকেবেঁকে চলে? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হলো–চলে প্রাকৃতিক বাধাবিপত্তি, পানিপ্রবাহের শক্তি ও তার স্থিতিশীলতার কারণে। এতো গেল প্রকৃতির অঙ্গ, জলময় নদীর কথা। আমরা যে রক্ত-মাংসের নদীর কথা বলছি, সেই নদীও এঁকেবেঁকে পথ চলছে সংগীতপ্রেমীর তৃষ্ণা মেটানো আর মানবিক দাবি পূরণে। তাই নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ভক্ত-শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণে। ভার্সেটাইল শিল্পী হিসেবে গানের ভুবনে পথচলা তার। এরপরও মেলোডি গানের সুবাদে সবচেয়ে বেশি দর্শক-শ্রোতার মনোযোগ কেড়েছেন। সেই সব শ্রোতার কথা ভেবেই নতুন একটি মৌলিক গান তৈরি করেছেন; যার শিরোনাম ‘তুমিহীনা’। যৌথভাবে এর কথা লিখেছেন সৈয়দা হেমা, হাসিন ও শিল্পী নদী নিজে।
পাশাপাশি হাসিনের সঙ্গে যৌথভাবে গানের সুরও করেছেন এই শিল্পী। সংগীতায়োজন করেছেন হাসিন হাসনাত হৃদয়। নদীমাত্রিক প্রযোজিত এই গানের ভিডিও নির্মাণ করেছেন সোহেল রাজ। এসব তথ্য এবং গানের পোস্টার প্রকাশের পর থেকে অনেকে এই গানের জন্য প্রহর গোনা শুরু করেছিলেন। সব এলেমেলো হয়ে গেল ‘ভূমিকম্প’ নামের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে।
এরপর আশার কথা এটাই যে, জনমনে স্বস্তি ফিরে এলেই গানটি প্রকাশ করবেন নদী। কিছু সময়ের জন্য হলেও তাদের ভাসিয়ে নেবেন সুরেলা স্রোতে। এর আগে নদী তার গাওয়া ‘যেও না একা করে’, ‘মন মানে না’, ‘মন আমার তোমার কথা কয়’, ‘জলছায়া’, ‘নিঃশ্বাস’, ‘মুগ্ধতা’, ‘দেশি গার্ল’, ‘শিশির ভেজা নদী’, ‘হতে পারে’, ‘হারানো যাবে না’, ‘আসবে না ফিরে’, ‘কথা দিলাম’, ‘দেবো মায়া’, ‘সুতো কাটা ঘুড়ি’ গানগুলোর মধ্যে দিয়ে শ্রোতার মনে অনুরণন তুলে যাচ্ছেন, ঠিক সেভাবেই নতুন আয়োজনের মধ্য দিয়ে সৃষ্টির আনন্দ ভাগ করে নিতে চান সংগীতপ্রেমীদের সঙ্গে। কারণ একটাই, সংগীত এখন তার ধ্যান-জ্ঞান হয়ে উঠেছে এবং এটিই হওয়ার কথা ছিল। কেননা মাত্র তিন বছর বসয়ে যার সংগীতে হাতেখড়ি; ছয় বছর বয়স থেকে শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছিল রবীন্দ্রসংগীত চর্চা, তাকে তো সংগীতবলয়ে আটকে পড়তেই হতো। তাই নানা রকম গানের চর্চার পর আধুনিক গানের শিল্পী হয়ে ওঠেছেন শুধু শ্রোতার ভালো লাগা আর প্রত্যাশা পূরণের দাবি থেকে। তাই যত কিছুই করুন, নদীর জীবনজুড়ে সুরের স্রোতে বইতে থাকবে–এই অনুমান ভুল হওয়ার আশঙ্কা নেই।
৪ বছর আগে আরিফিন শুভ ও জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশীকে নিয়ে ‘নূর’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছিলেন রায়হান রাফী। ২০২২ সালে তৎকালীন সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে সিনেমাটি। প্রথম দফায় ছাড়পত্র না পেলেও দ্বিতীয় দফায় মুক্তির ছাড়পত্র পেয়েছিল নূর। এরপর বেশ কয়েকবার সিনেমা মুক্তির খবর শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত সেটা আর হয়ে ওঠেনি। অবশেষে আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে সিনেমাটি। তবে প্রেক্ষাগৃহে নয়, নূর মুক্তি পাচ্ছে ওটিটিতে।
নূর তৈরি হয়েছিল প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে। পরে সিনেমাটি কিনে নেয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কোয়াইট অ্যান্ড সেট। এর পর থেকে মুক্তির নানা উপায় খোঁজা হয়। সিনেমার প্রধান দুই অভিনয়শিল্পী চেয়েছিলেন হলেই মুক্তি পাক নূর। কিন্তু সিনেমা-সংশ্লিষ্টরা একাধিকবার আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওটিটিতে মুক্তি দেওয়া হবে নূর। দেখা যাবে বায়োস্কোপ প্লাসে। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তির তারিখ ঘোষণা করবে প্ল্যাটফর্মটি।
ইতোমধ্যে প্রচার পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। প্রচারণামূলক ফটোশুটেও অংশ নিয়েছেন শুভ ও ঐশী। সেই ফটোসেশনের দুটি ছবি পোস্ট করেছেন তারা। ক্যাপশনে শুভ লিখেছেন, ‘তোরে এত ভালোবাসি, আর বলব কতবার।’ অন্যদিকে ঐশী লেখেন, ‘যদি হারাস একটিবার, মরে যাব শতবার।’
আরিফিন শুভ ও ঐশী অভিনীত তৃতীয় সিনেমা নূর। এর আগে এই জুটিকে দেখা গেছে, ‘মিশন এক্সট্রিম’ ও ‘মিশন এক্সট্রিম ২: ব্ল্যাক ওয়ার’ সিনেমায়। সেসময় তাদের প্রেমের গুঞ্জনও ছড়িয়েছিল। তবে নায়ক-নায়িকা দুজনেই প্রেমের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে জানিয়েছিলেন, তারা ভালো বন্ধু। এরপর থেমে যায় সেই গুঞ্জন।
নির্মাতা আনন্দ এল রাইয়ের ‘তেরে ইশক মে’ ছবির জন্য অনেক দিনের অপেক্ষা। এ সিনেমা দিয়ে প্রথমবার জুটি হয়েছেন দক্ষিণী অভিনেতা ধানুশ ও বলিউড অভিনেত্রী কৃতি শ্যানন। কাল শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি। টিজার, ট্রেলার থেকে শুরু করে গান- সব নিয়েই ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে দর্শকের।
অগ্রিম বুকিংয়ের হিসাব বলছে, ছবিটি কাল শুক্রবার ভাল ওপেনিং পেতে পারে। মুক্তির ৪ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট বুকিং চলছে।
স্যাকনিল্কের তথ্য অনুযায়ী, হিন্দি ও তামিল ভাষা মিলিয়ে প্রথম দিনের জন্য বিক্রি হয়েছে ২২ হাজার ২০৩টি টিকিট। প্রথম দিনের প্রি-সেলে আয় দাঁড়িয়েছে ৫৮ লাখ ৫৮ হাজার রুপি। ব্লক সিটসহ মোট অগ্রিম বিক্রি দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৭ লাখ রুপি অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে শীর্ষে আছে মহারাষ্ট্র। ৮২৬ শোর বিপরীতে রাজ্যটিতে অগ্রিম আয় হয়েছে ১৪ লাখ রুপি। দ্বিতীয় স্থানে আছে দিল্লি, যেখানে ৬৮৬ শোর জন্য অগ্রিম টিকিট বিক্রি থেকে আয় ১০ লাখ ৮৭ হাজার রুপি।
ট্রেড বিশ্লেষক সুমিত কাদেল রিপাবলিককে বলেন, সিনেমাটির হিন্দি ভার্সন প্রথম দিনে ১২ থেকে ১৫ কোটি রুপি আয় করতে পারে। তামিল ভার্সনের আয় যুক্ত হলে তা ১৭ থেকে ২০ কোটি রুপিতে পৌঁছাতে পারে। আর দর্শকের ভাল সাড়া মিললে প্রথম সপ্তাহে ছবিটির আয় ৫০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে যেতে পারে।
বেনারসের পটভূমিতে নির্মিত ‘তেরে ইশক মে’ একটি রোমান্টিক সিনেমা। এটি প্রযোজনা করেছে টি-সিরিজ ও কালার ইয়েলো। গল্প লিখেছেন হিমাংশু শর্মা ও নীরজ যাদব। সূত্র: আউটলুক ইন্ডিয়া
দীর্ঘ ১৪ বছরের দাম্পত্য জীবনের ইতি টানলেন বলিউড অভিনেত্রী সেলিনা জেটলি। স্বামী পিটার হগের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ এনে বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। শুধু বিচ্ছেদই নয়, স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন এই অভিনেত্রী।
গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিবৃতির মাধ্যমে এই বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন সেলিনা। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্বামী অস্ট্রেলিয়া নিবাসী হোটেল ব্যবসায়ী পিটার অত্যন্ত নিষ্ঠুর প্রকৃতির। তিনি সবসময় সেলিনাকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতেন এবং নিয়মিত তাকে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হতে হতো।
অভিযোগনামায় সেলিনা আরও জানান, তাদের তিন সন্তান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় বাবার কাছে রয়েছে। পিটার তাকে সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছেন না, কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে বাধ্য করেছেন।
স্বামীর বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ এনে অভিনেত্রী দাবি করেন, পিটার হগ পুরোপুরি তার ক্যারিয়ার এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতাকে ‘পঙ্গু’ করে দিয়েছেন। স্বামীকে ‘নার্সিসিস্টিক’ বা আত্মমুগ্ধ আখ্যা দিয়ে সেলিনা জানান, স্ত্রী ও তিন সন্তানের প্রতি পিটারের বিন্দুমাত্র সহানুভূতি নেই।
ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, সেলিনা জেটলির আবেদনের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে মুম্বাই আদালত থেকে পিটার হগকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এই মামলার শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে আগামী ১২ ডিসেম্বর।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৪ বছর আগে হোটেল ব্যবসায়ী পিটারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সেলিনা জেটলি। তাদের সংসারে তিনটি সন্তান রয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় অভিনেতা লি সুন-জায়ে মারা গেছেন গত মঙ্গলবার। মৃত্যুকালে ‘হাই কিক’ খ্যাত এই অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। অভিনেতার এজেন্সি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে তার মৃত্যুর খবর।
১৯৩৪ সালে হোয়েরিয়ংয়ে (বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার অংশ) জন্মগ্রহণ করেন লি। কোরীয় যুদ্ধের আগে তিনি সিউলে চলে আসেন।
তার অভিনয় জীবনের শুরুটা হয় সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র থাকাকালীন। ১৯৫৬ সালে ‘বিয়ন্ড দ্য হরাইজন’ নাটকের মাধ্যমে মঞ্চে তার অভিষেক ঘটে। এরপরের ৬ দশক ধরে তিনি বহু প্রজন্ম ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে তার প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন।
প্রায় ছয় দশকের বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে লি সুন-জায়ে আনুমানিক ১৪০টি উল্লেখযোগ্য নাটকে অভিনয় করেন। ‘হাই কিক থ্রু দ্য রুফ’-এর মতো জনপ্রিয় সিটকমের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। পাশাপাশি, ‘দ্য কিংস ফেস’-এর মতো ঐতিহাসিক নাটকে তার শক্তিশালী অভিনয় দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
তার সাম্প্রতিক এবং বহুল প্রশংসিত কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো ‘নাবিলেরা’, যেখানে তিনি দীর্ঘদিন ধরে পুষে রাখা স্বপ্ন পূরণের চেষ্টায় থাকা একজন বয়স্ক মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়াও, ‘ডিয়ার মাই ফ্রেন্ডস’, ‘সেজং’, ‘ফাদারস হাউজ’ এবং ‘দ্য গ্রেট কিং’ তার স্মরণীয় কাজের অন্তর্ভুক্ত।
লি সুন-জায়ে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম প্রজন্মের টেলিভিশন অভিনেতাদের একজন হিসেবে ব্যাপকভাবে পরিচিতি। ১৯৬০-এর দশকে কোরীয় টিভির পরীক্ষামূলক যুগের সঙ্গে বর্তমানের বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় কে-ড্রামার মধ্যে তিনি একটি সফল সেতুবন্ধন তৈরি করেছেন।
জনপ্রিয় ছোট পর্দার অভিনেত্রী তানজিন তিশা সম্প্রতি ভারতীয় পরিচালক এম এন রাজের 'ভালোবাসার মরশুম' সিনেমাটি ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো ভুল তথ্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। এক অফিসিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে এই সংক্রান্ত সকল তথ্য ও গুজবকে 'সম্পূর্ণ মিথ্যা ও রটনা' বলে দাবি করেছেন এই অভিনেত্রী।
তিশা তার বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ছবিটির শুটিং উপলক্ষে তার বিদেশ ভ্রমণ সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব যেমন ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, ফ্লাইটের টিকিট নিশ্চিত করা এবং সেখানে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা চুক্তিনামা অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে পরিচালক ও প্রযোজকের ওপর ন্যস্ত ছিল।
এর কোনো ব্যত্যয় হয়ে থাকলে তার দায়ভার প্রযোজনা সংস্থার। তবে এই বিতর্কের সূত্র ধরে ছবিটির প্রযোজক সরিফুল সাবেক ভারতীয় গণমাধ্যমে পালটা অভিযোগ তুলেছেন। তিনি তিশার পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘পেশাদারিত্ব কাকে বলে, তার (তানজিন তিশা) জানা নেই।’
'ভালোবাসার মরশুম' সিনেমাটির অধিকাংশ দৃশ্যধারণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। মাত্র আট দিনের শুটিং বাকি রয়েছে।
এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউড তারকা শরমন জোশী, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায় এবং গৌরব রায়চৌধুরী। এই পরিস্থিতিতে তানজিন তিশার পরিবর্তে বাকি অংশের জন্য একজন ওড়িয়া অভিনেত্রীকে দেখা যাবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
একই দিনে দুই তারকার সিনেমা মুক্তি মানেই যেন তাদের নীরব প্রতিযোগিতা। গত বছর ২০ ডিসেম্বর একই দিনে মুক্তি পেয়েছিল দেব ও শুভশ্রীর ‘খাদান’ ও ‘সন্তান’। চলতি বছর ‘ধূমকেতু’র প্রচারে একসঙ্গে মঞ্চে উঠলেও পরবর্তী ঘটনায় তাদের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। এখন দুই তারকাই ব্যস্ত বড়দিনের নতুন ছবির প্রচারে। দেবের ‘প্রজাপতি ২’ এবং শুভশ্রীর ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’-উভয় ছবি বড়দিনেই মুক্তি পাওয়ার কথা। স্বাভাবিকভাবেই বক্স অফিসে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যেতে পারে। গত সোমবার একই সময়ে মুক্তি পেয়েছে দুটি ছবির দুটি গান। ‘প্রজাপতি ২’-এর ‘ফুটবেই বিয়ের ফুল রে’ এবং ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’-এর ‘দেখো দেখো কানাইয়ে’- দুটি গানই প্রকাশের পরপরই দর্শকের মাঝে সাড়া ফেলেছে।
শুভশ্রীর একেবারে নতুন লুক যেমন দর্শককে আকর্ষণ করেছে, তেমনি দেবের গানে ফিরেছে পুরনো দিনের নস্টালজিয়ার আবহ।
ভিন্ন স্বাদের এই দুই ছবি দর্শকদের কতটা টানতে পারে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে নিশ্চিত- দেব ও শুভশ্রীর প্রতিযোগিতা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। পাশাপাশি প্রতিযোগিতায় থাকছেন কোয়েল মল্লিকও, যিনি মিতিন মাসীর চরিত্রে বড় পর্দায় ফিরছেন। ‘প্রজাপতি ২’ দিয়ে আবারও একসঙ্গে পর্দায় ফিরছেন দেব ও মিঠুন চক্রবর্তী। দেবের বিপরীতে থাকছেন জ্যোতির্ময়ী। ছবিতে একজন সিঙ্গেল বাবার জীবনসংগ্রাম ও ছেলেকে ঘিরে তার দুশ্চিন্তার গল্প ফুটে উঠবে।
অন্যদিকে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ ছবিতে শুভশ্রীর সঙ্গে অভিনয় করছেন যীশু সেনগুপ্ত, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম, প্রিয়াঙ্কা সরকার, পার্থ ভৌমিক ও আরাত্রিকা মাইতি। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যর চরিত্রে থাকছেন দিব্যজ্যোতি দত্ত।
বন্ধু বিদায়ের খবর পেয়েই ছেলে অভিষেককে নিয়ে তড়িঘড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন ধর্মেন্দ্রের কাছে বলিউড শাহেনশাহ অমিতাভ বচ্চন। বন্ধু ‘বীরু’ অন্তিমশয্যায়। শোকস্তব্ধ ‘শাহেনশাহ’ চুপ করে তাকিয়ে দেখছিলেন তাকে। গানে গানে বার্তা দিয়েছিলেন, তাদের বন্ধুত্ব অমর।
গত সোমবার বন্ধু ‘বীরু’ চিরবিদায় নিয়েছেন। রুপালি পর্দায় করা সেই প্রতিজ্ঞার মর্যাদা রাখলেন ‘জয়’। স্মৃতি হাতড়ে রাতে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টে এ বর্ষীয়ান অভিনেতা লিখলেন, এক অদ্ভূত শূন্যতা! চারপাশের বাতাস যেন কমে গেছে।
ধর্মেন্দ্রের প্রয়াণ অমিতাভের মনে এক বিরাট শূন্যতার জন্ম দিয়েছে। গ্রাস করেছে তাকে। তিনি আরও লিখেছেন, এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। আরেক স্তম্ভ চিরবিদায় নিলেন, জীবনের রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে। অজস্র কোলাহলের মাঝে এক গভীর নিস্তব্ধতা তৈরি করে গেলেন। ঠিক যেভাবে ‘জয়’ আর ‘বীরু’র বন্ধুত্ব ফুরাবার নয়- ‘ইয়ে দোস্তি হম নহি তোড়েঙ্গে’...।
কখনো পুরস্কারমঞ্চে, কখনো বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানে- রমেশ সিপ্পির ‘শোলে’ সিনেমার দুই বন্ধু মুখোমুখি হলেই গাঢ় আলিঙ্গনে একে অপরকে বেঁধেছেন। এ বছর সেই সিনেমার ৫০ বছরপূর্তি। এ জুটি ভেঙে চিরদিনের মতো হারিয়ে গেলেন এক ‘দোস্ত’।
ধর্মেন্দ্রের অন্তিমযাত্রায় অমিতাভ বচ্চন। রাতের গভীরতায় তিনি উপলব্ধি করেছেন, ধর্মেন্দ্র শুধুই দীর্ঘদেহী পাঞ্জাবি নন, তার মনটাও ছিল আকাশের মতো উদার। পাঞ্জাবের এক টুকরো মায়াঘেরা সবুজ, সারল্য আর উষ্ণতা বুকে নিয়ে ঘুরতেন। তাই রুপালি পর্দার পরাক্রমী নায়কের হাসি শিশুর মতোই সরল। বলিউড আর সেই মাটির গন্ধ পাবে না।