প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।
বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।
আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?
বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফরম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।
নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’
আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।
আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।
অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।
ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।
বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।
এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’
ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’
নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে আবার আলোচনায় শাহরুখ–পুত্র আরিয়ান খান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে তাকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে দেখা যায়, যা নিয়ে চলছে তুমুল আলোচনা। কী ঘটেছে?
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি গত ২৮ নভেম্বরের বলে জানা গেছে। সেদিন আরিয়ান খান বেঙ্গালুরুর একটি পাবে যান। ভিডিওতে দেখা যায়, শুরুতে আরিয়ান হাত নেড়ে উপস্থিত দর্শকদের অভিবাদনের জবাব দিচ্ছেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর তিনি হঠাৎ ভিড়ের দিকে হাত দিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন আরও কয়েকজন তরুণ। তাদের মধ্যে স্থানীয় এক এমএলএর ছেলে নালপাড় ও রাজ্যের এক মন্ত্রীর ছেলে জায়েদ খানকেও দেখা গেছে।
ভিডিওটি সামনে আসতেই অনলাইনে ব্যাপক সমালোচনা ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে আরিয়ানের এই আচরণকে প্রকাশ্যে অতিমাত্রায় অভদ্র ও অনভিপ্রেত বলে মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে অনেকে প্রশ্ন তোলেন- ঘটনার পরও কি পুলিশ নীরব থাকবে? আর তারকা হওয়ার কারণে কি তাকে আলাদা সুবিধা দেওয়া হচ্ছে?
তবে অন্তর্জালে আরিয়ানের আচরণ নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে গেলেও এ বিষয়ে এখনো তিনি কোন প্রতিক্রিয়া জানাননি।
২০২১ সালের অক্টোবরে আলোচনায় আসেন মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে। গোয়াগামী একটি ক্রুজ পার্টি থেকে তাকে গ্রেপ্তারের পর ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। কয়েক সপ্তাহ জেল হেফাজতে থাকার পর আরিয়ান জামিন পান। পরে অবশ্য তিনি সব অভিযোগ থেকে মুক্তি পান।
সম্প্রতি আরিয়ানের নির্মাতা হিসেবে অভিষেক হয়েছে। নেটফ্লিক্সে তার পরিচালিত প্রথম সিরিজ ‘দ্য ব্যাডস অব বলিউড’ মুক্তির পর প্রশংসিত হয়েছে।
ইন্ডিয়াডটকম অবলম্বনে
বলিউডের জনপ্রিয় তারকা দম্পতি ক্যাটরিনা কাইফ ও ভিকি কৌশলের ঘরে এখন খুশির জোয়ার। সদ্য মা–বাবা হয়েছেন এই তারকা জুটি। নতুন অতিথির আগমনে আবেগে ভাসছেন দুজনই। তবে সন্তানের জন্মের পর আপাতত সবটা সময় নবজাতকের সঙ্গেই কাটাচ্ছেন ক্যাটরিনা। নতুন মা হিসেবে এখনো তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। অন্যদিকে বাবা হওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে দেখা গেছে ভিকি কৌশলকে।
সম্প্রতি মুম্বাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হন ভিকি। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের আবেগ আর সন্তানের আগমনের অনুভূতি লুকাতে পারেননি অভিনেতা। প্রথমবার বাবা হওয়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে ভিকি কৌশল বলেন, ‘এ বছরটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো বাবা হওয়া। আমি সব সময় ভেবেছিলাম, যেদিন এই মুহূর্তটা আসবে, সেদিন হয়তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাব। কিন্তু বাস্তবে অনুভূতিটা একেবারেই ভিন্ন। এই মুহূর্ত আমাকে আরও সংযত করেছে, মাটির মানুষ করে দিয়েছে।’
বাবা হওয়ার অনুভূতির মধ্য দিয়ে জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে গেছে বলে জানান ভিকি। তার কথায় স্পষ্ট, এই অধ্যায় তাকে আরও দায়িত্বশীল ও সংবেদনশীল মানুষ করে তুলেছে।
এখনো তাদের সন্তানের নাম ঠিক করেননি ক্যাটরিনা ও ভিকি। ছেলেকে প্রকাশ্যেও আনেননি তারা। তবে শিগগিরই সন্তানের নাম ঘোষণা করা হবে- এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন ভিকি কৌশল।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুখবরটি জানান ক্যাটরিনা ও ভিকি। বেবি বাম্পের ছবি শেয়ার করে ক্যাটরিনা কাইফ লিখেছিলেন, ‘আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটি অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতায় আমাদের হৃদয় ভরে আছে।’
গত ৭ নভেম্বর তাদের ঘরে জন্ম নেয় পুত্র সন্তান। সন্তানের জন্মের পর দুজনের অফিশিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে যৌথ বিবৃতি দেন ক্যাটরিনা ও ভিকি। সেখানে তারা লেখেন, ‘আমাদের জীবনে আনন্দের উপলক্ষ্য এসেছে। ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আমরা আমাদের পুত্র সন্তানকে স্বাগত জানাই।’
এই বার্তায় ভক্ত–দর্শকদের ভালোবাসা ও শুভকামনার জন্য বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা জানান ভিকি–ক্যাটরিনা।
বিয়ের পর থেকেই কাজের গতি অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছিলেন ক্যাটরিনা কাইফ। গত দুই বছর তিনি কোন নতুন ছবির কাজ হাতে নেননি। সংসার এবং ব্যক্তিগত জীবনের দিকে মনোযোগ দিচ্ছিলেন অভিনেত্রী। অবশেষে সেই সংসারেই এলো সবচেয়ে বড় সুখবর- এক নতুন জীবনের আগমন।
ভিকি ও ক্যাটরিনার এই নতুন অধ্যায় ঘিরে বলিউড ও তাদের ভক্তদের মধ্যেও বিরাজ করছে আনন্দ ও শুভকামনার আবহ।
ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণি। ব্যক্তিগত জীবন এবং নানা কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে প্রায়ই তিনি আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন; তবে তা কাজের তুলনায় বেশি। পরীমণি নিজের ব্যক্তিগত জীবন বেশ উপভোগ করেন; আর সেসব মুহূর্ত ভক্তদের মাঝে ভাগ করে নিতে পছন্দ করেন নায়িকা।
চলছে শীতের মৌসুম; অর্থাৎ পিঠা-পার্বণ তো চলবেই! আর সাধারণের মতো তিনিও পিঠা খেতে ঢাকা ছাড়লেন। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরেই ঢাকা ছাড়েন এই নায়িকা; পথিমধ্যে ছবি তুলে জানান দিলেন তার ভ্রমণের কথা।
পরীমণি তার অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিতে দেখা যায়, নায়িকা ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি থেকে নেমেছেন। শুভ্র সাদা রঙের একটি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলছেন। কোনো ছবিতে তাকে হাসিখুশি মুখে হাত উঁচিয়ে ভি সাইন দিতে দেখাতে দেখা যায়, আবার কোন ছবিতে তাকে আনন্দে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
ছবিগুলোতে নায়িকার পরনে ছিল জিন্স, টি শার্ট ও জ্যাকেট। পেছনে সবুজ গাছপালা ও পরিষ্কার নীল আকাশ ছবিগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ছবির ক্যাপশনে পরীমণি লিখেছেন, ‘ভালো থেকো আমার প্রিয় শহর! যাই, একটু পিঠা খেয়ে আসি!’ পরীমণির এই ছবিটি নজর কেড়েছে ভক্তদের। মুহূর্তেই তা হাজার হাজার লাইক ও মন্তব্যে ভরে উঠেছে। নেটিজেনদের অনেকের অনুমান, নিজের গ্রামের বাড়ি বরিশালের দিকে সম্ভবত রওনা হয়েছেন নায়িকা; সেখানেই শীতকালীন পিঠা খেতে যাচ্ছেন তিনি।
গ্ল্যামার দুনিয়ার আলো ছায়ার মাঝে আবারও তোলপাড় মালাইকা অরোরাকে ঘিরে। আরবাজ খানের সঙ্গে দুই দশকের দাম্পত্য ভাঙন, এরপর অর্জুন কাপুরের সঙ্গে ছয় বছরের সম্পর্কের ইতি। সব মিলিয়ে জীবনের ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে যেন নতুন করে নিজেকে গড়ছেন তিনি। কিন্তু থেমে নেই কানাঘুষা। এনরিক ইগলেসিয়াসের কনসার্টে ‘গোপন হাতধরা’ ছবিই যেন আগুনে ঘি ঢেলেছে। হাঁটুর বয়সি হীরা ব্যবসায়ীর সঙ্গে তার সম্ভাব্য নতুন প্রেম নিয়ে চারদিকে তোলপাড়। বয়সের তফাৎ নিয়ে চলছে কটাক্ষের ঝড়ও। আর এবার সেটা নিয়েই মুখ খুললেন মালাইকা।
ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, আরবাজ-অর্জুন অধ্যায়কে অতীত করে ব্যক্তিগতজীবনের ঝড়-ঝাপটা সামলে অভিনেত্রী বর্তমানে অনেকটাই থিতু হয়েছেন। যদিও বিচারকের আসন ছাড়া বলিউডের সিনেমা-সিরিজের পর্দাতেও তেমন আর দেখা যায় না তাকে। তবে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিন্তু কৌতূহলের অন্ত নেই অনুরাগীমহলে। মালাইকার ডিভোর্স, প্রেম থেকে সাজপোশাক, সবকিছুই নেটিজেনদের নজরে থাকে। যার কারণে একাধিকবার ‘বদনামের ভাগী’ হতে হয়েছে এই অভিনেত্রীকে।
এক সাক্ষাৎকারে মাইলাইকা বলেন, ‘হাজার শক্ত থাকলেও আপনাকে বিচার করা হবে। যেটাই হোক না কেন, মেয়েদের সবসময় বিচারের কাঠগড়ায় তোলা হয়। কারণ এটা করা সহজ।’
এদিকে সাক্ষাৎকারে নতুন প্রেমিককে নিয়ে নিন্দুকদের কটাক্ষের জবাব দেওয়ার পাশাপাশি প্রাক্তন স্বামী আরবাজ খানের দ্বিতীয় বিয়েকেও পরোক্ষভাবে খোঁচা দেন মালাইকা।
তিনি বলেন, ‘আমি এখন যেমন নারীতে পরিণত হয়েছি, সেই পর্যায়ে পৌঁছনোর নেপথ্যে আমার জীবনে বেশ কিছু পুরুষের ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু আজকের যুগে, একজন পুরুষ নিজের মতো জীবনযাপন করলে সেটাকে বাহবা দেয় সমাজ। এটা দারুণ! পুরুষরা বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর নিজের জীবনে অনায়াসে এগিয়ে যেতে পারে। আবার হাঁটুর বয়সি মেয়েকেও বিয়ে করতে পারে। তখন সকলে বাহবা দিয়ে বলেন- বাহ দারুণ কাজ করেছে।
কিন্তু এই একই কাজ যখন কোনও মহিলা করেন, তখন তাকে সমালোচিত হতে হয়। উলটে সেই মহিলাকে প্রশ্ন করা হয়- কেন সে এরকম করছে? ওর কি বোধবুদ্ধি নষ্ট হয়ে গিয়েছে? এরকম বস্তাপচা ধ্যানধারণা এবার সত্যিই বন্ধ হওয়া দরকার।’
এদিকে জানা যায়, বর্তমানে মালাইকা যার প্রেমে পড়েছেন তিনি একজন হীরা ব্যবসায়ী। নাম হর্ষ মেহেতা। মালইকার সঙ্গে তার বয়সের ফারাক উনিশ বছর। গুঞ্জন রয়েছে, চব্বিশ সালে অর্জুন কাপুরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পরই নাকি হর্ষের সঙ্গে বন্ধুত্ব শুরু হয় মালাইকার। সম্প্রতি সেই বিশেষ বন্ধুকে নিয়ে বিদেশে ছুটি কাটাতেও উড়ে গিয়েছিলেন ভ্রমণবিলাসী নায়িকা। তারপর থেকেই চর্চায় তার নতুন প্রেমজীবন।
খবর ছড়িয়েছে ‘রাক্ষস’ চলচ্চিত্রে সিয়ামের নায়িকা হবেন কলকাতার ইধিকা পাল। দেশজুড়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এসব খবরের বিপরীতে জানা যাচ্ছে ভিন্ন তথ্য। ইধিকা নন, ‘রাক্ষস’ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা কলকাতার উঠতি নায়িকা সুস্মিতা চ্যাটার্জির প্রতি আগ্রহী হয়েছেন।
এই সুস্মিতা কলকাতার নির্মাতা সৃজিত মুখার্জির প্রেমিকা হিসেবে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন। প্রায়ই তাকে সৃজিতের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যায়। এ আলোচনা হয় যে সুস্মিতার জন্যই মিথিলার সঙ্গে দাম্পত্য জীবনের বিচ্ছেদ ঘটিয়েছেন সৃজিত। তবে কিছুই স্পষ্ট নয়, নিশ্চিত নয়।
‘লহো গৌড়াঙ্গ নাম রে’ ও ‘ভালোবাসার মরসুম’ নামের দুটি চলচ্চিত্রে সুস্মিতা যুক্ত হয়েছেন। এবার এই নায়িকার নাম এলো বাংলাদেশের ‘রাক্ষস’ সিনেমার নায়িকা হিসেবে। নির্মাতা মেহেদী হাসান হৃদয় অবশ্য এ নিয়ে নিশ্চিত কোন তথ্য দেননি। তবে বেশ কিছু সূত্র দাবি করছে, এরই মধ্যে সিয়ামের বিপরীতে সুস্মিতাকে নেয়ার ব্যাপারে মৌখিকভাবে সবকিছু চূড়ান্ত করা হয়েছে। জানা গেছে, ‘রাক্ষস’ অ্যাকশন ও রোমান্টিক ঘরানার সিনেমা। বাংলাদেশ ছাড়াও এর শুটিং হবে মালেশিয়া ও শ্রীলঙ্কায়। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ঢাকায় শুরু হবে ছবিটির শুটিং। তবে শুরুতেই থাকছেন না সুস্মিতা। পরের লটের যোগ দেবেন তিনি।
শুরুতে ‘রাক্ষস’ সিনেমায় কাজ করার কথা ছিল সাবিলা নূরের। তবে ঈদের অন্য একটি সিনেমার জন্য ‘রাক্ষস’ সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। এরপর আসে ইধিকা পালের নাম। ইধিকা নিজেই বিষয়টি সত্য নয় বলে জানান। সর্বশেষ আলোচনায় এলেন সুস্মিতা। সিনেমাপ্রেমীরা মনে করছেন, রোমান্টিক বয় সিয়ামের সঙ্গে মিষ্টি চেহারার সুস্মিতার জুটি বেশ জমে উঠতে পারে।
বলিউডের গুণি অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। প্রায়ই নানা রকম বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেনি তিনি। বিশেষ করে সাংবাদিক, ফটোগ্রাফারদের সঙ্গে তার সম্পর্কটা বরাবরই সাপে-নেউলের মতো। বহুদিন ধরেই ফটোগ্রাফারদের প্রতি বিরাগ প্রকাশ করে আসছেন। অনুষ্ঠান হোক কিংবা জনসমাগম, তার সামনে ক্যামেরা উঠলেই বিরক্তি ঝরে পড়ে কথায়-অভিব্যক্তিতে।
সম্প্রতি সাংবাদিক বারখা দত্তকে দেওয়া এক আলোচনায় তিনি ফটোগ্রাফারদের নিয়ে আরও কড়া মন্তব্য করেন। বলেন, তাদের সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। তারা ‘নোংরা আঁটসাঁট প্যান্ট পরে’ ছবি তোলার নামে অশিক্ষিত আচরণ করেন।
জয়ার এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ফটোগ্রাফারদের একাংশ। তারা বলছেন, তার এই ভাষা অপমানজনক। পুরো পেশাটিকেই ছোট করেছেন তিনি। এ কারণে বচ্চন পরিবারকেই বয়কটের কথাও ভাবছেন তারা। বিশেষ করে জয়ার নাতি অগস্ত্যের নতুন ছবি ‘ইক্কিস’র প্রচারণায় না যাওয়ার হুমকিও এসেছে তাদের পক্ষ থেকে।
একজন জনপ্রিয় ফটোগ্রাফার ভারতীয় গণমাধ্যম পিঙ্কভিলাকে জানান, ‘তিনি ঢালাওভাবে সবাইকে নিয়ে অপমানসূচক কথা বলেছেন। এটা দুঃখজনক। তার মতো নন্দিত তারকার কাছে এ ধরণের আচরণ কেউ প্রত্যাশা করে না। তিনি কেন এভাবে বললেন? তার নাতনি অগস্ত্যের নতুন ছবি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। যদি আমরা প্রচারণায় না যাই তাহলে কী হবে?’
ওই ফটোগ্রাফার আরও মনে করিয়ে দেন, অমিতাভ বচ্চন প্রতি রোববার ভক্তদের উদ্দেশে বাড়ির বাইরে আসেন। সেটিও ফটোগ্রাফাররাই নিয়মিত কাভার করেন।
আরেক আলোকচিত্রী জানান, জয়া বচ্চন ডিজিটাল যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি। নাতিরা অন্তত তাকে বোঝানোর চেষ্টা করতে পারতেন। অন্য একজন ফটোগ্রাফার বলেন, ‘আমরা সবসময় তারকাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারকে সম্মান করি। কতবার অনুরোধে আমরা কোনো ছবি ছড়াইনি। কাউকে অপমান করার অধিকার ওনার নেই। তাই আমরা নিজেদের সম্মান রক্ষার জন্য জয়া বচ্চন ও তার পরিবারকে কোনোরকম কাভার করব না বলে ভাবছি।’ জয়া বচ্চনের এই মন্তব্য ও ফটোগ্রাফারদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে এখন বলিউডে তুমুল আলোচনা চলছে। তবে বচ্চন পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
বলিউড অভিনেত্রী মালাইকা অরোরা সিনেমায় অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও সরব রয়েছেন। বিয়ে, সম্পর্ক নিয়ে তিনি নেটিজেনদের মাঝে সবসময় আলোচনা-সমালোচনায় থাকেন।
অভিনেতা আরবাজ খানের সঙ্গে দুই দশকের দাম্পত্যের ইতি টেনেছিলেন অনেক আগেই। ২০১৭ সালে মালাইকা ও আরবাজ আলাদা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে বিচ্ছেদ নিয়ে দুজনেই চুপ থেকেছেন। এরপর দুজনই নতুন সম্পর্কে জড়িয়েছেন। আরবাজ শুরু করেন জর্জিয়া আন্দ্রিয়ানির সঙ্গে, আর মালাইকা আলোচনার কেন্দ্রে থাকেন অভিনেতা অর্জুন কাপুরের সঙ্গে তার সম্পর্কের কারণে। অর্জুন তার চেয়ে ১২ বছরের ছোট- এ বিষয়ই মালাইকাকে বারবার সমালোচনার মুখে ফেলেন। সে কারণে অর্জুন কাপুরের সঙ্গে ছয় বছরের প্রেমেও ভেঙে যায়। গত বছর অর্জুন কাপুরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার পরপরই নাকি হর্ষ মেহেতার সঙ্গে বন্ধুত্ব শুরু হয় মালাইকা অরোরার। মাসখানেক ধরে তারা একে অপরকে ডেট করছেন নিয়মিতই।
অন্যদিকে আরবাজও জর্জিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ৩৫ বছরের মেকআপ আর্টিস্ট শুরাকে বিয়ে করেন। ৫৮ বছর বয়সে সন্তানের বাবাও হয়েছেন তিনি। কিন্তু মালাইকার জীবনে ছোট যে কাজই ঘটে, তা নিয়েই খবরের শিরোনাম তৈরি হয়, মন্তব্যের ঝড় ওঠে সামাজিক মাধ্যমে। সম্প্রতি বারখা দত্তর ‘মোজো স্টোরি’র অনুষ্ঠানে এসে মালাইকা নিজের অভিজ্ঞতার কথা খুলে বলেন। দীর্ঘদিন ধরে ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যে সমালোচনা তাকে সহ্য করতে হয়েছে, সমাজের সেই দ্বিচারিতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন অভিনেত্রী।
মালাইকা বলেন, আপনি যদি দৃঢ় স্বভাবের নারী হন, তাহলে আপনাকে নিয়মিতই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। এটা এড়ানোর কোন উপায় নেই। আমার জীবনে আসা কয়েকজন পুরুষ আমাকে দারুণভাবে সমর্থন করেছেন- তাদের জন্য আমার গভীর শ্রদ্ধা আছে। তিনি বলেন, তবে সমাজ একই ঘটনায় পুরুষ ও নারীকে আলাদা চোখে দেখে।
অভিনেত্রী বলেন, আজ একজন পুরুষ নতুন সম্পর্কে যায়, ডিভোর্স দেয়, নিজের অর্ধেক বয়সি কাউকে বিয়ে করে, তাহলে সবাই বলে- ওয়াও, কী দারুণ! অথচ একজন নারী একই কাজ করলে প্রশ্নের তীর তার দিকেই ছোড়া হয়- এটা কেন করলে? তার কি বুদ্ধি নেই? এই স্টেরিওটাইপগুলো এখনো আমাদের সমাজে আছে বলে জানান মালাইকা অরোরা।
অভিনেত্রী বলেন, একটা সময় তিনি শুধু গান করবেন, বিয়ে করে সংসার করবেন, সন্তান নেবেন- এভাবেই ভেবেছিলেন। আমি ভাবতাম না যে এত দূর আসব। পরে বুঝেছি- আমি আসলে অনেক বড় স্বপ্ন দেখতে পছন্দ করি। একই জায়গায় থেমে থাকতে ভালো লাগত না। সবসময় অন্য রকম কিছু করতে চাইতাম।
মালাইকা বলেন, ‘মা সব সময় বলতেন- দুনিয়া দেখ, জীবনটা উপভোগ কর। আর প্রথম যাকে ডেট করবে, তাকেই বিয়ে কর না। কিন্তু আমি তা–ই করেছি, মা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। বলছিলেন- এভাবে করলে তুমি কী করে জানবে জীবনে আরও কী কী আছে? আমি শুধু বলেছিলাম, মা, একটু রিলাক্স কর। তবে মা সবসময়ই আমাদের স্বপ্ন দেখতে উৎসাহ দিয়েছেন, আমাকে থামিয়ে রাখেননি বলে জানান অভিনেত্রী।
জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ এবার সংগীত জগতে নিজের উপস্থিতি শক্তভাবে জানান দিলেন। কিছুদিন ধরেই তার নতুন গান নিয়ে হচ্ছিল আলোচনা। অবশেষে প্রকাশ পেল তার দ্বিতীয় দ্বৈত গান ‘মন গলবে না’, যা গেয়েছেন ফারিণ ও সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল। এই গানের মাধ্যমে ফারিণ শুধু অভিনেত্রী নয়, একজন পূর্ণাঙ্গ গায়িকা হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করলেন।
গানটিতে তিনি প্রযোজক হিসেবেও অভিষেক ঘটালেন। এটি প্রকাশিত হয়েছে তার নিজস্ব প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ফড়িং ফিল্মস’ এর ব্যানারে। গানটির কথা লিখেছেন কবির বকুল, আর সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান মাহমুদুল। নাহিয়ান আহমেদের পরিচালনায় মিউজিক ভিডিওতে মডেল হিসেবে হাজির হয়েছেন ফারিণ ও ইমরান।
ইমরান মাহমুদুলের ইউটিউব চ্যানেলে গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওর বর্ণনায় এটিকে আবেগ ও সুরের এক অনন্য মিলন হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ভিডিওতে ফারিণের বিভিন্ন রূপ দর্শকদের মুগ্ধ করেছে। কখনও লাল ডট প্রিন্টের পোশাকে সুইমিংপুলের ধারে খুনসুটিতে মেতেছেন, আবার কখনও সাদা পোশাকে গুহার মতো সেটে নৃত্যশিল্পীদের সঙ্গে মিলিয়েছেন। এছাড়া কালো রহস্যময় সাজে কিংবা সোনালি ঝকঝকে পোশাকে আগুনের শিখার মাঝে গ্ল্যামার ছড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
দীর্ঘদিন ধরে ছোট ও বড় পর্দায় তার সাবলীল অভিনয় দেখে আসা দর্শকরা এবার তার মধুর কণ্ঠ শুনে অবাক হয়েছেন। অভিনয়ের দক্ষতার পাশাপাশি গানে তার পারদর্শিতাও দর্শক ও শ্রোতাদের বিস্ময় জাগিয়েছে।
আরিফিন শুভ ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ! শুটিং সেটে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন এই ঢাকাই চিত্রনায়ক- এমনটাই শোনা যাচ্ছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে সংশিষ্টদের স্পষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি; আরিফিন শুভর অবস্থাও স্পষ্ট জানা যায়নি।
তবে কিছু সূত্রের বরাতে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমগুলোতে এসেছে এই খবর। জানা গেছে, অনেকটা গোপনেই, ঢাকার বাইরে এক নির্জন লোকেশনে চলছিল আরিফিন শুভর নতুন সিনেমা ‘মালিক’ এর শুটিং। আর দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে এই শুটিংয়ের বিষয়টিও ফাঁস হলো। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার দৃশ্য ফাঁস হতেই কৌতূহল জাগে সিনে ভক্তদের মনে। তাতে দেখা যায়, আরিফিন শুভর মতো দেখতে একজনের পায়ে আগুন, যিনি তা নেভানোর চেষ্টা করছেন।
এমন দৃশ্য নিশ্চিতভাবে নানা কৌতূহলের জন্ম দেয়। পরে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসে, ‘মালিক’ সিনেমার একটি অ্যাকশন দৃশ্যের শুটিং করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে আরিফিন শুভর সঙ্গে; সেই দৃশ্যটি মূলত ছিল- তার শরীরের নিচের অংশ ছুঁয়ে সামান্য আগুন চলে যাবে। কিন্তু ক্যামেরা চালু হতেই আগুনের শিখা যেন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। আর তা মুহূর্তেই তা লেগে যায় শুভর পায়ে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শিখা আরও উঁচু হয়ে নায়কের পা দগ্ধ করে দেয়।
তবে ইউনিটের সদস্যরা নাকি জানিয়েছেন, প্রথমে শুভ নিজেই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি আগুনে ঝলসে কাঁপছিলেন, তবুও থামেননি। কিন্তু আগুন না থামায় একসময় ভারসাম্য হারিয়ে তিনি মাটিতে পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে ইউনিটের সদস্যরা ছুটে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন, কিন্তু ততক্ষণে শুভর পা দগ্ধ হয়।
এই ঘটনার পর পরিচালক সাইফ চন্দন শুটিং বন্ধ করতে চাইলেও শুভ নাকি তাকে এক মুহূর্তের জন্যও সুযোগ দেননি। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েই তিনি আবার ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান; সেই দিনের শুটিং শেষ না করে তিনি ফিরতে চাননি। পায়ে ক্ষত থাকা সত্ত্বেও এখনো তিনি নিয়মিত শুটিং চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্ঘটনাটি নিয়ে পরিচালকের আনুষ্ঠানিক কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি। আর ঘটনাটি কবে ঘটেছে, তাও স্পষ্ট নয়। অ্যাকশনধর্মী ‘মালিক’ সিনেমাটি আগামী ঈদুল ফিতরে মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই ছবিতে আরিফিন শুভর বিপরীতে অভিনয় করছেন বিদ্যা সিনহা মিম। সিনেমাটির চিত্রনাট্য লিখেছেন সিদ্দিক আহমেদ।
বিজয় দেবারকোন্ডার সঙ্গে রাশমিকার প্রেমের গুঞ্জন চলছে অনেক দিন ধরেই। কিছুদিন আগেই ভারতীয় গণমাধ্যম নিশ্চিত করে, বাগ্দান সেরেছেন দুই দক্ষিণী তারকা। এমনকি ২০২৬ সালের শুরুতেই বিয়ে করছেন রাশমিকা ও বিজয়, এমন খবরও প্রকাশিত হয়। তবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে নানা ধরণের খবর প্রকাশিত হলেও এত দিন চুপ ছিলেন রাশমিকা। দ্য হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়ার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রথমবার বিয়ে নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিলেন অভিনেত্রী।
চলতি বছর দুর্দান্ত সময় কাটাচ্ছেন রাশমিকা। বছরের শুরুতে ‘ছাবা’ দিয়ে শুরু করে সবশেষ ‘দ্য গার্লফ্রেন্ড’ সিনেমাও প্রশংসা কুড়িয়েছে। তার অভিনীত পাঁচটি সিনেমা ২০২৫ সালে বক্স অফিস থেকে ১ হাজার ৩০০ কোটি রুপির বেশি আয় করেছে। সাক্ষাৎকারে রাশমিকা বলেন, ‘সত্যি এবার স্বপ্নের মতো বছর কাটল। ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই আমি নানা ধরণের সিনেমায় বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছি। এ বছর সেটা হয়েছে। কোন কিছুই পরিকল্পনা করে হয় না, এটা হয়ে গেছে।’
চলতি বছরের অক্টোবরেই হায়দরাবাদে ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে রাশমিকা ও বিজয় নাকি বাগ্দান সারেন- এমন খবরও ছড়িয়ে পড়ে। বিজয়ের টিম পরে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল, বাগ্দান সত্যি হয়েছিল এবং তাদের বিয়ে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে হবে। যদিও দুই তারকার কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেননি বা কোনো ছবি শেয়ার করেননি। ঐ দিন দ্য হলিউড রিপোর্টারের সঞ্চালক অনুপমা চোপড়া রাশমিকাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেন, বিয়ের পরিকল্পনার কথা তিনি কী স্বীকার করবেন? নাকি গুজব বলে উড়িয়ে দেবেন? রাশমিকা একটু সময় নেন। পরে হেসে বলেন, ‘আমি কোনোটাই করব না।’ পরে তিনি বলেন, ‘যখন সময় হবে, তখন আমরাই ঘোষণা দেব।’ ভক্তরা মনে করছেন, রাশমিকার এই উত্তর আসলে তাদের সম্পর্কের স্বীকারোক্তি।
রাশমিকা এ সময় আরও জানান, ভক্ত বা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোন ব্যক্তিগত খবর ভাগ করে নেওয়ার আগে তিনি সময় নিতে চান।
‘গীতা গোবিন্দম’ (২০১৮) ও ‘ডিয়ার কমরেডে’ (২০১৯) একসঙ্গে অভিনয়ের পর থেকেই তাদের প্রেম নিয়ে বলিউড-দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিজুড়ে গুঞ্জন শুরু হয়। গত আগস্টে দুজনকে নিউইয়র্কের ৪৩তম ইন্ডিয়া ডে প্যারেডে একসঙ্গে দেখা যায়। এরপর তারা ‘ভারত বিয়ন্ড বর্ডারস’ নামের একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
২০২৪ সালে দুজনই জানিয়েছিলেন তারা ‘সিঙ্গেল নন’, তবে কেউই সঙ্গীর নাম প্রকাশ করেননি।
ঢালিউড তারকা সিয়াম আহমেদ সম্প্রতি শেষ করেছেন ‘আন্ধার’ সিনেমার শুটিং। রায়হান রাফী পরিচালিত ছবিটিতে সিয়ামের বিপরীতে অভিনয় করেছেন নাজিফা তুষি। সিনেমাটির কাজ শেষ করেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন আরেকটি নতুন ছবি ‘রাক্ষস’–এর জন্য। ছবিটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল- নায়িকা কে হচ্ছেন? প্রার্থনা ফারদিন দীঘি বা সাবিলা নূরের নাম ঘুরে বেড়ালেও নির্মাতারা নায়িকা চূড়ান্ত করতে সময় নিচ্ছিলেন। অবশেষে গুঞ্জনের ইতি টেনে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ছবিটির নায়িকা হচ্ছেন কলকাতার অভিনেত্রী ইধিকা পাল।
ইধিকার সঙ্গে চলতি সপ্তাহেই চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে এটিই হতে যাচ্ছে সিয়াম–ইধিকা জুটির প্রথম সিনেমা। এর আগেও তাদের জুটিকে ঘিরে একবার আলোচনা তৈরি হয়েছিল। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে চাউর হয়েছিল, তামিম রহমান পরিচালিত ‘সিকান্দার’ সিনেমায় অভিনয় করবেন তারা দুজন। কিন্তু সেই ছবির আর কোন খবর পরে পাওয়া যায়নি। ফলে অনেকেই মনে করছিলেন, এই জুটি হয়তো খুব শিগগিরই একসঙ্গে পর্দায় আসতে পারবেন না। এবার ‘রাক্ষস’- এর মাধ্যমে সে প্রত্যাশাই পূরণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন দর্শকেরা।
ইধিকা পাল বাংলাদেশের দর্শকের কাছে পরিচিতি পান শাকিব খান অভিনীত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার মাধ্যমে। ছবিতে তার অভিনয়, উপস্থিতি ও রোমান্টিক চরিত্র দ্রুতই তাকে আলোচনায় নিয়ে আসে। এই নায়িকা শাকিব খানের বিপরীতে দ্বিতীয়বার অভিনয় করেন ‘বরবাদ’ ছবিতে। শাকিব খানের বাইরে তিনি কাজ করেন বাংলাদেশি পরিচালক হাসিবুর রেজার ‘কবি’ সিনেমায়, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন শরীফুল রাজ। পাশাপাশি কলকাতায় দেবের বিপরীতে ‘খাদান’ এবং ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমায় অভিনয় করে টলিউডেও নিজেকে আলোচনায় রেখেছেন নিজেকে। আস্তে আস্তে বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারতের কলকাতায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে ইধিকার।
সিয়াম আহমেদ অভিনীত দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়া সর্বশেষ সিনেমা ‘জংলি’। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন শবনম বুবলী। ‘পোড়ামন ২’ দিয়ে বড় পর্দায় যাত্রা শুরু করা সিয়াম আস্তে আস্তে বাণিজ্যিক অ্যাকশন থেকে শুরু করে কনটেন্ট–ড্রিভেন সিনেমা- সব ঘরানাতেই নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন তিনি। ‘পোড়ামন ২’, ‘দহন’, ‘বিশ্বসুন্দরী’, ‘শান’, ‘মৃধা বনাম মৃধা’, ‘অপারেশন সুন্দরবন’, ‘দহন’, অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, ‘পাপ–পুণ্য’, ‘দামাল’, ‘অন্তর্জাল’- প্রতিটি সিনেমাতেই ভিন্ন চরিত্রে দেখা গেছে তাকে। গেল ঈদুল আজহায় শাকিব খানের ‘তাণ্ডব’ ছবিতে ক্যামিও চরিত্রে চমকে দেন এই তারকা। সাম্প্রতিক ‘আন্ধার’–এর মাধ্যমে আবারও নতুন রূপে হাজির হতে প্রস্তুত তিনি। ফলে ‘রাক্ষস’-এ ইধিকার সঙ্গে তার জুটি নিয়ে আগে থেকেই তৈরি হয়েছে আলাদা আগ্রহ।
বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেত্রী জয়া বচ্চন। ‘বিগ বি’ অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে পাঁচ দশকের দাম্পত্যজীবন তার। তিনিই এবার বিয়েকে ‘পুরোনো ধারণা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিয়ে, সম্পর্ক এবং অমিতাভ বচ্চনকে ঘিরে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে আবারও আলোচনায় অভিনেত্রী। জয়া বলেন, বিয়ের ধারণা আজ পুরোনো হয়ে গেছে। বিশেষ করে নিজের নাতনি নভ্যা নাভেলিকে তিনি বিয়ে না করারই পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, আমি চাই না নভ্যা বিয়ে করুক।
তিনি আরও বলেন, জীবনকে উপভোগ করা উচিত। সম্পর্ক, শারীরিক আকর্ষণ-এগুলোর গুরুত্ব আছে; কিন্তু বিয়ের মতো সামাজিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা আজ অনেকটাই কমে গেছে।
অমিতাভের সঙ্গে বিয়ে নিয়ে অভিনেত্রীর ভাবনা কী একই ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে জয়া বলেন, আমি তাকে (অমিতাভ বচ্চন) জিজ্ঞেস করিনি। উনি হয়তো বলবেন, আমিই তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। কিন্তু আমি সেটি শুনতে চাই না। যদিও তাদের ভালোবাসা, বিয়ে এবং ৫২ বছরের দাম্পত্য নিয়ে এখনো ভক্তদের আগ্রহ কম নয়। বিগ-বি অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চনের বিয়ের পেছনের গল্পটিও যেন সিনেমার মতোই নাটকীয়। ১৯৭৩ সালে ‘জঞ্জির’ সিনেমা ব্লকবাস্টার হওয়ার পর তাদের দলবল নিয়ে লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। অমিতাভের বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন জানতে চাইলেন কারা যাবে? জয়াসহ মেয়েদের নাম শুনে তিনি স্পষ্ট বললেন, আগে বিয়ে করো, তারপর যাও। বাবার কথা রাখতেই মাত্র এক রাতের প্রস্তুতিতে বিয়ে সারেন দুজনে। পরদিনই উড়াল দেন লন্ডনে। প্রসঙ্গত, জয়া বচ্চন মানেই যেন বিতর্ক! সম্প্রতি পাপারাজ্জিদের কড়া ভাষায় শাসিয়ে ফের বিতর্কের মুখে পড়েন বিগ-বি ঘরনি। এবার বিয়েকে পুরোনো ধারণা বলায় চটেছেন নেটিজেনদের একাংশ।
অনেক বছর ধরেই অভিনয়ে অনিয়মিত এক সময়ের নন্দিত অভিনেত্রী আফসানা মিমি। তবে সাম্প্রতিক সময়ে মাঝেমধ্যে পর্দায় দেখা দিচ্ছেন। সর্বশেষ এই অভিনয়শিল্পী ‘উৎসব’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়ান। নব্বই দশকের জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুকের ফেইক আইডি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিনোদন অঙ্গনের অনেকেই লক্ষ করেছেন, কেউ একজন আফসানা মিমির নামে ফেসবুকে বন্ধু হওয়ার আহ্বান পাঠাচ্ছেন। শুধু বন্ধু রিকোয়েস্ট নয়, মেসেঞ্জারের মাধ্যমে খুদেবার্তা পাঠানো হচ্ছে। বিষয়টি নজরে আসে আফসানা মিমির। এই বিষয়ে আফসানা মিমি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটা ভুয়া’।
আমি কোন ধরনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করি না। কে বা কারা এসব করছে, তা আমি জানি না।’
বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্ক্ষী ও স্বজনেরাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, মিমির নামে চালু হওয়া আইডিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং কেউ না কেউ এটিকে ব্যবহার করে ভুয়া পরিচয় তৈরি করছে।