প্রতি বছর ঈদ উৎসবে দেশের বিভিন্ন টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলসহ প্রায় তিন শ থেকে চার শ নাটক নির্মিত হয়ে থাকে। কখনও কখনও এই সংখ্যা কমবেশি হয়ে থাকে। এখনকার সময়ে টিভি চ্যানেল থেকে ইউটিউবেই নাটক নির্মাণের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে কিছু ইউটিউব চ্যানেলের নাটক টিভিতে প্রচার হওয়ার পর সেগুলো আবার ইউটিউবেও প্রচার হচ্ছে। আবার বেশ কিছু ইউটিউব চ্যানেল আছে যারা শুধু নিজস্ব ইউটিউবের জন্যই নাটক নির্মাণ করে থাকে। অন্যদিকে বর্তমানে প্রায় সব টিভি চ্যানেলের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল থাকায় তাদের নিজেদের নির্মিত নাটক টিভিতে প্রচারের পর আবার সেগুলো নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। ফলে এখন একটি নাটক বানানোর লগ্নিকৃত টাকা দুই মাধ্যম থেকেই প্রযোজক বা লগ্নিকারক ফেরত পাচ্ছেন। যার কারণে নাটকের বাজেট এখন আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। একটা সময় বলা হতো বাজেট নেই, নাটকে বাজেট কম- এটা এখনকার সময়ে নাটকের বাজেটের দিকে তাকালে বলা যাবে না।
বিশেষ করে ইউটিউবের আধিপত্য হওয়ার পর থেকেই গত কয়েক বছর ধরে একেকটি নাটক অনেক টাকায় বানানো হচ্ছে। একটা সময় নাটকের বাজেট নিয়ে নানান ধরনের কথা শোনা যেত। পরিচালক-অভিনয়শিল্পী থেকে শুরু করে নাটকের কলাকুশলীরা সব সময় বলত- নাটকের বাজেট কমে গেছে, এত কম বাজেটে নাটক বানানো সম্ভব নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। ইউটিউবের কল্যাণে এখন নাটকের সেই বাজেট কয়েকগুণ বেড়েছে। অথচ ইউটিউবের আগে নাটকের বাজেট অনেক কমে গিয়েছিল। ২০১৬-২০১৭ সালেও নাটক এখনকার মতো এত বাজেটে নির্মিত হতো না। ২০১৮ সাল থেকে আস্তে আস্তে নাটকের বাজেট বাড়তে থাকে। নরমালি এখন একটি নাটক বানাতে চার-পাঁচ-ছয় লাখ টাকা নির্মাতারা হরহামেশাই পাচ্ছেন। এর থেকেও কম বাজেটে ছোট কিছু কনটেন্ট তৈরি হচ্ছে। ওইদিকের হিসেবে না গিয়ে যেগুলো আমাদের মেইনস্ট্রিমের নাটক বলে চিহ্নিত তা নিয়েই কথা হচ্ছে।
আর্টিস্ট ভেদে এখন একেকটি নাটকের বাজেট দশ-বারো-পনেরো লাখ পর্যন্ত পাচ্ছেন নির্মাতারা। এবার ঈদে তো আঠারো-বিশ লাখ এমনকি পঁচিশ লাখে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এই যে এত এত বাজেট পাচ্ছেন নির্মাতারা, নাটকের গল্পে কতটা ভেরিয়েশন পাচ্ছেন দর্শক? সেই একই অভিনয়শিল্পীদের একই প্রেম কাহিনি, কমেডি গল্প, চিল্লাচিল্লি কিংবা প্রেম হওয়ার শুরুতে ঝগড়া, তারপর প্রেম, পরিবার মানে না- টাইপের গল্প অথবা প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে, প্রেমিক চাকরি পায় না, পরিবার মানে না ইত্যাদি ইত্যাদি গল্প। অনেকটা নতুন বোতলে পুরোনো মদের মতো গল্প। আর এখন যোগ হয়েছে নাটকে গানের ব্যবহারসহ ঢাকার বাইরে শুটিং- দামি ক্যামেরা এবং বিজ্ঞাপনের মতো ইউনিট-ক্রু নিয়ে মুভ করা। বাজেট বাড়ছে, খরচ করতে সমস্যা নেই। কিন্তু যেই গল্পের জন্য নাটক- সেই গল্পের জন্য কতটা খরচ করে নাটক নির্মিত হচ্ছে? মানে ভালো গল্পের এবং ‘খরচওয়ালা’ গল্পের পেছনে কি সেই বাজেটটা যাচ্ছে?
বিশিষ্ট সাংবাদিক, নাট্যকার ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা রেজানুর রহমান বলেন, ‘নাটকে ভালো গল্পের সংকট রয়েছে এটা যেমন সত্যি, তেমনি অনেকের কাছে ভালো গল্প থাকার পরও সে বাজেটের জন্য তা বানাতে পারছেন না- এটাও সত্যি। আসলে এখন কোনো লেভেল কোম্পানি (ইউটিউব), টিভি কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান প্রথমেই নির্মাতার কাছে জিজ্ঞাসা করেন- ‘যে গল্প নিয়ে কাজ করবেন সেটির ভিউ হবে নাকি’- এই কথায় নির্মাতা নতুন কোনো কনসেপ্ট নিয়ে কাজ করতে চান না। সেই একই ফরম্যাটে কাজ করতে হচ্ছে তাকে। এখন দেখা গেছে কেউ একজন একটি গল্প নিয়ে কাজ করায় সেটির ভিউ হয়েছে- সবাই সেটা বানাতে ছুটে। মানে হলো ভিউয়ের পেছনে দৌঁড়াচ্ছি। ভিউ-ই যখন এখন একমাত্র বাণিজ্য তখন তো গল্প ফ্যাক্ট না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্মাতাদের স্বাধীনতা দিতে হবে। নির্মাতারা স্বাধীনতা না পেলে কাজ করা মুশকিল। অমুকটার মতো, তমুককে নিয়ে জুটি করে নাটক বানানোর জন্য প্রেসার না দিয়ে তাকে স্বাধীনতা দিতে হবে। এখন গল্পসহ ‘পাঁচজন- পাঁচজন’ জুটিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলে দেয়া হচ্ছে নাটক বানানোর জন্য। সেই ‘পাঁচজন-পাঁচজন’ জুটির দশজন এতো ব্যস্ত যে, তাদেরকে মেনটেইন করতে গেলে নাটকের দিকে নজর দেয়া যাচ্ছে না। তারা ব্যস্ত থাকতেই পারেন। কিন্তু জুটি বেঁধে দিলেই বিপদ। নির্মাতাকে বলতে হবে- স্বাধীনভাবে গল্পে যে ধরনের আর্টিস্ট যায়, তাদেরকে নিয়েই বানান। তাহলে নতুন গল্প এবং নতুন আর্টিস্টও ইন্ডাস্ট্রিতে তৈরি হবে। বর্তমানে যারা কম্প্রমাইজ করে কাজ করছেন যা হওয়ার তাই হচ্ছে। ফলে মনে রাখার মতো নাটক হচ্ছে না। এখন আমাদের লাখ লাখ টাকা বাজেট যাচ্ছে, শত শত নাটকও হচ্ছে। কিন্তু অর্জনের জায়গাটা ফাঁকাই থেকে যাচ্ছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথা বলছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশির ভাগ নাটকে লোকেশন (প্রয়োজন না হলেও), লাইট-ক্যামেরাসহ এগুলোতে অপ্রয়োজনীয় বাজেট ব্যবহার, মেইন আর্টিস্টদের বেশি রেম্যুনারেশন (আর্টিস্টরা নিজেরাই নিজেদের পারিশ্রমিক ঠিক করছেন), শুটিং ইউনিটে বিলাসবহুল খরচ করায় বেশির ভাগ নাটকের মূল বাজেট সেখানেই চলে যাচ্ছে। ফলে নাটকে এত এত বাজেট পাওয়ার পরও যেই ভিন্নধর্মী গল্পটির পেছনে বাজেটটা খরচ করার কথা- সেখানে কি খরচ হচ্ছে না। সেই একই গল্প, একই মেকিং এবং কমেডি টাইপ নাটকগুলোই নির্মিত হচ্ছে। এখন তো একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের নামেরও বেশ মিল পাওয়া যায়। যেমন- ‘তুই আমারই’, ‘তোর জন্য’, ‘আজকাল তুমি আমি’, ‘তোমাতে হারাই’, ‘তোমায় ভালোবেসে’- এবারের ঈদের এই নাটকগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। এরকম ইউটিউবে খুঁজলে আরও অনেক নাটক পাওয়া যাবে যেগুলোর নাম প্রায় কাছাকাছি। আরও রয়েছে ইউটিউবে ‘কাটতি টাইপ’ নাটকের নাম। যা আসলে শিল্পমানের নাটকের নাম নয়। ফলে দর্শক আসলে একটি নাটক দেখে তার মনের মধ্যে সেটি ‘দাগ’ কাটাতে পারছেন না। আর এখনকার নাটকগুলোতে প্রায় একই অভিনয়শিল্পী (অমুকের সঙ্গে তমুক, তমুকের সঙ্গে অমুক- ধরাবান্দা জুটি) হওয়ায় দর্শক আরও বিভ্রান্ত হচ্ছেন যে সে আসলে কোন নাটকটা দেখেছেন। ফলে মনের মধ্যে অনুভূতি সৃষ্টি করা এবং খুব ভাবনায় ভাবানোর মতো নাটক এখন খুব একটা দেখা যায় না।
নাটকে বাজেট বাড়লেও গল্পের অভাব কিংবা শিল্পমান সম্পন্ন নাটক কম নির্মিত হওয়ার পেছনে কারণ কি? এই বিষয়ে কথা বলেন নির্মাতা রাকেশ বসু। তিনি বলেন, ‘বাংলা নাটকের এখন সব থেকে বড় সমস্যা হলো- গল্প সংকট। একটা সময় বাজেট নিয়ে সবাই কম-বেশি কথা বলতেন। কিন্তু এখন বাজেট সমস্যা থেকে গল্প সংকটটাই অনেক বড় ইস্যু একটা ভালো কাজের জন্য। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীরা যে ধরনের কাজ করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন এবং ভিউ কাউন্ট হয় সেই একই ধরনের গল্প নিয়েই কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা হলো ভিউ হওয়া একই গল্পের পুনরাবৃত্তি। ফলে অভিনয়শিল্পীরা জনপ্রিয়তার দিকে নজর দিতে গিয়ে ভালো গল্পের কাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বারবার।’
আগে একটি নাটকের স্ক্রিপ্ট ফাইনাল হতো। টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠান প্রধানসহ ক্রিয়েটিভ টিম মিলে গল্পটি ফাইনাল হওয়ার পর কোন অভিনয়শিল্পী কোন চরিত্রে অভিনয় করবে সেটা ভেবেচিন্তে কাস্টিং ফাইনাল করা হতো। এরমধ্যে স্ক্রিপ্ট নিয়ে কয়েকদফায় রাইটার ও পরিচালকসহ মিটিং হতো। তারপর ফাইনালি নাটকটি নির্মাণে যাওয়া হতো। নাটক নির্মাণের পর তা দেখে প্রিভিউ কমিটির মতামত থাকত এবং সেখানে পাস হলেই তা ফাইনালি সম্প্রচারে যেত।
আর এখন অনেকটা ঝালমুড়ি বানানোর মতোই নাটক বানানো হয়। মানে অমুক-তমুকের ভিউ আছে- আগে তাদের ডেট ‘লক’ করা হোক। তারপর তারা যেই গল্প পছন্দ করবেন কিংবা অনেক সময় অভিনয়শিল্পীও গল্প দিচ্ছেন সেটা নিয়ে- ডে নাইটের কিছু সিক্যুয়েন্স বানিয়ে (শুটিংয়ের সুবিধার্থে) শুটিংয়ে চলে যাওয়া হচ্ছে। স্লো-মো শট, গানের কিছু শট, নায়ক-নায়িকার দেখাদেখি-চোখাচোখি আর বিয়ে দিবে না বাবা-মা, ছেলে বেকার, চাকরি হয় না, পরিবার মেয়েকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিয়ে দেয় আর চিল্লাচিল্লি ভরা কমেডি গল্প। বেশির ভাগ নাটকই এখন এভাবে নির্মিত হচ্ছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি এখন সেট বানানোতেও ভালো খরচ করে নাটক নির্মাণের খবর পাওয়া গেছে।
ইউটিউবের সঠিক নিয়মনীতি না থাকা, নাটকে প্রিভিউ সিস্টেম না থাকায় এবং ‘ভিউই’ একমাত্র বাণিজ্য হওয়ায় দিনকে দিন মানহীন নাটক বানানোর প্রতিযোগিতা হচ্ছে এবং তা নিম্নমানের তলানিতে যাচ্ছে বলে অনেকে অভিমত দেন। এর পাশাপাশি একটা গুরুত্বপূর্ণ দিকের কথাও তারা উল্লেখ করেন তা হলো- একটা সময় যারা নাটক নির্মাণ ও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন তারা টেলিভিশন ও থিয়েটারে দীর্ঘদিন কাজের অভিজ্ঞতা ছিল। আর এখন শুধু ব্যবসার উদ্দেশ্যেই (বেশির ভাগ) ইউটিউব চ্যানেল করে নাটকের নামে ‘কনটেন্ট’ বানানো হয়।
অথচ গল্পনির্ভর, জীবনবোধের নাটক, সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষের গল্প, আমাদের চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কত কত গল্প। প্রতিদিন সংবাদের পাতায় কত গল্প প্রকাশ পায়, অথচ আমাদের দেশের নাটক নির্মাতারা এসব গল্প দেখেন না। কারণ এসব গল্পে ভিউ পাওয়া যায় না। তাই ইউটিউব মালিক তথা প্রযোজকরা ওই ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করতে বা নির্মাণে আগ্রহ পান না।
ইউটিউবে ভিউ হচ্ছে সস্তা-চটুল, কমেডি তথা সুরসুরি প্রেম মার্কা গল্পের। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। লাখ লাখ টাকা বাজেট দিয়ে যেসব ‘নাটক’ বানানো হচ্ছে তা আসলে কতটা সমাজে প্রভাব ফেলছে? কি শিখছেন তরুণ প্রজন্ম? অবশ্য তরুণ প্রজন্ম নাকি যা বানানো হচ্ছে- তাই দেখতে চায় বলে তাদের অভিমত। এত এত বাজেটের টাকা আদতে ‘শ্রাদ্ধ’ করাই হচ্ছে বলে প্রকৃত নাট্যপ্রেমী তথা সত্যিকারের সংস্কৃতপ্রেমীরা অভিমত দেন। তাদের মতে, বেশি বাজেট এলে বেশির ভাগ নাটককে ঝকঝকে তকতকে বানানো আর ‘ফুটেজ’ ছাড়া আর কিছুই না বলেও অনেকে অভিমত দেন। তাই ভালো বাজেট দিয়ে ভালো গল্প এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রসহ জীবনবোধের নাটক বানানোর তাগিদ দেন তারা।
বর্তমানে নাটক নির্মাণের একটা চিত্র তুলে ধরলে এখনকার পরিস্থিতিটা আরও পরিষ্কার বোঝা যাবে। এখন নাটকের কয়েকজন মেইন নায়ক তারা তাদের নিজেদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক বানিয়ে তা নিজেই বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেল এবং টিভি চ্যানেলে তাদের চাহিদামতো সরবরাহ করছেন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক নাট্য নির্মাতা বলেন, ‘এভাবে আসলে কাজ করে অভ্যস্ত না। এই ভিউ বাণিজ্য এসে একজন নির্মাতার হাত-পা বন্দি হয়ে গেছে। আমরা আসলে বিক্রি হয়ে গেছি। এখন তো চাহিদাসম্পন্ন নায়করা তাদের প্রযোজনা হাউস থেকে নাটক তৈরি করেন। তারা নিজেদের বানানো ডিরেক্টর টিম, প্রোডাকশন টিমসহ ডিওপি এবং কো-আর্টিস্ট- সবই তারা ঠিক করেন। ডিরেক্টরকে দিয়ে শুধু ডিরেকশন (আসলে নামে ডিরেকশন) দেওয়ান। কোথায় এডিটিং হবে, কোথায় মিউজিক হবে এবং কীভাবে কাজটা কোথায় কত টাকায় বিক্রি হবে- সবই তিনি (নায়করা) ঠিক করেন। এভাবে চললে তো আসলে নাটকের ‘মান’ বলে কিছু থাকবেই না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।’
ভালো নাটক বানানোর কিছু ব্যতিক্রম চিত্রও রয়েছে। কিছু যে ভালো গল্পের নাটক নির্মিত হচ্ছে না তা বলা যাবে না। যারা সত্যিকারের ভালো গল্পের খোঁজ করেন এবং জীবনবোধের গল্পসহ ভিন্নরকম কিছু বা আইডলজির জায়গা থেকে কাজ করছেন তারা ঠিকই শত প্রতিকূলতায় কিছু নাটক বানাচ্ছেন। আমাদের দেশে ওটিটিতে ওয়েবসিরিজ ও ওয়েবফিল্মে ভিন্নধর্মী গল্পের কাজ হওয়ায় সেগুলো দর্শকদের কাছে সাড়া ফেলেছে। ফলে তার কিছুটা ছোঁয়া নাটকেও লেগেছে বলা যায়। এবারের ঈদে ভিন্নধর্মী গল্পের তেমনকিছু নাটক হচ্ছে- ‘স্মৃতিসারক’, ‘বিদায় বসন্তে মধ্যাহ্ন রোদে’, ‘নিখোঁজ’, ‘বোঝা’, ‘শেষমেষ’, ‘সম্ভবত প্রেম’, ‘কিছু কথা বাকি’, ‘দুনিয়া’, ‘অভাব’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘অভিশাপ’, ‘অভাব, ‘জাদুর শহর’, ‘গর্ভ’, ‘কলিজার টুকরা’, ‘স্বপ্নটা সামান্যই’সহ আরও কিছু নাটক।
এখন প্রায় একই মুখ ঘুরেফিরে সব নাটকেই দেখতে হচ্ছে বলে সব নাটক একইরকম লাগার কথা দর্শকরা অভিমত দিয়েছেন। এক সময় নাটকে নিশো, মেহজাবীন, অপূর্ব, তানজিন তিশাকে জুটি বেঁধে অভিনয় করতে দেখা যেত। এখনকার সময়ে অপূর্ব ও তানজিন তিশাকে নাটকে দেখা গেলেও নিশো-মেহজাবীনকে দেখা যায় না। নিশো চলচ্চিত্র ও ওটিটির কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকায় গত কয়েক ঈদ উৎসবে তাকে নাটকে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে মেহজাবীনও বর্তমানে ওটিটির কাজের সঙ্গে সম্প্রতি সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন। তারপরও নাটকে মেহজাবীনের কাজের আগ্রহ রয়েছে; কিন্তু ভালো গল্পের অভাবে কাজ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি। ‘সাবা’ ও ‘প্রিয় মালতী’ শিরোনামের দুটি ছবিতে কাজ করতে যাচ্ছেন ভক্তদের মেহু। তার জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘প্রিয় মালতী’ সিনেমা ঘোষণার অনুষ্ঠানে নাটকে অভিনয় কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমি নাটকে একেবারেই কাজ করতে চাই না, বিষয়টা তেমন না। আমি আসলে ভালো গল্প পাই না। ভালো গল্প পেলে অভিনয় অবশ্যই করব। আমার কাছে যে স্ক্রিপ্টগুলো আসে সেগুলো পছন্দ হয় না। দর্শক আসলে ভিন্নতা চায়। আমি অনেক দিন পর সিনেমাওয়ালা ইউটিউব চ্যানেলের ‘অনন্যা’ করেছি। কারণ এটার গল্পটা ভিন্ন। এটার জন্য আমি সাড়াও পেয়েছি বেশ। তাই আমি এরকম ভিন্ন ভিন্ন গল্পের কাজ করতে চাই। তেমন স্ক্রিপ্ট পেলে কাজ করব।’
ঈদে রাফাত মজুমদার রিংকুর পরিচালনায় ‘রূপান্তর’ নাটকটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। ট্রান্সজেন্ডার এবং তৃতীয় লিঙ্গের ইস্যুতে নাটকটিকে শেষমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা শ্রেণি ধর্মের বিষয়ের সঙ্গে তুলনা করে। ফলে কর্তৃপক্ষ নাটকটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়। ভিন্নধর্মী গল্প নিয়ে নাটক বানাতে গেলেও নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করেন নির্মাতা রাফাত মজুমদার রিংকু। তিনি বলেন, ‘আগের চেয়ে ভিন্ন ধরনের গল্পের নাটক বানানো হচ্ছে। তবে সেটা সংখ্যায় কম। এখন আলাদা টাইপের গল্পের নাটক বানাতে গেলেও নানান ধরনের জটিলতা তৈরি হচ্ছে। আমি নিজেও ‘রূপান্তর’ নিয়ে একপ্রকার জটিলতায় রয়েছি। তাই যারা ইউটিউবের মালিক এবং প্রযোজক তারা ভিন্ন টাইপের গল্পের নাটক বানাতে রিস্ক নেয় না। বাধ্য হয়েই গদবাঁধা গল্পের নাটক বানায়। নাচ-গান আর বিউটি লোকেশনসহ কাজগুলো হচ্ছে।’
নাট্যপ্রেমী-বিনোদনপ্রেমী তথা সংস্কৃতিপ্রেমীদের প্রত্যাশা, নাটকের গল্পে সমাজের বাস্তবচিত্র থাকবে। কারণ ‘সমাজের দর্পণই হচ্ছে নাটক’। একটা সময় বিটিভিতে নাটক প্রচারের মাধ্যমে মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের সাজটা কেমন হবে- তা সেই নাটক থেকে শিখত মধ্যবিত্ত সমাজ। সময় বদলেছে, মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। সমাজের আমূল পরিবর্তনে নিজেদের ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ যেন নাটকের মাধ্যমে প্রচার হয়ে তা আবার সমাজে প্রভাব ফেলুক- তা কারোরই কাম্য নয়। কারণ আজকে পর্দায় যা দেখানো হবে তাই দেখবেন দর্শক। সংস্কৃতিকর্মী তথা ক্রিয়েটিভরাই প্রকৃত ‘দর্শক’ তৈরি করেন। সারা পৃথিবীতেই রুচিহীন-সস্তা কনটেন্টেরই ‘ভিউ’ বেশি, এটাই স্বাভাবিক। এরমধ্যেও নিজেদের দর্শক নিজস্ব গল্প দিয়ে নিজেদেরই তৈরি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন প্রকৃত সংস্কৃতিপ্রেমীরা।
কয়েক দফায় মুক্তি স্থগিত হওয়া আর নানা জল্পনাকল্পনার পর অবশেষে ভারতেও মুক্তি পাচ্ছে ফাওয়াদ খান ও বাণী কাপুর অভিনীত রোমান্টিক ড্রামা ‘আবির গুলাল’। ছবিটি বিশ্বের নানা দেশে মুক্তি পেয়েছে ১২ সেপ্টেম্বর, তবে ভারত বাদ পড়ায় ভক্তদের মধ্যে হতাশা ছড়িয়েছিল। এবার জানা গেছে, ছবিটি ভারতের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ২৬ সেপ্টেম্বর। সিনেমাটির একটি সূত্র ভারতীয় গণমাধ্যম বলিউড হাঙ্গামাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইন্ডিয়ান স্টোরিজ লিমিটেড (ইউকে) টিম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ছবিটি ভারতে মুক্তি দেবে ২৬ সেপ্টেম্বর। তারা আত্মবিশ্বাসী যে ছবির সহজ-সরল প্রেমকাহিনি এখানকার দর্শকের মনেও সাড়া ফেলবে। তা ছাড়া ওই সপ্তাহে আর কোনো বড় বাজেটের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না, ফলে বক্স অফিসে ছবিটি একক দৌড় উপভোগ করবে, জানিয়েছে সিনেমার সঙ্গে যুক্ত একটি সূত্র।
চলতি বছর শুরুর দিকে ঘোষণা হয়েছিল, পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খান দীর্ঘদিন পর বলিউডে ফিরছেন ‘আবির গুলাল’ ছবির মাধ্যমে। ফাওয়াদের সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন বলিউড অভিনেত্রী বাণী কাপুর। রোমান্টিক–কমেডি ঘরানার এই ছবি তার জন্য বড় প্রত্যাবর্তন হিসেবে ধরা হচ্ছিল; কারণ, ২০১৬ সালের উরি সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয় এবং পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতে কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়।
চলতি বছর কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলা ও অপারেশন সিঁদুরের পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপোড়েন আবারও তীব্র হয়। ফলে ছবির ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়।
বিবেক বি আগরওয়াল, রেজা নামাজি ও ফিরুজি খানের প্রযোজনায় তৈরি ‘আবির গুলাল’ প্রথমে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ৯ মে। ফাওয়াদের জন্য এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ (২০১৬)–এর পর এটাই তার প্রথম বলিউড ছবি। আট বছর পর তার এই প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে ভক্তদের আগ্রহ ছিল প্রবল। তবে নানা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত জটিলতায় ছবির মুক্তি একাধিকবার পিছিয়ে যায়।
রোমান্টিক কমেডি ঘরানার ছবিটিতে দেখা যাবে গুলালকে (বাণী কাপুর), যে বিয়ে থেকে পালিয়ে চলে যায় লন্ডনে। সেখানে তার দেখা হয় আবিরের (ফাওয়াদ খান) সঙ্গে, যে অতীতের ভার বহন করা এক রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী। শুরুতে দুই ভিন্ন মেজাজের মানুষের সংঘর্ষ ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে কোমল এক প্রেমকাহিনিতে।
পাকিস্তানি অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন বাণী কাপুর। এ প্রসঙ্গে আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, ‘কয়েক বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার পরিবেশ অনেকটাই বিষাক্ত হয়ে গেছে। আমি চাই, আমরা যেন একটু কম ঘৃণা করি, একটু বেশি ভালোবাসা ছড়িয়ে দিই। আপনি যদি কাউকে অপমান করেন, তুচ্ছ করেন, কিংবা ট্রল করেন, সেটি একদিন ঘুরে আপনার কাছেই ফিরে আসবে। তখন আপনাকেই কষ্ট পেতে হবে। আমি চাই, আমরা যেন প্রকৃত অর্থেই ভালো মানুষ হই। যেন আমরা শুধু একে অপরের প্রতি নয়, নিজের প্রতিও দয়ালু হতে শিখি। একজন দয়ালু মানুষের পৃথিবীতে আরও বেশি প্রয়োজন।’
একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় গত মে মাসে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। দুইদিন কারাগারে থাকার পর ছাড়া পান তিনি। এরপর কেটে গেছে প্রায় চার মাস। ওই বিষয়ে আর কোনো কথা বলেননি। তবে সম্প্রতি নিউইয়র্ক থেকে প্রচারিত ‘ফ্রাইডে নাইট উইথ জায়েদ খান’ শো-তে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে কথা বলেন নুসরাত ফারিয়া।
তিনি বলেন, ‘এ রকম কিছু হবে আশা করিনি। কখনো দুঃস্বপ্নেও ভাবিনি। যার জীবন স্কিন কেয়ার, মেকআপ, একটু ঘোরাফেরা, শপিং করা, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো, বন্ধুদের সঙ্গে কোথাও ভালো খেতে যাওয়া, এই ছোট ছোট জিনিস নিয়ে যে খুশি, তার জীবনে এত জটিলতা! কী করব না করব এগুলো নিয়ে যখন চিন্তা করতে হয় তখন ভীষণ হতাশ হই।’
জায়েদ খানের পাল্টা প্রশ্নের উত্তরে ফারিয়া বলেন, ‘আমি মনে করি, এটাকেই বড় হওয়া বলে। পরিস্থিতি মানুষকে বড় করে। আমার মনে হয় পুরো ঘটনাতে আমি অবশ্যই মানসিকভাবে বড় হয়েছি এবং ওইটার (গ্রেপ্তার) পর এটা আমার প্রথম সাক্ষাৎকার। আমি কোথাও কথা বলিনি। এমন না যে আমি কথা বলতে চাইনি। আমি এখনো কথার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত নই।’
অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমার সঙ্গে যেটা হয়েছে, সেটা অন্য কারো সঙ্গে হতে পারত। তবে আমি ভাগ্যবান। কারণ, আমার কাজের মাধ্যমে গোটা দেশের মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। যাদের দোয়া ভালোবাসার কারণে আমি আজকে আপনার (জায়েদ খান) সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার পরিবার, বাবা-মা, ভাই-বোন তাদের সবার দোয়া এবং ভালোবাসার কারণে কঠিন সময় পার করতে পেরেছি।’
নুসরাত ফারিয়া বলেন, ‘ঠিক ১০-১৫ দিন পর থেকে আমি আবার কাজ করা শুরু করেছি। তবে পুরো ঘটনাটা আমাকে একটা জিনিস শিখিয়ে দিয়েছে, কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। অনিশ্চয়তায় ভরা। যেকোনো সময় যেকোনো কিছু হতে পারে। এ জন্য নিজেকে মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। তুমি যদি সৎ থাকো তাহলে পৃথিবীর কোনো খারাপ শক্তি তোমাকে আটকে রাখতে পারবে না। তোমাকে বিপদের সম্মুখীন করবে, কিন্তু সেই বিপদ থেকে সৃষ্টিকর্তা নিজেই তোমাকে বাঁচিয়ে নিয়ে আসবেন। এটা আমার জীবন থেকে পাওয়া সবচেয়ে বড় শিক্ষা।’
ভারতীয় শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে তার পরিবারে শুরু হয়েছে উত্তরাধিকার নিয়ে বড়সড় আইনি দ্বন্দ্ব। প্রায় ৩০ হাজার কোটি রুপির (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা) বিপুল সম্পত্তি নিয়ে টানাপোড়েনে মুখোমুখি হয়েছেন তার তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া কাপুর, সাবেক স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের দুই সন্তান সামাইরা-কিয়ান এবং সঞ্জয়ের মা রানি কাপুর। এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টেও মামলা গড়িয়েছে। এরই মাঝে প্রিয়া কাপুর বড়সড় এক পদক্ষেপ নিলেন। সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি হাজির হলেন স্বামীর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দিল্লিতে অটো কম্পোনেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে যোগ দেন প্রিয়া। তিনি অরিয়াস ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শুরুতেই প্রয়াত সঞ্জয় কাপুরকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রিয়া বৈঠকে জানান, শিল্প সংস্থা যেকোনো দায়িত্ব তাকে দিলে, তিনি তা গ্রহণে প্রস্তুত। সূত্র জানায়, প্রিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েই বৈঠকে ডাকা হয়েছিল।
গত জুনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৌমাছির কামড়ের জটিলতায় মারা যান সঞ্জয় কাপুর। তার মৃত্যুর পরই অরিয়াস ইনভেস্টমেন্টের পরিচালক পদে বসানো হয় প্রিয়াকে। তবে এই নিয়োগ মেনে নেননি সঞ্জয়ের মা রানি কাপুর ও বোন মন্দিরা কাপুর স্মিথ। তাদের অভিযোগ, প্রিয়া এভাবে বিপুল ক্ষমতা হাতে নিয়ে সঞ্জয়ের সম্পত্তি আত্মসাৎ করেছেন এবং রানিকে কিছুই দেননি। মন্দিরার অভিযোগ, ‘প্রিয়া আমার মায়ের মাথার ওপরের ছাদটাই কেড়ে নিয়েছেন। তাই আইনি লড়াই ছাড়া আর কোনো পথ খোলা ছিল না।’
তারা দাবি করেছেন, শুরুতে আদালতে না গিয়েও বিষয়টি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু প্রিয়া কারিশমার সন্তানদের প্রাপ্য অংশ দিতে রাজি না হওয়ায় মামলা গড়িয়েছে। মন্দিরার মতে, আদালতের রায়ই শেষ পর্যন্ত জানাবে সঞ্জয়ের সম্পদের প্রকৃত হিসাব এবং উইলের ভেতরের আসল তথ্য।
আদালতে মামলার সর্বশেষ শুনানিতে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি জ্যোতি সিং সরাসরি প্রিয়াকে প্রশ্ন করেন, কেন উইল এখনো সন্তানদের সঙ্গে শেয়ার করা হয়নি? তিনি নির্দেশ দেন, ২০২৫ সালের ১২ জুন পর্যন্ত সঞ্জয়ের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিস্তারিত তালিকা আদালতে জমা দিতে হবে।
এরই মধ্যে প্রিয়ার দাবি, কারিশমার দুই সন্তান সামাইরা ও কিয়ান ইতোমধ্যেই বাবার সম্পত্তি থেকে ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তবে আইএএনএসর খবরে জানা গেছে, এই দাবি সত্য নয়। সূত্র জানিয়েছে, এই সম্পদের নিয়ন্ত্রণ এখনো প্রিয়ার হাতেই রয়েছে আরকে ফ্যামিলি ট্রাস্টের মাধ্যমে। কারিশমার সন্তানদের এ বিষয়ে কোনো অধিকার নেই।
আদালতে প্রিয়ার আইনজীবী আরও জানান, কথিত ওই উইল আসলে নিবন্ধিত নয়। এতে নতুন করে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, সঞ্জয়ের মা রানি কাপুর প্রিয়াকে উইল নিয়ে স্পষ্টতা চাইতে অন্তত ১৫টি ই–মেইল পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো উত্তর পাননি। সন্তানদের কাছেও এখনো উইলের কপি বা ব্যক্তিগত সম্পদের হালনাগাদ তথ্য পৌঁছায়নি।
সঞ্জয়ের হঠাৎ মৃত্যুর মাত্র ৭ সপ্তাহ পর যে উইল সামনে আসে, সেটি নাকি লেখা হয়েছিল মৃত্যুর ১১ সপ্তাহ আগে। ওই উইল অনুযায়ী সঞ্জয়ের পুরো ব্যক্তিগত সম্পত্তি তার তৃতীয় স্ত্রী প্রিয়া কাপুরের নামে করে দেওয়া হয়েছে, সন্তানদের জন্য কোনো অংশ রাখা হয়নি। সন্তানদের আইনজীবীর দাবি, উইলটি জালিয়াতি ও গোপন করার ফল।
চাঞ্চল্যকর মামলায় শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে।
ভারতের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তামান্না ভাটিয়া। অভিনেতা বিজয় ভার্মার সঙ্গে সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন তিনি। কিন্তু সে সম্পর্ক স্থায়ী হয়নি। বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাদের। বিজয় এবং তামান্না- কেউই তাদের বিচ্ছেদ নিয়ে টু শব্দও করেননি। কেউ কাউকে দোষারোপও করেননি। কেবল নিঃশব্দে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। এরইমধ্যে তামান্না পরোক্ষভাবে তার ও বিজয়ের প্রেম ভাঙায় সিলমোহর দিলেন। এর পাশাপাশি তিনি যে নতুন করে প্রেম খুঁজছেন, সেই ইঙ্গিতও দিলেন। জানা গেছে, বিয়ে নিয়ে সমস্যা বেধেছিল বিজয় ও তামান্নার মধ্যে। অভিনেত্রী বিয়ে করে থিতু হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিজয় নাকি রাজি ছিলেন না। বিচ্ছেদের পর অভিনেতার নতুন সম্পর্ক নিয়েও জল্পনা হয়েছে। কিন্তু বিচ্ছেদযন্ত্রণা সামলে উঠতে নাকি রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে তামান্নাকে। তবে, ভালোবাসার ওপর আস্থা হারাননি অভিনেত্রী। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তামান্না বলেন, আমি দুর্দান্ত জীবনসঙ্গী হতে চাই। নতুন প্রেমের খোঁজেই রয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমাকে যাতে উল্টো দিকের মানুষটার মনে হয়, গত জীবনে কতো পুণ্য করেছি বলে ওকে পেলাম। জানি না সেই সুখী পুরুষটি কে হবেন! তবে, আমি আরও ভালো হওয়ার চেষ্টা করছি।
মানুষের প্রতি আস্থা হারানো, সহমর্মিতা ও ভালোবাসার অভাব নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করেছেন ছোট পর্দার অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। তিনি বলেছেন, সময় যেন মানুষকে একেবারেই অন্য রকম করে দিয়েছে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাসে তিনি এ সব কথা বলেন।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাহি লিখেছেন, ‘আজকাল ২৪ ঘণ্টা ভয়ে থাকি। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের না, কোনো সমস্যার না; সবচেয়ে বেশি ভয় মানুষের। সময় যেন মানুষকে একেবারেই অন্য রকম করে দিয়েছে। এখন চারপাশে শুধু প্রতিযোগিতা, হিংসা, নেতিবাচকতা। একে অপরকে বুঝতে শেখার পরিবর্তে মানুষ এখন শুধু দোষ ধরতে শেখে। ভালো কিছু বললে বা করলে সেটার প্রশংসা না হয়ে উলটো সমালোচনা আসে।’
অভিনেত্রী লেখেন, ‘আমরা এমন এক সমাজে বাস করছি, যেখানে মানুষ আনন্দ ভাগাভাগি করতে চায় না, বরং কারো সুখ দেখলেই কষ্ট পায়। সহমর্মিতা হারিয়ে গেছে, জায়গা নিয়েছে বিচার আর হিংসা। আগে যেখানে প্রতিবেশী মানেই পরিবার, এখন সেখানে অপরিচিতর মতো দূরত্ব। সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হলো আজ মানুষ মানুষকেই ভয় পায়।’ সবশেষ মাহি যোগ করেন, ‘আমরা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে ভয় পাই, কারণ জানি শোনার বদলে কটুকথাই ফিরবে।
এই কি সেই সমাজ, যে সমাজের জন্য আমরা এত সংগ্রাম করি? কোথায় হারিয়ে গেল মানুষের সরলতা, ভালোবাসা আর মানবিকতা?’
মাহির এই কথাগুলোর সঙ্গে একমত তার ভক্তরাও। কিন্তু অনেকে আবার এসব কথা গুরুত্বসহকারে নেয় না। ফলে মাহির পোস্টে অনেকে হাসির প্রতিক্রিয়াও জানান। এক নেটিজেন মন্তব্য করেন, ‘কথাগুলো একদম সত্য। কিন্তু এরমধ্যে আবার অনেকে হা হা রিয়েক্ট দেয়।’ এর জবাবও দেন মাহি। লেখেন, ‘কারণ ওদের জীবনটাই একটা হাহা’।
বলিউড অভিনেত্রী দিয়া মির্জার মা একজন বাঙালি, আর তার বাবা ছিলেন জার্মান নাগরিক। দিয়া মির্জার বয়স যখন ৯ বছর তখন তার বাবা মারা যান। এরপর দিয়া মির্জাকে দত্তক নেন এক মুসলিম দম্পতি। দিয়া মির্জা তার পালক পিতার পদবি নিজের নামের সঙ্গে ব্যবহার করেন।
তার পালক বাবার নাম আহমেদ মির্জা। সম্প্রতি পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে কলকাতায় একটি আলোচনাসভায় যোগ দিতে গিয়ে এসব কথা জানিয়েছেন দিয়া মির্জা।
এক সাক্ষাৎকারে দিয়া মির্জা বলেন, ‘পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে ১০ বছর ধরে প্লাস্টিকের কোনো জিনিস ব্যবহার করি না।’
মুসলিম পরিবারের শিক্ষা বহন করেন উল্লেখ করে দিয়া মির্জা বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বাংলা বলতে পারি।
কারণ আমার মা একজন বাঙালি। আর বাবা ছিলেন জার্মান, খ্রিস্টান। ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারাই। তারপর আমি এক মুসলিম পরিবারে বড় হয়েছি।
তারা আমাকে দত্তক নিয়েছিলেন। সেই পারিবারিক শিক্ষাই আমি এখনো বহন করি।’
দিয়া মির্জা জীবনে অপ্রয়োজনীয় কোনো মানুষ কিংবা সম্পর্ককে স্থান দিতে চান না। তিনি নাকি শিখে গেছেন কখন, কাকে ‘না’ বলতে হয়।
অভিনেত্রী আরো বলেন, ‘মুসলিম পরিবার বললেই, মানুষ ভাবে—মেয়েরা কথা বলতে পারবে না।
অথচ আমি সব ডিবেটে অংশ নিতেই শিখেছি পরিবার থেকে। অপ্রয়োজনীয় কাউকে জীবনে জায়গা দিতে ভালো লাগে না। সে বন্ধু হোক কিংবা কোনো সম্পর্ক হোক। আমার ১৬ বছরের কন্যা, যাকে আমি বিবাহসূত্রে পেয়েছি। সব বিষয়ে আমাকে আর ওর বাবাকে না বলে। ওর কাছ থেকে শিখেছি না বলতে পারাটা দোষের কিছু নয়।’
তাসনিয়া ফারিণ। অভিনয়ের পাশাপাশি মডেলিং, গান ও উপস্থাপনাতেও দক্ষতার পরিচয় দিয়ে বহুমাত্রিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন তিনি, ছুঁয়ে যাচ্ছেন দর্শকহৃদয়।
শোবিজ অঙ্গনে বর্তমানে যে কজন মডেল ও অভিনেত্রী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন, তাসনিয়া ফারিণ তাদের অন্যতম। চলতি বছর যেন তার ক্যারিয়ার এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে উঠেছে। মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সব মাধ্যমে দক্ষতা দেখিয়েছেন তিনি। ‘ফারিণ মানেই ভিন্ন কিছু’ এই ধারণাটিকে যেন এবার পূর্ণতা দিয়েছেন তিনি তার বহুমাত্রিক উপস্থিতি দিয়ে। সিনেমা, ওয়েব ফিল্ম, অ্যাওয়ার্ড শো উপস্থাপনা–সব জায়গায় যেন তার সরব পদচারণা।
সম্প্রতি সঞ্জয় সমাদ্দারের পরিচালনায় মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ইনসাফ’ তাকে আবারও আলোচনায় ফিরিয়ে এনেছে। গত কোরবানির ঈদে সিনেমাটি দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল। এবার এটি মুক্তি পেয়েছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে। এতে ফারিণ অভিনয় করেছেন একজন পুলিশ কর্মকর্তার চরিত্রে। অ্যাকশন-থ্রিলার ঘরানার এ কাজটিতে অভিনয় করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে তাকে।
সিনেমাটির ওটিটি যাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ইনসাফ যেন বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়, অভিনেত্রী হিসেবে শুরু থেকেই এটিই ছিল চাওয়া। চরকিতে মুক্তি পাওয়ার পর এটি সবার হাতের মুঠোয় এসেছে। দেশ ও দেশের বাইরের দর্শকেরাও সিনেমাটি এখন দেখছেন–এটি সত্যিই আনন্দের। প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পর সিনেমাটির কথা যেমন মুখে মুখে ছড়িয়েছিল, ওটিটিতে মুক্তির পর এমনটি হচ্ছে।’
শুধু অভিনয় নয়, গানেও আগ্রহী তাসনিয়া ফারিণ। সংগীতের প্রতি তার ভালোবাসা নতুন নয়। গত বছর ‘রঙে রঙে রঙিন হবো’ দিয়ে গানের অভিষেক হয় তার। জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে এ গানটি প্রচার হওয়ার পর সংগীতশিল্পী হিসেবে তাকে অন্যরকম পরিচিতি পাইয়ে দেয়। গানে তার সহশিল্পী ছিলেন তাহসান খান। গত বছরের শেষের দিকে ফারিণ ঘোষণা দিয়েছেন নতুন গান প্রকাশের কথা। কথা রাখলেন তিনি। চলতি বছর শেষের দিকে প্রকাশ হতে যাচ্ছে তার নতুন গান। এতে তার সহশিল্পী হিসেবে থাকছেন তারকা সংগীতশিল্পী ইমরান মাহমুদুল। এরই মধ্যে রাজধানীর একটি স্টুডিওতে এর রেকর্ডিং শেষ হয়েছে। ফারিণ জানান, গানটি নিয়ে তিনি দারুণ আশাবাদী। তিনি বিশ্বাস করেন, গানটি ভক্তের হৃদয়ে জায়গা করে নেবে।
অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসেন, সেটি অনেকেই জানেন। সামাজিক মাধ্যমে তার নানা সময়ের ছবিই বলে দেয় কাজের অবসর মিললেই বেরিয়ে পড়েন দূরে কোথাও। প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকতে ভালোবাসেন তিনি। সম্প্রতি ভ্রমণ করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের মনোরম স্কাদার লেক-এ। মন্টেনেগ্রো ও আলবেনিয়া সীমান্তের এ লেক থেকে ভ্রমণের সেসব ছবি শেয়ার করেছেন ভক্তদের সঙ্গে। লাল শাড়ি পরে নৌকায় ঘুরতে দেখা যায় অভিনেত্রীকে।
দেশের ভেতরেও বিভিন্ন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাকে টানে। শরতের কাশফুলের মায়ায় হারিয়ে যাওয়া কিংবা নদীর ধারে বসে নিরিবিলি সময় কাটানো–এসবই তার প্রিয় অবসর বিনোদন। ফারিণ বলেন, ‘ইউরোপ বলতে আমরা শুধু ইতালি, ফ্রান্সকে বুঝি। আমি সবসময় আন্ডার রেটেড দেশগুলোতে যেতে পছন্দ করি। যেখানে বেশি পর্যটক আসেন না সেখানে আমার ঘুরতে ভালো লাগে। মন্টেনেগ্রো ও আলবেনিয়ায় ঘুরে বেশ প্রশান্তি পেয়েছি। সেখানের খাবার দাবারও ছিল দারুণ। সবকিছু মিলিয়ে বেশ সুন্দর অভিজ্ঞতা ছিল।’
সম্প্রতি প্রথমবারের মতো উপস্থাপক হিসেবেও দর্শকের সামনে এসেছেন তিনি। একটি জাতীয় দৈনিকের আয়োজিত অ্যাওয়ার্ড শো উপস্থাপনা করে তিনি নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ফারিণ জানান, অভিজ্ঞতাটি ছিল আনন্দঘন এবং ভিন্নধর্মী। তবে নিয়মিত উপস্থাপনা করার ইচ্ছে তাঁর নেই। যদি কোনো ইউনিক বা বিশেষ কিছু অফার আসে, তখন ভেবে দেখবেন তিনি।
অভিনয়, গান, ভ্রমণ ও উপস্থাপনা–সব মিলিয়ে বহুমাত্রিক ক্যারিয়ার গড়ে তুলছেন ফারিণ। সবকিছুর পরও তিনি অভিনয়কেই প্রাধান্য দিতে চান। একই সঙ্গে নিজের কণ্ঠের গান নিয়েও ভক্তদের মাঝে আলাদা জায়গা করে নিতে আগ্রহী তিনি। আজকাল অভিনয় কমিয়ে দিয়েছন ফারিণ।
কাজ বেছে করার কারণ জানাতে গিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘দর্শককে সবসময় ভিন্ন কিছু দিতে চাই। হাতে আসা সব কাজ গ্রহণ না করে মানসম্পন্ন প্রজেক্ট বেছে কাজ করছি। এটি সত্যি, আগের তুলনায় এখন কম কাজ করছি। কিছুটা কম অভিনয় করলেও মানসম্পন্ন প্রজেক্টের দিকে মনোযোগ দিচ্ছি।’
ফারিণের ব্যক্তিত্বের বড় দিক হলো জীবনের প্রতি তার ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। কাজের ভিড়ে সময় পেলেই নিজেকে প্রকৃতির কাছে সঁপে দেন মিষ্টি হাসির মেয়েটি। তার মতে, প্রকৃতি মানুষকে শুধু প্রশান্তিই দেয় না, বরং নতুনভাবে কাজ করার শক্তি জোগায়।
তাসনিয়া ফারিণ এখন একজন বহুমাত্রিক শিল্পী। অভিনয়, সংগীত, উপস্থাপনা–সব ক্ষেত্রেই তিনি নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন। সামনে আরও নতুন কিছু নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হবেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন এই শিল্পী।
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান বন্যাবিধ্বস্ত ভারতের পাঞ্জাবের মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। ‘কিং’ সিনেমার শুটিং কিংবা ছেলে আরিয়ান খানের প্রথম পরিচালিত সিরিজের প্রচারের ব্যস্ততা যতই থাকুক না কেন, তার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘মীর ফাউন্ডেশন’র মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মানবসেবায় নিয়োজিত তিনি।
গত ৩৭ বছরের মধ্যে এত ভয়াবহ বন্যা দেখেনি পাঞ্জাব। লাগাতার বৃষ্টির কারণে পানির নিচে চলে গেছে পাঞ্জাবের বিস্তীর্ণ এলাকা। জানা গেল, সেখানকার বানভাসি ১৫০০টি পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কিং খান।
ইতোমধ্যেই ‘মীর ফাউন্ডেশন’ পাঞ্জাবের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধার কার্য শুরু করেছে বলে খবর বলিউড মাধ্যম সূত্রে। এছাড়াও বিশুদ্ধ পানি, খাবার, ফোল্টিং কাট, তোশক, মশারিসহ নানা প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বিলি করা হচ্ছে শাহরুখের টিমের পক্ষ থেকে।
পাশাপাশি দুস্থদের চিকিৎসার দায়ভারও বহন করছেন কিং খান।
শাহরুখ খানের পক্ষে এই পরিষেবা পৌঁছে যাচ্ছে অমৃতসর, পাতিয়ালা, ফজিলকা, ফিরোজপুরসহ পাঞ্জাবের একাধিক বন্যাকবলিত অঞ্চলের ১৫০০ পরিবারের কাছে। কিং খানের ‘মীর ফাউন্ডেশনে’র প্রতিশ্রুতি, বন্যার্ত পরিবারগুলোকে পুণরায় মাথার ওপর ছাদ গড়ে দিতে সাহায্য করা হবে।
চলতি মাসের শুরুতে শাহরুখ খান টুইটারে পাঞ্জাবের হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি নিয়ে একটি বার্তা শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘পাঞ্জাবের এই ভয়াবহ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি প্রাণের জন্য আমার হৃদয় ব্যথিত। প্রার্থনা ও শক্তি পাঠাচ্ছ, পাঞ্জাবের আত্মা কখনও ভাঙবে না, সৃষ্টকর্তা তাদের আশীর্বাদ করুন।’
ব্যক্তি অধিকার রক্ষায় আদালতের দ্বারস্থ হলেন বলিউড অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। এরপর একই পথ অনুসরণ করেছেন তার স্বামী ও বলিউড অভিনেতা অভিষেক বচ্চন। দিল্লি হাইকোর্টে এক আবেদনে ঐশ্বরিয়া তার ছবি, স্বাক্ষর ও নাম যেন বিনা অনুমতিতে কোথাও ব্যবহার করা না হয়, ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষার্থে সেই আর্জি জানিয়েছেন। অভিষেকও আলাদা আবেদনে কোনো ওয়েবসাইট বা যেকোনো মঞ্চ যেন তার ছবি অনায়াসে ব্যবহার করতে না পারে সেই আর্জি জানিয়েছেন। তার ছবি ও ভাবমূর্তি যেখানে-সেখানে ব্যবহৃত হয়েছে। অনেক সময় ছবি ও ভিডিও যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়েও ব্যবহার করা হয়, সে কারণে অনেকদিন ধরেই বিরক্ত অভিষেক। তাই নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষায় পদক্ষেপ নিলেন এ তারকা দম্পতি। দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি তেজস করিয়ার কাছে এই আবেদনটি করেছেন অভিষেক। অভিনেতার আইনজীবী প্রবীণ আনন্দ অভিযোগ করেছেন যে, অভিষেকের ছবি, ভিডিও, এমনকি স্বাক্ষর পর্যন্ত অবৈধভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। যার ফলে অভিষেকের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে। এমনকি মৌলিক অধিকারও লঙ্ঘিত হচ্ছে।
গেল ২৮ আগস্ট মুক্তি পেয়েছে ভারতের মালয়ালম সিনেমা ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’। এরপর থেকেই বক্স অফিসে ঝড়, সামাজিকমাধ্যমে দর্শকের প্রশংসা আর সমালোচকদের ইতিবাচক রিভিউ পেয়েছে সিনেমাটি।
শুধু দক্ষিণ ভারত নয়, ভারতীয় সিনেমাপ্রেমীর দৃষ্টি এখন ডোমিনিক অরুণ পরিচালিত এই সুপারহিরো সিনেমাটির দিকে। কল্যাণী প্রিয়দর্শন অভিনীত এই মালয়ালম সুপারহিরো সিনেমা বক্স অফিসে নতুন রেকর্ড গড়ে চলেছে।
জানা গেছে, মাত্র ৩০ কোটি রুপি বাজেটে নির্মিত সিনেমাটি ইতোমধ্যেই ২০২৫ সালের তৃতীয় সর্বাধিক আয় করা মালয়ালম চলচ্চিত্রে পরিণত হয়েছে। মুক্তির ১৩ দিনে ভারতে সিনেমাটির আয় ৯৭ কোটি ৭৫ লাখ রুপি।
বিদেশেও দারুণ ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। দেশ-বিদেশ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত সিনেমাটির আয় ২০৩ কোটি রুপি! মাত্র ১৩ দিনের মাথায় ৬০০ শতাংশ মুনাফার রেকর্ডও করেছে এই সিনেমাটি।
সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন নির্মাতা প্রিয়দর্শনের মেয়ে কল্যাণী। আরও আছেন স্যান্ডি, অরুণ কুরিয়ান ও নাসলেন। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ডমিনিক অরুণ, আর প্রযোজনায় রয়েছেন দুলকার সালমানের ওয়ে ফেয়ার ফিল্মস।
সম্প্রতি চেন্নাইয়ে এক অনুষ্ঠানে দুলকার ঘোষণা দিয়েছেন, এই সিনেমার সব কিস্তির মুনাফা তিনি পুরো টিমের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেবেন।
প্রসঙ্গত, ‘লোকাহ চ্যাপ্টার ১: চন্দ্রা’ মুক্তির এক সপ্তাহেই বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটির মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এটি দক্ষিণ ভারতের ইতিহাসে নারীপ্রধান সিনেমা হিসেবে সর্বোচ্চ আয় করা সিনেমা হয়ে উঠেছে।
কয়েক দিন আগেই শাহরুখ খান ও দীপিকা পাড়ুকোনের নামে রাজস্থানের ভরতপুরে প্রতারণার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করা হয়। এক নামী গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থার হয়ে এই দুই তারকা এমন এক গাড়ির প্রচার করেন, যাতে প্রযুক্তিগত একাধিক ত্রুটি রয়েছে বলে অভিযোগ। আপাতত ওই মামলায় আদালতে স্বস্তি পেলেন দুই তারকা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুসারে, স্থানীয় এক ব্যক্তি দুই অভিনেতার নাম উল্লেখ করে একটি এফআইআর করেছিলেন। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, তার কেনা গাড়িতে বেশ কিছু সমস্যা ছিল। যে গাড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর শাহরুখ ও দীপিকা। তাদের দেখেই নাকি ওই ব্র্যান্ডের গাড়ি কিনতে চেয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। চলতি মাসের শুরুতে দায়ের করা এফআইআর-এ ওই ব্যক্তি দুই অভিনেতা এবং আরও ছয় জনের বিরুদ্ধে ‘ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করার’ অভিযোগ করেন।
পাল্টা শাহরুখ এবং দীপিকা দু’জনেই তাদের আইনি পরামর্শদাতাদের মাধ্যমে রাজস্থান হাইকোর্টে এফআইআর বাতিলের আবেদন করেছিলেন। যুক্তি দিয়ে বুঝিয়েছিলেন যে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে তাদের ভূমিকা কতটা ‘সীমিত’। তার করা মামলায় তদন্ত চালু হয়। তবে আপাতত দুই তারকার বিরুদ্ধে মামলায় অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন আদালত।
শাহরুখ খানের আইনজীবী কপিল সিব্বলকে প্রথম থেকেই বলতে শোনা গিয়েছে, এই মামলার সঙ্গে অভিনেতার সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। এবং এই ‘ত্রুটির’ জন্য তাকে দায়ী করাও যাবে না। বিজ্ঞাপন করা মানেই যে সব দায় তাদের এমনটা নয় বলেও দাবি শাহরুখের আইনজীবীর। অন্য দিকে, দীপিকা পাড়ুকোনের পক্ষের আইনজীবী মাধব মিত্রও দাবি করেন, প্রোডাক্টের মান নিয়ন্ত্রণে তারও কোনও ভূমিকা নেই। বলিউড তারকাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-এ উল্লেখ করা হয়েছিল গাড়ির ক্রুটির কারণে তিনি বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
তিনি আরও দাবি করেন, শাহরুখ এবং দীপিকার বিজ্ঞাপন গ্রাহকদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করেছে। তবে সূত্রের খবর অনুসারে, প্রায় তিন বছর ধরে গাড়িটি ব্যবহার করছেন ওই ব্যক্তি। এবং অভিযোগ দায়ের করার আগেই নাকি তিনি ৬৭ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি সময় ধরে গাড়িটি চালিয়েছেন। তাই শাহরুখ ও দীপিকার আইনজীবীদের পাল্টা যুক্তি, গাড়িটি নিয়ে যদি তার কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে তার আরও আগে আদালতে যাওয়া উচিত ছিল।
ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান ওপার বাংলাতেও বেশ জনপ্রিয়। দুই বাংলাতেই সমান দক্ষতায় অভিনয় করে যাচ্ছেন। ফলে দুই দেশেই তিনি সমানসংখ্যক ভক্ত-অনুরাগীর ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। দেশে অসংখ্য সফল সিনেমায় অভিনয়ের পর, টালিউডেও তিনি একের পর এক ছবিতে দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন।
বলা যায়, এদেশ-ওদেশ করেই কাটে অভিনেত্রীর অধিকাংশ সময়। অনেক ক্ষেত্রে ঢাকার চেয়ে কলকাতাতেই বেশি সময় কাটান, ফলে এটা যে তার একরকম সেকেন্ড হোম হয়ে গেছে- এবার সরাসরি এমনটাই প্রকাশ করলেন জয়া।
গত ৭ সেপ্টেম্বর ফের কলকাতায় উড়াল দিয়েছিলেন জয়া আহসান। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদন অনুসারে, সেখানে এডভেন্ট এক্টর স্টুডিও প্রাইভেট লিমিটেড গ্লোবাল ইনফ্লুয়েঞ্জার এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী। অনুষ্ঠানে গিয়ে আপ্লুত হয়ে জানালেন, এখানে যোগ দিয়ে তিনি খুবই খুশি। এরপরই দুর্গাপূজা উপলক্ষে সবাইকে শারদীয়ার শুভেচ্ছা জানান, ভাগ করে নেন পূজার পরিকল্পনাও।
জয়া বলেন, ‘পূজার সময় কলকাতা আমি খুব মিস করি। এমনিতেও কলকাতা এখন আমার সেকেন্ড হোম। তাই পূজার সময় আমি এখানেই কাটাতে বেশি ভালোবাসি। এবারেও এখানে থাকব আমি।’
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইনফ্লুয়েন্সারদের প্রশংসা করে জয়া বলেন, ‘কোনো ছবি মুক্তির পর সেটির জনপ্রিয়তা গড়ে তুলতে ইনফ্লুয়েন্সাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা যে ভিডিও তৈরি করেন, তা শেষ পর্যন্ত ছবিরই উপকারে আসে।’
বলা দরকার, ‘ডিয়ার মা’, ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’র মতো একের পর এক সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন জয়া। আগামী বছর শুরু হতে চলেছে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘অর্ধাঙ্গিনী ২’ এর কাজ। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী।
মাত্র ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে নানান স্বাদের ছবি উপহার দিয়েছেন আলিয়া ভাট। কখনো অভিনয়ে মুগ্ধ করেছেন, কখনো আবার সাহসী চরিত্রে চমকে দিয়েছেন। প্রযোজক হিসেবেও নতুন ভ্রমণ শুরু করেছেন এই বলিউড অভিনেত্রী। ক্যারিয়ারের এ পর্যায়ে এসে নিজেকে বদলে ফেলতে চাইছেন এই তারকা। এমন এক চলচ্চিত্র জগৎ নির্মাণ করতে চান, যেখানে একদিন তার আদরের মেয়ে রাহাও আনন্দ খুঁজে পাবে।
এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে আলিয়া স্বীকার করেছেন, এখনো তার ঝুলিতে এমন কোনো ছবি নেই যা ছোট্ট রাহা উপভোগ করতে পারবে। হয়তো এ ভাবনা থেকে, মা হওয়ার পরই তিনি কমেডি ঘরানার ছবির প্রতি বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন। আগে এ ধারার ছবিতে কাজ করেননি। তার ভাষ্যে, ‘মানুষকে এমন কিছু করতে হবে, যা নিজেকেই অনুপ্রাণিত করে। আর সে কারণেই নতুন কিছু চেষ্টা করার তাগিদ পাচ্ছি।’
ধারণা করা হচ্ছে, শিগগিরই আলিয়াকে কমেডি ছবিতে দেখা যাবে। তবে শুধু ঘরানা নয়, গল্পকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন তিনি। আলিয়ার ভাষায়, ‘আমি এমন এক গল্প খুঁজছি, যা আমাকে ভেতর থেকে নাড়া দেবে। সেটা হিন্দি হোক বা ইংরেজি—ভাষা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, আসল হলো গল্প।’
আলিয়া বর্তমানে ‘লাভ অ্যান্ড ওয়ার’–এর শুটিং নিয়ে ব্যস্ত। সঞ্জয় লীলা বানসালি পরিচালিত ছবিটিতে তার সহশিল্পী রণবীর কাপুর ও ভিকি কৌশল। স্বামী রণবীরের সঙ্গে এটি তাঁর দ্বিতীয় ছবি। ব্রহ্মাস্ত্র ছবিতে এর আগে দুজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। ছবিটির বড় অংশের শুটিং ইতোমধ্যেই মুম্বাইতে শেষ হয়েছে, আর চূড়ান্ত দৃশ্য ধারণের জন্য শিগগিরই তাকে বিদেশে উড়াল দিতে হবে।
অভিনয়, প্রযোজনা, প্রচার—কাজের শত ব্যস্ততা সত্ত্বেও মায়ের দায়িত্বে এতটুকু অবহেলা করেননি আলিয়া। মেয়ে রাহার সঙ্গে সময় কাটাতে প্রায়ই রাত জেগে শুটিং করেছেন। কখনো রণবীর দিনে কাজ করেছেন আর তিনি থেকেছেন রাহার কাছে। আবার কখনো এর উল্টো। আলিয়ার মতে, ‘কাজ আর পরিবারের মধ্যে স্বাস্থ্যকর সমতা বজায় রাখা আমার কাছে সবচেয়ে জরুরি। এর সঙ্গে কোনো সমঝোতা করা যায় না।’
২০২১ সালে ‘ইন্টারনাল সানশাইন প্রোডাকশন প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে নিজস্ব প্রযোজনা সংস্থা গড়ে তোলেন আলিয়া। সেই ব্যানারের প্রথম ছবি ‘ডার্লিংস’ মুক্তি পায় নেটফ্লিক্সে। এখানে শুধু প্রযোজক নন, অভিনেত্রী হিসেবেও আছেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বিজয় ভার্মা ও শেফালি শাহ। প্রযোজক হিসেবে নতুন গল্পের আনন্দে ভাসতে চান আলিয়া। ‘আমি সব সময় এমন গল্প পর্দায় আনতে চাই, যা কালজয়ী ও বাস্তবধর্মী। আমার হাতে বেশ কিছু ভিন্ন স্বাদের কাহিনী আছে, সেগুলো দর্শকের সামনে আনতে আমি ভীষণ রোমাঞ্চিত,’ বললেন আলিয়া।
সব মিলিয়ে অভিনয় ও প্রযোজনা দুই পথেই নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছেন আলিয়া ভাট। নিজের জীবনের নতুন অভিজ্ঞতা, বিশেষ করে মা হওয়ার পর তাকে যেন আরও পরিণত করেছে। এবার তিনি সত্যিই প্রস্তুত এক নতুন আলিয়াকে দেখানোর জন্য।