‘সাদা মানুষের অস্থির চোখের মতো লাল বল/ কে মেরে মেরে দুঃখ, অপমান আর বঞ্চনাকে করে দিচ্ছে বাউন্ডারি পার’।
১৯৬০-৭০-এর ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার রোহান ভোলালাল কানহাইকে নিয়ে এই কবিতা লেখেন ক্যারিবীয় কবি ডেভিড ডেবিডিন। ব্যাপারটা এমন, যেন কানহাই ব্যাট হাতে কালো মানুষদের পক্ষে লড়াই করেন। আমেরিকায় দাসপ্রথার যুগে যখন বর্ণবাদী নির্যাতন নেমে আসে, প্রতিবাদ করলে বেছে নিতে হয় পলাতকের জীবন, সেই ফেরারি জীবনে কানে রেডিও ঠেকিয়ে রোহান কানহাইয়ের ব্যাটিংয়ের ধারাবিবরণী শোনা হয়ে ওঠে আশার আলো। তারা মনে করেন, দূরদেশে ব্যাট হাতে একা লড়াই করে চলেছেন কৃষ্ণাঙ্গ দাসদের প্রতিনিধি রোহান কানহাই।
আমেরিকান গৃহযুদ্ধ শেষে দাসপ্রথাও বিলুপ্ত হয়। তবে অনেকের মনে ‘হোয়াইট সুপ্রিমেসি’ থেকে যায়। এর মাত্রা কমাতে অবদান ছিল দাসত্বের গল্পনির্ভর কিছু সিনেমারও। রোমান সময়, আমেরিকান গৃহযুদ্ধ, উপমহাদেশে ব্রিটিশ উপনিবেশ ও শিল্পবিপ্লবপ্রসূত ভিন্ন ভিন্ন ধরনের দাসত্বের গল্পনির্ভর কিছু সিনেমার আলাপ থাকছে এই লেখায়।
রোমান আমল: এ পর্যন্ত তিনটি ছবি অস্কারে সর্বাধিক ১১টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। প্রথম ছবি হিসেবে এ কৃতিত্ব ‘বেনহার’ (১৯৫৯)-এর। দাসত্বের শিকলে বন্দি এক ইহুদি রাজকুমারের গল্প নিয়ে সুইস-জার্মান-আমেরিকান পরিচালক উইলিয়াম ওয়াইলার বানান ছবিটি। নতুন রোমান গভর্নর আসেন জেরুজালেমে। হুর বংশের প্রাসাদের কাছে আসতেই ঘটে একটি দুর্ঘটনা। এর জেরে মা-বোনসহ বেনহারকে বন্দি করে রোমান সেনারা। তাদের প্রাসাদে ঝুলিয়ে দেয়া হয় নোটিশ, ‘এই প্রাসাদ এখন থেকে রোমান সম্রাটের’। এরপর ক্রীতদাস থেকে কীভাবে মুক্তি মেলে বেনহারের, সে গল্প ধরেই এগিয়েছে সিনেমা। এমন আরেকটি সিনেমা হলো রাসেল ক্রোর ‘গ্লাডিয়েটর’।
মার্কিন গৃহযুদ্ধ: ওলন্দাজদের দিয়ে আমেরিকায় যে দাসপ্রথার শুরু হয়েছিল, তা পরে ব্যাপক আকার ধারণ করে। বিশেষ করে কালো চামড়ার মানুষই দাস হবে, এটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এমনই ধারণার করুণ পরিণতি হয় কৃষক সলোমন নর্থাপের। গান-বাজনা ভালোবাসতেন, নিউইয়র্কে ছিলেন মুক্ত মানুষ। ভাগ্যের ফেরে তাকেও একসময় দাসের জীবনযাপন করতে হয়। পরে নিজের সে অভিজ্ঞতার আলোকে সলোমন নর্থাপ লেখেন ‘টুয়েলভ ইয়ারস আ স্লেভ’। যা থেকে ২০১৩ সালে একই নামে সিনেমা বানান স্টিভ ম্যাককেইন। মার্কিন গৃহযুদ্ধ শেষ হয় ১৮৬৫ সালে। সেই যুদ্ধের প্রেক্ষাপটের সিনেমা ‘বার্থ অব আ নেশন’ (১৯১৫)।
উপমহাদেশে উপনিবেশ: ভারতীয় উপমহাদেশে দাসপ্রথার চলটা ছিল একটু ভিন্ন। ঔপনিবেশিক শাসকদের কুশাসনের শিকার হয়ে কিছু মানুষের অবস্থা হয় দাসদের মতো। সে সময়কার ভারতীয় একটি গ্রামের গল্প নিয়ে বিংশ শতাব্দীর একেবারে শুরুর দিকের সিনেমা ‘লগান’ (২০০১)। কর বা লগান রেয়াতের জন্য খরাপীড়িত গ্রামবাসী ইংরেজ শাসকের কাছে যায়। প্রস্তাব পায় ক্রিকেট খেলায় ইংরেজ দলকে হারাতে পারলেই লগান মাফ, আর হেরে গেলে দ্বিগুণ পরিশোধ করতে হবে। নিরুপায় গ্রামবাসীর সামনে আর কোনো পথ খোলা ছিল না। সিনেমায় দেখা যায়, জীবনে যারা কোনো দিন ক্রিকেট খেলেনি এমন মানুষের একটি দল হারিয়ে দেয় ব্রিটিশদের।
শিল্পবিপ্লব: শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে বিনিয়োগ বাড়তে থাকে প্রযুক্তিতে। উদ্ভাবিত যন্ত্র দখলে নেয় অফিস এমনকি ঘরও। তাতে মানুষের পরিণতির কথা বলে চার্লি চ্যাপলিনের ‘মডার্ন টাইমস’ (১৯৩৬)।
দীর্ঘ বিরতির পর ভারতীয় সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় দুই তারকাকে পাওয়া গেল এক সিনেমায়। টি জে জ্ঞানভেল পরিচালিত ‘ভেটাইয়ান’ মুক্তি পায় গত বৃহস্পতিবার। পর্দায় দুই তারকার পুনর্মিলন ছাড়াও ভক্তদের জন্য ছিল আনন্দের আরও একটি উপলক্ষ, কারণ ছবি মুক্তির পরের দিন শুক্রবার ছিল অমিতাভের ৮২তম জন্মদিন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়া থেকে জানা যায়, রজনীকান্তের দিনকাল ভালো যাচ্ছিল না। গতানুগতিক বাণিজ্যিক সিনেমা করে তিনি ‘অতি অনুমানযোগ্য’ হয়ে পড়েছিলেন। সেখান থেকে গত বছর নেলসন দীলিপ কুমারের ‘জেলার’ দিয়ে নতুনভাবে শুরু হয় এই দক্ষিণি তারকার, ‘ভেটাইয়ান’-এ সে সিনেমার ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন। মুক্তির প্রথম দিন ছবিটি ৩০ কোটি রুপি আয় করেছে, যা রজনীকান্তের সিনেমা হিসেবে খুব বেশি নয়।
এ ছবিতে রজনীকান্তসুলভ মসলা কিছুটা কম থাকায় ব্যবসা কম হয়েছে। এতে অনেক রজনীভক্ত হতাশ হলেও সমালোচকরা খুশি। ৭৩ বছর বয়সে এসে নিজের ১৭০তম সিনেমায় এই তারকা নিজেকে যেভাবে ভাঙছেন, সেটার তারিফ করেছেন তাঁরা।
‘ভেটাইয়ান’ পুলিশি তদন্ত ধরনের সিনেমা। এক শিক্ষিকা ধর্ষণের শিকার হয়। সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করে এসপি আথিয়ান ওরফে আথি (রজনীকান্ত)। কিন্তু তদন্ত করতে গিয়ে এনকাউন্টারের সময় তার হাতে মারা যায় এক নিরপরাধ ব্যক্তি। ঘটনা মোড় নেয় ভিন্ন দিকে।
এ সিনেমায় মূলত নির্মাতা টি জে জ্ঞানভেল পুলিশের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন। গত কয়েক মাসে ভারত আর জি কর মেডিকেলের ঘটনা নিয়ে উত্তপ্ত ছিল। সমালোচকরা মনে করেন, বাস্তবঘেঁষা গল্প হওয়ায় ছবিটি তরুণ প্রজন্মও পছন্দ করবে।
রজনীর সামনে অস্ত্র, শত শত লড়াকু কিছুই যথেষ্ট নয়—এ ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে তাকে সিনেমার একটি চরিত্র হিসেবে তুলে ধরেছেন নির্মাতা। অযৌক্তিক অ্যাকশনের চেয়ে তিনি বরং জোর দিয়েছেন চিত্রনাট্যে, যার প্রশংসা করেছেন আরেক জনপ্রিয় তামিল নির্মাতা কার্তিক শুভরাজ।
রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন ছাড়াও এ ছবিতে আছেন ফাহাদ ফাসিল, রান্না দুগ্গাবতি, মঞ্জু ওয়ারিয়রের মতো তারকারা। তবে ভালো চিত্রনাট্য, ব্যতিক্রমী রজনীকান্ত থাকার পরও ‘ভেটাইয়ান’ অসাধারণ ছবি না হয়ে ওঠার কারণও এটি। এত বড় বড় তারকা থাকলেও সবার চরিত্র ঠিকঠাক লেখা হয়নি।
সমালোচকরা বলছেন, তিন দশকের বেশি সময় পর রজনীকান্ত ও অমিতাভের পর্দায় উপস্থিতি আরও স্মরণীয় হতে পারত। তবে অল্প সময় পর্দায় থেকেও ঠিকই নিজের ছাপ রেখেছেন ‘বিগ বি’।
হলিউডের আলোচিত দম্পতি অ্যাফ্লেক ও জেনিফার লোপেজকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছেই। আর সেসব আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন জেনিফার লোপেজ।
বিশ্বনন্দিত এই কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেত্রী কেন তার সংসার টিকিয়ে রাখতে পারছেন না? চতুর্থবার বিয়ে করেও কেন বিচ্ছেদের পথে হাঁটতে হলো? এ প্রশ্ন এখন অনুরাগীদের অনেকের। তাই বিচ্ছেদ নিয়ে এবার সোজাসাপ্টা জবাব দিয়েছেন লোপেজ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘২৬ বছরের অভিজ্ঞতায় একটা বিষয়ই আমার কাছে স্পষ্ট যে, আমি চ্যালেঞ্জিং যে কোনো কিছু তখনই করতে পারব, যখন আমি মুক্ত থাকব। যে সত্যিকার অর্থে আকাশে উড়ার মতো। আমি কী এবং কিসে আমার সক্ষমতা, তা প্রমাণ করার জন্য এক হয়ে যাওয়া জরুরি ছিল। তাই বিচ্ছেদের পথে হাঁটা ছাড়া আর কোনো উপায় আছে বলে মনে হয়নি।’
লোপেজ আরও বলেছেন, ‘একজীবনে অনেক মানুষের দেখা মেলে, যাদের সঙ্গে পথ চলতেও ভালো লাগে। মনে হয়, দু’জনে মিলে গেলে জীবনটা আরও আনন্দময় হয়ে উঠবে। আমার বেলায়ও সেটাই হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই দেখা গেছে, সম্পর্ককে পরিণয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার পর সেটা এলোমেলো হয়ে গেছে। কারণ, একটাই উভয়ের চিন্তাধারা বিস্তর তফাৎ। তাই একসঙ্গে একই ছাদের নিচে বসবাসও এক সময় বিষাদী হয়ে উঠেছে। ওজানি নোয়া, ক্রিস জাড, মার্ক অ্যান্থনি থেকে বেন অ্যাফ্লেক কেউই দাম্পত্য জীবনের গল্পে নতুন কিছু সংযোজন করতে পারেননি। বিবাহিত জীবনের গল্পে তাই ঘুরে ফিরে তাই একই দৃশ্যের অবতারণা।’
জেনিফার লোপেজ তার সাক্ষাৎকারে বিচ্ছেদের কারণ স্পষ্ট করার পাশাপাশি এও স্বীকার করেছেন যে, প্রতিবারই বিচ্ছেদের পর মানসিক আঘাত পেয়েছেন। সবচেয়ে বড় আঘাতটা এসেছে বেনের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদ করা নিয়ে।
হলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা ব্র্যাড পিট। এ বয়সেও বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অস্কারজয়ী এই তারকা। বিশ্বজুড়ে কোটি ভক্তদেরকেও মাতিয়ে রাখছেন তার সুনিপুণ অভিনয়ের মাধ্যমে। ‘টুয়েল্ভ ইয়ার্স এ স্লেইভ’, ‘ওয়ান্স আপন এ টাইম ইন হলিউডের’ মতো সিনেমার দুরন্ত অভিনেতা ষাট বছর বয়সের ব্র্যাড পিট এখনো দাপটের সঙ্গে অভিনয় করে যাচ্ছেন। চলতি বছর মুক্তি পাওয়া তার অভিনীত একটি সিনেমা হলিউড দর্শকদের কাছে হিটের তকমা পেয়েছে। পিট অভিনীত অ্যাকশন কমেডি সিনেমা ‘ওল্ফস’ মুক্তি পেয়েছে গত ২৭ সেপ্টেম্বর। অ্যাপ্ল টিভি প্লাসে এ সিনেমা মুক্তির পর থেকেই নতুন করে আলোচনায় আসেন এ অভিনেতা।
৮৫ মিলিয়ন ডলার খরচে নির্মিত ‘ওল্ফস’ মুক্তি দিয়েছে অ্যাপ্ল টিভি প্লাস কর্তৃপক্ষ। জন ওয়াট্স পরিচালিত এ সিনেমায় ব্রাড পিটকে সঙ্গ দিয়েছেন আরেক হলিউড সেনসেশন জর্জ ক্লুনি (৬৩)। মূলত সিনেমার আদ্যোপান্তজুড়ে রয়েছে এ দুজনের নিখাদ অভিনয়। শুধু ‘ওল্ফস’ নয়, জোসেফ কোসিনস্কি পরিচালিত ‘এফওয়ান (ফরমুলা ওয়ান)’-এ আরও দুর্দান্তভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন ব্র্যাড পিট। আমেরিকায় সিনেমাটি মুক্তি পাবে আগামী বছর ২৭ জুন। স্পোর্টস অ্যাকশন ড্রামানির্ভর এ সিনেমায় তিনি অভিনয় করছেন গল্পের মূল চরিত্রে।
এর আগে বছরের শুরুতেই নিজের প্রযোজিত সিনেমা ‘বব মার্লি : ওয়ান লাভ’ সিনেমা মুক্তি দিয়েও আলোচনায় এসেছিলেন ব্র্যাড পিট। রেইনাল্ডো মারকাস গ্রিন পরিচালিত সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে। মাত্র ৭০ মিলিয়ন ডলার খরচের বায়োগ্রাফিক্যাল ড্রামানির্ভর সিনেমাটি বক্স অফিসে আয় করেছে প্রায় ১৮১ মিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ব্র্যাড পিট নিজে প্রযোজনায় সাফল্য পেয়েছেন সিনেমা ‘বিট্লজুস বিট্লজুস’-এর মাধ্যমে। সিনেমাটি চলতি বছর ৬ সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছিল।
টিম বার্টন পরিচালিত ডার্ক ফ্যান্টাসি কমেডি হরর এ সিনেমা নির্মাণে খরচ হয়েছিল ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর এটি বক্স অফিস থেকে আয় করেছে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন। এর মানে হলো, এ বছর অভিনেতা ও প্রযোজক, দুই পরিচয়েই ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছেন ব্র্যাড পিট। অর্থাৎ হলিউডের দুই অঙ্গনেই সফল এ অভিনেতা।
বলিউডের মেধাবী অভিনেত্রী কারিনা কাপুর খান। নিজের মেধাশক্তি দিয়ে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সুনাম কুড়িয়ে আসছেন বেবোখ্যাত এই অভিনেত্রী। দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারের ২৫ বছরে পা রাখলেন তিনি। এই ২৫ বছরে বলিউডে নিজের জায়গা পোক্ত করেছেন। এরই মধ্যে তার বহু সিনেমা ব্যবসাসফল হয়েছে। পেয়েছেন সমালোচকদের প্রশংসা। ব্যক্তিগত জীবনেও একজন সফল গৃহিণী ও মা তিনি। অভিনেত্রী টাইমস অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে পুরুষ-শাসিত ইন্ডাস্ট্রিতে একজন অভিনেত্রীর কী ধরনের চ্যালেঞ্জগুলোর সম্মুখীন হন তা নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, যে বলিউডে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার থেকে টিকিয়ে রাখা আরও কঠিন।
কারিনা তার দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলার সময় বলেন, ‘১৭-১৮ বছর বয়সে প্রায় প্রত্যেকের স্বপ্ন থাকে একজন বড় অভিনেত্রী হওয়ার। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিতে বেশি বছর থাকা রীতিমতো কঠিন সাধ্য একটা ব্যাপার। পুরুষতান্ত্রিক ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য সব সময় নতুনত্ব কিছু নিয়ে আসতে হয়। আমি ছাড়াও এমন অনেক অভিনেত্রী রয়েছেন যারা বছরের পর বছর নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পেরেছেন। তবে এর জন্য প্রতি পাঁচ বছরে নিজেকে প্রশ্ন করতে হয়, আমি নতুন কি দিতে পারলাম ইন্ডাস্ট্রিকে?’
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমি এমন একটি পরিবার (কাপুর) থেকে এসেছি যেখানে আমাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে কারণ তারা সবাই বড় অভিনেতা। তবে আমি কোথাও আমার চিহ্ন রেখে যেতে চাই। প্রতি ১০ বছর পরে সেখানে নতুন কেউ আসে, তাহলে আমি কীভাবে স্থায়ী হবো? নিজেকে টিকিয়ে রাখা খুব কঠিন, তাই আমি বেছে কাজ করি। সেটি বাকিংহাম মার্ডারস, সিংগাম, ক্রু বা জানে জান। এগুলো সব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে দেখা যাচ্ছে। আমি মনে করি এটি বড় পর্দায়ও দুর্দান্ত হিট করত।’
কারিনা কাপুর অভিনীত নতুন সিনেমা ‘সিংঘাম এগেইন’ মুক্তি পাবে আগামী ১ নভেম্বর। অ্যাকশন-থ্রিলারটিতে অজয় দেবগন, দীপিকা পাড়ুকোন, টাইগার শ্রফ, রণবীর সিং, জ্যাকি শ্রফ, অর্জুন কাপুর এবং অক্ষয় কুমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে জেপি দত্তের ‘রিফিউজি’ দিয়ে কারিনার বলিউডে আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে তিনি ‘কভি খুশি কভি গম’, ‘যুবা’, ‘চামেলি’, ‘ওমকারা’, ‘যব উই মেট’, ‘টাশান’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘হিরোইন’, ‘সিংহাম রিটার্নস’, ‘গুড নিউজ’,’ লাল সিং চাড্ডা', র মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন।
বাংলাদেশের মঞ্চ, টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রাঙ্গন যাদের অভিনয়ে সমৃদ্ধ হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন আরিফুল হক। বিগত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি সপরিবারে কানাডায় অবস্থান করলেও মাঝে-মধ্যেই মনের টানেই দেশের মাটিতে ছুটে আসতেন তিনি। সর্বশেষ তিনি ২০১৭ সালে বাংলাদেশে এসেছিলেন। এরপর আর শারীরিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ না হওয়ায় আর দেশে আসা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি।
কথায় কথায় আরিফুল হক একটি কথা এখন প্রায়ই বলেন, ‘আর মায়ায় জড়াতে চাই না, কারণ জানি না আর দেখা হবে কি না এ দেশের মানুষের সঙ্গে, এ দেশের মাটির ধুলোর পথে আর হাঁটা হবে কি না জানা নেই, এ দেশের দর্শকের জন্য অভিনয় করা হবে কি না তাও জানা নেই। তাই দেশে ফিরলে এমন ভাবনায় কেঁদে ওঠে মন। মানুষ হয়ে এসেছি পৃথিবীতে, জানি চলে যেতে হবেই এক দিন। কিন্তু বয়স, সময় সবমিলিয়ে যখন বারবার জানান দেয় চলে যাবার সময় এসেছে, তখন আর মন চায় না এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে সবাইকে ছেড়ে চলে যেতে। বারবার সেইসব প্রিয় প্রিয় মুখগুলোর কাছেই থেকে যেতে মন চায়।’
১৯৩৪ সালের ১২ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেছিলেন আরিফুল হক, ভারতের হাওড়াতে। আগামীকাল তিনি ৯০ বছর পূর্ণ করে ৯১-তে পা রাখবেন। একজন আরিফুল হকের অভিনয়ে দর্শক হেসেছেন, তার অভিনীত চরিত্রের গভীরে দর্শক প্রবেশ করে কেঁদেছেন আবার তার অভিনীত খল চরিত্রগুলো দর্শককে ভাবিয়ে তুলেছেন যে, তিনি এমন চরিত্রেও অভিনয় করতে পারেন! একজন সত্যিকারের পরিপূর্ণ অভিনেতার সফলতা এখানেই, যখন তিনি বহুমাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করতে পারেন।
গুণী এই চলচ্চিত্রাভিনেতা সর্বশেষ এ কে এম ফিরোজ বাবু পরিচালিত ‘প্রেম বিষাদ’ এবং প্রয়াত খালিদ মাহমুদ মিঠু পরিচালিত ‘গহীনে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। উত্তম কুমারের সঙ্গে ‘উত্তরায়ণ’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। এটি নির্মাণ করেছিলেন বিভূতি লাহা। বাংলাদেশে একমাত্র তিনিই সেই অভিনেতা যিনি উত্তমকুমারের সঙ্গে একই চলচ্চিত্রে একই ফ্রেমে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
আরিফুল হক অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে ‘লালন ফকির’, ‘সারেং বউ’, ‘বড় বাড়ির মেয়ে’, ‘সূর্য কন্যা’, ‘সুন্দরী’, ‘সখি তুমি কার’, ‘কথা দিলাম’, ‘নতুন বউ’, ‘এখনই সময়’, ‘পিতা মাতা সন্তান’, ‘তোমাকে চাই’ ‘দেশপ্রেমিক’, ‘ঘৃণা’, ‘স্বপ্নের নায়ক’ ইত্যাদি।’ ছোটবেলায় নিজেকে একজন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন আরিফুল হক। তাই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি তিনি কলকাতার ‘দক্ষিণী’ সঙ্গীত বিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীতের ওপর চার বছরের ডিপ্লোমা কোর্সও সম্পন্ন করেন তিনি।
উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিয়েছিলেন বিভিন্ন ওস্তাদের কাছ থেকে। নজরুল সঙ্গীতে তালিম নিয়েছিলেন তিনি মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের কাকার কাছে। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় চলে আসেন। এখানে এসেও স্বপ্ন ছিল নিজেকে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার। কিন্তু অডিশন দেওয়ার পর নানান জটিলতার কারণে হয় না। এক সময় টেলিভিশনে অভিনয়ের তার সুযোগ আসে। এরপর থেকে অভিনয়েই নিজেকে জড়িয়ে নেন সরকারি চাকরি করার পাশাপাশি।
ছোট পর্দার শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন অভিনেতা আফরান নিশোর প্রথম বড় পর্দায় অভিষেক হয় গত বছর ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার মাধ্যমে। রায়হান রাফী পরিচালিত এই ছবিটি গত বছরের ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়ে বেশ ব্যবসাসফল হওয়ার পাশাপাশি নিশোর অভিনয়ও প্রশংসিত হয় দর্শকমহলে।
তবে প্রথম ছবির অভাবনীয় সাফল্যের পরেও নতুন কোনো ছবির কাজ করতে দেখা যায়নি এ অভিনেতাকে। এ নিয়ে অনুরাগীরা যখন একের পর এক প্রশ্ন তুলছিলেন, ঠিক তখনই অনুরাগীদের অপেক্ষার ইতি ঘটিয়ে একটি নয়, এক জোড়া সিনেমার ঘোষণা আসে নিশোর।
এই তারকা সিনেমায় নিয়মিত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, তবে নিজের স্টাইলে। একটি সিনেমার জন্য প্রয়োজনীয় সময়টুকু নিয়ে, প্রস্তুতি সেরে তবেই শুটিংয়ে নামতে চান তিনি।
এত দিনে ভক্তদের জন্য এল সেই সুখবর, এ বছরের নভেম্বর বা ডিসেম্বরে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করবেন নিশো। সিনেমাটি মুক্তির আলো দেখবে আগামী কোরবানির ঈদে।
চলতি বছরের মে মাসে ভারতের এসভিএফের সঙ্গে যৌথ আয়োজনে একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের ঘোষণা দেয় আলফা আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড। সেই প্রতিষ্ঠানে দুটি সিনেমার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন আফরান নিশো। নিশোর নতুন সিনেমাটি সেই দুই সিনেমার একটি। নির্দেশনা দেবেন শিহাব শাহীন। তবে সিনেমার নাম এখনো জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সপ্তাহখানেক পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে সিনেমা, অভিনয়শিল্পী ও অন্যান্য কলাকুশলীর নাম।
এসভিএফ আলফা-আই এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল ও নির্মাতা শিহাব শাহীনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে এখনই বিস্তারিত বলতে চাননি।
এ বিষয়ে অভিনেতা আফরান নিশো বলেন, ‘এখনই আমি কিছু বলতে চাইছি না। সপ্তাহখানেকের মধ্যে টিম থেকে ঘোষণা দেওয়া হবে। তখনই জানানো হবে সব। শুটিং শুরু হবে নভেম্বর বা ডিসেম্বরে।’
জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন পরিচালক ও তার দল। যেকোনো সময় শুটিংয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত তারা। তবে সিনেমাটি নিয়ে তাদের কিছু পরিকল্পনা আছে জানিয়ে শিহাব শাহীন বলেন, ‘আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে। কয়েক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সেসব জানাব।’
জানা গেছে, এ বছর সিনেমার শুটিং শুরু হবে। শুটিং শেষ করেই পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজে নেমে পড়বেন নির্মাতা ও তার দল। কারণ, আগামী বছর কোরবানির ঈদে সিনেমাটি মুক্তি দিতে চান তারা।
বয়স বাড়ুক বয়সের মতো। তিনি পাল্টাবেন না এতটুকুও। ৮২ বছর বয়সেও স্বমহিমায় অভিনয় করে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ‘কল্কি ২৮৯৮’ ছবিটি। এ ছাড়া শুরু হয়েছে ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র ১৬তম সিজ়ন। অর্থাৎ, চলচ্চিত্র থেকে রিয়্যালিটি শো- সর্বত্র স্বমহিমায় বিরাজমান ৮২ বছর বয়সি এই ‘তরুণ’। তবে ৮২ পেরিয়ে আজ তিনি পা রাখছেন জীবনের ৮৩তম বছরে। অভিনেতার এই কর্মক্ষমতার বিষয়ে অনেকেই কৌতূহলী। অনেকে আবার উদ্বিগ্ন তার স্বাস্থ্য নিয়ে।
কিন্তু কেন বাড়িতে শুয়ে-বসে আরাম করে দিন কাটানোর বদলে নিরলস পরিশ্রম করছেন অভিনেতা! কিসের তাগিদে? উত্তর দিলেন বলিউডের ‘শাহেনশাহ’। আগের জন্মদিনে বাবা হরিবংশ রাই বচ্চন ছেলেকে উৎসর্গ করে একটা করে কবিতা লিখতেন ২০০৩ সালে বাবার মৃত্যুর পর থেকে অমিতাভ বচ্চন আলাদা করে নিজের জন্মদিন পালন করেন না। কেবল এক থালা ফল খেয়ে কাটিয়ে দেন দিন। এই দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কারজয়ী যেখানে দাঁড়িয়ে আছেন, সেজন্য তিনি খুবই সন্তুষ্ট। তিনি জীবনভর কেবল সুস্থ আর জ্ঞানী থাকতে চেয়েছেন। আর এই বয়সে এসেও সেটা পেরেছেন।
নানা ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতি রোববার নিয়ম করে দেখা করেন অনুরাগীদের সঙ্গে। ব্লগের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখেন অমিতাভ বচ্চন। সেখানেই অমিতাভকে এই বয়সে কাজ করা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন করা হলে জবাব দেন অভিনেতা। গোটা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘আমায় সেটে দেখলে কেবল এই প্রশ্নই করতে থাকেন সবাই। আমি কেন কাজ করছি, কী কারণ? আমার কাছে কোনো উত্তর নেই। কেবল মনে হয়, এটা আরও একটা নতুন কাজের সুযোগ। আপনাদের স্বাধীনতা রয়েছে নিজেদের ভাবার, আমি কেন কাজ করছি। আবার আমারও স্বাধীনতা রয়েছে আমার কাজ করে যাওয়ার। আমি আমার কাজ করে যাব। যদি আপনাদের সমস্যা থাকে আপনারা নিজেদের কাজ খুঁজে নিন।’
এই বয়সেও যেকোনো চরিত্রে ফিট বিগ বি খ্যাত এই জীবন্ত কিংবদন্তি। ৬৭ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে অমিতাভ বচ্চন ১২ বছরের শিশুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। সারা শরীরে, মুখে প্রসথেটিক্স মেকআপ লাগিয়ে হয়েছেন প্রজেরিয়া নামক বিরল রোগে আক্রান্ত এক পুত্র। এই ছবিতে অভিষেক বচ্চন অমিতাভ বচ্চনের বাবা। ‘১০২ নট আউট’ ছবিতে ৭৬ বছর বয়সে তিনি ১০২ বছর বয়সি চরিত্র করেছেন। আর ছবিতে ঋষি কাপুরের বয়স ৭৬। সম্পর্কে অমিতাভ বচ্চনের ছেলে। ‘ব্ল্যাক’ ছবিতে তার অভিনয়কে বলিউডের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অভিনয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এভাবেই তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন, বয়সের দোহাই দিয়ে তাকে কোনো চরিত্রের ভেতর আটকে ফেলা যাবে না।
বয়স বেড়েছে বলে কি অ্যাকশনকে মুখের ওপর না করে দেবেন? অমিতাভ বচ্চন তা করেননি। ‘বিরুদ্ধ: ফ্যামিলি কামস ফার্স্ট’ ছবিতে তিনি দুষ্টু লোকদের পিটিয়ে তক্তা বানিয়েছেন। রক্ষা করেছেন নিজের পরিবারকে। আবার আসছে ‘ব্রহ্মাস্ত্র’ ছবিতে তাকে দেখা গেছে একাধিক অ্যাকশন দৃশ্যে।
এই তো কয়েক বছর আগেই নাটক, সিনেমা ও মডেলিংয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন কুসুম শিকদার। ‘ছয় বছর বিরতি কাটিয়ে এবার তিনি হাজির হচ্ছেন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে। বইমেলায় প্রকাশিত নিজের লেখা গল্পগুচ্ছর ‘শরতের জবা’ নিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন একটি সিনেমা। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো কোনো সিনেমা প্রযোজনা ও পরিচালনা করছেন। এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে শরতের জবার টিজার ও পোস্টার। সিনেমা ও অন্যান্য বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হয় দৈনিক বাংলার-
অভিষেকের অপেক্ষায়…
সত্যি কথা বলতে, আমি নিজেও ভীষণ উতলা হয়ে আছি নির্মাতা হিসেবে অভিষেকের জন্য। আমি জানি না, দেশের চলমান পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাগৃহের অবস্থা, তাতে আমি কিছুটা সংশয়ে আছি। জীবনের প্রথম পরিচালনা কেমন হবে, কি হবে, দর্শকই বা কীভাবে গ্রহণ করবেন? তারপরও আমি চাই দ্রুত আমার প্রথম পরিচালনার সিনেমাটা মুক্তি দিতে। ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য, দৃশ্যায়ন, লোকেশন ও গান-সবকিছুতেই ভালো লাগার আবেশ রয়েছে। আমার বিশ্বাস ছবিটি পরিপূর্ণ বিনোদন দেবে দর্শকদের।
কবে আসবে শরতের জবা…
ওই যে বললাম, আমি চাই দ্রুত ছবিটিকে মুক্তি দিতে। ‘শরতের জবা’ সিনেমাটি ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। শুরু থেকেই আমি জানিয়েছিলাম সিনেমাটি আমি যেকোনো উৎসবে মুক্তি দিতে চাই। সেই জায়গা থেকে দুর্গাপূজার উৎসবে এটি মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তবে এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। কারণ সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশন এবং প্রযোজনার দায়িত্বে যারা আছেন, তাদেরও মতামত রয়েছে। আমি এবং তারা সবাই মিলে সুন্দর একটি সময় ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা করছি। দেখা যাক কী হয়। সবমিলিয়ে আগামী মাসে মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করি নভেম্বরেই মুক্তি পাবে।
পরিচালনার অভিজ্ঞতা…
সিনেমাটিকে শূন্য থেকে সন্তানের মতো বড় করছি। প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবে কলাকুশলী, সবার শিডিউল, কাজের তালিকা– নিজেকেই করতে হয়েছে। সিনেমার গল্প, চিত্রনাট্য, সংলাপ এমনকি সম্পাদনা, কালার গ্রেডিং, সাউন্ড ডিজাইন সবই নিজে করেছি। অন্যরা সহযোগিতা করছেন, কিন্তু মূল কাজটা নিজেকেই বুঝে নিতে হয়েছে। তুলনামূলক অভিনয়ের চেয়ে নির্মাণের বিষয়টি একটু কঠিন। আর এটাই স্বাভাবিক, একজন অভিনয়শিল্পী যখন কোনো একটি কাজে অংশ নেন, তখন তিনি শুধু তার অভিনয় নিয়েই ভাবেন। কিন্তু একজন নির্মাতাকে অভিনয়শিল্পীর অভিনয় থেকে শুরু করে নির্মাণের প্রতিটি ধাপ খুব যত্ন নিয়ে ধৈর্য ধরে শেষ করতে হয়। পরিচালক হিসেবে প্রতিমুহূর্তে নতুন কিছু শিখেছি। এত চাপ কিন্তু পরিচালনা আমি এনজয় করেছি।
কী আছে সিনেমায়…
‘শরতের জবা’ সিনেমার প্রধান শক্তি হচ্ছে গল্প। যেই গল্পের বই আগেই প্রকাশ করেছি। আমার লেখা ‘অজাগতিক ছায়া’ বইটি যারা পড়েছেন, তারা সিনেমাটি দেখলেই বুঝতে পারবেন এর মধ্যে আমি কোনো পরিবর্তন রেখেছি কি না। এক কথায় গল্পে যা আছে, দর্শকের জন্য সিনেমায় আমি তাই তুলে ধরেছি। আলাদা করে চমক দেওয়ার জন্য তেমন কিছুই রাখিনি। সিনেমার চিত্রনাট্য, পরিচালনার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্রেও অভিনয় করেছি। আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইয়াশ রোহান। প্রথমবার একসঙ্গে জুটি বাঁধলাম আমরা।
দেশীয় চলচ্চিত্রের এই সময়ের শীর্ষ তারকা শাকিব খানের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রযোজক রহমত উল্লাহ।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার শুটিংয়ের সময় এক নারী সহপ্রযোজককে ধর্ষণ করেন শাকিব খান। এমন অভিযোগের পর রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটানোর অভিযোগ এনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন শাকিব খান। তবে প্রযোজকের বিরুদ্ধে চিত্রনায়কের আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন করলেও তদন্তে পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ মামলা খারিজ করে দেন। ফলে প্রযোজক রহমত উল্লাহ মামলার দায় থেকেও অব্যাহতি পেয়েছেন। যদিও এ মামলার পুনরায় তদন্ত চেয়ে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছেন শাকিবের আইনজীবী খায়রুল হাসান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তদন্ত করে চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে মোহাম্মদ রহমত উল্লাহর বিরুদ্ধে বাদীর আনা অভিযোগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’র ২৪/২৫/২৯ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পরে এ প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন শাকিবের আইনজীবী। গত ১ সেপ্টেম্বর অসুস্থ থাকায় নারাজিতে উপস্থিত ছিলেন না শাকিব খান। এ জন্য বাদীপক্ষ নারাজি প্রদানে সময়ের আবেদন করেন। তবে ওইদিন ট্রাইব্যুনাল সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে মামলাটি খারিজ করে দেন।
পিবিআইর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাদী চিত্রনায়ক শাকিব খানের আনা অভিযোগ পর্যালোচনা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ মামলা সংক্রান্তে বাদীর দেওয়া পেন ড্রাইভ আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। দালিলিক সাক্ষ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাদীর আনা অভিযোগে উল্লিখিত ‘ইউআরএল’ সমূহে তদন্তকালীন সময়ে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রবেশ করে কোনো প্রকার তথ্য পাওয়া যায়নি। এতে ‘ইউআরএল’সমূহ পরীক্ষা করে কোনো তথ্য পাওয়া যাবে না বলে তা পরীক্ষা করার প্রয়োজন বোধ করিনি।
বাদীর দুজন সাক্ষীসহ নিরপেক্ষ আরও দুজন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়েছে। আরও সাক্ষী জিজ্ঞাসাবাদের চেষ্টা করা হয়েছে। মামলাটি সার্বিক তদন্তে প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে, ঘটনার পারিপার্শ্বিকতায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়নি।
শিশুশিল্পী থেকে নায়িকা হয়ে ওঠার পরিক্রমায় অসংখ্য দর্শকের মন কেড়েছেন চিত্রনায়িকা পূজা চেরী। সৌন্দর্যের মাধ্যমে খুব অল্প সময়েই দ্যুতি ছড়িয়েছেন। বলা চলে, ঢালিউডের এ সময়ের প্রতিভাধর অভিনেত্রীর তালিকায় শীর্ষেই তার অবস্থান।
সে কারণে এবার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন। বড় বাজেট আর ভালো গল্প পেলেই পর্দায় হাজির হবেন তিনি। দর্শকের মনে বেঁচে থাকতে গেলে এর বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে পূজা চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ওয়েব সিরিজে। ‘ব্ল্যাক মানি’ শিরোনামের ওয়েব সিরিজটি পরিচালনা করবেন রায়হান রাফী।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। অভিনেত্রীর কথায়, ‘বড় কোনো প্রজেক্ট ছাড়া কাজ করব না। দরকার হলে বাসায় বসে থাকব।
তবে আসন্ন শারদীয় দুর্গা উৎসব ঘিরে কোনো পরিকল্পনা নেই পূজা চেরীর। কয়েক মাস আগে সব সময়ের সঙ্গী মাকে হারিয়েছেন। সেই শোক কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এখনো প্রতি মুহূর্তে মাকে মনে পড়ে। তাই তো পূজার পরিকল্পনা জানতে প্রশ্ন করা হলে চোখ ভিজে ওঠে তার। পূজা বলেন, ‘সবাই জানেন, মা আমার সঙ্গে নেই। তিনি মারা গেছেন ছয় মাস হতে চলেছে।
গতবারও মা আমার সঙ্গে ছিলেন। বিভিন্ন পূজামণ্ডপে মা আমার হাত ধরে গেছেন। বিষয়টা এমন, আমি তার মা। তিনি আমার সন্তান। ওই ব্যাপারটা আসলে রিকল হচ্ছে। এবার আসলে সেভাবে কোনো পরিকল্পনা নেই। নিজের জন্য একটা সুতাও কিনিনি। কিনবও না। কাজে ব্যস্ত থাকব।’
চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সব সময়ই মাকে পাশে পেয়েছেন পূজা। মেয়ের সাফল্যে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন মা ঝর্ণা রায়। মায়ের সহযোগিতার কথা কখনো ভুলতে পারেন না তিনি। যেকোনো সাক্ষাৎকারে মায়ের সমর্থনের কথা বলেন।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়েও মত জানান অভিনেত্রী। তবে যাননি গভীরে। শান্তির বার্তা দিয়ে পূজা বলেন, ‘আমি একজন হিন্দু। আমাদের উচিত সব ধর্মকে শ্রদ্ধা করা। আমিও মুসিলম, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ ধর্মকে শ্রদ্ধা করি। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’
এদিকে দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা অমিতাভ রেজার নির্দেশনায় নতুন একটি বিজ্ঞাপনে যুক্ত হয়েছেন পূজা। শুটিংও শেষ করেছেন। শিগগিরই এটা প্রচারিত হবে বলে জানান তিনি।
ছোট পর্দার শীর্ষ চাহিদাসম্পন্ন অভিনেত্রী মেহাজাবীন চৌধুরী এখন ব্যস্ত ওটিটি ও তার চলচ্চিত্র ‘সাবা’-কে ঘিরে।
বিশ্বখ্যাত টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে এবার দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে লাল-সবুজের পতাকা এঁকে দিলেন তিনি। বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের লাল ব্যানারে সবুজ শাড়িতে মেহজাবীন যেন আস্ত একটা বাংলাদেশ! মাকসুদ হোসেন পরিচালিত এবং মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত ‘সাবা’ এখন ২৯তম বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘অ্যা উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা’ বিভাগে প্রদর্শিত হচ্ছে।
গত ৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সিজিভি সেন্টাম সিটি থ্রি-তে ‘সাবা’র প্রদর্শনী হয়। এরপর গত ৬ অক্টোবর স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট) লট্টে সিনেমা সেন্টাম সিটি সেভেনে আবারও দেখানো হয় ছবিটি। সেখানেও মিলেছে মুহুর্মুহু করতালি। উপস্থিত দর্শকদের সামনে এদিন ছবিটি সম্পর্কে নির্মাতা-অভিনেত্রী কথা বলেছেন প্রাণ খুলে।
সবশেষে ৯ অক্টোবর দুপুর ২টায় লট্টে সিনেমা সেন্টাম সিটি এইটে দর্শকরা আরেকবার উপভোগ করবেন ‘সাবা’।
বুসানে অংশ নিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী কতটা মুগ্ধ, সেটির প্রতিচ্ছবি মিলেছে তার সোশ্যাল হ্যান্ডেলের মাধ্যমে। মিস চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সিনেমা এখানে প্রদর্শন করতে পারা অনেক বড় সম্মানের বিষয়। ছবিটি দেখে এখানকার মানুষের প্রতিক্রিয়ায় আমি মুগ্ধ।’
২০২২ সালে বুসানের এশিয়ান প্রজেক্ট মার্কেটে স্থান পায় ‘সাবা’। ৪৯তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ডিসকোভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয় ছবিটি। টরন্টোর স্কটিয়াব্যাংকে গত ৭ সেপ্টেম্বরের ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়। এর আগেই সাংবাদিকদের জন্য ছিল একটি প্রদর্শনী। একই ভেন্যুতে ৯ সেপ্টেম্বর ও ১৪ সেপ্টেম্বর এই সিনেমার আরও দুটি টিকিট প্রদর্শনী হয়েছে।
সবকটিতে অংশ নিয়েছেন মেহজাবীন, ছবিটির অভিনেতা মোস্তফা মন্ওয়ার ও পরিচালক মাকসুদ হোসেন।
‘সাবা’য় নাম-ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহজাবীন। সিনেমাটির সহ-প্রযোজক তিনি। ১ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের গল্পটিতে দেখা যায়, ২৫ বছর বয়সি সাবা ঢাকায় মাকে নিয়ে থাকে। তার মা শিরিন একটি দুর্ঘটনার পর শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। সংসারের হাল ধরতে চাকরি করে সাবা। এদিকে শিরিন হার্ট অ্যাটাক করলে তার চিকিৎসার ব্যয় মেটানো সাবার জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। মায়ের অস্ত্রোপচারের জন্য টাকা কীভাবে জোগাড় করবে সেসব ভেবে দিশেহারা হয়ে যায় সাবা। এরমধ্যে মেয়েটির জীবনে আশার আলো হয়ে আসে অঙ্কুর।
বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনধর্মী নায়ক জসিমের ২৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
১৯৯৮ সালের ৮ অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এই নায়ক। জসীমের জন্ম ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট ঢাকার নবাবগঞ্জে।
তিনি ছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ২ নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি।
অনেকেই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনের পথপ্রদর্শক হিসেবে মনে করেন। তিনি প্রখ্যাত অভিনেতা আজিমের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন।
জসিম অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘দেবর’। তবে নায়ক হিসেবে রুপালি পর্দায় ধরা দেন ‘মোকাবেলা’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। ১৯৭৭ সালে দেওয়ান নজরুলের ‘দোস্ত দুশমন’ সিনেমার মাধ্যমে জসিম আলোড়ন তোলেন। সেটি ছিল সাড়া জাগানো হিন্দি ছবি ‘শোলে’র রিমেক।
ভারতের ছোট পর্দার সবচেয়ে জনপ্রিয় রিয়েলিটি শো হচ্ছে ‘বিগ বস’। আর বিগ বস মানেই বলিউড সুপারস্টার সালমান খান। তাই টিআরপি হাতের মুঠোয় রাখতে কালার্স চ্যানেলের ‘বিগ বস’ও সলমন ছাড়া অসম্পূর্ণ। গত রোববারই টেলিভিশন জগতের অন্যতম জনপ্রিয় শো ‘বিগ বস’-এর ১৮ নম্বর মৌসুমে গ্র্যান্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। তার আগে থেকেই অবশ্য এই রিয়েলিটি শো নিয়ে উত্তেজনায় দর্শক। কে কে হবেন বিগ বসের অতিথি, এই নিয়ে প্রতি বছর থাকে নানান জল্পনা-কল্পনা। এবারও তার অন্যথা হয়নি। উন্মাদনার পারদ চড়ছে ক্রমশই।
আর এই সিজনের জন্য নাকি নির্মাতাদের কাছে মোটা পারিশ্রমিক হাঁকিয়েছেন সালমান। এই তারকার পারিশ্রমিক শুনলে হতবাক হতে বাধ্য! অংশীদারী না থাকলে একটা সিনেমা থেকে বলিউডের কোনো তারকা এত মোটা টাকা পারিশ্রমিক পান না। এমনকি গগনচুম্বী বাজেটের সিনেমার সংখ্যাও বলিউডে হাতেগোনা। দক্ষিণী সিনে ইন্ডাস্ট্রিতে তবুও কয়েকটা সিনেমার বাজেট এই অঙ্কে পৌঁছেছে। বলিউড মাধ্যম সূত্রে খবর, ‘বিগ বস ১৮’-এর জন্য প্রতি মাসে ৬০ কোটি টাকা নেবেন সালমান খান। এবার ১৫ সপ্তাহের হিসেব কষে দেখলে এই সিজনে ভাইজানের মোট পারিশ্রমিক গিয়ে দাঁড়ায় ২৫০ কোটি টাকা।
নেটফ্লিক্সের ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শর্মা’ সঞ্চালনা করার জন্য কপিল শর্মা ৬০ কোটি টাকা নিয়েছিলেন। অন্যদিকে ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র সঞ্চালনা করার জন্য প্রায় সালমান খানের কাছাকাছি পারিশ্রমিক পান অমিতাভ বচ্চন। এই মৌসুমে ‘বিগ বস’-এর থিম ‘সময়ের তাণ্ডব’। প্রতিযোগীদের মধ্য়ে যারা চূড়ান্ত হয়েছেন, সেই তালিকায় রয়েছেন, ভিভিয়ান দেসনা, ঈষা সিং, করণবীর মেহেরা, নায়রা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুসকান বামনে, এলাইস কৌশিক, চাহাত পান্ডে, শিল্পা শিরোদকারসহ অনেকে।
সালমান খান বিগ বস উপস্থাপনা করছেন প্রায় দেড় দশক ধরে। বিভিন্ন কারণে কয়েকটি সিজনে হাজির হতে পারেননি। সেগুলো উপস্থাপনা করেছেন অমিতাভ বচ্চন, আরশাদ ওয়ারসি ও শিল্পা শেঠি। কিন্তু সালমান থাকলে যতটা উন্মাদনা হয় বিগ বস নিয়ে, তারা ততটা আলোড়ন তৈরি করতে পারেননি। ফলে বিগ বস কর্তৃপক্ষ বারবার সালমানের দ্বারস্থ হয়েছে। বেশি পারিশ্রমিক দিয়ে হলেও প্রতিবছর তাকেই নিয়ে এসেছে বিগ বসের ঘরে। বিগ বসের সালমাননির্ভরতার আরেকটি বড় কারণ ছিল সিনেমায় তার সমান্তরাল অবস্থান। প্রতি বছর তুলনামূলক কম সিনেমা করলেও কখনো ম্লান হয়নি তার তারকাখ্যাতি। বিগ বস যখন তিনি শুরু করেন, তখন সিনেমাপ্রতি নিতেন ৫ থেকে ১০ কোটি রুপি। এখন সিনেমায় তার পারিশ্রমিক পৌঁছেছে দেড়শ কোটিতে। তার সঙ্গে মিল রেখে বিগ বসেও তার টাকার অঙ্ক বেড়েছে।