নারী নির্যাতনের একটি মামলায় সঙ্গীতশিল্পী মামলায় মাইনুল আহসান নোবেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডেমরা থানা পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের ডেপুটি কমিশনার তালিবুর রহমান এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (১৯ মে) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে ডেমরার স্টাফ রোড এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ‘তার বিরুদ্ধে ডেমরা থানায় নারী নির্যাতনে একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডেমরা পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুর রহমান ইউএনবিকে জানান, ‘ইসরাত জাহান প্রিয়া নামে ইডেন কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর সাথে রুবেলের টেলিফোনে পরিচয় হয়। পরবর্তীতে প্রায় সাত মাস আগে রুবেল প্রিয়াকে মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে কীর্তন করে টেমরা থানার অধীন আমতলা নামক স্থানে একটি ফ্লাট বাসায় রাখে। বিগত সাত মাসে প্রিয়ার সাথে সম্পর্ক করে এবং পরিবারের কারও সাথে যোগাযোগ করতে দেয়নি।’
সম্প্রতি প্রিয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেটা দেখে প্রিয়ার বাবা-মা ডেমরা থানা যোগাযোগ করেন। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার রাত দশটায় আমতলার বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রিয়াকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু রুবেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে প্রিয়া ডেমরা থানা এসে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডেমরার এলাকায় অভিযান চালিয়ে রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। রুবেল তখন একটি গাড়ি করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
বাংলাদেশের গায়ক হলেও নোবেল খ্যাতি অর্জন করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জি বাংলা চ্যানেলের গানবিষয়ক রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ থেকে। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় জিততে না পারলেও তৃতীয় হন নোবেল, আর নিজের সুরেলা কণ্ঠ দিয়ে খুব সহজেই দুই দেশের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মন জয় করে নিয়েছিলেন তিনি।
এরপর থেকে তার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেলেও এই আলোচিত গায়কের সুখ্যাতি নিমেষেই নষ্ট হয়ে যায় তার ব্যক্তিগত জীবন সবার সামনে আসার পর। স্ত্রীকে মারধর, মাদক সেবন, মদের ঘোরে ভাঙচুর, টাকা নিয়ে শো করতে না যাওয়া—এমন নানা অভিযোগে বিভিন্ন সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ হন নোবেল।
২০১৯ সালে মেহরুবা সালসাবিল মাহমুদের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। পরবর্তীতে খ্যাতির মধ্যে থাকা অবস্থায় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তিক্ততা শুরু হয় স্ত্রীর সঙ্গে, যার শেষ পরিণতি হয় বিচ্ছেদ।
২০২৩ এর নভেম্বরে অন্যের স্ত্রী ফারজানা আরশির সাথে অন্তরঙ্গ ছবি শেয়ার করে নোবেল সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন তিনি আবারও বিয়ে করেছেন। পরবর্তীতে ফারজানা আরশি পুলিশের কাছে গায়কের নামে অভিযোগ দায়ের করে জানান যে নোবেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়নি, জোর করে গোপালগঞ্জের বাড়ি থেকে তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে এরপরে মাদক খাইয়ে ওই অন্তরঙ্গ ছবিগুলো তোলা হয়েছিলো।
ব্যক্তিগত জীবনের বাইরেও একই বছর শরীয়তপুরের একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে অর্থ নিয়েও না যাওয়ায় ঢাকার মতিঝিল থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয় নোবেলের বিরুদ্ধে।
২০২৪ সালে বেশ কিছু মাস রিহ্যাবে থেকে চিকিৎসা নেয়ার পর নোবেল সম্প্রতি আবারও গানের জগতে ফিরে এসেছিলেন এবং বেশ কিছু নতুন গানের কাজ করছিলেন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্ট মূলে ৮৮৬ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্য ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে ৫২৯ জন। মোট ১ হাজার ৪১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর এ তথ্য জানান।
অভিযানকালে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি একনলা বন্দুক ও দুইটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়।
বিশেষ অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা।
বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাফিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সোমা ইসলামের আরও আটটি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।
দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জনসংযোগ বিভাগের উপ-পরিচালক আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
আবেদনে বলা হয়েছে, সাফিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতপূর্বক নিজ নামে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধানকালে সংশ্লিষ্ট প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সাফিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সোমা ইসলামের নামে আটটি ব্যাংক হিসাব চালু রয়েছে। সাফিনুল ইসলাম ও তার নামীয় ব্যাংক স্থিতি নগদায়ন করে অন্যত্র স্থানান্তর, হস্তান্তর করার প্রচেষ্টা করছেন। ব্যাংক হিসাবের অর্থ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেকারণে, ব্যাংক হিসাবসমূহ অবিলম্বে অবরুদ্ধ করা অবশ্যক। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে এ আদেশ দেন।
এর আগে ২৩ জানুয়ারি মেজর জেনারেল (অব.) মো. সাফিনুল ইসলাম, তার স্ত্রী সোমা ইসলাম ও ছেলে সামিন ইসলামের নামে থাকা ৫৬টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছে আদালত।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সহকর্মী আইনজীবীদের মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামীপন্থি ৬১ আইনজীবীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতই থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাদের জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১৯ মে) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ এই আদেশ দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান, আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া। এর আগে আইনজীবীদের মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গত ২২ এপ্রিল আওয়ামীপন্থি ৬১ আইনজীবীকে জামিন দেন হাইকোর্ট।
এই জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন শুনে গত ২৯ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালত আওয়ামীপন্থি ৬১ আইনজীবীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন ৫ মে পর্যন্ত স্থগিত করেন।
একইসঙ্গে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক ওই আদেশ দেন। সে অনুযায়ী আজ আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হয়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের ওপর হামলা, আইনজীবীদের চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে আওয়ামীপন্থি ১৪৪ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
পরে ১১৫ আইনজীবী উচ্চ আদালত থেকে ৮ সপ্তাহের জামিন নেন।
জামিনের মেয়াদ শেষ হলে গত ৬ এপ্রিল ৮৩ জন ঢাকা মহানগর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ সাগর ও ১৮ নারী আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর করেন। তিনজন পালিয়ে যাওয়ায় ৬১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে তারা জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন।
নাশকতার পরিকল্পনা ও সামাজিকমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া সৈনিক নাঈমুল ইসলাম ও তার দুই সহযোগীকে রাজধানীর খিলক্ষেতের বটতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (১৭ মে) দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি, তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং বিভিন্ন সামরিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নাঈমুল ইসলামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনুষঙ্গিক আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কতিপয় বরখাস্ত বা অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাবেক সেনাসদস্যকে সঙ্গে নিয়ে নাঈমুল বিভিন্ন গণমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়াসহ নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনা করে আসছিলেন।
এতে আরও বলা হয়, এরই ধারাবাহিকতায় তিনি আগামীকাল রোববার (১৮ মে) ঢাকা সেনানিবাসের প্রবেশপথে বিক্ষোভ সমাবেশের নামে বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন উসকানিমূলক প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন।
আইএসপিআর জানিয়েছে, এ ধরনের শৃঙ্খলাবহির্ভূত কর্মকাণ্ড থেকে নিবৃত্ত করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল আজ বেলা দুইটার দিকে খিলক্ষেতের বটতলা বাজার এলাকায় নাঈমুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে। এ সময় নাঈমুল তার কিছু সহযোগীকে নিয়ে উপস্থিত এক সেনাসদস্যের ওপর দেশি অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালান। তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্প থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে নাঈমুল ও তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করে।
রাজধানীতে 'লও ঠেলা' নামের একটি কিশোর গ্যাংয়ের সক্রিয় ৯ সদস্যকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার (১৩ মে) দিবাগত রাত ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে মোহাম্মদপুর থানার রায়ের বাজারের মেকাপ খান রোডে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
গ্রেফপ্তাররা হলেন— মো. জোবায়ের ওরফে যুবরাজ (২২), মো. হাসান (১৯), মো. রায়হান (২৭), মো. ওয়াসিম (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন রাজু (৩২), মো. নুরুল আমিন (১৮), মো. কামাল হোসেন (২২), মো. শাহিন (২৮) ও মো. মেহেদী হাসান (২৫)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পাঁচটি চাপাতি ও চারটি ধারালো চাকু উদ্ধার করা হয়।
মোহাম্মদপুর থানা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজার মেকআপ খান রোডে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, জব্দ করা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদপুর থানা এলাকাসহ আশেপাশের এলাকায় ছিনতাইসহ ত্রাস সৃষ্টি করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল গ্রেপ্তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা।
গ্রেপ্তারদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে মিরপুরে হকার মো. সাগর হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
আজ তাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম তাকে সাতদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর ধানমণ্ডির স্টার কাবাবের পেছনের একটি বাসা থেকে মমতাজ বেগমকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই গোল চত্ত্বরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওইদিন বিকেল ৪ টায় তিনি সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদি হয়ে মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। এ মামলার ৪৯ নং এজাহারনামীয় আসামি মমতাজ বেগম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান। এই মামলার আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে তার ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচারপতি খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ এই আদেশ দেন। জোবাইদা রহমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।
কায়সার কামাল জানান, সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে। এ ছাড়া, আপিল দায়েরের ক্ষেত্রে ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে করা আবেদন মঞ্জুর করেছেন হাইকোর্ট।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।
পরে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট করা এই মামলার রায় দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. আছাদুজ্জামান। ওই রায়ে তারেক রহমানকে ৯ বছর কারাদণ্ড এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে এই মামলায় জোবাইদা রহমানের সাজা স্থগিত করে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে সাজা স্থগিত চেয়ে জোবাইদা রহমানের করা আবেদন এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে করা মামলায় তাকে দেওয়া দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।
২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনের উদ্দেশে বাংলাদেশ ছাড়েন জোবাইদা রহমান। এরপর থেকে লন্ডনেই ছিলেন তিনি।
সেখান থেকে ৬ মে শাশুড়ি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে ১৭ বছর পর দেশে ফেরেন জোবাইদা রহমান।
দেশে ফিরে আপিল করার জন্য ৫৮৭ দিন বিলম্ব মার্জনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন তিনি। আবেদনটি আজ (মঙ্গলবার) কার্যতালিকায় উঠলে সেটি মঞ্জুর করেন আদালত।
মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে পিকনিক পার্টির দুই নারীকে প্রকাশ্যে প্রহারের ঘটনায় ভাইরাল হওয়া যুবক নেহাল আহমেদ জিহাদকে আটক করা হয়েছে। নেহাল যোগনি ঘাটের মনির হোসেনের পুত্র।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে সদর থানা পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
এ সময় পুলিশ সদস্যরা জানান, নেহাল আহমেদ জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করবে বলে জানিয়েছে।
তারা জানান, ‘খবরটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে লঞ্চটিকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে দিয়ে এসেছি। লঞ্চে থাকা স্টাফ ও পিকনিকের যাত্রীরা বলেছেন—হামলাকারীরা তাদের টাকাপয়সা ও মোবাইল ছিনতাই করে নিয়ে যায়। তারা আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম সাইফুল আলম বরেন, ‘অভিযোগ পেলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। নেহালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।’
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এমভি ক্যাপ্টেন নামে একটি লঞ্চে করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পিকনিকের ৩০০-৪০০ লোকসহ মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে ভিড়ে। লঞ্চ থেকে নেমে কয়েকজন ঘাট এলাকায় নাস্তা কিনতে যায়, সেখানে বাজে মন্তব্য করা নিয়ে ঝগড়া বাধে।
পরে ৫০-৬০ জন লঞ্চে উঠে পিকনিকের লোকজনকে মারধর ও ভাঙচুর চালায়। এক পর্যায়ে দুই নারীকে লঞ্চের সামনে এনে প্রকাশ্যে বেধরক পেটায়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীকে চেয়ারম্যান করে আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠন করেছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার আইন ও বিচার বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রাপ্ত অভিযোগ ও অভিযুক্তের সংখ্যা, দ্রুত বিচার-নিষ্পত্তির প্রয়োজন, কাজের চাপ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালটি গঠন করা হয়েছে।
ট্রাইব্যুনালের সদস্য পদে নিয়োগ পেয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মঞ্জুরুল বাছিদ এবং মাদারীপুরের জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব শেখ আবু তাহের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের, হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের প্রাপ্য বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্ত হবেন।
এছাড়া প্রজ্ঞাপনে বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বিদ্যমান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় তিন জনকে হত্যার মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—রাকিবুল হাসান সৌরভ ওরফে সৌরভ প্রধান, শিহাব প্রধান এবং রনি বেপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাকিব প্রধান, শামীম প্রধান, অনিক বেপারী, রায়হান এবং জাহাংগীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর।
তাদেরকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।ৎ
এক মেয়েকে ইভটিজিং করা নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ উত্তর ইসলামপুর এলাকায় আওলাদ হোসেন মিন্টুর বাড়ির সামনে অভি, ইমনসহ অন্যদের নিয়ে সালিশ হয়। সেখানে তাদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।
পরে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস করে দেয়া হয়। তবে, এর কিছু সময় পর অভির নেতৃত্বে কয়েকজন ইমন, শাকিব ও আলফাজের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমন বাঁশ দিয়ে অভিকে আঘাত করতে গেলে তা গিয়ে লাগে সৌরভের গায়ে। সৌরভের সাথে ইমন ও শাকিবের হাতাহাতি হয়।
এ ঘটনায় সৌরভের বাবা জামাল হোসেন আওলাদ হোসেনের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে। পরে রাত ১১টার দিকে আবার সালিশে বসেন তারা।
এ সময় জামাল হোসেনের লোকজন আওলাদ হোসেন, আফজাল হক, ইমন, শাকিবদের ওপর হামলা করে। অভি ও শিহাব ইমনকে, রনি আওলাদ হোসেনকে এবং শিহাব শাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে লোকজন এলে জামালদের লোকজন পালিয়ে যায়। আহত তিন জনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য অপর দুই জনকে নেওয়ার পথে শাকিব মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন ২৫ মার্চ মারা যান। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় ১২ জনের নামে মামলা করেন।
মামলাটি তদন্ত করে মুন্সীগঞ্জ সিআইডির ইন্সপেক্টর আসলাম আলী অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।
মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
প্রায় দুই যুগ আগে রাজধানীর রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হবে।
এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ।
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৯ জন নিহত হন
পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। এ ঘটনায় করা মামলা ‘রমনায় বোমা হামলা মামলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়।
আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান।
রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন— আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।
বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।
প্রসঙ্গত, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।
মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন।
হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। শুনানিও শুরু হয়। পরে কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে এ মামলায় আজ রায় হতে যাচ্ছে।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, সাইবার সুরক্ষা আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশে অনলাইন জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো সাইবার স্পেসে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে আগের আইনের ৯টি ধারা বাতিল করা হয়েছে। যা ছিল কুখ্যাত ধারা, এসব ধারাতেই ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল। মামলাগুলোও এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া উপস্থাপন করা হয়। কিছু সংশোধন শেষে এই সপ্তাহে গেজেট আকারে প্রকাশ হতে পারে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।
আসিফ নজরুল জানান, এছাড়া কিছু কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে দুটি অপরাধ রাখা হয়েছে, একটি হচ্ছে নারী ও শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতনমূলক কন্টেন্ট প্রকাশ, হুমকি দেওয়া। আরেকটি হচ্ছে ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানো, যেই ঘৃণা ছড়ানোর মধ্যে দিয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়। ধর্মীয় ঘৃণাকে কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, কেউ কাউকে হয়রানি করতে না পারে। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই প্রথমবারের বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যদি কোনও সাইবার অপরাধ করা হয়, সেটাকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ওই দুটি ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে মামলা হলে এটা আমলি আদালতে যাবে, যাওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন— এই মামলার কোনো যৌক্তিকতা নেই, তাহলে প্রি ট্রায়াল স্টেজে তিনি মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন। অর্থাৎ চার্জশিটের জন্য অপেক্ষা করা লাগবে না। যদি দেখেন সম্পূর্ণ ভুয়া মামলা, এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন।
আসিফ নজরুল বলেন, বিলুপ্ত করা বিধানগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় শহীদ বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কিত বিদ্বেষ বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার যে দণ্ড দেওয়ার বিধান সেটা বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই বিধানে প্রচুর হয়রানিমূলক মামলা হতো। মানহানিকর তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিধান যেটা এতে প্রচুর মামলা হতো, অনেক সাংবাদিক এই মামলার ভুক্তভোগী হয়েছেন, এই ধারা সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। আরেকটা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে— এই ধরনের কোনও কন্টেন্ট বা কথাবার্তা বলায় প্রচুর মামলা হতো, এটাও সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে। আক্রমণাত্মক বা ভীতিকর তথ্য উপাত্ত প্রকাশ এটাও সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, কোরবানি ঈদের ছুটি ৫-১০ জুন আগে থেকেই ঘোষণা করা ছিল। ১১ এবং ১২ জুন ছুটি ঘোষণা করে ১৭ মে এবং ২৪ মে এই দুই দিন সরকারি ও আধা সরকারি কর্মচারীরা কাজ করবেন। এই দুই দিন ছুটি ঘোষণা করায় ঈদুল আজহার ছুটি হবে ১০ দিন। এই অনুযায়ী ব্যাংক ও প্রাইভেট কোম্পানি তাদের মতো করে ছুটি ঘোষণা করবে।