বলছিলাম বাংলাদেশের রক আইকন, গিটারের জাদুকর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গিটারবাদক ও সংগীত পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যান্ড সংগীতের অনন্য তারকা, জনপ্রিয় ব্যান্ড এলআরবির প্রাণপুরুষ প্রয়াত কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর কথা। আজ (১৮ অক্টোবর) তার ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী।
তার মৃত্যুতে বাংলাদেশের সংগীত জগতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনো দিন পূরণ হওয়ার নয়। প্রবাদপ্রতীম এই কিংবদন্তি শিল্পী শ্রদ্ধেয় আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। বাচ্চু ভাইয়ের প্রতি এই শোকগাথা কোনো দিন শেষ হওয়ার নয়।
আইয়ুব বাচ্চুর গানের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই পরিচিত থাকলেও, তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত প্রথম পরিচয় ঘটে ২০১০ সালে। সেই সময় বিজয়ের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমার নিজ জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সর্বকালের সবচেয়ে বড় কনসার্টের আয়োজন করেছিলাম বিজয়ের মাস ডিসেম্বর মাসে, নিয়াজ মুহাম্মদ স্টেডিয়ামে।
‘বিজয়ের কনসার্ট’ নামের সেই ওপেন-এয়ার কনসার্টে প্রথমবারের মতো ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পরিবেশন করে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যান্ডদল এলআরবি, রকস্টার মিলা, নির্ঝর এবং চট্টগ্রামের অপু। প্রায় ৫০,০০০ মানুষের সমাগম হয়েছিল ঐ কনসার্টে।
জাতীয় পর্যায়ের এমন একটি কনসার্ট আয়োজনের পথে ছিল শত বাধা-বিপত্তি! ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অন্যতম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘গুণীজন সংবর্ধনা পরিষদ’-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত সেই মেগা কনসার্টের প্রধান শক্তি ও অনুপ্রেরণা ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। বিশেষ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করতে চাই তৎকালীন জেলা প্রশাসক এবং পরবর্তীতে পূর্ণ সচিব হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত, প্রশাসনের অন্যতম চৌকস কর্মকর্তা ও লেখক শ্রদ্ধেয় মো. আবদুল মান্নানকে। এছাড়া কৃতজ্ঞতা জানাই তৎকালীন দুজন দক্ষ পুলিশ সুপার— বর্তমানে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত মো. মোখলেছুর রহমান ও জামিল আহমদকে। তাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছাড়া ঐ আয়োজন সম্ভব হতো না।
পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জানাই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গণমাধ্যমকর্মী, আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু সঞ্জীব ভট্টাচার্য্য, বন্ধু সুদীপ দও তনু, ছোট ভাই নারায়ণ এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী (লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসরত) বিচক্ষণ ইভেন্ট এক্সপার্ট, ফ্যাক্টর থ্রি সলিউশনস-এর কর্ণধার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আরেক অনুজ সাহেদ হোসেনকে। অনুষ্ঠানটির জাতীয় মানের কারিগরি সহায়তার মূল কারিগর ফরহাদ হোসেন ।
তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পরের বছরও মহাধুমধামে বিজয়ের মাসের কনসার্ট ‘বিজয়ানন্দ’ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অংশ নেয় রক আইকন আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের ব্যান্ড এলআরবি, দলছুট ও হৃদয় খান। এই দুটি মেগা কনসার্ট আজও ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর হৃদয়ে অমলিন হয়ে আছে।
যে দুটি কনসার্ট নিয়ে এত কথা, সেই কনসার্টগুলোর সাফল্যের পেছনে বাচ্চু ভাইয়ের অকুণ্ঠ সহযোগিতা ছিল। তার সহায়তা ছাড়া কোনোভাবেই জেলা শহরে টিকিটবিহীন ওপেন-এয়ার কনসার্ট আয়োজন সম্ভব হতো না। তাই তার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। এরপর থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে, এবি কিচেনসহ সবখানেই বাচ্চু ভাইয়ের সান্নিধ্যের স্বাদ ও সুযোগ লাভ করেছি।
আজ ১৮ অক্টোবর— সেই নিরহংকারী, অভিমানী, শিশুসুলভ এক মেগাস্টার অব দ্য মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি বাচ্চু সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতিবারের মতো এবারও মগবাজারের একটি কনভেনশন সেন্টারে বাচ্চু ভাইয়ের স্মৃতিচারণ ও স্মরণসভার আয়োজন করেছেন তার দীর্ঘদিনের সুহৃদ ও সহকর্মী, প্রখ্যাত মিউজিশিয়ান শামীম ভাই, মাসুদ ভাইসহ অনেকেই। প্রতিবছর এই অনুষ্ঠানে আমাকে আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। আমি নিজেকে ধন্য মনে করি, এমন একজন গুণী মানুষের জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিনের স্মরণে সম্পৃক্ত হতে পারি বলে।
বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই প্রয়াত বাচ্চু ভাইয়ের সহধর্মিণী প্রিয় চন্দনা ভাবীকে— অত্যন্ত বিনয়ী, স্নিগ্ধ একজন নারী, যিনি আজও বাচ্চু ভাইকে ভালোবাসায় সিক্ত রেখে চলেছেন একাকী !
বাচ্চু ভাই ছিলেন খোলা আকাশের মতো বিশাল, সমুদ্রের মতো গভীর। বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে তার চলে যাওয়া কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।
এই লেখাটি যখন লিখছি তখন আমি লক্ষ্মীপুর সার্কিট হাউসে, রাত সোয়া দুইটা বাজে। মনে পড়ছে বাপ্পী খান ভাইয়ের কথায় বাচ্চু ভাইয়ের অনবদ্য সৃষ্টি— ‘এখন অনেক রাত, খোলা আকাশের নিচে, জীবনের অনেক আয়োজন, তাই আমি বসে আছি, দরজার ওপাশে…’
বাচ্চু ভাইয়ের কালজয়ী গানগুলো — “সেই তুমি (চলো বদলে যাই)”, “রূপালী গিটার”, “সাড়ে তিন হাত মাটি”, “উড়াল দেবো আকাশে”, “মেয়ে”, “চাঁদ মামা”, “বাংলাদেশ”, “মাধবী”, “হকার” — আজও আমাদের চোখ ভিজিয়ে দেয়, হৃদয় ছুঁয়ে যায়। এই গানগুলো বেঁচে থাকবে যতদিন বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন সরব থাকবে।
এই মহাপুরুষ আইয়ুব বাচ্চু ভাইয়ের জন্মদিন কিংবা মৃত্যুদিন কখনোই ছোট পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়। রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে এই কীর্তিমান শিল্পীর স্মৃতিচারণে। তাই আমি বারবারই বলেছি, ‘‘বাচ্চু ভাইয়ের নামে চালু হোক ‘আইয়ুব বাচ্চু মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’।’’ এই আয়োজনে আমি ও আমার প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।
একজন চিকিৎসক হিসেবে বলতে চাই, আইয়ুব বাচ্চু ভাই বড্ড অকালে চলে গেছেন। দেশের সংগীতের স্বার্থে তাঁর আরও অনেক দিন বেঁচে থাকার প্রয়োজন ছিলো। তাই সকল শিল্পীর প্রতি আমার একজন চিকিৎসক হিসেবে অনুরোধ, স্বাস্থ্য সচেতন হোন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন (বছরে অন্তত দুবার)। স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করুন, ধূমপান ও রেডমিট (গরু, খাসি) পরিহার করুন, প্রতিদিন অন্তত ৪০ মিনিট হাঁটুন।
আপনার স্বাস্থ্যের যত্নে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সবসময় আপনার পাশে থাকবে— এই অঙ্গীকার করছি।
পরিশেষে একটি কথাই বলবো, আইয়ুব বাচ্চু ভাই বেঁচে থাকবেন কোটি প্রাণে, বাচ্চু ভাই বেঁচে থাকবেন রূপালী গিটারের ছয়টি তারে!
লেখক: ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা ইউনিভার্সেল মেডিকেল সার্ভিসেস লিমিটেড, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পাচ্ছে আরিফিন শুভ ও মন্দিরা চক্রবর্তী অভিনীত সিনেমা ‘নীলচক্র’। গত কোরবানির ঈদে দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল মিঠু খান পরিচালিত এই ছবি। দেশে মুক্তির পর প্রত্যাশিত সাড়া না পেলেও এবার ছবিটির গন্তব্য উত্তর আমেরিকার প্রেক্ষাগৃহ।
শুক্রবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার বিভিন্ন শহরে দেখা যাচ্ছে ‘নীলচক্র’। যুক্তরাষ্ট্রের ২৪টি শহরে মুক্তি দিচ্ছে পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান বায়স্কোপ ফিল্মস, যাদের মাধ্যমে এর আগে অর্ধশতাধিক বাংলা চলচ্চিত্র উত্তর আমেরিকায় প্রদর্শিত হয়েছে। এর বাইরে কানাডার একাধিক শহরেও মুক্তি পাবে ছবিটি।
প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার রাজ হামিদ বলেন, ‘আমরা প্রথম লাস ভেগাসে ছবিটির প্রিভিউ করি। এরপরই সিদ্ধান্ত নিই আমরা এটি বিপণন করব। মন্দিরা চক্রবর্তী নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের পরবর্তী সুপারস্টার হতে পারেন। আর ছবিটির প্লটও একেবারেই ভিন্নধর্মী-দর্শকদের মুগ্ধ করবেই।’
অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অজানা জগত ও তার ভেতর লুকিয়ে থাকা বিপদ–ফাঁদের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘নীলচক্র’। ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন মিঠু খান ও নাজিম উদ দৌলা, প্রযোজনা করেছেন এনায়েত আকবর।
ওভারসিজ মুক্তি প্রসঙ্গে নায়িকা মন্দিরা চক্রবর্তী বলেন, ‘নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকার দর্শকেরা অনেকদিন ধরেই জানতে চাইছিলেন ছবিটি কবে আসছে। অবশেষে বায়স্কোপের উদ্যোগে আমরা ছবিটি নিয়ে যাচ্ছি তাদের কাছে। গল্পে যেমন বিনোদন আছে, তেমনি আছে এক শক্তিশালী সামাজিক বার্তাও।’
‘নীলচক্র’-এর অফিসিয়াল প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয় নিউইয়র্কের কিউ গার্ডেন সিনেমা হলে। ছবিটিতে শুভ ও মন্দিরা ছাড়াও অভিনয় করেছেন ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, মনির আহমেদ শাকিল, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ।
গানে গানে অগণিত শ্রোতার হৃদয় জয় করে পথচলার ছয় দশক পূর্ণ করেছেন নন্দিত কণ্ঠশিল্পী রুনা লায়লা। ১৯৬৪ সালের ২৪ জুন মাত্র ১২ বছর বয়সে ‘জুগনু’ সিনেমার গান ‘গুড়িয়া সি মুন্নি মেরি ভাইয়া কি পেয়ারি’ দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল তার। গানের কথা লিখেছিলেন তিসনা মেরুতি, সুর করেছিলেন মানজুর। সেই প্রথম গানের অনিন্দ্য কণ্ঠ ও অনবদ্য গায়কিতে শ্রোতারা মুগ্ধ হন, আর সেখান থেকেই শুরু হয় তার দুর্বার সংগীতযাত্রা; যা আজও থেমে যায়নি।
এই ছয় দশকের দীর্ঘ সফরে রুনা লায়লা গেয়েছেন ১৮টি ভাষায় ১০ হাজারেরও বেশি গান। অর্জন করেছেন অসংখ্য পুরস্কার, রাষ্ট্রীয় পদক ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি। কিংবদন্তিদের কাতারে তার অবস্থান আজ অবিসংবাদিত।
রুনা লায়লা বলেন, ‘আমি ভীষণ ভাগ্যবতী যে, শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। এখনো গান গাইতে পারছি, সুর করছি। এটাই অনেক বড় আশীর্বাদ। আজীবন সংগীতের সঙ্গে থাকতে চাই।’
মুক্তিযুদ্ধের আগেই তিনি বাংলা সিনেমায় প্লেব্যাক শুরু করেন। ১৯৭০ সালের ‘স্বরলিপি’ সিনেমায় তার গাওয়া ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি জনপ্রিয়তার শীর্ষে উঠে আসে। এর আগেই পাকিস্তান রেডিও ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসে দেবু ভট্টাচার্যের সুরে দুটি বাংলা গান ‘নোটন নোটন পায়রাগুলো’ এবং ‘আমি নদীর মতো পথ ঘুরে’ গেয়ে নজর কাড়েন তিনি।
পাকিস্তানের সিনেমা ও টেলিভিশনে নিয়মিত প্লেব্যাক করে দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও, স্বাধীনতার পর দেশপ্রেমের টানে কোনো দ্বিধা ছাড়াই ফিরে আসেন নবজাগ্রত বাংলাদেশে। সংগীতজীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয় এখান থেকেই। ১৯৭৪ সালে রুনা লায়লা হন প্রথম বাংলাদেশি শিল্পী, যিনি বলিউডে প্লেব্যাক করেন।
কল্যাণজি-আনন্দজির সুরে ‘এক সে বড়কর এক’ সিনেমায় তার গাওয়া ‘ও মেরা বাবু চেল চাবিলা’ গানটি ভারতসহ বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয়তা পায়। এরপর ‘জান-এ বাহার’, ‘ইয়াদগার’, ‘অগ্নিপথ’, ‘স্বপ্ন কা মন্দির’-সহ অসংখ্য সিনেমায় কণ্ঠ দেন তিনি। এ ছাড়া ‘দ্য গ্রেট বিগ ইন্ডিয়ান ওয়েডিং’ শিরোনামের সংগীত আয়োজনে পাঞ্জাবি বিয়ের আটটি গান রেকর্ড করেন দিল্লিতে। কনকর্ড প্রযোজনা সংস্থার চারটি অ্যালবামের জন্য মুম্বাই গিয়ে মাত্র এক দিনে ৩০টি গানে কণ্ঠ দিয়ে ‘গিনেস বুক অব রেকর্ডসে’ নাম লেখান রুনা লায়লা।
ভাইনাল রেকর্ড, ক্যাসেট, সিডি, ভিসিডি থেকে শুরু করে অনলাইন মাধ্যম– সব জায়গায় ছড়িয়ে আছে তার কণ্ঠের মাদকতা। তিনি শুধু সিনেমা বা স্টেজেই নন, টিভি ও নাটকের গানেও সমান পারদর্শী। ছয় দশক ধরে সংগীতের প্রতিটি মাধ্যমেই তার সুরেলা কণ্ঠ ছুঁয়ে গেছে শ্রোতার হৃদয়। নন্দিত অভিনেতা-পরিচালক আলমগীরের ‘একটি সিনেমার গল্প’ চলচ্চিত্রে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে প্রথম সিনেমাতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। তার সুরে তৈরি এক মিশ্র অ্যালবামে গেয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি আশা ভোঁসলে, হরিহরণ, পাকিস্তানের আদনান সামি ও রাহাত ফতেহ আলি খান।
বরেণ্য এই সংগীতশিল্পীর ষাট বছর পূর্তিকে কেন্দ্র করে মাছরাঙা টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘স্টার নাইট’-এর একটি বিশেষ পর্ব সাজানো হয়েছে রুনা লায়লাকে কেন্দ্র করে। শুক্রবার রাত ৯টায় মাছরাঙা টিভিতে বিশেষ এই পর্বটি প্রচার হয়।
জানা গেছে, এই আয়োজনে ৬০টি গোলাপে বরণ, ৬০ সংখ্যাকে উপজীব্য করে কেক কাটা, ৬০টি প্রশ্নে আলাপচারিতা। বিশেষ এই পর্বে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ১০ সংগীত তারকা। তারা হলেন– কনা, লিজা, লুইপা, কোনাল, ঝিলিক, সুকন্যা, সাব্বির, কিশোর, অপু ও ইউসুফ। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের শিল্পীরাও পাঠিয়েছেন শুভেচ্ছা বার্তা।
রুনা লায়লা বলেন, ‘দেশে ফিরে মাছরাঙার এই আয়োজনে অংশ নিতে পেরে আনন্দিত। ষাট বছরের পথচলার এ উদযাপনটি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত।’
‘স্টার নাইট’-এর গ্রন্থনা করেছেন রুম্মান রশীদ খান, প্রযোজনা করেছেন অজয় পোদ্দার, সহযোগিতায় ছিলেন নিয়াজ মোরশেদ রাজীব। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন মৌসুমী মৌ।
ছোট পর্দার নতুন এক গল্পে দেখা মিলল আলোচিত অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মানের। ‘খুঁজি তোকে’ শিরোনামে একক নাটকে তিনি অভিনয় করেছেন নতুন এক চরিত্রে। এতে সাদিয়া আরও একবার জুটি বেঁধেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা ইয়াস রোহানের সঙ্গে।
ভালোবাসার নতুন এক গল্প নিয়ে নির্মিত এ নাটকটি পরিচালনা করেছেন ইমরাউল রাফাত। একই সঙ্গে চিত্রনাট্য লিখেছেন এই নির্মাতা নিজে। সাদিয়া আয়মান ও ইয়ান রোহানের পাশাপাশি নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম, সাবেরী আলম, আরেফিন জিলানী, শওকাত হোসেন মামুন, শামীম আহমেদ, ইমেল হক, মামুন খান, মেহেদি হাসান তরু, দীঘি, সায়মা, প্রসেনজিৎ, আরিয়ান প্রমুখ। সম্প্রতি ক্যাপিটাল ড্রামার ইউটিউব চ্যানেলে নাটকটি দর্শকের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
সাদিয়া আয়মানের কথায়, অভিনয়ের জন্য সবসময় ভালো এবং ব্যতিক্রমী গল্প বাছাই করে কাজ করেন। ‘খুঁজি তোকে’ তেমনই এক নাটক, যার গল্প ও চরিত্র আগের অভিনীত নাটকগুলো থেকে কিছুটা আলাদা। অন্যদিকে ইমরাউল রাফাত একজন পরীক্ষিত নির্মাতা, যার কাজ নিয়ে আশাবাদী হওয়া যায়। কাজ পরিকল্পনামাফিক হয়েছে। যে কারণে গল্প, চরিত্র, শিল্পীদের অভিনয়, নির্মাণ সব মিলিয়ে নাটকটি দর্শকের প্রত্যাশা পূরণ করবে বলেও আশা করা হয়। সাদিয়া আয়মান ছাড়াও নাটকটি নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন ইয়াশ রোহানসহ অন্য অভিনেতা অভিনেত্রীরা। নির্মাতা ইমরাউল রাফাতও মনে করেন, নাটকটি এ সময়ের দর্শকের মনে ছাপ ফেলবে।
এদিকে ‘খুঁজি তোকে’ ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে আরও বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করেছেন সাদিয়া আয়মান। যেগুলো চলতি বছরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকাশ পাবে।
সিনেমার ট্রেলার নয়, কোনো গানও নয়-একটি মাত্র ছবিই তুমুল চর্চা হচ্ছে ইন্টারনেট দুনিয়ায়। ইউটিউব তারকা মিস্টারবিস্ট (জিমি ডোনাল্ডসন) করে দেখালেন এমন কিছু, যা বহু বছরেও কোনো বলিউড পরিচালক পারেননি-বলিউডের তিন খান, শাহরুখ, সালমান ও আমিরকে একসঙ্গে একই ফ্রেমে আনলেন তিনি। খবর স্টেটেমেনের।
ছবিটি তোলা হয়েছে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত জয় ফোরাম ২০২৫-এ। মিস্টারবিস্ট গত ১৬ অক্টোবর নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে ছবিটি শেয়ার করেন। ফ্রেমে দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবারের পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ভারতের তিন কিংবদন্তি তারকা-শাহরুখ খান, সালমান খান ও আমির খান।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়! ছবির সঙ্গে মিস্টারবিস্টের এক লাইন ক্যাপশন যেন আগুনে ঘি ঢেলে দিল—হে ভারত, আমরা সবাই মিলে কিছু করি নাকি?
এই এক লাইনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যেন আগুন লেগে যায়। হাজার হাজার ভক্ত তৎক্ষণাৎ কমেন্টে ঝাঁপিয়ে পড়েন—কেউ ভবিষ্যদ্বাণী করেন কোনো বিশাল যৌথ প্রজেক্টের, কেউ আবার মজা করে বলেন, মিস্টারবিস্ট হয়তো এবার ইউটিউব ভার্সনে বানাবেন ‘করন অর্জুন’!
ছবিতে শাহরুখ খানকে দেখা যায় ডার্ক রঙের দারুণ মানানসই স্যুটে, তার স্বভাবসুলভ ক্যারিশমা ছড়াতে। সালমান খানও সমান আত্মবিশ্বাসী, ফরমাল পোশাকে দারুণ লাগছে তাকে। আমির খান নিজের স্বকীয়তায় ভর করে হাজির হয়েছেন কালো পাঞ্জাবি আর সাদা পায়জামায়। আর মিস্টারবিস্ট, যথারীতি সাধারণ অথচ স্টাইলিশ ব্ল্যাক আউটফিটে।
তিন খানকে একসঙ্গে দেখা বলিউডে এক বিরল ঘটনা। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে তারা শাসন করে চলেছেন ভারতের বিনোদন দুনিয়া। একসময় পেশাগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও এখন তাদের মধ্যে রয়েছে পরস্পরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বন্ধুত্ব। শাহরুখ ও সালমানের বহু পুরোনো ভুল বোঝাবুঝি এখন অতীত, আর আমির সব সময়ই ছিলেন দুজনের কাছের মানুষ।
শেষবার তিনজনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল আমিরের ছবি সিতারে জমিন পার–এর বিশেষ প্রদর্শনীতে। চলতি বছরও তারা একসঙ্গে হাজির হয়েছিলেন আনন্দ আম্বানি ও রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ের অনুষ্ঠানে, যেখানে তিনজন একসঙ্গে পারফর্ম করে সোশ্যাল মিডিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন।
ভক্তদের মনে এখনো টাটকা সেই স্মৃতি, যখন তিন খান অতিথি চরিত্রে দেখা দিয়েছিলেন আরিয়ান খানের ওয়েব সিরিজ ‘দ্য ব্যডস অব বলিউড’-এ, যদিও একই দৃশ্যে একত্রে ছিলেন না তারা। তবু সেই উপস্থিতিই শিরোনাম দখল করেছিল।
সংগীত, চলচ্চিত্র এবং সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য ২৪তম সিজেএফবি পারর্ফমেন্স অ্যাওয়ার্ড-এ ‘বিশেষ সম্মানানা’ পাচ্ছেন বেবী নাজনীন (সংঙ্গীত), পূর্ণিমা (চলচ্চিত্র) এবং কাজী জেসিন (সাংবাদিকতা)।
কাল শুক্রবার বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারের হল অফ ফেমে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এই তিন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, সিজেএফবির সভাপতি এনাম সরকার।
এছাড়া ২০২৪ সালে সংঙ্গীত, চলচ্চিত্র এবং টেলিভিশন বিভাগে বছর সেরা পারর্ফমেন্সের জন্য পুরস্কৃত হবেন এই তিন বিভাগের সেরা তারকারা। সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান জুড়ে থাকছে জনপ্রিয় তারকাদের পারর্ফমেন্স।
দেশের প্রধান জাতীয় দৈনিক, টেলিভিশন মিডিয়া এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অফ বাংলাদেশ-সিজেএফবি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পর থেকেই সংগঠনটি বাংলাদেশের মিডিয়া সংশ্লিষ্টদের দিয়ে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
দক্ষিণী সুপারস্টার আল্লু অর্জুন বর্তমানে তেলেগু ও বলিউডে সমানভাবে আলোচনায়। এবার তাকে দেখা যাবে জনপ্রিয় পরিচালক অ্যাটলি কুমারের পরবর্তী বিগ বাজেট সাই-ফাই প্রোজেক্টে। ছবিতে আল্লুর বিপরীতে থাকছেন বলিউডের শীর্ষ অভিনেত্রী দীপিকা পাড়ুকোন। তবে চমকের এখানেই শেষ নয়, এই ছবির জন্য আল্লুকে দেওয়া হচ্ছে ১৭৫ কোটি টাকার পারিশ্রমিক। যা বর্তমানে ভারতের চলচ্চিত্র ইতিহাসে অন্যতম সর্বোচ্চ!
‘পুষ্পা’ ফ্র্যাঞ্চাইজির অভাবনীয় সাফল্যের পর আল্লুর জনপ্রিয়তা এখন জাতীয় স্তরে। সেই জনপ্রিয়তা মাথায় রেখেই অ্যাটলির এই নতুন প্রজেক্টের বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু ভিএফএক্স–এর পিছনেই খরচ করা হবে ২৬০ কোটি এবং অভিনেতা-পরিচালক ও অন্যান্য টেকনিক্যাল টিমের জন্য বরাদ্দ ২৫০ কোটি টাকা।
সূত্রের দাবি, এই সিনেমায় বিভিন্ন লুক ও চরিত্রে দেখা যাবে আল্লু অর্জুনকে। যার জন্য একাধিক আন্তর্জাতিক টেকনিশিয়ান কাজ করছেন। ইতোমধ্যে আল্লু অ্যাটলির সঙ্গে হলিউডের কয়েকটি প্রখ্যাত স্টুডিওতে ভিজিটও সেরেছেন।
পরিচালক অ্যাটলি , ‘এটা একেবারেই লার্জার দ্যান লাইফ প্রজেক্ট। আমরা এক ধাপ এক ধাপ এগোচ্ছি। অডিয়েন্সের জন্য এমন কিছু আনতে চাই, যা আগে কখনও দেখা যায়নি। ছবিতে দীপিকার পাশাপাশি আরও দেখা যেতে পারে রাশ্মিকা মন্দানা, জাহ্নবী কাপুর, ম্রুণাল ঠাকুর ও আর মাধবনকে। অ্যাটলি আরও জানান, হলিউডের যেসব টেকনিশিয়ানরা আমাদের সঙ্গে কাজ করছেন, তারাও বলেছেন এটা তাদের জন্যও দারুণ চ্যালেঞ্জিং। তবে কাজটা তারা ভীষণ উপভোগ করছেন। আর কয়েক মাসের মধ্যেই সবকিছু সামনে আসবে।’
দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মৌসুমী আক্তার সালমা। ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন মাধ্যমে গান করে যাচ্ছেন তিনি। মধ্যে খানিক বিরতি নিলেও পরবর্তীতে ফের ব্যস্ত হন দেশ-বিদেশের স্টেজ শো এবং নতুন গানে। গত এক দশকে নারী কণ্ঠশিল্পীদের মধ্যে নতুন গান দিয়ে যে কজন আলোচনায় রয়েছেন, সালমা তাদের মধ্যে অন্যতম। বিশেষ করে সংগীতের দুরবস্থাতেও সালমার বিভিন্ন গানে শ্রোতারা প্রাণ খুঁজে পেয়েছেন। সালমাও নিজেকে এগিয়ে নিয়েছেন সময়ের সঙ্গে। সিডি থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে গান প্রকাশ শুরু হলে অনেকেই সেই মাধ্যমে হারিয়ে যান। কিন্তু সালমা একে একে নতুন সব গান প্রকাশ করে নিজেকে এই মাধ্যমেও প্রমাণ করেছেন। বিভিন্ন কোম্পানির বাইরে নিজের ইউটিউব চ্যানেলেও নিয়মিত গান প্রকাশ করছেন তিনি। কথা প্রসঙ্গে সালমা , ক্যাসেট থেকে সিডি, সিডি থেকে ডিজিটাল মাধ্যমে গান প্রকাশ হচ্ছে। একজন শিল্পীকে কিন্তু সময়ের সঙ্গে থাকতে হয়। সেই চেষ্টাটা আমিও করেছি। হয়তো সামনে মাধ্যমে আরও পরিবর্তন আসতে পারে। তাই বলে তো থেমে গেলে চলবে না। প্রতিটি মাধ্যমের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারাটাও কিন্তু বড় ব্যাপার। সেদিক থেকে আমি আমার শ্রোতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। তাদের চাওয়ার কারণেই আমি এখন অবধি গান করে যেতে পারছি। বর্তমান ব্যস্ততা সম্পর্কে এ গায়িকা , স্টেজ শো ভালো চলছে আলহামদুলিল্লাহ্। সবশেষ শো করলাম ঢাকার নন্দন পার্কে। তার আগে করলাম কক্সবাজারে। কার কী অবস্থা, বলতে পারি না। তবে, স্টেজ শোর ব্যস্ততা আমার ভালোই যাচ্ছে। এদিকে, নতুন গান নিয়েও চলছে এ গায়িকার ব্যস্ততা। সালমা , মঙ্গলবার একটি গানের রেকর্ডিং আছে। নতুন গান নিয়মিতই করছি। সামনেই একে একে এগুলো প্রকাশ হবে। এদিকে সালমা জানালেন, সম্প্রতি একটি গান রেকর্ডিং করেছেন তিনি। যেটি বেশ বিশেষ। সেটি সম্পর্কে অবশ্য এখনই জানাতে চান না তিনি। দ্রুতই আসবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
এই প্রথম সেরা অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন অভিষেক বচ্চন (বাঁয়ে), ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন।
বলিউডে অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের বিচ্ছেদের গুঞ্জন নিয়ে গত কিছুদিন ধরে নানা আলোচনা চলছিল। তবে সব গুজব সরিয়ে রেখে, এক আবেগঘন মুহূর্তে স্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে আবারও সম্পর্কের দৃঢ়তা প্রকাশ করলেন অভিষেক।
সম্প্রতি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসে অভিষেক বচ্চন তার অভিনয় ক্যারিয়ারের প্রথম ‘সেরা অভিনেতা’ পুরস্কার অর্জন করেছেন। আর সেই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করেছেন স্ত্রী ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন ও মেয়ে আরাধ্যাকে।
পুরস্কার হাতে নিয়ে অভিষেক , ‘গত ২৫ বছর ধরে এই পুরস্কারের স্বপ্ন দেখেছি। আজ তা বাস্তবে পরিণত হলো। আমার চেয়েও বেশি খুশি আমার পরিবার। এই সম্মান আমি উৎসর্গ করছি ঐশ্বরিয়া ও আরাধ্যাকে। তোমাদের ত্যাগ, ভালোবাসা আর সমর্থন ছাড়া এটা সম্ভব ছিল না।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আশা করি, এই পুরস্কারের মধ্য দিয়ে তোমরা নিজেদের আত্মত্যাগের সার্থকতা খুঁজে পাবে। তোমরা না থাকলে আমি আজ এখানে দাঁড়াতে পারতাম না।’
পরিচালক সুজিত সরকারের পরিচালনায় ‘আই ওয়ান্ট টু টক’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যই অভিষেক পেয়েছেন এই পুরস্কার। ছবিটিতে এক অসুস্থ বাবার সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের গল্পকে দারুণভাবে তুলে ধরেছেন তিনি। তার সংবেদনশীল অভিনয় দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে।
অভিষেক , ‘যারা আমাকে ২৫ বছর ধরে সুযোগ দিয়েছেন, আমার ওপর বিশ্বাস রেখেছেন সব পরিচালক ও প্রযোজকদের প্রতিও আমার কৃতজ্ঞতা। এই সন্মান তাদেরও।’
তিনি আরো , ‘এই অর্জন সহজ ছিল না। তবে আজ মনে হচ্ছে, আমি এই পুরস্কারের যোগ্য হয়ে উঠতে পেরেছি।’
৩৫ তম এনভায়রনমেন্টাল মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ডে প্রথমবারের মতো পুরস্কার জিতল গোলাম রাব্বানীর সিনেমা ‘নিশি’। এমা অ্যাওয়ার্ডের স্টুডেন্ট ক্যাটাগরিতে ছবিটি পুরস্কার পায়।
এমা অ্যাওয়ার্ডে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পুরস্কার পেয়েছে এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটির মাধ্যমে। ছবিটির গল্প ও চিত্রনাট্য গোলাম রাব্বানীর।
ছবির সহপরিচালক হিসেবে আছেন জহিরুল ইসলাম। ১১ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় রেডফোর্ড স্টুডিও সেন্টার, লস অ্যাঞ্জেলেসে ছবিটির পুরস্কার ঘোষণা করে। ছবিটির প্রযোজনা সংস্থা ইন্টরন্যাশনাল একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া তাদের সোশ্যাল মিডিয়ায় জানায়, এই নমিনেশন পাওয়ার মাধ্যমে ‘নিশি’ এখন বিশ্বের সেরা তিনটি স্টুডেন্ট ফিল্মের একটি। যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্য এক বিশাল অর্জন।
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সত্যিই খবরটা আনন্দের। এমা অ্যাওয়ার্ডের ৩৫তম আসরে পুরস্কার জিতেছে আমাদের নিশি। এই অ্যাওয়ার্ডে প্রথমবার কোনো বাংলাদেশি ছবি এই পুরস্কার অর্জন করল। এটা বাংলা ছবির ইতিহাসে এক গৌরবময় অর্জন।
এই প্রাপ্তি আমার সিনেমা জার্নিকে আরো বেগবান করবে। সিনেমায় আমি প্রাণ-প্রকৃতির গল্প বলে যেতে চাই সবসময়।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ, গ্রিন ফিল্ম স্কুল অ্যালায়েন্স ও ইউনোস্ক ঢাকার সহযোগিতায় ছবিটি নির্মিত হয়েছে।
ছবিটির গল্পে দেখা যাবে একজন চা-শ্রমিকের কন্যা সন্তানের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যায় পানির সংকটের কারণে। বাড়িতে একটা টিউবওয়েল দেওয়ার নাম করে নাবালিকা নিশিকে বিয়ে করতে চায় কাঠ ব্যবসায়ী লালচাঁন।
ছবিটিতে অভিনয় করেছেন, নিশি, বিশ্বজিৎ, গণেষ, ভারতী।
পোল্যান্ডের বিখ্যাত ফিল্ম স্কুল লজ ফিল্ম স্কুলে এই ছবিটির চূড়ান্ত সম্পাদনা, কালার ও সাউন্ডের কাজ হয়েছে। ‘নিশি’ই বাংলাদেশের প্রথম কোনো ছবি যার পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ হয়েছে লজ ফিল্ম স্কুলে। ছবিটির চিত্রগ্রহণে ছিলেন এই ফিল্ম স্কুলের প্রাক্তনী নাতালিয়া পুসনিক।
সিলেটের একটি চা-বাগানের বিভিন্ন লোকেশনে ছবিটির শুটিং হয়েছে। গোলাম রাব্বানী জানান, ছবিটি বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য পাঠানো হচ্ছে। শিগগিরই বাংলাদেশেও ছবিটির প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে।
এর আগে গোলাম রাব্বানীর ‘ছুরত’ ও ‘আনটাং’ ভেনিস ইন্টারকালচার ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বুদাপেস্ট চলচ্চিত্র উৎসব ও ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অনারেবল মেনশন পেয়েছে।
আগামী ১৯ অক্টোবর লন্ডনের রমফোর্ডের মেফেয়ার ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘লন্ডন বাংলা বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব’। উদীচী যুক্তরাজ্য শাখার আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই উৎসবে মঞ্চ মাতাবেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। গত রোববার যুক্তরাজ্যে গিয়েছেন ‘গানের পাখি’ খ্যাত এই শিল্পী।
অনুষ্ঠানে সাবিনা ইয়াসমিন গেয়ে শোনাবেন তার জনপ্রিয় বেশ কিছু গান। তার সঙ্গে মিউজিশিয়ান হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের প্রখ্যাত শিল্পীরা। বাংলাদেশ থেকে তার সঙ্গে থাকবেন চন্দন দত্ত ও মনোয়ার হোসেন টুটুল। একই অনুষ্ঠানে গাইবেন সংগীতশিল্পী মৌসুমী ভৌমিকও।
এ প্রসঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দিতে প্রবাসী ভাইবোনরাও কাজ করে যাচ্ছেন, এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর। বিদেশের মঞ্চে যখন গাইতে উঠি, সামনে যেন একখণ্ড বাংলাদেশ দেখতে পাই। চেষ্টা করব, গান গেয়ে বরাবরের মতোই প্রবাসী ভাইবোনদের মন জয় করে আসতে।’
‘লন্ডন বাংলা বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব’ এর ১৬তম আসরে দিনব্যাপী বইমেলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে দুটি পর্বে। প্রথম পর্ব দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে, যেখানে থাকবে কবিতা পাঠ, শিশু-কিশোরদের আবৃত্তি ও নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত, যেখানে থাকবে বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান শেষে ২৫ অক্টোবর দেশে ফেরার কথা জানিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।
বলিউড অভিনেতা আরবাজ খানের সঙ্গে অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার সম্পর্কের টানাপোড়েন, বিচ্ছেদ সবই এখন অতীত। একের পর এক আলোচনায় সিনেমার পর্দা গরম করতে না পারলেও বলিপাড়া সব সময় টক অব দ্য টাউনে থাকেন। আবারও নতুন করে আলোচনায় এলেন অভিনেত্রী।
সাবেক স্বামীর আরবাজ খানের সংসারে নতুন অতিথি আসার খবরে হঠাৎ যেন আলোচনার ঝড় ওঠে। দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তার বিস্ফোরক মন্তব্য যেন আলোচনার জন্ম দিয়েছে বলিপাড়ায়।
একটি গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বিচ্ছেদের পর আরবাজ খান বিয়ে করেন তারকা মেকআপ আর্টিস্ট শুরা খানকে । চলতি মাসের ৫ অক্টোবর কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শুরা। আরবাজের জীবনে এই নতুন আনন্দের খবর আসার পরই তার সাবেক স্ত্রী মালাইকা অরোরাকে নিয়ে শুরু হয় নতুন গুঞ্জন। তিনি কি তবে নতুন জীবনে পা বাড়াতে চলেছেন?
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে তার ভাইরাল হওয়া একটি রহস্যময় পোস্ট ঘিরে ভক্তদের কৌতূহল এখন তুঙ্গে। এটি কি তবে নতুন প্রেমের আগমন, নাকি পুরোনো সম্পর্কের ছায়া? ‘ঝলক দিখলা যা ১১’-এর একটি ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে বিচারকের আসনে ছিলেন অভিনেত্রী মালাইকা অরোরা। সেখানেই জনপ্রিয় পরিচালক ও কোরিওগ্রাফার ফারাহ খান মজার ছলে অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করেন, ২০২৪-এ মালাইকা, আপনি কি সিঙ্গেল পেরেন্ট-কাম-অভিনেত্রী থেকে ডাবল পেরেন্ট-কাম-অভিনেত্রী হতে চলেছেন?’
এমন প্রশ্নের উত্তরে হেসে কিছুটা বিস্মিত হয়ে মালাইকা বলেন, ‘এর মানে কী? আমাকে কি কাউকে কোলে নিতে হবে?’ তিনি হাসিমুখে দ্বিধাহীনভাবে বলেন, যদি কেউ থাকে, আমি ১০০ শতাংশ বিয়ে করব।
মালাইকার এমন অভিব্যক্তি শুনে কোরিওগ্রাফার বলেন, কেউ আছে মানে? অনেকে আছে। ফারাহর এ মন্তব্যের উত্তরে মালাইকা সরাসরি জবাব দেন, মানে কেউ যদি বিয়ের প্রস্তাব দেয়, আমি রাজি।
মালাইকার এমন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যই এখন বলিউডের আনাচে-কানাচে ঘুরছে।
টেলিভিশন, ওটিটি এবং সিনেমা। তিন মাধ্যমেই নিজের অভিনয় দক্ষতায় দর্শক মন জয় করেছেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। এবার একেবারেই নতুন পরিচয়ে হাজির হচ্ছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি নিজের চিন্তাধারা ও সৃজনশীল ভাবনা পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে তৈরি হচ্ছেন প্রযোজক হিসেবে।
সম্প্রতি নিজের ফেসবুক পেজে একটি ছবি পোস্ট করে ফারিণ লিখেছিলেন, ‘আমি যদি প্রোডাকশন হাউস খুলি, তাহলে এর নাম কী দেওয়া উচিত?’
তার এই প্রশ্নে ভক্তরা নানা নাম প্রস্তাব করেন। কিছু প্রস্তাবে সাড়া দিয়েও মন্তব্য করেন ফারিণ, ‘অনেক চমৎকার কিছু সাজেশন দিচ্ছেন আপনারা, ধন্যবাদ।’
এরপর বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপেও মুখ খুলেছেন তিনি। ফারিণ বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই ভাবছি নিজের মতো কিছু করার। তাই একটি প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শুরু করার পরিকল্পনা করছি, যেখানে নিজের চিন্তাভাবনাগুলো বাস্তবে রূপ দিতে পারব।’
তিনি আরও জানান, বছরের শেষ দিকেই তার নতুন প্রতিষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। প্রথম কাজ হিসেবে প্রকাশ পাবে তার গাওয়া একটি নতুন গানের মিউজিক ভিডিও, যার সুর ও সংগীতায়োজন করেছেন ইমরান মাহমুদুল। আগেও একসঙ্গে কাজ করেছেন এই দুই শিল্পী।
তাসনিয়া ফারিণ জানিয়েছেন, আপাতত সংগীত ভিডিও দিয়েই প্রযোজনার কাজ শুরু করতে চান তিনি। তবে ভবিষ্যতে নিয়মিতভাবে নিজের ব্যানারে নানা কাজ করারও পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে অভিনয়ে কিছুটা বিরতি নিয়েছেন ফারিণ। গত ঈদে মুক্তি পাওয়া তার সিনেমা ‘ইনসাফ’-এর পর থেকে নতুন কোনো প্রজেক্টে তাকে দেখা যায়নি।
ঢালিউড অভিনেত্রী পরীমনি সিনেমা থেকে অনেকটা দূরে আছেন। অভিনয়ে খুব একটা না থাকলেও সামাজিক মাধ্যমে নেটিজেনদের মাঝে তিনি সবসময় আলোচনায় থাকেন। এবার আলোচনায় এলেন নিজের কারাগারে বন্দিজীবন নিয়ে। অভিনেত্রী কারাগারে বন্দিজীবনের কঠিন অধ্যায় নিয়ে এবার বড়পর্দায় আসতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন পরীমনি।
চার বছর আগে মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ড ও কারাবাসের যে বাস্তব অভিজ্ঞতা পরীমনি পেয়েছিলেন, সেটিই এবার রুপালি পর্দায় নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন তিনি। ২০২১ সালে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন পরীমনি।
সেদিন তার বাসায় প্রায় চার ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন আলামত জব্দ করে সংস্থাটি। পরে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় পরীমনি তিন দফায় মোট সাত দিনের রিমান্ডে ছিলেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই সময়ে কারাগারে বন্দিজীবনের ঘটনার অভিজ্ঞতার কথা বললেন পরীমনি। কারাবাসের সময়কার অনুভূতি প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, জেলখানা নিয়ে আমি কোনো দিন কিছু বলিনি। বলতেও চাই না। কারণ সত্যিটা মানুষ জানলে আইনের ওপর শ্রদ্ধা হারাবে। তিনি বলেন, ‘রিমান্ড একটা ফালতু জিনিস। সেখানে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য বড় বড় ছবি লাগানো থাকে। কিন্তু এগুলো দেখে কেউ ভয় পায় না। আমি বলেছিলাম— এগুলো বদলানো উচিত।
আটক প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, আমাকে কেন আটক করা হয়েছিল, তারাই জানত না। একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করত। ওরা নিজেরাই বিভ্রান্ত ছিল। তিনি বলেন, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরপরই তিনি নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি বই লিখেছেন। সেই বই ভবিষ্যতে প্রকাশ করবেন তার ছেলে। একই সঙ্গে বইয়ের গল্প থেকেই সিনেমা তৈরির ইঙ্গিত দেন তিনি। অভিনেত্রী বলেন, আমার ছেলে বড় হয়ে বইটা প্রকাশ করবে। চাইলে এটাকে সিনেমা বানাতেও পারি।
তালাবাটি কম্বল, জেলখানার সম্বল— এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, জেলখানার খাবার অনেক স্বাস্থ্যকর। এমনকি অনেক সময় নষ্টও হয়। রান্না হয় ফ্রেশভাবে, পুরো জায়গাটা বেশ ওয়েল মেইনটেইন বলে জানান অভিনেত্রী।