মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

মধ্যবয়সের খাদ্যাভ্যাস

আপডেটেড
১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৮:৫৩
সিরাজাম মুনিরা
প্রকাশিত
সিরাজাম মুনিরা

সাধারণত মধ্যবয়স বলতে ৩১ থেকে ৫০ বছর বয়সকে বুঝানো হয়। জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ হলো এই মধ্যবয়স। এই পর্যায়ের প্রাথমিক সময়কাল জীবনের অন্য সব সময়ের চেয়ে কিছুটা আলাদা। উদাহরণস্বরূপ, অনেক মহিলা মধ্যবয়সের শুরুর দিকের বছরগুলোতে গর্ভাবস্থা, প্রসব এবং স্তন্যপান করানোর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন। জীবনের এই পর্যায়ের শেষ ভাগে মহিলারা প্রি-মেন্সট্রুয়াল সিনড্রোমের মুখোমুখি হন এবং মেনোপজের সময় ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার কারণে মহিলাদের হাড়ের ঘনত্ব হ্রাসসহ বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়।

পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, এই সময়ে পরিবারের দায়িত্ব নিতে গিয়ে বেশ পরিশ্রম করতে হয় দিনভর। পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, হাঁটুতে ব্যথা, শরীরের ক্লান্তিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। মানবজীবন চক্রের এই পর্যায়ে প্রাপ্ত বয়স্করা বার্ধক্যের প্রথম বাহ্যিক লক্ষণগুলো অনুভব করতে শুরু করেন, বলিরেখা দেখা দিতে শুরু করে তাদের মুখে। এ ছাড়াও হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা শুরু হয় এবং শরীরে চর্বি জমে বিশেষ করে তলপেটে।

এতক্ষণ তো মধ্যবয়স্কদের নানা সমস্যা ও জটিলতার কথা বলা হলো, এগুলো শুনে ভয় পেয়ে গেলেন? ভয় পাওয়ার কারণ নেই। সঠিক ডায়েট ও লাইফস্টাইল মেইনটেইন করলে মধ্যবয়সের এসব বাধা অতিক্রম করে আপনিও থাকতে পারবেন তরুণের মতো শক্তিশালী এবং বার্ধক্য ঠিক এই মুহূর্তেই আপনার দরজায় কড়া নাড়বে না।আজকের লেখায় রইলো পাঁচটি টিপস, যেগুলো মেনে চললে মধ্যবয়সের জটিলতাগুলো খুব সহজেই আপনাকে ঘিরে ধরবে না -

আদর্শ ওজন বজায় রাখা: শরীর সুস্থ থাকার প্রধান উপায় হচ্ছে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকলে অনেকগুলো শারীরিক সমস্যার উৎপত্তি ঘটবে। ডায়াবেটিস, হার্ট ডিজিজ থেকে শুরু করে ঘটতে পারে স্ট্রোকের মতো ঘটনাও। তাই আপনার অতিরিক্ত ওজন থাকলে এখনই সচেতন হন। খাদ্যতালিকা থেকে ফাস্টফুড, প্রসেসড ফুড, বাইরের খাবারসহ বাদ দিয়ে দিন সব অপ্রয়োজনীয় খাবার। প্রয়োজনে সহায়তা নিন একজন দক্ষ পুষ্টিবিদের!

সঠিক পুষ্টিকর খাবার: মধ্যবয়সী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অন্য সব বয়স থেকে খাদ্যাভ্যাস কিছুটা সতর্কের সঙ্গে বাছাই করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তারা গুরুত্ব দেবে যেসব খাবারের ওপর তা হলো-
হোল গ্রেইন/কার্বোহাইড্রেট: সাদা চাল, আটার পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটা রাখবে খাদ্যতালিকায়। প্যাকেটজাত খাবারের পরিবর্তে খেতে হবে বাসায় বানানো খাবার। সাদা চিনি যতটা সম্ভব পরিহার করতে হবে। প্রয়োজনে মধু খাওয়া যেতে পারে।

প্রোটিন ও ফ্যাট: প্রোটিনের জন্য মুরগি, মাছ ও ডিম উৎকৃষ্ট উৎস। অনেক সময় মায়েরা নিজেরা না খেয়ে সন্তানের জন্য রেখে দেন, যা মোটেও ঠিক নয়। মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করতে তাকে অবশ্যই প্রয়োজনীয় প্রোটিন খেতে হবে। এ ছাড়া ফ্যাটের জন্য স্বাস্থ্যকর তেল, বীজ ও বাদামজাতীয় খাবার রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়।

ভিটামিন ও মিনারেলস: প্রয়োজনীয় মিনারেলসের চাহিদাপূরণ করতে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই কয়েক কালারের মৌসুমি ফল ও সবজি রাখতে হবে। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ সময় ত্বকে দেখা দেয়া বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করবে এবং রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে।
এ ছাড়া হাড়ের ক্ষয় রোধে ভিটামিন-ডি, ম্যাগনেশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ওপর জোর দিতে হবে। ভিটামিন-ডি-এর জন্য প্রতিদিন রোদে থাকার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। ম্যাগনেশিয়ামের জন্য পালংশাক, লাল চাল, বাদাম ও বীজজাতীয় খাবার রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। ক্যালসিয়ামের জন্য দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য খেতে হবে।

• খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ফাইবার জাতীয় খাবার রাখতে হবে। সে জন্য শাকসবজি খেতে হবে পরিমাণমতো।
• রক্তের ধমনীতে চর্বি জমা রোধ করতে খেতে হবে ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার। ওমেগা-৩-এর মধ্যে সামুদ্রিক মাছ, মাছের তেল ও স্পিরুলিনা উল্লেখযোগ্য। খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত ওমেগা-৩ থাকলে ঠেকানো যাবে হার্ট-অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো ডিজিজ।
• কফি-দুধ চা, অতিরিক্ত ঝাল ও মসলাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে এবং পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
• প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। এ ছাড়াও প্রয়োজনে একজন পুষ্টিবিদের শরণাপন্ন হতে হবে।

তাই আপনি যদি ইতিমধ্যে মধ্যবয়সে পা দিয়ে থাকেন, তাহলে উল্লেখিত উপদেশগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন। আশা করা যায়, এতে করে আপনার আগত বার্ধক্য এবং শারীরিক অসুস্থতা কিছুটা হলেও দেরি করে আসবে।

লেখক: পুষ্টিবিদ, ডায়েট কনসালটেন্ট ও স্থূলতা ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ
ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল


ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার

আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৩ ১২:৫৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সারা দিন রোজা রেখে ইফতারে নানা পদের ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার অনেকেই এড়িয়ে যান। এসব খাবার কোনোভাবেই স্বাস্থ্যের পক্ষে নয়, একথা সবারই জানা। আবার সারা দিন শেষে শরীরের পানিশূন্যতা কাটাতে পানির পাশাপাশি নানা রকম শরবতই ভরসা। ইফতারে যারা একটু পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য ভালো কিছু তৈরি করতে চান তারা জেনে নিন দই দিয়ে তৈরি মজাদার এমন কয়েকটি রেসিপি। রেসিপি দিয়েছেন তাহ্‌মিনা জামান।

পুদিনা টকদই শরবত

উপকরণ

  • পুদিনা পাতা: ৮-৯টি
  • টকদই: দেড় কাপ
  • ধনেপাতা কুচি: ২ টেবিল চামচ
  • লেবুর রস: ২ চা-চামচ
  • কাঁচামরিচ (কুচি করা): ২টি
  • গোলমরিচ গুঁড়া: সামান্য
  • বরফের কুচি: সামান্য
  • লবণ: স্বাদমতো
  • বিট লবণ: অল্প

প্রথমে পুদিনা পাতা ও ধনিয়াপাতা ভালো করে ধুয়ে কুচি করে একটি ব্লেন্ডারে নিন। এবার এর মধ্যে টকদই, কাঁচামরিচ কুচি, গোলমরিচের গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করুন। আধাকাপ পানি দিয়ে আবারও ব্লেন্ড করে নিন। সবশেষে অল্প একটু বিট লবণ মিশিয়ে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে একটি গ্লাসে মিশ্রণটি ঢেলে নিন। ওপরে সামান্য বরফের কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন ঠাণ্ডা পুদিনা টকদই শরবত।

দইয়ের পুডিং

উপকরণ

  • ডিম: ৪টি
  • গুঁড়া দুধ: ৪ টেবিল চামচ
  • দই: ১ কাপ (পানি ঝরানো)
  • চিনি: ১-২ কাপ
  • পানি: ১-২ কাপ।

ক্যারামেল তৈরি: ২-৩ টেবিল চামচ চিনি ও ২ টেবিল চামচ পানি নিন। একটা পাত্রে যেখানে পুডিং বসাবেন সেটিতে চিনি, পানি নিয়ে চুলায় দিয়ে মিডিয়াম আঁচে পাত্রটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ক্যারামেল করে নিন। খেয়াল রাখবেন বেশি গাঢ় যেন না হয়। পাত্রটি ঠাণ্ডা হলে, এক চা-চামচ ঘি দিয়ে ব্রাশ করে রাখুন।

পুডিং তৈরি: প্রথমে একটি বড় বাটিতে ডিমগুলো ভেঙে নিন। গুঁড়া দুধ ও পানি মিক্স করে ঘন করে গুলে রাখুন। দই সুতির কাপড়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার ব্লেন্ডারে ডিম, চিনি, দুধ ও দই দিয়ে এক মিনিটের মতো ব্লেন্ড করে নিন। এখন ডিমের মিশ্রণটি ক্যারামেল পাত্রে ছেঁকে ঢেলে নিন। পুডিং পাত্রটি ঢেকে দিন ফয়েল পেপার বা ঢাকনা দিয়ে। এবার একটি পাতিলে ৩ কাপ পানি দিয়ে, একটি স্ট্যান্ডের ওপর পুডিং পাত্রটি বসিয়ে দিন। পাতিলটি ভারী কিছু দিয়ে ঢেকে দিন। মাঝারি আঁচে ২০-২৫ মিনিট স্টিম করে নিন। এভাবেই রেখে দিন ঠাণ্ডা হয়ে আসা পর্যন্ত। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।

ভ্যানিলা টকদইয়ের স্মুদি

উপকরণ

  • দুধ: ১ কাপ
  • ভ্যানিলা স্বাদের টকদই: আধা কাপ
  • ভ্যানিলা স্বাদের টকদই না পেলে ভ্যানিলা অ্যাসেন্স কয়েক ফোঁটা

ব্লেন্ডারে সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর বরফের কুচি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন কিংবা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করা যেতে পারে মজাদার স্মুদি।

বিষয়:

ত্বককে জলযোজিত রাখতে…

মডেল: জেসিকা গমেজ 
আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৩ ১২:৫০
নাহিন আশরাফ

আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, নতুন কোনো ব্যায়াম, প্রাত্যাহিক রুটিনের ভিন্নতা কিংবা পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবে ত্বক পানিশূন্যতা অনুভব করে। ফলে ত্বকে নানা রকম সমস্যা যেমন- ব্রণ হওয়া, চুলকানি, র‌্যাশ ইত্যাদি হয়ে থাকে। যেহেতু রোজার সময় স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে- তাই ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মনে রাখতে হবে, ত্বকের ৭০ শতাংশই কিন্তু পানি। রোজার রাখার ফলে স্বাভাবিকভাবে আমাদের শরীর পানি ও তরলজাতীয় খাবার কম পেয়ে থাকে। তা ছাড়া এই সময়টা আবহাওয়া স্থির থাকে না। এই গরম, এই ঠাণ্ডা, এই বৃষ্টি! আর বাইরের হাওয়াতে যেন ধুলাবালি মিশে একাকার। দুপুর থেকে বিকেলে দেখা যায়, রোদের তেজ আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই বাতাস শীতল হয়ে যায়। রমজান ও আবহাওয়ার এই ওঠা-নামাতে আমাদের স্বাস্থ্য ও ত্বকের ওপর পরে বড় প্রভাব। প্রকৃতির এই বদলের সঙ্গে ত্বকের বদলও যেন অপরিহার্য। এ সময়টায় কীভাবে নিজের ত্বকের যত্ন নেয়া যায় তা নিয়ে কথা হয় রূপবিশেষজ্ঞ তারানা মাহবুবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বড় ভুলটা যা করি শীত চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্ন নেয়া বন্ধ করে দিই। শীতে ত্বকের যেসব শুষ্কতা দেখা দেয়, তার রেশ রয়ে যায় অনেক দিন। শীতের রুক্ষতা কমে এলেও ত্বকের রুক্ষতা রয়ে যায়। তাই এই সময়টাও নিতে হবে ত্বকের পরিপূর্ণ যত্ন।’

তারানা মাহবুব বলেন, রমজানে ৮০ শতাংশ মানুষের ত্বক পানিশূন্য হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে রয়েছে সারা দিন পানি পান করা হয় না আবার ইফতারের সময়ও পর্যাপ্ত পানি পান না করা। ফলে পানির ঘাটতি পূরণ হয় না। তা ছাড়া আবহাওয়াও এখন এমন যে কখনো ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক আবার কখনো তৈলাক্ত। তাই ত্বকের যত্ন নিতে হবে বুঝেশুনে।

ত্বকের ধরন বুঝে প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন

এ সময় গরম ও ঠাণ্ডার মিশ্রিত আবহাওয়া থাকার কারণে দুই ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিন সকালে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালো ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। ময়েশ্চারাইজার শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করে। ময়েশ্চারাইজার বাইরের দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং এটি সূর্যের থেকে সুরক্ষা দেয়। শুষ্ক ত্বকের জন্য তেলযুক্ত এবং যাদের ত্বক তেলযুক্ত তাদের পানিযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

প্রতিদিন পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে একটি টোনার ব্যবহার করতে হবে। হঠাৎ গরম পড়ার কারণে মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়, টোনার সেই ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়। বাইরে রোদের জন্য স্যানট্যান পরে তাই দিনের বেলা বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে ও রোদের পোড়া কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে সাহায্যে করে। অনেকে আবহাওয়া একটু ঠাণ্ডা থাকলে সানস্ক্রিন এড়িয়ে যায়, এটা একদম করা যাবে না। আবহাওয়া যেমন থাকুক রোজ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। শীতের পরে যাদের ত্বকে এখনো শুষ্কতার চাপ রয়ে গেছে, তারা প্রতিদিন গোসলের পর অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে উপকার পাবে এবং ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে একটা ভালো মানের ফেসওয়াশ বেছে নিতে হবে।

ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিন

আমাদের রান্নাঘরে থাকা অনেক সহজলভ্য উপাদান দিয়ে আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। যেমন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পাকা কলা খুবই উপকারী। একটি পাকা কলা চটকে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত করলে তৈলাক্ত ত্বক থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে। শুষ্ক ত্বকে অনেক সমউ জ্বালা ভাব দেখা দেয়, তার জন্য কাঁচা দুধের সর ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে মুখে টোনার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। শসার রস খুব ভালো ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। শসা টুকরো করে কেটে মুখে ১০ মিনিট ঘসে ধুয়ে ফেললে ত্বক অনেক হাইড্রেটেড হবে। প্রতিদিন মুখ ভালোভাবে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, গরম পানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া ভালো কারণ এটি ত্বক আরও শুষ্ক করে।

ভেতরে থেকে ত্বককে পুষ্টি দিন

সারা দিন রোজা রাখবার ফলে ত্বক ডিহাইড্রেট হয়ে পড়ে। ত্বক যদি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায় ত্বকে সিবামের পরিমাণ নষ্ট হয়। ত্বক শুষ্ক হয়ে চুলকানি দেখা দেয়। তাই ইফতার ও সাহরিতে হাইড্রেশন বজায় রাখতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি ত্বকের গঠন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারের সঙ্গে লেবু খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। লেবু ভেতর থেকে শরীরের সব দূষিত পদার্থ বের করে ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্যে করে। যেসব ফলমূল ও শাকসবজিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে তা খেতে হবে। যেমন- তরমুজ, কলা, শসা, টমেটো ইত্যাদি। মাখন খসখসে ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। তাই সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন মাখন খেতে হবে। ত্বক ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে প্রোটিনের অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই রোজ ডিম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। মাছের তেল ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। তাই খাবারের পাতে প্রোটিন রাখতে হবে।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন

ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. সেলিনা রেজা বলেন, গ্রীষ্ম শুরুর এই সময়টায় ত্বকে এলার্জি থেকে শুরু করে অন্যান্য চর্মরোগ খুব বেশি দেখা যায়। রমজান ও আবহাওয়ার কারণে শরীর শুষ্ক হয়ে চুলকানি হতে পারে এবং রাতের দিকে চুলকানি বেশি বেড়ে যায়। অনেকের মুখে লাল লাল র‍্যাশ দেখা যায় ও গোটা হয়। তাই এই সমস্যাগুলোকে অবহেলা করা যাবে না এবং নিজে নিজে ভুল প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, আবহাওয়া ছাড়াও অনেক কারণে ত্বকে সমস্যা হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।


এক টি ব্যাগে সমাধান অনেক

আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৩ ১২:৫০
চলতি হাওয়া ডেস্ক

সারা দিনের ক্লান্তি উধাও করে দিতে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের জুড়ি মেলা ভার। চা শেষ করে কাপে পরে থাকা টি ব্যাগটিও কিন্তু কম উপকারী নয়। এমনকি ব্যবহারের পরও এটি ব্যবহার করা যায় নানাভাবে নানা কাজে। চলুন জেনে নিই তেমন কিছু টিপস-

চোখের ফোলাভাব কমাতে

ঘুমের অভাব, কাজের চাপ ইত্যাদিতে চোখ ফুলে ঢোল। এ ফোলাভাব কমাতে গরম পানিতে টি ব্যাগ ভিজিয়ে নিন, তারপর সেই ভেজা টি ব্যাগ ফ্রিজে কয়েক মিনিট রাখুন যাতে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ঠাণ্ডা টি ব্যাগ চোখের ওপর রেখে পাঁচ মিনিট শুয়ে থাকুন, দ্রুত ফোলাভাব কমে যাবে!

ফেস স্ক্রাব হিসেবে

কোথাও ঘুরতে যাবেন হাতে একদমই সময় নেই? চা পান করে টি ব্যাগ কেটে ভেতরের চা পাতাটা বের করে মুখ স্ক্রাব করে নিতে পারেন। হাতে আরও কিছুটা সময় থাকলে চায়ের গুঁড়োটা বাটিতে নিয়ে এক চা চামচ মধু যোগ করুন, তারপর মুখে লাগিয়ে বৃত্তাকারে মাসাজ করুন। পাঁচ মিনিট রেখে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে মুহূর্তেই।

দুর্গন্ধ কমাতে

রান্নাঘরে ডাস্টবিন থাকলে তা থেকে বিশেষ করে এই গরমকালে বাজে গন্ধ ছড়াতে পারে। ব্যবহার করা টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ডাস্টবিনে। সব গন্ধ দূর হয়ে যাবে!

রুম ফ্রেশনার হিসেবে

ঘরে সুগন্ধের জন্য দামি এয়ার পকেট কেনেন? হাতের কাছে টি ব্যাগ থাকলে আর কেনার দরকার নেই! ব্যবহার করা টি ব্যাগ শুকনো করে নিন, তাতে ছিটিয়ে দিন কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল! এবার ব্যাগগুলো বাথরুমে বা ড্রয়ারের ভেতরে রেখে দিলেই হলো!

গাছ বাঁচান ছত্রাক থেকে

পছন্দের গাছে ফাঙ্গাস হলে গরম পানিতে টি ব্যাগ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পানিটুকু স্প্রে বোতলে ঢুকিয়ে মাটিতে আর পাতায় স্প্রে করুন সকাল-বিকেল। ছত্রাক কমে যাবে।


সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

আগামী কাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে রমজান মাস। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে মহাপরিচালক সাক্ষরিত এই সময়সূচি প্রকাশ করা হয়।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঘোষণা করা সময়সূচি অনুযায়ী প্রথম রোজার সেহরির শেষ সময় (২৪ মার্চ) ভোর ৪:৩৯ মিনিট। আর ইফতার হবে ৬:১৪ মিনিটে।

তবে দূরত্ব অনুযায়ী ঢাকার সময়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১১ মিনিট পর্যন্ত যোগ করে ও ১০ মিনিট পর্যন্ত বিয়োগ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সেহরি ও ইফতার করবেন বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

বিষয়:

রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছর ২৩ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান। চলবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। এই পুরো এক মাস পালিত হবে রোজা। ইবাদতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রোজার সময় সেহরি ও ইফতার রোজাদারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ইসলামের নিয়মানুযায়ী রমজানে প্রতিটি সুস্থ-সবল মানুষের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক। তাই ফজরের আগে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু করতে হয় এবং সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে দিনের রোজার সমাপ্তি ঘটে। এই দুটি সময়ে কিন্তু নিয়ত এবং দোয়া করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, সেহরি খাওয়ার পর রোজা রাখার নিয়ত করতে হয়, আবার ইফতারের আগে দোয়া করে ইফতার শুরু করতে হয়।

রোজার আরবি নিয়ত:

نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم

রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।

ইফতারের দোয়া

بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ

বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)

বিষয়:

সুপার কন্ডাক্টিং সুপার কোলাইডার

একটি স্বপ্নের অপমৃত্যু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

‘এসএসসির গল্পটা বলো এবার।’ টনি ভাইয়াকে তাগাদা দেয় রবিন।

‘১৯৮৪ সালে কার্লো রুবিয়ার ডব্লিউ ও জেড বোসন আবিষ্কারের পর এক প্রকার এগিয়েই যায় ইউরোপ।’ টনি ভাইয়া একটা লম্বা কাহিনি ফাঁদতে চলেছেন, ‘তখন আরেক ধাপ এগিয়ে তারা যেতে চায়। রীতিমতো মনস্তাত্ত্বিক খেলা তারা শুরু করেছে। এই ব্যাপারটা আরও বেগবান হলো। কারণ, তখন সার্নের মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দিলেন রুবিয়া। ১৯৮৯ সালে। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং শক্ত ধাতুতে গড়া মানুষ। হার না মানতে নারাজ। তিনি তখন এলএইচসি নামের বিশাল প্রজেক্ট দাঁড় করার চেষ্টা করলেন। যেটা হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কণাত্বরক যন্ত্র। তাদের অন্য লক্ষ্য যা-ই হোক, মূল লক্ষ্য হবে হিগস বোসন শনাক্ত করা। এ ঘোষণা তাতিয়ে দিল মার্কিন বিজ্ঞানীদের। তারাও ভাবলেন কিছু একটা করতে হবে।’

‘তারাও তখনি নেমে পড়ল?’ রবিন জিজ্ঞেস করল।

‘কাছাকাছি সময়ে,’ বললেন টনি ভাইয়া।’ অবশ্য ১৯৭৭ সাল থেকেই তারা এই সুপার কোলাইডার বানানোর তাগাদা দিচ্ছিলেন। কিন্তু অর্থের বরাদ্দ মিলছিল না। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় বসলেন সাবেক হলিউড তারকা রোনাল্ড রেগান। ভদ্রলোক সিনেমার মতোই দ্রুতগতিতে ছোটাতে চাইছিলেন নিজের দেশটাকে। রোমান্টিক, আগ্রাসী এই প্রেসিডেন্ট চেয়েছিলেন কল্পবিজ্ঞানে দেখানো যন্ত্র-অস্ত্রগুলো তৈরি করতে যেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা কাজে লেগে পড়েন। বেশির ভাগই অবশ্য অসম্ভব। কিন্তু সব তো নয়, বিজ্ঞানীদের তখন পোয়াবারো। রেগানেকে যদি বোঝানো যায়, এসএসসির মতো একটা সুপার কোলাইডার বানানো যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাবে সব প্রতিদ্বন্দ্বীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৯৮৭ রেগান ঘোষণা দিলেন তারা সত্যি সত্যিই এসএসসি বানাবে…’

‘আচ্ছা,’ টনি ভাইয়াকে থামিয়ে আবার মাঝখানে প্রশ্ন করে রবিন, ‘বারবার এসএসসির কথা বলছ? এটার পূর্ণ মানে কী আর এলএইচসির সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়?’

‘এসএসসি হলো সুপার কন্ডাক্টিং সুপার কোলাইডার।’

‘সুপার কন্ডাক্টিং কী?’

‘অতি পরিবাহী। পরিবাহী কি জানিস তো?’ টনি ভাইয়া জানতে চান । ‘হ্যাঁ, তাপ বা বিদ্যুৎ পরিবহন করে যে জিনিস।’

‘এখানে বিদ্যুতের কথা আসছে। এখন বল কত ধরনের পরিবাহীর কথা তুই জানিস?’

‘তিন ধরনের,’ রবিন জবাব দেয়। তারপর যোগ করে, ‘অপরিবাহী, সুপরিবাহী, আর কুপরিবাহী।’

‘কোনটার কাজ কী?’ রবিনকে আরেকটু বাজিয়ে দেখতে চাইছেন টনি ভাইয়া ৷

‘যেসব বস্তু বা ধাতু খুব ভালোভাবে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে, তাদের বলে সুপরিবাহী।’ রবিন বলে, ‘যেগুলো একেবারেই বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না, সেগুলো অপরিবাহী। আর কুপরিবাহী খুব সামান্য বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে।’

‘ঠিক,’ বলে পিঠ চাপড়ে দিলেন টনি ভাইয়া। ‘আরও দুই ধরনের পরিবাহী আছে। সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী আর সুপার কন্ডাক্টর বা অতিপরিবাহী। ‘এখন নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না, এই সুপার কন্ডাক্টর কেমন কাজ করে?’

‘কিছুটা বুঝতে পারছি,’ রবিন বলে।

‘কিছুটা বুঝলেই হবে। বিজ্ঞানীরা সরাসরি ক্ষমতাবানদেরই দোষারোপ করেছিলেন। বলেছিলেন, টাকা দিতে গড়িমসি করার কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা কাজে গতি আনতে পারেননি। অবশ্য সরকারি কর্তারা পাল্টা দোষারোপ করতে ছাড়েনি। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি কলাইডার। কোনো একটা কলাইডারে বাড়তি নজর না দিয়ে তারা সব কয়েকটির পেছনে ছুটছেন। কলাইডারের জন্য বরাদ্দের টাকা তিনটাতেই সমান ভাগে ভাগ করছেন। অন্যদিকে ইউরোপে ঘটছে উল্টোটা। তারা সব দেশের টাকা এক জায়গায় করে ঢালছে একটা যন্ত্রের পেছেনে। এগিয়ে তো তারা যাবেই।’

‘দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপ করলে কাজের কাজ তো কিছুই হয় না।’ রবিন বলে।

‘হ্যাঁ,’ জবাব দেন টনি ভাইয়া। ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আরও বুঝতে পেরেছিলেন যে ডিটেক্টরগুলো আছে, সেগুলো দিয়ে ঈশ্বর কণা ধরা সম্ভব নয়। তাই বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঘোষণা দিলেন, হিগস বোসন শনাক্তের জন্য তারা বানাবে সুপার কন্ডাক্টিং সুপার কোলাইডার।’

‘এর কাজের ধরন কেমন?’

‘আগেই বলেছি, সুপার কন্ডাক্টর মানে অতি পরিবাহী। এই যন্ত্রে বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য যেসব তার ব্যবহার করার কথা ভাবছিলেন বিজ্ঞানীরা, সেগুলো সুপার কন্ডাক্টর অর্থাৎ এই তারের বৈদ্যুতিক রোধ নেই বললেই চলে। এর ভেতর দিয়ে যন্ত্র প্রবাহিত বিদ্যুতের প্রায় সবটুকুই ব্যবহার করা যাবে। এতে তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান পাওয়া যাবে।’

‘কী পরিমাণ শক্তি সুপার কোলাইডারে উৎপন্ন করা হবে সেটার হিসাব কি করা হয়েছিল?’ রবিন জিজ্ঞেস করে।

‘হুম, ৪০ টেরা ইলেকট্রন ভোল্ট। অর্থাৎ ৪০ হাজার গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট। অর্থাৎ ৪০, 000, 000, 000, ০০০ ইলেকট্রন ভোল্ট। একটা ইলেকট্রনকে এক ভোল্ট বৈদ্যুতিক বিভবের ভেতর ছোটাতে যে পরিমাণ শক্তির দরকার হয়, সেটা হলো এক ইলেকট্রন ভোল্ট।’

‘সার্নের বিজ্ঞানীরা তখন কী করলেন? পাল্টা জবাব তো দিতে হবে!’ রবিন বলে।

২.

‘নিউইয়র্ক টাইমসের ওই লেখাটার কথা বলেছিলাম মনে আছে?’ টনি ভাইয়া রবিনকে ঝালাই করে নেয়ার সুযোগ দিলেন।

‘ওই যে ইউরোপ থ্রি, ইউএসএ নট ইভেন জেড জিরো- ওটা?

‘হুম, লেখাটাতে একই সঙ্গে আশা আর হতাশার কথা শোনানো হয়েছিল। হতাশার ব্যাপারটা হলো মার্কিনিদের টেক্কা দিয়ে ইউরোপীয়দের জয়। ভালো খবরটা হলো স্ট্যান্ডার্ড মডেল যে সফল, প্যারিটি ভায়োলশন যে অবাস্তব নয়, সেই ধারণাটা আরও স্বচ্ছ হয়েছে এই আবিষ্কারের পর।’

‘একটা কথা বলো তো, ভাইয়া, ‘রবিন মুখ খোলে, ‘ততদিনে পাঁচটা মূল কণিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও কেন ওভাবে লেখা হলো, কেন মনে করল ওটা তাদের পরাজয়।’

‘প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়া খারাপ খবর তো বটেই। ওই এডিটোরিয়ালে লেখা হলো, আমেরিকার লং আইল্যান্ডে ব্রুকহ্যাভেন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে বানানো হচ্ছিল একটা ডিটেকটর। ইসাবেল। প্রায় ৫০ কোটি ডলার ব্যয় করে নির্মিত এই যন্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল W+, W- ও Z° কণা শনাক্ত করা। সার্ন সেটা আগে বের করে ফেলল। তাই পত্রিকাওয়ালারা মনে করতেই পারে, পুরো টাকাটাই জলে গেল। এসএসসি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিলেন পদার্থবিজ্ঞানীদের দুটি গ্রুপ। এসএসসির বিপক্ষে সরব হলেন নোবেলজয়ী দুই পদার্থবিজ্ঞানী ফিলিপ ওয়ারেন অ্যান্ডারসন ও নিকোলাস ব্লোয়েমবারজে। তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইলেন, কাদের টাকায় এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়। সেই করদাতাদের আদৌ কোনো কাজে আসবে কিনা এই যন্ত্রদানব।’

‘পক্ষে কারা ছিলেন?’ রবিন জানতে চাইল।

‘কোয়ার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা মারে গেলম্যান তো রীতিমতো গালমন্দ করলেন এসএসসি বিরোধীদের। আর ছিলেন লিও ল্যাডারম্যান, তিনি বিজ্ঞান সাংবাদিক ডিক টেরেসির সঙ্গে যৌথভাবে লিখলেন সেই বিখ্যাত বই ‘দ্য গড পারটিকেল : ইফ দ্য ইউনিভার্স ইজ দ্য আনসার, হোয়াট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন।’ এই বইয়ে তারা দেখালেন, কেন ঈশ্বর কণা জরুরি। কী দেবে এই কণা মানবজাতিকে। কিন্তু অর্থের জোগান যারা দেয়, সেই রাজনীতিবিদরা ততদিনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তা ছাড়া রুশ-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধও শেষ হয়েছে ততদিনে, সুতরাং কাউকে দেখিয়ে দেয়ার কিছু নেই। ইউরোপের কাছে হারাটা তাদের অতটা বিচলিত করছে না । ফলে বন্ধ হয়ে গেল এই প্রজেক্ট।’


ওয়েস্টিন ও শেরাটনে রমজানের খাবার

আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৩৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

রোজায় আরব, তুরস্ক, ইউরোপীয় ও এশীয় খাবারের পসরা সাজিয়ে বসছে রাজধানীর অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিন ও শেরাটন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নামকরা শেফদের তৈরি আড়াই শতাধিক খাবার সেখানে পাওয়া যাবে। মিলবে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় ইফতারিও।

কাবাব, বাকলাভা, সি ফুড পায়েলা, ল্যাম্ব ওউজি, তুর্কি ডোনার, আদানা কাবাব, তুলুম্বার মতো অনেক তুর্কি খাবারের আয়োজন করেছে শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেন। ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজনে পিছিয়ে নেই আরেক তারকা হোটেল ওয়েস্টিনও। তুর্কি শেফদের সহযোগিতায় রমজান মাসে ওয়েস্টিনের খাবার তালিকায় থাকছে চিকেন কাবসা রাইস, মিক্সড গ্রিল, সিফুড মাচবুস, ল্যাম্ব শ্যাঙ্ক, মোগল চাপ, গ্রিলড চিমিচুরি শ্যামন, মাহলাবিয়া, কুনাফাসহ বাহারি আইটেম।

অভিজাত হোটেল দুটির খাবারের তালিকায় রাখা হয়েছে জাপানি আইটেমও। সুশি, সাশিমি ও তেরিয়ার্কির মিলবে সেখানে। জাপানি মাস্টারশেফ হিরোমি ইয়োনেকাওয়ার সুস্বাদু জাপানিজ খাবারের সঙ্গে ইফতারে বেন্টো বক্সও পাওয়া যাবে।

মধ্যপ্রাচ্য ও তুর্কি খাবারের অভিজ্ঞতা দিতে ওয়েস্টিন ঢাকার দ্য সিজনাল টেস্ট এবং শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেনে থাকছে বুফে ইফতারি ও রাতের খাবার (প্রতিদিন) এবং বুফে সাহরির (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার রাত ও সরকারি ছুটির আগের রাতে) ব্যবস্থা।

ওয়েস্টিন ঢাকার সিজনাল টেস্টে ইফতার ও রাতের প্রায় ২৫০ আইটেমে বুফে খাবারে মোট খরচ পড়বে ৮ হাজার ৮৫০ টাকা এবং সাহরি জনপ্রতি ৫ হাজার ৫৫০ টাকা। অন্যদিকে শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেনে ইফতার ও রাতের খাবারের মোট খরচ পড়বে ৯ হাজার ৯৫০ টাকা ও সাহরি খরচ হবে ৫ হাজার ৫৫০ টাকা।

এ ছাড়া হোটেল ওয়েস্টিনে মিলবে প্লাটিনাম, গোল্ড ও সিলভার ইফতারি বক্স এবং শেরাটনে বিলাসবহুল, প্রিমিয়াম ও ক্লাসিক ইফতারি বক্স। তারা মধ্যপ্রাচ্য এবং তুরস্কের সিগনেচার খাবারের সঙ্গে সরবরাহ করবে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় ইফতারের খাবার ও সুস্বাদু জ্যাম।

বিষয়:

বিদেশে যখন চাকরি

আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৩ ১২:১৪
আফরিনা খান লোটাস

এখন নানান বাস্তবতায় আর সুযোগের জন্য অনেক নারী দেশের বাইরে চাকরি করছেন। পরিবারসহ কিংবা একাই নানান চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিদেশে চাকরির নানান বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে লিখেছেন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান জুনিপার নেটওয়ার্কের ভার্চুয়াল সেলস ম্যানেজার আফরিনা খান লোটাস

কেন যেতে চান তা জানুন: বিদেশে অনেক চাকরির সুযোগ আছে। সুযোগ নিতে চাইলে প্রথমে নিজেকে প্রস্তুত করুন। কেন যেতে চান, তা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেকেই দেশের বাইরে স্থায়ী আবাসনের জন্য চাকরি খোঁজেন, আবার অনেকেই দেশের বাইরে চাকরির মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করে আবার দেশে ফিরে আসেন। চেষ্টা করুন জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা বাড়ে- এমন কাজের সুযোগ নিয়ে দেশের বাইরে যেতে। স্থায়ী আবাসনের জন্য যেতেই পারেন, তবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরির জন্যও কিন্তু বিদেশে চাকরির সুযোগ আছে এখন। নিজেকে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের জন্য তৈরি করতে সুযোগের সন্ধান করুন।

নিজের দক্ষতা নিয়ে বাইরে তাকাতে হবে: আমাদের দেশের নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের কিন্তু। যেহেতু আমরা বাইরের দুনিয়ায় কী চাকরি বা কাজের সুযোগ আছে তা জানার চেষ্টা করি না। তাই আমাদের নারীদের দেশের বাইরে আসার হার খুবই কম। করপোরেট ক্ষেত্রে দেশের বাইরে নারীদের অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। বিশেষ করে আইটি ও ব্যবসাসংশ্লিষ্ট কাজে বিক্রয়, বিপণন থেকে শুরু করে নির্বাহী পদে নারীদের অনেক কাজের সুযোগ আছে।

নতুন দেশের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে: এশিয়ার দেশগুলোর সংস্কৃতি আমাদের দেশের মতো করে মানিয়ে নিতে খুব একটা সমস্যা হয় না। ইউরোপ বা আমেরিকার দেশ হলে আবহাওয়া থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়কে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। একটু চেষ্টা করলেই নারী যেকোনো পরিবেশে যেকোনোভাবে মানিয়ে নিতে পারে। বিদেশ-বিভুঁইয়ের জন্য দুশ্চিন্তা করা যাবে না। নতুন চ্যালেঞ্জ মনে করে এগিয়ে যেতে হবে।

দেশে সংযোগ রাখুন: দেশের বাইরে গেলে শুধু কাজ আর কাজ করে ব্যস্ত থাকলে চলবে না। দেশের খোঁজ রাখতে হবে। পরিবার ও পরিজনের খোঁজ রাখতে হবে। দূরে সরে যাওয়া মানে দূরত্ব নয়, এটা বিশ্বাস করে নিজের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। নিয়মিত ছুটিতে দেশে আসার চেষ্টা করুন। নিজের কমিউনিটি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। দেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী ধরনের কাজ চলছে, কী সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে তা জানুন।

সুযোগ বিস্তৃত করুন: দেশের বাইরে কাজের জন্য গেলে একটি কাজে আটকে থাকলে চলবে না। দেশের মতো করেই ক্যারিয়ার সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন হলে কর্মক্ষেত্র ও প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করুন। সুযোগ সামনে এলে পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে তৈরি করুন। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পদায়ন হলে সুযোগ নিন। নিজেকে বিশ্বের নানান প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন।

ভবিষ্যতের খেয়াল রাখুন: ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরি করুন। সঞ্চয় ও ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখুন। আপনি যখন বিশ্ববাজারে কাজ করবেন, তখন নানান বৈশ্বিক সংকটের জন্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এসব ঝুঁকি বিবেচনা করে নিজের বর্তমান ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা গুছিয়ে নিন।

যেভাবে বিদেশে চাকরি খুঁজবেন

-লিংকডইনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানান দেশের চাকরির খোঁজ পেতে পারেন। চেষ্টা করুন বিভিন্ন জব পোর্টালের মাধ্যমে চাকরির খোঁজ রাখতে।

-বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ও ক্যারিয়ার-সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত থাকুন, যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন, তাদের কাছে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাখুন।

-এখন বাংলাদেশে কাজ করছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের নানান দেশে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন চ্যালেঞ্জ নেয়ার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।

-বিদেশি বন্ধুদের কাছে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাখতে পারেন।

-একেক দেশের চাকরির প্রকরণ অনুসারে আবেদন প্রক্রিয়া বা সিভি একেক রকম হয়। সেই বিষয়গুলো অনলাইনে সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট কিংবা আগে চাকরি করেছেন এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।

-বিদেশে চাকরির জন্য নানান দেশের নানান নিয়ম, সেসব সম্পর্কে ধারণা রাখুন। চাকরির নিয়োগ, বেতনসহ নানান সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকেই জানতে পারেন।


তিনি উদাহরণ তৈরি করেছেন

কর্মস্থলে সন্তানের সঙ্গে মনোয়ার ‍রুবেল
আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৩ ১২:১৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সময় পাল্টেছে, কাজে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যও কমছে দিনকে দিন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এখনো আঁধার কাটেনি যেন। এখনো অলিখিত নিয়ম হিসেবেই রয়েছে সন্তান জন্মের পর মাকেই সন্তানের দেখভাল করতে হবে। প্রয়োজনে নিজের ক্যারিয়ারও বিসর্জন দিতে হবে। ক্যারিয়ার আর সন্তান দুটোকেই আগলে রাখতে চান কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যোগদানের সময়টুকুতে শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন, কিংবা কর্মস্থল মানবে তো সন্তানকে অফিসে রাখার বিষয়টি- এসব চিন্তায় অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা সন্তান জন্মদানের পর চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এমন সিদ্ধান্ত পরবর্তী সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

তবে এমন ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেকেই। সন্তান জন্মদানের পর তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব শুধু মায়ের এমনটা মানতে একদমই নারাজ মনোয়ার রুবেল। একটি সরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তিনি। প্রথম সন্তান জন্মের পর স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর নিজ থেকেই প্রস্তাব করেন সন্তানকে তার কাছে রাখার। অর্থাৎ স্ত্রী যাতে অফিসে কাজের সময়টুকুতে স্বস্তি নিয়ে পুরোপুরি মনোযোগী থাকতে পারেন। এ জন্য সন্তানকে তিনি নিজের সঙ্গে কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন। তার মতে, কর্মজীবী মা কিংবা একদম আটপৌরে গৃহিণী সবারই অধিকার রয়েছে, এ দায়িত্ব সন্তানের বাবার সঙ্গে পুরোপুরি ভাগ করে নেয়ার।

তিনি বলেন, ‘আমি ভীষণভাবে অনুভব করি, বাবা-মা দুজনকে বাচ্চা দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে হবে এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যদিও আমি যা-ই করি এর তুলনায় আমার স্ত্রীর যে ত্যাগ তার শতভাগের একাংশও করতে পারি না। প্রতি রাতে আমি টেরও পাই না, সে কতবার উঠে বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে। আমাকে নির্বিঘ্ন ঘুমে রাখার তার প্রাণান্ত চেষ্টার প্রতি আমি অকৃতজ্ঞ হই কী করে।

কর্মক্ষেত্রেও সহযোগিতা পেয়েছেন বলে সন্তানকে নিজের কাছে রেখে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন বলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সোনালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা। এ কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমি চেয়েছি আমার স্ত্রীর অফিস সময়টুকু অন্তত নির্ঝঞ্ঝাট কাটুক। বাচ্চার এক বছর বয়স ধরে আমি আমার মতো চেষ্টা করেছি। পুরুষ হয়ে অফিসে বাচ্চা নেয়া বা রাখার ক্ষেত্রে আমার বস ও সহকর্মীদের সহযোগিতা স্মরণ করতেই হবে। আমার অফিসে সর্বোচ্চ বস একজন নারী হওয়ায় হয়তো বিষয়টি আরও সহজ হয়েছে। তবে হ্যাঁ, একটি বিষয় দারুণ উপভোগ করি যখন কোনো নারী সহকর্মী এসে আমাকে জানান, তিনি তার বরকে উদাহরণ টেনে আমার গল্প করেছেন। ‘বলেছি, ভাইয়া তার মেয়েকে সারা দিন অফিস রাখেন। তাকে বলেছি, শেখো।’ এই ছোট বিষয়ে তাদের বিস্ময়কর অভিব্যক্তি দেখে ভালো লাগে।’

সন্তান মায়ের সঙ্গে কর্মস্থলে থাকার ঘটনা প্রচলিত হলেও কোনো বাবা তার সন্তানকে নিয়ে অফিসে কাজ করছেন এটা একদমই প্রচলিত না। ফলে প্রথম দিকে বিষয়টিকে অনেকেই আড়চোখে দেখতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবার ধারণা পাল্টেছে। এ ধারণাটিকে তারা গ্রহণ করা শুরু করেছেন। এ প্রসঙ্গে মনোয়ার রুবেল বলেন, একটি অতি সাধারণ অনুভূতি অন্যদের এত ছুঁয়েছে দেখে অনুপ্রাণিত হই। আমার দেখাদেখি একজন পুরুষ সহকর্মী সেদিন বললেন, তিনিও মাঝেমধ্যে অফিসে বাচ্চা নিয়ে আসার প্ল্যান করছেন। তিনি ঢেঁকুর তোলার নিয়ম শিখছেন ইউটিউবে। বাচ্চার ডায়াপার পাল্টানোর ভিডিও দেখছেন। আমি অফিসের কোণে দাঁড়িয়ে গল্প বলার ছলে বলার চেষ্টা করি বাচ্চার লালন-পালন, বাচ্চার যত্ন নেয়া একজন স্মার্ট পুরুষের লক্ষণ। প্রথম দিকে ইতস্তত করা সহকর্মীরা এখন এটা মেনে নেন। আমার মেয়েকে কোলে তুলে আদর করেন। ডায়াপার পাল্টাতে সাহায্য করেন। সব মিলে এমন পরিবর্তন সত্যিই ভালো লাগার জন্ম দেয়।


তানিয়া ওয়াহাব- এক স্বপ্নবাজ নারী উদ্যোক্তা

আপডেটেড ২১ মার্চ, ২০২৩ ১২:১৩
তানজিনা আলম

ফসিল, আরমানি, ভারসাচি, প্রাডা কিংবা গুচ্চি আন্তর্জাতিক এসব ব্র্যান্ডের লোগো বা নামের পণ্য আশপাশে দেখলেই যেন নড়েচড়ে বসি সবাই। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমন পণ্য শোভা পায় তারকা, মডেল এবং ধনী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে। কিন্তু সুখবর এই- চাহিদা মেটাতে বিদেশি এসব পণ্যের ভিড়ে দেশীয় বাজার স্বতঃস্ফূর্ত জায়গা করে নিয়ে এগিয়ে চলছে সগৌরবে।

নামিদামি এসব ব্র্যান্ডের ভিড়ে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে সাহস করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ২০০৫ সাল থেকে কাজ করছেন ‘কারিগর’ এবং ‘ট্যান’-এর উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা অংশীদার সহযোগী তানিয়া ওয়াহাব। সম্প্রতি স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখায় ৫টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেয় বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে এই সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

রাজধানীর হাজারীবাগে রয়েছে তার চামড়াজাত পণ্যের কারখানা। বর্তমানে এখানে তার নেতৃত্বে চামড়াজাত প্রায় ২৫ রকমের পণ্য নিয়ে কাজ করছেন শতাধিক কর্মী। তার স্বপ্ন এই কর্মী সংখ্যা একদিন পৌঁছাবে দশ হাজারে আর নিজের ব্র্যান্ড ‘ট্যান’ পরিচিতি পাবে আন্তর্জাতিকভাবে। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের নতুন উদ্যোগ নিয়ে জানতে চাইলে তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ‘করোনার আগে দেশের বাইরে জাপান ও ইতালিতে পণ্য সরবরাহ করলেও এখন কাজ করছি দেশের গণ্ডিতে এবং করপোরেট ক্ষেত্রে।’

বর্তমানে দেশের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করে তার প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া, বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি, ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কাজ হয়।

তানিয়া পড়াশোনা করেছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেই সুবাদেই মাথায় আসে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে কাজ করার ভাবনা। এরই ধারাবাহিকতায় উৎপাদন আর বিপণনের কাজটা শুরু করেন স্নাতক শেষবর্ষে এসে। তখন এই খাতে নারী উদ্যোক্তা না থাকলেও এখন আছেন প্রায় ৫০ জন নারী।

অনুপ্রেরণা, স্বপ্ন দেখার এবং দেখানোর এই যাত্রায় পুরস্কারের ঝুলিটাও তাই ছোট নয়। এসএমই ফাউন্ডেশনের সেরা উদ্যোক্তা পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন থেকে সেরা এসএমই নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার, ডেইলি স্টারের দেয়া আউটস্ট্যান্ডিং উইমেন অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন তিনি। চামড়াজাত পণ্যা নিয়ে আগ্রহী এবং পড়াশোনা করছেন এমন মানুষদের নিয়ে গড়ে তুলছেন লেদার ক্রাফটস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সভাপতি হিসেবে তদারকিও করছেন এটি। কারণ, দেশের এই চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা দেশে-বিদেশে বিপুল।

নিজের এবং অন্য উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এই খাতের প্রতিবন্ধকতা মনে করেন এসব পণ্যের বিপণন চ্যালেঞ্জকে। কারণ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক এই বৃহৎ বাজার খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় অনেক বেশি। তাই কাজের পরিধি আশানুরূপ হয় না।

একই সঙ্গে, ‘বাংলাদেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত নয় সংগ্রহকারী এবং ক্রেতারাও। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প খাতের যে সুনাম, চামড়াশিল্পের সেই প্রসারটা নেই। বাংলাদেশেও যে ভালোমানের ব্যাগ তৈরি হয় এবং চামড়াশিল্প, ব্যাগশিল্প, গয়নাশিল্প যে এতটা এগিয়েছে এটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই’- জানান এই নারী উদ্যোক্তা। তবে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি কারখানাগুলো প্রতিস্থাপন করা হলেও এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (বর্জ্য জল শোধন প্রক্রিয়া) যথাযথ ব্যবস্থা হয়নি এখনো। যা বাড়াচ্ছে বৈশ্বিক পরিবেশের ঝুঁকি এবং বাইরের দেশগুলোও তাই দেশের প্রভাবশালী এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।

চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহার-উপযোগিতা, দীর্ঘস্থায়ীত্ব, টেকসই নিশ্চয়তা নিয়ে দ্রুত বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ নয় বলে বুটিক, ফ্যাশন, লাইফস্টাইলের অন্যান্য অঙ্গনের মতো চামড়াজাত পণ্যের প্রদর্শনীর সুযোগ কম- তাই এসব পণ্য নিয়ে মানুষ জানতে পারছে খুব কম।

তবে করোনা-পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়াতে আসন্ন ঈদ আর উৎসবে দেশীয় সব শিল্পের প্রতি যত্নবান হবেন- সবারই এমনটাই প্রত্যাশা।


বেঁচে যাওয়া খাবার সংরক্ষণের নিয়ম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চলতি হাওয়া ডেস্ক

পৃথিবীর এক প্রান্তে খাবারের প্রাচুর্যতা মানে অন্য প্রান্তে কেউ একজন না খেয়ে রাত অতিবাহিত করছে। তাই প্রতি বেলা নিজের পাতে উঠে আসা খাবার যাতে একটুও নষ্ট না হয়, সেদিকে সজাগ থাকার সময় এসেছে। দিন শেষে বেঁচে যাওয়া বাড়তি খাবার নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় অনেককেই। সেসব ফেলে না দিয়ে সমাধান একটাই আর তা হচ্ছে সংরক্ষণ করা। প্রতিদিনের বেঁচে যাওয়া খাবার কীভাবে কতদিন সংরক্ষণ করা যাবে তা জেনে নিন—

  • এয়ার টাইট কনটেইনার বা বায়ুরোধী পাত্রে বেঁচে যাওয়া খাবার সংরক্ষণ করতে পারেন। বিশেষ করে ফ্রিজে রাখার সময় এমনভাবে রাখবেন যাতে পাত্র থেকে খাবার, ঝোল কোনোভাবেই না পড়ে যায় এবং সব সময় খেয়াল রাখবেন লেফটওভার বা বেঁচে যাওয়া খাবার পুনরায় খাওয়ার সময় ভালোভাবে গরম করে কিংবা পরিবেশন উপযোগী করে তবেই পরিবেশন করার।
  • ‘ফার্স্ট ইন, ফার্স্ট আউট’ এই নীতিতে বিশ্বাসী হোন। অর্থাৎ ফ্রিজে যে খাবার প্রথমে প্রবেশ করাবেন তা আগে এবং যে খাবার পরে রাখবেন তা পরে গ্রহণ করার অভ্যাস। এতে খাবার অনেক পুরোনো হবে না যেমন, তেমনি খাবারের গুনগত মানও নষ্ট হবে না।
  • বেঁচে যাওয়া খাবার রাখার ক্ষেত্রে ছোট, সমতল পাত্র বা বাক্স বাছাই করুন। এতে খাবার দ্রুত ঠাণ্ডা হবে।
  • কিছু খাবার কখনোই ফ্রিজে সংরক্ষণ করা উচিত নয়। যার মধ্যে রয়েছে টুনা মাছ, স্যুপ, টিনজাত খাবার ইত্যাদি। টিনজাত ক্যান একবার খোলা হলে রিমের অবশিষ্ট ধাতু খাবারে প্রবেশ করতে পারে এবং ধাতব স্বাদ ছড়িয়ে দিতে পারে।
  • আমেরিকান কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, কোনো খাবারই তিন থেকে পাঁচ দিনের বেশি ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এর বেশি দিন বেঁচে যাওয়া খাবার সংরক্ষণ করা হলে গুণগত মান বিলুপ্ত হতে পারে।


ইনডোর প্ল্যান্টের যত্নআত্তি

ছবি: আফরোজা আক্তার ইভার বাগানের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান

দুচোখ একটু সবুজ খুঁজে বেড়ায়। অথচ চোখ মেললেই দেখা যায় সারি সারি দালানকোঠা। সবুজের সান্নিধ্য পাওয়া তাই কঠিন বটে। কংক্রিটের এ শহরে সবুজের অভাব মেটাতে অনেকেই এখন ছোট্ট ফ্ল্যাট বাসাতেও রাখছেন নানা রকম ইনডোর প্ল্যান্ট। সবুজের অভাব তো মিটছেই, সেই সঙ্গে ঘরের চেহারাতেও সৌন্দর্য যোগ হচ্ছে। ঘরে ইনডোর প্ল্যান্ট রাখার ব্যাপারে যারা একদমই নতুন, তারা জেনে নিন ইনডোর প্ল্যান্টের আদ্যোপান্ত—

আলো: ঘরে আলো একটু কম আসে, তাহলে জিজি প্ল্যান্ট, সবুজ ন্সেক প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট, ইঞ্চ, ফিলোডেনড্রোন, জেইড, ল্যাকি বাম্বু, অ্যাগ্নোনিমা, ড্রাসিনা ইত্যাদি গাছ লাগাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সপ্তাহে এক দিন গাছগুলোকে কিছুটা সময়ের জন্য রোদে রাখা যেতে পারে। অতিরিক্ত আলো অনেক ইনডোর প্ল্যান্ট সহ্য করতে পারে না, পাতা পুড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে শেডের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

পানি: মনে রাখতে হবে যখন মাটি শুকিয়ে যাবে, তখন পানি দিতে হবে। পানি বেশি দিলে গাছ খুব ভালো হবে ব্যাপারটা একদমই তা নয়। বেশি পানি দিলে গাছের গোড়া পচে যাবে। তবে ফিটোনিয়া, সাকুলেন্ট এরা পাতায় পানি ধরে রাখে। এদের কম পানি দিলেও চলে। কোকোপিট, বালু এরা পানি ধরে রাখতে পারে।

গাছ কিনেই লাগাতে নেই: ইনডোর প্ল্যান্ট কিনেই লাগাতে নেই। দিন পনেরো রেখে দিন। নতুবা গাছ মারা যেতে পারে। যেকোনো গাছকেই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার সময়টুকু দিতে হয়। ছত্রাকনাশক ব্যবহার করা ভালো। সে ক্ষেত্রে ম্যানসার, মেটারিল সহজলভ্য দুটি ছত্রাকনাশক।

মাটি তৈরি: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মাটিতে পানি নিষ্কাশনের উপাদান থাকে। আবার প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণও রয়েছে। এ দুই উপাদানের মিশ্রণে উত্তম মাটি/মিডিয়া তৈরি হবে। ২৫ শতাংশ বাগানের ঝুরঝুরে মাটি, ২৫ শতাংশ কেঁচো সার, ২৫ শতাংশ ককোপিট, ২৫ শতাংশ সিলেটি মোটা বালু। এই মিশ্রণ সহজ, বেশ জনপ্রিয়। এর সংঙ্গে হাড়ের গুঁড়া, একটু পটাশ, একটু ছত্রাকনাশক দেয়া উত্তম। ছত্রাকনাশক মাটিকে ক্ষতিকর জীবাণুমুক্ত রাখবে। মাটি তৈরি করে কিছুদিন রোদে রাখুন। মাটিতে কিছু মাইক্রো নিউটেন্ড থাকে, যা গাছ গ্রহণ করতে পারে। মাটির জায়গায় বালু দিলে এই উপকারটুকু হবে না। বালু ধুয়ে শুকিয়ে নেয়া ভালো। মাটি ঝুরঝুরে হালকা হতে হবে।

কীভাবে কোথায় রাখবেন: বারান্দায় গ্রিলের সঙ্গে অনেকেই লাগোয়া তাক করে নেন। যেটা ভেতরের অংশে থাকে । সেখানে টব রাখেন। আবার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলন্ত টবও খারাপ লাগবে না। বাজারে স্টিলের, কাঠের, রডের স্ট্যান্ড কিনতে পাওয়া যায় নানা রকম ডিজাইনের। এ রকম স্ট্যান্ডে টব রাখা যায়। যদি বাজেট কম থাকে সে ক্ষেত্রে ফ্লোরের ওপর লাইন ধরে টব রাখতে পারেন। কৃত্রিম ঘাস কিনতে পাওয়া যায়। গাছের সঙ্গে বেশ মানাবে। ফ্লোরটা এমন ঘাসে ঢেকে দিতে পারেন। টব কীভাবে সাজিয়েছেন, এসবও কিন্তু সৌন্দর্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। অনেক সুন্দর গাছ অথচ এলোমেলোভাবে রাখা, উপযুক্ত পটে রাখলেন না, তাহলে কিন্তু পুরো সৌন্দর্যই ম্লান হবে।

অল্প যত্নের ইনডোর প্ল্যান্ট: যারা প্রথম প্রথম ইনডোর প্ল্যান্ট লাগাবেন তারা লাকি বাম্বু, জেজে প্ল্যান্ট, মানি প্ল্যান্ট বেছে নিন। অভিজ্ঞতা হোক, তারপর না হয় ধীরে ধীরে বাড়াবেন। অতি যত্নে ইনডোর প্ল্যান্ট বেশি মারা যায়- এমনটাই অভিজ্ঞরা বলেন। ইনডোর প্ল্যান্ট এক্সপার্ট সুষমা ইকবালের মতে, শুরুটা অল্প গাছ দিয়ে করা ভালো।

টবের রকমফের: মাটি, সিরামিক, প্ল্যাস্টিক টব কিনতে পাওয়া যায়। গাছ অনুযায়ী টব পছন্দ করতে হবে। গাছ ছোট অথচ অনেক বড় টব দেখতে যেমন ভালো লাগবে না, তেমনি বড় গাছ ছোট টব হলেও ভালো লাগবে না। তাই গাছ বুঝে টব বাছাই করুন। কেউ চাইলে একরঙা টব কিনে নিজেও কালার করে নিতে পারেন। টব হালকা হলেই ভালো, এতে স্থানান্তরে সুবিধা।

খোঁজখবর: পৃথিবীটা এখন হাতের মুঠোয়। মোবাইলের স্ত্রিনে হাত রাখলেই হলো। টব, স্ট্যান্ড, গাছ আর যা কিছু চাই সবই আপনি অনলাইনে কিনতে পারবেন। তবে দেখে কিনতে চাইলে যেতে পারেন নার্সারিতে। ঢাকার আগারগাঁও, শাহবাগ, মিরপুর-১০, মিরপুর-১, কাকলী মোড়সহ অনেক জায়গায় নার্সারি রয়েছে।


ফ্যাশন আর স্বাচ্ছন্দ্যে টোট ব্যাগ

তরুণ-তরুণীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টোট ব্যাগ
আপডেটেড ২০ মার্চ, ২০২৩ ১৫:১৪
মুনিরা পৌষি

প্রয়োজনীয়তার পাশাপাশি ব্যাগ হচ্ছে ফ্যাশন অনুষঙ্গ। অনেকের তো ব্যাগের প্রতি রয়েছে বিশেষ আকর্ষণ। অনেকটা এমন যে পোশাক সাদামাটা হোক, ব্যাগ হওয়া চাই নজরকাড়া। পেশা ও ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়ে সবাই বেছে নেন পছন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যাগ। এখন তরুণ-তরুণীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে টোট ব্যাগ।

টোট ব্যাগ আকারে বড় হয় এবং হাতল হয় মাঝারি থেকে বড়। এই ব্যাগের আকার চতুর্ভুজ, ত্রিভুজ, গোলাকার আবার অর্ধবৃত্তাকার হয়ে থাকে। টোট ব্যাগ এখন বেশ সাড়া জাগালেও এর ব্যবহার কিন্তু বহু আগে থেকে। ১৮ শতকের দিকে স্কুলের মাস্টারমশাই কিংবা সুতি শাড়ি পরে দুই বেণি করা চটপটে কিশোরীর কাঁধে ঝুলতে দেখা যেত ওভারসাইজড এসব টোট ব্যাগ। এরপর বাজারে আসে আরও হরেক রকমের ব্র‍্যান্ড ও নকশার ব্যাগ। যার ফলে টোট ব্যাগ অনেকটা হারিয়ে যায়। কিন্তু প্রতিটি হারিয়ে যাওয়া পুরাতন ফ্যাশনই বারবার ফিরে এসেছে। বলা চলে হারিয়ে যাওয়া এই অনুষঙ্গটিও ফিরে এসেছে সবার কাঁধে কাঁধে।

চামড়া, ডেনিম, পাট দিয়ে টোট ব্যাগ তৈরি করা হয়। টোট ব্যাগকে আকর্ষণীয় করার জন্য এর ওপর নানা ধরনের নকশা করা হয়ে থাকে। সেই সব নকশা করা হয় রং-তুলি দিয়ে হাতে কিংবা স্ক্রিন প্রিন্টের মাধ্যমে। টোট ব্যাগ মূলত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে নজরকাড়া সব নকশার জন্য। কখনো ব্যাগের ওপর করা হচ্ছে রিকশা প্রিন্ট, কখনো কার্টুন, লতাপাতা কিংবা পছন্দের গান বা কবিতার লাইন। এ ছাড়া জামদানি মোটিফ ও নকশি কাঁথা ডিজাইনের টোট ব্যাগও দেখা যায়। অনেক সময় টোট ব্যাগের ওপর সুই-সুতার কাজ করে ডিজাইন করা হয়ে থাকে। নিজের সৃজনশীলতার মাধ্যমে বিক্রেতারা ক্রেতাদের কাছে টোট ব্যাগকে আকর্ষণীয় করে তুলছেন। এ ছাড়া কিছু কিছু জায়গায় ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন কাস্টমাইজ করে নিতে পারছেন। টোট ব্যাগের আকার ও ডিজাইন অনুযায়ী নারী-পুরুষ উভয়ই ব্যবহার করতে পারেন। টোট ব্যাগ হরেক রঙের হলেও সাদা আর কালো রঙের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কারণ এই দুটি রং যেকোনো পোশাকের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায়। বেশির ভাগ টোট ব্যাগে জিপার থাকে না কিন্তু ব্যবহারের সুবিধার কথা চিন্তা করে জিপার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

নিত্যদিনের ব্যবহারের জন্য টোট ব্যাগ বেশ উপকারী। টোট ব্যাগ সাইজে বড় হওয়ার জন্য যেকোনো জিনিস খুব সহজে বহন করা যায়। অফিস ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য পেয়েছে টোট ব্যাগ। যার মধ্যে বই-খাতা, পানির বোতল, টিফিন বক্স, ফাইল ইত্যাদি খুব আরামে বহন করা যায়। যারা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন তারাও হাতে রাখতে পারেন টোট ব্যাগ। এতে জরুরি ওষুধ, ফোনের চার্জার, নোট বুকসহ সব দরকারী জিনিস বহন করা যেতে পারে। অনেক টোট ব্যাগের বাইরে কিংবা ভেতরে পকেট দেয়া হয়; এতে চাবি, কলম ইত্যাদি খুঁটিনাটি রাখা যায়। মেয়েদের সঙ্গে ছেলেদের কাছেও বেশ জনপ্রিয় টোট ব্যাগ। ছেলেরা যাত্রাপথে বেশি টোট ব্যাগ ব্যবহার করে থাকে। একটি টোটে ব্যাগের মধ্যে সব প্রয়োজনীয় জিনিস বহন করা যেতে পারে। এক কথায় যারা আরাম ও ফ্যাশন দুটোই চায় তাদের জন্য টোট ব্যাগ সবচেয়ে উপযুক্ত। টোট ব্যাগের আরেকটা সুবিধা হলো- এটা নোংরা হয়ে গেলে পরিষ্কার করার জন্য ধোয়া যায়, এতে ব্যাগের কোনো ক্ষতি হয় না।

টোট ব্যাগ যেকোনো পোশাকের সঙ্গে নেয়া গেলেও কুর্তি, টি-শার্ট এবং শাড়ির সঙ্গে বেশ মানানসই। এখন লম্বা কামিজ এবং ওভারসাইজ পোশাকের খুব চল। আর এসব পোশাকের সঙ্গে টোট ব্যাগ নিয়ে নিজেকে আরও বেশি ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। এ ছাড়া অনেক ছেলেরা পাঞ্জাবির সঙ্গে টোট ব্যাগ ব্যবহার করে থাকেন। যেকোনো সাজের সঙ্গে টোট ব্যাগ দিতে পারে নান্দনিকতার স্পর্শ। কিন্তু টোট ব্যাগ সাদামাটা হওয়ার কারণে খুব জমকালো আয়োজন অনেকে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তাই টোট ব্যাগ এখনো নিত্যদিনের ব্যবহার ও দেশীয় পোশাকের মধ্যেই আটকে রয়েছে। কিন্তু এখন অনেকেই ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে নান্দনিক সব ডিজাইনের টোট ব্যাগ ব্যবহার করছেন।

টোট ব্যাগের ব্যবহার অনেকটা কমে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কদর বেড়ে গিয়েছে সবার মাঝে। তাই সবার চাহিদার কথা চিন্তা করে দেশের ফ্যাশন হাউসগুলো তুলছে হরেক রকম ডিজাইনের টোট ব্যাগ। কোনো কোনো ফ্যাশন হাউস পোশাকের নকশার সঙ্গে মিল রেখে টোট ব্যাগ ডিজাইন করছে। আড়ং, দেশাল, যাত্রা, কইন্যা, পটের বিবিসহ আরও অনেক দেশীয় ব্র‍্যান্ড পাওয়া যাচ্ছে এসব ফ্যাশন হাউসগুলোতে। কিন্তু টোট ব্যাগের সবচেয়ে বেশি দেখা মিলে অনলাইনভিত্তিক পেইজগুলোতে। যারা হ্যান্ডপেইন্ট করতে ভালোবাসেন অনেকে টোট ব্যাগের ওপর নিজের মনের মতো নকশা করে অনলাইনের মাধ্যমে সবার হাতে পৌঁছে দিচ্ছেন। টোট ব্যাগ সবার কাছে জনপ্রিয় হওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে এর দাম তুলনামূলক হাতের নাগালে। ব্র‍্যান্ড ও নকশার ওপর নির্ভর করে ৩৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা মধ্যে পাওয়া যায় টোট ব্যাগ।


banner close