শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ঈশ্বরদীতে আখের সঙ্গে ‘সাথি ফসল’ চাষে সম্ভাবনা

আপডেটেড
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৮:৩৯
মিশুক প্রধান
প্রকাশিত
মিশুক প্রধান
প্রকাশিত : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০৮:০০

আখ একটি দীর্ঘমেয়াদি ফসল। তাৎক্ষণিক অর্থ না আসায় কৃষকরা তাই দিন দিন আখ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলেন। কৃষকদের জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের সহায়তাকল্পে ঈশ্বরদীর বাংলাদেশ সুগারক্রপ গবেষণা ইনস্টিটিউট গত ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে শুরু করেছে একটি প্রকল্পের কার্যক্রম। তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের নাম ‘আখের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে ডাল, মসলা ও সবজিজাতীয় ফসল উৎপাদন প্রকল্প।’ এই প্রকল্পের কারণে কৃষকরা সাথি ফসল চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে পাশাপাশি আখ শিল্পকে নিয়ে আবার নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। কৃষকদের মাঝে প্রকল্পটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

সুগার ক্রপ রিসার্চ ইনস্টিটিউটসংশ্লিষ্টরা জানান, আখ বাংলাদেশের খাদ্য ও শিল্পে ব্যবহার্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থকরী ফসল, যা জমিতে প্রায় ১৩-১৪ মাস থাকে। উপরন্তু তুলনামূলকভাবে আখের মূল্য না বাড়ার কারণে কৃষকরা আখ চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। ফলে দিন দিন আখ চাষের জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে সার্বিকভাবে দেশের চিনিশিল্পের ওপরে। তাই আখ ফসলকে এ বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য আখের সঙ্গে আরেকটি স্বল্পমেয়াদি ফসল চাষ করে কৃষক ও এই শিল্পকে রক্ষা করার জন্য এই প্রকল্প গঠন করা হয়েছে। আখের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে মটরশুঁটি, ছোলা, মসুর, মুগ, আলু, কপি, মসলাজাতীয় ফসলের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন চাষ করা হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ড. আবু তাহের সোহেল বলেন, ১৫টি সুগার মিল এলাকায় এই প্রকল্পের কার্যক্রম চলছে । ২০২২-২৩ মৌসুমে প্রায় এক হাজার কৃষকের জমিতে প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। প্লটগুলোতে কৃষকরা যথেষ্ট সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আগামীতেও এই প্রকল্পের ধারাবাহিকতা রাখার চেষ্টা করব।

প্রতি প্লটে কেমন খরচ হয় এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রকল্প পরিচালক জানান, এলাকা অনুযায়ী আবহাওয়া ও কৃষকের চাহিদা মোতাবেক তার জমিতে সাথি ফসল আবাদের ব্যবস্থা করা হয়। ভিন্নতা বুঝে কোথাও ডাল, কোথাও সবজি, কোথাও মসলাজাতীয় ফসল চাষের ব্যবস্থা করা হয়। বীজের মূল্যের ওঠানামা বা কমবেশি থাকায় একেক প্লটে একেক বাজেট হয়। এক বিঘা জমি চাষের জন্য একজন কৃষককে এই সহায়তা দেয়া হয়ে থাকে। কৃষকদের নগদ টাকা দেয়া হয় না। তবে যদি সে নিজে সেচ দিতে চায় সে ক্ষেত্রে তাকে সেচের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থটি আমরা দিয়ে দিই। সার, কীটনাশক, বীজ, মসলাসহ চাষাবাদ সামগ্রী আলাদা আলাদাভাবে ক্রয় করে কৃষককে সরবরাহ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে কৃষক নিজেই শ্রমিকের কাজটা করতে চান। সে ক্ষেত্রে কীটনাশক প্রয়োগ, সার প্রয়োগ, নালা তৈরি, ফসল সংগ্রহে শ্রমিকের মজুরি বাবদ যেই অর্থটি বরাদ্দ করা হয় সেটি কৃষককে দিয়ে দিই। সাথি ফসল চাষে কৃষককে সব সামগ্রী সরবরাহ করা এই প্রকল্পের কাজ। নেট, বাঁশ, সাইনবোর্ডসহ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সব কিছুই কৃষককে সরবরাহ করতে হয়। বিএসআরআই বিজ্ঞানীদের সমন্বয়ে প্রতিটি প্লটের পৃথক কমিটি রয়েছে। তারা নিজ নিজ প্লটে অর্পিত দায়িত্ব পালন ও খরচাদি করে থাকেন।

উপকারভোগী কৃষকদের সঙ্গে আলাপ করলে তারা এই প্রকল্পে যথেষ্ট উপকারী হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের চকশ্রীরামপুর গ্রামের কৃষক আবু মোস্তফা বলেন, ‘আমি ১ বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে আখের সঙ্গে সাথি ফসল রসুন ও মুগডাল চাষ করেছি। গত বছর আমার এক পরিচিত জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছিলেন। তার ৩০ মণ রসুন হয়েছিল, বিক্রি করেছিলেন ৫৫ হাজার টাকা। এবার তার চেয়ে আমি বেশি লাভবান হতে পারব বলে আশা করছি।’

দাশুড়িয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামের কৃষক রহিমা খাতুন বলেন, এ বছর আমি আখের সঙ্গে পেঁয়াজ ও মুগডাল করেছি। সব খরচ এই প্রকল্প থেকে দেয়া হয়েছে। ফসলও ভালো হয়েছে। আমি এবার ভালোই লাভবান হতে পারব।

মুলাডুলি ইউনিয়নের কৃষক নুরুজ্জামান ফারুক বলেন, ‘আমি ১ বিঘা জমিতে বিএসআরআই আখ-৪৬ জাতের সঙ্গে পেঁয়াজ ও মুগডাল চাষ করেছি। গত বছর আমার এক ভাই এই সুবিধা পেয়েছিলেন। তিনি ৮০০০টি চিবিয়ে খাওয়া আখ ১ লাখ ২০ হাজার টাকায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছিল। সাথি ফসলে শুধু রসুন করলেও সেখান থেকেও প্রায় ৪৫ হাজার টাকা এসেছিল। এ বছর আমি সেই সুযোগ পেয়েছি। দেখা যাক কী হয়। তবে তার চাইতে আমি বেশি লাভ আশা করছি।

দাশুড়িয়া ইউনিয়নের মাড়মী গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি আখের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে আলু ও মুগডাল করেছি। গত বছরই এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। এখানকার একজন পেঁয়াজ চাষ করে প্রায় ৫০ মণ পেঁয়াজ পেয়েছিলেন। হাজার টাকা মণ বাজারমূল্য ছিল। প্রায় অর্ধ লাথ টাকার উপরে বিক্রি হয়েছিল। ইনশাল্লাহ আমার এরচেয়ে বেশি লাভ হবে। এ বছর আখেরও বাজার ভালো, সেখান থেকেও আমার ভালো লাভ হবে বলে আমি আশা করি।

বিএসআরআইর মহাপরিচালক ড. মো. ওমর আলী বলেন, আখ চাষে দুই সারির মধ্যবর্তী স্থানের ফাঁকা জমি অব্যবহৃত হয়ে পড়ে থাকে। ওই ফাঁকা জমিতে সাথি ফসল হিসেবে ডাল, মসলা, সবজি চাষ করিয়ে কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান করানো হচ্ছে এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য। প্রথম বছর সফলতার সঙ্গে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় বছরে তারই ধারাবাহিকতায় প্লট স্থাপনের কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়লে কৃষকরা অধিকতর উপকৃত হতেন।

লেখক: প্রতিনিধি, ঈশ্বরদী (পাবনা)


ফেনীতে টপটেন মার্ট উদ্বোধন করলেন তামিম ইকবাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতকাহন প্রতিবেদক

দেশের অন্যতম লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড টপটেন মার্ট এবার চালু হলো ফেনীতে। গত ২৬ মার্চ শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ্ কায়সার সড়কে কাজী প্যালেসে নতুন শো রুমটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম তরুণ তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

উদ্বোধন শেষে তামিম ইকবাল বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে এই ধরনের ব্র্যান্ডের জিনস প্যান্ট টি-শাট পছন্দ করি। আশা করি তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হবে। ফেনী শহরে আসা হয়নি, এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেনী পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী, টপটেন মার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

টপটেন মার্টের এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে ছেলে ও মেয়েদের সম্পূর্ণ লাইফস্টাইল আউটফিট। ছেলেদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, স্যুট ব্লেজার জুতা ইত্যাদি। রয়েছে মেয়েদের শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রি পিস, টপস, অর্নামেন্টস, জুতা ইত্যাদি। ব্রাইডাল কালেকশনে রয়েছে শেরওয়ানি ও লেহেঙ্গা ইত্যাদি। মেয়ে বা ছেলেদের পোশাকের লাক্সারি কালেকশন রয়েছে এখানে। সবার জন্য পছন্দের জুতাও কেনা যাবে এখানে।

টপটেন মার্টের যেকোনো স্টোর থেকে পণ্য কিনলে মিলবে ৭ শতাংশ ছাড়। তবে অনলাইন কেনা এই ছাড় মিলবে না। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই ছাড় চলবে। তবে কসমেটিক্স ও প্রেসিডেন্ট ব্রান্ডের পণ্যে থাকছে না এই ছাড়।


দেশীয় আয়োজনে ঈদ আনন্দ

ছবি: বিশ্বরঙ
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৪ ২০:২৮
মইনুল হক রোজ

ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দের বেশ বড় একটা অংশজুড়েই থাকে বাহারি নকশার নতুন পোশাক। তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পছন্দের কথা বিবেচনায় রেখে আয়োজন করে থাকে নানা ডিজাইনের পোশাক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের। সাতকাহনের ঈদ আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে রইল বেশ কিছু ক্রেতাপ্রিয় ফ্যাশন হাউসের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।

ঈদ আয়োজনে বিশ্বরঙ

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ উৎসবের এই আনন্দের রঙে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বরাবরের মতোই দেশীয় কাপড় ও উপকরণ ব্যবহার করে ‘বিশ্বরঙ’ এবারও ঈদুল ফিতরের আয়োজনে পোশাকে ট্রেন্ডি এবং ট্র্যাডিশনাল লুকের নান্দনিক উপস্থাপন করেছে। এবারের ঈদ আয়োজন সাজানো হয়েছে কালের আবর্তে প্রায় হারিয়ে যাওয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ব্যবহৃত নকশার অনুপ্রেরণায়।

দেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক কাপড় যেমন- সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিলেন, কাতান, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করেছে, রঙের ব্যবহারেও কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি রঙেও ম্যাচিউরড টোনের পরিমিত ব্যবহার লক্ষণীয়। কাজের মাধ্যম হিসেবে রয়েছে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারি, কম্পিউটার এমব্রয়ডারি, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, কারচুপি, নকশিকাঁথা, জারদৌসীসহ মিশ্র মাধ্যমের নিজস্ব বিভিন্ন কৌশল।

এবারের ঈদ আয়োজনে ‘বিশ্বরঙ’ প্রতিটি শ্রেণির মানুষের জন্যই ভিন্ন কিছু যোগ করেছে। বাচ্চাদের জন্য এনেছে নান্দনিক সব কালেকশন, সেই সঙ্গে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নারীদের জন্য আছে ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া।

‘বিশ্বরঙ’-এর সব শোরুম ছাড়াও অনলাইন শপে ঈদ আয়োজনের পোশাক পাওয়া যাবে।

এই ঈদে আজরাখ প্রিন্টে সাদাকালো

সাদাকালো প্রতিবছরই যেকোনো উৎসবে তার ক্রেতা সুহৃদের জন্য ভিন্ন মাত্রায় বিষয়ভিত্তিক নতুন নতুন কাজ নিয়ে আসে। এ বছরও তার ভিন্নতা হয়নি। সাদাকালো এবার সিন্ধি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক ‘আজরাখ’ প্রিন্ট নিয়ে কাজ করেছে।

ছবি: সাদাকালো

আজরাখ প্রিন্ট হলো এক ধরনের টেক্সটাইল ব্লকপ্রিন্টিং, যা ভারতের কচ্ছ জেলার আজরাখপুর গ্রামে পাওয়া যায়। এই প্রিন্টটি সাধারণত একটি জাল বা ওয়েব-লাইক ডিজাইন হয়। আজরাখ প্রিন্ট তৈরি করতে প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে বিভিন্ন ধাপে ডাইং এবং রেজিস্ট প্রিন্টিং করা হয়।

এবার সাদাকালো এই প্রিন্টে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করতে স্ক্রিন, ব্লক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, মেয়েদের টপস্, কুর্তিসহ শিশুদের পোশাক তৈরি করেছে।

দেশালের ঈদ কালেকশন

বাংলাদেশের প্রকৃতি ও দেশীয় সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত নানা রকম রং ও মোটিফের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে দেশালের এবারের ঈদ কালেকশন। বছরের সবচেয়ে বড় উৎসবকে সামনে রেখে এই কালেকশনে ব্র্যান্ডটি নিয়ে এসেছে ৪০০-রও বেশি ডিজাইন।

এবারের ঈদের সময়ের গরম আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে দেশালের ঈদ কালেকশনে প্রাধান্য পেয়েছে সুতির পোশাক। এ ছাড়া ঈদের আভিজাত্য ও জাঁকজমক উৎসবের বিষয়টি মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে সিল্ক শাড়ি, এন্ডি সিল্কের শাড়ি ও পাঞ্জাবি। ডিজাইনের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখায় হয়েছে তরুণদের পছন্দের বিষয়টি, তৈরি করা হয়েছে ডিজিটাল প্রিন্টের বিভিন্ন কালেকশন।

ছবি: দেশাল

তবে পরিবারের সব বয়সি নারী-পুরুষের জন্যই বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক আছে এবারের কালেকশনে। কটন-ভেজিটেবল ডাই-হ্যান্ড অ্যাম্ব্রডারি শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, টপস্, পঞ্চ, টু পিস, কাফতান, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, ছোটদের ফ্রক, পঞ্চ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া মিলিয়ে আছে চার শতাধিকেরও বেশি ডিজাইন।

দেশালের প্রতিটি কালেকশনের মতোই এবারও ডিজাইনের ক্ষেত্রে দেশীয় মোটিফ প্রাধান্য পেয়েছে। সারা দেশজুড়ে দেশালের ১২টি আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে নতুন এই কালেকশন। এ ছাড়া দেশাল অনলাইনে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই পণ্য অর্ডার করতে পারবেন ক্রেতারা।

ইজির ঈদ আয়োজন

পাঞ্জাবি হচ্ছে ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ। আনন্দপ্রিয় ও ফ্যাশন সচেতন তরুণদের ঈদকে আরও রঙিন করে তুলতে জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউস ইজি তাদের ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার ঘটিয়েছে। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সব সময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে রং ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে।

ছেলেদের ফ্যাশনে এক্সক্লুসিভ কালেকশনে বরবারই এক ধাপ এগিয়ে ইজি। তারই ধারবাহিকতায় ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের শার্টের সন্নিবেশ ঘটিয়েছে তারা। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সব সময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে রং ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের শার্টে।

ছবি: ইজি

সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে এবারের ঈদে বাহারি সব ডিজাইন কালেকশন রয়েছে ইজি শোরুমগুলোতে। পাঞ্জাবি-শার্টের পাশাপাশি থাকছে নতুন ডিজাইনের টি-শার্ট, পলো শার্ট, ফরমাল শার্ট, ক্যজুয়াল শার্ট, কটি, কাবলি পাঞ্জাবি, প্যান্ট ইত্যাদি।

ইজির স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার তৌহিদ চৌধুরী বলেন, শুধু মুনাফা নয় কাস্টমারদের সেবা দেওয়া মূল লক্ষ্য। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের সব জেলাতেই ইজির শো-রুম রয়েছে এবং সবগুলোতেই ঈদের সব কালেকশন পাওয়া যাবে।

আর্টিজ্যানের এক্সক্লুসিভ ঈদ কালেকশন

আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্যাশন ব্র্যান্ড আর্টিজ্যান এনেছে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট, পলো শার্ট ও টি-শার্ট। এ সময়ের আবহাওয়া উপযোগী কালারফুল ডিজাইনের এসব কালেকশন তৈরি করা হয়েছে শতভাগ সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে। কাটিং ও প্যাটার্নে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য।

ছবি: আর্টিজ্যানে

ফ্যাশন ডিজাইনার ও আর্টিজ্যানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হোসাইন বলেন, এবারের ঈদ উদযাপন হবে বসন্তের শেষ দিকে। এর পরই গ্রীষ্মের শুরু। তাই সবদিক বিবেচনা করেই এবারের ঈদ পোশাকের ডিজাইন, কালার ও কাপড় নির্বাচন করা হয়েছে। আর্টিজ্যানের এসব পোশাক কেনা যাবে পাইকারি ও খুচরা। ক্রেতাদের জন্য আর্টিজ্যানের আছে বেশ কয়েকটি শোরুম।

ঈদে বালুচর-এর পাঞ্জাবি

বালুচর ফ্যাশন হাউস ঈদের জন্য নিয়ে এনেছে নতুন নতুন ডিজাইনের নান্দনিক সব পাঞ্জাবি, কুর্তা ও কটি। সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি এসব পাঞ্জাবি ও কুর্তার ডিজাইনে আছে তারুণ্যের আমেজ। বালুচর কাপড়ে রয়েছে সুতি, জাকুয়ার্ড, চিকেন কারী, রিমি কটন, শাহি সিল্ক, চিকুয়েন্স, ব্যাম সিল্ক, ভয়েল, এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট, হাতের কাজসহ নানা মাধ্যমে। রঙেও আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। এ ছাড়া কাটিংয়েও আছে নতুনত্ব।

ছবি: বালুচর

বালুচর ফ্যাশন হাউসের সঞ্চালক শাহিন চৌধুরী বলেন, এই ঈদে যেহেতু অনেক গরম থাকবে তাই ছেলেদের পাঞ্জাবিতে কটনের মধ্যেই হালকা কালারের রং নির্বাচন করেছি, এর পাশাপাশি ডিজাইনের ক্ষেত্রে সিম্পল কাজকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ঈদে প্রিন্টের দাপট কিছুটা মলিন হবে, এক রঙের কাপড়ে নতুনত্ব আসবে, থাকবে কাটিং আর প্যাটার্নে ভেরিয়েশন, সেমি লং প্যাটার্ন তার জায়গা ধরে রাখবে, ফিউশনধর্মী পাঞ্জাবিতেও থাকবে ডিজাইনে নতুনত্ব।

নতুন ডিজাইনের নান্দনিক সব পাঞ্জাবি কেনা যাবে খুচরা ও পাইকারি ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলা ও তৃতীয় তলার বালুচরের শোরুম থেকে।

বার্ডস আইয়ে ঈদ পাঞ্জাবি সমাহার

পাঞ্জাবিপ্রিয় মানুষের রুচি ও বৈচিত্র্য বিবেচনা করে বাহারি রঙের নান্দনিক ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউস বার্ডস আই। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসটি তাদের শোরুমে এনেছে বিভিন্ন মোটিফের পাঞ্জাবি। এ ক্ষেত্রে তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ফ্যাশনেবল তরুণদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়েছে। আর পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে আরামদায়ক কাপড়কেই প্রাধান্য দিয়েছে বার্ডস আই।

ছবি: বার্ডস আই

ঈদ উপলক্ষে তাদের প্রতিটি আউটলেটেই নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পাঞ্জাবি ছাড়াও তাদের কালেকশনে আরও রয়েছে বাহারি ডিজাইনের সব টি-শার্ট, পলো টি শার্ট, পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট ইত্যাদি। চায়না, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশি কাপড়ের তৈরি শত শত ডিজাইনের এসব পোশাক সারা দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় চলছে।

কারুপল্লীতে ঈদ সমাহার

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র কারুপল্লী এনেছে ঈদের বর্ণিল পোশাক। নিজস্ব ডিজাইনের এসব পোশাকের রঙে ও নকশায় রয়েছে ঈদের নান্দনিক আমেজ। সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি করা হয়েছে এসব পোশাক। এর মধ্যে আছে তাঁতের সুতি শাড়ি, জামদানি শাড়ি, বেনারসি শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শার্ট, পাঞ্জাবি এবং শিশুদের পোশাক।

ছবি: কারুপল্লী

বিভিন্ন প্রিন্টসহ নানা ধরনের হাতের কাজের মাধ্যমে নকশা করা এসব পোশাক। এ ছাড়া হস্ত ও কুটির শিল্পের প্রতিষ্ঠান করুপল্লীতে রয়েছে গ্রামীণ নারীদের তৈরি দেশীয় রকমারি গহনা, উপহার ও নানা ধরনের হস্তশিল্প সামগ্রী। কারুপল্লীর এসব পোশাক ও পণ্যের দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালেই রয়েছে।

ঈদে মেঘ

ফ্যাশন হাউস মেঘ এবারও ঈদ উপলক্ষে এনেছে বড় ও ছোটদের রকমারি পোশাক। এসব পোশাকের মধ্যে আছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ, আনস্টিচ ও ছোটদের ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ফ্রক ও টি-শার্ট।

ছবি: মেঘ

এ ছাড়া পরিবারের সবার ও কাপলদের জন্য রয়েছে একই রং ও নকশার পোশাক। খুচরার পাশাপাশি পাইকারি কেনা যাবে এসব পোশাক। ঘরে বসে অনলাইনেও কেনা যাবে।


ঈদে মজাদার দুই পদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমা আক্তার

ঈদের দিনে অতিথি আপ্যায়নে কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য নানা পদের রান্নার আয়োজন থাকে। ঈদের দিনের সেই আয়োজনে যুক্ত হতে পারে দুটি পদ। আর মজাদার এই দুটি পদের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধন শিল্পী নাজমা আক্তার

শাহি টুকরা

উপকরণ: পাউরুটি: ৫ পিস (সাইড কেটে তিন কোনা বা যেকোনো শেপে কেটে নিতে হবে), দুধ হাফ কাপ, জাফরান ১-৪ চা-চামচ, ঘি হাফ কাপ, কাঠবাদাম ২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া ১ চিমটি, পানি ১ কাপ, চিনি হাফ কাপ, গরুর দুধ হাফ লিটার, কনডেন্স মিল্ক হাফ কাপ, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথম এক চা-চামচ ঘি প্যানে গরম করে বাদামগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে। বেশি ভাজা যাবে না। এরপর হাফকাপ দুধে জাফরান ভিজিয়ে সাইডে রেখে বাকি হাফ লিটার দুধ একটা প্যানে জাল করতে হবে। বারবার নেড়ে মিডিয়াম আঁচে জ্বাল করতে হবে যেন সর না পরে। দুধ একটু ঘন হয়ে আসলে তাতে দুধে ভেজানো জাফরান দিতে হবে। (এখানে জাফরান বা কেওড়া জল যেকোনো একটা দেওয়া যাবে। দুটো একসঙ্গে দেওয়া যাবে না। এরপর একে একে গুঁড়া দুধ, কনডেন্স মিল্ক, এলাচ গুঁড়া, ভেজে রাখা বাদাম কিছু সাজানোর জন্য রেখে বাকি সব দিয়ে ভালো করে জ্বাল করে মালাই তৈরি করে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। এরপর আরেকটা পাত্রে ১ কাপ পানি হাফ কাপ চিনি জ্বাল করে পাতলা সিরা তৈরি করে নামিয়ে রাখতে হবে। এরপর আবার একটা পাত্রে ঘি গরম করে তাতে কেটে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো ভেজে নিতে হবে গোল্ডেন রং করে। এরপর ভেজে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো হালকা গরম চিনির সিরায় ৩০ সেকেন্ড ডুবিয়ে উঠিয়ে সার্ভিং ডিশে নিয়ে তার ওপর আগে থেকে তৈরি করা ঠাণ্ডা মালাই দিয়ে তার ওপর বাকি বাদাম কুঁচি দিয়ে সাজিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের শাহি টুকরা।

ক্যারামেল পুডিং

উপকরণ: গরুর দুধ ১ কেজি, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ, ডিম ৪টি, চিনি হাফ কাপ, ভেনিলা এসেন্স ১-৪ চা-চামচ, ক্যারামেল-এর জন্য চিনি ৪ টেবিল চামচ, পানি ২ টেবিল চামচ।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথমে চুলায় একটা পাত্র বসিয়ে তাতে লিকুইড দুধ, গুঁড়া দুধ ও চিনি নিয়ে জাল করে নিতে হবে। ভালো করে নেড়ে জ্বাল করে শুকিয়ে ৩ কাপ করে নিতে হবে। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে রেখে অন্য একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ চিনি, দুই টেবিল চামচ পানি দিয়ে ক্যারামেল করতে হবে। চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে নাড়াচাড়া করা যাবে না। যখন হালকা রং আসতে শুরু করবে তখন পাত্রের হাতল ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ চিনি গলে যখন একটা সুন্দর রং আসবে চুলা বন্ধ করে অনবরত নেড়ে ক্যারামেল তৈরি করতে হবে, না হলে চুলার জ্বাল অন তাকলে ক্যারামেল পুরে তেঁতো হয়ে যাবে।

এরপর যে পাত্রে পুডিং তৈরি করতে হবে সেই পাত্রে ক্যারামেল ঢেলে ঠাণ্ডা করে সেট করে নিতে হবে। এরপর ডিমগুলো ফেটিয়ে জ্বাল করা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে দুধ যেন গরম না থাকে। একদম ঠাণ্ডা করে ডিম মেশাতে হবে। তার সঙ্গে সামান্য ভেনিলা এসেন্স মিশিয়ে যে পাত্রে ক্যারামেল সেট করা আছে, সেই পাত্রের ওপর চালনি বসিয়ে দুধ, ডিমের মিশ্রণ ঢেলে ঢাকনা লাগিয়ে চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে একটা কিচেন টাওয়াল দিয়ে তার ওপর পুডিংয়ের পাত্র বসিয়ে দিতে হবে যেন ভাব দেওয়ার সময় পাত্রটা নড়ে না যায়, তাহলে পুডিংয়ের ভেতর ভালো হবে না। এরপর পানি এমনভাবে দিতে হবে, যাতে পুডিংয়ের পাত্র একদম ডুবে না যায় আবার পানি যেন একদম তলায় না থাকে। ২৫-৩০ মিনিট জ্বাল করে নরমাল টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে ২-৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে মোল্ড আউট করে নিতে হবে। তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের পারফেক্ট ক্যারামেল পুডিং।

(গরম পুডিং কখনোই মোল্ড আউট করতে নেই। ভালো করে ঠাণ্ডা করে তারপর মোল্ড আউট করতে হবে।)

বিষয়:

সুন্দোরা বিউটিতে ঈদের অফার

আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৪ ১৭:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের কেনাকাটায় এখন ব্যস্ত সবাই। মার্কেট ঘুরে কিংবা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে এখন চলছে ঈদের কেনাকাটার ধুম। ঠিক এই সময়ে ‘সুন্দোরা’ নিয়ে এসেছে ঈদে বিশাল মূল্যছাড়! সুন্দোরা বিউটিতে পারফিউম, স্ক্রীন কেয়ার, মেকআপ এবং ক্যান্ডেলের উপর ৬০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে সুন্দোরা কিডস্‌ জোনে খেলনা এবং আরও অন্যান্য আইটেমের উপর সর্বোচ্চ ৬০% ছাড় উপভোগ করতে পারবেন। এই আকর্ষণীয় অফারটি চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। সুন্দোরা হলো বিউটি প্রোডাক্ট, বাচ্চাদের প্রোডাক্ট এবং বিভিন্ন ধরণের ১00টি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অফিসিয়াল পার্টনার। ‘সুন্দোরা’- এর বনানী, গুলশান এবং ধানমন্ডি ষ্টোরে আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছে। অনলাইনে পণ্য পেতে sundora.com.bd এ লগইন করুন এবং ঈদের কেনাকাটায় মেতে ওঠুন।


ফ্যাশন হাউজ ভিভা ক্রিয়শন্সের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

আপডেটেড ২৪ মার্চ, ২০২৪ ২১:২৩
নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে সম্প্রতি উদযাপিত হলো ফ্যাশন হাউজ 'ভিভা ক্রিয়শন্স' এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশান এভিনিউতে অবস্থিত ফ্যাশন হাউজটির নিজস্ব কার্যালয়ে এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী, ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আলী আজম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার)।

অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য অলিলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভিভা ক্রিয়শন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান এবং অলিলা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ভিভা ক্রিয়শন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিনা নাহিদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিভা ক্রিয়েশন্সের বৈচিত্র্যময়, লাক্সারী ও রুচিশীল সংগ্রহ দেখে আমি মুগ্ধ। বর্তমানে রুচি ও মননে বাংলাদেশের মানুষের পোশাক ও সাজসজ্জা চোখে পড়ার মতো। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে দেখে ভালো লাগছে। প্রতিষ্ঠানটির আরও সমৃদ্ধি কামনা করছি।'

অলিলা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ভিভা ক্রিয়েশন্সের ডিরেক্টর জিল্লুর রহমান এমপি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গ্রাহকদের মুগ্ধতা এবং প্রশংসায় আমরা অনুপ্রাণিত। সাশ্রয়ী মূল্যে একই ছাদের নিচে ভারতীয় উপমহাদেশের ৩০০ ডিজাইনারের কালেকশন ক্রেতাদের হাতের নাগালে এনেছে ভিভা ক্রিয়শন্স। আগামী দিনে আমাদের কালেকশন আরও সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।'

ভারতীয় উপমহাদেশের অত্যাধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী বিয়ের সব কালেকশন নিয়ে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে শপিংমল ভিভা ক্রিয়েশন্স।


ওয়েস্টার্ন-ফিউশন ঈদ আয়োজন

ছবি: ‘ট্রেন্ডজ’
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৪ ১৫:৩৯
রোজ হক

দরজায় কড়া নাড়ছে আসন্ন ঈদুল উল ফিতর। এরই মধ্যে ওয়েস্টার্ন-ফিউশন ঘরানার দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের ঈদ আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আজকে রইল তেমনই তিনটি ব্র্যান্ডের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।

ঈদে ফ্যাশনে ট্রেন্ডজ

সময় উপযোগী সব ফ্যাশনেবল কালেকশন নিয়ে কাজ করে থাকে দেশের অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘ট্রেন্ডজ’। তারুণ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এবারের রমজানের ঈদেও ‘ট্রেন্ডজ’ চলতি আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে ডিজাইনগুলো করেছে তাদের এবারের ঈদ কালেকশনে। নারী ও পুরুষের জন্য তৈরি করা এসব পোশাকের রং আর ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে চলতি সময়টাকে।

এবারের ঈদে ফ্যাশন সচেতন ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, ফরমাল শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, পলো শার্ট, টুইল ও ডেনিম প্যান্ট। আর অন্যদিকে নারীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় ফিউশন লেডিস টপস, ফতুয়া, লেডিস শার্ট, টি-শার্ট এবং ফরমাল ও ডেনিম প্যান্ট। ছেলেদের ফরমাল শার্ট ও প্যান্টগুলো করা হয়েছে করপোরেট অফিস এবং বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়ার উপযোগী করে। আর ক্যাজুয়াল পোশাকগুলো করা হয়েছে ফ্যাশন ও স্টাইলের বিষয়টিকে মাথায় রেখেই। একই সঙ্গে টি-শার্টগুলোতে রাখা হয়েছে আধুনিক প্রিন্ট, টুইল এবং ডেনিম প্যান্টগুলোতে রয়েছে আকর্ষণীয় ফিট ও ওয়াশ শেড।

‘ট্রেন্ডজ’-এ এবার ঈদে পাওয়া যাবে ছেলেদের বাহারি রঙের এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবি। সময় উপযোগী এসব পাঞ্জাবির ডিজাইন বর্তমানের ট্রেন্ডটাকে মাথায় রেখেই করা হয়েছে। পাঞ্জাবি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নতমানের হ্যান্ডলুম সিল্ক, কটন সিল্কসহ কটন কাপড়। সব মিলিয়ে অন্যবারের চাইতে এবারের ঈদে ‘ট্রেন্ডজ’-এর পোশাকগুলো অনেকটা আলাদা হয়েছে বলা যায়। ফিট, ডিজাইন, কাপড়ের ধরন- সব ক্ষেত্রেই রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া।

অন্যদিকে নারীদের পোশাকগুলোর ক্ষেত্রে রঙের দিকটি খুব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। বর্তমান আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখেই এসব পোশাকের রং নির্বাচন করা হয়েছে। সাদা, লাল, মেরুন, কালো, গোলাপিসহ বিভিন্ন রঙের পোশাক রয়েছে এবারের আয়োজনে। সব পোশাকে রয়েছে হাতের কারচুপি, মেশিন এমব্রয়ডারির কাজসহ ভিন্নধর্মী কিছু কারুকাজের উপস্থিতি।

‘ট্রেন্ডজ’-এর সব ঈদ কালেকশন পাওয়া যাবে বসুন্ধরা সিটি ও উত্তরা-১-এর শোরুমগুলোয়।

সারা’র বর্ণিল আয়োজন

বরাবরের মতোই প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে বাহারি ডিজাইনের পোশাকের আয়োজন থাকে দেশের অন্যতম ফ্যাশন লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা’তে। ‘উৎসবের আলিঙ্গন’ থিমে ‘সারা লাইফস্টাইল’-এর এবারের ঈদুল ফিতর কালেকশন পাওয়া যাবে ‘সারা’-এর ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের সব আউটলেট এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।

ছবি: ‘সারা’

‘সারা’র এবারের ঈদ আয়োজনের পোশাকের ডিজাইনে স্ক্রিন প্রিন্ট, সাবলিমেশন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, অল ওভার প্রিন্ট থাকছে। পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রাখা হয়েছে উৎসবের আমেজ। এ ছাড়া এবস্ট্র্যাক্ট, ফ্লোরাল, ট্র্যাডিশনাল ও জিওমেট্রিক বিভিন্ন মোটিফ রয়েছে এসব পোশাকের ডিজাইনে। আনারকলি, প্রিন্সেস লাইন, ডাবল লেয়ার, এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এসব পোশাকে ফ্যাব্রিক হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে জর্জেট, কটন, ভিসকস, ডবি সিল্ক, ক্রেপ জর্জেট, নিট, ডেনিম, জ্যাকার্ড কটন ইত্যাদি।

ঈদুল ফিতরের এবারের আয়োজনে মেয়েদের জন্য ‘সারা লাইফস্টাইল’ এনেছে শাড়ি, থ্রি পিস, ফ্যাশন টপস, আনারকলি থ্রি পিস, কুর্তি, কো অর্ডস, ডেনিম প্যান্ট, শ্রাগ, ওয়ান পিস, টু পিস, স্কার্ফ, সারারা, কাফতান, টি-শার্ট। ‘সারা’র এবারের আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, কোটি, পায়জামা ইত্যাদি।

‘সারা’র ঈদ আয়োজনে গুণগত মান ও ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আকার, ডিজাইন ও প্যাটার্নের ভিন্নতার দিক বিবেচনা করে এসব পোশাকের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রেতারা এসব পোশাক পেয়ে যাবেন ২৫০ টাকা থেকে ৯,৯৯০ টাকার মধ্যে। পাশাপাশি এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি ও শাড়ি থাকছে এবারের ‘সারা’র ঈদের কালেকশনের অন্যতম আকর্ষণ।

মেয়ে শিশুদের জন্য থাকছে টি-শার্ট, পার্টি ফ্রক, কটন ফ্রক, থ্রি পিস, ফ্যাশন টপস, টু পিস, লেহেঙ্গা। এ ছাড়া ছেলে শিশুদের জন্য থাকছে সিঙ্গেল শার্ট, ফ্যাশনেবল শার্ট-প্যান্ট সেট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, ডেনিম প্যান্ট, নিট প্যান্ট, টি-শার্ট, ইনফ্যান্ট সেট, নিউ বর্ন সেট, ইনফ্যান্ট পাঞ্জাবি সেট, পলো শার্ট ইত্যাদি।

এ ছাড়া ‘সারা’র এবার ঈদের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে থাকছে ফুল ফ্যামিলি একই ডিজাইনের পোশাকের সংগ্রহ (বাবা-ছেলে-মা-মেয়ে)। তা ছাড়া কাপলদের জন্য থাকছে একই ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাকের আয়োজন।

তাভাস এন্ড ডিমান্ড

‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ লাইফস্টাইলও এবার ঈদের সংগ্রহে নিয়ে এসেছে সব বয়সীদের জন্য আকর্ষণীয় ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাকের আয়োজন।

এই ফ্যাশন হাউস দুটির ঈদ কালেকশনের এবারের থিম সমুদ্র এবং রোদ্রোজ্জ্বল আবহ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারির কাজ, জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল এমন অনেক কিছুই থাকছে পোশাকের মোটিফ হিসেবে। এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক নিয়ে বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এ ছাড়া কালারের ক্ষেত্রে ভাইব্রেন্ট রাখা হয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে।

ছবি: ‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’

মেয়েদের জন্য ‘তাভাস’ এনেছে সিঙ্গেল পিস কামিজ, লন থ্রি পিস, আকর্ষণীয় পার্টি থ্রি পিস, এথনিক কুর্তি, ফ্যাশন টপস, কাফতান ইত্যাদি।

‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ এবারের আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, কাবলি সেট, সিঙ্গেল পিস কাবলি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ফতুয়া, কাতুয়া, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি। প্রকৃতি ও ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি এসব পোশাকের কাটিং ও প্যাটার্নে রয়েছে বৈচিত্র্য। এসব পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে কটন, ভিসকস, শার্টিন, নেট, ডেনিম ও টুইল ফ্যাব্রিক্স, জ্যাকার্ড কটন, ডবি কটন, জর্জেট, সিল্ক ইত্যাদি। এ ছাড়া এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি রয়েছে ঈদ কালেকশনের মূল আকর্ষণ হিসেবে।

শুধু বড়দের জন্য নয় ‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ ঈদ আয়োজনে রয়েছে ছেলে শিশুদের শর্ট স্লিভ, ফুল স্লিভ শার্ট, ফতুয়া, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্টসহ ভাইব্রেন্ট কালারের পাঞ্জাবি। এর বাইরেও রয়েছে কাতুয়া, লং ও শর্ট স্লিভ শার্ট, পলো টি-শার্ট, ফ্যাশনেবল শার্ট-প্যান্ট সেট, বয়েজ কার্গো ইত্যাদি। থাকছে বাবা-ছেলের পাঞ্জাবি ও কাবলির মিনিমি।

‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ এবার ঈদের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে থাকছে ফুল ফ্যামিলি (বাবা-ছেলে-মা-মেয়ে) একই ডিজাইনের পোশাকের সংগ্রহ।

সারা বাংলাদেশে ‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’-এর আউটলেটে পেয়ে যাবেন সব ঈদ কালেকশন।

বিষয়:

দেশীয় আয়োজনে ঈদ আনন্দ

ছবি: অঞ্জন’স
আপডেটেড ২২ মার্চ, ২০২৪ ০২:২০
মইনুল হক রোজ

ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দের বেশ বড় একটা অংশ জুড়েই থাকে বাহারি নকশার নতুন পোশাক। আর তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পছন্দের কথা বিবেচনায় রেখে আয়োজন করে থাকে নানা ডিজাইনের পোশাক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের। সাতকাহনের ঈদ আয়োজনের প্রথম পর্বে রইল দেশীয় অন্যতম তিন শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউসের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।

অঞ্জন’স

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উৎসব। আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসবের এই দিনটিকে আরও বেশি উৎসবমুখর ও আনন্দময় করতে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স নিয়ে এসেছে এক্সক্লুসিভ ঈদ কালেকশন-২০২৪। সব বয়সীদের জন্য এই আয়োজন সাজানো হয়েছে ট্রেন্ডি, স্টাইলিশ ও বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের পোশাক দিয়ে।

এবারের ঈদ কালেকশনে মেয়েদের জন্য রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, টপস ও বিভিন্ন ধরনের জুয়েলারি, ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, ফতুয়া, টি-শার্ট ও কটি। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, সালোয়ার-কামিজ ও ফ্রক। এবারের ঈদ বসন্তের শেষ এবং গ্রীষ্মের শুরুতে; পোশাক ডিজাইন, রং নির্বাচন ও ফ্যাব্রিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে।

শাড়ি : রাজশাহী বলাকা সিল্ক, মসলিন, হাফসিল্ক, কটন সিল্ক, লিনেন কটন, টাঙ্গাইল কটন ও ভয়েল কাপড়ের শাড়িগুলোতে ব্লকপ্রিন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট ও এম্ব্রয়ডারি করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এক্সক্লুসিভ শাড়িগুলোতে অলওভার এম্ব্রয়ডারি ও কারচুপি করা হয়েছে।

সালোয়ার-কামিজ, ওড়না: কটন, লিনেন কটন, জ্যাকার্ড কটন, রেয়ন কটন, সফট সিল্ক, ডুপিয়ান-সহ বিভিন্ন কাপড়ে মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ ও শট, লং ও মিডিয়াম লেন্থের টপস করা হয়েছে। কামিজ ও টপসগুলোতে সমসাময়িক ট্রেন্ড ও প্যাটার্ন বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। স্ক্রিন প্রিন্ট, এম্ব্রয়ডারি ও ডিজিটাল প্রিন্টের আনস্টিচ সালোয়ার-কামিজ পাওয়া যাবে এবারের ঈদ আয়োজনে।

পাঞ্জাবি: সাদা, লাল, মেরুন, কালো, নীল, সবুজ, বাদামিসহ বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি রয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে। কটন, জ্যাকার্ড কটন, এন্ডি কটন, রেয়ন কটন, ভয়েল-সহ বিভিন্ন কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলোয় এমব্রয়ডারি, কারচুপি, ডিজিটাল প্রিন্ট ও স্ক্রিন প্রিন্ট করা হয়েছে। কলিদার কাট, রেগুলার ফিট ও স্লিম ফিট পাঞ্জাবি দিয়ে সাজানো হয়েছে ছেলেদের ঈদ কালেকশন। পাঞ্জাবি ছাড়াও কাতান, জ্যাকার্ড ডিজাইন ও ভারী কটন কাপড়ের কটি ও কটন কাপড়ে ফুল স্লিভ ও হাফ স্লিভ শার্ট ও ফতুয়া রয়েছে ঈদ কালেকশনে।

জুয়েলারি: সিলভার ও বেইজ মেটাল ব্যবহার করে পাথর এবং অন্যান্য বিডসের সমন্বয়ে নিজস্ব ডিজাইনে আধুনিক ও ঐতিহ্যমণ্ডিত নকশায় নেকলেস, চোকার, আংটি, কানের দুল, নাকফুল, চুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের গয়না রয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে।

প্রতিবারের মতো এবারের ঈদ কালেকশনেও একই পরিবারের জন্য রয়েছে একই রঙের একই ডিজাইনে গ্রুপ পোশাক। অঞ্জন’সের সব আউটলেট ও অনলাইন স্টোরে ঈদ কালেকশনগুলো পাওয়া যাচ্ছে।

কে ক্র্যাফট

ঈদ আয়োজনের পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছে কে ক্র্যাফট। ঈদের সকাল, বিকেল এবং সন্ধ্যায় কাঙ্ক্ষিত পোশাক নির্বাচনে ক্যাজুয়াল কিংবা এক্সক্লুসিভ সবই মিলবে এবার। এবং অবশ্যই হবে আবহাওয়া, পরিবেশ উপযোগী ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।

বিভিন্ন মোটিফের বিচিত্র ব্যবহার তুলে ধরা হয়েছে পোশাকে। ফ্লোরাল, জিওমেট্রিক, মুঘল, কাশ্মীরি, ইউক্রেনিয়ান, বেলারুশ ও ইজিপ্সিয়ানের বিভিন্ন মোটিফ অনুপ্রেরণায় এবারের সিরিজ পোশাক। এ ছাড়া ট্র্যাডিশনাল, ট্রাইবাল, ফোক, জামদানি, ওরিয়েন্টাল, আলাম, মিক্সড-সহ নানা মোটিফ ফুটিয়ে তুলতে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, কারচুপি, স্ক্রিন ও ব্লক প্রিন্ট, সিকুইন ওয়ার্ক, ডিজিটাল প্রিন্ট এবং টাই-ডাই মিডিয়ার ব্যবহার হয়েছে।

কাট, প্যাটার্ন ও নকশার সমন্বয়ে করা পোশাকের জন্য ফ্যাব্রিক নির্বাচন করা হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ ও স্বস্তিতে থাকাকে প্রাধান্য দিয়ে। বৈচিত্র্যময় রং নির্বাচন করে থাকছে- কটন, জ্যাকার্ড কটন, জর্জেট, লিনেন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, দুবাই সিল্ক, অরগানজা, ডুপিয়ন সিল্ক, মমো সিল্ক, সুইস কটন, ভিসকজ, নীব কটন, এলেক্স, টু-টোন, সাটিন ফ্যাব্রিক।

ছবি: কে ক্র্যাফট

মেয়েদের জন্য ট্র্যাডিশনাল, ক্ল্যাসিক, এথনিক, রেট্রো, ফিউশন, ইয়ক বেইজড, লং প্যাটার্ন-সহ বিভিন্ন প্যাটার্নের পোশাক সারিতে থাকছে- সালোয়ার-কামিজ, ডাবল লেয়ার্ড সালোয়ার কামিজ, লং-কুর্তি, রেগুলার কুর্তি, টপস্, ডাবল লেয়ার্ড কুর্তি, টিউনিক, কাফতান, প্যান্টসহ টপস-স্কার্ট, টপস-পালাজো সেট ও বিভিন্ন প্যাটার্নের প্যান্ট ।

এ ছাড়া ঈদকে সামনে রেখে কটন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন, খাদি মসলিন শাড়ির বৈচিত্র্যপূর্ণ ডিজাইনের একটি বড় আয়োজন থাকছে।
ছেলেদের জন্য রয়েছে পছন্দের ব্র্যান্ড কে ক্র্যাফটের রেগুলার ও ফিটেড পাঞ্জাবি। এ ছাড়া রয়েছে কাট বেইজড একরঙা পাঞ্জাবিও। এ ছাড়া পাওয়া যাবে রেগুলার ও স্লিম ফিট ক্যাজুয়াল শার্ট, এথনিক শার্ট, শেরওয়ানি, কটি, ফতুয়া, পলো শার্ট ও টি-শার্ট।

মেয়ে শিশুদের জন্য উৎসব ভিত্তিক পোশাকে থাকছে সালোওয়ার-কামিজ, ফ্রক, কুর্তি, টপস, কাফতান, লেহেঙ্গা সেট, টপস সেট, স্কার্ট, পার্টি ফ্রক, টপস-কটি সেট, পালাজো। ছোট ছেলেদের পোশাক আয়োজনে নানা রঙের পাঞ্জাবি, হাফহাতা কাট-এর শার্ট এবং ফতুয়া। শিশুদের পোশাকে প্যাটার্ন, ফ্যাব্রিক এবং রঙের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্যাটার্নে ভিন্নতা এবং রঙে উৎসবের আমেজ বহন করবে।

এ ছাড়া ছোট মেয়েরা, বোন অথবা মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে পরার জন্য সালোওয়ার-কামিজ, কুর্তি এবং বাবা ও ছেলের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট ও ফতুয়া থাকবে বরাবরের মতো। এবারে যুগলদের জন্য থাকবে বিশেষ আয়োজন।

কে ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লার সব শো-রুম ছাড়াও অনলাইন শপে ঈদ আয়োজনের পোশাক পাওয়া যাবে।

রঙ বাংলাদেশ

বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব রমজানের ঈদ। রোজা শুরুর আগে থেকেই আরম্ভ হয়ে গেছে উদযাপনের প্রস্তুতি। ঈদের আনন্দকে আরও বেশি উৎসবমুখর ও রঙিন করে তুলতে দেশের শীর্ষ সারির অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড রঙ বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিয়েছে ব্যাপক।

প্রতিবারের মতো এবারও থিমনির্ভর কালেকশন তৈরি করেছে রঙ বাংলাদেশ। এ বছরের মূল থিম ক্লাসিক্যাল ফোর এলিমেন্টস। আগুন, পানি, মাটি ও বাতাস গ্রিক মিথোলজি মতে এই চার উপাদানে গঠিত হয়েছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। মাটি, আগুন, পানি ও বাতাসের নানান রূপ-বৈচিত্র্যের চমৎকার বিন্যাস ঘটানো হয়েছে এই আয়োজনের রঙ ও নকশায়। এ ছাড়া পাখির রং, আলপনা ও জিওমেট্রিক থিমের সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে এবারের ঈদে।

এবারের ঈদ কালেকশন তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক কাপড়ে। বিভিন্ন ধরনের কটন, স্লাব কটন, জ্যাকার্ড কটন, লিনেন, হাফসিল্ক, জর্জেট, ভিসকস ও বারফি কাপড় দিয়ে পোশাকগুলো করা হয়েছে। মূল রং হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মেরুন, নীল, ফিরোজা, আকাশী, ব্রাউন, লাল, লাইট অরেঞ্জ, কফি ও ডিপ সবুজ।

ছবি: রঙ বাংলাদেশ

পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। নানান আধুনিক ও ঐতিহ্যগত প্যাটার্নের কাট এন্ড সুইং ছাড়াও রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি ও কারচুপি কাজের ব্যবহার।

শুধু বড়দের নয়- ঈদে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাচ্চাদের আকর্ষণীয় পোশাক। রয়েছে পরিবারের সবার জন্য একই ধরনের ম্যাচিং পোশাক। ফলে বাবা-মা, মা-মেয়ে, বাবা-ছেলে এমনকি পরিবারের সবাই একই ডিজাইন বা থিমের পোশাক পরে উদযাপন করতে পারবে এবারের ঈদ উৎসব। এ ছাড়া আমাদের সাব ব্র্যান্ড হিসেবে থাকছে: তরুণ প্রজন্মের পছন্দকে মাথায় রেখে তৈরি করা ওয়েস্ট রঙের পোশাক, বয়োজ্যেষ্ঠদের আপন ভুবন শ্রদ্ধাঞ্জলি আর শিশুতোষ ফ্যাশনের আনন্দময় জগৎ রঙ জুনিয়রের ঈদ আয়োজন।

রঙ বাংলাদেশ-এর এবারের সংগ্রহে আছে:

মেয়েদের পোশাক: শাড়ি, থ্রি পিস, সিঙ্গেল কামিজ, কুর্তি, টিউনিক, টপস, ওড়না, রেডি ব্লাউজ, ব্লাউজপিস, আনস্টিচড থ্রি পিস, গাউন ইত্যাদি।

ছেলেদের পোশাক: পাঞ্জাবি, পায়জামা, কাতুয়া, কাবলি সেট, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট, টুপি, উত্তরীয়, ইত্যাদি। ছোটদের পোশাক: থ্রি পিস, সিঙ্গেল কামিজ, ফ্রক, স্কার্ট টপস, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট। আছে টিনএজারদের উপযোগী টপস। এ ছাড়া আরও রয়েছে জুয়েলারি, মেয়েদের ব্যাগ, পার্স, লেডিস জুতা, মানিব্যাগ, বেড কাভার, পিলো কাভার, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, শো-পিস, জুট আইটেম। উপহার সামগ্রী হিসেবে রয়েছে নানা ডিজাইনের ব্যাগ ও মগ।

রঙ বাংলাদেশ-এর ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব আউটলেটেই পাওয়া যাবে এই ঈদ আয়োজনের সামগ্রী। এ ছাড়া ঈদ আয়োজনের সব পণ্যই পাবেন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।


পাসপোর্ট ছাড়াই মিলবে সৌদি আরব ভ্রমণের সুযোগ, তবে হজ নয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এখন থেকে পাসপোর্ট ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ভ্রমণ করা যাবে। এ উপলক্ষে এরই মধ্যে ডিজিটাল নথি তৈরির ব্যবস্থা করেছে সৌদি সরকার। সম্প্রতি দেশটির সংবাদমাধ্যম অ্যারাবিয়ান বিজনেসের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অ্যারাবিয়ান বিজনেস জানিয়েছে, রিয়াদের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি সম্মেলন লিপ ইয়ার ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনে আগত দর্শনার্থীদের সামনে ওই ডিজিটাল নথি ব্যবস্থা প্রদর্শন করেছে সৌদি আরবের পাসপোর্ট বিভাগ। অন্যদিকে উন্নত প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) গুরুত্ব তুলে ধরে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এই ডিজিটাল ডকুমেন্ট সার্ভিস সৌদি নাগরিক, দর্শনার্থীসহ সুবিধাভোগীদের দেওয়া ডিজিটাল ও প্রযুক্তিগত সমাধানগুলোর একটি। এর আওতায় থাকা ব্যক্তিরা সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ সেবাগুলো পাবেন।

এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, একটি একক নম্বর দেওয়ার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের সৌদি আরবে আগমন প্রক্রিয়া আরও সহজ করা। এই ব্যবস্থা দর্শনার্থী বা ভ্রমণকারীদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাবশার’ ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার দেবে। সেখান থেকে তারা নিজেদের ডিজিটাল পরিচয় বা একক নম্বর পাবেন।

এই ডিজিটাল পরিচয় ব্যক্তির মোবাইল ফোনে থাকবে। এর মাধ্যমে ভ্রমণকারী সৌদি আরবের কোন স্থানে রয়েছেন, তাও জানা যাবে। ফলে কোনো কাগুজে পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে না।

তবে এ সুবিধা হজযাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। বরং এ বছর থেকে অনুমতি ছাড়া হজ পালন করলে কঠোর শাস্তির বিধান চালু করেছে সৌদি আরব। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর অনুমতি ছাড়া হজ করলে গুনতে হবে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ লাখ টাকার সমান। এ ছাড়া যিনি বা যারা অনুমতিবিহীন ব্যক্তিদের মক্কায় পরিবহন করে ধরা পড়বেন, তাদেরকেও একই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে।


২০২৮ সালের মধ্যে ঢাকায় রাইডশেয়ারিং সুবিধায় নারী কর্মশক্তি বাড়বে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভালো রাইডশেয়ারিং সুবিধা পাওয়ায় ২০২৮ সালের মধ্যে রাজধানীতে নারী কর্মশক্তির হার ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ নারী ঢাকার কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারেন। যাতায়াতের সুব্যবস্থার ফলে ঢাকায় নারী কর্মজীবী বাড়ছে।

সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার তথ্য উঠে এসেছে। ‘রাইড-হেইলিং: অ্যা প্ল্যাটফর্ম ফর উইমেনস ইকোনমিক অপারচুনিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে রাইডশেয়ারিং অ্যাপ উবার।

প্রতিবেদনটিতে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর কার্যকর ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, কর্মশক্তিতে আরও বেশি নারীকে যুক্ত করতে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নারীদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণের পরিমাণ কম। ২০২২ সালে বিশ্বে নারীদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ছিল ৪৭ শতাংশ, যা বাংলাদেশে ছিল ৪৩ শতাংশ। প্রতিবেদনটি অনুসারে, নারীর যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুটি চ্যালেঞ্জ হলো- নিরাপদ যানবাহনের স্বল্পতা এবং কর্মজীবন ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে বর্তমান ভারসাম্যহীনতা।

এতে আরও বলা হয়, এমন প্রেক্ষাপটে নারীদের কর্মশক্তিতে যোগদান কিংবা আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনের জন্য উচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে রাইডশেয়ারিং সার্ভিসগুলো।

উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সুযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উবার। দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো খুবই জরুরি। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য যাতায়াতব্যবস্থার ফলে আরও বেশিসংখ্যক নারীর জন্য কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে নারীরা নিরাপদে ও সুবিধাজনকভাবে সরাসরি কমর্স্থল বা নিজের কাছাকাছি গণপরিবহন স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারেন। বর্তমান ও ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্যে অবদান রাখায় নারীদের সাহায্য করতে পেরে উবার গর্বিত।’


বাড়ছে গ্রা‌ফিক নভেলের পাঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফিচার ডেস্ক

গ্রাফিক নভেল ধারণাটি বাংলাদেশে খুব বেশি পুরাতন নয়। অতীতের তুলনায় বিশ্বজুড়ে বই পড়ার যে অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে এবং শিশু-কিশোররা ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়ছে তাদের বইয়ের জগতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গ্রাফিক নভেল খুব বড় একটা উপায় হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশেও বিগত বছরগুলোতে বেশ কিছু গ্রাফিক নভেল ও কমিকস শুরু হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় সিরিজ হলো দুর্জয় ও মারুফ। ঢাকা কমিকস ও পাঞ্জেরী থেকে প্রকাশিত এই সিরিজের গল্প ও আর্টিস্ট তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ এবারের বইমেলায় নতুন একটি গ্রাফিক নভেল নিয়ে এসেছেন। রঙ্গন প্রকাশনী রঙ্গন প্রকাশনী স্পাই-থ্রিলারধর্মী গ্রাফিক নভেল নিশাচর। প্রকাশকরা বলছেন মেলার শেষ দিকে আসলেও মাত্র চারদিনে ৪০০ কপি বিক্রি হয়ে গেছে এই গ্রাফিক নভেল।

নিশাচর নিয়ে আর্টিস্ট তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ বলেন, আমাকে এই প্রজন্মের কমিকপ্রেমীরা চেনেন মূলত দুর্জয় এবং মারুফ চরিত্র দুটির কারণে। বিদেশি কমিকের যে বাংলাদেশি পাঠক, যারা নিজেদের কমিকসে পছন্দসই কোয়ালিটি, গল্প, আঁকা পাচ্ছিলেন না। তাদের বড় একটা অংশ এই সিরিজের মাধ্যমেই বাংলাদেশি কমিকের প্রতি ঝুঁকে পড়তে লাগলেন। আমরা দুর্জয় আর মারুফ সিরিজে তেমন কোয়ালিটি, গল্প, আর্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

সম্পদ বলেন, একটা প্রজন্মের পাঠক স্কুল থেকে কলেজ-ভার্সিটিতে উঠে যায় দুর্জয় আর মারুফ পড়তে পড়তে। দুর্জয় আর মারুফ তাদের চরম ভালোবাসার দুটি চরিত্রে পরিণত হয়। সেই ভালোবাসাই আমাকে নিশাচর গ্রাফিক নভেলটি তৈরি করতে সাহস দিয়েছে।

নিজের আঁকাআঁকি কবে থেকে শুরু এমন প্রশ্নের জবাবে সম্পদ বলেন, ১৯৯২ সালে সেবা প্রকাশনীর কিশোর পত্রিকায় তার আঁকাআঁকির শুরু। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। তিনি বলেন, ‘‘কিশোর পত্রিকায় তার ছাপা প্রথম কমিক ‘রিংকু-পিংকুর বেড়া দেয়া’। সেটার প্রথম প্যানেলে কাজী আনোয়ার হোসেন স্যার নিজে থেকে দু’টো কথা লিখে দিয়েছিলেন যা আজীবনের পাথেয়।’’

সেই কমিকটি ছিল ২ পৃষ্ঠার গল্প। এরপর টানা ৫ বছর কিশোর পত্রিকায় লেখেন এবং আঁকেন। এরপর ২০০০ সালে কিশোর তারোকালোকে গবেট নামেও একটি কার্টুন একেছিলেন তিনি।

এ ছাড়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ কাজ করেছেন ভারতেও। দেশটি ইয়ালি ড্রিমসের জন্য বিখ্যাত লেখক শামীক দাসগুপ্তের গল্পে ছবি এঁকেছেন। এছাড়া কাজ করেছেন দেবী চৌধুরাণী এবং রাকশাক কমিকে।

এখনকার গ্রাফিক নভেল নিয়ে তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ বলেন, ‘১৯৯২ থেকে ২০০০ কমিক আঁকি। দীর্ঘ ১৪ বছর পর দুর্জয় আর মারুফ লেখার মাধ্যমে নতুন করে আবার কমিক আঁকা শুরু। ২০২৩ পর্যন্ত ২৫টি পূর্ণাঙ্গ কমিক বই বের হয়েছে তার। দুর্জয় ১-১৮ বের হল ঢাকা কমিক্স থেকে। মারুফ ১-৬ এবং অপ্সরী ১ বের হল পাঞ্জেরী থেকে। অন্ধ আক্রোশ রঙ্গন প্রকাশনী থেকে বের হল।

তিনি বলেন, ‘এই ৮-৯ বছরের প্রচেষ্টায় আমার আঁকা ও লেখা এই ম্যাচিওর্ড কমিক আর গ্রাফিক নভেলগুলি একটা কাজ খুব ভালোমত করল। তা হল, কমিক যে শুধুই বাচ্চাদের বই না, কমিক যে বড়দের বইও হতে পারে তা বাংলাদেশের পাঠকদের এবং প্রকাশকদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এর আগে তারা মনে করতেন, কমিক মানেই হাসির কিছু। রম্যরসের ছবিওয়ালা বইই কমিক। কিন্তু দুর্জয় আর মারুফ সিরিজ সেইসব চিন্তাকে পাল্টে দেয়।’

তবে নিশাচর গ্রাফিক নভেলটি সবদিক থেকে আলাদা বলে মনে করেন আর্টিস্ট। তিনি বলেন, এত কিছুর পরেও কোনো একটা না পাওয়ার অভাব ভেতরে থেকেই যাচ্ছিল। কমিক বা গ্রাফিক নভেলের জগতে আমি যা করতে পারি, তা যেন পুরোপুরি আমি করতে পারছি না। কোথায় যেন একটা অসম্পূর্ণতা থেকেই যাচ্ছিল। বড়দের জন্য কমিক এঁকে যাচ্ছি। প্রকাশকের অনেক বাধা আর নিষেধ উপেক্ষা করে গল্পে প্রয়োজনীয় ব্রুটালিটি, রোমান্স এসব আঁকছি। তবে দুর্বল গল্পকে ব্রুটালিটি আর যৌনতা দিয়ে চালাইনি। গল্পের জোরেই সেগুলো পাঠকদের কাছে স্বাভাবিক লেগেছে। কিন্তু কিছু দুর্বলতা থেকেই যাচ্ছিল। এ ছাড়া কাগজের দাম বাড়তে থাকায় প্রকাশকরা কম দামী কাগজ দেয়। রঙিন বই না ছাপিয়ে সাদা-কালো ছাপতে চায়। রঙিন হলেও কম দামী অফসেটে ছাপে যার কারণে এক পাশের কালি আরেক পাশে চলে যায়।

বিষয়গুলো তাবকে বেশ ভাবাচ্ছিল বলে জানান তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ। তিনি বলেন, রঙ্গন কমিকসের প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়াম ছিলেন ভক্ত। তার সঙ্গে গল্প করতে করতেই এই কমিকে রেস্ট্রিকশন, বাজে প্রিন্ট কোয়ালিটি ইত্যাদি নিয়ে কথা ওঠে। সেখান থেকেই নতুন আইডিয়া আসে যে একটা প্রকাশনা করা দরকার।

এবার সেই রঙ্গন প্রকাশনা থেকেই বের হয়েছে নিশাচর। প্রায় দেড় বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর এবারের ২৪ ফেব্রুয়ারি বের হয় নিশাচর গ্রাফিক নভেলের প্রথম পর্ব। প্রকাশকরা বলছেন, ইতিমধ্যে চার শতাধিক কপি বিক্রি হয়েছে নিশাচরের।


ঢাকার লো মেরিডিয়ানে চলছে দশ দিনব্যাপী বেনারসি ফেস্টিভাল

আপডেটেড ৩ মার্চ, ২০২৪ ২০:১৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্য, আভিজাত্য এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তৈরি ভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে সাজানো দ্য মসলিন ও ব্র্যাক ব্যাংক-এর উদ্যোগে ’টাইমলেস ম্যাগনিফিসেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি’ নামের দশ দিনব্যাপি বেনারসি ফেস্টিভাল। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে রাজধানীর লো মেরিডিয়ান হোটেলের ইন্ট্রেসলে ফেস্টিভালটির উদ্বোধন করেন দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার সংরক্ষণ, প্রচার এবং এর বিশ্বব্যাপি প্রসারের লক্ষ্য নিয়েই দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম বরাবরই এ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশি বেনারসি কারিগরদের উদ্বুদ্ধ করতে এবারের বেনারসি ফেস্টিভালের আয়োজন।
দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম বলেন, ‘বেনারসির মত আভিজাত্যে ভরপুর বাংলাদেশি ঐতিহ্য নিয়ে দ্য মসলিন সবসময় কাজ করে আসছে। সেই আগ্রহ থেকে এই ফেস্টিভাল আয়োজন করতে পেরে আমি আনন্দিত। টাইমলেস ম্যাগনিফিসেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি শুধু একটি অনুষ্ঠানই নয়। আমাদের স্থানীয় প্রতিভাবান বেনারসি তাঁতিদের কারুকাজ ও নকশার মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধি প্রদর্শন করাই এই উৎসবের লক্ষ্য’।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ রফিক, শামীম আখতার, হাজী মোহাম্মদ আসির, নুর ইসলাম, জাহিদুর রহমানসহ মিরপুর বেনারসি পল্লীর ছয়জন স্বনামধন্য ও প্রতিভাবান তাঁতশিল্পী। ফেস্টিভালে কারিগররা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সামনে তাদের সুনিপুন হাতের ছোয়ায় বানানো বেনারসি শাড়ি এবং তার পেছনের গল্প উপস্থাপন করেন ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেনারসি তাঁতশিল্পী শামিম এবং মোহাম্মদ রফিককে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও বেনারসি দিয়ে অভিনব ডিজাইন তৈরির জন্য পুরস্কৃত করা হয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটির পাঁচ শিক্ষার্থীকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জেসিয়া জেসি এবং মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের আয়োজক কমিটির উর্ধতন কর্মকর্তা,নেদারল্যান, ডাচ, মরক্কো, ব্রাজিল ও ফিলিস্তিন দূতাবাসের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নারী পেশাজীবীগন।
দেশের ঐতিহ্যবাহী বেনারসি শাড়ির সমাহার নিয়ে সাজানো ১০ দিনব্যাপি ফেস্টিভালটি ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। স্বনামধন্য কারিগরদের দ্বারা তৈরি বেনারসি শাড়ি, ওড়না এবং কাপড়ের একটি আকর্ষণীয় সংগ্রহ রয়েছে ফেস্টিভালে। সরাসরি তাঁতিদের কাছে নিজেদের পছন্দমত ডিজাইন অর্ডার করে পণ্য তৈরিরও সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলছে ফেস্টিভালটি।


ইতিহাস-ঐতিহ্য-গৌরবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুল ইসলাম, ঢাবি প্রতিনিধি

পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ইতিহাস নেই যে সেই বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশের জন্ম দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মধ্যে একটি সচেতন মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নামক আমাদের এই দেশকে জন্ম দিতে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নির্মাণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তার কোনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় এ পর্যন্ত ১৯৫ জনের নাম উল্লেখ করা আছে।

সাংবাদিক এবং গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদও তার বইয়ে লিখেছেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাস আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস অবিচ্ছেদ্য।

এ ছাড়া স্বাধীনতার পর প্রতিটি গণতান্ত্রিক, মৌলবাদ ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই সর্বদা ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশের প্রয়োজনে নিজেকে উৎসর্গ করাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নিজ দায়িত্ব হিসেবে কাঁধে তুলে নিয়েছে। যেকোনো সংকটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেশ ও জাতি এটাই আশা করে।

বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রেক্ষাপট

ইতিহাসবিদরা বলছেন, বঙ্গভঙ্গ রদ করার ক্ষতিপূরণ হিসেবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে তখনকার ব্রিটিশ সরকার। লর্ড লিটন যাকে বলেছিলেন, ‘স্প্লেনডিড ইম্পেরিয়াল কমপেনসেশন’।

১৯০৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্সের ২০তম অধিবেশনে মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমেদ খাঁ পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি সর্বপ্রথম তোলেন। এরপর ১৯১১ সালের শেষ পর্যন্ত অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিভিন্ন প্রোগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

তবে শুরুতে এসব প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়া হলেও বঙ্গভঙ্গ রদ-পরবর্তী আহত মুসলমান সম্প্রদায়কে খুশি করার জন্য ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।

একই বছরের ২৭ মে গঠিত হয় ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি কমিটি।’ এই কমিটির দায়িত্ব ছিল ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায় কি না, সেটি যাচাই-বাছাই করে দেখা এবং এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা দেওয়া। এই কমিটি ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইতিবাচক প্রতিবেদন দেওয়ার পর ডিসেম্বর মাসেই সেটি অনুমোদন করা হয়।

শেষ পর্যন্ত ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভায় ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট-১৯২০’ অনুমোদিত হয়। গর্ভনর জেনারেল সেই আইনে স্বাক্ষর করেন ২৩ মার্চ।

স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক রেজিস্ট্রার স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ১৯২০ সালের পহেলা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। পরের বছর ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের বক্তব্য

প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। সেখান থেকে আমরা মাত্র ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে পারি। সুতরাং এরা তো সেরাদের সেরা। জাতি, পরিবার এবং আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এই সেরাদের সেরারা যেভাবে বিকশিত হোক চাই। তবে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে তাদের সেই বিকাশটা হয়ে ওঠে না। ফলে জাতিকে যেভাবে তাদের কনট্রিবিউশন করা দরকার পরিপূর্ণভাবে তারা সেই কনট্রিবিউশন করতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যে মনোবল বা স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসে, এখানে আসার পর সুযোগ-সুবিধার অভাবে অনেক সময় তাদের সেই মনোবল আর থাকে না- না হয় স্বপ্ন পূরণ হয়ে ওঠে না। এর মধ্যে কিছু কারণ হলো- হলে তারা সিট পায় না। তবে যদি এই শিক্ষার্থীদের কিছুটা আর্থিক সংগতি থাকে তখন তারা নিজেদের মতো করে চলতে পারবে। এই চলার পথকে যেন আরও সহজতর এবং মসৃণ করা যায় সেজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়ার উদ্যোগের কথা ভাবছি।

তারই অংশ হিসেবে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, হল, ইনস্টিটিউট এবং বিভাগকেন্দ্রিক যে অ্যালামনাই, তাদের সঙ্গে আমরা বসে এ ব্যাপারে আলোচনা করব। তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষার্থী তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা করা।

এ ছাড়া প্রতিথযশা যেসব ব্যক্তি, দেশের এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের সিংহভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করব। বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের জীবন কল্যাণে সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। আর এই স্কলারশিপের বিষয়টা তারই ধারাবাহিকতা।

আগামী চার বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি কোথায় নিয়ে যেতে চাই সে বিষয়ে আমি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং আরও যারা আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আমি আমার এই পরিকল্পনা জানাব।

আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে যে রাস্তাগুলো গিয়েছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে নয়। এই রাস্তাগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনের। তাদের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কথা বলব আর যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও কোথাও স্পিডব্রেকার দেওয়ার জন্য আমরা সিটি কর্পোরেশনকে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া যানজট এবং বহিরাগতমুক্ত করতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষার্থীদের কিছু মতামত আমি পেয়েছি। এগুলো সংগ্রহ করে আমি আরও কিছু চিঠি তৈরি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বলেছি।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কলা, বিজ্ঞান ও আইন- এই তিনটি অনুষদের আওতায় ১২টি বিভাগ, তিনটি আবাসিক হল, ৬০ জন শিক্ষক আর ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ১৩টি অনুষদ, ৮৪টি বিভাগ, ১৩টি ইনিস্টিটিউট, ৫৬টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র, ২০টি হল এবং ৩টি হোস্টেল রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ হাজারের অধিক এবং শিক্ষকের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে কোভিড-১৯ অতিমারি-পরবর্তী ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রায় শতাধিক সেমিনার, কর্মশালা, কনফারেন্স ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত গবেষকরা তাদের জ্ঞান ও গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে ‘সেন্টিনিয়াল রিসার্চ গ্রান্টস্’-এর আওতায় বিভিন্ন যুগোপযোগী ২৫১টি গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করা হয়েছে। এই গ্রান্টস্-এর আওতায় পরিচালিত প্রত্যেক গবেষণার ফলাফল শিক্ষক ও গবেষকদের নিকট উপস্থাপনের জন্য বিশেষ কর্মশালার আয়োজন ও আন্তর্জাতিক পিয়ার রিভিউড জার্নালে সেসব প্রকাশের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা Scopus Indexed জার্নালে যেখানে ২০১৮ সালে ৫৮৬টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন, যা ২০২২ সালে তা ১৩৩১টিতে উপনীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের এ অগ্রগতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিংয়ের ক্রমাগত উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকাশনা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ২০২২ সালের অক্টোবরে দুই দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং গবেষণা সেন্টার তাদের সম্পাদিত গবেষণা উদ্ভাবন ও প্রকাশনা উপস্থাপন করেছিল। গবেষণা মেলা আয়োজনকে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক ও টেকসই করতে ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশনা ও গবেষণার মৌলিকত্ব এবং স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার উন্নয়নে ‘প্ল্যাজিয়ারিজম পলিসি’ গত বছরের ৩০ মে সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদৎ হোসেনকে পরিচালক করে Dhaka University Research Co-ordination & Monitoring Cell (DURCMC) গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসনসংকট খুবই প্রকট। তবে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ঘটলে শিক্ষার্থীদের জীবনমানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এই মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় তিন ধাপে ৯৭টি ভবন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে একাডেমিক ভবন থাকবে ১৭টি, ছাত্রী হল ৮টি, ছাত্রদের ১৬টি, হাউস টিউটর ভবন ২২টি, শিক্ষক ও অফিসারদের জন্য ১২টি, স্টাফদের জন্য ৯টি ভবন। অন্য ক্যাটাগরিতে থাকছে ১৩টি ভবন। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য আলাদা খেলার মাঠ, যানজট নিরসনে পাবলিক প্রাইভেট সড়ক, টানেল, লাইব্রেরি, সাইকেল লেন, সবুজের পরিমাণ বাড়ানোসহ নানা ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মাস্টারপ্ল্যানে।

শিক্ষার গুণগতমানে ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক যৌথ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ১৬১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় সমঝোতা চুক্তি রয়েছে।

ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং’ সক্রিয় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে আমরা তরুণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীদেরও প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। আইসিটি সেলকে কার্যকর করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তির কাজে গতিশীলতা আনয়নের নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক হিসাব ডিজিটালাইজড করার অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র অ্যাকাউন্টস ড্যাশবোর্ড চালু করা হয়েছে। এখানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের বেতন, ইনকাম ট্যাক্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পরীক্ষার বিলসহ বিভিন্ন তথ্য দেখতে পারবেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিক অর্থ ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আসবে এবং সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কার্যক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সনদপত্র, নম্বরপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন। শিক্ষার্থীরা ভর্তি ও পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিটিজেন চার্টার’ এবং সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি ও আপিল নিষ্পত্তির লক্ষ্যে তথ্য বাতায়ন চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই বিভিন্ন সেবা গ্রহণে যেকোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে APA লিংকে সরবরাহকৃত নির্ধারিত ফর্মে জানাতে পারেন। এ উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য অর্জন, মৌলিক দর্শন ও মূল্যবোধকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবার্ষিক স্মৃতিস্তম্ভ, ‘অসীমতার স্তম্ভে বিশালতা, অন্তর্ভুক্ততা ও উদারতা’-এর নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রস্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চত্বরে স্থাপন করা হয়েছে এবং তা নির্মাণাধীন রয়েছে। এ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরের ল্যান্ডস্কেপসহ পরিবেশ, সৌন্দর্য ও প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে এর ব্যবহার-উপযোগিতা ও নান্দনিকতাকে আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের চারটি পুনর্গঠিত ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা, ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণ নীতি অনুযায়ী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘব, সময় এবং অর্থসাশ্রয়ে পূর্বসিদ্ধান্ত মোতাবেক ৮টি বিভাগীয় শহরে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ইউনিটে, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে এবং বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে পঠিত বিভাগ পরিবর্তন করে তাদের পছন্দসই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত একাডেমিক কর্মসূচি যেমন- প্রফেশনাল/এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা/সার্টিফিকেট কোর্স/ট্রেনিং প্রোগ্রাম ইত্যাদি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়েছে। এসব এখন একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত হয়। একই সঙ্গে নিয়মিত মাস্টার্স প্রোগ্রামের শূন্য আসনে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি ও অধ্যয়নের সুযোগ দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগ/ইনস্টিটিউট এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) আবর্তন করে শিক্ষার্থীদের পরিচালনায় ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২৭টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে, যেখানে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সমাজের বিভিন্ন অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে নানা ধরনের শিক্ষা, সহশিক্ষামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এসব সংগঠন স্ব স্ব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, কর্মঅভিজ্ঞতা ও দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোপরি শারীরিক, মানসিক সুস্থতা ও সৃজনশীল মেধা এবং মনন গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এসব সংগঠনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতীকী অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বাস করে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করলে সমাজহিতৈষী, অসাম্প্রদায়িক এবং দক্ষ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি, রেঞ্জার ইউনিট, রোভার স্কাউট গ্রুপ শৃঙ্খলা রক্ষাসহ শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে নানাভাবে কাজ করে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকজন রোভার স্কাউট সদস্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সর্বোচ্চ পদক ‘প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন।

শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেধার স্বীকৃতি ও বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ট্রাস্ট ফান্ড গঠন কার্যক্রম বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন ভর্তিকৃত প্রথমবর্ষের বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান আমাদের অগ্রাধিকার। অতিসম্প্রতি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক/ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ও তার সহধর্মিণী খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের নামে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ‘শেখ কামাল-সুলতানা কামাল ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। এ ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বিশেষ করে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও আবাসিক হল ছাড়া এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৯০টি ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি লাভ করছেন।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও ন্যানোটেকনোলজির যুগে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা এ সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তির ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম হবেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান বৃদ্ধি ও গবেষণা কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করবে। বাংলাদেশে এটিই প্রথম ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার। এ সেন্টারে পরিচালিত কার্যক্রম গবেষণার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।


বইমেলায় সোহরাব পাশার ‘নির্বাচিত কবিতা’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ প্রকাশিত হয়েছে কবি সোহরাব পাশার কবিতা সংকলন ‘নির্বাচিত কবিতা’। বইটিতে স্থান পেয়েছে ৩০০টির বেশি কবিতা।
একাধিক পুরস্কার ও পদকে ভূষিত কবি সোহরাব পাশার কবিতায় দার্শনিক ও নান্দনিক ভাবনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। তার কবিতার বিষয় ও ভাবে প্রাধান্য পায় প্রেম-প্রকৃতি-নারী-সমাজ-স্বদেশ-সমকাল।

বইটির পরিচিতিতে লেখক সম্পর্কে প্রয়াত কবি আশিক সালামের মূল্যায়ন যুক্ত হয়েছে। ভূমিকা লিখেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। লেখক বইটি উৎসর্গ করেছেন খ্যাতিমান মননশীল লেখক রাজীব সরকারকে।

মোট ৩২০ পৃষ্ঠার এ বইটির গায়ে মুদ্রিত মূল্য ৬০০ টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আনিসুজ্জামান সোহেল। বইটি প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।


banner close