সাংবাদিক হায়দার আলীর বিশেষ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন সংবলিত বই ‘আমার অনুসন্ধান’র প্রথম খণ্ডের পাঠ উন্মোচিত হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় টেলিভিশন চ্যানেল নিউজটোয়েন্টিফোর মিলনায়তনে গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন বসুন্ধরা গ্রুপ ও ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীর।
প্রধান অতিথি সায়েম সোবহান আনভীর তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আমরা সবসময় হয়দার আলীর দুর্নীতি, অনিয়ম, অব্যস্থাপনা নিয়ে করা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের পক্ষে ছিলাম, আছি এবং ভবিষতেও থাকবো।
বইটি তাকে উৎসর্গ করায় লেখককে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সায়েম সোবহান। এর আগে তিনি কেক কেটে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন এবং বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কালের কণ্ঠর প্রধান সম্পাদক কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। উপস্থিত ছিলেন কালের কণ্ঠ সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী, ইংরেজি দৈনিক ডেইলি সান সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরী, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম সম্পাদক জুয়েল মাজহার, ডেইলি সানের নির্বাহী সম্পাদক রেজাউল করিম লোটাস, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নির্বাহী সম্পাদক রাহুল রাহা, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নির্বাহী সম্পাদক আবু তাহের, কালের কণ্ঠের সিটি এডিটর কাজী হাফিজ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের অনলাইন ইনচার্জ শামসুল হক রাসেল, নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের ডেপুটি সিএনই আশিকুর রহমান শ্রাবণ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিজনেস এডিটর রুহুল আমিন রাসেল, চিফ রিপোর্টার মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
হায়দার আলী বর্তমানে কালের কণ্ঠের উপ-সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি দৈনিকটির দুর্নীতি বিরোধী অনুসন্ধানী সেলের প্রধান এবং এর পাঠক সংগঠন শুভসংঘ-এর উপদেষ্টা। ২০০১ সালে দৈনিক ‘প্রথম আলো’য় নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। কাজ করেছেন দৈনিক সমকালেও।
অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার স্বীকৃতিস্বরূপ লাভ করেন ইউনেস্কো-বাংলাদেশ জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড, মালয়েশীয় প্রেস ইনস্টিটিউটের বিশেষ পুরস্কার। ‘বিরল ভালোবাসা’ শিরোনামে এক মানবিক প্রতিবেদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরস্কার, স্বীকৃতি আর একটি একান্ত সাক্ষাৎকারও পান হায়দার আলী।
ভারতের সবচেয়ে বৃহৎ অটোমোবাইল নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টাটার একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে সত্তরের দশকের প্রথম দিকে একটি বিশেষ শর্ত জুড়ে দেয়া হলো ‘নারীরা আবেদন করার প্রয়োজন নেই!’ কিন্তু নারী হয়েও তিনি আবেদন তো করলেনই, সেই সঙ্গে তৎকালীন চেয়ারম্যান জে আর ডি টাটাকে লিখে জানতে চাইলেন এই লিঙ্গ-বৈষম্যের কারণ। পোস্টকার্ডে এও লেখেন- এই নিয়োগ প্রক্রিয়া লিঙ্গ পক্ষপাতের প্রমাণ। লিঙ্গ-বৈষম্যের এই শক্তিশালী অভিযোগ ও সাহসী পদক্ষেপের কারণে তাকে ডাকা হলো একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে।
অবিলম্বে ভারতে প্রথম মহিলা প্রকৌশলী হিসেবে নিযুক্ত করা হয় তাকে। এভাবেই টাটার ইতিহাসে যুক্ত হন প্রথম নারী প্রকৌশলী সুধা মূর্তি। কিন্তু যাত্রা সহজ ছিল না মোটেও। ক্লাসে ৫৯৯ জন ছেলে আর একজনই মেয়ে। সে সময়ে মেয়েরা তেমন কেউ পড়েননি প্রকৌশলবিদ্যায়। সুধা জোর করে ভর্তি হন কর্নাটকের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। তিনি সে শহরের প্রথম ছাত্রী। কলেজের প্রিন্সিপ্যাল সুধাকে ডেকে বলেছিলেন, তিনটি শর্ত মানতে হবে- প্রতিদিন শাড়ি পরে আসতে হবে, কলেজ ক্যান্টিনে ছেলেদের ভিড়, ওদিকে যাওয়া যাবে না এবং কোনো ছেলের সঙ্গে ক্লাসে কথা বলা যাবে না। তিনি অক্ষরে অক্ষরে তিনটিই মেনে চলতেন। কিন্তু কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে তিন নম্বর শর্তটি আর মানতে পারলেন না। কারণ ছেলেরা তার দিকে পূর্ণ দৃষ্টি নিয়ে ফিরল এবং এসে কথা বলল। সেই ছয় শ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন সুধা।
বিপত্তি ছিল আরও। সেখানে পড়ানো হবে ইংরেজি ভাষায়। ইংরেজিতে ততোটা দক্ষতা নেই বলে মা-কে জানান আশঙ্কার কথা। মা এর উত্তরে জানান- স্রোতকে এড়িয়ে না গিয়ে স্রোতে টিকে থাকার চেষ্টাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। ব্যস, আর পিছিয়ে যাননি। ফলাফল ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে হন স্বর্ণপদকজয়ী। কম্পিউটার সায়েন্সে এমই করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স থেকে। সেখানেও প্রথম হন। আবারও স্বর্ণপদক পান ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স থেকে।
১৯৮১ সালে স্বামী নারায়ণ মূর্তির চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করার সিদ্ধান্তেও তিনি সাহস দেন। দেন আর্থিক ভরসাও। পারিবারিকভাবে ব্যবসার কোনো ইতিহাস না থাকলেও প্রযুক্তি ও প্রকৌশল সংস্থা ইনফোসিস তৈরিতে স্বামীর পাশে ছিলেন পুরোদমে। বহুজাতিক এই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ তিনটি সবচেয়ে মূল্যবান আইটি পরিষেবা ব্র্যান্ডের একটি এবং বিশ্বের শীর্ষ ১৫০টি মূল্যবান ব্র্যান্ডের মধ্যে করে নিয়েছেন নিজের জায়গা। বর্তমানে তিন লাখের বেশি কর্মী কাজ করে ‘ইনফোসিস’-এ। নারায়ণ মূর্তি মালিক ৩.৯ বিলিয়ন পাউন্ডের। প্রচুর অর্থসম্পদ থাকার পরেও সুধা মূর্তি ২৩ বছরে কোনো শাড়ি না কিনে, কিনেন বই। সাধারণ থাকাটাই যেন তার পরা সবচেয়ে দামি অলংকার।
একটি পাখা পেলে তুমি কী করতে- এমন প্রশ্নের জবাবে একদিন দাদাকে বলেন, লাইব্রেরিতে গিয়ে সব বই পড়ে আসব। বই পড়ার তার এই নেশা ঠেকেছে ‘প্রতিটি স্কুলের জন্য একটি গ্রন্থাগার’- এই দৃষ্টিভঙ্গিতে। তারই সৌজন্যে স্কুলগুলোতে স্থাপিত হয়েছে ৭০ হাজার লাইব্রেরি। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, জনস্বাস্থ্য, শিল্প ও সংস্কৃতি এবং তৃণমূল পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচন- এমন অনেক সমাজসেবায় যুক্ত এই মানবহিতৈষী নারী।
লিখেছেন অনেক বই। কথা বলেন অনুপ্রেরণার। পেয়েছেন খ্যাতি, সম্মান, ভালোবাসা। এ বছরই পেয়েছেন ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ। দৃঢ়তা, সাহস, আত্মবিশ্বাস আর সাদামাটা জীবন মানুষকে কোথায় পৌঁছে দিতে পারে তার জীবন্ত উদাহরণ হয়ে এই নারী আজ এবং আগামীর নারীদের জন্য সামনে দাঁড়িয়ে আছেন অবিচল নিদর্শন হয়ে।
বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার প্রতিযোগিতামূলক। সবাই যেন ছুটছে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য। কঠিন এ রাস্তায় কেউ হারে, কেউ জেতে। নারীর জন্য এ পথটুকু আরও একটু বেশিই কঠিন যেন। তবে কিছু বিষয় রপ্ত করে নিতে পারলে চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকা সম্ভব অনেকটাই। কিছু গুণাবলি তাই এখন থেকেই অনুসরণ করুন, আয়ত্ত করুন। জেনে নিন তেমন কয়েকটি বিষয়-
বন্ধুতা প্রযুক্তির সঙ্গে
বর্তমান বিশ্ব পুরোটাই প্রযুক্তিনির্ভর। অদূর ভবিষ্যতে এ নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে বৈকি কমবে না। বলা চলে, ভবিষ্যৎ দনিয়া অটোমেটেড হয়ে যাবে, প্রযুক্তির বদল ঘটবে, নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রয়োগও হবে। সে সব প্রযুক্তি যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আয়ত্ত করে নিতে না পারেন চাকরির বাজারে পিছিয়ে থাকবেন অন্যদের তুলনায়। কাজেই প্রযুক্তির সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব না থাকে, এখন থেকেই তা করার সময় এসেছে।
মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা
যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়া বেশ ভালো গুণ বটে। কর্মক্ষেত্রে এ গুণ আরও অনেকটা এগিয়ে রাখবে যে কাউকে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তা সামাল দিয়ে সম্পন্ন করার ক্ষমতা আপনাকে অন্যদের তুলনায় আলাদা করে তুলবে। যেকোনো পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দেয়া এবং তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার অভ্যাস না থাকলে এখনই রপ্ত করে নিন।
নতুন দক্ষতা অর্জন করুন
নিজের কাজটুকুই ভালোভাবে চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে এখন আর বিশ্ব আটকে নেই। মাল্টিটাস্কারদের জয়জয়কার এখন সর্বত্রই। তাই নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে নতুন নতুন দক্ষতা যোগ করুন, যা শুধু আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে অনন্য করেই তুলবে না সঙ্গে সঙ্গে আপনার আত্মবিশ্বাসের পাল্লাও ভারী করবে।
সৃজনশীলতায় মনোযোগী হোন
প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতেও মানুষের বিকল্প কিছু হবে না। অন্তত সৃজনশীলতায় যন্ত্র মানুষকে হারাতে পারবে না। তাই ভবিষ্যৎ যতই প্রযুক্তিনির্ভর হোক, মনে রাখতে হবে যন্ত্র কখনো মানুষকে ছাপিয়ে যেতে পারে না। সৃজনশীলতা, নতুন অভিনব চিন্তাভাবনা কখনোই আবেদন হারাবে না। নতুনভাবে কাজ করা, নতুন পরিকল্পনা, চিন্তাভাবনায় নতুনত্ব আনা এ সবই আপনাকে এগিয়ে রাখবে। তাই নিজের সৃজনশীলতার প্রতি আরও একটু বেশি মনোযোগী হোন। এর ফলে কাজের ক্ষেত্রে আপনি এগিয়ে থাকবেন অনেকখানি।
নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা
পুরো বিশ্ব এখন নারীর ক্ষমতায়নে, নারী নেতৃত্বে বিশ্বাসী। এ চিন্তাধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে থাকুন আপনিও। কর্মক্ষেত্রে দলগত কাজে চেষ্টা করুন নেতৃত্ব গ্রহণ করার। অন্য কেউ পিছিয়ে পড়লেও এগিয়ে আসুন সমস্যার সমাধানে। শুধু নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলি ক্যারিয়ার সমসৃণ করে তুলবে।
কাগজে-কলমে নাম কুলসুম বেগম, ডাকনাম কুসুম। গায়ের রঙের জন্য বাবা-মা স্নেহ করে ডাকতেন লালবড়ু। জন্ম ফরিদপুর শহরের পাশে দয়ারামপুর গ্রামে। ১৯৩৩ সালে ১২ বছর বয়সে শহরের ব্যবসায়ী কফিলউদ্দিনের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আসেন শহরে। ত্রিকালদর্শী এই মানুষটি দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ, মুক্তিযুদ্ধ, সমাজ আর ইতিহাসের নানা উত্থান-পতন দেখেছেন। দীর্ঘ জীবনে তার ৮ সন্তান, আর তৃতীয় প্রজন্মের সদস্য সংখ্যা ১৮ জন। ১৯৯২ সালে জীবনসঙ্গীর মৃত্যুর পর থেকে এগিয়ে চলেছেন জীবনের স্রোতে। কালের স্রোতে আশপাশের চেনা মুখগুলো ঝরে গেছে। সমসাময়িক বন্ধু কিংবা স্বজন সবাই এখন ছবি, ইতিহাস।
গল্পের আড্ডায় বসলেই ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের স্মৃতি মনে করিয়ে দেন সবাইকে। কিশোরী বয়স তখন। আশপাশে অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে খাদ্যাভাবে। রিলিফের খাবারের হাহাকার চারদিকে। রোগে আর শোকে বাংলার মানুষের বেঁচে থাকা দেখেছেন। শিল্পাচার্য জয়নুলের বিখ্যাত সেই দুর্ভিক্ষের ছবির কথা মনে হয় তখন। সে সময় সরাইখানা খোলা হয়েছিল ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমান এলাকায়। সেই সময়কার ইতিহাসের সাক্ষী এই শতবর্ষী নারী। স্বামীর বড় ব্যবসা আর পরিবারের দায়িত্বের অনেক কিছুই ছিল তার ওপরে। সাংসারিক ব্যস্ততায় সময় কাটাবার জন্য শুনতেন রেডিও। তখন প্রচারিত মধুমালা নাটকের গল্প এখনো বলেন নাতি-নাতনিদের। ফরিদপুরের অরোরা টকিজ (এখন ছায়াবানী) সিনেমা হলে সিনেমা দেখেছেন। মনে করতে পারেন সাগরিকা সিনেমার কথা। বরাবরই শৌখিন এই মানুষটি নকশি কাঁথা সেলাইয়ের বাইরেও কুরুশকাটার কাজ, পাখা আর শীতল পাটি কিনে তাতে ফুল তোলার কাজ করতে ভালোবাসতেন। এখনো সাহস করে চেষ্টা করেন পাটিতে উল দিয়ে নকশা করতে।
বিয়েতে পরেছিলেন সাদা রঙের মালা শাড়ি। সোনালি জরির সেই শাড়ি কালে কালে বিলীন হয়ে গেলেও পুরোনো স্মৃতি উঁকি দেয় মনে। এপি কোম্পানির ত্রিফলা নারকেল তেল, কসকো সাবান ছিল নিত্য ব্যবহার্য পণ্য। সাজতেন আলতা আর সুরমায়। ব্যবহার করতেন আতর। মিষ্টি খেতে বরাবরই ভীষণ পছন্দ কুসুমের। কথায় কথায় জানান, পহেলা বৈশাখে বাড়িতে মিষ্টি আনা হতো টিনের জার ভরে। প্রতিযোগিতা করে মিষ্টি খেতেন পরিবারের সবাই। তখন আট-দশটি রসগোল্লা খেতে পারলেও এখন পারেন না অতটা। পিঠা-পায়েশ পছন্দ আগের মতোই। ছেলেমেয়েরা সব সময় চেষ্টা করেন এগুলো তৈরি করে তাকে খুশি রাখতে।
শত বছরেও মলিন হননি এই মানুষটি। তার কারণ মনন আর জীবনযাপনে তিনি জরাগ্রস্ত নন। এমন ঝলমলে থাকার রহস্য তার জীবনীশক্তি আর পরিপাটি থাকার ইচ্ছে। খাদ্য তালিকায় আছে শাকসবজি আর মাছের প্রাধান্য। স্বভাবতই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়েছেন বার্ধক্যজনিত কারণে কিন্তু ডায়াবেটিস বা কোনো জটিল রোগ নেই তার। ফলে খাওয়াদাওয়ায় কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
এই বয়সেও চমৎকার শায়ের বলেন তিনি। সাবলীল অসংখ্য প্রবাদবাক্য মুখস্থ তার। গুনগুন করে গানও করেন যখন একা থাকেন। হঠাৎ হঠাৎ অতীতের স্মৃতিচারণা করেন। সেখানে থাকে তার ১১ টাকার শাড়ি, চার টাকায় ব্যাগভর্তি বাজার, সময়ে-অসময়ে বন্যা, গুটিবসন্ত, ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের গল্প।
উত্তরসূরিদের জীবনপ্রবাহে ব্যস্ততা বাড়লেও তিনি একা নন। একাকিত্ব কেমন- এই মানুষটিকে বুঝতে দেন না তারা। কনিষ্ঠ সন্তান নাসিমা আহমেদ সাধারণত প্রতি শীতে মাকে নিজের কাছে আনার চেষ্টা করেন। যোগাড়যন্ত্র করে বসিয়ে দেন পিঠা বানাতে। বিকেলে বসেন চায়ের কাপ হাতে। মেয়ের ধারণা, মা এতে খুশি হন। অনুভব করেন তার প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি বয়সের ভারে। প্রয়োজনের তাগিদে একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে আজ মৌলিক পরিবার হয়েছে। এটাকে নেতিবাচক হিসেবে ভাবেন না তিনি। পৃথিবীর ব্যস্ততা বেড়েছে বহুগুণ। সে ব্যস্ততার ভিড়ে পরিবারের তরুণ সদস্যরা হয়তো এই প্রবীণ মানুষগুলোর মনের খোঁজ রাখছি না। কুসুমদের রঙিন জীবনের গল্পে আমরা হারানো বাংলাকে দেখতে পাই।
সারা দিন রোজা রেখে ইফতারে নানা পদের ভাজাপোড়া, মসলাদার খাবার অনেকেই এড়িয়ে যান। এসব খাবার কোনোভাবেই স্বাস্থ্যের পক্ষে নয়, একথা সবারই জানা। আবার সারা দিন শেষে শরীরের পানিশূন্যতা কাটাতে পানির পাশাপাশি নানা রকম শরবতই ভরসা। ইফতারে যারা একটু পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য ভালো কিছু তৈরি করতে চান তারা জেনে নিন দই দিয়ে তৈরি মজাদার এমন কয়েকটি রেসিপি। রেসিপি দিয়েছেন তাহ্মিনা জামান।
পুদিনা টকদই শরবত
উপকরণ
প্রথমে পুদিনা পাতা ও ধনিয়াপাতা ভালো করে ধুয়ে কুচি করে একটি ব্লেন্ডারে নিন। এবার এর মধ্যে টকদই, কাঁচামরিচ কুচি, গোলমরিচের গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করুন। আধাকাপ পানি দিয়ে আবারও ব্লেন্ড করে নিন। সবশেষে অল্প একটু বিট লবণ মিশিয়ে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে একটি গ্লাসে মিশ্রণটি ঢেলে নিন। ওপরে সামান্য বরফের কুচি দিয়ে পরিবেশন করুন ঠাণ্ডা পুদিনা টকদই শরবত।
দইয়ের পুডিং
উপকরণ
ক্যারামেল তৈরি: ২-৩ টেবিল চামচ চিনি ও ২ টেবিল চামচ পানি নিন। একটা পাত্রে যেখানে পুডিং বসাবেন সেটিতে চিনি, পানি নিয়ে চুলায় দিয়ে মিডিয়াম আঁচে পাত্রটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ক্যারামেল করে নিন। খেয়াল রাখবেন বেশি গাঢ় যেন না হয়। পাত্রটি ঠাণ্ডা হলে, এক চা-চামচ ঘি দিয়ে ব্রাশ করে রাখুন।
পুডিং তৈরি: প্রথমে একটি বড় বাটিতে ডিমগুলো ভেঙে নিন। গুঁড়া দুধ ও পানি মিক্স করে ঘন করে গুলে রাখুন। দই সুতির কাপড়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার ব্লেন্ডারে ডিম, চিনি, দুধ ও দই দিয়ে এক মিনিটের মতো ব্লেন্ড করে নিন। এখন ডিমের মিশ্রণটি ক্যারামেল পাত্রে ছেঁকে ঢেলে নিন। পুডিং পাত্রটি ঢেকে দিন ফয়েল পেপার বা ঢাকনা দিয়ে। এবার একটি পাতিলে ৩ কাপ পানি দিয়ে, একটি স্ট্যান্ডের ওপর পুডিং পাত্রটি বসিয়ে দিন। পাতিলটি ভারী কিছু দিয়ে ঢেকে দিন। মাঝারি আঁচে ২০-২৫ মিনিট স্টিম করে নিন। এভাবেই রেখে দিন ঠাণ্ডা হয়ে আসা পর্যন্ত। ঠাণ্ডা হলে পরিবেশন করুন।
ভ্যানিলা টকদইয়ের স্মুদি
উপকরণ
ব্লেন্ডারে সবগুলো উপকরণ একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন। এরপর বরফের কুচি দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশন করতে পারেন কিংবা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে পরিবেশন করা যেতে পারে মজাদার স্মুদি।
আবহাওয়া, খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, নতুন কোনো ব্যায়াম, প্রাত্যাহিক রুটিনের ভিন্নতা কিংবা পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবে ত্বক পানিশূন্যতা অনুভব করে। ফলে ত্বকে নানা রকম সমস্যা যেমন- ব্রণ হওয়া, চুলকানি, র্যাশ ইত্যাদি হয়ে থাকে। যেহেতু রোজার সময় স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে- তাই ত্বকের নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মনে রাখতে হবে, ত্বকের ৭০ শতাংশই কিন্তু পানি। রোজার রাখার ফলে স্বাভাবিকভাবে আমাদের শরীর পানি ও তরলজাতীয় খাবার কম পেয়ে থাকে। তা ছাড়া এই সময়টা আবহাওয়া স্থির থাকে না। এই গরম, এই ঠাণ্ডা, এই বৃষ্টি! আর বাইরের হাওয়াতে যেন ধুলাবালি মিশে একাকার। দুপুর থেকে বিকেলে দেখা যায়, রোদের তেজ আবার বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলেই বাতাস শীতল হয়ে যায়। রমজান ও আবহাওয়ার এই ওঠা-নামাতে আমাদের স্বাস্থ্য ও ত্বকের ওপর পরে বড় প্রভাব। প্রকৃতির এই বদলের সঙ্গে ত্বকের বদলও যেন অপরিহার্য। এ সময়টায় কীভাবে নিজের ত্বকের যত্ন নেয়া যায় তা নিয়ে কথা হয় রূপবিশেষজ্ঞ তারানা মাহবুবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বড় ভুলটা যা করি শীত চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের যত্ন নেয়া বন্ধ করে দিই। শীতে ত্বকের যেসব শুষ্কতা দেখা দেয়, তার রেশ রয়ে যায় অনেক দিন। শীতের রুক্ষতা কমে এলেও ত্বকের রুক্ষতা রয়ে যায়। তাই এই সময়টাও নিতে হবে ত্বকের পরিপূর্ণ যত্ন।’
তারানা মাহবুব বলেন, রমজানে ৮০ শতাংশ মানুষের ত্বক পানিশূন্য হয়ে যায়। এর কারণ হিসেবে রয়েছে সারা দিন পানি পান করা হয় না আবার ইফতারের সময়ও পর্যাপ্ত পানি পান না করা। ফলে পানির ঘাটতি পূরণ হয় না। তা ছাড়া আবহাওয়াও এখন এমন যে কখনো ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক আবার কখনো তৈলাক্ত। তাই ত্বকের যত্ন নিতে হবে বুঝেশুনে।
ত্বকের ধরন বুঝে প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন
এ সময় গরম ও ঠাণ্ডার মিশ্রিত আবহাওয়া থাকার কারণে দুই ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে। প্রতিদিন সকালে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভালো ব্র্যান্ডের ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। ময়েশ্চারাইজার শুষ্ক ত্বককে আর্দ্রতা প্রদান করে। ময়েশ্চারাইজার বাইরের দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে এবং এটি সূর্যের থেকে সুরক্ষা দেয়। শুষ্ক ত্বকের জন্য তেলযুক্ত এবং যাদের ত্বক তেলযুক্ত তাদের পানিযুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
প্রতিদিন পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে একটি টোনার ব্যবহার করতে হবে। হঠাৎ গরম পড়ার কারণে মুখে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়, টোনার সেই ব্রণ থেকে মুক্তি দেয়। বাইরে রোদের জন্য স্যানট্যান পরে তাই দিনের বেলা বের হওয়ার সময় অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। সানস্ক্রিন সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মির হাত থেকে রক্ষা করে ও রোদের পোড়া কালো ছোপ ছোপ দাগ দূর করতে সাহায্যে করে। অনেকে আবহাওয়া একটু ঠাণ্ডা থাকলে সানস্ক্রিন এড়িয়ে যায়, এটা একদম করা যাবে না। আবহাওয়া যেমন থাকুক রোজ সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। শীতের পরে যাদের ত্বকে এখনো শুষ্কতার চাপ রয়ে গেছে, তারা প্রতিদিন গোসলের পর অলিভ অয়েল ব্যবহার করলে উপকার পাবে এবং ত্বক হাইড্রেটেড রাখতে একটা ভালো মানের ফেসওয়াশ বেছে নিতে হবে।
ঘরোয়া উপায়ে ত্বকের যত্ন নিন
আমাদের রান্নাঘরে থাকা অনেক সহজলভ্য উপাদান দিয়ে আমরা আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি। যেমন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য পাকা কলা খুবই উপকারী। একটি পাকা কলা চটকে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত করলে তৈলাক্ত ত্বক থেকে অনেকটা রেহাই পাওয়া যাবে। শুষ্ক ত্বকে অনেক সমউ জ্বালা ভাব দেখা দেয়, তার জন্য কাঁচা দুধের সর ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে মুখে টোনার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। শসার রস খুব ভালো ক্লিনজার হিসেবে কাজ করে। শসা টুকরো করে কেটে মুখে ১০ মিনিট ঘসে ধুয়ে ফেললে ত্বক অনেক হাইড্রেটেড হবে। প্রতিদিন মুখ ভালোভাবে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে, গরম পানি যতটা সম্ভব এড়িয়ে যাওয়া ভালো কারণ এটি ত্বক আরও শুষ্ক করে।
ভেতরে থেকে ত্বককে পুষ্টি দিন
সারা দিন রোজা রাখবার ফলে ত্বক ডিহাইড্রেট হয়ে পড়ে। ত্বক যদি ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায় ত্বকে সিবামের পরিমাণ নষ্ট হয়। ত্বক শুষ্ক হয়ে চুলকানি দেখা দেয়। তাই ইফতার ও সাহরিতে হাইড্রেশন বজায় রাখতে প্রচুর পানি পান করতে হবে। ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন সি ত্বকের গঠন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাবারের সঙ্গে লেবু খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। লেবু ভেতর থেকে শরীরের সব দূষিত পদার্থ বের করে ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্যে করে। যেসব ফলমূল ও শাকসবজিতে পানির পরিমাণ বেশি থাকে তা খেতে হবে। যেমন- তরমুজ, কলা, শসা, টমেটো ইত্যাদি। মাখন খসখসে ত্বকের জন্য বেশ উপকারী। তাই সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন মাখন খেতে হবে। ত্বক ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে প্রোটিনের অনেক ভূমিকা রয়েছে। তাই রোজ ডিম খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। মাছের তেল ত্বক সুন্দর রাখতে সাহায্য করে। তাই খাবারের পাতে প্রোটিন রাখতে হবে।
বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন
ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. সেলিনা রেজা বলেন, গ্রীষ্ম শুরুর এই সময়টায় ত্বকে এলার্জি থেকে শুরু করে অন্যান্য চর্মরোগ খুব বেশি দেখা যায়। রমজান ও আবহাওয়ার কারণে শরীর শুষ্ক হয়ে চুলকানি হতে পারে এবং রাতের দিকে চুলকানি বেশি বেড়ে যায়। অনেকের মুখে লাল লাল র্যাশ দেখা যায় ও গোটা হয়। তাই এই সমস্যাগুলোকে অবহেলা করা যাবে না এবং নিজে নিজে ভুল প্রোডাক্ট ব্যবহার করা যাবে না। কারণ, আবহাওয়া ছাড়াও অনেক কারণে ত্বকে সমস্যা হতে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।
সারা দিনের ক্লান্তি উধাও করে দিতে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের জুড়ি মেলা ভার। চা শেষ করে কাপে পরে থাকা টি ব্যাগটিও কিন্তু কম উপকারী নয়। এমনকি ব্যবহারের পরও এটি ব্যবহার করা যায় নানাভাবে নানা কাজে। চলুন জেনে নিই তেমন কিছু টিপস-
চোখের ফোলাভাব কমাতে
ঘুমের অভাব, কাজের চাপ ইত্যাদিতে চোখ ফুলে ঢোল। এ ফোলাভাব কমাতে গরম পানিতে টি ব্যাগ ভিজিয়ে নিন, তারপর সেই ভেজা টি ব্যাগ ফ্রিজে কয়েক মিনিট রাখুন যাতে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। ঠাণ্ডা টি ব্যাগ চোখের ওপর রেখে পাঁচ মিনিট শুয়ে থাকুন, দ্রুত ফোলাভাব কমে যাবে!
ফেস স্ক্রাব হিসেবে
কোথাও ঘুরতে যাবেন হাতে একদমই সময় নেই? চা পান করে টি ব্যাগ কেটে ভেতরের চা পাতাটা বের করে মুখ স্ক্রাব করে নিতে পারেন। হাতে আরও কিছুটা সময় থাকলে চায়ের গুঁড়োটা বাটিতে নিয়ে এক চা চামচ মধু যোগ করুন, তারপর মুখে লাগিয়ে বৃত্তাকারে মাসাজ করুন। পাঁচ মিনিট রেখে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে মুহূর্তেই।
দুর্গন্ধ কমাতে
রান্নাঘরে ডাস্টবিন থাকলে তা থেকে বিশেষ করে এই গরমকালে বাজে গন্ধ ছড়াতে পারে। ব্যবহার করা টি ব্যাগ ফেলে রাখুন ডাস্টবিনে। সব গন্ধ দূর হয়ে যাবে!
রুম ফ্রেশনার হিসেবে
ঘরে সুগন্ধের জন্য দামি এয়ার পকেট কেনেন? হাতের কাছে টি ব্যাগ থাকলে আর কেনার দরকার নেই! ব্যবহার করা টি ব্যাগ শুকনো করে নিন, তাতে ছিটিয়ে দিন কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল! এবার ব্যাগগুলো বাথরুমে বা ড্রয়ারের ভেতরে রেখে দিলেই হলো!
গাছ বাঁচান ছত্রাক থেকে
পছন্দের গাছে ফাঙ্গাস হলে গরম পানিতে টি ব্যাগ ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পানিটুকু স্প্রে বোতলে ঢুকিয়ে মাটিতে আর পাতায় স্প্রে করুন সকাল-বিকেল। ছত্রাক কমে যাবে।
আগামী কাল শুক্রবার শুরু হচ্ছে রমজান মাস। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে মহাপরিচালক সাক্ষরিত এই সময়সূচি প্রকাশ করা হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ঘোষণা করা সময়সূচি অনুযায়ী প্রথম রোজার সেহরির শেষ সময় (২৪ মার্চ) ভোর ৪:৩৯ মিনিট। আর ইফতার হবে ৬:১৪ মিনিটে।
তবে দূরত্ব অনুযায়ী ঢাকার সময়ের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১১ মিনিট পর্যন্ত যোগ করে ও ১০ মিনিট পর্যন্ত বিয়োগ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ সেহরি ও ইফতার করবেন বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছর ২৩ মার্চ থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান। চলবে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত। এই পুরো এক মাস পালিত হবে রোজা। ইবাদতে মশগুল থাকবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। রোজার সময় সেহরি ও ইফতার রোজাদারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামের নিয়মানুযায়ী রমজানে প্রতিটি সুস্থ-সবল মানুষের জন্য রোজা রাখা বাধ্যতামূলক। তাই ফজরের আগে সেহরি খাওয়ার মাধ্যমে রোজা শুরু করতে হয় এবং সন্ধ্যায় ইফতারের মাধ্যমে দিনের রোজার সমাপ্তি ঘটে। এই দুটি সময়ে কিন্তু নিয়ত এবং দোয়া করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ, সেহরি খাওয়ার পর রোজা রাখার নিয়ত করতে হয়, আবার ইফতারের আগে দোয়া করে ইফতার শুরু করতে হয়।
রোজার আরবি নিয়ত:
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
রোজার নিয়তের বাংলা উচ্চারণ : নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম, মিন শাহরি রমাদানাল মুবারাক; ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু, ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়্যত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা তথা পানাহার থেকে বিরত থাকাকে) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
ইফতারের দোয়া
بسم الله اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
বাংলা উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা লাকা ছুমতু ওয়া আলা রিযক্বিকা ওয়া আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য রোজা রেখেছি এবং তোমারই দেয়া রিজিজের মাধ্যমে ইফতার করছি। (মুআজ ইবনে জাহরা থেকে বর্ণিত, আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৫৮)
‘এসএসসির গল্পটা বলো এবার।’ টনি ভাইয়াকে তাগাদা দেয় রবিন।
‘১৯৮৪ সালে কার্লো রুবিয়ার ডব্লিউ ও জেড বোসন আবিষ্কারের পর এক প্রকার এগিয়েই যায় ইউরোপ।’ টনি ভাইয়া একটা লম্বা কাহিনি ফাঁদতে চলেছেন, ‘তখন আরেক ধাপ এগিয়ে তারা যেতে চায়। রীতিমতো মনস্তাত্ত্বিক খেলা তারা শুরু করেছে। এই ব্যাপারটা আরও বেগবান হলো। কারণ, তখন সার্নের মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দিলেন রুবিয়া। ১৯৮৯ সালে। তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং শক্ত ধাতুতে গড়া মানুষ। হার না মানতে নারাজ। তিনি তখন এলএইচসি নামের বিশাল প্রজেক্ট দাঁড় করার চেষ্টা করলেন। যেটা হবে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কণাত্বরক যন্ত্র। তাদের অন্য লক্ষ্য যা-ই হোক, মূল লক্ষ্য হবে হিগস বোসন শনাক্ত করা। এ ঘোষণা তাতিয়ে দিল মার্কিন বিজ্ঞানীদের। তারাও ভাবলেন কিছু একটা করতে হবে।’
‘তারাও তখনি নেমে পড়ল?’ রবিন জিজ্ঞেস করল।
‘কাছাকাছি সময়ে,’ বললেন টনি ভাইয়া।’ অবশ্য ১৯৭৭ সাল থেকেই তারা এই সুপার কোলাইডার বানানোর তাগাদা দিচ্ছিলেন। কিন্তু অর্থের বরাদ্দ মিলছিল না। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় বসলেন সাবেক হলিউড তারকা রোনাল্ড রেগান। ভদ্রলোক সিনেমার মতোই দ্রুতগতিতে ছোটাতে চাইছিলেন নিজের দেশটাকে। রোমান্টিক, আগ্রাসী এই প্রেসিডেন্ট চেয়েছিলেন কল্পবিজ্ঞানে দেখানো যন্ত্র-অস্ত্রগুলো তৈরি করতে যেন মার্কিন বিজ্ঞানীরা কাজে লেগে পড়েন। বেশির ভাগই অবশ্য অসম্ভব। কিন্তু সব তো নয়, বিজ্ঞানীদের তখন পোয়াবারো। রেগানেকে যদি বোঝানো যায়, এসএসসির মতো একটা সুপার কোলাইডার বানানো যায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র চলে যাবে সব প্রতিদ্বন্দ্বীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৯৮৭ রেগান ঘোষণা দিলেন তারা সত্যি সত্যিই এসএসসি বানাবে…’
‘আচ্ছা,’ টনি ভাইয়াকে থামিয়ে আবার মাঝখানে প্রশ্ন করে রবিন, ‘বারবার এসএসসির কথা বলছ? এটার পূর্ণ মানে কী আর এলএইচসির সঙ্গে এর পার্থক্য কোথায়?’
‘এসএসসি হলো সুপার কন্ডাক্টিং সুপার কোলাইডার।’
‘সুপার কন্ডাক্টিং কী?’
‘অতি পরিবাহী। পরিবাহী কি জানিস তো?’ টনি ভাইয়া জানতে চান । ‘হ্যাঁ, তাপ বা বিদ্যুৎ পরিবহন করে যে জিনিস।’
‘এখানে বিদ্যুতের কথা আসছে। এখন বল কত ধরনের পরিবাহীর কথা তুই জানিস?’
‘তিন ধরনের,’ রবিন জবাব দেয়। তারপর যোগ করে, ‘অপরিবাহী, সুপরিবাহী, আর কুপরিবাহী।’
‘কোনটার কাজ কী?’ রবিনকে আরেকটু বাজিয়ে দেখতে চাইছেন টনি ভাইয়া ৷
‘যেসব বস্তু বা ধাতু খুব ভালোভাবে বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে, তাদের বলে সুপরিবাহী।’ রবিন বলে, ‘যেগুলো একেবারেই বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না, সেগুলো অপরিবাহী। আর কুপরিবাহী খুব সামান্য বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে।’
‘ঠিক,’ বলে পিঠ চাপড়ে দিলেন টনি ভাইয়া। ‘আরও দুই ধরনের পরিবাহী আছে। সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধপরিবাহী আর সুপার কন্ডাক্টর বা অতিপরিবাহী। ‘এখন নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না, এই সুপার কন্ডাক্টর কেমন কাজ করে?’
‘কিছুটা বুঝতে পারছি,’ রবিন বলে।
‘কিছুটা বুঝলেই হবে। বিজ্ঞানীরা সরাসরি ক্ষমতাবানদেরই দোষারোপ করেছিলেন। বলেছিলেন, টাকা দিতে গড়িমসি করার কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা কাজে গতি আনতে পারেননি। অবশ্য সরকারি কর্তারা পাল্টা দোষারোপ করতে ছাড়েনি। তাদের দাবি, যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি কলাইডার। কোনো একটা কলাইডারে বাড়তি নজর না দিয়ে তারা সব কয়েকটির পেছনে ছুটছেন। কলাইডারের জন্য বরাদ্দের টাকা তিনটাতেই সমান ভাগে ভাগ করছেন। অন্যদিকে ইউরোপে ঘটছে উল্টোটা। তারা সব দেশের টাকা এক জায়গায় করে ঢালছে একটা যন্ত্রের পেছেনে। এগিয়ে তো তারা যাবেই।’
‘দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপ করলে কাজের কাজ তো কিছুই হয় না।’ রবিন বলে।
‘হ্যাঁ,’ জবাব দেন টনি ভাইয়া। ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। আরও বুঝতে পেরেছিলেন যে ডিটেক্টরগুলো আছে, সেগুলো দিয়ে ঈশ্বর কণা ধরা সম্ভব নয়। তাই বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলোচনা করে ঘোষণা দিলেন, হিগস বোসন শনাক্তের জন্য তারা বানাবে সুপার কন্ডাক্টিং সুপার কোলাইডার।’
‘এর কাজের ধরন কেমন?’
‘আগেই বলেছি, সুপার কন্ডাক্টর মানে অতি পরিবাহী। এই যন্ত্রে বিদ্যুৎ প্রবাহের জন্য যেসব তার ব্যবহার করার কথা ভাবছিলেন বিজ্ঞানীরা, সেগুলো সুপার কন্ডাক্টর অর্থাৎ এই তারের বৈদ্যুতিক রোধ নেই বললেই চলে। এর ভেতর দিয়ে যন্ত্র প্রবাহিত বিদ্যুতের প্রায় সবটুকুই ব্যবহার করা যাবে। এতে তুলনামূলক কম বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান পাওয়া যাবে।’
‘কী পরিমাণ শক্তি সুপার কোলাইডারে উৎপন্ন করা হবে সেটার হিসাব কি করা হয়েছিল?’ রবিন জিজ্ঞেস করে।
‘হুম, ৪০ টেরা ইলেকট্রন ভোল্ট। অর্থাৎ ৪০ হাজার গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট। অর্থাৎ ৪০, 000, 000, 000, ০০০ ইলেকট্রন ভোল্ট। একটা ইলেকট্রনকে এক ভোল্ট বৈদ্যুতিক বিভবের ভেতর ছোটাতে যে পরিমাণ শক্তির দরকার হয়, সেটা হলো এক ইলেকট্রন ভোল্ট।’
‘সার্নের বিজ্ঞানীরা তখন কী করলেন? পাল্টা জবাব তো দিতে হবে!’ রবিন বলে।
২.
‘নিউইয়র্ক টাইমসের ওই লেখাটার কথা বলেছিলাম মনে আছে?’ টনি ভাইয়া রবিনকে ঝালাই করে নেয়ার সুযোগ দিলেন।
‘ওই যে ইউরোপ থ্রি, ইউএসএ নট ইভেন জেড জিরো- ওটা?
‘হুম, লেখাটাতে একই সঙ্গে আশা আর হতাশার কথা শোনানো হয়েছিল। হতাশার ব্যাপারটা হলো মার্কিনিদের টেক্কা দিয়ে ইউরোপীয়দের জয়। ভালো খবরটা হলো স্ট্যান্ডার্ড মডেল যে সফল, প্যারিটি ভায়োলশন যে অবাস্তব নয়, সেই ধারণাটা আরও স্বচ্ছ হয়েছে এই আবিষ্কারের পর।’
‘একটা কথা বলো তো, ভাইয়া, ‘রবিন মুখ খোলে, ‘ততদিনে পাঁচটা মূল কণিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও কেন ওভাবে লেখা হলো, কেন মনে করল ওটা তাদের পরাজয়।’
‘প্রতিযোগিতায় হেরে যাওয়া খারাপ খবর তো বটেই। ওই এডিটোরিয়ালে লেখা হলো, আমেরিকার লং আইল্যান্ডে ব্রুকহ্যাভেন ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে বানানো হচ্ছিল একটা ডিটেকটর। ইসাবেল। প্রায় ৫০ কোটি ডলার ব্যয় করে নির্মিত এই যন্ত্রের মূল লক্ষ্য ছিল W+, W- ও Z° কণা শনাক্ত করা। সার্ন সেটা আগে বের করে ফেলল। তাই পত্রিকাওয়ালারা মনে করতেই পারে, পুরো টাকাটাই জলে গেল। এসএসসি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নিলেন পদার্থবিজ্ঞানীদের দুটি গ্রুপ। এসএসসির বিপক্ষে সরব হলেন নোবেলজয়ী দুই পদার্থবিজ্ঞানী ফিলিপ ওয়ারেন অ্যান্ডারসন ও নিকোলাস ব্লোয়েমবারজে। তারা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাইলেন, কাদের টাকায় এসব বৈজ্ঞানিক গবেষণা হয়। সেই করদাতাদের আদৌ কোনো কাজে আসবে কিনা এই যন্ত্রদানব।’
‘পক্ষে কারা ছিলেন?’ রবিন জানতে চাইল।
‘কোয়ার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা মারে গেলম্যান তো রীতিমতো গালমন্দ করলেন এসএসসি বিরোধীদের। আর ছিলেন লিও ল্যাডারম্যান, তিনি বিজ্ঞান সাংবাদিক ডিক টেরেসির সঙ্গে যৌথভাবে লিখলেন সেই বিখ্যাত বই ‘দ্য গড পারটিকেল : ইফ দ্য ইউনিভার্স ইজ দ্য আনসার, হোয়াট ইজ দ্য কোয়েশ্চেন।’ এই বইয়ে তারা দেখালেন, কেন ঈশ্বর কণা জরুরি। কী দেবে এই কণা মানবজাতিকে। কিন্তু অর্থের জোগান যারা দেয়, সেই রাজনীতিবিদরা ততদিনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। তা ছাড়া রুশ-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধও শেষ হয়েছে ততদিনে, সুতরাং কাউকে দেখিয়ে দেয়ার কিছু নেই। ইউরোপের কাছে হারাটা তাদের অতটা বিচলিত করছে না । ফলে বন্ধ হয়ে গেল এই প্রজেক্ট।’
রোজায় আরব, তুরস্ক, ইউরোপীয় ও এশীয় খাবারের পসরা সাজিয়ে বসছে রাজধানীর অভিজাত হোটেল ওয়েস্টিন ও শেরাটন। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নামকরা শেফদের তৈরি আড়াই শতাধিক খাবার সেখানে পাওয়া যাবে। মিলবে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় ইফতারিও।
কাবাব, বাকলাভা, সি ফুড পায়েলা, ল্যাম্ব ওউজি, তুর্কি ডোনার, আদানা কাবাব, তুলুম্বার মতো অনেক তুর্কি খাবারের আয়োজন করেছে শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেন। ঐতিহ্যবাহী খাবারের আয়োজনে পিছিয়ে নেই আরেক তারকা হোটেল ওয়েস্টিনও। তুর্কি শেফদের সহযোগিতায় রমজান মাসে ওয়েস্টিনের খাবার তালিকায় থাকছে চিকেন কাবসা রাইস, মিক্সড গ্রিল, সিফুড মাচবুস, ল্যাম্ব শ্যাঙ্ক, মোগল চাপ, গ্রিলড চিমিচুরি শ্যামন, মাহলাবিয়া, কুনাফাসহ বাহারি আইটেম।
অভিজাত হোটেল দুটির খাবারের তালিকায় রাখা হয়েছে জাপানি আইটেমও। সুশি, সাশিমি ও তেরিয়ার্কির মিলবে সেখানে। জাপানি মাস্টারশেফ হিরোমি ইয়োনেকাওয়ার সুস্বাদু জাপানিজ খাবারের সঙ্গে ইফতারে বেন্টো বক্সও পাওয়া যাবে।
মধ্যপ্রাচ্য ও তুর্কি খাবারের অভিজ্ঞতা দিতে ওয়েস্টিন ঢাকার দ্য সিজনাল টেস্ট এবং শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেনে থাকছে বুফে ইফতারি ও রাতের খাবার (প্রতিদিন) এবং বুফে সাহরির (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার রাত ও সরকারি ছুটির আগের রাতে) ব্যবস্থা।
ওয়েস্টিন ঢাকার সিজনাল টেস্টে ইফতার ও রাতের প্রায় ২৫০ আইটেমে বুফে খাবারে মোট খরচ পড়বে ৮ হাজার ৮৫০ টাকা এবং সাহরি জনপ্রতি ৫ হাজার ৫৫০ টাকা। অন্যদিকে শেরাটন ঢাকার দ্য গার্ডেন কিচেনে ইফতার ও রাতের খাবারের মোট খরচ পড়বে ৯ হাজার ৯৫০ টাকা ও সাহরি খরচ হবে ৫ হাজার ৫৫০ টাকা।
এ ছাড়া হোটেল ওয়েস্টিনে মিলবে প্লাটিনাম, গোল্ড ও সিলভার ইফতারি বক্স এবং শেরাটনে বিলাসবহুল, প্রিমিয়াম ও ক্লাসিক ইফতারি বক্স। তারা মধ্যপ্রাচ্য এবং তুরস্কের সিগনেচার খাবারের সঙ্গে সরবরাহ করবে ঐতিহ্যবাহী দেশীয় ইফতারের খাবার ও সুস্বাদু জ্যাম।
এখন নানান বাস্তবতায় আর সুযোগের জন্য অনেক নারী দেশের বাইরে চাকরি করছেন। পরিবারসহ কিংবা একাই নানান চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিদেশে চাকরির নানান বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া থেকে লিখেছেন প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান জুনিপার নেটওয়ার্কের ভার্চুয়াল সেলস ম্যানেজার আফরিনা খান লোটাস।
কেন যেতে চান তা জানুন: বিদেশে অনেক চাকরির সুযোগ আছে। সুযোগ নিতে চাইলে প্রথমে নিজেকে প্রস্তুত করুন। কেন যেতে চান, তা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেকেই দেশের বাইরে স্থায়ী আবাসনের জন্য চাকরি খোঁজেন, আবার অনেকেই দেশের বাইরে চাকরির মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করে আবার দেশে ফিরে আসেন। চেষ্টা করুন জ্ঞান আর অভিজ্ঞতা বাড়ে- এমন কাজের সুযোগ নিয়ে দেশের বাইরে যেতে। স্থায়ী আবাসনের জন্য যেতেই পারেন, তবে নিজের ক্যারিয়ার তৈরির জন্যও কিন্তু বিদেশে চাকরির সুযোগ আছে এখন। নিজেকে ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের জন্য তৈরি করতে সুযোগের সন্ধান করুন।
নিজের দক্ষতা নিয়ে বাইরে তাকাতে হবে: আমাদের দেশের নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্বমানের কিন্তু। যেহেতু আমরা বাইরের দুনিয়ায় কী চাকরি বা কাজের সুযোগ আছে তা জানার চেষ্টা করি না। তাই আমাদের নারীদের দেশের বাইরে আসার হার খুবই কম। করপোরেট ক্ষেত্রে দেশের বাইরে নারীদের অনেক ধরনের কাজের সুযোগ আছে। বিশেষ করে আইটি ও ব্যবসাসংশ্লিষ্ট কাজে বিক্রয়, বিপণন থেকে শুরু করে নির্বাহী পদে নারীদের অনেক কাজের সুযোগ আছে।
নতুন দেশের জন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে: এশিয়ার দেশগুলোর সংস্কৃতি আমাদের দেশের মতো করে মানিয়ে নিতে খুব একটা সমস্যা হয় না। ইউরোপ বা আমেরিকার দেশ হলে আবহাওয়া থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন বিষয়কে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। একটু চেষ্টা করলেই নারী যেকোনো পরিবেশে যেকোনোভাবে মানিয়ে নিতে পারে। বিদেশ-বিভুঁইয়ের জন্য দুশ্চিন্তা করা যাবে না। নতুন চ্যালেঞ্জ মনে করে এগিয়ে যেতে হবে।
দেশে সংযোগ রাখুন: দেশের বাইরে গেলে শুধু কাজ আর কাজ করে ব্যস্ত থাকলে চলবে না। দেশের খোঁজ রাখতে হবে। পরিবার ও পরিজনের খোঁজ রাখতে হবে। দূরে সরে যাওয়া মানে দূরত্ব নয়, এটা বিশ্বাস করে নিজের পরিবার ও স্বজনদের সঙ্গে যুক্ত থাকুন। নিয়মিত ছুটিতে দেশে আসার চেষ্টা করুন। নিজের কমিউনিটি বা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। দেশের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী ধরনের কাজ চলছে, কী সংস্কৃতি চর্চা হচ্ছে তা জানুন।
সুযোগ বিস্তৃত করুন: দেশের বাইরে কাজের জন্য গেলে একটি কাজে আটকে থাকলে চলবে না। দেশের মতো করেই ক্যারিয়ার সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। প্রয়োজন হলে কর্মক্ষেত্র ও প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করুন। সুযোগ সামনে এলে পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে তৈরি করুন। এক দেশ থেকে অন্য দেশে পদায়ন হলে সুযোগ নিন। নিজেকে বিশ্বের নানান প্রান্তে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করুন।
ভবিষ্যতের খেয়াল রাখুন: ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে তৈরি করুন। সঞ্চয় ও ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়টি খেয়াল রাখুন। আপনি যখন বিশ্ববাজারে কাজ করবেন, তখন নানান বৈশ্বিক সংকটের জন্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। এসব ঝুঁকি বিবেচনা করে নিজের বর্তমান ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা গুছিয়ে নিন।
যেভাবে বিদেশে চাকরি খুঁজবেন
-লিংকডইনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নানান দেশের চাকরির খোঁজ পেতে পারেন। চেষ্টা করুন বিভিন্ন জব পোর্টালের মাধ্যমে চাকরির খোঁজ রাখতে।
-বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ও ক্যারিয়ার-সংশ্লিষ্ট কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত থাকুন, যারা বিভিন্ন দেশে কাজ করছেন, তাদের কাছে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাখুন।
-এখন বাংলাদেশে কাজ করছে এমন অনেক প্রতিষ্ঠানের নানান দেশে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে নতুন চ্যালেঞ্জ নেয়ার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
-বিদেশি বন্ধুদের কাছে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাখতে পারেন।
-একেক দেশের চাকরির প্রকরণ অনুসারে আবেদন প্রক্রিয়া বা সিভি একেক রকম হয়। সেই বিষয়গুলো অনলাইনে সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট কিংবা আগে চাকরি করেছেন এমন ব্যক্তিদের কাছ থেকে জেনে নিতে পারেন।
-বিদেশে চাকরির জন্য নানান দেশের নানান নিয়ম, সেসব সম্পর্কে ধারণা রাখুন। চাকরির নিয়োগ, বেতনসহ নানান সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকেই জানতে পারেন।
সময় পাল্টেছে, কাজে লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যও কমছে দিনকে দিন। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এখনো আঁধার কাটেনি যেন। এখনো অলিখিত নিয়ম হিসেবেই রয়েছে সন্তান জন্মের পর মাকেই সন্তানের দেখভাল করতে হবে। প্রয়োজনে নিজের ক্যারিয়ারও বিসর্জন দিতে হবে। ক্যারিয়ার আর সন্তান দুটোকেই আগলে রাখতে চান কেউ কেউ। সে ক্ষেত্রে মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে যোগদানের সময়টুকুতে শুরু হয় আরেক যুদ্ধ। সন্তানকে কার কাছে রেখে যাবেন, কিংবা কর্মস্থল মানবে তো সন্তানকে অফিসে রাখার বিষয়টি- এসব চিন্তায় অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা সন্তান জন্মদানের পর চাকরি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। এমন সিদ্ধান্ত পরবর্তী সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।
তবে এমন ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসেছেন অনেকেই। সন্তান জন্মদানের পর তাকে দেখাশোনার দায়িত্ব শুধু মায়ের এমনটা মানতে একদমই নারাজ মনোয়ার রুবেল। একটি সরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তিনি। প্রথম সন্তান জন্মের পর স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর নিজ থেকেই প্রস্তাব করেন সন্তানকে তার কাছে রাখার। অর্থাৎ স্ত্রী যাতে অফিসে কাজের সময়টুকুতে স্বস্তি নিয়ে পুরোপুরি মনোযোগী থাকতে পারেন। এ জন্য সন্তানকে তিনি নিজের সঙ্গে কর্মস্থলে নিয়ে যাওয়া শুরু করেন। তার মতে, কর্মজীবী মা কিংবা একদম আটপৌরে গৃহিণী সবারই অধিকার রয়েছে, এ দায়িত্ব সন্তানের বাবার সঙ্গে পুরোপুরি ভাগ করে নেয়ার।
তিনি বলেন, ‘আমি ভীষণভাবে অনুভব করি, বাবা-মা দুজনকে বাচ্চা দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে হবে এবং দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নিতে হবে। যদিও আমি যা-ই করি এর তুলনায় আমার স্ত্রীর যে ত্যাগ তার শতভাগের একাংশও করতে পারি না। প্রতি রাতে আমি টেরও পাই না, সে কতবার উঠে বাচ্চাকে খাওয়াচ্ছে। আমাকে নির্বিঘ্ন ঘুমে রাখার তার প্রাণান্ত চেষ্টার প্রতি আমি অকৃতজ্ঞ হই কী করে।
কর্মক্ষেত্রেও সহযোগিতা পেয়েছেন বলে সন্তানকে নিজের কাছে রেখে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন বলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন সোনালী ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ এ কর্মকর্তা। এ কথার সূত্র ধরে তিনি বলেন, ‘‘আমি চেয়েছি আমার স্ত্রীর অফিস সময়টুকু অন্তত নির্ঝঞ্ঝাট কাটুক। বাচ্চার এক বছর বয়স ধরে আমি আমার মতো চেষ্টা করেছি। পুরুষ হয়ে অফিসে বাচ্চা নেয়া বা রাখার ক্ষেত্রে আমার বস ও সহকর্মীদের সহযোগিতা স্মরণ করতেই হবে। আমার অফিসে সর্বোচ্চ বস একজন নারী হওয়ায় হয়তো বিষয়টি আরও সহজ হয়েছে। তবে হ্যাঁ, একটি বিষয় দারুণ উপভোগ করি যখন কোনো নারী সহকর্মী এসে আমাকে জানান, তিনি তার বরকে উদাহরণ টেনে আমার গল্প করেছেন। ‘বলেছি, ভাইয়া তার মেয়েকে সারা দিন অফিস রাখেন। তাকে বলেছি, শেখো।’ এই ছোট বিষয়ে তাদের বিস্ময়কর অভিব্যক্তি দেখে ভালো লাগে।’
সন্তান মায়ের সঙ্গে কর্মস্থলে থাকার ঘটনা প্রচলিত হলেও কোনো বাবা তার সন্তানকে নিয়ে অফিসে কাজ করছেন এটা একদমই প্রচলিত না। ফলে প্রথম দিকে বিষয়টিকে অনেকেই আড়চোখে দেখতেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সবার ধারণা পাল্টেছে। এ ধারণাটিকে তারা গ্রহণ করা শুরু করেছেন। এ প্রসঙ্গে মনোয়ার রুবেল বলেন, একটি অতি সাধারণ অনুভূতি অন্যদের এত ছুঁয়েছে দেখে অনুপ্রাণিত হই। আমার দেখাদেখি একজন পুরুষ সহকর্মী সেদিন বললেন, তিনিও মাঝেমধ্যে অফিসে বাচ্চা নিয়ে আসার প্ল্যান করছেন। তিনি ঢেঁকুর তোলার নিয়ম শিখছেন ইউটিউবে। বাচ্চার ডায়াপার পাল্টানোর ভিডিও দেখছেন। আমি অফিসের কোণে দাঁড়িয়ে গল্প বলার ছলে বলার চেষ্টা করি বাচ্চার লালন-পালন, বাচ্চার যত্ন নেয়া একজন স্মার্ট পুরুষের লক্ষণ। প্রথম দিকে ইতস্তত করা সহকর্মীরা এখন এটা মেনে নেন। আমার মেয়েকে কোলে তুলে আদর করেন। ডায়াপার পাল্টাতে সাহায্য করেন। সব মিলে এমন পরিবর্তন সত্যিই ভালো লাগার জন্ম দেয়।
ফসিল, আরমানি, ভারসাচি, প্রাডা কিংবা গুচ্চি আন্তর্জাতিক এসব ব্র্যান্ডের লোগো বা নামের পণ্য আশপাশে দেখলেই যেন নড়েচড়ে বসি সবাই। কারণ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমন পণ্য শোভা পায় তারকা, মডেল এবং ধনী ব্যক্তিত্বদের মধ্যে। কিন্তু সুখবর এই- চাহিদা মেটাতে বিদেশি এসব পণ্যের ভিড়ে দেশীয় বাজার স্বতঃস্ফূর্ত জায়গা করে নিয়ে এগিয়ে চলছে সগৌরবে।
নামিদামি এসব ব্র্যান্ডের ভিড়ে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে সাহস করে নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ২০০৫ সাল থেকে কাজ করছেন ‘কারিগর’ এবং ‘ট্যান’-এর উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা অংশীদার সহযোগী তানিয়া ওয়াহাব। সম্প্রতি স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখায় ৫টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড দেয় বাংলাদেশের ব্যবসায়িদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে এই সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
রাজধানীর হাজারীবাগে রয়েছে তার চামড়াজাত পণ্যের কারখানা। বর্তমানে এখানে তার নেতৃত্বে চামড়াজাত প্রায় ২৫ রকমের পণ্য নিয়ে কাজ করছেন শতাধিক কর্মী। তার স্বপ্ন এই কর্মী সংখ্যা একদিন পৌঁছাবে দশ হাজারে আর নিজের ব্র্যান্ড ‘ট্যান’ পরিচিতি পাবে আন্তর্জাতিকভাবে। বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের নতুন উদ্যোগ নিয়ে জানতে চাইলে তানিয়া ওয়াহাব বলেন, ‘করোনার আগে দেশের বাইরে জাপান ও ইতালিতে পণ্য সরবরাহ করলেও এখন কাজ করছি দেশের গণ্ডিতে এবং করপোরেট ক্ষেত্রে।’
বর্তমানে দেশের বেশ কিছু শীর্ষস্থানীয় এবং স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে পণ্য সরবরাহ করে তার প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া, বিভিন্ন টেলিকম কোম্পানি, ব্যাংক, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে কাজ হয়।
তানিয়া পড়াশোনা করেছেন লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে। সেই সুবাদেই মাথায় আসে চামড়াজাত পণ্য নিয়ে কাজ করার ভাবনা। এরই ধারাবাহিকতায় উৎপাদন আর বিপণনের কাজটা শুরু করেন স্নাতক শেষবর্ষে এসে। তখন এই খাতে নারী উদ্যোক্তা না থাকলেও এখন আছেন প্রায় ৫০ জন নারী।
অনুপ্রেরণা, স্বপ্ন দেখার এবং দেখানোর এই যাত্রায় পুরস্কারের ঝুলিটাও তাই ছোট নয়। এসএমই ফাউন্ডেশনের সেরা উদ্যোক্তা পুরস্কার, বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন থেকে সেরা এসএমই নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার, ডেইলি স্টারের দেয়া আউটস্ট্যান্ডিং উইমেন অ্যান্ড বিজনেস অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছেন তিনি। চামড়াজাত পণ্যা নিয়ে আগ্রহী এবং পড়াশোনা করছেন এমন মানুষদের নিয়ে গড়ে তুলছেন লেদার ক্রাফটস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ। সভাপতি হিসেবে তদারকিও করছেন এটি। কারণ, দেশের এই চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা দেশে-বিদেশে বিপুল।
নিজের এবং অন্য উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এই খাতের প্রতিবন্ধকতা মনে করেন এসব পণ্যের বিপণন চ্যালেঞ্জকে। কারণ দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক এই বৃহৎ বাজার খুঁজে পেতে বেগ পেতে হয় অনেক বেশি। তাই কাজের পরিধি আশানুরূপ হয় না।
একই সঙ্গে, ‘বাংলাদেশে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের অগ্রগতি সম্পর্কে অবগত নয় সংগ্রহকারী এবং ক্রেতারাও। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প খাতের যে সুনাম, চামড়াশিল্পের সেই প্রসারটা নেই। বাংলাদেশেও যে ভালোমানের ব্যাগ তৈরি হয় এবং চামড়াশিল্প, ব্যাগশিল্প, গয়নাশিল্প যে এতটা এগিয়েছে এটা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে চাই’- জানান এই নারী উদ্যোক্তা। তবে হাজারীবাগ থেকে সাভারে ট্যানারি কারখানাগুলো প্রতিস্থাপন করা হলেও এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (বর্জ্য জল শোধন প্রক্রিয়া) যথাযথ ব্যবস্থা হয়নি এখনো। যা বাড়াচ্ছে বৈশ্বিক পরিবেশের ঝুঁকি এবং বাইরের দেশগুলোও তাই দেশের প্রভাবশালী এই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে রেখেছে।
চামড়াজাত পণ্যের ব্যবহার-উপযোগিতা, দীর্ঘস্থায়ীত্ব, টেকসই নিশ্চয়তা নিয়ে দ্রুত বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ নয় বলে বুটিক, ফ্যাশন, লাইফস্টাইলের অন্যান্য অঙ্গনের মতো চামড়াজাত পণ্যের প্রদর্শনীর সুযোগ কম- তাই এসব পণ্য নিয়ে মানুষ জানতে পারছে খুব কম।
তবে করোনা-পরবর্তী সময়ে ঘুরে দাঁড়াতে আসন্ন ঈদ আর উৎসবে দেশীয় সব শিল্পের প্রতি যত্নবান হবেন- সবারই এমনটাই প্রত্যাশা।