মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

ফটোফি বর্ষসেরা আলোকচিত্রী ইমন

ফটোফি বর্ষসেরা আলোকচিত্রী পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিজয়ীর হাতে সনদ তুলে দেন অতিথিরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত
প্রতিবেদক,
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৭:৩৭

লালমনিরহাটের ছেলে ইমন মোস্তাক আহমেদ। জীবিকার তাগিদে বাড়ি ছেড়ে পড়ে থাকতে হচ্ছে ঢাকা শহরে। তবে ইট-পাথরের এই শহরের অলিগলিতে তিনি তার ফেলে আসা প্রকৃতিকে খুঁজে বেড়ান। কয়েক বছর ধরে তিনি মোবাইলফোনের ক্যামেরায় ধারণ করছেন প্রকৃতির শহুরে রূপ। তারই প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর তোলা ‘ইন দ্য সার্চ অব লস্ট হারমোনি’ ছবিতে।

আর এই ছবির জন্য তরুণ ইমন জিতে নিয়েছেন একাদশ ‘ফটোফি বর্ষসেরা আলোকচিত্রী পুরস্কার’। ঢাকার ফটোফি একাডেমি অব ফাইন-আর্ট ফটোগ্রাফি কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে ইমন মোস্তাক আহমেদ পেয়েছেন একটি ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও ২০ হাজার টাকা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন আলোকচিত্রী শফিকুল আলম কিরণ, ফটোসাংবাদিক ও গবেষক সাহাদাত পারভেজ, আলোকচিত্রী জয় কে রায় চৌধুরী প্রমুখ।

শফিকুল আলম কিরণ বলেন, ‘স্টিললাইফও যে জীবন্ত হতে পারে, ইমনের ছবিগুলো দেখলে তা অনুভব করা যায়। ক্যামেরা ও ক্যামেরা সরঞ্জামের সীমাবদ্ধতাকে ডিঙিয়ে ইমন এগিয়ে যাচ্ছে, তাকে অভিবাদন জানাই।’

ফটোফির প্রধান সমন্বয়ক সিরাজুল লিটন বলেন, ‘২০১১ সাল থেকে এই পুরস্কার দেয়া শুরু হয়েছে। প্রতিশ্রুতিশীল ফাইন-আর্ট আলোকচিত্রীদের উৎসাহিত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’


পাসপোর্ট ছাড়াই মিলবে সৌদি আরব ভ্রমণের সুযোগ, তবে হজ নয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এখন থেকে পাসপোর্ট ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব ভ্রমণ করা যাবে। এ উপলক্ষে এরই মধ্যে ডিজিটাল নথি তৈরির ব্যবস্থা করেছে সৌদি সরকার। সম্প্রতি দেশটির সংবাদমাধ্যম অ্যারাবিয়ান বিজনেসের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

অ্যারাবিয়ান বিজনেস জানিয়েছে, রিয়াদের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তি সম্মেলন লিপ ইয়ার ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনে আগত দর্শনার্থীদের সামনে ওই ডিজিটাল নথি ব্যবস্থা প্রদর্শন করেছে সৌদি আরবের পাসপোর্ট বিভাগ। অন্যদিকে উন্নত প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) গুরুত্ব তুলে ধরে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এই ডিজিটাল ডকুমেন্ট সার্ভিস সৌদি নাগরিক, দর্শনার্থীসহ সুবিধাভোগীদের দেওয়া ডিজিটাল ও প্রযুক্তিগত সমাধানগুলোর একটি। এর আওতায় থাকা ব্যক্তিরা সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ সেবাগুলো পাবেন।

এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো, একটি একক নম্বর দেওয়ার মাধ্যমে দর্শনার্থীদের সৌদি আরবে আগমন প্রক্রিয়া আরও সহজ করা। এই ব্যবস্থা দর্শনার্থী বা ভ্রমণকারীদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘অ্যাবশার’ ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার দেবে। সেখান থেকে তারা নিজেদের ডিজিটাল পরিচয় বা একক নম্বর পাবেন।

এই ডিজিটাল পরিচয় ব্যক্তির মোবাইল ফোনে থাকবে। এর মাধ্যমে ভ্রমণকারী সৌদি আরবের কোন স্থানে রয়েছেন, তাও জানা যাবে। ফলে কোনো কাগুজে পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে না।

তবে এ সুবিধা হজযাত্রীদের জন্য প্রযোজ্য হবে না। বরং এ বছর থেকে অনুমতি ছাড়া হজ পালন করলে কঠোর শাস্তির বিধান চালু করেছে সৌদি আরব। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় জানায়, এ বছর অনুমতি ছাড়া হজ করলে গুনতে হবে ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ লাখ টাকার সমান। এ ছাড়া যিনি বা যারা অনুমতিবিহীন ব্যক্তিদের মক্কায় পরিবহন করে ধরা পড়বেন, তাদেরকেও একই পরিমাণ অর্থ জরিমানা করা হবে।


২০২৮ সালের মধ্যে ঢাকায় রাইডশেয়ারিং সুবিধায় নারী কর্মশক্তি বাড়বে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ভালো রাইডশেয়ারিং সুবিধা পাওয়ায় ২০২৮ সালের মধ্যে রাজধানীতে নারী কর্মশক্তির হার ১৩ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ নারী ঢাকার কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারেন। যাতায়াতের সুব্যবস্থার ফলে ঢাকায় নারী কর্মজীবী বাড়ছে।

সম্প্রতি অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন সম্ভাবনার তথ্য উঠে এসেছে। ‘রাইড-হেইলিং: অ্যা প্ল্যাটফর্ম ফর উইমেনস ইকোনমিক অপারচুনিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে রাইডশেয়ারিং অ্যাপ উবার।

প্রতিবেদনটিতে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে রাইডশেয়ারিং প্ল্যাটফর্মগুলোর কার্যকর ভূমিকার কথা উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, কর্মশক্তিতে আরও বেশি নারীকে যুক্ত করতে রাইডশেয়ারিং সার্ভিস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের নারীদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণের পরিমাণ কম। ২০২২ সালে বিশ্বে নারীদের কর্মশক্তিতে অংশগ্রহণের হার ছিল ৪৭ শতাংশ, যা বাংলাদেশে ছিল ৪৩ শতাংশ। প্রতিবেদনটি অনুসারে, নারীর যাতায়াতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দুটি চ্যালেঞ্জ হলো- নিরাপদ যানবাহনের স্বল্পতা এবং কর্মজীবন ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে বর্তমান ভারসাম্যহীনতা।

এতে আরও বলা হয়, এমন প্রেক্ষাপটে নারীদের কর্মশক্তিতে যোগদান কিংবা আর্থিক স্বাধীনতা অর্জনের জন্য উচ্চ অবস্থানে পৌঁছাতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে রাইডশেয়ারিং সার্ভিসগুলো।

উবার বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড নাশিদ ফেরদৌস কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সুযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উবার। দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য কর্মশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো খুবই জরুরি। অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য যাতায়াতব্যবস্থার ফলে আরও বেশিসংখ্যক নারীর জন্য কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এর মাধ্যমে নারীরা নিরাপদে ও সুবিধাজনকভাবে সরাসরি কমর্স্থল বা নিজের কাছাকাছি গণপরিবহন স্টেশন পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারেন। বর্তমান ও ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্যে অবদান রাখায় নারীদের সাহায্য করতে পেরে উবার গর্বিত।’


বাড়ছে গ্রা‌ফিক নভেলের পাঠক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফিচার ডেস্ক

গ্রাফিক নভেল ধারণাটি বাংলাদেশে খুব বেশি পুরাতন নয়। অতীতের তুলনায় বিশ্বজুড়ে বই পড়ার যে অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে এবং শিশু-কিশোররা ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়ছে তাদের বইয়ের জগতে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে গ্রাফিক নভেল খুব বড় একটা উপায় হতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশেও বিগত বছরগুলোতে বেশ কিছু গ্রাফিক নভেল ও কমিকস শুরু হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় সিরিজ হলো দুর্জয় ও মারুফ। ঢাকা কমিকস ও পাঞ্জেরী থেকে প্রকাশিত এই সিরিজের গল্প ও আর্টিস্ট তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ এবারের বইমেলায় নতুন একটি গ্রাফিক নভেল নিয়ে এসেছেন। রঙ্গন প্রকাশনী রঙ্গন প্রকাশনী স্পাই-থ্রিলারধর্মী গ্রাফিক নভেল নিশাচর। প্রকাশকরা বলছেন মেলার শেষ দিকে আসলেও মাত্র চারদিনে ৪০০ কপি বিক্রি হয়ে গেছে এই গ্রাফিক নভেল।

নিশাচর নিয়ে আর্টিস্ট তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ বলেন, আমাকে এই প্রজন্মের কমিকপ্রেমীরা চেনেন মূলত দুর্জয় এবং মারুফ চরিত্র দুটির কারণে। বিদেশি কমিকের যে বাংলাদেশি পাঠক, যারা নিজেদের কমিকসে পছন্দসই কোয়ালিটি, গল্প, আঁকা পাচ্ছিলেন না। তাদের বড় একটা অংশ এই সিরিজের মাধ্যমেই বাংলাদেশি কমিকের প্রতি ঝুঁকে পড়তে লাগলেন। আমরা দুর্জয় আর মারুফ সিরিজে তেমন কোয়ালিটি, গল্প, আর্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

সম্পদ বলেন, একটা প্রজন্মের পাঠক স্কুল থেকে কলেজ-ভার্সিটিতে উঠে যায় দুর্জয় আর মারুফ পড়তে পড়তে। দুর্জয় আর মারুফ তাদের চরম ভালোবাসার দুটি চরিত্রে পরিণত হয়। সেই ভালোবাসাই আমাকে নিশাচর গ্রাফিক নভেলটি তৈরি করতে সাহস দিয়েছে।

নিজের আঁকাআঁকি কবে থেকে শুরু এমন প্রশ্নের জবাবে সম্পদ বলেন, ১৯৯২ সালে সেবা প্রকাশনীর কিশোর পত্রিকায় তার আঁকাআঁকির শুরু। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ৮ বছর। তিনি বলেন, ‘‘কিশোর পত্রিকায় তার ছাপা প্রথম কমিক ‘রিংকু-পিংকুর বেড়া দেয়া’। সেটার প্রথম প্যানেলে কাজী আনোয়ার হোসেন স্যার নিজে থেকে দু’টো কথা লিখে দিয়েছিলেন যা আজীবনের পাথেয়।’’

সেই কমিকটি ছিল ২ পৃষ্ঠার গল্প। এরপর টানা ৫ বছর কিশোর পত্রিকায় লেখেন এবং আঁকেন। এরপর ২০০০ সালে কিশোর তারোকালোকে গবেট নামেও একটি কার্টুন একেছিলেন তিনি।

এ ছাড়া দেশের গণ্ডি পেরিয়ে তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ কাজ করেছেন ভারতেও। দেশটি ইয়ালি ড্রিমসের জন্য বিখ্যাত লেখক শামীক দাসগুপ্তের গল্পে ছবি এঁকেছেন। এছাড়া কাজ করেছেন দেবী চৌধুরাণী এবং রাকশাক কমিকে।

এখনকার গ্রাফিক নভেল নিয়ে তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ বলেন, ‘১৯৯২ থেকে ২০০০ কমিক আঁকি। দীর্ঘ ১৪ বছর পর দুর্জয় আর মারুফ লেখার মাধ্যমে নতুন করে আবার কমিক আঁকা শুরু। ২০২৩ পর্যন্ত ২৫টি পূর্ণাঙ্গ কমিক বই বের হয়েছে তার। দুর্জয় ১-১৮ বের হল ঢাকা কমিক্স থেকে। মারুফ ১-৬ এবং অপ্সরী ১ বের হল পাঞ্জেরী থেকে। অন্ধ আক্রোশ রঙ্গন প্রকাশনী থেকে বের হল।

তিনি বলেন, ‘এই ৮-৯ বছরের প্রচেষ্টায় আমার আঁকা ও লেখা এই ম্যাচিওর্ড কমিক আর গ্রাফিক নভেলগুলি একটা কাজ খুব ভালোমত করল। তা হল, কমিক যে শুধুই বাচ্চাদের বই না, কমিক যে বড়দের বইও হতে পারে তা বাংলাদেশের পাঠকদের এবং প্রকাশকদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। এর আগে তারা মনে করতেন, কমিক মানেই হাসির কিছু। রম্যরসের ছবিওয়ালা বইই কমিক। কিন্তু দুর্জয় আর মারুফ সিরিজ সেইসব চিন্তাকে পাল্টে দেয়।’

তবে নিশাচর গ্রাফিক নভেলটি সবদিক থেকে আলাদা বলে মনে করেন আর্টিস্ট। তিনি বলেন, এত কিছুর পরেও কোনো একটা না পাওয়ার অভাব ভেতরে থেকেই যাচ্ছিল। কমিক বা গ্রাফিক নভেলের জগতে আমি যা করতে পারি, তা যেন পুরোপুরি আমি করতে পারছি না। কোথায় যেন একটা অসম্পূর্ণতা থেকেই যাচ্ছিল। বড়দের জন্য কমিক এঁকে যাচ্ছি। প্রকাশকের অনেক বাধা আর নিষেধ উপেক্ষা করে গল্পে প্রয়োজনীয় ব্রুটালিটি, রোমান্স এসব আঁকছি। তবে দুর্বল গল্পকে ব্রুটালিটি আর যৌনতা দিয়ে চালাইনি। গল্পের জোরেই সেগুলো পাঠকদের কাছে স্বাভাবিক লেগেছে। কিন্তু কিছু দুর্বলতা থেকেই যাচ্ছিল। এ ছাড়া কাগজের দাম বাড়তে থাকায় প্রকাশকরা কম দামী কাগজ দেয়। রঙিন বই না ছাপিয়ে সাদা-কালো ছাপতে চায়। রঙিন হলেও কম দামী অফসেটে ছাপে যার কারণে এক পাশের কালি আরেক পাশে চলে যায়।

বিষয়গুলো তাবকে বেশ ভাবাচ্ছিল বলে জানান তৌহিদুল ইকবাল সম্পদ। তিনি বলেন, রঙ্গন কমিকসের প্রতিষ্ঠাতা প্রিয়াম ছিলেন ভক্ত। তার সঙ্গে গল্প করতে করতেই এই কমিকে রেস্ট্রিকশন, বাজে প্রিন্ট কোয়ালিটি ইত্যাদি নিয়ে কথা ওঠে। সেখান থেকেই নতুন আইডিয়া আসে যে একটা প্রকাশনা করা দরকার।

এবার সেই রঙ্গন প্রকাশনা থেকেই বের হয়েছে নিশাচর। প্রায় দেড় বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের পর এবারের ২৪ ফেব্রুয়ারি বের হয় নিশাচর গ্রাফিক নভেলের প্রথম পর্ব। প্রকাশকরা বলছেন, ইতিমধ্যে চার শতাধিক কপি বিক্রি হয়েছে নিশাচরের।


ঢাকার লো মেরিডিয়ানে চলছে দশ দিনব্যাপী বেনারসি ফেস্টিভাল

আপডেটেড ৩ মার্চ, ২০২৪ ২০:১৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ঐতিহ্য, আভিজাত্য এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের তৈরি ভিন্ন ধরনের পণ্যের পসরা নিয়ে সাজানো দ্য মসলিন ও ব্র্যাক ব্যাংক-এর উদ্যোগে ’টাইমলেস ম্যাগনিফিসেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি’ নামের দশ দিনব্যাপি বেনারসি ফেস্টিভাল। গত বুধবার সন্ধ্যা ৬.৩০ মিনিটে রাজধানীর লো মেরিডিয়ান হোটেলের ইন্ট্রেসলে ফেস্টিভালটির উদ্বোধন করেন দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম।
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকলার সংরক্ষণ, প্রচার এবং এর বিশ্বব্যাপি প্রসারের লক্ষ্য নিয়েই দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম বরাবরই এ ধরনের ভিন্ন ভিন্ন আয়োজন করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশি বেনারসি কারিগরদের উদ্বুদ্ধ করতে এবারের বেনারসি ফেস্টিভালের আয়োজন।
দ্য মসলিন-এর ফাউন্ডার, ডিরেক্টর ও সিইও তাসনুভা ইসলাম বলেন, ‘বেনারসির মত আভিজাত্যে ভরপুর বাংলাদেশি ঐতিহ্য নিয়ে দ্য মসলিন সবসময় কাজ করে আসছে। সেই আগ্রহ থেকে এই ফেস্টিভাল আয়োজন করতে পেরে আমি আনন্দিত। টাইমলেস ম্যাগনিফিসেন্স অব দ্য বাংলাদেশি বেনারসি শুধু একটি অনুষ্ঠানই নয়। আমাদের স্থানীয় প্রতিভাবান বেনারসি তাঁতিদের কারুকাজ ও নকশার মাধ্যমে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধি প্রদর্শন করাই এই উৎসবের লক্ষ্য’।


অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদ রফিক, শামীম আখতার, হাজী মোহাম্মদ আসির, নুর ইসলাম, জাহিদুর রহমানসহ মিরপুর বেনারসি পল্লীর ছয়জন স্বনামধন্য ও প্রতিভাবান তাঁতশিল্পী। ফেস্টিভালে কারিগররা ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সামনে তাদের সুনিপুন হাতের ছোয়ায় বানানো বেনারসি শাড়ি এবং তার পেছনের গল্প উপস্থাপন করেন ।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বেনারসি তাঁতশিল্পী শামিম এবং মোহাম্মদ রফিককে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও বেনারসি দিয়ে অভিনব ডিজাইন তৈরির জন্য পুরস্কৃত করা হয় বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটির পাঁচ শিক্ষার্থীকে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জেসিয়া জেসি এবং মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশের আয়োজক কমিটির উর্ধতন কর্মকর্তা,নেদারল্যান, ডাচ, মরক্কো, ব্রাজিল ও ফিলিস্তিন দূতাবাসের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় নারী পেশাজীবীগন।
দেশের ঐতিহ্যবাহী বেনারসি শাড়ির সমাহার নিয়ে সাজানো ১০ দিনব্যাপি ফেস্টিভালটি ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। স্বনামধন্য কারিগরদের দ্বারা তৈরি বেনারসি শাড়ি, ওড়না এবং কাপড়ের একটি আকর্ষণীয় সংগ্রহ রয়েছে ফেস্টিভালে। সরাসরি তাঁতিদের কাছে নিজেদের পছন্দমত ডিজাইন অর্ডার করে পণ্য তৈরিরও সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলছে ফেস্টিভালটি।


ইতিহাস-ঐতিহ্য-গৌরবের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মনিরুল ইসলাম, ঢাবি প্রতিনিধি

পৃথিবীর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ইতিহাস নেই যে সেই বিশ্ববিদ্যালয় একটি দেশের জন্ম দিয়েছে। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পূর্ব বাংলার মুসলমানদের মধ্যে একটি সচেতন মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী শ্রেণি গড়ে তোলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ নামক আমাদের এই দেশকে জন্ম দিতে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ধারাবাহিক রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট নির্মাণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। ২৫ মার্চের কালরাত্রিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক কত মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, তার কোনো পূর্ণাঙ্গ তালিকা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় এ পর্যন্ত ১৯৫ জনের নাম উল্লেখ করা আছে।

সাংবাদিক এবং গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদও তার বইয়ে লিখেছেন, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাস আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস অবিচ্ছেদ্য।

এ ছাড়া স্বাধীনতার পর প্রতিটি গণতান্ত্রিক, মৌলবাদ ও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই সর্বদা ঝাঁপিয়ে পড়ে। দেশের প্রয়োজনে নিজেকে উৎসর্গ করাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নিজ দায়িত্ব হিসেবে কাঁধে তুলে নিয়েছে। যেকোনো সংকটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছ থেকে দেশ ও জাতি এটাই আশা করে।

বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রেক্ষাপট

ইতিহাসবিদরা বলছেন, বঙ্গভঙ্গ রদ করার ক্ষতিপূরণ হিসেবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে তখনকার ব্রিটিশ সরকার। লর্ড লিটন যাকে বলেছিলেন, ‘স্প্লেনডিড ইম্পেরিয়াল কমপেনসেশন’।

১৯০৬ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত কনফারেন্সের ২০তম অধিবেশনে মোহামেডান এডুকেশনাল কনফারেন্স’-এর অনারারি জয়েন্ট সেক্রেটারি ব্যারিস্টার সাহেবজাদা আফতাব আহমেদ খাঁ পূর্ববঙ্গে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি সর্বপ্রথম তোলেন। এরপর ১৯১১ সালের শেষ পর্যন্ত অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিভিন্ন প্রোগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।

তবে শুরুতে এসব প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়া হলেও বঙ্গভঙ্গ রদ-পরবর্তী আহত মুসলমান সম্প্রদায়কে খুশি করার জন্য ১৯১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন ব্রিটিশ-ভারতের ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন।

একই বছরের ২৭ মে গঠিত হয় ব্যারিস্টার রবার্ট নাথানের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যবিশিষ্ট ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি কমিটি।’ এই কমিটির দায়িত্ব ছিল ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যায় কি না, সেটি যাচাই-বাছাই করে দেখা এবং এ সংক্রান্ত একটি পরিকল্পনা দেওয়া। এই কমিটি ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ইতিবাচক প্রতিবেদন দেওয়ার পর ডিসেম্বর মাসেই সেটি অনুমোদন করা হয়।

শেষ পর্যন্ত ১৯২০ সালের ১৩ মার্চ ভারতীয় আইন সভায় ‘দ্য ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাক্ট-১৯২০’ অনুমোদিত হয়। গর্ভনর জেনারেল সেই আইনে স্বাক্ষর করেন ২৩ মার্চ।

স্যাডলার কমিশনের অন্যতম সদস্য, লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক রেজিস্ট্রার স্যার ফিলিপ জোসেফ হার্টগ ১৯২০ সালের পহেলা ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। পরের বছর ১৯২১ সালের পহেলা জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের বক্তব্য

প্রতিবছর প্রায় তিন লাখ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আবেদন করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। সেখান থেকে আমরা মাত্র ছয় হাজার শিক্ষার্থীকে ভর্তি করাতে পারি। সুতরাং এরা তো সেরাদের সেরা। জাতি, পরিবার এবং আমরা বিশ্ববিদ্যালয় এই সেরাদের সেরারা যেভাবে বিকশিত হোক চাই। তবে বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পড়ে তাদের সেই বিকাশটা হয়ে ওঠে না। ফলে জাতিকে যেভাবে তাদের কনট্রিবিউশন করা দরকার পরিপূর্ণভাবে তারা সেই কনট্রিবিউশন করতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যে মনোবল বা স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসে, এখানে আসার পর সুযোগ-সুবিধার অভাবে অনেক সময় তাদের সেই মনোবল আর থাকে না- না হয় স্বপ্ন পূরণ হয়ে ওঠে না। এর মধ্যে কিছু কারণ হলো- হলে তারা সিট পায় না। তবে যদি এই শিক্ষার্থীদের কিছুটা আর্থিক সংগতি থাকে তখন তারা নিজেদের মতো করে চলতে পারবে। এই চলার পথকে যেন আরও সহজতর এবং মসৃণ করা যায় সেজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়ার উদ্যোগের কথা ভাবছি।

তারই অংশ হিসেবে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, হল, ইনস্টিটিউট এবং বিভাগকেন্দ্রিক যে অ্যালামনাই, তাদের সঙ্গে আমরা বসে এ ব্যাপারে আলোচনা করব। তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা শিক্ষার্থী তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতা করা।

এ ছাড়া প্রতিথযশা যেসব ব্যক্তি, দেশের এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যারা আছেন, তাদের সিংহভাগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গেও আমরা আলোচনা করব। বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের জীবন কল্যাণে সবাইকে নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই। আর এই স্কলারশিপের বিষয়টা তারই ধারাবাহিকতা।

আগামী চার বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি কোথায় নিয়ে যেতে চাই সে বিষয়ে আমি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং আরও যারা আছেন তাদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি ওয়ার্কশপের মাধ্যমে আমি আমার এই পরিকল্পনা জানাব।

আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে যে রাস্তাগুলো গিয়েছে সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণে নয়। এই রাস্তাগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সিটি কর্পোরেশনের। তাদের সঙ্গে আমরা এ বিষয়ে কথা বলব আর যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও কোথাও স্পিডব্রেকার দেওয়ার জন্য আমরা সিটি কর্পোরেশনকে চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া যানজট এবং বহিরাগতমুক্ত করতে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষার্থীদের কিছু মতামত আমি পেয়েছি। এগুলো সংগ্রহ করে আমি আরও কিছু চিঠি তৈরি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে বলেছি।

বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

কলা, বিজ্ঞান ও আইন- এই তিনটি অনুষদের আওতায় ১২টি বিভাগ, তিনটি আবাসিক হল, ৬০ জন শিক্ষক আর ৮৭৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ১৩টি অনুষদ, ৮৪টি বিভাগ, ১৩টি ইনিস্টিটিউট, ৫৬টি ব্যুরো ও গবেষণা কেন্দ্র, ২০টি হল এবং ৩টি হোস্টেল রয়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৭ হাজারের অধিক এবং শিক্ষকের সংখ্যা ২ হাজারের বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রমকে আরও জোরদার করার লক্ষ্যে কোভিড-১৯ অতিমারি-পরবর্তী ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রায় শতাধিক সেমিনার, কর্মশালা, কনফারেন্স ও সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত গবেষকরা তাদের জ্ঞান ও গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্‌যাপনকে কেন্দ্র করে ‘সেন্টিনিয়াল রিসার্চ গ্রান্টস্’-এর আওতায় বিভিন্ন যুগোপযোগী ২৫১টি গবেষণা প্রকল্পে অর্থায়ন করা হয়েছে। এই গ্রান্টস্-এর আওতায় পরিচালিত প্রত্যেক গবেষণার ফলাফল শিক্ষক ও গবেষকদের নিকট উপস্থাপনের জন্য বিশেষ কর্মশালার আয়োজন ও আন্তর্জাতিক পিয়ার রিভিউড জার্নালে সেসব প্রকাশের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা Scopus Indexed জার্নালে যেখানে ২০১৮ সালে ৫৮৬টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন, যা ২০২২ সালে তা ১৩৩১টিতে উপনীত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের এ অগ্রগতি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিংয়ের ক্রমাগত উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

ইন্ডাস্ট্রি-একাডেমিয়া সম্পর্ক স্থাপন এবং প্রকাশনা, গবেষণা ও উদ্ভাবন কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ২০২২ সালের অক্টোবরে দুই দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘গবেষণা-প্রকাশনা মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট এবং গবেষণা সেন্টার তাদের সম্পাদিত গবেষণা উদ্ভাবন ও প্রকাশনা উপস্থাপন করেছিল। গবেষণা মেলা আয়োজনকে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক ও টেকসই করতে ইতোমধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশনা ও গবেষণার মৌলিকত্ব এবং স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার উন্নয়নে ‘প্ল্যাজিয়ারিজম পলিসি’ গত বছরের ৩০ মে সিন্ডিকেটে অনুমোদিত হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদৎ হোসেনকে পরিচালক করে Dhaka University Research Co-ordination & Monitoring Cell (DURCMC) গঠন করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যমান নানামুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসনসংকট খুবই প্রকট। তবে প্রণীত মাস্টারপ্ল্যানের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ঘটলে শিক্ষার্থীদের জীবনমানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এই মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় তিন ধাপে ৯৭টি ভবন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে একাডেমিক ভবন থাকবে ১৭টি, ছাত্রী হল ৮টি, ছাত্রদের ১৬টি, হাউস টিউটর ভবন ২২টি, শিক্ষক ও অফিসারদের জন্য ১২টি, স্টাফদের জন্য ৯টি ভবন। অন্য ক্যাটাগরিতে থাকছে ১৩টি ভবন। এ ছাড়া ছাত্রীদের জন্য আলাদা খেলার মাঠ, যানজট নিরসনে পাবলিক প্রাইভেট সড়ক, টানেল, লাইব্রেরি, সাইকেল লেন, সবুজের পরিমাণ বাড়ানোসহ নানা ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মাস্টারপ্ল্যানে।

শিক্ষার গুণগতমানে ইতিবাচক পরিবর্তন পরিলক্ষিত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতামূলক যৌথ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ১৬১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় সমঝোতা চুক্তি রয়েছে।

ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিং’ সক্রিয় করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পেশাগত উৎকর্ষ অর্জনে আমরা তরুণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা- কর্মচারীদেরও প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। আইসিটি সেলকে কার্যকর করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্যপ্রযুক্তির কাজে গতিশীলতা আনয়নের নানা প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্থিক হিসাব ডিজিটালাইজড করার অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র অ্যাকাউন্টস ড্যাশবোর্ড চালু করা হয়েছে। এখানে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাদের বেতন, ইনকাম ট্যাক্স, প্রভিডেন্ট ফান্ড, পরীক্ষার বিলসহ বিভিন্ন তথ্য দেখতে পারবেন। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সামগ্রিক অর্থ ব্যবস্থাপনায় গতিশীলতা আসবে এবং সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের কার্যক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাদের সনদপত্র, নম্বরপত্র ও ট্রান্সক্রিপ্ট উত্তোলনের কাজ সম্পন্ন করতে পারছেন। শিক্ষার্থীরা ভর্তি ও পরীক্ষা-সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সিটিজেন চার্টার’ এবং সেবা গ্রহণ সংক্রান্ত অভিযোগ নিষ্পত্তি ও আপিল নিষ্পত্তির লক্ষ্যে তথ্য বাতায়ন চালু করা হয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সবাই বিভিন্ন সেবা গ্রহণে যেকোনো ধরনের অনিয়মের অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে APA লিংকে সরবরাহকৃত নির্ধারিত ফর্মে জানাতে পারেন। এ উদ্যোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস-ঐতিহ্য অর্জন, মৌলিক দর্শন ও মূল্যবোধকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শতবার্ষিক স্মৃতিস্তম্ভ, ‘অসীমতার স্তম্ভে বিশালতা, অন্তর্ভুক্ততা ও উদারতা’-এর নির্মাণকাজের ভিত্তি প্রস্তর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল চত্বরে স্থাপন করা হয়েছে এবং তা নির্মাণাধীন রয়েছে। এ স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মলচত্বরের ল্যান্ডস্কেপসহ পরিবেশ, সৌন্দর্য ও প্রকৃতি বিবেচনায় নিয়ে এর ব্যবহার-উপযোগিতা ও নান্দনিকতাকে আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলমান রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডার গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের চারটি পুনর্গঠিত ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা, ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রীকরণ নীতি অনুযায়ী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি লাঘব, সময় এবং অর্থসাশ্রয়ে পূর্বসিদ্ধান্ত মোতাবেক ৮টি বিভাগীয় শহরে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবারের মতো মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ইউনিটে, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখার শিক্ষার্থীরা কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে এবং বিজ্ঞান ও মানবিক শাখার শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা উচ্চ মাধ্যমিকে পঠিত বিভাগ পরিবর্তন করে তাদের পছন্দসই ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়মিত একাডেমিক কর্মসূচি যেমন- প্রফেশনাল/এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা/সার্টিফিকেট কোর্স/ট্রেনিং প্রোগ্রাম ইত্যাদি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়েছে। এসব এখন একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশক্রমে সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদিত নীতিমালা দ্বারা পরিচালিত হয়। একই সঙ্গে নিয়মিত মাস্টার্স প্রোগ্রামের শূন্য আসনে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি ও অধ্যয়নের সুযোগ দানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগ/ইনস্টিটিউট এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) আবর্তন করে শিক্ষার্থীদের পরিচালনায় ও ব্যবস্থাপনায় প্রায় ২৭টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে, যেখানে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী সমাজের বিভিন্ন অংশীজনকে সম্পৃক্ত করে নানা ধরনের শিক্ষা, সহশিক্ষামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এসব সংগঠন স্ব স্ব ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, কর্মঅভিজ্ঞতা ও দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোপরি শারীরিক, মানসিক সুস্থতা ও সৃজনশীল মেধা এবং মনন গঠনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এসব সংগঠনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতীকী অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বাস করে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সহশিক্ষামূলক সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে নিজেদের নিয়োজিত করলে সমাজহিতৈষী, অসাম্প্রদায়িক এবং দক্ষ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিএনসিসি, রেঞ্জার ইউনিট, রোভার স্কাউট গ্রুপ শৃঙ্খলা রক্ষাসহ শারীরিক, মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে নানাভাবে কাজ করে। সম্প্রতি, বেশ কয়েকজন রোভার স্কাউট সদস্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সর্বোচ্চ পদক ‘প্রেসিডেন্টস রোভার স্কাউট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করেছেন।

শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের মেধার স্বীকৃতি ও বৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের ট্রাস্ট ফান্ড গঠন কার্যক্রম বিশেষভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে নতুন ভর্তিকৃত প্রথমবর্ষের বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান আমাদের অগ্রাধিকার। অতিসম্প্রতি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক/ব্যক্তিত্ব, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ শেখ কামাল ও তার সহধর্মিণী খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের নামে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ‘শেখ কামাল-সুলতানা কামাল ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করা হয়েছে। এ ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বিশেষ করে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় কৃতী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান করা হবে।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও আবাসিক হল ছাড়া এ মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৯০টি ট্রাস্ট ফান্ডের অধীনে বছরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি লাভ করছেন।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও ন্যানোটেকনোলজির যুগে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ও উদ্ভাবনকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা এ সেন্টারে আধুনিক প্রযুক্তির ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহার করে নতুন নতুন গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় সক্ষম হবেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার মান বৃদ্ধি ও গবেষণা কার্যক্রমকে আরও সম্প্রসারিত করবে। বাংলাদেশে এটিই প্রথম ন্যানোটেকনোলজি সেন্টার। এ সেন্টারে পরিচালিত কার্যক্রম গবেষণার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে বলে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।


বইমেলায় সোহরাব পাশার ‘নির্বাচিত কবিতা’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অমর একুশে বইমেলা ২০২৪-এ প্রকাশিত হয়েছে কবি সোহরাব পাশার কবিতা সংকলন ‘নির্বাচিত কবিতা’। বইটিতে স্থান পেয়েছে ৩০০টির বেশি কবিতা।
একাধিক পুরস্কার ও পদকে ভূষিত কবি সোহরাব পাশার কবিতায় দার্শনিক ও নান্দনিক ভাবনার উপস্থিতি পাওয়া যায়। তার কবিতার বিষয় ও ভাবে প্রাধান্য পায় প্রেম-প্রকৃতি-নারী-সমাজ-স্বদেশ-সমকাল।

বইটির পরিচিতিতে লেখক সম্পর্কে প্রয়াত কবি আশিক সালামের মূল্যায়ন যুক্ত হয়েছে। ভূমিকা লিখেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। লেখক বইটি উৎসর্গ করেছেন খ্যাতিমান মননশীল লেখক রাজীব সরকারকে।

মোট ৩২০ পৃষ্ঠার এ বইটির গায়ে মুদ্রিত মূল্য ৬০০ টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন আনিসুজ্জামান সোহেল। বইটি প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ।


লিপ ইয়ার নিয়ে মজার ১০ তথ্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যে বছর ফেব্রুয়ারি মাসে একটা দিন বেশি থাকে ওই বছরকেই লিপ ইয়ার বলা হয়। সেই হিসাবে ২০২৪ সাল লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ।

পুরোপুরি জ্যোর্তিবিজ্ঞানের কারণেই ২৯ ফেব্রুয়ারি ‘লিপ ডে’ হলেও এ নিয়ে বৈজ্ঞানিক আগ্রহ বেশ কমই দেখা যায়। কীভাবে হয় লিপ ইয়ার, এর ইতিহাস কী, ফেব্রুয়ারিতেই কেন? এই একটি দিন ঘিরে আছে এমন নানা প্রশ্ন। সেসবের উত্তর খোঁজা যাক।

১. লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত দিনটা জরুরি আমাদের সৌরজগতের ‘বিশৃঙ্খল’ অবস্থার জন্যই। কারণ এক বছরে পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একটা সম্পূর্ণ কক্ষপথ ঘুরে আসতে কিন্তু ঠিক পুরোপুরি ৩৬৫ দিন লাগে না। বরং সব মিলে সময়টা ৩৬৫.২৪২২ দিনের মতো। ফলে প্রতি বছর আসলে এক দিনের চার ভাগের প্রায় এক ভাগ সময় যোগ হয়; যা প্রতি চার বছরে একটা বাড়তি দিন যোগ করে।

২. জুলিয়াস সিজার রোমের ক্ষমতায় আসার আগে পর্যন্ত ৩৫৫ দিনে বছর, এমন ক্যালেন্ডারই সবাই মেনে চলত; যেখানে প্রতি দুই বছর পরপর একটা অতিরিক্ত ২২ দিনের মাস যুক্ত হতো। কিন্তু এটা আসলে সমস্যার একটা জটিল সমাধান ছিল এবং উৎসবের দিনগুলো ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে যেতে শুরু করে। তাই সিজার তার জ্যোতির্বিজ্ঞানী সোসিজেনেসকে বিষয়টি সহজ করার নির্দেশ দেন।

সোসিজেনেস তখন ৩৬৫ দিনে বছর করে যে অতিরিক্ত ছয় ঘণ্টার মতো থেকে যায় সেটা মিলিয়ে নিতে চার বছর পরপর একটা অতিরিক্ত দিন ক্যালেন্ডারে যুক্ত করেন। আর এভাবেই ২৯ ফেব্রুয়ারির জন্ম; যা পরবর্তীতে পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি সূক্ষ পরিমার্জন করেন।

৩. আঙুলের হিসেবে প্রতি চার বছর পরপর আসে লিপ ইয়ার বা অধিবর্ষ। কিন্তু কথা এখানেই শেষ না। যেই বছরটাকে ১০০ দিয়ে ভাগ করা যায় কিন্তু আবার ৪০০ দিয়ে করা যায় না, সেটা লিপ ইয়ার নয়। সে কারণেই গ্রেগরিয়ান পঞ্জিকা বর্ষ অনুযায়ী আমরা ২০০০ সালে লিপ ইয়ার পেয়েছি, ১৬০০ সালে লিপ ইয়ার ছিল, কিন্তু আবার ১৭০০, ১৮০০ ও ১৯০০ লিপ ইয়ার নয়।

ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের ইমেরিটাস অধ্যাপক ইয়ান স্টুয়ার্ট বলেন, ‘এটা খানিকটা স্বেচ্ছাচার মনে হতে পারে’। তবে এর পেছনেও আসলে যুক্তিযুক্ত কারণ আছে।

তিনি বলেন, বছরে ৩৬৫ দিন ও একটা দিনের চার ভাগের এক ভাগ– কিন্তু সেটাও ঠিক পুরোপুরি নয়, বরং তার চেয়ে খানিকটা কম। সেটা একদম যথার্থ চার ভাগের এক ভাগ হলে প্রতি চার বছর পরপর লিপ ইয়ার হত। এই হিসাবটা আসে যখন পোপ ত্রয়োদশ গ্রেগরি ও তার সঙ্গী জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার চালু করেন এবং তাতে প্রতি চারশ বছরে তিনটা লিপ ডে বাদ পড়ে। এই হিসাবটা তখন থেকে আজ অবধি চালু আছে।

কিন্তু ইয়ান স্টুয়ার্ট মনে করেন মানুষকে হয়তো ১০ হাজার বছর পর এটা নিয়ে আবার নতুন করে ভাবতে হবে; কিন্তু তত দিনে অবশ্য মানবজাতি নতুন কোনো পদ্ধতিও চালু করে ফেলতে পারে।

৪. ফেব্রুয়ারির ২৯ কেন?

অন্য সব মাসেই আছে ৩০ বা ৩১ দিন করে, কিন্তু ইয়ান স্টুয়ার্ট জানাচ্ছেন রোমান সম্রাট সিজার অগাস্টাসের ব্যক্তিগত ইচ্ছার কাছে বলি হয়েছে ফেব্রুয়ারি। জুলিয়াস সিজারের অধীনে কিন্তু ফেব্রুয়ারি ৩০ দিনে মাস ছিল। কিন্তু সিজার অগাস্টাস যখন সম্রাট হন, তখন তিনি তার নিজের নামাঙ্কিত মাস অগাস্ট ২৯ দিনের হওয়ায় খানিকটা বিরক্ত হন। কারণ তার আগের সম্রাট জুলিয়াসের নামাঙ্কিত মাস-জুলাই ছিল ৩১ দিনের।

অধ্যাপক স্টুয়ার্ট বলেন, তিনি তখন অগাস্টে আরও দুই দিন যুক্ত করে জুলাইয়ের সমান করেন, আর বেচারা ফেব্রুয়ারিকে সেই দুই দিন হারাতে হয়।

৫. ঐতিহ্যগতভাবে লিপ ইয়ারের দিন মেয়েরা ছেলেদের প্রস্তাব দেয় বলে বিভিন্ন ইতিহাসবিদের কথায় উঠে আসে। যার একটা ৫ম শতকে সেন্ট ব্রিজেটের ঘটনা, যেটা নিয়ে অবশ্য বেশ বিতর্ক আছে।

বলা হয়ে থাকে যে তিনি সেন্ট প্যাট্রিকের কাছে অভিযোগ নিয়ে যান যে মেয়েদের তাদের পছন্দের মানুষের কাছে প্রস্তাব নিয়ে যেতে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। সেন্ট প্যাট্রিক তখন সম্ভবত মেয়েদের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য ওই লিপ ইয়ারের একটি দিন নির্দিষ্ট করে দেন– সবচেয়ে ছোট মাসের সব শেষ দিন।

আরেকটা জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে যে স্কটল্যান্ডের রানি মার্গারেট একটা আইন জারি করেন, যে সমস্ত পুরুষ লিপ ইয়ারে মেয়েদের দিক থেকে আসা বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেবে তাদের জরিমানা দিতে হবে।

কিন্তু অনেকে আবার বলে থাকেন সেই সময় মার্গারেটের বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর এবং তিনি তখন অনেক দূরে নরওয়েতে ছিলেন। এই রীতি আসলে ১৯ শতক থেকে বেশি প্রচলিত হয়। মনে করা হয়, মেয়েদের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেওয়ার এই রীতি চলে আসছে যখন ইংলিশ আইনে লিপ ইয়ার অন্তর্ভুক্ত হয়নি তখন থেকেই। এই মতবাদ অনুসারে যেহেতু এই দিনের কোন আইনগত ভিত্তি নেই, তাই সাধারণত ছেলেদের প্রস্তাব দেওয়ার প্রথাগত রীতি ভাঙাটা গ্রহণযোগ্য।

ডেনমার্কে যেমন এটা ২৯ ফেব্রুয়ারি নয়, বরং ২৪ ফেব্রুয়ারি; যা জুলিয়াস সিজারের সময় থেকে চলে আসছে।

৭. প্রতি ১৪৬১ জনে একজনের জন্ম লিপ ডে-তে

১৪৬১ জনে ১! লিপ ডে-তে জন্ম নেওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে বলা হয় প্রতি ১৪৬১ জনে একজন এদিন জন্ম নেন। চার বছরে হয় ১৪৬০ দিন আর লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত এক দিন মিলে হয় ১৪৬১। এক্ষেত্রে তাই সম্ভাব্যতা দাঁড়ায় ১/১৪৬১।

তবে ইয়ান স্টুয়ার্ট বলেছেন, এই হিসাবটাও পুরোপুরি ঠিক নয়, কারণ চারশ বছরে তিনটা লিপ ইয়ার হারাচ্ছি আমরা। এছাড়া নানা বিষয় মিলিয়ে বছরের কিছু নির্দিষ্ট সময়ে শিশুদের জন্ম বেশি হয় বলে মনে করেন তিনি। ২৯ ফেব্রুয়ারি জন্ম নেওয়াদের বলা হয় ‘লিপার্স’ বা ‘লিপলিংস’।

৮. লিপ ইয়ারের রাজধানী বলে স্বীকৃত টেক্সাসের অ্যান্থনি শহর। ১৯৮৮ সালে এই শহরের বাসিন্দা ও লিপ ইয়ারে জন্ম নেওয়া ম্যারি অ্যান ব্রাউন চেম্বার অব কমার্সের কাছে যান শহরে একটা লিপ ইয়ার উৎসবের আবেদন নিয়ে। তার সেই আবেদন গ্রহণ করা হয় এবং অ্যান্থনিকে ঘোষণা দেওয়া হয় বিশ্বের লিপ ইয়ার রাজধানী হিসেবে। তারপর থেকে প্রতি বছর সারা বিশ্বের লিপাররা টেক্সাসের এই শহরে জড়ো হয়ে প্যারেডে অংশ নেন, একসাথে বার্থডে ডিনার, নাচানাচি এবং হট এয়ার বেলুনে চড়েন সবাই।

৯. গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার ছাড়া অন্যান্য ক্যালেন্ডারেও লিপ ইয়ারের দরকার পড়ে। আধুনিক ইরানের ক্যালেন্ডারটি যেমন সৌর ক্যালেন্ডার, যাতে প্রতি ৩৩ বছরে ৮টা লিপ ডে আছে। ভারতের জাতীয় ক্যালেন্ডার এবং বাংলাদেশের যে বাংলা পঞ্জিকাবর্ষ তাতে লিপ ইয়ার এমনভাবে রাখা হয় যাতে লিপ ডে সব সময় গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২৯ ফেব্রুয়ারির খুব কাছাকাছি থাকে।

১০. অভিযাত্রী ক্রিস্টোফার কলম্বাস ওয়েস্ট ইন্ডিজে তার চূড়ান্ত অভিযানের সময় ১৫০৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারির চন্দ্র গ্রহণকে নিজের সুবিধার্থে কাজে লাগান। তিনি যখন জ্যামাইকা দ্বীপে বেশ কয়েক মাস তার নাবিকদের নিয়ে আটকা পড়েন, তখন এক পর্যায়ে স্থানীয় আদিবাসীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং তারা খাবার ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে সহায়তায় অস্বীকৃতি জানায়।

কলম্বাস জানতেন যে একটা চন্দ্রগ্রহণ আসন্ন, তার সহযোগীদের সঙ্গে আলাপ করে তিনি স্থানীয় সব আদিবাসী নেতাদের একসঙ্গে করেন ২৯ ফেব্রুয়ারি। তিনি তাদের বলেন, ঈশ্বর চাঁদকে লাল বর্ণ করে তাদের শাস্তি দেবে। চন্দ্রগ্রহণের সময় বলেন, যদি তারা আবার সহায়তা করতে শুরু করে তাহলে ঈশ্বর তার শাস্তি ফিরিয়ে নেবেন।

আরেকটা ঘটনা হলো- ১৬৯২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ম্যাসচুসেটসের সালেম উইচক্র্যাফট ট্রায়ালের প্রথম ওয়ারেন্ট জারি হয়।

সব কথার শেষ কথা, লিপ ইয়ারে আপনি সৌভাগ্যবান যে বছরে একটা অতিরিক্ত দিন পাচ্ছেন। আবার যারা চাকরিজীবী তারা ভাবতে পারেন যে বছরে একদিন কোনো বাড়তি বেতন ছাড়াই কাজ করতে হচ্ছে।


নির্বাকের পাশে: গান হারানো মানুষের সুর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সুজন সুপান্থ

অনেক না–পাওয়া নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষেরা আসলে কী পায়?—এই প্রশ্নের উত্তর একেকজনের কাছে একেক রকম। কিন্তু না–পাওয়া নির্বাক মানুষের কাছে এর উত্তর কেমন হবে? সে উত্তর দেওয়া কঠিন। এই কঠিন প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে বরং সহজ কথা বলি; বলি মোজাহিদুল ইসলামের প্রথম গল্পের বই ‘নির্বাকের পাশে’ প্রসঙ্গে।

বইয়ের শুরুতেই লেখক বলছেন, ‘আমার গল্পগুলো জীবনের জাবেদার ডেবিট-ক্রেডিটে হিসাব মেলাতে না পারা মানুষের। যারা ঝাঁ-চকচকে নগর, বুনো বর্ষায় চুপসে যাওয়া শহরতলি কিংবা শীতল কোনো গ্রামে নির্লিপ্ত জীবনকে যাপন করার সংগ্রামে মত্ত। হয়তো আমরা নিজেরাও এমন। অর্থাৎ কোনো অতি বা কল্পমানবের কথা গল্পে উঠে আসেনি।’

তাহলে কার গল্প এসব! কারা জীবনের হিসাব মেলাতে পারে না? অঙ্কে শূন্য পাওয়া ব্যথা নিয়ে আমিও প্রশ্ন ছুঁড়ে দিই শূন্যে—আদৌ পারে কি কেউ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ‘নির্বাকের পাশে’ দাঁড়াই। অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে দেখেছি, ব্যাখ্যা নেই, তবু লেখকের হিসাব না মেলানো মানুষের জীবনেও ফুটে থাকে বিচিত্র ফুল। সুন্দর। সেই ফুল ছুঁয়ে দেখি জন ও জীবনের সম্পর্ক। এখানে হিসাব মেলানোর বদলে দেখি, জীবনের বিচিত্র বদল কীভাবে নিজের জীবনেও এসে লাগে। জীবনের এ এক ভিন্ন পিঠ। দুপুরি রোদের আলোয় যা চকচক করে ওঠে। এই রোদে থেমে থাকা যায় অনেকক্ষণ।

এসব গল্পে সুজন সুপান্থ নামের কোনো চরিত্র নেই। তবু পড়তে পড়তে দেখি, চোখ ভরে উঠছে ফেলে আসা জীবনের ছবিতে। বদলে যাচ্ছে কানে আসা শব্দ। ধীরে ধীরে দুপুরি রোদের ভেতর উঁকি দিচ্ছে সন্ধ্যার সুর। আর বুকের ভেতর ঢুকে পড়ছে দ্রুতগামী রেলগাড়ির হাওয়া। সেই হাওয়ায় ফরফর করে উঠছে লুপ্ত–কথা।

সন্ধ্যা ডোবার আগে নদীর তীর থেকে প্রেমিকাকে বিদায় জানিয়ে ঘরে ফিরলে বুকের ভেতর এক আশ্চর্য ব্যথা অনুভব হয়। মনে হয়, যেন ভাষা ভুলে যাওয়া কোনো এক গানের সুর মাথার ভেতর, বুকের ভেতর ঢুকে তার ভাষা খুঁজে বেড়াচ্ছে। মোজাহিদুল ইসলামের গল্পের বই ‘নির্বাকের পাশে’ ওই ভাষা ভুলে যাওয়া সুরের মতোই। কেবল তাঁর কথামঞ্জরি পেরিয়ে গেলে বোঝা যাবে, এই সুর কোন স্কেলে ওঠানামা করছে। যা টিউন করা দূরূহ।

‘নির্বাকের পাশে’র গল্পগুলো পড়তে পড়তে দেখবেন, বইয়ের কোনো এক পৃষ্ঠা থেকে কেউ একজন উঠে এসে পাঠককে চেনা কণ্ঠে জিজ্ঞেস করছে, কী হে, চলছে কেমন? তোমার পাশের ঘর থেকে এখনো কি সেই পুরোনো কান্নার শব্দ ভেসে আসে? পাঠক এর কী উত্তর দেবেন—জানি না।


‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’র মোড়ক উন্মোচন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (জিসিআইএ) অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সরোজ মেহেদীর লেখা ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে গ্রিন ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় তিনি একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজ গঠনে পাঠাভ্যাসের ওপর গুরুত্ব দেন। পাশাপাশি ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ বইটি পাঠকের মনে জায়গা করে নেবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট রুমে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল আজাদ, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস অ্যান্ড স্যোশাল সায়েন্সেসের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নিতাই চন্দ্র সূত্রধর, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন (অব.) শেখ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আরিফুজ্জামান, জয়েন্ট রেজিস্ট্রার মো. সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কোভিড-১৯ মহামারিকালে ভারতে যাপিত জীবন এবং সেখান থেকে দেশে ফেরার পথে দেখা নানান ঘটনা, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন জীবন ও এসবের ওপর নিজের পর্যবেক্ষণ নিয়ে বইটির পাণ্ডুলিপি সাজিয়েছেন লেখক।

মোস্তাফিজ কারিগরের নজরকাড়া প্রচ্ছদে বইটি প্রকাশ করেছে রাজধানীর শাহবাগের উৎস প্রকাশন। এটি বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬০, ৩৬১, ৩৬২ নম্বর স্টলে মিলবে। এছাড়া শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে উৎস প্রকাশনে, রকমারিসহ অনলাইন বিপণন প্ল্যাটফর্মগুলোতেও পাওয়া যাবে বইটি।

পেশায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হলেও সরোজ মেহেদীর মন-মনন সাহিত্যেই আবিষ্ট। এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, ‘আমি লিখি লেখার প্রতি টান অনুভব করি বলে। তবে নিজের লেখা নিয়ে কোনো দাবি নেই। কেউ পড়লে খুশি, না পড়লেও খুশি। খুব ভালো লেখার প্রতিভা নিয়ে জন্মেছি বলে কখনো মনে হয় না। বাংলা ভাষাটাও ঠিকঠাক জানি তা না। তবে নিজে যা বুঝি, যা অনুভব করি, যা দেখি তা নিজের মতো করে বলার জন্য হলেও লিখতে চাই-এই হলো কথা। আমার কাঁচা হাতের বাংলা তাই আর বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। ভেতর থেকে কে যেন বলে- রাখো তোমার দুর্বলতা। লেখো, লেখো। তোমার দুর্বল লেখা থেকে উপাদান নিয়েই হয়ত কেউ একজন মারাত্মক সব সবল লেখা লিখবে। সেই লেখায় তুমি ছায়া হয়ে জাজ্বল্যমান থাকবে।’

‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ প্রসঙ্গে সরোজ মেহেদী বলেন, “শিক্ষার টানে ২০১৯ সালে ভারতের চন্ডিগড়ে যেতে হয়েছিল। সেখানে যাপিত জীবন, এর মধ্যে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারির হানা, ওই দুঃসময়ে দেশে ফেরার সময় নানা সুখকর-অসুখকর ঘটনার অভিজ্ঞতা লিখতে শুরু করি। সেসব ঘটনা, নিজের কিছু পর্যবেক্ষণ নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ বইটি।”

এই সাহিত্যিক বলেন, “প্রতিটা পাতায় পাতায় যেন মাতৃত্বের মমতা জড়ানো। যে লেখে কেবল সেই বুঝে ‘লেখক জীবন’ তার ‘ব্যক্তিজীবন’র কতটা শত্রু। লেখার নেশা একজন মানুষকে নানাভাবে তার চারপাশের বিত্ত-বৈভব, বৈষয়িকতায় যোজন যোজন পিছিয়ে দেয়। তবু বেঁচে থাকলে কেবল লিখে যেতে চাই। জীবন নিয়ে এর চেয়ে বেশি আর কোনো উচ্চাশা নেই।”

সাহিত্যিক সরোজ মেহেদী বর্তমানে গ্রিন ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগের শিক্ষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেওয়ার আগে সরোজ মেহেদী সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন। শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের তুর্কি ভাষা বিভাগে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসেও (বিউপি) খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেছেন তিনি।

সাংবাদিকতা ছেড়ে শিক্ষকতাকে ক্যারিয়ার হিসেবে নেওয়া সরোজ মেহেদী এখনো বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লেখেন। দেশে-বিদেশে নানা কাজের সঙ্গেও যুক্ত তিনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতায় স্নাতক করা মেহেদী তুরস্ক সরকারের স্কলারশিপ নিয়ে ২০১৪ সালে দেশটিতে পাড়ি জমান। তিনি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘মাস্টার্স রিসার্চ প্রোগ্রাম ইন ব্যাসিক জার্নালিজমে’ প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। ২০১৮ সালে দেশে ফিরে এসে শিক্ষকতা শুরু করেন।

২০১৯ সালে জার্মানি থেকে তুর্কি ভাষায় সরোজ মেহেদীর গবেষণা গ্রন্থ ‘পলিটিক্যাল ইউজ অব মিডিয়া ইন সাউথ এশিয়া: বাংলাদেশ অ্যান্ড ইন্ডিয়া পারসপেকটিভ’ প্রকাশিত হয়। আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা ইনস্টিটিউটের প্রকল্পের আওতায় ‘বাংলা-ইংরেজি-তুর্কি’ ভাষায় একটি পকেট অভিধান লিখেছেন তিনি।


ফাল্গুনের বাহারি সাজ

শাড়িতে নিজেকে জড়াতে পারেন বসন্ত বরণে। মডেল: পাপড়ি সুলতানা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতকাহন ডেস্ক

ঋতুরাজ বসন্তকে বরণে প্রস্তুত হচ্ছে প্রকৃতি। বসন্ত রাজাকে বরণ করতে প্রকৃতিতে যেমন লাগছে রঙের ছোঁয়া ঠিক তেমনি বসন্ত বরণে কী পরবেন, কেমন সাজবেন… এমন পরিকল্পনাও ঘুরছে অনেকের মনে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কেমন হতে পারে পয়লা ফাল্গুনের সাজসজ্জা।

শাড়িতে ফাল্গুনি সাজ

বাঙালি ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আটপ্রৌড়ে করে বাসন্তী রঙা সুতি, তাঁতের টাটকা শাড়িতে নিজেকে জড়াতে পারেন বসন্ত বরণে। তবে প্রকৃতির রং বদলে শামিল হতে সবুজের বিভিন্ন শেড যেমন- কচি পাতা সবুজ, গাঢ় সবুজ ইত্যাদি রং বেছে নিতে পারেন। আবার হলুদ-কমলা গাঁদা ফুলের মতো প্রস্ফুটিত হতে পারেন। এদিকে পরের দিনটাতেই কিন্তু ভালোবাসা দিবস। সেদিন বেছে নিতে পারেন লাল রং বা প্রিয়জনের পছন্দের রঙের পোশাক।

শাড়ির সঙ্গে চাই হাতভর্তি রিনিঝিনি রেশমি কাঁচের চুড়ি। গলায় ফুলের মালা না পরতে চাইলে আজকাল বাজারে কাঠ, পুঁতি, মাটি, মেটাল, পাথর বিভিন্ন ধরনের কারুকার্যময় কানের ও গলার সেট পাওয়া যায়। পায়ে চাইলে পরে নিতে পারেন চিকন কাজের নূপুর।

ফাল্গুনের সাজসজ্জার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে আরও একটি জরুরি বিষয়ে। আর তা হলো সারা দিনের হাঁটাহাঁটির কথা মাথায় রেখে হিল না পরে ফ্ল্যাট জুতা পরাই হবে বুদ্ধিমতির কাজ।

ফাল্গুনে মেকআপ

বসন্তের শুরুর দিনটাতে মেকআপটা খুব ভারী করা ঠিক নয়। মেকআপ নেওয়ার আগে অবশ্যই মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করবেন। এরপর মুখে লাগাবেন ম্যাট ফাউন্ডেশন। তারপর খানিকটা ফেস পাউডার লাগাবেন হালকাভাবে। আর সব সময় মনে রাখবেন পোশাকের রং অনুযায়ী হবে মেকআপের রং।

চোখে গাঢ় করে কাজলের রেখা টেনে দিয়ে ঠোঁট রাঙাতে পারেন লাল লিপস্টিকে। কাজল, আইলাইনার, আইশ্যাডো, গ্লিটার- যেটাই ব্যবহার করুন না কেন, সব যেন হয় একই রঙের। এরপর কপালে টিপ আর হাতে পরুন কাচের চুড়ি। আর বসন্তের সাজে ফুলের কোনো না কোনো অনুষঙ্গ তো রাখতেই হবে। হোক তা চুলে, হাতে কিংবা ভিন্ন কোনো গয়না হিসেবে।

ফাগুন দিনে চুলের সাজে নানা রঙের তাজা ফুলের ব্যবহার নারীকে করে তোলে অনন্যা। খোঁপা বা বেণি করে চুলে গাদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে নিতে পারেন। কেউ যদি চুল ছেড়ে রাখতে চান তাহলে একপাশে গুঁজে নিতে পারেন গোলাপ বা জারবেরা ফুল। যখন বড় ফুল পরবেন, তখন গলা ও কানের গয়নাটা খানিকটা হালকা বেছে নেবেন। মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলা ফুলগুলোও বেছে নিতে পারেন গাঁদা, গোলাপের বিকল্প হিসেবে।


বরিশালে জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটর তিন বোনের পেইজ ‘আপন বোন’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বরিশালের জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর তিন বোনের সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পেইজ রয়েছে। যা স্থানীয়দের কাছে দিন দিন বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।

তারা ইতোমধ্যে বরিশালের ভাষায় তাদের হাস্যরসাত্মক ভিডিওগুলির মাধ্যমে ১.৫ মিলিয়ন বেশি ফলোয়ার এবং ৮০০ কোটির বেশি ভিউ সংগ্রহ করেছে, যা বাংলাদেশের একটি বড় কিশোর-কিশোরী দর্শককে আকর্ষণ করেছে।

নেহা, সাবিনা ও সামিয়া সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হয়ে উঠেছেন, এবং তাদের সাফল্য তাদেরকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ভিডিও কন্টেন্ট নির্মাতাদের তালিকায় স্থান দিয়েছে।

তারা ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে ভিডিও কন্টেন্ট আপলোড দেয়া শুরু করেন। তারা ফেইসবুকের অন্যান্য বিখ্যাত ভিডিও নির্মাতাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। তারা খুব কম সময়েই অনেক মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছেন।

তারা তিন বোনেরা শুধুমাত্র নিজেদের সাফল্যে সন্তুষ্ট নয় এবং তারা অন্যদেরকে কন্টেন্ট ক্রিয়েটর হতে অনুপ্রাণিত করছে যেনো ফেইসবুকে অন্যরাও জীবিকা অর্জন করতে পারেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়, নেহা এবং সাবিনা বলেন, ‘আমরা এই কাজটি করে নিজেরা অর্থ আয় করছি। ফলে ফেসবুক বাংলাদেশে বেকারত্ব দূর করতে সাহায্য করছে। আমরা চাই অন্যরাও ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করুক।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের আঞ্চলিক ভাষা সারা বাংলায় পৌছে দিচ্ছি- কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে। এটা আমাদের অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করছে।’


প্রকাশ হলো বিশেষ স্মারকগ্রন্থ ‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’

ছবি: ফোকাস বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ পেল যুবলীগের ৫১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের উপর বিশেষ স্মারকগ্রন্থ ‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন দেশবরেণ্য কবি - সাহিত্যিকরা তাঁদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অমর একুশে বইমেলা – ২০২৪ এর উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন স্টল পরিদর্শনের সময় ‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন। এসময় যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জাতির পিতাকে নিয়ে লিখিত স্মারকগ্রন্থ ‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের সম্পাদক ও প্রকাশক যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও নির্বাহী সম্পাদক যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। সম্পাদনা পর্ষদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহুরুল ইসলাম মিল্টন, উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাড. শেখ নবীরুজ্জামান বাবু। সম্পাদনা সহযোগী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. রাশেদুল হাসান সুপ্ত, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. বজলুল করিম মীর। বইটির প্রচ্ছদ শিল্পী ওবায়দুল কবির রিক্ত।

‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থের সম্পাদকীয়তে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ লিখেছেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান (১৯২০-১৯৭৫), বাঙালির জাতির চেতনার ধমনীতে প্রবাহিত শুদ্ধতম নাম, ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। তিনি বাঙালির হাজার বছরের চেতনাকে ধারণ ও লালন করেছেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস। তার কর্ম, নীতি, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে অনন্তকাল।’

‘চেতনায় বঙ্গবন্ধু’ গ্রন্থটি অমর একুশে বইমেলা – ২০২৪ এ যুবলীগের স্টলে ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’তে পাওয়া যাচ্ছে। শুভেচ্ছা মূল্য ১০০০ টাকা।


নতুন আঙ্গিকে দেশীদশের যাত্রা শুরু

নবসাজের দেশীদশ উদ্বোধন করেন দেশের সৃজনশীল শিল্পের অন্যতম প্রধান শিল্পী হাশেম খান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ১৯:১৫
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশীয় পোশাকের সৃজনশীল দশটি প্রতিষ্ঠানের যৌথ উদ্যোগ দেশীদশ আজ বুধবার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের লেভেল চারে নতুন সাজে নতুন আঙ্গিকে যাত্রা শুরু করেছে।

যাত্রা শুরুর এই আনন্দঘন মূহুর্তে প্রধান অতিথি হিসেবে নবসাজের দেশীদশ উদ্বোধন করেন দেশের সৃজনশীল শিল্পের অন্যতম প্রধান শিল্পী হাশেম খান। এছাড়াও সেসময়ে দেশীদশ প্রাঙ্গনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বরেণ্য শিল্পী জামাল আহমেদ।

নতুন আঙ্গিকের এই যাত্রার সময় এই দীর্ঘ পথচলায় দেশীদশের শুরু থেকে যারা সাথে রয়েছেন সেইসব শুভাকাঙ্খী, পৃষ্ঠপোষক আর এই শিল্পের অগ্রজ মানুষদের সম্মিলনে এক উৎসবমুখর পরিবেশ হয়ে উঠে দেশীদশ চত্বর। দেশীদশের উদ্যোক্তারা দেশীয় ফ্যাশনশিল্প বিকাশে আগামীতেও একসাথে কাজ করে এই অনন্য উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

২০০৯ সাল হতে এক অনন্য ভাবনায় গঠিত হয়েছিল স্বনামধন্য ১০টি ফ্যাশন ব্র্যান্ড নিপুণ, কে ক্রাফট, অঞ্জনস্, রঙ বাংলাদেশ, বাংলারমেলা, সাদাকালো, বিবিআনা, দেশাল, নগরদোলা ও সৃষ্টি -এর সম্মিলিত উদ্যোগ দেশীদশ। জন্মলগ্ন হতে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ফ্যাশনশিল্প উন্নয়নে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে দেশীদশ। দেশীয় সংস্কৃতি, দেশীয় উৎসব, দেশীয় পোশাক নিয়ে কাজ করাই দেশীদশের মূল চিন্তাধারা। দেশীয় উপকরণে উৎসবনির্ভর পোশাক তৈরি করেই মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে দেশীদশ।

বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্স ছাড়াও দেশীদশ আউটলেট রয়েছে সিলেটের কুমারপাড়া ও চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে আফমি প্লাজায়। আউটলেট ছাড়াও অনলাইনে দেশীদশ এর পেজে যুক্ত হয়েও কেনাকাটা করা যায়।


banner close