বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকতে

শ্রেষ্ঠা ডেস্ক
প্রকাশিত
শ্রেষ্ঠা ডেস্ক
প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৩ ১১:৩৫

বর্তমান সময়ে চাকরির বাজার প্রতিযোগিতামূলক। সবাই যেন ছুটছে কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন ছোঁয়ার জন্য। কঠিন এ রাস্তায় কেউ হারে, কেউ জেতে। নারীর জন্য এ পথটুকু আরও একটু বেশিই কঠিন যেন। তবে কিছু বিষয় রপ্ত করে নিতে পারলে চাকরির বাজারে এগিয়ে থাকা সম্ভব অনেকটাই। কিছু গুণাবলি তাই এখন থেকেই অনুসরণ করুন, আয়ত্ত করুন। জেনে নিন তেমন কয়েকটি বিষয়-

বন্ধুতা প্রযুক্তির সঙ্গে

বর্তমান বিশ্ব পুরোটাই প্রযুক্তিনির্ভর। অদূর ভবিষ্যতে এ নির্ভরশীলতা আরও বাড়বে বৈকি কমবে না। বলা চলে, ভবিষ্যৎ দনিয়া অটোমেটেড হয়ে যাবে, প্রযুক্তির বদল ঘটবে, নিত্যনতুন প্রযুক্তির প্রয়োগও হবে। সে সব প্রযুক্তি যদি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আয়ত্ত করে নিতে না পারেন চাকরির বাজারে পিছিয়ে থাকবেন অন্যদের তুলনায়। কাজেই প্রযুক্তির সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব না থাকে, এখন থেকেই তা করার সময় এসেছে।

মানিয়ে নেয়ার ক্ষমতা

যেকোনো পরিস্থিতিতে মানিয়ে নেয়া বেশ ভালো গুণ বটে। কর্মক্ষেত্রে এ গুণ আরও অনেকটা এগিয়ে রাখবে যে কাউকে। মনে রাখতে হবে, যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। তা সামাল দিয়ে সম্পন্ন করার ক্ষমতা আপনাকে অন্যদের তুলনায় আলাদা করে তুলবে। যেকোনো পরিস্থিতি ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দেয়া এবং তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার অভ্যাস না থাকলে এখনই রপ্ত করে নিন।

নতুন দক্ষতা অর্জন করুন

নিজের কাজটুকুই ভালোভাবে চালিয়ে যাওয়ার মধ্যে এখন আর বিশ্ব আটকে নেই। মাল্টিটাস্কারদের জয়জয়কার এখন সর্বত্রই। তাই নিজের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে নতুন নতুন দক্ষতা যোগ করুন, যা শুধু আপনাকে কাজের ক্ষেত্রে অনন্য করেই তুলবে না সঙ্গে সঙ্গে আপনার আত্মবিশ্বাসের পাল্লাও ভারী করবে।

সৃজনশীলতায় মনোযোগী হোন

প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যতেও মানুষের বিকল্প কিছু হবে না। অন্তত সৃজনশীলতায় যন্ত্র মানুষকে হারাতে পারবে না। তাই ভবিষ্যৎ যতই প্রযুক্তিনির্ভর হোক, মনে রাখতে হবে যন্ত্র কখনো মানুষকে ছাপিয়ে যেতে পারে না। সৃজনশীলতা, নতুন অভিনব চিন্তাভাবনা কখনোই আবেদন হারাবে না। নতুনভাবে কাজ করা, নতুন পরিকল্পনা, চিন্তাভাবনায় নতুনত্ব আনা এ সবই আপনাকে এগিয়ে রাখবে। তাই নিজের সৃজনশীলতার প্রতি আরও একটু বেশি মনোযোগী হোন। এর ফলে কাজের ক্ষেত্রে আপনি এগিয়ে থাকবেন অনেকখানি।

নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা

পুরো বিশ্ব এখন নারীর ক্ষমতায়নে, নারী নেতৃত্বে বিশ্বাসী। এ চিন্তাধারার সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে থাকুন আপনিও। কর্মক্ষেত্রে দলগত কাজে চেষ্টা করুন নেতৃত্ব গ্রহণ করার। অন্য কেউ পিছিয়ে পড়লেও এগিয়ে আসুন সমস্যার সমাধানে। শুধু নেতৃত্ব দেয়ার গুণাবলি ক্যারিয়ার সমসৃণ করে তুলবে।


অদম্য সাজেদার গল্প!

পরীক্ষার হলে সাজেদা বেগমকে উৎসাহ ও সাহস যোগান বাউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. আব্দুল হাই বাবু

সাজেদা বেগম। একটি অনুপ্রেরণার নাম। অদম্য একজন নারী! প্রবহমান বাংলার একজন হার না মানা মায়ের গল্পের মতো যেন জীবন তার। প্রায় ৭৭ বছর বয়সী বৃদ্ধা তিনি। বুক ভরা স্বপ্ন, দৃঢ়চেতনা আর অসীম সাহসই তার সঞ্জীবনী শক্তি। দৃষ্টিশক্তির অস্পষ্টতা, শারীরিক অসুস্থতা কিংবা বয়সের ভার কোনো কিছুই রুখতে পারেনি তার পথচলাকে। হ্যা, গতকাল বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) ঢাকা আঞ্চলিক কেন্দ্রে এসএসসি ভর্তি পরীক্ষার হল পরিদর্শনকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার দেখতে পান সাজেদা বেগমকে। ‘বাউবির দীক্ষা: সবার জন্য উন্মুক্ত কর্মমুখি, গণমুখী ও জীবনব্যাপী শিক্ষা’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে অষ্টম/জেএসসি বা সমমানের সনদ নেই যাদের, তাদের ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে এসএসসি গ্রোগামে ভর্তির সুযোগ করে দেন। দেশব্যাপী সাজেদা বেগমের মতো সাড়ে ৩ হাজার শিক্ষাবঞ্চিত আগ্রহী শিক্ষার্থীর শিক্ষা গ্রহণের পথ উন্মুক্ত হয়। ফলে রাতজাগা দীর্ঘশ্বাস, বুকজুড়ে রক্ষণ আর হতাশার শেকল ছিঁড়ে নতুন আলোয় উদ্ভাসের সুযোগ পান তারা। গল্পে গল্পে শুনি সব চক্ষুলজ্জা, অবসাদ আর শৃঙ্খলার সীমানা পেরিয়ে আসা সাজেদা বেগমের শিক্ষা বিরতি, ব্যক্তি জীবন, স্বপ্ন ও আগামীর কথা।

সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আগে জন্ম তার। আরও স্পষ্ট করে বললে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। বর্তমান এয়ারপোর্ট ১ নম্বর টার্মিনালেই ছিল তাদের আদি বাড়ি। নবাব হাবিবুল্লাহ গার্লস স্কুলের ছাত্রী ছিলেন সাজেদা বেগম। স্কুলের গণ্ডি পেরুতে না পেরুতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের তরুণ অফিসার আবুল হাসেমের সঙ্গে। তৎকালীন সামাজিক প্রেক্ষাপট, বাস্তবতায় অষ্টম শ্রেণীতেই খাঁচাবন্দী হয় সাজেদা বেগমের স্বপ্ন। এরপর কোলজুড়ে বড় মেয়ে হাসিনা আখতার, মেজো ছেলে মাসুদ রানা ও ছোট সন্তান মাসুম রেজা আসে। হাড়ভাঙা শ্রম আর স্বপ্ন লালন করে মেয়েকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি করান। বর্তমানে তিনি সোনালী ব্যাংকয়ের এজিএম। মাসুদ রানা কম্পিউটার সায়েন্সে জার্মানি থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন, আর মাসুম রেজা উচ্চতর শিক্ষা সম্পন্ন করে ব্যবসা করছেন।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির খবর পেলেন কীভাবে জানতে চাইলে সাজেদা বেগম বলেন, “একদিন ছোট ছেলে একটা পত্রিকা নিয়ে এসে বললো ‘দ্যাখছো মা কিশোরগঞ্জের বাউবির এই ছেলে চা বিক্রি করে এসএসসি পাস করছে, তোমার তো লেখাপড়ায় খুব আগ্রহ, তুমিও পরীক্ষা দাও। আমরা তোমার লগে আছি’। ব্যাস! সেদিন থেকেই বড় মেয়ের সঙ্গে বাউবিতে আসা যাওয়া। প্রথমে লজ্জা লাগলেও পরে দেখি- সব বয়সের নারী পুরুষ, ডাক্তার, চাকরীজীবী, সচিব, পুলিশ, আর্মি, শারীরিক প্রতিবন্ধী সবাই এখানে বিভিন্ন প্রোগ্রামে পড়াশোনা করে। আমার মনে শক্তি জাগলো। ছোট ছেলে ও নাতি মোবাইলে ইন্টারনেটে দেখিয়ে দিলো কীভাবে ক্লাস হয়, কী কী বিষয় পড়তে হয়। ভর্তি, টাকা জমা, নোটপত্র, বই—সব মোবাইলে। সব কিছু এতো সহজ হয়ে গেল যে, মনে হলো যেন বুক থেকে পাহাড় সরে গেল। বাউবির শিক্ষা ব্যবস্থা এতো সহজ, সুন্দর! এখানে না এলে বুঝতেই পারতাম না। আজকে ভিসি স্যারসহ সবাই আমাকে খুব উৎসাহ, সাহস দিলেন।’

সঙ্গে আসা বড় মেয়ে হাসিনা আখতার বলেন, ‘আমার এলাকায় নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে মা ব্যাপক জনপ্রিয়। অসংখ্য মানুষের দৈনিক রোজগারের টাকা আম্মার কাছে তারা আমানত হিসেবে রাখেন। জিম্মাদার খালা নামে ডাকেন তারা। মা নকশীকাঁথা খুব সুন্দর সেলাই করেন। এক সময় বাণিজ্যিকভাবে সেলাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছিলাম আমরা। মাায়ের নান্দনিক সুনিপুণ কারুকাজ আমাদের বিস্মিত করে। শুধু তাই নয়, স্থানীয় আদিভাষায় অর্ধশত বিয়ের গীত জানেন তিনি। আত্মীয় স্বজনের বিয়ের অনুষ্ঠানে এখনো ডাক পড়ে আম্মার।’

জীবন সায়াহ্নে এসে কী স্বপ্ন দেখেন আপনি, এমন প্রশ্নে সাজেদা বেগম বলেন, ‘আমি অনেকদূর পড়াশোনা করতে চাই। আল্লাহ বাঁচায়ে রাখলে বাউবি থেকে এসএসসি, এইচএসসি পাশ করে নকশীকাঁথা নিয়ে কাজ করে এমন একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একদিন আমি ভর্তি হবো।’

সুযোগবঞ্চিত, অবহেলিত, নারীদের শিক্ষার সুযোগ সম্পর্কে বাউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘সাজেদা বেগম একটি সাহসের নাম। একজন অনন্যা, অপরাজিতা। শিক্ষাবঞ্চিত নারীদের আদর্শ। এদেশে অসংখ্য নারী আছেন মেধাবী, কিন্তু সামাজিক, পারিবারিক চাপ, কৌশলে বিয়ের কারণে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। বাউবির শিক্ষাক্রম সব সময় তাদের পাশে। আমরা সারা দেশেই সব বয়সের, পেশার নাগরিকের ঘরে বসে শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ করে দিয়েছি। এমনকি সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, দুবাই, ইতালিতে অবস্থানরত বাঙালি রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সেখানে বসে এখন বাউবির বিভিন্ন প্রোগ্রামে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। পটুয়াখালীর সাগড়পাড়ের জেলে হাসান শেখ, কিশোরগঞ্জের চা বিক্রেতা হারুন মিয়া, বগুড়ার হুইল চেয়ারের যোদ্ধা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী নুরজাহান রিয়া কিংবা নারী সাফ ফুটবল দলের ক্যাপ্টেন সাবিনা খাতুন, মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ফটোগ্রাফার নিজামুল বিশ্বাস- এরা সবাই বাউবির স্টুডেন্ট। সব মিলিয়ে, দক্ষতা, শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে ও আলোকিত মানুষ গড়তে বাউবি আজ একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠান।’

লেখক
তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের কর্মকর্তা
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়


এড়িয়ে চলুন ৩ খাবার

মাসিকের সময়ে বেশি গুরুপাক, ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বরং স্যুপ, অল্প তেলে রান্না খাবার, কম মসলাজাতীয় সুস্বাদু অথচ স্বাস্থ্যকর খাবার খান
আপডেটেড ১ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:৫৩
শ্রেষ্ঠা ডেস্ক

মাসিক ঋতুচক্র নারীর নিয়মিত শরীরবৃত্তিয় প্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া চলাকালীন পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, মেজাজের হঠাৎ পরিবর্তন ইত্যাদি লক্ষণীয় ওঠে। যেহেতু এটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, তাই মাসিক চলাকালীন সময়কালে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনলে স্বস্তি মিলতে পারে কিছুটা হলেও। এ সময়টাতে প্রক্রিয়াজাত খাবার, ভাজা খাবার, চিপস, উচ্চ ফ্যাটযুক্ত, উচ্চ লবণযুক্ত, টকজাতীয় জিনিস ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে। জেনে নিন তিন ধরনের খাবার সম্পর্কে, যা এড়িয়ে চলা উচিত ঋতুস্রাব চলাকালীন সময়ে-

ক্যাফেইনকে না

চা, কফির প্রবল নেশাকেও এ সময়টাতে জানাতে হবে বিদায়। নিতান্তই সম্ভব না হলে অন্তত লাগাম ধরুন। মাসিক চলাকালীন সময় ক্যাফেইনের পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত। যদিও ক্যাফেইন ঋতুস্রাবের ওপর সরাসরি কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে অত্যধিক ক্যাফেইন গ্রহণ করলে এর পরোক্ষ প্রভাব পড়ে শরীরে। এ ছাড়া মাসিক চলাকালীন বেশি কফি পান করলে ডিহাইড্রেশনও হতে পারে। এটি মাসিকের কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিতে পারে, যেমন ব্যথা, খিঁচুনি, অস্বস্তি ইত্যাদি।

এ সময়টাতে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ের পরিবর্তে গ্রিন টি, গাজর এবং টমেটোর রস বা যেকোনো ধরনের স্যুপ খেতে পারেন। এটি মাসিকের সময় ক্র্যাম্প বা ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করবে।

উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন

পিরিয়ডের সময়ে মুড সুইং হয়। আর সে কারণে অনেকে এই সময়ে ফাস্টফুড আইটেম যেমন- বার্গার, চিপস, চানাচুর, ভাজাপোড়া খাবার খেয়ে ফেলেন বেশি। স্বাভাবিকভাবেই এ সময় শরীর কিছুটা নাজুক থাকে। উচ্চ ফ্যাটযুক্ত এসব খাবার হজম হতে সময় নেয়। তাই মাসিকের সময়ে বেশি গুরুপাক, ফ্যাটযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। বরং স্যুপ, অল্প তেলে রান্না খাবার, কম মসলাজাতীয় সুস্বাদু অথচ স্বাস্থ্যকর খাবার খান।

এড়িয়ে যেতে হবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া

ফাস্ট ফুড, ভাজাভুজি ইত্যাদিতে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে। এগুলো পেট ফাঁপা, আলস্য, ডিহাইড্রেশন বৃদ্ধি করতে পারে। তাই এ সময় খাদ্যে লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।


মায়ের খুশির জন্য…

এক দিন বলতেই পারেন- আজ তোমার ছুটি মা, আমিই না হয় আজ তোমার কাজগুলো করি। মডেল: হ্যাপি জাফরিন ও তার মেয়ে অপ্সরা
আপডেটেড ১ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:৫২
আব্দুল্লাহ নাজিম আল-মামুন

মাকে ভালোবাসতে এবং মাকে নিয়ে লিখতে কোনো দিবস লাগে না। মায়েরা যেভাবে সন্তানকে ভালোবাসে সেভাবে সন্তানরাও মাকে ভালোবাসে মনেপ্রাণে, মনের অগোচরে হলেও। কিন্তু মাকে ভালোবাসি কথাটা কজনই বা বলতে পারে মুখে! হঠাৎ উপহার দিলে খুশি কে না হয়! মা-ও এর ব্যতিক্রম নন। আবার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশও কিন্তু ঘটানো সম্ভব উপহার দিয়েই। তবে মায়ের জন্য শুধু বস্তুগত উপহারই যে ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাবে এমনটাও কিন্তু নয়। বরং মাকে একটা পুরো দিনও কিন্তু উপহার হিসেবে দিতে পারেন চাইলেই। জেনে নেয়া যাক মাকে বিশেষ উপলব্ধি দেয়ার কিছু উপায়-

ফুল: ফুল স্নিগ্ধ, ফুল সৌন্দর্য এবং ভালোবাসার অন্যতম প্রতীক। মাকে ভালোবাসা প্রকাশ করতে ফুল দিতে পারেন। সন্তান হিসেবে নিশ্চয়ই জানা আছে মায়ের পছন্দের ফুল কি। হঠাৎই বাড়ি ফেরার পথে সঙ্গে নিয়ে নিন মায়ের সে প্রিয় ফুল। দেখবেন কতটা খুশিই না তিনি হয়েছেন।

শাড়ি: বাঙালি মা শাড়ি পরেনই। হয়তো নিয়মিত শাড়ি পরেন না অনেকেই। কিন্তু শাড়ি অপছন্দ, এমনটা হওয়ার নয়। তাই একটা শাড়ি হতে পারে চমৎকার উপহার মাকে খুশি করতে।

জুতা: মায়ের প্রয়োজনবোধে নিত্যনতুন জুতাও দিতে পারেন উপহার হিসেবে। জুতা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় একটি জিনিস। তবে জুতা কেনার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন আরামের বিষয়টি। তাতে উপহারও যেমন দেয়া হলো অন্যদিকে মায়ের পায়ের সুরক্ষাও বজায় থাকল।

বই: মায়ের অবসর সময় কাটিয়ে তুলতে উপহার দিতে পারেন প্রিয় লেখকদের বই। ধর্মগ্রন্থ হলেও মন্দ হয় না।

মাঝে মাঝে অবসরে মাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন কোথাও পাহাড়, সমুদ্র, পার্ক, উদ্যানে। কখনো মাকে নিয়ে যেতে পারেন কোনো রেস্টুরেন্টে। মডেল: অনামিকা ও তার মা কবিতা

কাজে সহযোগিতা করা: কাজে সহযোগিতা করার মাধ্যমেও মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশ পায়। যারা মাকে ভালোবাসেন তারা অবসর সময়ে মায়ের কাজে সহযোগিতা করতে পারেন নানাভাবে। যেমন: কাপড় ধোয়া, ঘর গোছানো কিংবা যেকোনো গৃহস্থালি কাজ। রান্নার কাজেও সহযোগিতা করতে পারেন। কিংবা এক দিন বলতেই পারেন- আজ তোমার ছুটি মা, আমিই না হয় আজ তোমার কাজগুলো করি।

মাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া: মাঝে মাঝে অবসরে মাকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন কোথাও পাহাড়, সমুদ্র, পার্ক, উদ্যানে। কখনো মাকে নিয়ে যেতে পারেন কোনো রেস্টুরেন্টে। মায়ের জন্য অর্ডার দিতে পারেন কোনো দামি সুস্বাদু খাবার। শুধু খাবার খাওয়া কিংবা ঘুরে বেড়ানোই উদ্দেশ্য না, এতে মায়ের সঙ্গে চমৎকার কিছু মুহূর্তও তৈরি হবে।

অসুস্থতায় সেবা করা: মা অসুস্থ হলে মাকে সেবা করাই হলো মায়ের প্রতি সন্তানের উত্তম ভালোবাসা। মায়ের জন্য ওষুধ কেনা, খাবার-দাবার, পোশাক-পরিচ্ছদের প্রতি খেয়াল রাখা। প্রয়োজনে মেডিকেলে নিয়ে গিয়ে মায়ের যত্ন নেয়া।


সঞ্চয়ের নানান উপায়

বছরের শুরুতে একটা সাধারণ পরিকল্পনা নিয়ে পুরো বছর আর্থিক নিয়মের মধ্যে নিজেকে রাখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:৫২

বিখ্যাত ব্যক্তিরা বরাবরই বলে আসছেন সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়তে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জন্যই এ অভ্যাস উপকার বয়ে আনবে। কর্মজীবী নারী উপার্জনের কিছু অর্থ সঞ্চয়ের জন্য রাখতেই পারেন। এতে বিপদে-আপদে রক্ষাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে সঞ্চিত অর্থ। ছোটবেলায় মাটির ব্যাংক কিংবা টিনের কৌটায় টাকা-পয়সা জমানোর স্মৃতি কমবেশি সবারই আছে। এখন কি আর সেভাবে টাকা জমানোর সুযোগ আছে? ব্যস্ততায় ডুবে যাওয়া কেউই হয়তো এখন আর অর্থ জমানোর কৌশল নিয়ে তেমন ভাবি না। অথচ সঞ্চয় করার অভ্যাস সব সময়ই ইতিবাচক হিসেবে মনে করা হয়। বেসরকারি খাতে বাংলাদেশের প্রথম আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহ্জাবীন ফেরদৌস জানাচ্ছেন সঞ্চয় করার বেশ কিছু সহজ উপায়।

৫০/৩০/২০ নিয়ম অনুসরণ করুন

মার্কিন সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন ৫০/৩০/২০ ধারণাকে জনপ্রিয় করেন। তার বিখ্যাত ‘অল ইয়োর ওর্থ’ বইয়ে তিনি ব্যক্তিজীবনের আয় ব্যবস্থাপনা নিয়ে এই নিয়মের কথা বলেন। আপনার যদি আয় ১০০ টাকা হয়, তাহলে ৫০ টাকা নিজের প্রয়োজনে ব্যয় করতে হবে। এই প্রয়োজন মানে বাড়িভাড়া, পোশাক, মাসের খরচ ইত্যাদি বোঝায়। এরপরে ৩০ টাকা ব্যয় করতে হবে আপনি কি চান তার জন্য। এর অর্থ: নতুন কোনো কিছু কেনা, কোথায় ঘুরতে যাওয়ার মতো বিষয়গুলোতে ৩০ টাকা খরচ করতে হবে। এই অঙ্কের মধ্যে কিছু টাকা স্বাস্থ্যের জন্য হাতে রাখতে হবে। বাকি ২০ টাকা সঞ্চয় করতে হবে। এই ২০ টাকা দিয়ে আপনার বিপদের জন্য টাকা জমাতে হবে, ঋণশোধ করতে হবে, বিনিয়োগ করতে পারেন কিংবা অন্যান্য অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করতে পারেন। এইভাবে আপনি আপনার মাসের খরচের হিসাব রাখতে পারেন। একটা কথা বলে, যা গণনা করা যায় তা উন্নত করার সুযোগ নেই। আপনি যদি এই নিয়মে আপনার খরচের হিসাব করতে পারেন, তাহলে সঞ্চয়ের পথ খুঁজে পাবেন।

মাসের শুরুতেই পরিকল্পনা করতে হবে

সবাই কিন্তু আমরা মাসের ১ তারিখেই বেতন পাই না। অনেকেই ৭-৮ তারিখ আবার অনেকেই কিন্তু ১৫-১৬ তারিখে বেতন পাই। আর্থিক হিসাব অনুসারে মাসের হিসাব পরিকল্পনা করে ফেলুন। মাসের কোন তারিখে বাড়ি ভাড়া দেন, তা নির্ধারিত করে নিয়মিত অনুসরণ করুন। একেক মাসে এক সময় ঘর ভাড়ার অনিয়মিত অভ্যাস পরিহার করুন। শুরুতেই মাসের বাজার, সন্তানের খরচ, বেড়ানো কিংবা স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দের বিষয়টি মাথায় নিয়ে নিন। সবচেয়ে ভালো হয়, বছরের শুরুতে একটা সাধারণ পরিকল্পনা নিয়ে পুরো বছর আর্থিক নিয়মের মধ্যে নিজেকে রাখতে পারেন।

আর্থিক হিসাব অনুসারে মাসের হিসাব পরিকল্পনা করে ফেলুন

প্রতিদিনের অভ্যাস যখন সঞ্চয়

আমরা কিন্তু প্রতিদিন টুকরো টুকরো অভ্যাস করতে পারি। যেমন- মিনিট দশেকের পথ রিকশায় না চড়ে হেঁটে যেতে পারি। আবার অফিস যদি বাসার কাছেই হয়, তাহলে হেঁটে যাওয়া যায় প্রতিদিন। এখন ফাস্ট ফ্যাশনের যুগ বলে অনেকেই প্রতিমাসেই কাপড়-চোপড় কিনছি। ভবিষ্যতের বিবেচনা করে যা প্রয়োজন তাই কেনার দিকে আমাদের অভ্যাস করতে হবে। বিলাসিতা করে অহেতুক পণ্য কেনাকাটা এড়িয়ে চলুন।

নিয়মিত সঞ্চয়কে ব্যবহার করুন

বছরের সঞ্চয়কে বিনিয়োগের সুযোগ থাকলে তাতে পরিণত করুন। বিনিয়োগ করার জন্য ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করুন। অনেকেই হুজুগে অনেক বেনামী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করে সঞ্চয় হারিয়ে ফেলেন। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন। গ্রামের বাড়িতে কোনো কৃষকের সঙ্গে পশুর মালিকানা ভাগাভাগি করে সঞ্চয়কে বিনিয়োগ করতে পারেন। আবার অনলাইনে নিজের কোনো পণ্য বা সেবা চালু করেও টুকটাক বিনিয়োগ করতে পারেন। বাড়তি আয় সব সময় দারুণ সব সুযোগ তৈরি করে কিন্তু। সঞ্চয়কে বিনিয়োগে পরিবর্তন করতে আপনার শিক্ষক কিংবা অফিসের বসেরও পরামর্শ নিতে পারেন।


শিক্ষক ও স্কুটি প্রশিক্ষক দুটোই অহিদার পেশা

স্কুটি চালনা শেখাচ্ছেন অহিদা পাপড়ি
আপডেটেড ১ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:৫১
তানজিনা আকতারী

মরক্কান ফুটবলার নুয়ালিয়া বেনজিনা ইতিহাসের প্রথম নারী ফুটবলার হিসেবে হিজাব পরে বিশ্বকাপে মাঠে নেমেছেন কদিন আগে, এই খবর আমাদের সবার জানা। হিজাব তথা ইসলামী পোশাক পরিধান করে ও পরিপূর্ণভাবে পর্দা রক্ষা করে নারীরা বহু চ্যালেঞ্জিং পেশায় গিয়েছেন। ঠিক তেমনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার চর জৈনকাঠী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা অহিদা পাপড়ি একজন, মাত্র এক বছরে যিনি প্রায় শতাধিক নারীকে স্কুটি চালানোর প্রশিক্ষণ দিয়ে করে তুলেছেন সাহসী ও স্বাবলম্বী।

অহিদা পাপড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পাশাপাশি তাঁর স্বামী আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফরহাদ হোসাইন খানের কাছ থেকে স্কুটি চালানো শেখেন। তাঁর চালানো দেখে অহিদার সহকর্মী ও পরিচিত নারীরা স্কুটি চালানো শিখতে আগ্রহী হন। তখন থেকেই ছুটির দিনে আগ্রহী নারীদেরও প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন তিনি। বর্তমানে প্রতিদিন স্কুল ছুটির পর পটুয়াখালী শহরের ঝাউতলা এলাকায় প্রশিক্ষণে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় পাপড়িকে। সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার স্কুল বন্ধ থাকায় দিনের বেলা পটুয়াখালী কৃষি বিমান অবতরণ কেন্দ্র (এয়ারপোর্ট) এলাকায় এই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। কর্মজীবী নারীরা দিনে ব্যস্ত থাকায় রাতের বেলায় প্রশিক্ষণ নিলে প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থী- সবারই সুবিধা হয়। পর্দা রক্ষা করে প্রশিক্ষণ দেয়ার কারণে অনেক নারী আগ্রহী ও উৎসাহী হচ্ছেন স্কুটি প্রশিক্ষণ নিতে। প্রশিক্ষণের জন্য দুটি স্কুটি রয়েছে তার। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন ধরনের ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হয়। ফেসবুকে ‘লেডি বাইকার পটুয়াখালী’ নামে একটি পেজও আছে অহিদার।

শুরুর গল্পটা জানতে চাইলে অহিদা বলেন, ‘আমার বাসা থেকে স্কুল অনেক দূর। সেখানে আমাকে রিকশা নিয়ে, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় কিংবা অন্য পুরুষের মোটরসাইকেলের পেছনে আরোহী হয়ে বসে যেতে হয়। আবার মাঝে মাঝে আমার দুই শিশুসন্তানকেও স্কুলে নামিয়ে দিতে হয়, কখনো কখনো নিয়ে যেতে হয় আমার কর্মক্ষেত্রেও। আমার স্বামীর কর্মস্থল বিপরীতমুখী হওয়ায় তার মোটরসাইকেলে প্রতিদিন যাতায়াত সম্ভব হচ্ছিল না। এসব ঝামেলার কথা চিন্তা করে নিজেই স্কুটি চালানোর উদ্যোগ নেই। পরে আমার স্বামী আমাকে প্রশিক্ষণ দেন। দুজনেই ব্যস্ত থাকায় দুজনের সুবিধার্থে এই স্কুটি প্রশিক্ষণ নিয়ে আমি সহজে চলাচল করছি। আমার চলাচলের সুবিধা দেখে আমার নারী সহকর্মীরা স্কুটি চালানো শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। শিক্ষক, গৃহিণী ও এনজিও-কর্মীরা আমার কাছে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে বেশি আসছেন। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সংসারে বাড়তি আয় হচ্ছে। স্কুটি শেখার ফলে প্রত্যেক নারীর সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হয়।’

অহিদা আরও যোগ করে বলেন, ‘আমি যেহেতু ধর্মীয় অনুশাসনে থাকতে চাই, তাই স্কুটি শেখার আগে পুরুষের সঙ্গে অটোরিকশায় বা মোটরসাইকেলে বসে যেতে খুবই খারাপ লাগত, কিন্তু আমি নিরুপায় ছিলাম। গণপরিবহনে চলতে গেলে নারীদের নানা রকম অসুবিধায় পড়তে হয়, হেনস্তার শিকার হতে হয়। এসব বিবেচনায় স্কুটি চালানো অনেক শান্তির।’


নারীর জন্য শান্তিবাড়ির ভালো থাকার উৎসব

রেহেনা মরিয়ম নূরখ্যাত অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধন উপস্থিত থাকবেন এ আয়োজনে
আপডেটেড ২৫ জুলাই, ২০২৩ ২০:১৪
শ্রেষ্ঠা ডেস্ক

নারীর জন্য আয়োজন, নারীকে নিয়েই আয়োজন করছে শান্তিবাড়ি। ‘ভালো থাকার উৎসব’ নামে উদ্যোগ নারীর জন্য এবং পুরোটাই নারীকে ঘিরে। দু’দিনের এই বর্ণিল আয়োজনে নারীর সৃষ্টিশীলতা, দক্ষতা এবং একইসঙ্গে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য ও আইনি অধিকার রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে চাই, যা শেষ অব্দি নারীর সার্বিক ভালো থাকাকেই নিশ্চিত করে বলে জানিয়েছেন শান্তিবাড়ির প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুমাইয়া তাবাসসুম।

সুমাইয়া জানান, আগামী ২৭ ও ২৮ জুলাই (বৃহস্পতি ও শুক্রবার, সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি’র চিত্রশালা গ্যালারিতে অনুষ্ঠিত দুইদিনব্যাপী এই উৎসব চলবে। যেখানে নারী চিত্রশিল্পী ও নারী আলোকচিত্রীদের বিশেষ প্রদর্শনী এবং নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শনী হবে। যেখানে বেশিরভাগ উদ্যোক্তাই অংশ নিচ্ছেন দেশিয় পণ্য নিয়ে।

অন্যদিকে ২৮ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে চিত্রশালা গ্যালারি মিলনায়তনে শুরু হবে বিশেষ সমাপনী অনুষ্ঠানে। সেখানে মনোবিদ ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ এর বিশেষ সেশন থাকবে, সঙ্গে রয়েছে বিশেষ সাংস্কৃতিক শো। এতে অংশ নেবেন রেহেনা মরিয়ম নূরখ্যাত অভিনয়শিল্পী আজমেরী হক বাঁধন- তিনি দর্শকদের বলবেন তাঁর নিজের জীবনের গল্প।


সফলতা ছুঁতে সাদিয়ার যাত্রা

শখের কাজ মানুষকে জিইয়ে রাখে আজীবন, এমনটাই মনে করেন সাদিয়া
আপডেটেড ২৫ জুলাই, ২০২৩ ১৭:৪৮
মামুন মিসবাহ

রসায়ন প্রিয় নাকি ছবি আঁকা- এমন প্রশ্নে বিচলিত করা কঠিন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগে পড়ুয়া সাদিয়া ইসলাম সেতুকে। কেননা, এ দুটোকেই তিনি রাখতে চান একই পাল্লায়। অবশ্য কটমটে এ বিষয়ে পড়াশোনা করা সাদিয়ার রং-তুলির সঙ্গে শখ্য রয়েছে ভীষণ। তাই সময় পেলেই বসে যান ক্যানভাস নিয়ে। প্রবেশ করেন আঁকাআঁকির নিজস্ব জগতে। পড়াশোনা সামলে নিজেকে স্বাবলম্বী করার মন্ত্রে বিশ্বাসী সাদিয়া। তাই দুটোকেই সমানতালে গুরুত্ব দিয়ে এগিয়ে চলছেন সফলতার পথে।

ছোটবেলা থেকেই তাঁর আঁকাআঁকির প্রতি আলাদা একটা ভালোলাগা ছিল। কিন্তু কখনোই কারও থেকে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ হয়নি। এমনকি ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও সুযোগ হয়নি আর্ট স্কুলে ভর্তি হওয়ারও। তাই বলে যে আঁকাআঁকি ছেড়ে দিয়েছিলেন, তেমনটি নয়। পড়াশোনার পাশাপাশি ঠিকই চালিয়ে নিয়েছেন তাঁর শখের কাজ। কখনো নিজে নিজে আঁকতেন অথবা কখনো কোনো বান্ধবীর কাছ থেকে তার আঁকা ছবি দেখে চর্চা করতেন। প্রবল আগ্রহ থেকেই যদি কখনো শুনতেন কেউ ভালো ছবি আঁকেন, তখনই তার কাছে ছুটে যেতেন। খুলে বসতেন তাঁর প্রশ্নের ঝুড়ি। কখনো সুযোগ হলে তাদের থেকে শিখে নিতেন সুন্দর করে আঁকার নতুন নতুন আইডিয়াও। আর সেগুলো কাজে লাগিয়ে এঁকে যেতেন আপন মনে।

তবে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠার পেছনে নানারকম প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ করে সাদিয়া বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পেছনে ফেলে পুরস্কারও অর্জন করেছি অনেক সময়। যা ছিল আমার এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়।’

বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের পেছনে ফেলে পুরস্কারও অর্জন করেছি অনেক সময়। যা ছিল আমার এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়

কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখেন তিনি। হাতে আসে স্মার্টফোন। সুযোগ পেলেই দেখতেন ছবি আঁকার ওপর বিভিন্ন ভিডিও। অন্যদিকে আঁকাআঁকি নিয়ে আরও অধিক জানার আগ্রহটা করোনাকালীন সময়ে নিজের অজান্তেই ঘাড়ে চেপে বসে। পুরোপুরি অবসর সে সময়টা বলা চলে কাজে লাগিয়েছেন নিজের দক্ষতাকে আরও শান দিতে। অবসর সময়টা তাই কাজে লাগাতে শুরু হয় নতুন উদ্যমে পথচলা। শুরু করেন পুরোদমে আঁকাআঁকি। এভাবেই নিজের আঁকা কয়েকটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। আর তাতেই বাজিমাত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেয়া সেসব ছবিতে প্রশংসার বন্যা বয়ে গেছে যেন। কদিন বাদে অনলাইনে খুলে বসেন একটি পেজও। সেখানেই নিয়মিত আপলোড দিতে থাকেন অবসরে আঁকা তার শিল্পকর্মের ছবি। বর্তমানে সাদিয়ার সে পেজ যথেষ্ট জনপ্রিয়। আর তাঁর ছবির বিক্রি-বাট্টাও বেশ ভালো। পড়াশোনা শেষে চাকরিজীবনে প্রবেশ করলেও পাশাপাশি শখের এ কাজ চালিয়ে যেতে চান তিনি। কেননা, তিনি মনে করেন, শখের কাজ মানুষকে জিইয়ে রাখে আজীবন।

তবে এখানেই থেমে নেই সাদিয়ার কর্মকাণ্ড। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করে যাচ্ছেন মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবেও। ছবি আঁকার পাশাপাশি মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবেও তাঁর সুনাম রয়েছে নিজ ক্যাম্পাসে এবং পরিচিতজনদের মাঝে।


মেনোপজ নিয়ে যে বিষয়ে কেউ বলে না

মেনোপজে প্রবেশের গড় বয়স ৫১ বছর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৫ জুলাই, ২০২৩ ১৭:৪৬
রবিউল কমল

সম্প্রতি লেখক, সাংবাদিক ও এমটিভির সাবেক ভিজে জেনসি ডানের ‘হট অ্যান্ড বোথার্ড: হোয়াট নো ওয়ান টেলস ইউ অ্যাবাউট মেনোপজ অ্যান্ড হাউ টু ফিল লাইক ইউরসেলফ’ বইটি প্রকাশিত হয়েছে। যে বইটিতে তিনি পেরিমেনোপজ নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন।

মূলত, ২০ বছর ধরে স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছিলেন জেনসি ডান। এরপর তিনি যখন পেরিমেনোপজের মধ্য দিয়ে যেতে শুরু করেন, তখন বুঝতে পারেন এ বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য নেই। আর এটি তাকে খুবই অবাক করেছিল। তিনি জানান, মেনোপজ বা পেরিমেনোপজ এমন শব্দ, যার সঙ্গে অনেক নারী এখনো পরিচিত নন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি- বেশির ভাগ মেডিকেলের ডাক্তাররা মেনোপজ নিয়ে যথেষ্ট জানেন না, তথ্য ঘাটতির এটিও একটি বড় কারণ।

বইটি লিখতে জেনসি ডান বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন। হট ফ্ল্যাশ, বেদনাদায়ক যৌনতা ও মেজাজের পরিবর্তনসহ অন্যান্য লক্ষণ থেকে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যায়- তা পাঠকদের জানাতে অব-গাইনস, স্নায়ুবিজ্ঞানী, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ, মনোবিজ্ঞানীসহ আরও অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। নারীদের লজ্জা ও সংকোচ দূর করতে ডান জোর দিয়ে বলেছেন, এটি পৃথিবীর জনসংখ্যার অর্ধেকের সঙ্গে ঘটে।

ডান বলেন, ‘মেনোপজ নিয়ে উন্মুক্তভাবে কথা বলতে হবে। এটি পিরিয়ড, শরীর ও মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি আশা করি, যে প্রজন্ম এখন মেনোপজের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারা এ বিষয়ে মুক্তভাবে কথা বলবে। গোপন রাখার সংস্কৃতি তারা ভেঙে ফেলবে।’

ডান কয়েকটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন, যেগুলো কোনো নারী কখনো বলে না বা বলতে চায় না।

পেরিমেনোপজ ও মেনোপজের মধ্যে পার্থক্য

পেরিমেনোপজ প্রক্রিয়াটি সাধারণত ৪০ পেরোলে বা এর মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয়। যা গড়ে ৪ থেকে ৮ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। ডান বলেন, ‘মেনোপজের আগের বছরগুলোতে যখন পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে যায়, শরীরে কিছুটা পরিবর্তন হতে শুরু করে। সেই সময় আমাদের জীবনযাপন কয়েকটি ধাপে ভাগ হয়ে যায়। যেমন- ক্যারিয়ারের মাঝামাঝি সময়, তখন সবাই সন্তান লালনপালন করছে, বাবা-মায়ের যত্ন নিচ্ছে। তাই শরীরের এই পরিবর্তন নিয়ে অনেকে ভাবে না।’ তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘লক্ষণগুলো এক ধরনের হরমোন তৈরি করতে পারে, যা বয়ঃসন্ধির মতো কঠিন হতে পারে। আর এটি পেরিমেনোপজের লক্ষণগুলো আরও জটিল করে তুলতে পারে।’ তারপর আছে মেনোপজ, যেখানে প্রবেশের গড় বয়স ৫১ বছর। ডানের মতে, ‘কেউ যখন পিরিয়ড ছাড়াই ১২ মাস অতিবাহিত করে, তার মানে সে মেনোপজে আছে। আর এটিকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, কারণ এটি জীবনের খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।’

লক্ষণগুলোর দীর্ঘ পরিসর আছে

পেরিমেনোপোজাল ও মেনোপজের লক্ষণগুলো নিয়ে ডান বলেন, ‘সবাই হট ফ্ল্যাশ নিয়ে জানে, তবে আরও অনেক বিষয় আছে- যেমন ভঙ্গুর নখ, মাথা ঘোরা, অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন। তবে কিছু লক্ষণ আবার ‘ফর্মিকেশন’-এর মতো অস্পষ্ট হতে পারে। যেমন- ত্বকে পোকামাকড় হাঁটার মতো সংবেদনশীল অনুভূতি। যা বিভ্রান্তিকর।’ ডান বলেন, ‘কেউ হয়তো জানে না লক্ষণগুলো কী, তাই তারা নিজেদের সঙ্গে বিষয়গুলো মেলাতে পারে না। কারও যদি অনিয়মিত পিরিয়ড হয়, তাহলে এটা ভাবা যাবে না যে, পেরিমেনোপজের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে। হয়তো নানান চাপে থাকার কারণে এমন হচ্ছে বা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কাজ করছে না। পেরিমেনোপজে থাকা নারীদের নিয়মিত বিষণ্নতার চিকিৎসা নেয়া উচিত, কারণ বিষণ্নতা শরীরকে দুর্বল করে ফেলে। তা ছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ না নিলে ওই সময়ের উদ্বেগ ও হতাশাকে সাধারণ জীবনের চাপ থেকে আলাদা করা কঠিন হতে পারে।’

সঙ্গী ও বন্ধুদের সঙ্গে স্বাভাবিক কথোপকথন

ঋতুস্রাব নিয়ে এখন যেমন অনেক উন্মুক্ত আলোচনা হয়, মেনোপোজ নিয়েও হওয়া উচিত। কারণ, এটি আরেকটি শারীরিক ক্রিয়া। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ডান বলেন, ‘মেনোপোজ নিয়ে আমাকে আগে নিজেকে স্পষ্ট হতে হয়েছে। তারপর বন্ধু, স্বামী, এমনকি কর্মক্ষেত্রেও এ বিষয়ে কথা বলেছি। শুরুতে আমি স্বামীকে কিছুই বলিনি। অনেকবার বলতে চেয়েও বলিনি। ফলে, যৌন মিলনের সময় আমার ব্যথা হতো, আমি বিব্রত বোধ করতাম। আমি ভাবতাম, হয়তো বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, তাই তাকে বলিনি কী ঘটছে? এর পরিবর্তে আমি তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করলাম। পরে একাধিক পরামর্শদাতার সঙ্গে কথা বলার পর বুঝতে পারি এটি স্বাভাবিক। তাই প্রথমেই সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করা উচিত।’

ত্বকে কোনো প্রসাধনী কাজ করবে না

ডান বলেন, ‘এ সময় সব ধরনের সৌন্দর্যপণ্য বা প্রসাধনী কাজ করা বন্ধ করে দেয়। আমার পুরো রুটিনটি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তন করতে হয়েছিল। কারণ, আমার ত্বক সংবেদনশীল হতে শুরু করেছিল, আর এমনটা সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। এই সময়ে ত্বক স্পর্শকাতর ও প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে। এ সময় ত্বকের পরিচর্যায় পেপটাইড বেছে নিয়েছিলাম।’

ফ্ল্যাশ পিরিয়ড বাস্তব

অ্যান্ড জাস্ট লাইক দ্যাটের একটি দৃশ্যে শার্লটের সাদা প্যান্টে ‘ফ্ল্যাশ পিরিয়ড’ দেখা গিয়েছিল, এ সময় ঋতুস্রাবের রক্তপাত এভাবে অনিয়মিত হয়ে উঠতে পারে। ডান সেই পর্বটি দেখে ডা. মেরি জেন মিনকিনকে ফোন করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি মেরি জেন মিনকিনকে ফোন করেছিলাম এবং বলেছিলাম- ফ্ল্যাশ পিরিয়ড কি মেডিকেল শব্দ? তিনি উত্তরে বলেছিলেন না, তবে এটি একটি খুব সাধারণ ব্যাপার। ডানের সঙ্গে যখন এ ঘটনা ঘটেছিল, তখন তিনি অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন। তবে, তিনি জানতেন না ঠিক কত মাস পর এমন হয়েছিল।’

একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া

ডান মেনোপজ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করার ওপর জোর দেন। তবে তাড়াহুড়া করা যাবে না। কারণ এটি একটি জটিল বিষয়, সময় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে হবে, আলোচনা করতে হবে। প্রয়োজনে তার আলাদা অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। কারণ এ সময় অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন- যৌন মিলনে ব্যথা পাওয়া, হট ফ্ল্যাশ, ঘুম না হওয়া, হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া। তাই সব সমস্যা নিয়ে আলাদা আলাদাভাবে কথা বলতে হবে।’

(লেখাটি ভোগ থেকে অনুবাদ করা)


উদাহরণ তৈরি করেছেন যিনি

ফারজানা হক পিংকি
আপডেটেড ২৫ জুলাই, ২০২৩ ১৭:৪৩
সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি

এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম সেঞ্চুরি পিংকি করেছেন। ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে ১০৭ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নিজের নাম লিখান ফারজানা। ফারজানা হক পিংকিকে মাঠে দেখেছেন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি। ফারজানা হক পিংকিকে নিয়ে লিখছেন তিনি।

কে না প্রথম হতে চায়? প্রথম মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় ওঠা কিংবা প্রথম চাঁদে পা রাখার সম্মান কতটা গুরুত্বের, তা আমরা জানি। এই জুলাই মাসেই ১৯৬৯ সালে মানুষের পা পড়ে চাঁদে, সেই জুলাই মাসেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে নাম লিখালেন ফারজানা হক পিংকি। ধারাভাষ্যকার হিসেবে তাকে মাঠে দেখার সুযোগ পেয়েছি আমি। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলের সব সদস্যই যেন রূপকথার প্রমিথিউস। পরিশ্রমী যোদ্ধার প্রতিচ্ছবি একেকজন ক্রিকেটার।

২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক হয় তার। এক যুগ হতে চলল তার ক্রিকেট মাঠে। বাংলাদেশের মতো আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে একজন নারী হিসেবে ১২ বছর ক্রিকেট ধরে রাখা কত কঠিন তা নিশ্চয়ই জানেন সচেতন পাঠকরা। সাম্প্রতিক টুর্নামেন্টের শুরু থেকে বোঝা যাচ্ছিল বাংলাদেশ দল সামগ্রিকভাবে একটু বেশি প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সবাই বলা যায় বেশ ভালো অনুশীলন ও ফর্মের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

প্রথম বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি

ফারজানা দীর্ঘদিন ধরে খেলছেন মাঠে, যে কারণে একটু লম্বা সময় ধরে ব্যাটিংয়ের পরিকল্পনা হয় তাকে নিয়ে। ফারজানা বেশ পরিশ্রমী ব্যাটসম্যান, বল বাই বল খেলার স্টাইল অনুসরণ করেন অনেক দিন। আমরা মাঠে দেখতে পাই, কীভাবে ভীষণ নিপুণতার সঙ্গে ক্রিকেট খেলে কাভার ড্রাইভে বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়ে সেঞ্চুরি করেন ফারজানা হক পিংকি। ব্যাট উঁচিয়ে ধরার পর ড্রেসিংরুমের দিকে ব্যাট তাক করে আরেক ক্রিকেটার নিগার সুলতানা জ্যোতির নাম ধরে ডাকেন এই ব্যাটার। ১৬০ বলে ১০৭ রানের ইনিংসটি নারীদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম সেঞ্চুরির ঘটনা, যা আসলে আমাদের নারী দলের সদস্যদের পরিশ্রম ও সাফল্যের একটা ঝলক মাত্র। কমনওয়েলথ গেমসের বাছাইপর্বের ম্যাচে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ৭ রান করেন ফারজানা হক পিংকি। আর তাতেই গড়েন আরেক রেকর্ড। প্রথম বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে এক হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। ফারজানার আগে বাংলাদেশের পক্ষে কেউই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক হাজার রান করতে পারেনি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ পঞ্চাশ বেশি রানের ইনিংসের মালিক ফারজানা। এ ছাড়া ওয়ানডে ফরম্যাটেও শীর্ষ রান সংগ্রাহকের তালিকায় ওপরের দিকে রয়েছেন ফারজানা। নারী বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনন্য এক রেকর্ডবুকে নিজের নাম লেখান ফারজানা। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এক হাজার রানের ক্লাবে ঢুকে পড়েন তিনি। নারী ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে এ মাইলফলক স্পর্শ করলেন ফারজানা।

ভারতের বিপক্ষে খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানান নিজের ওপর বিশ্বাসের কথা। লম্বা সময় ধরে ব্যাট করার চিন্তার জন্য নিজেকে তৈরি করেছেন তিনি। নিজের স্কিলের প্রতি অনেক বিশ্বাস আছে তার। শেষ কয়েকটি ম্যাচে বেশ ভালোভাবে শুরু করেন বলে তার মধ্যে বড় রানের আত্মবিশ্বাস দেখা যায়। যার ফলাফল হিসেবে দেখা যায় দেশের প্রথম শতক।

ফারজানাদের ব্যাটে একের পর এক সাফল্য আসছে বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের। আগামীর ফারজানারা যারা এখন স্কুল কিংবা খেলার মাঠে তাদের জন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও সামাজিক অনুপ্রেরণা। ফারজানারাই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের পতাকাকে অনন্য এক উচ্চতা নিয়ে যাবে- এটা ক্রীড়া অনুরাগী হিসেবে আমাদের প্রত্যাশা।


অপ্রতিরোধ্য মারুফার গল্প

যুদ্ধের দেবী এথেনার মতো অপ্রতিরোধ্য মারুফা আক্তার
আপডেটেড ১৯ জুলাই, ২০২৩ ২২:১৫
সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি

গত বছর বিশ্বের নানা দেশের গণমাধ্যমে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের নতুন মুখ মারুফা আক্তারের গল্প অনেকেই পড়েছেন। ক্রিকেট মাঠে নারী হিসেবে তার এগিয়ে আসার গল্প অন্য অসাধারণ, রূপকথার হারিয়ে যাওয়া ফিনিক্সপাখির মতোই রোমাঞ্চকর। সেই মারুফাকে চোখের সামনে থেকে লড়তে দেখেছেন ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার সৈয়দ আবিদ হুসাইন সামি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাভাষ্যকার হিসেবে অভিষিক্ত সামি জানাচ্ছেন মারুফার এগিয়ে যাওয়ার গল্প।

১৮ বছর পেরিয়েছে এ বছরের জানুয়ারিতে, সাধারণ এক বাংলাদেশি কিশোরী সে। হাতে ক্রিকেট বল নিয়ে কতটা অসাধারণ তার রূপ হতে পারে তা দেশবাসী সরাসরি দেখেছি ১৬ জুলাই ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচে। শুধু আমি নই, কোটি বাংলাদেশি ১৮ বছর ১৯৬ দিন বয়সের এক কিশোরীর দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখেছে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম মাঠে। সরাসরি তাকে মাঠে বিধ্বংসী এক রূপে দেখতে পেয়ে আমরা মুগ্ধ। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের পেসার মারুফা আকতার। ডানহাতি পেস বোলিং আর আগ্রাসী ব্যাটিং তার এগিয়ে যাওয়ার অস্ত্র বলা যায়। এই কিশোরীর মাঠের বাইরের সংগ্রামমুখর জীবনটাও অন্য রকম।

ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক আগে থেকেই বিধ্বংসী সে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, টি-টোয়েন্টি সংস্করণের জাতীয় লিগ- সব কিছুতেই মাঠের মারুফা আর সাইডলাইনের বাইরে থাকা মারুফাকে চেনা কঠিন। খেলা শেষে প্রশ্ন করি মারুফাকে, বিধ্বংসী হওয়ার কারণ খুঁজি আমি। মারুফা জানায়, প্রথম থেকে ভালো বল করেছিলাম, সেই ভালো তো আমাকে ধরেই রাখতে হবে। আর কথা না বাড়িয়ে হেসে দেয় মারুফা। মুখের হাসি দিয়ে জানিয়ে দেয় কতটা অপ্রতিরোধ্য সে। মারুফা যেন গ্রিক রূপকথার দেবী এথেনা। যুদ্ধের দেবী এথেনার মতো অপ্রতিরোধ্য মারুফা। মারুফার এই অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে আছে তার জীবনসংগ্রামের ঘামে ভেজা গল্প।

বর্গাচাষি কৃষক বাবার সন্তান মারুফা। মই টানা মারুফা আক্তার একসময় গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছিলেন। তিনি এখন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের দিনবদলের। সামাজিক দুর্দশাকে যেন লাইন-লেন্থ বুঝে সাদা বলের জোরে কাটিয়ে স্বপ্ন জয়ের দিকে ছুটছেন মারুফা। বাবার সঙ্গে হালচাষ আর কড়া রোদে মই টানার গল্পে আটকে থাকতে পারত তার জীবন। লাখো মারুফার ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তো ছিলই। সৈয়দপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মারুফা এখন অপ্রতিরোধ্য নারী ক্রিকেটারদের প্রতিচ্ছবি।

সামাজিক দুর্দশাকে যেন লাইন-লেন্থ বুঝে সাদা বলের জোরে কাটিয়ে স্বপ্ন জয়ের দিকে ছুটছেন মারুফা

১৩ জুলাই প্রতিপক্ষ ভারতের নারী ক্রিকেটারদের কাছে হেরে যায় মারুফারা। সেই লড়াইয়ের ময়দানে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য সামনে নিয়ে মারুফারা মাঠে নামে সবুজ জার্সিতে। ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৬ জুলাই স্মরণীয় জয় পায় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ওয়ানডেতে ভারতের বিপক্ষে ৬ বারের দেখায় প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে ৪৩ ওভারে ১৫২ রানেই অলআউট হয় নিগার সুলতানার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ দল। দলের হয়ে ৬৪ বলে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন অধিনায়ক নিগার। ব্যাটিংয়ে নেমে মারুফা খাতুনের গতি আর রাবেয়া খানের লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে ৩৫.৫ ওভারে ১১৩ রানেই অলআউট হয় ভারত। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৪০ রানের জয়ে ৪ উইকেট নেন মারুফা। আর ৩ উইকেট নেন রাবেয়া।

দক্ষিণ আমেরিকার দরিদ্রতার জন্য পেলে কিংবা ম্যারাডোনা ফুটবল ঈশ্বরের ডাকে ছুটে যান। সেই দরিদ্র দক্ষিণ আমেরিকার অনেক কিশোরের মুক্তি মেলে ফুটবল মাঠের ডাকে। আমাদের মারুফাদের সামনে ক্রিকেট যেন সেই সুযোগই করে দিচ্ছে। মারুফা দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দেশের পতাকা বহন করেছেন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর অভ্যাস নেই মারুফার, তার পরেই নেই দ্বিধা। ভাষার জড়তাকে যেন নিষ্পলক দৃষ্টি দিয়েই জয় করেছেন মারুফা। নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ঢেলাপীর এলাকার কৃষক পরিবারের সন্তান আমাদের মারুফা। বিকেএসপিতে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হলেও অর্থাভাবে ভর্তি হতে পারেননি। গণমাধ্যমে উঠতি মারুফার গল্পে এগিয়ে যায় বিসিবির। মা-বাবা, চার ভাই-বোনসহ ছয়জনের পরিবার নিয়ে তার পরিবার। ক্লাস সিক্সে থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার। ২০১৮ সালে বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ ক্যাম্পে নজর কাড়েন। করোনায় থেমে যায় তার স্বপ্ন। কিন্তু মারুফা স্বপ্ন জয় করতে জানে পরিশ্রম করে। সেই পরিশ্রমের জোরেই মারুফারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে অনন্য এক উচ্চতায়।


সম্পর্কে টানাপোড়েন সমাধান টানতে...

যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা অবশ্যই ভাবুন
আপডেটেড ১৯ জুলাই, ২০২৩ ২২:১৪
রবিউল কমল

আপনার ধারণা আপনার স্বামী নিশ্চয়ই অন্য কারও সঙ্গে কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সঙ্গীর চলাফেরা কথাবার্তা সবকিছুতেই আপনার সন্দেহ বাড়ে। প্রতিনিয়ত এক অজানা অশান্তি আপনার সঙ্গী হয়। আমাদের সমাজে অনেক নারীর জীবনে এই সমস্যা রয়েছে। কিন্তু এমন সমস্যা সমাধানের জন্য শুধু নিজের ওপর একটু আত্মবিশ্বাসই যথেষ্ট। আপনার বাস্তব ভাবনাচিন্তা আর তার প্রয়োগ এই সমস্যার সমাধান করে দিতে পারে।

একটু ভাবুন

আপনি অকারণে আপনার সঙ্গীকে সন্দেহ করছেন কি না, তা একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখুন। প্রতিটা মানুষেরই সুস্থ এবং সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য যথেষ্ট স্পেস দরকার। আপনা স্বামী যখন সারা দিনের অনেক সময় নিজস্ব কাজকর্ম এবং বন্ধুবান্ধব নিয়ে কাটান, তখন হয়তো আপনি ভাবেন অন্য কারও সঙ্গে তার বিশেষ কোনো সম্পর্ক রয়েছে। আপনার মধ্যে এমন কোনো ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে কি না, প্রথমেই তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করুন।

একজন মানুষকে সুন্দরভাবে বাঁচার জন্য যেমন বাবা-মা, স্ত্রীকে প্রয়োজন; ঠিক তেমনই বেশ কিছু বন্ধুও প্রয়োজন। আপনি অবশ্যই আপনার স্বামীর খুব ভালো বন্ধু। কিন্তু আপনার বাইরে তার জীবনে অন্য কোনো বন্ধু থাকতেই পারে। এমনকি সেই বন্ধুটি মহিলাও হতে পারে। আপনার স্বামীর জীবনে তিনি হয়তো যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু তাদের সম্পর্কের রসায়ন হয়তো আপনাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে কোনোভাবেই প্রভাবিত করে না। সে ক্ষেত্রে আপনার স্বামী আপনাকে ঠকাচ্ছেন এমন ভাবনার প্রশ্রয় দেয়া উচিত নয়।

সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসা আপনাকে কিছুটা অধিকারপ্রবণ করে তুলতে পারে। তিনি যখন আপনার সঙ্গে থাকেন না, তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আপনি নিজের কাজ না করে শুধু তাকে নিয়েই ভেবে যান। এ ক্ষেত্রে সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা থেকে আপনি আশঙ্কায় ভুগতে পারেন, তিনি আপনাকে ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু আপনার এমন ভাবনার কোনো যুক্তি রয়েছে কি না, নিজেই তার উত্তরে যুক্তি খোঁজার চেষ্টা করুন।

আপনার সঙ্গী আপনাদের সম্পর্কের ব্যাপারে যথেষ্ট যত্নবান নন। আপনি সারা দিন কী করছেন, খেয়েছেন কি না বা তার কাছে আপনার কোনো আবদার রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে তিনি উদাসীন। কিন্তু তার মানেই যে তিনি অন্য কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত বা আপনাকে ঠকাচ্ছেন এমন নাও হতে পারে।

আপনার সন্দেহ যখন সঠিক

আপনাকে ঠিক করতে হবে এ ব্যাপারে সঙ্গীর সঙ্গে আপনি খোলাখুলি কথা বলতে চান কি না। নিজের আত্মবিশ্বাস হারাবেন না। ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিন আপনারা সম্পর্ক রাখতে চান নাকি আপনার দুজনে আর কোনো সম্পর্ক রাখতে চান না। আপনার সন্দেহ সঠিক হলে বাড়ির প্রিয়জনদের সম্পূর্ণ ঘটনার কথা খুলে বলুন এবং অবশ্যই তাদের সাহায্য চান। সমাজের মুখোমুখি হতে ভয় পাবেন না। কেউ কিছু জানতে চাইলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সত্যি কথা বলুন। কোনো আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করুন। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে গেলে প্রয়োজনে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করুন। যেকোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সন্তানের ভবিষ্যতের কথা অবশ্যই ভাবুন। আপনার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে, এ কথা ভেবে একাকিত্বে ভুগবেন না বা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন না। আপনার বাড়ির লোক, বন্ধুবান্ধব সবাই আপনার পাশে রয়েছে। ভবিষ্যতে মনের মতো কাউকে অবশ্যই খুঁজে পাবেন, সে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী হোন। আপনার সন্তান যাতে এ ঘটনায় কখনো ইনসিকিউরড ফিল না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। এ ঘটনায় ওর মনে কোনো নেগেটিভ ফিলিং তৈরি হলে আপনার সন্তানকে তা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করুন। ওর সব প্রয়োজনে পাশে থাকুন।

সন্দেহ যখন সঠিক নয়

আপনার ভাবনার কথা সঙ্গীকে খুলে বলুন। দুজনে একসঙ্গে বসে ভুল বোঝাবুঝির কারণ নিয়ে আলোচনা করুন। সেই সঙ্গে ঠিক করে নিন কেমনভাবে চললে আপনাদের মধ্যে এমন ভুল বোঝাবুঝি এড়িয়ে চলা যাবে। স্বামীকে অকারণ ভুল বোঝার জন্য অবশ্যই তাকে সরি বলুন। আপনাদের দুজনের সমঝোতায় সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে, পরিবারের অন্য সদস্যদের সমস্যার কথা জানাবেন না। আপনার সন্দেহ যে সম্পূর্ণ ভুল সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। তর্কের খাতিরে আপনি মেনে নিলেন যে আপনার স্বামী নির্দোষ। কিন্তু আপনার মনের মধ্যে যদি সন্দেহ থেকে যায়, তাহলে তা আপনাদের সুস্থ সম্পর্কের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

নতুনভাবে চিন্তা করুন

আপনার নিজস্ব জগৎ যেমন আপনাদের সম্পর্কের একঘেয়েমি কাটাবে তেমনি সুস্থ এবং সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। আপনাদের দুজনের সম্পর্কে যথেষ্ট স্পেস রয়েছে কি না, সে কথা ভেবে দেখুন। আপনি যদি সর্বক্ষণ আপনার স্বামীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে ভালোবাসেন, সে ক্ষেত্রে সম্পর্কে বিরক্তি আসতেই পারে। সেই বিরক্তি থেকে সাময়িক বিরতি পেতেই হয়তো আপনার সঙ্গী অন্য কোনো সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন। সে জন্য আপনাদের সম্পর্ককে উপভোগ্য করে তোলার চেষ্টা করুন। সব সময় একে অন্যের সান্নিধ্যে না থেকে কোয়ালিটি টাইম কাটান। সম্পর্কের প্রাথমিক পর্যায়ের বন্ধুত্ব আবার ফিরিয়ে আনুন। নিজস্ব জগৎ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন। প্রথমেই নিজেকে সুন্দর রাখার চেষ্টা করুন। পছন্দের শপিং বা রূপচর্চায় কিছুটা সময় কাটান। এতে যেমন মন ভালো থাকবে, তেমনি নিজের প্রতিও আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। আপনার ভালো লাগে এমন কোনো কাজে কিছুটা সময় কাটান। পছন্দের সিনেমা দেখতে পারেন, গান শুনতে পারেন বা পুরোনো কোনো শখের কাজ করতে পারেন। এভাবে নিজস্ব স্টাইলে জীবনের চেনা ছকে পরিবর্তন আনুন। আপনার নিজস্ব জগতে, কাজকর্মে যথাসম্ভব সুজনশীল হয়ে ওঠার চেষ্টা করুন। আপনার সৃজনশীল জগৎ আপনার স্বামীর কাছে আকর্ষক হতে পারে। এর মাধ্যমেও আপনারা একে অপরের সান্নিধ্য লাভ করতে পারেন।

ইতিবাচক ভাবনা

আপনার সঙ্গী আপনাকে কোনোভাবে ঠকাচ্ছেন তা জানতে পারলে সেটা অবশ্যই আপনার কাছে দুশ্চিন্তার কারণ। কিন্তু যা হয়ে গেছে তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করার সত্যি কোনো মানে নেই। বরং তাকে আপনি একটা সুযোগ দিতে চান কি না, সেটি ভাবার বিষয় এবং এটি সম্পূর্ণই আপনার সিদ্ধান্ত। কিন্তু যে কোনো সম্পর্কের প্রাথমিক ভিত্তি বিশ্বাস। আপনাদের সম্পর্ক সেই বিশ্বাসের জায়গা ফিরে না পেলে সুস্থভাবে সম্পর্ক শেষ করার কথা ভেবে দেখতে পারেন। নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা শুরু করুন। প্রফেশনাল লাইফের সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবন আলাদা রাখুন। নিজের কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে দিন। হোমমেকাররা অবশ্যই নতুন করে নিজেদের লাইফ ডিজাইন করতে পারেন। নতুন কোনো চাকরি বা কোনো পার্ট টাইম জব আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। পুরোনো সম্পর্কের অভিজ্ঞতা থেকে যাতে আপনার মনে কোনো আশঙ্কা তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। মানুষের জীবনে প্রতিটা সম্পর্ক আলাদা। আপনার জীবনে নতুন কেউ এলে সে সম্পর্কের পরিণতিও আগের সম্পর্কের মতো হবে এমন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। আপনি আপনার স্বামীর প্রতি চিরকালই সৎ ছিলেন, তাই নিজের সম্পর্কে আত্মবিশ্বাস হারানোর কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আপনার জীবনে নতুন সম্পর্ক নিয়ে পজিটিভলি ভাবুন। নতুন সম্পর্কের ক্ষেত্রেও আপনার সততা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। আপনার জীবনের যাবতীয় ঘটনা আপনার বিপরীতের মানুষটিকে খুলে বলুন। দেখবেন নতুনভাবে জীবন শুরু করতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। আপনার ভবিষ্যৎ জীবন যাতে অতীতের দিনগুলোর চেয়ে সুন্দর হয়, সেই দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে।


সুরক্ষিত থাকতে হলে...

নারীদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে যা যথাসময়ে পরীক্ষা করা হলে নানা রকম বিপদের ঝুঁকি কমে
আপডেটেড ১৯ জুলাই, ২০২৩ ২২:১৩
শ্রেষ্ঠা ডেস্ক

নিজের প্রতি নিজে তো বটেই সেই সঙ্গে নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিবারকেও খানিকটা সচেতন হতে হবে। নারীদের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যা হয়ে থাকে যা যথাসময়ে পরীক্ষা করা হলে নানা রকম বিপদের ঝুঁকি কমে। তেমন কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পর্কে জেনে রাখতে পারেন-

হিমোগ্লোবিন

রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেলে তাকে রক্তশূন্যতা ধরা হয়ে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১২ থেকে ১৫ গ্রাম থাকা স্বাভাবিক। এ মাত্রা কমে গেলে রক্তশূন্যতা হয়েছে বলে ধরা হয়। হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ জানতে সিবিসি বা কম্পিলিট ব্লাড কাউন্টের মাধ্যমে জানা যায় রক্তে হিমোগ্লোবিন ঠিক অনুপাতে আছে কি না। নারীদের ক্ষেত্রে রক্তে আয়রনের পরিমাণ কমে গেলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। কেননা, আয়রন হিমোগ্লোবিন তৈরির মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে।

থাইরয়েড ও কোলেস্টেরল

নারীদের ক্ষেত্রে থাইরয়েডের সমস্যা খুবই বেশি। বিশেষ করে হাইপোথাইরয়েড অসুখটি নারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। তাই বয়স ৩০ হলেই ৬ মাসে অন্তত একবার থাইরয়েড পরীক্ষা করাতে হবে। পাশাপাশি রক্তের কোলেস্টেরল পরীক্ষা করাতে হবে। লিপিড প্রোফাইল পরীক্ষার মাধ্যমে কোলেস্টেরলের মাত্রা জানা যায়।

ক্যানসার স্ক্রিনিং জরুরি

কিছু ক্যানসার রয়েছে, যা শুধু নারীদের আক্রান্ত করে। এ ক্ষেত্রে ব্রেস্ট ক্যানসার ও সার্ভাইক্যাল ক্যানসার অন্যতম। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত ব্রেস্ট ক্যানসার স্ক্রিনিং করতে হবে। আবার সার্ভাইক্যাল ক্যানসারের ক্ষেত্রে করাতে হতে পারে এইচপিভি স্ক্রিনিং, প্যাপ স্মিয়ার ইত্যাদির টেস্ট।

হাড়ের স্বাস্থ্য নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে

হাড়ক্ষয় নারীদের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ রোগ। বিশেষ করে হাঁটুতে তো প্রায় সবরাই সাধারণ সমস্যা। তাই বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলেই ভিটামিন ডি৩ টেস্ট করাতে হবে। একইসঙ্গে ক্যালশিয়াম, বোন ডেনসিটি টেস্টও করতে হবে। অনেকে আবার ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যায় ভোগেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে গাউট আর্থ্রাইটিস ধরা যায়।

পিসিওএস

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) হলো অ্যান্ড্রোজেনের (পুরুষ হরমোন) মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কিছু উপসর্গ। বলা যায়, এটি আসলে একটি হরমোনজনিত সমস্যা। পিসিওএসে আক্রান্ত নারীর সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা কমে যায়। তাই ওজন বেড়ে গেলে, পুরুষালি কিছু বাহ্যিক পরিবর্তন শরীরে লক্ষণীয় হলে হরমোনের এ পরীক্ষা করে নেয়া ভালো। সময়মতো চিকিৎসা নেয়া হলে বন্ধ্যত্বকে বিদায় জানানো সম্ভব।


সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে…

সন্তানকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলতে যেভাবেই হোক সময় দিতে হবে। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৩ ১৯:০৪
মুনিরা পৌষি

জীবনের নানা বাঁক, এ চড়াই-উতরাই পথ পাড়ি দিতে আত্মবিশ্বাসের তুলনা করা কঠিন। কেননা, কেবল আত্মবিশ্বাসের ওপর ভর করেই অনেক কঠিন যুদ্ধ জিতে নেয়া যায়। তাই প্রত্যেকের ভেতরেই আত্মবিশ্বাসে ভরা এক সমুদ্র থাকা দরকার। যাতে প্রয়োজন হওয়া মাত্রই সেই সুবিশাল জলাধার থেকে কিছুটা আত্মবিশ্বাস তুলে এনে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা খুব সহজেই করে ফেলা সম্ভব হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আত্মবিশ্বাস কোনো জাদু নয় যে, আজ চাইলাম আর কাল পেয়ে গেলাম। বরং এটি তৈরির প্রক্রিয়া একদম ছোট বয়স থেকেই শুরু হয়ে যায়। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাস ডালপালা মেলতে শুরু করে। তবে অধিকাংশ বাবা-মা-ই জানেন না সন্তানের আত্মবিশ্বাস বাড়িতে তুলবেন কিভাবে? ফলে সময় থাকতে অনেকেই সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে উঠতে পারেন না। আর এর ফল গোটা জীবন ভোগ করতে হয় বাচ্চাকে। তাই আপনার ছোট্ট সোনামণির আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এমন কিছু কৌশল জেনে নিন।

প্রশংসা করতে কৃপণতা নয়​

সন্তান কোনো ভালো কাজ করলে তার প্রশংসা করুন। এ ক্ষেত্রে কোনো বিরাট কাজের অপেক্ষা না করে, বরং ছোট ছোট ভালো কাজের জন্যই তার প্রশংসা করতে হবে। যেমন ধরুন, সে হোমওয়ার্ক একাই শেষ করেছে বা একা একাই খাবার খেয়ে নিয়েছে ইত্যাদি ধরনের কাজের জন্য প্রশংসা করুন। সন্তান যখন বুঝতে পারবে যে ছোট ছোট কাজ করলেই প্রশংসা মিলবে, তখন আরও বড় কিছু করার পেছনে ছুটবে সে। এতে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে অচিরেই। তাই সন্তানের ভালো কাজের প্রশংসা করতে ভুলবেন না কখনো।

ভুল করলে বকাঝকা নয় ​

ছোট বয়সে ভুল করাটাই স্বাভাবিক। তবে আপনি যদি সেই ভুলটাকে বড় করে তার সামনে এনে উপস্থিত করেন, তাহলে আত্মবিশ্বাস অনেকটাই কমে যাবে। তাই ছোটরা ভুল করলে বকা দিয়ে লাভ নেই, বরং তাদের বুঝিয়ে বলতে হবে। সে হয়তো একবারে আপনার কথা ধরতে পারবে না, কিন্তু হাল ছাড়লে যে চলবে না। তাকে বারবার করে এই বিষয়ে বলে যেতে হবে। এতেই দেখবেন কাজ হয়েছে।

সব সময় জিততে হবে এমন নয়​

আপনার সন্তান অবশ্যই আলাদা। তার প্রতিভা অনন্য। আর এই কথাটা আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পড়াশোনা, খেলাধুলা বা জীবনের অন্য কোনো প্রতিযোগিতায় সে পিছিয়ে পড়লে তার হাত ছেড়ে দেবেন না। বরং তার পিঠে শক্ত হাত রেখে বলুন, ফলাফল যাই হোক, আমি জানি তুমিই সেরা। আমি সব সময় তোমার পাশে আছি। শুধু এই কথাটুকু সন্তানের মনে ঢুকিয়ে দিতে পারলেই দেখবেন তার কনফিডেন্স লেভেল বেড়ে গেছে।

সময় দিন

চাকরীজীবী বাবা-মায়েরা সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগটুকুই পান না। আর সেই কারণেই সন্তান ধীরে ধীরে মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়তে থাকে। তাই যেভাবেই হোক, সন্তানকে সময় দিতে হবে। চেষ্টা করুন অফিস থেকে দ্রুত বাড়ি ফেরার। এরপর আর কোনো অফিসের কাজ নয়। বরং বাড়ির খুদে সদস্যের সঙ্গেই সময় কাটান। বাবা-মায়ের সান্নিধ্যে থাকলে যেকোনো সন্তানেরই বেড়ে ওঠার ভিত মজবুত হয়। ফলে সন্তান হয়ে উঠবে আত্মবিশ্বাসী।


banner close