মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

পিরামিড কি ভিনগ্রহীদের বানানো স্থাপত্য?

গিজার গ্রেট পিরামিড
আপডেটেড
৯ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:০৫
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ৯ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:০৫

মিসরীয় সাতাতা জ্ঞান-বিজ্ঞানে কত দূর উন্নতি করেছিল, তার বড় নিদর্শন পিরামিড। আজ থেকে সাড়ে চার হাজার বছর আগে কীভাবে এগুলো তৈরি হলো, তা নিয়ে জল্পনাকল্পনার শেষ নেই। এলিয়েন কিংবা দেবতাদের মিথলজি ভেঙে আজকের বিজ্ঞান অনেকখানিই উদ্ধার করতে পেরেছে পিরামিড-রহস্য…

একটা সময় পিরামিড-রহস্য ভেদ করা অসম্ভব মনে করা হতো। এই সুযোগে গুজব ব্যবসায়ীরা একে ভিনগ্রহীদের তৈরি স্থাপত্য বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। সুইস লেখক এরিক ফন দানিকেনের মতো কিছু মানুষ পিরামিডের সঙ্গে এলিয়েনের মিথ জড়িয়ে লিখেছেন অজস্র বই। সেসব বই দেদার বিকিয়েছে বিশ্ববাজারে, কোটি কোটি ডলার ঘরে তুলেছেন লেখক আর তাঁদের প্রকাশকেরা। কিন্তু দিন বদলেছে, প্রযুক্তি আর গবেষণার সুবর্ণ সময়ে মানুষ ভাঙতে পেরেছে পিরামিড-রহস্যের আগল। এখন আর একে ভিনগ্রহী প্রাণী বা দানবাকৃতির মানুষের তৈরি স্থাপনা বলে চালানোর উপায় নেই। পিরামিড তৈরির জন্য প্রাচীন মিসরীয়দের বৈজ্ঞানিক জ্ঞান, কারিগরি দক্ষতার জয়গান করছে আধুনিক বিজ্ঞান। অনেকখানিই উদ্ঘাটিত হয়েছে, কীভাবে তৈরি হয়েছিল এসব অক্ষয় কীর্তি।

২.

পিরামিডের ইতিহাস মৃত্যুমোড়ানো। তাজমহলের মতো ভালোবাসার প্রতীক নয় পিরামিড। প্রাচীন মিসরে ফারাও ও তাদের পারিবারিক কবরের রক্ষাকবচ এগুলো। পিরামিডের আগেও কবর ছিল রক্ষাকবচ। মাস্তাবা নামে একধরনের আন্ডারগ্রাউন্ড ঘর তৈরি করে তার ভেতর লাশ রাখা হতো। মাস্তাবা আসলে চারকোনা ইট-পাথরের স্তূপের মতো। মৃত ব্যক্তির মর্যাদার ওপর নির্ভর করে এগুলো তৈরি হতো মাটি, ইট বা বিভিন্ন ধরনের পাথর দিয়ে। হ্যাঁ, সেকালেই ইট তৈরি করতে জানত মিসরীয়রা। মাটি, খড়, বালু ইত্যাদি দিয়ে ইট তৈরি হতো। ফারাওদের মাস্তাবার দেয়াল তৈরি হতো লাইমস্টোন দিয়ে। এসব লাইমস্টোন বা চুনাপাথর পাওয়া যেত বর্তমান কায়রো ও এর আশপাশের অঞ্চলে। তবে এসব মাস্তাবা তৈরিতে খুব বেশি স্থাপত্যশৈলী দেখানো হতো, তা কিন্তু নয়।

মাস্তাবার মূল কাঠামো থাকত মাটির ওপরে বসানো। অনেকটা মঞ্চ বা বেদির মতো। বাইরে থেকে দেখলে নিরেট মনে হবে। থাকত দুটি দরজা। একটা আসল, আরেকটা নকল। এসব দরজা দিয়ে ঢুকলে আপনি গিয়ে পড়বেন চারকোনা সরু টানেলের ভেতর। এই টানেলের ভেতর নামলে আর দেখতে হবে না। গভীর টানেলের ভেতর দিয়ে গিয়ে পড়বেন সত্যিকারের কবরখানায়। চারকোনা কফিনের মতো জায়গাটা। সেখানে থাকতেও পারে ফারাওয়ের মৃতদেহ। যদি মৃতদেহের হদিস পান, তাহলে ধরে নেবেন, সঠিক দরজা দিয়েই আপনি ঢুকেছিলেন। মৃতদেহের সঙ্গে মিলবে অজস্র ধনরত্ন আর ফারাওয়ের ব্যবহার্য দামি জিনিসপত্র। আর যদি কিছুই না পান অত দূর গিয়ে, ধরে নেবেন, নকল দরজা দিয়ে ঢুকেছিলেন। আবার আসল চেম্বারে ঢুকে রাজার মৃতদেহ আবিষ্কার করেও কিন্তু স্বস্তি নেই আপনার।

কারণ, খাড়া চেম্বার বেয়ে ওপরে ওঠা দুঃসাধ্য। ধনরত্নশিকারি চোর আর ডাকাতদের হাত থেকে এগুলো রক্ষার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবুও ডাকাতদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি বেশির ভাগ ধনরত্নই।

মাস্তাবার ব্যবহার মিসরীয়রা বহুকাল করেছে। কিন্তু এগুলো তাদের নিজস্ব আবিষ্কার নয়। সেকালে দজলা ও ফোরাত (অর্থাৎ ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস) নদীর অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল মেসোপটেমিয়া সভ্যতা। এই সভ্যতায় মাস্তাবার প্রচলন ছিল। সেখান থেকেই এ জ্ঞান পেয়েছিল তারা।

৩.

সত্যিকারের পিরামিড তৈরির কাজটা শুরু হয় মিসরের তৃতীয় রাজবংশের রাজত্বকালের শুরুতেই। এই রাজবংশের প্রথম ফারাও ছিলেন জোসার। আগের সব ফারাওয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও চেয়েছিলেন বেঁচে থাকতেই নিজের সমাধি তৈরি করতে। মাস্তাবার চেয়ে বেশি কিছু হোক, সে ভাবনা কার মাথায় প্রথম এসেছিল? জোসারের, নাকি ইমহোটেপের? এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে বিতর্ক নেই প্রথম পিরামিড তৈরির ইতিহাস নিয়ে। সবচেয়ে জনপ্রিয় মতটার কথাই আমরা বলি। জোসার চেয়েছিলেন, ব্যতিক্রম কিছু করতে। তাঁর সমাধিটা কেমন হবে, তার একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ইমহোটেপকে। বলেছিলেন, এমন সমাধি যেন তাঁর হয়, যেটা বাকি সবার চেয়ে আলাদা হবে। যেন যুগ যুগ ধরে মানুষ মনে রাখে তাঁকে।

ফারাও ফরমাশ দিয়েই খালাস। কাজ তো করতে হবে ইমহোটেপকেই। ফারাও অবশ্য জানেন, দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মাথা ইমহোটেপ, তিনি ভেবে নিশ্চয়ই এমন কিছু বের করবেন, যেটা আসলে ইতিহাস তৈরি করবে। তা ইমহোটেপ করেছিলেনও।

বিশাল সব পাথরের চাঁই সরানোর কাজ করছেন শ্রমিকেরা

আর করেছিলেন বলেই পৃথিবী আজ জানতে পারছে, পাঁচ হাজার বছর আগেও মানুষের স্থাপত্যবিদ্যা কতটা প্রখর ছিল। মোগল সম্রাট আকবরের যেমন আবুল ফজল, মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের যেমন চাণক্য, জোসারের তেমনি ইমহোটেপ—একাধারে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ, স্থপতি, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক। এমন একজন লোক আশপাশে থাকলে রাজার কাজটা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়। মিসরের বিস্ময় পিরামিড সৃষ্টিতে ইমহোটেপের বুদ্ধি আর জ্ঞানই ইতিহাস তৈরি করেছিল।

ইমহোটেপ তখনকার রাজধানী মেমফিসের অদূরে বেছে নেন ইতিহাস তৈরির জায়গা। প্রথমে মাটির নিচে বেশ কয়েকটি ঘর। সেসব ঘরের একটিতে থাকবে ফারাওয়ের মৃতদেহ, বাকিগুলোতে রাজার ব্যবহার্য জিনিস। সতেরোটি দরজা ছিল ঘরটাতে ঢোকার জন্য। এর মধ্যে মাত্র একটা দিয়ে ঢোকা যেত, বাকিগুলো কানাগলি। লুটেরা-ডাকাতদের ধোঁকা দিতেই এ ব্যবস্থা। নিজের সমাধিকক্ষগুলো তৈরির পরেই ইমহোটেপ সিদ্ধান্ত নিলেন, এর ওপরেই তৈরি করবেন প্রস্তরফলক। সেটা এত উঁচু হবে, যেন দূর থেকে দেখেও লোকে শ্রদ্ধায় মাথা নোয়ায়।

নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন ইমহোটেপ। পাথরের ওপর পাথর বসিয়ে বিশাল এক স্তম্ভ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ছয়বার জিনিসটা ধসে যায়। তাই নকশায় পরিবর্তন আনেন ইমহোটেপ। সবচেয়ে বড় পাথরখণ্ডটা তিনি বসান কবরের ঠিক ওপর। মাটির ওপর। এরপর বসালেন তার চেয়ে ছোট পাথর। এভাবে প্রতিটা ধাপেই পাথর একটু করে ছোট হয়ে গেল। সবশেষে বসল চূড়ার পাথর। ধাপে ধাপে তৈরি হলো পিরামিড। তাই এর নাম দেওয়া হলো স্টেপ বা ধাপ-পিরামিড। ২০৫ ফুট উঁচু এক সমাধিসৌধ!

জোসারের এই স্টেপ পিরামিড ছিল পুরোটাই প্রায় নিরেট। অর্থাৎ এর ভেতরে কোনো জায়গা ছিল না। তার মানে ফারাও জোসারের কবর পিরামিড দিয়ে শুধু ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবে এই পিরামিড স্রেফ একটা পিরামিডই নয়। এটাকে পিরামিড কমপ্লেক্স বলা ভালো। কারণ, পিরামিডকে কেন্দ্র করে এর চারপাশে তৈরি করা হয় নানা রকম অবকাঠামো। এ কমপ্লেক্সের আঙিনায় ছিল মন্দির, পূজার বেদি, সুড়ঙ্গপথ, প্যাভিলিয়ন ও মাঠ। আর চারপাশটা পরিখা দিয়ে ঘেরা।

প্রথম পিরামিড তো তৈরি হলো, কিন্তু কীভাবে তৈরি হলো, এত শ্রমিকই পেলেন কোথায় ইমহোটেপ- সে কথা যথাসময়েই বলা হবে।

৪.

গিজার পিরামিড তৈরি পাথর প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের একটা হলো গিজার গ্রেট পিরামিড। গঠনশৈলী আর উচ্চতায় একে পিরমাডিরে রাজা করে তুলেছে। ২৬০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের দিকে তৈরি এ পিরামিড। ফারাও জোসারের মতো আরেক উচ্চাভিলাষী ফারাও তখন ক্ষমতায়। তিনি ফারাও খুফু। লোকটার চাওয়া শুধু পিরামিড নয়, এমন এক পিরামিড, যা উচ্চতায় ছাড়িয়ে যাবে আগের সব কটিকে। ভবিষ্যতেও যেন এমন পিরামিড আর তৈরি না করতে পারে, সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে। দায়িত্ব দিলেন আত্মীয় হোমিউনুকে।

খুফু-হোমিউনুর সুবিধা অনেক বেশি ছিল জোসার- ইমহোটেপের চেয়ে। নতুন পথ তৈরির চেয়ে আরেকজনের দেখানো পথে হেঁটে এগোনো সহজ। খুফু সুবিধাটার সদ্ব্যবহার করেছিলেন ষোলো আনা। জোসারের পথে হাঁটেন ফারাও সেখেমখেত আর ফারাও খাবা। কিন্তু তাঁরা সফল হননি। সম্ভবত ইমহোটেপের মতো ক্ষুরধার মস্তিষ্কের কাউকে পাননি তাঁরা। তবে হুনি নামের এক ফারাও বেশ কিছু ধাপ পিরামিড নির্মাণ করেন। সফলভাবে। হুনি ছিলেন খুফুর পূর্বপুরুষ। কিছু ছোট ছোট পিরামিডও তৈরি হয় এর আগে-পরে। সেগুলোর উচ্চতা ৫৫ ফুটের বেশি নয় একটাও। খুফুর বাবা স্নেফেরুও বানান এমন পিরামিড। কিন্তু তাঁর মন ভরেনি। তাই রেড পিরামিড তৈরিতে মনোযোগ দেন তিনি। এটাই ছিল প্রথম সত্যিকারের পিরামিড। রেড পিরামিড তৈরি করতে গিয়ে বেশ কিছু সমস্যায় পড়েন স্নেফেরু। রড-সিমেন্টের বালাই ছিল না তখন। তার বদলে ব্যবহার করা হতো চুন-সুরকি। সুতরাং স্থাপত্যবিদ্যার নানা রকম কৌশল অবলম্বন করতে হয়েছিল তাঁকে। তিনি প্রথমে মেইডুম নামে একটা পিরামিড তৈরি করেন। কিন্তু এর চুনাপাথরের আবরণ পিচ্ছিল হয়ে যায়। ধসে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছিল। তাই এটিকে বাতিল করেন। পরে রাজধানী থেকে কিছুটা দূরে দাশুরে তৈরি করেন আরও দুটি পিরামিড।

স্নেফেরু দাশুর নামের একটা জায়গায় একটু অন্য রকম পিরামিড তৈরির চেষ্টা করেন। সেটা ছিল আগের ধাপ-পিরামিডের চেয়ে অনেকটা খাড়া। ভূমির সঙ্গে এর ঢালের কোণ ছিল ৬০ ডিগ্রি। কিন্তু পিরামিডের নিচের অংশ কিছুটা ধসে পড়ে, নেমে আসে ৫৪ ডিগ্রিতে। তাই পিরামিড তৈরির মাঝপথেই মাটির সঙ্গে এর কৌণিক ব্যবধান কমিয়ে ৪৩ ডিগ্রিতে নিয়ে আসেন। ফলে অদ্ভুত আকার ধারণ করে পিরামিডটি। তবে মজার ব্যাপার হলো, অদ্ভূত আকার নিয়েই প্রায় সাড়ে চার হাজার বছর টিকে রয়েছে পিরামিডটি।

বিকৃত পিরামিডে নিজেকে সমাহিত করতে চাননি স্নেফেরু। তাই দাশুরে আরেকটা পিরামিড তৈরি করেন তিনি। রেড পিরামিড। এটাকেই প্রথম সত্যিকারের পিরামিড মনে করেন মিসরতত্ত্ববিদেরা। এটা নিয়ে আর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় যাননি। ৪৩ ডিগ্রি কোণ করেই পিরামিড তৈরি করেন। শেষ পর্যন্ত সফলভাবে এর নির্মাণকাজ শেষ হয়। রেফেরুর মৃতদেহ এই রেড পিরামিডেই সমাহিত করা হয়।

ধাপ পিরামিড অনেকটাই নিরেট ছিল। এ পিরামিডে মৃতদেহ রাখার চেম্বার তৈরি করা হতো মাটির নিচে। এ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনেন স্নেফেরু। তিনিই প্রথম মৃতদেহ রাখার চেম্বার তৈরি করেন ভূপৃষ্ঠের ওপরে।

স্নেফেরুর সাফল্য তাঁর ছেলেকে উদ্বুদ্ধ করেছিল গ্রেট পিরামিড তৈরিতে। খুফুর সুবিধা ছিল স্নেফেরুর চেয়ে অনেক বেশি। ধাপ-পিরামিড ছিল উদাহরণ হিসেবে। বাবার তৈরি তিনটি পিরামিডের কৌশলও তাঁর জানা। তাই নতুনত্ব আনা তাঁর জন্য সহজ ছিল। তিনি পিরামিডকে একেবারে ভূপৃষ্ঠে নির্মাণ করে, এর নির্মাণকাজ শুরু করেন ভূগর্ভের ভেতর থেকে। ফলে ৪৮১ ফুট উঁচু করে তৈরি করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। ভূগর্ভের নিচে শক্ত ভিত ছিল বলেই ৫১.৫ ডিগ্রি কোণেই আজও টিকে আছে গিজার গ্রেট পিরামিড।

৫.

এত বড় একটা পিরামিড তৈরি করতে নিশ্চয়ই অনেক অনেক বেশি পাথর লেগেছিল। দূর থেকে বড় বড় পাথর বহনের কাজ সোজা নয়। আর সেই কাজ একটু সহজ করার জন্য খুফু ভাবলেন, রাজধানী নয়, এমন এক জায়গায় বানাতে হবে পিরামিড, যার আশপাশে পাথরের পর্যাপ্ত জোগান আছে। আর যদি হয় জায়গাটা বেশ উঁচু, তাহলে সোনায় সোহাগা। খুঁজেপেতে রাজধানী মেমফিস থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গিজা অঞ্চলটাকেই বেছে নেন তিনি। জায়গাটা উঁচু, পাশেই চুনাপাথরের খনি। সমস্যা হলো দূরত্বটা। ফারাওদের সমাধি রাজধানীতে হবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু খুফুর উদ্দেশ্য সবার চেয়ে সেরা জিনিসটা বানানো, তাই একটা ব্যাপারে ছাড় দিলেন। গিজাতেই বানানোর সিদ্ধান্ত নিলেন পিরামিড। দূরত্ব কমানোর জন্য ব্যবহার করলেন নীল নদকেই। মেমফিস নীল নদের কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল। দূরত্ব কমানোর জন্য নীল নদ থেকে গিজা পর্যন্ত একটা খাল খনন করলেন খুফু। নৌ যোগাযোগ স্থাপিত হলো। সুতরাং ১৫ কিলোমিটার দূরত্বটাকে আর বাধা মনে হলো না খুফুর কাছে। তা ছাড়া গিজাতেই বানিয়ে নিলেন একটা অস্থায়ী রাজপ্রাসাদ। পরের ৩০ বছর ধরে ধীরে ধীরে নির্মাণ করা হলো গিজার পিরামিড।

৬.

এত বড় একটা কর্মযজ্ঞ। নিশ্চয়ই অনেক লোকের দরকার। তা বৈকি। ইতিহাসের জনক গ্রিক দার্শনিক হেরোডোটাস মিসর ভ্রমণ করেছিলেন খ্রিষ্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে। সেখানকার জনশ্রুতি শুনে লিখেছিলেন গিজার পিরামিডের ইতিহাস। তাতে লেখা, প্রায় এক লাখ ক্রীতদাস অবিরাম খেটে তৈরি করেছিল গিজার পিরামিড। কিন্তু ১৯৯০ সালে মিসরীয় আর্কিওলজিষ্ট জাহি আব্বাস হাওয়াস ভুল প্রমাণ করেন হেরোডোটাসকে। আশপাশের এলাকা খনন করেন। খুঁজে পান নতুন নিদর্শন। একটা শ্রমিকপল্লির সন্ধান পাওয়া যায়। পাওয়া যায় শ্রমিকদের কঙ্কাল, তাঁদের ব্যবহার্য জিনিস, থাকার ঘর, তৈজসপত্র, চিকিৎসালয়। এসব নিদর্শন থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়াস হিসাব করে দেখান, ১ লাখ নয়, ১০ হাজারের মতো শ্রমিক সেখানে কাজ করেছেন ৩০ বছর ধরে। পরে এই সংখ্যা বেড়েছে। এখন মনে করা হয়, ২৫ হাজার শ্রমিক এ কাজ করেছিলেন।

হাওয়াস বলেছিলেন, শ্রমিকেরা স্রেফ ক্রীতদাস নন, বরং পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাজ করা শ্রমিক। সম্ভবত তাঁরা ফারাওয়ের সৈন্য বাহিনীর একাংশ। সেখানে শ্রমিকদের থাকা-খাওয়া, এমনকি চিকিৎসালয়ের সন্ধানও পেয়েছিলেন। বলে দাবি করেন হাওয়াস। পরে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, ইজিপ্টলজিস্ট রোজালি ডেভিড শ্রমিকদের কঙ্কাল রাসায়নিক ও কম্পিউটার সিমুলেশন করে দেখিয়েছেন, কেমন ছিল শ্রমিকদের চেহারা। সেটা দেখে বোঝা যায়, এদের শারীরিক গঠন মোটেও কৃতদাসদের মতো নয়। এদের কঙ্কালের সিটি স্ক্যান করে পাওয়া গেছে আরও চমকপ্রদ তথ্য। অনেকের ভাঙা হাড় পাওয়া গেছে। সেগুলো রীতিমতো চিকিৎসা করে জোড়া দেওয়া হয়েছে। তার মানে, জাহি হাওয়াসের ধারণাই ঠিক। এদের শ্রমিকদের জন্য সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও ছিল। কৃতদাসদের দিয়ে করানো হলে এ ব্যবস্থা থাকত না।

৭.

পিরামিড তৈরির সবচেয়ে সমস্যা ছিল পাথর বহন। বিশাল বিশাল পাথরের চাঁই বহুদূর থেকে নিয়ে আসার মতো যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তি সেকালে আদৌ কি ছিল? এ প্রশ্নের উত্তর মিলতে সময় লেগেছে। তাই হয়তো মিসর নিয়ে মানুষ এত এত রহস্যের জাল বুনেছে। বেশির ভাগ পিরামিড তৈরি হয়েছে এমন সব জায়গায়, যার আশপাশে প্রচুর পাথরের জোগান আছে। বহুদূর থেকে আসলে বয়ে আনা হয়নি পাথর। আনা হয়েছে আশপাশ থেকে। যেমন খুফু গ্রেট পিরামিড কেন গিজায় বানালেন। তাঁর বাবা স্নেফেরুর পিরামিডগুলো বানিয়েছিলেন। দাশুরে। এর কাছাকাছি কোনো জায়গায় খুফু পিরামিড বানাতে পারতেন। তা না করে তিনি কেন গিজায় পিরামিড বানালেন, তার কারণ আগেই বলেছি — পাথরের পর্যাপ্ত জোগান। আসলে দাশুরের আশপাশের খনিগুলোতে পাথরের জোগান শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই গিজাকে বেছে নেন খুফু। পর্যাপ্ত পাথরখনির কারণেই। সবাই এ সুবিধাটা পায়নি। দূর থেকেও পাথর বহনের নজির আছে পিরামিডগুলোতে।

পাথর সহেজ নৌপথে পরিবহন করা যায়। ভেলাজাতীয় জিনিস কিংবা বড় বড় নৌকা তৈরি করতে পারত মিসরীয়রা। ভাসমান কাঠ দিয়ে তৈরি করত ভেলা বা নৌকা। তার ওপর পাথরগুলো বেঁধে ছেড়ে দেওয়া হতো নদীতে। সেসব ভেলার সঙ্গে দড়ি বেঁধে গুন টানার মতো টেনে নেওয়া হতো নদীর কিনার থেকে। কখনো কখনো গবাদিপশুও ব্যবহার করা হতো গুন টানার কাজে। তাই চুনাপাথরের খনি অনেক দূরে হলেও সমস্যা ছিল না।

ক্যাপশন : পিরামিড তৈরির সময় নৌকা আর নদীপথ রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

তবে অল্প দূরত্বে নেওয়াও কম কঠিন কাজ নয়। এই কঠিন কাজটা মিসরীয়রা করার জন্য একটা বিশেষ জিনিস তৈরি করেছিল। পাথরের চেয়ে বড় মাপের কাঠের মাচা তৈরি করা হয়েছিল। মাচাগুলো অনেকটা বিশালাকার স্লেজ গাড়ির মতো। পাথরের চাঁইগুলো ঢালু জায়গা থেকে গড়িয়ে তোলা হতো মাচার ওপর। নৌকার নিচে পানি আছে। পানি ঠেলে সহজেই নৌকা বাওয়া যায়। মাচাগুলো চলে কীভাবে? তা-ও আবার শুকনা বালুর ওপর।

প্রথমে মাচা চলার রাস্তায় পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে বালুকে শক্তপোক্ত করা হতো, যাতে ধসে না যায়, তার ওপর রাখা হতো গাছের গুঁড়ি। সেই গুঁড়িগুলোর ওপর দিয়ে চালিয়ে দড়ি বেঁধে টেনে নেওয়া হতো। বহু লোক একসঙ্গে দড়ি বেঁধে কিংবা ঠেলে পাথর গড়িয়ে নিত। তাই কাজটা কঠিন হলেও অসাধ্য ছিল না। মনে রাখতে হবে, একেকটা বড় আকারের পিরামিড বানাতে ১০ হাজারের বেশি লোক কাজ করেছেন একসঙ্গে। তাঁদের মিলিত শক্তি কম নয়। তা সত্ত্বেও পিরামিড যখন উঁচু হতে হতে কয়েক শ ফুট হয়ে গেছে, তখন অত উঁচুতে কীভাবে তোলা হতো পাথর?

আসলে এ নিয়ে প্রত্নতত্ত্ববিদেরাও দ্বিধাবিভক্ত। অনেকগুলো তত্ত্ব তাঁরা খাড়া করেছেন। সেগুলোর প্রতিটিই যুক্তিযুক্ত। তবে এটা ঠিক, সব পিরামিড একই পদ্ধতিতে তৈরি হয়নি। দিন যত এগিয়েছে, বদলেছে কৌশলের ধরন।

পিরামিড তৈরির একটা জনপ্রিয় তত্ত্ব হলো র্যাম্প থিওরি। এ পদ্ধতিতে নির্মাণ করা হতো ঢালু পথ, যা পিরামিড কাঠামোর সঙ্গে লাগানো। এটা দেখতে গ্যারেজে গাড়ি ঢোকানোর জন্য পথের মতো। সমতল ঢালু পথ। এই পথে পাথরগুলোকে টেনে ওপরে ওঠানো হতো।

আরেকটা হলো সুইচব্যাক পদ্ধতি। এ পদ্ধতি অনেকটা জিগজ্যাগ পদ্ধতিতে পিরামিডের চারপাশে তৈরি করা হতো র্যাম্পগুলো। অনেকটা প্যাঁচানো ধাপহীন সিঁড়ির মতো। পিরামিডের নির্মাণকাজ শেষ হলে ধ্বংস করে ফেলা হতো সব কটি র্যাম্প।

অন্যদিকে পিরামিডের চারপাশে পরিখা খননেরও একটা কারণ বের করে ফেলেছেন গবেষকেরা। পিরামিডের চারপাশে বড় পাথরগুলো সরানোর কাজটাও কম ঝক্কির ছিল না। তাই ভেলায় বেঁধে সহজেই এপাশ থেকে ওপাশ করানো যেত পরিখার পানিতে ভাসিয়ে।

৮.

পাথর না হয় তোলা হলো। কিন্তু খনি থেকে পাথর তুলেই কি সেটা ব্যবহার করা যায়? একেক পাথরের তো একেক রকম আকার। বিল্ডিং ব্লক হিসেবে মোটেও নানা রকম, নানা আকারের পাথর নিলে চলে না। ইটের মতো একই আকারের একই চেহারার পাথর দরকার। সেটা পেতে হলে কাটতে হয় পাথরকে। মিসরীয়রাও পাথর কাটত। কিন্তু সেটা বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল তাদের জন্য। খুফুর পিরামিড যখন তৈরি হচ্ছে, তখনো শুরু হয়নি লৌহযুগ। অর্থাৎ লোহার ব্যবহার শেখেনি মানুষ। তাই একালের মতো লোহার ছেনি বা হাতুড়ি ছিল না। একটা বিকল্প ছিল তাদের হাতে, সেটারই সদ্ব্যবহার করে তারা। তামার ব্যবহার জানত খুফুর আমলের লোকেরা। একটা সময় পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা মনে করতেন শুধু তামা দিয়েই বুঝি ছেনি বা অন্যান্য ধারালো সরঞ্জাম তৈরি করা হতো। কিন্তু তামা লোহার মতো শক্ত-পোক্ত নয়। নমনীয়। তামাকে সহজেই বাঁকানো যায়। কিন্তু বিশেষ উপায় বের করে ফেলেছিল মিসরীয়রা। তামার সঙ্গে তারা ভেজাল হিসেবে ব্যবহার করত আর্সেনিক। সেগুলো ব্যবহার করেই পাথর কাটার ব্যবস্থা করেছিলেন মিসরের প্রাচীনকালের শ্রমিকেরা। ব্রিটিশ প্রকৌশলী ও মিসরতত্ত্ববিদ ডেনিস স্ট্রোকস এক ডকুফিল্মে জানিয়েছেন সে কথা।

এসব ছেনি দিয়ে চুনাপাথর কাটা যেত সহজেই। কিন্তু গিজার ছোট পিরামিডের ভেতরে পাওয়া গেছে বড় বড় সব গ্রানাইট পাথরের চাই। গ্রানাইট হলো হীরার পর পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন বস্তু। সুতরাং তামা- আর্সেনিকের সংকর ধাতু দিয়ে এ পাথর কাটা অসম্ভব। এসব পাথর কেটে ব্লক তৈরি করতে হলে দরকার করাতের মতো বড় কিছু। সেটাও বানাতে শিখেছিল মিসরীয়রা। তারা লম্বা তামার পাতের (আর্সেনিক মিশ্রিত) একটা প্রান্ত ঘষে ব্লেডের মতো ধারালো করে নিত। করাতের মতো দাঁতালো নয় এমন ধাতব ব্লেড। কারণ, দাঁতালো করাতের পক্ষে গ্রানাইট কাটা সম্ভব নয়। ধাতব ব্লেডের দুই মাথায় দড়ি বেঁধে দুই দিক থেকে দুজন টানত করাতের মতো করে। একটা ব্লক তৈরি করতে প্রায় সময় লাড়ত সাত মাস। এ জন্যই পিরামিড তৈরিতে এত সময় লেগেছে।

৯.

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে মাপজোখটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য তারা কাজে লাগিয়েছিল জ্যোতির্বিদ্যা। আকাশের তারাদের নিয়ে তাদের উৎসাহ ছিল। করত মহাকাশচর্চাও। দিক ঠিক করত তারা দেখে। গ্রেট পিরামিড তৈরিতেও তারা নক্ষত্রের সাহায্য নিয়েছিলেন বলে মনে করেন মিসরতত্ত্ববিদেরা। তারাদের সাহায্যে পাই টু পাই দিক মিলিয়ে চারটি হেলানো তল চারদিকে বসাতে সফল হয় মিসরীয়রা।

গিজার গ্রেট পিরামিড কিন্তু শুধুই একটা পিরামিড নয়। এখন তিনটি বড় পিরামিড আছে, তার পাশেই তিনটি ছোট পিরামিড। বড় পিরামিড তিনটি একই সরলরেখায় থাকলে ব্যাপারটা সুন্দর হতো। কিন্তু এদের দুটি একই সারিতে হলেও একটার অবস্থান একটু এক পাশে। কেন? এ প্রশ্ন বহুদিনের। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের শুরুতেই একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করেন বেলজিয়ান মিসরতত্ত্ববিদ রবার্ট বাউভাল। তিনি যুক্তি দেন, আকাশের অরিয়ন নক্ষত্রমণ্ডলের প্রধান তিনটি তারা আলনিটাক, আলনিলাম আর মিলনামা। মিসরে রাতে যখন এ তারাগুলো দেখা যায়, তখন তিনটি বড় পিরামিডের চূড়া বিন্দুর ওপর এ তিনটি তারার অবস্থান পুরোপুরি মিলে যায়। তিনটি পিরামিড একই সরলরেখায় হলে এভাবে তারাদের অবস্থানের সঙ্গে মিলত না। সম্ভবত এ তিন তারার কথাই ভেবেই খুফু পিরামিড তিনটির অবস্থান এভাবে সাজিয়েছিলেন।

পিরামিড তৈরিতে আরেকটা ব্যাপার খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেটা হলো লেভেলিং। পুরো ভিতের জায়গাটা পাই টু পাই সমতল না হলে এত বড় স্থাপনা সম্ভব নয়। এ জন্য পিরামিডের চারপাশে পরিখা খনন করা হয়। তাতে পানি ঢেলে দেখা হয়, এক পাশ থেকে অন্য পাশে গড়িয়ে যায় কি না। যেদিকে পানি গড়াবে, সেদিকটা নিচু। উল্টো দিকের মাটি কেটে আবার লেভেলিং করা হতো। একটা ত্রিভুজাকৃতির কাঠের শীর্ষবিন্দুতে দড়ি ঝুলিয়ে, তাতে একটা ছোট্ট ভারী বস্তু ঝুলিয়েও লেভেলিং করা হতো বলে মনে করেন ডেনি স্টোকস।

বিজ্ঞান প্রমাণে বিশ্বাসী। কিন্তু চাইলেই যেকোনো প্রশ্নের দ্রুত সমাধান পাওয়া যায় না। দীর্ঘদিনের গবেষণা আর ব্যাখ্যা- বিশ্লেষণের মাধ্যমেই একসময়কার অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর বিজ্ঞান দিতে পারে। অনেকেই এ সময়টুকু দিতে নারাজ।

পিরামিড নিয়েও বহু গুজব ছিল বাজারে। এখনো আছে। অনেকে এর পেছনে এলিয়েনের কারসাজি খুঁজেছেন। কিন্তু গুজবে কান না দিয়ে বৈজ্ঞানিক কারণ অনুসন্ধান করলেই আসল ইতিহাস জানা সম্ভব।


গরমে বার্ডস আইয়ের পলো টি শার্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফিচার ডেস্ক

ফ্যাশন হাউজ বার্ডস আই এই গরমে রকমারি ডিজাইনের পলো টি-শার্ট নিয়ে হাজির হয়েছে । সেই সাথে ছেলেদের সব ধরনের পোশাক থাকছেই যেমন, টি শার্ট , পলো টি শার্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি ইত্যাদি ।

চায়না, ইন্ডিয়া বাংলাদেশী কাপড়ের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট , পলো টি শার্ট সারাদেশে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা বার্ডস আই।

আজিজ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বার্ডস আইয়ের ২টি মেগা শোরুম শো-রুমে রয়েছে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের ব্যবস্থা।


গ্রীষ্মে প্রকৃতি রাঙানো জারুল ফুলের পসরা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসান মাহমুদ রিপন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মের এ খরতাপের মধ্যেই বাংলার প্রকৃতিতে দেখা যায় নানা প্রকার ফুলের সমারোহ। বিভিন্ন জাতের অনেক ফুলের মধ্যে মানুষের নজর কাড়ছে বেগুনি রঙের থোকা থোকা জারুল ফুল। পাপড়ির নমনীয় কোমলতা, দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে যেন আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে এ জারুল ফুল। এমন অনিন্দ্যসুন্দর মনকাড়া দৃশ্য কতই না চমৎকার!

সবুজ প্রকৃতির মধ্যে রোদ ঝলমলে জারুল গাছগুলোয় শোভা পাচ্ছে গাঢ় বেগুনি রঙের ফুল। চলার পথে পথিক থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন জারুল ফুলের বেগুনি রঙের আভা। থোকা থোকা ফুলগুলোও যেন চোখ ধাঁধিয়ে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বাংলার প্রাচীন রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের নৈসর্গিক অঙ্গনে ফুটে থাকা জারুল ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলি মানুষকে বিমুগ্ধ করছে।

এখানে ঝাড়লণ্ঠনের মতো পুষ্পগুচ্ছ-রূপের পসরা সাজিয়ে বসেছে এ জারুল ফুল। জারুল গাছে বেগুনি রঙের যেন ফুলের বন্যা। ফাউন্ডেশনের দৃষ্টিনন্দন লেকের পাড়ে জারুল ফুলের দীর্ঘ মঞ্জরি যে কোনো পর্যটককে বিমোহিত করে। পথের ধারে জারুল ফুলের সৌন্দর্য দেখে মনটাও প্রাণবন্ত হয়ে যায় লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে বেড়াতে আসা সৌন্দর্য পিপাসুদের।

গ্রীষ্মের শুরুতে জারুলের উজ্জ্বল প্রস্ফুটনে চারিদিকে উচ্ছলতার বিকিরণ সব সৌন্দর্য-পিপাসু মানব মনকে মুগ্ধ করে রাখে। এ যেন গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে এক টুকরো রঙিন হিমেল হাওয়া। কবি জীবনানন্দ দাশের কাব্যে গ্রীষ্মের খরতাপের একটু প্রশান্তিতে বেগুনি আভার জারুল ফুলের সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। কবি তার কবিতায় বলেছেন-

এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে- সবচেয়ে সুন্দর করুণ

সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকৃপী ঘাসে অবিরল;

সেখানে গাছের নাম : কাঁঠাল, অশ্বথ, বট, জারুল, হিজল;

সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ

আরও বলেছেন- ভিজে হয়ে আসে মেঘ দুপুরে চিল একা নদীটির পাশে

জারুল গাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে।

রূপময়ী জারুলের প্রতি কবি জীবনানন্দ দাশ তো সাহিত্যের এক মহিমান্বিত রসদ জ্ঞান করছেন। জারুল ফুল আর ফলের বিপুল সমাহার গ্রীষ্মে প্রকৃতিকে দিয়েছে অনন্য মনোরম মর্যাদা। পাশাপাশি রসালো আম, জাম, কাঁঠাল ও ফলফলাদির সঙ্গে ফুলের মাধ্যমে প্রতি বছর নয়নাভিরাম অস্তিত্বের জানান দেয়। জারুল ফুল এ মৌসুমেরই অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ফুল। গরমের মাত্রা যতই বাড়ছে জারুল ফোটার তীব্রতা ততই বাড়ছে। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে জারুলের মুগ্ধতা কমতে থাকে।

গ্রামবাংলায় জারুল গাছ একটি অতি পরিচিত নাম। প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখতে জারুল ফুলের কোনো জুড়ি নেই। জারুল সাধারণত জমির আইলে, রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় এমনিতেই জন্মায়। পাপড়ির নমনীয় কোমলতায় দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে জারুল ফুল। পাতাঝরা বড় আকারের বৃক্ষ। বাকল মসৃণ ও রং ধূসর বা পিতাভ ধূসর। ফুল বেগুনি। কাঠ শক্ত মসৃণ ও টেকসই। সহজে কাজ করা যায়। পানির নিচেও ব্যবহার করা যায়। গাছের উচ্চতা ৮০ থেকে ১০০ ফুট বা তদূর্ধ্ব। উদ্ভিদ বিজ্ঞান অনুযায়ী জারুল লিথ্রাসি গোত্রের উদ্ভিদ। এর অর্থ সুন্দর-শোভন। ইংরেজি নাম কুইন ফ্লাওয়ার। এর বৈজ্ঞানিক নাম লিরগার্সট্রোমিয়া স্পোসিওসা।

জারুল ফুলের আদি নিবাস শ্রীলংকা। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন প্রভৃতি অঞ্চলে জারুল গাছের দেখা মেলে। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতেও এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। সোনারগাঁয়ের গ্রামাঞ্চলে, লোকশিল্প ফাউন্ডেশন এলাকায় ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ধারে জারুল গাছ পাওয়া যায়।

জারুল গাছে এপ্রিল থেকে জুন মাসে ফুল আসে। জারুল গাছ যখন ফুলে ফুলে ভরে যায় তখন চারদিক ঘ্রাণে মোহিত হয় না বটে, দৃষ্টিনন্দন নিলাভ, বেগুনি রাশি শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। আকৃতি ভিন্ন হলেও জারুল ফুলের রং সাধারণত কচুরিপানা ফুলের মতো বেগুনি আর সাদার মিশেল। তবে ইটভাটার ‘ক্ষুধা’ নিবারণসহ নানা কারণে এ গাছটি আগের মতো দেখা যায় না। জারুল ফুল শুধুই চোখের মজা জোগালেও এ গাছের কাঠ ঘর-গেরস্থালির কাজে লাগে। শক্ত ও ভারী বলে জারুল কাঠ নৌকা, লাঙ্গলসহ অনেক আসবাবপত্র ও খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। জারুল গাছের ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে। এর বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী।

জারুলকে বাংলার চেরি বলা হয়। কী অপূর্ব হয়ে ফোটে। চোখ ভরে যায় তার রূপে। সোনারগাঁয়ে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁ জাদুঘর) বিশাল চত্বরে এ মৌসুমে যখন ফুল ফুটতে থাকে, তখন জাদুঘরের প্রবেশ পথ থেকে চোখ ফেরানো দায়। বেগুনি রঙের আগুন কি হয়? হওয়া উচিত। জারুল যেন বেগুনি আগুন। আমাদের কেন জারুল উৎসব হয় না, চেরি উৎসবের মতো। একপাশে জারুল, আরেক পাশে কৃষ্ণচূড়া, একটু না হয় সোনালু। আহ্ কি অপূর্ব। কী অপূর্ব তার শোভা এবং আকর্ষণ।

সোনারগাঁয়ের কবি শাহেদ কায়েস বলেন, জারুল ফুল আসলে অনেক সুন্দর গাছ হওয়ায় আমাদের এলাকার পরিবেশকে বেশ সজ্জিত করেছে। এই সৌন্দর্যময় পরিবেশ দেখে যে কেউ বিমোহিত হয়। আশ্চর্যের বিষয়, জারুল ফুলে ভরপুর এই প্রাকৃতিক পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে পথের পথিক কিছুটা সময় হলেও এখানে ব্যয় করে।

কবি রহমান মজিব বলেন, বৈশাখ মাসে গ্রামগঞ্জসহ রাস্তার ধারে জারুল গাছ এখন বেগুনি রংয়ের ফুলে প্রকৃতিকে এক অপার সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছে। চমৎকার এই ফুল সবারই নজর কাড়ছে প্রতিনিয়ত। জারুল গাছের বেগুনি রঙের ফুলে মনোমুগ্ধকর এক আবেশ তৈরি হয়। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই ভালো লাগে, যদিও বর্তমানে জারুল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাই সড়কের দুই পাশসহ বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এই গাছটি বেশি করে রোপণ করা খুবই জরুরি।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা লেখক এ কে এম মুজ্জাম্মিল হক মাসুদ জানান, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরের ভেতরে অসংখ্য জারুল গাছ রয়েছে। এখন শুধু দৃষ্টিপাত হয় জারুল ফুলে। সভ্য মানুষের অসভ্য চাপে আছে প্রকৃতি জননী। তথাপি চাকরির সুবাদে আমরা দুদশক পুষ্পশোভিত অপরূপ জারুল তরুর রূপসুধা পান করে আসছি। তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রাতর্ভ্রমণে জারুলের দীর্ঘ পুষ্পমঞ্জরির উচ্ছ্বাস দেখে বিমোহিত হয়েছি। জাদুঘর অঙ্গনের সৌন্দর্য বর্ধনে এবং পরিবেশের সামগ্রিক শুচিতা রক্ষায় ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জারুল তরু রোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পথতরু হিসেবে জারুল আদর্শ। জারুল পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ উপযোগী। তাই জারুল তরুর সুসমন্বিত বিন্যাশে প্রাণের পটভূমি সোনারগাঁ জাদুঘরের প্রতিবেশ অপরূপ নান্দনিক শোভামণ্ডিত হয়ে উঠতে পারে।


গরমে যত্ন নিন পোষা প্রাণীর

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:১৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শখ বা প্রয়োজনে যে কারণেই হোক অনেক ঘরেই দেখতে পাওয়া যায় পোষ্য প্রাণী। এই তীব্র দাবদাহে নিজেদের সুস্থাতার পাশাপাশি পোষ্য প্রাণিদের সুস্থাতার দিকটিও নজরে রাখতে হবে। তাদের সুস্থ রাখতে কি করতে হবে আসুন জেনে নেই-

১. প্রতিনিয়ত পোষা প্রাণীকে গোসল করাতে হবে। তার শরীরের বেশি লোম বড় থাকলে গরম বেশি লাগবে এমন ধারণা ভুল। লোমই তাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে লোম যেন খুব বেশি বড় না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

২. সূর্যের তাপ থেকে যতটা পারা যায় পোষ্যকে আড়াল করে রাখা ভালো। তাই বিশ্রামের জন্য এমন জায়গার নির্বাচন করা ভালো যেখানে সেভাবে সূর্যের আলো র্পৌঁছতে পারে না।

৩. পোষ্যের থাকার জায়গায় যেন বাতাস চলাচলের যথেষ্ট সুযোগ থাকে। গরমের দিনে ভেজা তোয়ালের ওপরেও কুকুর বা বিড়ালকে শোওয়ানো যায়।

৪. গরমে পোষ্যের খাবার তালিকার ওপর বাড়তি নজর দিতে হবে। যেসব ফলে পানি বেশি তা বেশি করে খেতে দিতে হবে। তরমুজ, আপেলের মতো ফল খাওয়ানো ভালো।

৫. এ সময় দিনে বাইরে প্রচণ্ড রোদ থাকে। তাই বাড়ির বাইরে কম ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া ভালো। চেষ্টা করুন বাড়ির ভেতরেই পোষ্যকে খেলাধুলো করাতে। তবে রোদ কমলে সন্ধ্যায় হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

৬. চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পোষ্যকে এ সময়ে একটি করে মাল্টিভিটামিন নিয়মিত খাওয়ানো যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগের প্রবণতা কমবে।


রান্নাঘরের গরম থেকে বাঁচার ১০ কৌশল

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশজুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অতিরিক্ত গরমে জনজীবন ওষ্ঠাগত। যারা নিয়মিত রান্না করেন তাদের কষ্ট আরও বেশি। এই কষ্ট কিছুটা লাঘব হতে পারে এই টিপসগুলো মানলে। এক নজরে দেখে নিন টিপসগুলো-

১. রান্নার সময় পরিবর্তন করুন। সকাল সকাল রান্নাঘরে ঢুকে দুপুর হওয়ার আগেই রান্নার শেষ করুন। এতে তীব্র গরমের সময়টায় বিশ্রাম নিতে পারবেন।

২. দিনে দুইবার বা তিনবার খাবার রান্না করার বদলে একবারে রান্না শেষ করে ফেলুন।

৩. দ্রুত রান্না করা যায় এমন রেসিপি অনুসরণ করে অল্প সময়ের মধ্যে রান্না শেষ করে ফেলুন।

৪. দিনে দুইবার বা তিনবার খাবার রান্না করার বদলে একবারে রান্না শেষ করুন।

৫. রান্না ছাড়াই খাওয়া যায় এমন আইটেম বেছে নিতে পারেন দিনের যেকোনো একবেলায়। ফল, সালাদ এবং হালকা, সেদ্ধ খাবার খান। এই গরমে এসব খাবার হজমও হবে দ্রুত, আবার দীর্ঘক্ষণ রান্নাঘরে থাকার অস্বস্তি থেকেও মিলবে রেহাই।

৬. খাবার সেদ্ধ করার জন্য প্রেসার কুকার ব্যবহার করুন। এতে দ্রুত রান্না সম্ভব হবে।

৭. ঢিলেঢালা, পাতলা পোশাক পরুন রান্নার সময়।

৮. রান্নার আগে শাকসবজি কাটা, মসলার মিশ্রণ প্রস্তুত করা এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজগুলো অনেক সময় এবং শক্তি কেড়ে নেয়। তাই কিছু সময় বের করে আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখতে পারেন এগুলো। একবারে পেঁয়াজ কেটে রাখা বা একসঙ্গে অনেকগুলো সবজি কেটে রাখার মতো কাজগুলো অনেকটা সময় বাঁচিয়ে দেবে আপনার।

৯. রান্নাঘরে অবশ্যই এগজস্ট ফ্যান ব্যবহার করবেন। রান্না করার সময় রান্নাঘরের জানালা খুলে রাখবেন।

১০. রান্নার সময় প্রচুর ঘাম হয়। এজন্য অবশ্যই হাইড্রেটেড থাকুন। ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতি ৫০০ মিলি পানিতে এক চিমটি লবণ এবং ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।


এই গরমে কয় কাপ চা খাবেন

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চায় পান করতে কমবেশি সবাই পছন্দ করে। তবে সারা দেশে এবার তীব্র দাবদাহ চলায় স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে চাপ্রেমীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বিশেষজ্ঞরাও এ সময় ঘনঘন চা পান করা থেকে বিরত থাকতে বলছেন। তবে চাপ্রেমীদের কাছে তা মানা কিছুটা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য অনেকেই প্রশ্ন করছেন গরমে ঠিক কত কাপ চা পান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

ভারতের কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত বলেন, চা হলো অত্যন্ত রিফ্রেশিং একটি পানীয়। তাই হাজার চাপের মধ্যে এক কাপ চা খেলে মাথা হালকা হয়, দুশ্চিন্তা কমে। শুধু মানসিক প্রশান্তি আনার কাজেই নয় নিয়মিত চা খেলে হার্ট ভালো থাকে।

তবে এই তাপপ্রবাহে গরম চা এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। না হলে পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। তবে এতসব কথা জানার পরও যারা গরম চা পান করতে আগ্রহী তারা একদম সকাল-সকাল এক কাপ ধূমায়িত চা পান করতে পারেন। গরমে শরীরের খেয়াল রাখতে চাইলে গরম চা পান করার পরিবর্তে ঠাণ্ডা চা বা কফি পান কর যেতে পারে। তাতেই শরীর ঠাণ্ডা থাকবে বলে জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত।

দুধ-চিনি ছাড়া চা পান করতে পারলে বিষয়টি আরও ভালো। চায়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেলে এই পানীয়টির অ্যান্টি অক্সিডেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চা পান করে আর তেমন কোনো উপকার আসে না উল্টো গ্যাস-অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই গরমকাল অথবা সারা বছর; দুধ চা পান করা এড়িয়ে চলা ভালো। তার বদলে সুস্থ থাকতে বরং রং চা পান করলে মিলবে উপকার।

তবে সারা দিন অথবা তাপপ্রবাহে ঠিক কত কাপ চা পান করা ভালো তা একান্তই নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। শরীরে বেশি কষ্ট অনুভব করলে তখন নিজের থেকেই চায়ের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো। নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় এমন কোনো অভ্যাসই ধরে রাখা ভালো নয়।


নারকেল দুধে কোপ্তা পোলাও

আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:৪৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদ মানেই ভুরিভোজ খাওয়া-দাওয়া। আর যেকোনো উৎসবেই পোলাও আমরা অনেকভাবেই খেয়ে থাকি। ঈদ আয়োজনে ব্যতিক্রমী স্বাদের পোলাও রান্না করে ফেলতে পারেন। নারকেল দুধে কোপ্তা পোলাও রান্না করে পরিবেশন করতে পারেন অতিথি আপ্যায়নে। প্রশংসা কুড়াবেন নিশ্চিত। জেনে নিন রেসিপি।

কোপ্তা তৈরির উপকরণ

মুরগি/খাসি অথবা গরুর মাংসের কিমা ২ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিনাবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, নারকেল দুধ আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৫/৬টি, ঘি ২ টেবিল চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ ও চিনি স্বাদ মতো।

পোলাও রান্নার উপকরণ

পোলাও এর চাল ২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, গাজর কুচি ১/৪ কাপ, এলাচ ২টি, দারুচিনি ১ টুকরা, তেজপাতা ২টি, নারকেলের দুধ ১ কাপ, পানি ৩ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, তেল ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৭/৮টি, লবণ ও চিনি স্বাদ মতো।

প্রস্তুত প্রণালি

কিমার সাথে বাটা মসলাগুলো অর্ধেক পরিমাণে মিশিয়ে ১৫ মিনিট মেখে রাখুন। ছোট ছোট বলের আকারে কোপ্তা বানিয়ে নিন এবার কড়াইতে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভেজে সমস্ত বাটা মসলা দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন। কষানো মসলায় কোপ্তা দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার নারকেলের দুধ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন। ঝোল ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে আরেকটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করুন। এতে পেঁয়াজ হালকা ভেজে গরম মসলা ও চাল দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। তারপর পানি, ১ কাপ নারকেল দুধ, লবণ ও চিনি দিয়ে নেড়ে বলক আসলে মৃদু আঁচে ২০ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। পোলাও রান্না হলে কিছু অংশ তুলে রেখে রান্না করা কোপ্তা, গাজর, বেরেস্তা, লেবুর রস দিয়ে ২/৩টি লেয়ার দিয়ে বাকি নারকেলের দুধ দিয়ে ১৫ মিনিট দমে রেখে পছন্দ মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন


ঈদে অতিরিক্ত খাবার খেয়েছেন, যা করবেন

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের দিন বেশি খেয়ে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীসহ নিজের পারিবার পারিজন সব মিলিয়ে সবার আবদার রাখতে গেলে উৎসব-আয়োজনে স্বাভাবিকভাবেই বেশি খাওয়া হয়ে যায়। এদিন সবার ঘরেই বাহারি সব খাবার তৈরি হয়। এটা সেটা খেতে খেতে সবারই অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। অনেক সময় ব্যস্তার কারণে খুব দ্রুত খাবার খেতে হয়। ফলে ঈদের দিন ক্লান্তি আর অবসাদ কাজ তরে। তাই ঈদে অতিরিক্ত খেয়ে ফেললেও কয়েকটি কাজের মাধ্যমে সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।

হাঁটাহাঁটি করা

বেশি খেয়ে ফেললে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এতে খাবার দ্রুত হজম হবে এবং যথেষ্ট পরিমান পানি পান করেুন। এতে খাবারের মাধ্যমে শরীরে জমা হওয়া অতিরিক্ত লবণের মাত্রা কমবে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খেয়েই শুয়ে পরা থেকে বিরত থাকা

বেশি খাবার খাওয়ার পর অনেকে শুয়ে পরেন। ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয় ও অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়। পেট ফুলে যায়, বুকে ব্যথা ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

কোমল পানীয় পান না করা

অতিরিক্ত খাওয়ার পর কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন। কোমল পানীয় বলতে কার্বোনেটেড ব্রেভারেজ ডিংকস। এর ফলে গ্যাস্ট্রিক আরও বেড়তে পারে। ফলে পেট ভরা ভরা ও অস্বস্তি লাগতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া

ঈদ খেকে শুরু করে অনেক দিন পাড়া মহল্লার ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। অনেকেরই অতিরিক্ত খাওয়ার পর বমি বমি ভাবসহ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এমনটি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আগে থেকে ওষুধ আনতে হবে।

খাওয়া শুরু করার ২০ মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে ওঠে, তাই প্রথম ১০ মিনিট খুবই ধীরে ধীরে খাবার খেতে হবে। একবার খাবার মুখে নিয়ে অনন্ত ৯০ বার চাবানো উচিত। ধীরে ধরে খাবার খেলে কম ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়। এর ফলে ওজনও কমে।

খাবার খাওয়ার সময় যখনই মনে হবে অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে তখনই খাওয়া বন্ধ করতে হবে। খাবার খাওয়া সময় গল্প, ফোন ও টিভির মনিটরে তাকিয়ে থাকা যাবে না। একবেলা ভারি খাবার খেলে অন্যবেলায় কম ক্যালোরি ও হালকা খাবার খাওয়া ভালো।

বিষয়:

ঈদে ঝটপট তৈরি করুন শাহী বোরহানি

আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদ মানেই আনন্দ ঈদ মানেই খুসি। সারা পৃথিবীর সকল মুসলিমদের কাছে এ দিনটি অনেক বৈশিষ্টমণ্ডিত। রমজান মাসে সারাদিন উপোশ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেমন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ করেন তেমনি ঈদের দিন না খেয়ে থাকাকেও অনেকে ইসলামের দৃষ্টিতে সুচোখে দেখেন না।

আর বাঙালি মুসলমানদের ঈদ মানেই সকাল থেকে সন্ধ্যা খাবারের ফোয়ারা। সকালে মিষ্টান্ন, দুপুরে ভারি খাবার। সন্ধায় ঝাল খাবারসহ কত রকমরে পদ। পদের আলাপের যাওয়ার আগে এমন একটি পদ নিয়ে আলোচনা করব যে পদটি না থাকলে আসল পদটিই যেন পূর্ণতা পায় না। সে পদটির নাম বোরহারি। এটি একটি পানীয় যা কিনা খাবার হজম করতে সহায়তা করে।

পানীয়টির নামের উৎপত্তি অজানা। আরবি বুরহান শব্দ থেকে এসেছে শব্দটি যার অর্থ ‘প্রমাণ’। বিকল্পভাবে, এটি ফারসি শব্দ বোরানি থেকেও উদ্ভূত হতে পারে, যা দই এবং সবুজ শাক দিয়ে তৈরি একটি খাবারকে বোঝায়। সে হিসেবে আমরা অনায়াসে দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটাই নিতে পারি।

বাজারে হরেক রকমের নামিদামি বোরহানি পাওয়া গেলেও ভোজন রসিকরা কিন্তু সব সময় বাহিরের আশায় বসে থাকেন না। দেখা যায় যে যারা ভোজন রসিক তারা কিঞ্চিত রান্নাতেও পারদর্শি।

ঘরেই তৈরি করুন শাহী বোরহানি

পথমে আধা কাপ পানি সঙ্গে ৪ টেবিল চামচ পুদিনা পাতা, ১ টেবিল চামচ ধনেপাতা, কয়েকটি কাঁচামরিচ, ২ টেবিল চামচ চিনি, সামান্য লবণ ও আধা চা চামচ ছেঁচে নেওয়া আদা ব্লেন্ড করে নিন। একটু সময় নিয়ে ব্লেন্ড করে মিহি করুন। এরপর আড়াই কাপ টক দই, ১ চা চামচ বিট লবণ, ১ চা চামচ সাদা গোলমরিচের গুঁড়া, ১ চা চামচ টালা ধনিয়ার গুঁড়া, ১ চা চামচ টালা জিরার গুঁড়া ও ১ চা চামচ সরিষা বাটা দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। ভালো করে সব মিশে গেলে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন দারুণ স্বাদের বোরহানি। এই বোরহানি এক সপ্তাহ পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে।

বিষয়:

ঈদে ইজি ফ্যাশনের নান্দনিক পাঞ্জাবি

ছবি: ইজি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

পাঞ্জাবি হচ্ছে ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ। পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদের নামাজে যেন তৃপ্তিই পাওয়া যায় না। যার কারণে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোষাকের পর পাঞ্জাবি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ঈদের জন্য পাঞ্জাবি শুধু গুরুত্বপূর্ণই না বরং অপরিহার্য। নতুন পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদের আনন্দ যেন ধুসর ও বর্ণহীন। আর এক্ষেত্রে যদি ডিজাইন ও রঙের বৈচিত্র্য ও ভিন্নতা থাকে তাহলে ঈদের আনন্দ হয়ে ওঠে আরেকটু বর্ণিল।

আনন্দপ্রিয় ও ফ্যাশন সচেতন তরুণদের ঈদকে আরও রঙিন করে তুলতে শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউজ ইজি তাদের ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার ঘটিয়েছে। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সবসময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। রঙ ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে।

ফ্যাশন প্রিয়দের মন রাঙাতে আকর্ষণীয় সব পোশাক ও ফ্যাশন অনুষঙ্গে সেজেছে দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির। এই মুহূর্তেও সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ইজি’র ফ্যাশন হাউসের আউটলেটগুলো।

ছেলেদের ফ্যাশনে এক্সক্লুসিভ কালেকশনে বরবারই একধাপ এগিয়ে ইজি। সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে এবারের ঈদে বাহারি সব ডিজাইন কালেকশন রয়েছে ইজির শোরুমগুলোতে।

পাঞ্জাবির পাশাপাশি থাকছে নতুন-নতুন ডিজাইনের সব শার্ট। অসংখ্য নতুন ডিজাইনের টি-শার্ট, পলো-শার্ট, ফরমাল শার্ট, ক্যজুয়াল শার্ট, পাঞ্জাবি, কটি, কাবলি-পাঞ্জাবি ও প্যান্টসহ আরও অনেক কিছু।

ইজির স্বত্তাধিকারী ও ডিজাইনার তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘শুধু মুনাফা নয় ক্রেতাদের সেবা দেওয়া মূল লক্ষ্য। ঢাকা ছাড়াও আমাদের বাংলাদেশের সকল জেলাতেই ইজির শোরুম রয়েছে।’

বিষয়:

ফেনীতে টপটেন মার্ট উদ্বোধন করলেন তামিম ইকবাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতকাহন প্রতিবেদক

দেশের অন্যতম লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড টপটেন মার্ট এবার চালু হলো ফেনীতে। গত ২৬ মার্চ শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ্ কায়সার সড়কে কাজী প্যালেসে নতুন শো রুমটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। তার সঙ্গে ছিলেন জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম তরুণ তারকা অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

উদ্বোধন শেষে তামিম ইকবাল বলেন, আমি সত্যিকার অর্থে এই ধরনের ব্র্যান্ডের জিনস প্যান্ট টি-শাট পছন্দ করি। আশা করি তাদের এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িকভাবে সফল হবে। ফেনী শহরে আসা হয়নি, এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফেনী পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী, ফেনী শহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পারভেজুল ইসলাম হাজারী, টপটেন মার্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ হোসেনসহ প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা।

টপটেন মার্টের এক ছাদের নিচে পাওয়া যাবে ছেলে ও মেয়েদের সম্পূর্ণ লাইফস্টাইল আউটফিট। ছেলেদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, স্যুট ব্লেজার জুতা ইত্যাদি। রয়েছে মেয়েদের শাড়ি, লেহেঙ্গা, থ্রি পিস, টপস, অর্নামেন্টস, জুতা ইত্যাদি। ব্রাইডাল কালেকশনে রয়েছে শেরওয়ানি ও লেহেঙ্গা ইত্যাদি। মেয়ে বা ছেলেদের পোশাকের লাক্সারি কালেকশন রয়েছে এখানে। সবার জন্য পছন্দের জুতাও কেনা যাবে এখানে।

টপটেন মার্টের যেকোনো স্টোর থেকে পণ্য কিনলে মিলবে ৭ শতাংশ ছাড়। তবে অনলাইন কেনা এই ছাড় মিলবে না। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এই ছাড় চলবে। তবে কসমেটিক্স ও প্রেসিডেন্ট ব্রান্ডের পণ্যে থাকছে না এই ছাড়।


দেশীয় আয়োজনে ঈদ আনন্দ

ছবি: বিশ্বরঙ
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৪ ২০:২৮
মইনুল হক রোজ

ঈদ মানেই আনন্দ। এই আনন্দের বেশ বড় একটা অংশজুড়েই থাকে বাহারি নকশার নতুন পোশাক। তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পছন্দের কথা বিবেচনায় রেখে আয়োজন করে থাকে নানা ডিজাইনের পোশাক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের। সাতকাহনের ঈদ আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে রইল বেশ কিছু ক্রেতাপ্রিয় ফ্যাশন হাউসের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।

ঈদ আয়োজনে বিশ্বরঙ

ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ উৎসবের এই আনন্দের রঙে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে বরাবরের মতোই দেশীয় কাপড় ও উপকরণ ব্যবহার করে ‘বিশ্বরঙ’ এবারও ঈদুল ফিতরের আয়োজনে পোশাকে ট্রেন্ডি এবং ট্র্যাডিশনাল লুকের নান্দনিক উপস্থাপন করেছে। এবারের ঈদ আয়োজন সাজানো হয়েছে কালের আবর্তে প্রায় হারিয়ে যাওয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের হাতে তৈরি বাহারি রঙের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ব্যবহৃত নকশার অনুপ্রেরণায়।

দেশের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে আরামদায়ক কাপড় যেমন- সুতি, ধুপিয়ান সিল্ক, তসর সিল্ক, লিলেন, কাতান, জ্যাকার্ড কাপড় ব্যবহার করেছে, রঙের ব্যবহারেও কনট্রাস্ট কালারের পাশাপাশি রঙেও ম্যাচিউরড টোনের পরিমিত ব্যবহার লক্ষণীয়। কাজের মাধ্যম হিসেবে রয়েছে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লক, ডিজিটাল প্রিন্ট, মেশিন এমব্রয়ডারি, কম্পিউটার এমব্রয়ডারি, হ্যান্ড এমব্রয়ডারি, কারচুপি, নকশিকাঁথা, জারদৌসীসহ মিশ্র মাধ্যমের নিজস্ব বিভিন্ন কৌশল।

এবারের ঈদ আয়োজনে ‘বিশ্বরঙ’ প্রতিটি শ্রেণির মানুষের জন্যই ভিন্ন কিছু যোগ করেছে। বাচ্চাদের জন্য এনেছে নান্দনিক সব কালেকশন, সেই সঙ্গে প্রাপ্ত বয়স্ক এবং নারীদের জন্য আছে ঐতিহ্য ও আভিজাত্যের ছোঁয়া।

‘বিশ্বরঙ’-এর সব শোরুম ছাড়াও অনলাইন শপে ঈদ আয়োজনের পোশাক পাওয়া যাবে।

এই ঈদে আজরাখ প্রিন্টে সাদাকালো

সাদাকালো প্রতিবছরই যেকোনো উৎসবে তার ক্রেতা সুহৃদের জন্য ভিন্ন মাত্রায় বিষয়ভিত্তিক নতুন নতুন কাজ নিয়ে আসে। এ বছরও তার ভিন্নতা হয়নি। সাদাকালো এবার সিন্ধি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক ‘আজরাখ’ প্রিন্ট নিয়ে কাজ করেছে।

ছবি: সাদাকালো

আজরাখ প্রিন্ট হলো এক ধরনের টেক্সটাইল ব্লকপ্রিন্টিং, যা ভারতের কচ্ছ জেলার আজরাখপুর গ্রামে পাওয়া যায়। এই প্রিন্টটি সাধারণত একটি জাল বা ওয়েব-লাইক ডিজাইন হয়। আজরাখ প্রিন্ট তৈরি করতে প্রাকৃতিক রং ব্যবহার করে বিভিন্ন ধাপে ডাইং এবং রেজিস্ট প্রিন্টিং করা হয়।

এবার সাদাকালো এই প্রিন্টে ভিন্ন মাত্রা যুক্ত করতে স্ক্রিন, ব্লক, এমব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, মেয়েদের টপস্, কুর্তিসহ শিশুদের পোশাক তৈরি করেছে।

দেশালের ঈদ কালেকশন

বাংলাদেশের প্রকৃতি ও দেশীয় সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত নানা রকম রং ও মোটিফের সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে দেশালের এবারের ঈদ কালেকশন। বছরের সবচেয়ে বড় উৎসবকে সামনে রেখে এই কালেকশনে ব্র্যান্ডটি নিয়ে এসেছে ৪০০-রও বেশি ডিজাইন।

এবারের ঈদের সময়ের গরম আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে দেশালের ঈদ কালেকশনে প্রাধান্য পেয়েছে সুতির পোশাক। এ ছাড়া ঈদের আভিজাত্য ও জাঁকজমক উৎসবের বিষয়টি মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে সিল্ক শাড়ি, এন্ডি সিল্কের শাড়ি ও পাঞ্জাবি। ডিজাইনের ক্ষেত্রে বিবেচনায় রাখায় হয়েছে তরুণদের পছন্দের বিষয়টি, তৈরি করা হয়েছে ডিজিটাল প্রিন্টের বিভিন্ন কালেকশন।

ছবি: দেশাল

তবে পরিবারের সব বয়সি নারী-পুরুষের জন্যই বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক আছে এবারের কালেকশনে। কটন-ভেজিটেবল ডাই-হ্যান্ড অ্যাম্ব্রডারি শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, টপস্, পঞ্চ, টু পিস, কাফতান, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, ছোটদের ফ্রক, পঞ্চ, পাঞ্জাবি, ফতুয়া মিলিয়ে আছে চার শতাধিকেরও বেশি ডিজাইন।

দেশালের প্রতিটি কালেকশনের মতোই এবারও ডিজাইনের ক্ষেত্রে দেশীয় মোটিফ প্রাধান্য পেয়েছে। সারা দেশজুড়ে দেশালের ১২টি আউটলেটে পাওয়া যাচ্ছে নতুন এই কালেকশন। এ ছাড়া দেশাল অনলাইনে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে সহজেই পণ্য অর্ডার করতে পারবেন ক্রেতারা।

ইজির ঈদ আয়োজন

পাঞ্জাবি হচ্ছে ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ। আনন্দপ্রিয় ও ফ্যাশন সচেতন তরুণদের ঈদকে আরও রঙিন করে তুলতে জনপ্রিয় ফ্যাশন হাউস ইজি তাদের ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার ঘটিয়েছে। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সব সময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে রং ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে।

ছেলেদের ফ্যাশনে এক্সক্লুসিভ কালেকশনে বরবারই এক ধাপ এগিয়ে ইজি। তারই ধারবাহিকতায় ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের শার্টের সন্নিবেশ ঘটিয়েছে তারা। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সব সময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখে রং ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের শার্টে।

ছবি: ইজি

সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে এবারের ঈদে বাহারি সব ডিজাইন কালেকশন রয়েছে ইজি শোরুমগুলোতে। পাঞ্জাবি-শার্টের পাশাপাশি থাকছে নতুন ডিজাইনের টি-শার্ট, পলো শার্ট, ফরমাল শার্ট, ক্যজুয়াল শার্ট, কটি, কাবলি পাঞ্জাবি, প্যান্ট ইত্যাদি।

ইজির স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার তৌহিদ চৌধুরী বলেন, শুধু মুনাফা নয় কাস্টমারদের সেবা দেওয়া মূল লক্ষ্য। ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের সব জেলাতেই ইজির শো-রুম রয়েছে এবং সবগুলোতেই ঈদের সব কালেকশন পাওয়া যাবে।

আর্টিজ্যানের এক্সক্লুসিভ ঈদ কালেকশন

আসছে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্যাশন ব্র্যান্ড আর্টিজ্যান এনেছে এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট, পলো শার্ট ও টি-শার্ট। এ সময়ের আবহাওয়া উপযোগী কালারফুল ডিজাইনের এসব কালেকশন তৈরি করা হয়েছে শতভাগ সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে। কাটিং ও প্যাটার্নে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য।

ছবি: আর্টিজ্যানে

ফ্যাশন ডিজাইনার ও আর্টিজ্যানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হোসাইন বলেন, এবারের ঈদ উদযাপন হবে বসন্তের শেষ দিকে। এর পরই গ্রীষ্মের শুরু। তাই সবদিক বিবেচনা করেই এবারের ঈদ পোশাকের ডিজাইন, কালার ও কাপড় নির্বাচন করা হয়েছে। আর্টিজ্যানের এসব পোশাক কেনা যাবে পাইকারি ও খুচরা। ক্রেতাদের জন্য আর্টিজ্যানের আছে বেশ কয়েকটি শোরুম।

ঈদে বালুচর-এর পাঞ্জাবি

বালুচর ফ্যাশন হাউস ঈদের জন্য নিয়ে এনেছে নতুন নতুন ডিজাইনের নান্দনিক সব পাঞ্জাবি, কুর্তা ও কটি। সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি এসব পাঞ্জাবি ও কুর্তার ডিজাইনে আছে তারুণ্যের আমেজ। বালুচর কাপড়ে রয়েছে সুতি, জাকুয়ার্ড, চিকেন কারী, রিমি কটন, শাহি সিল্ক, চিকুয়েন্স, ব্যাম সিল্ক, ভয়েল, এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট, হাতের কাজসহ নানা মাধ্যমে। রঙেও আনা হয়েছে বৈচিত্র্য। এ ছাড়া কাটিংয়েও আছে নতুনত্ব।

ছবি: বালুচর

বালুচর ফ্যাশন হাউসের সঞ্চালক শাহিন চৌধুরী বলেন, এই ঈদে যেহেতু অনেক গরম থাকবে তাই ছেলেদের পাঞ্জাবিতে কটনের মধ্যেই হালকা কালারের রং নির্বাচন করেছি, এর পাশাপাশি ডিজাইনের ক্ষেত্রে সিম্পল কাজকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ঈদে প্রিন্টের দাপট কিছুটা মলিন হবে, এক রঙের কাপড়ে নতুনত্ব আসবে, থাকবে কাটিং আর প্যাটার্নে ভেরিয়েশন, সেমি লং প্যাটার্ন তার জায়গা ধরে রাখবে, ফিউশনধর্মী পাঞ্জাবিতেও থাকবে ডিজাইনে নতুনত্ব।

নতুন ডিজাইনের নান্দনিক সব পাঞ্জাবি কেনা যাবে খুচরা ও পাইকারি ঢাকার আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলা ও তৃতীয় তলার বালুচরের শোরুম থেকে।

বার্ডস আইয়ে ঈদ পাঞ্জাবি সমাহার

পাঞ্জাবিপ্রিয় মানুষের রুচি ও বৈচিত্র্য বিবেচনা করে বাহারি রঙের নান্দনিক ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউস বার্ডস আই। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফ্যাশন হাউসটি তাদের শোরুমে এনেছে বিভিন্ন মোটিফের পাঞ্জাবি। এ ক্ষেত্রে তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ফ্যাশনেবল তরুণদের চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়েছে। আর পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে আরামদায়ক কাপড়কেই প্রাধান্য দিয়েছে বার্ডস আই।

ছবি: বার্ডস আই

ঈদ উপলক্ষে তাদের প্রতিটি আউটলেটেই নতুনত্ব আনার চেষ্টা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। পাঞ্জাবি ছাড়াও তাদের কালেকশনে আরও রয়েছে বাহারি ডিজাইনের সব টি-শার্ট, পলো টি শার্ট, পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট ইত্যাদি। চায়না, ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশি কাপড়ের তৈরি শত শত ডিজাইনের এসব পোশাক সারা দেশের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় চলছে।

কারুপল্লীতে ঈদ সমাহার

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও প্রদর্শনী কেন্দ্র কারুপল্লী এনেছে ঈদের বর্ণিল পোশাক। নিজস্ব ডিজাইনের এসব পোশাকের রঙে ও নকশায় রয়েছে ঈদের নান্দনিক আমেজ। সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি করা হয়েছে এসব পোশাক। এর মধ্যে আছে তাঁতের সুতি শাড়ি, জামদানি শাড়ি, বেনারসি শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শার্ট, পাঞ্জাবি এবং শিশুদের পোশাক।

ছবি: কারুপল্লী

বিভিন্ন প্রিন্টসহ নানা ধরনের হাতের কাজের মাধ্যমে নকশা করা এসব পোশাক। এ ছাড়া হস্ত ও কুটির শিল্পের প্রতিষ্ঠান করুপল্লীতে রয়েছে গ্রামীণ নারীদের তৈরি দেশীয় রকমারি গহনা, উপহার ও নানা ধরনের হস্তশিল্প সামগ্রী। কারুপল্লীর এসব পোশাক ও পণ্যের দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালেই রয়েছে।

ঈদে মেঘ

ফ্যাশন হাউস মেঘ এবারও ঈদ উপলক্ষে এনেছে বড় ও ছোটদের রকমারি পোশাক। এসব পোশাকের মধ্যে আছে ছেলেদের পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ, আনস্টিচ ও ছোটদের ফতুয়া, পাঞ্জাবি, ফ্রক ও টি-শার্ট।

ছবি: মেঘ

এ ছাড়া পরিবারের সবার ও কাপলদের জন্য রয়েছে একই রং ও নকশার পোশাক। খুচরার পাশাপাশি পাইকারি কেনা যাবে এসব পোশাক। ঘরে বসে অনলাইনেও কেনা যাবে।


ঈদে মজাদার দুই পদ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাজমা আক্তার

ঈদের দিনে অতিথি আপ্যায়নে কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য নানা পদের রান্নার আয়োজন থাকে। ঈদের দিনের সেই আয়োজনে যুক্ত হতে পারে দুটি পদ। আর মজাদার এই দুটি পদের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধন শিল্পী নাজমা আক্তার

শাহি টুকরা

উপকরণ: পাউরুটি: ৫ পিস (সাইড কেটে তিন কোনা বা যেকোনো শেপে কেটে নিতে হবে), দুধ হাফ কাপ, জাফরান ১-৪ চা-চামচ, ঘি হাফ কাপ, কাঠবাদাম ২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া ১ চিমটি, পানি ১ কাপ, চিনি হাফ কাপ, গরুর দুধ হাফ লিটার, কনডেন্স মিল্ক হাফ কাপ, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথম এক চা-চামচ ঘি প্যানে গরম করে বাদামগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে। বেশি ভাজা যাবে না। এরপর হাফকাপ দুধে জাফরান ভিজিয়ে সাইডে রেখে বাকি হাফ লিটার দুধ একটা প্যানে জাল করতে হবে। বারবার নেড়ে মিডিয়াম আঁচে জ্বাল করতে হবে যেন সর না পরে। দুধ একটু ঘন হয়ে আসলে তাতে দুধে ভেজানো জাফরান দিতে হবে। (এখানে জাফরান বা কেওড়া জল যেকোনো একটা দেওয়া যাবে। দুটো একসঙ্গে দেওয়া যাবে না। এরপর একে একে গুঁড়া দুধ, কনডেন্স মিল্ক, এলাচ গুঁড়া, ভেজে রাখা বাদাম কিছু সাজানোর জন্য রেখে বাকি সব দিয়ে ভালো করে জ্বাল করে মালাই তৈরি করে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। এরপর আরেকটা পাত্রে ১ কাপ পানি হাফ কাপ চিনি জ্বাল করে পাতলা সিরা তৈরি করে নামিয়ে রাখতে হবে। এরপর আবার একটা পাত্রে ঘি গরম করে তাতে কেটে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো ভেজে নিতে হবে গোল্ডেন রং করে। এরপর ভেজে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো হালকা গরম চিনির সিরায় ৩০ সেকেন্ড ডুবিয়ে উঠিয়ে সার্ভিং ডিশে নিয়ে তার ওপর আগে থেকে তৈরি করা ঠাণ্ডা মালাই দিয়ে তার ওপর বাকি বাদাম কুঁচি দিয়ে সাজিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের শাহি টুকরা।

ক্যারামেল পুডিং

উপকরণ: গরুর দুধ ১ কেজি, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ, ডিম ৪টি, চিনি হাফ কাপ, ভেনিলা এসেন্স ১-৪ চা-চামচ, ক্যারামেল-এর জন্য চিনি ৪ টেবিল চামচ, পানি ২ টেবিল চামচ।

প্রস্তুত প্রণালি:

প্রথমে চুলায় একটা পাত্র বসিয়ে তাতে লিকুইড দুধ, গুঁড়া দুধ ও চিনি নিয়ে জাল করে নিতে হবে। ভালো করে নেড়ে জ্বাল করে শুকিয়ে ৩ কাপ করে নিতে হবে। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে রেখে অন্য একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ চিনি, দুই টেবিল চামচ পানি দিয়ে ক্যারামেল করতে হবে। চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে নাড়াচাড়া করা যাবে না। যখন হালকা রং আসতে শুরু করবে তখন পাত্রের হাতল ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ চিনি গলে যখন একটা সুন্দর রং আসবে চুলা বন্ধ করে অনবরত নেড়ে ক্যারামেল তৈরি করতে হবে, না হলে চুলার জ্বাল অন তাকলে ক্যারামেল পুরে তেঁতো হয়ে যাবে।

এরপর যে পাত্রে পুডিং তৈরি করতে হবে সেই পাত্রে ক্যারামেল ঢেলে ঠাণ্ডা করে সেট করে নিতে হবে। এরপর ডিমগুলো ফেটিয়ে জ্বাল করা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে দুধ যেন গরম না থাকে। একদম ঠাণ্ডা করে ডিম মেশাতে হবে। তার সঙ্গে সামান্য ভেনিলা এসেন্স মিশিয়ে যে পাত্রে ক্যারামেল সেট করা আছে, সেই পাত্রের ওপর চালনি বসিয়ে দুধ, ডিমের মিশ্রণ ঢেলে ঢাকনা লাগিয়ে চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে একটা কিচেন টাওয়াল দিয়ে তার ওপর পুডিংয়ের পাত্র বসিয়ে দিতে হবে যেন ভাব দেওয়ার সময় পাত্রটা নড়ে না যায়, তাহলে পুডিংয়ের ভেতর ভালো হবে না। এরপর পানি এমনভাবে দিতে হবে, যাতে পুডিংয়ের পাত্র একদম ডুবে না যায় আবার পানি যেন একদম তলায় না থাকে। ২৫-৩০ মিনিট জ্বাল করে নরমাল টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে ২-৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে মোল্ড আউট করে নিতে হবে। তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের পারফেক্ট ক্যারামেল পুডিং।

(গরম পুডিং কখনোই মোল্ড আউট করতে নেই। ভালো করে ঠাণ্ডা করে তারপর মোল্ড আউট করতে হবে।)

বিষয়:

সুন্দোরা বিউটিতে ঈদের অফার

আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৪ ১৭:৪৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের কেনাকাটায় এখন ব্যস্ত সবাই। মার্কেট ঘুরে কিংবা বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমে এখন চলছে ঈদের কেনাকাটার ধুম। ঠিক এই সময়ে ‘সুন্দোরা’ নিয়ে এসেছে ঈদে বিশাল মূল্যছাড়! সুন্দোরা বিউটিতে পারফিউম, স্ক্রীন কেয়ার, মেকআপ এবং ক্যান্ডেলের উপর ৬০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পাওয়া যাচ্ছে। সেইসঙ্গে সুন্দোরা কিডস্‌ জোনে খেলনা এবং আরও অন্যান্য আইটেমের উপর সর্বোচ্চ ৬০% ছাড় উপভোগ করতে পারবেন। এই আকর্ষণীয় অফারটি চলবে চাঁদ রাত পর্যন্ত। সুন্দোরা হলো বিউটি প্রোডাক্ট, বাচ্চাদের প্রোডাক্ট এবং বিভিন্ন ধরণের ১00টি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের অফিসিয়াল পার্টনার। ‘সুন্দোরা’- এর বনানী, গুলশান এবং ধানমন্ডি ষ্টোরে আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছে। অনলাইনে পণ্য পেতে sundora.com.bd এ লগইন করুন এবং ঈদের কেনাকাটায় মেতে ওঠুন।


banner close