সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪

হাড় ক্ষয় : ভালো থাকবেন যেভাবে 

মডেল : আইরিন সুলতানা। ছবি : সৈয়দ মাহমুদুর রহমান
ডা. আসিফ আহমেদ তানিন
প্রকাশিত
ডা. আসিফ আহমেদ তানিন
প্রকাশিত : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ২২:০৯

অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ক্ষয় একটি জটিল সমস্যা। বর্তমানে এ রোগে অনেকেই ভুগছেন। দীর্ঘদিন এ সমস্যা জিইয়ে রেখে এক পর্যায়ে বড় ধরনের বিপদের সম্মুখীন হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। শুরুতে হাড় ক্ষয় রোগ শনাক্ত করা গেলে ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থেকে মুক্তি মেলে। কীভাবে প্রতিরোধ করা যাবে হাড় ক্ষয় সে সম্পর্কে জেনে নিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ:

কী করবেন

* সুষম খাদ্য গ্রহণ করা।

* পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ।

* নিয়মিত শরীরচর্চা করা (যেমন- নিয়মিত হাঁটা, সিঁড়ি দিয়ে ওঠা ইত্যাদি)।

* ধূমপান ও মদপান থেকে বিরত থাকা।

ক্যালসিয়াম: প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের (১৮-৫০ বছর পর্যন্ত) দৈনিক ১০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম এবং ৫১ বছর বা তদূর্ধ্বে ১,২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাবার গ্রহণ করা উচিত। দুধ, শাকসবজি, হাড়সহ ছোট মাছ, ফলমূল, সরিষার তেল ইত্যাদি ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার।

ভিটামিন ডি : মানবদেহে ভিটামিন ‘ডি’ তৈরি হওয়ায় একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, যার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ সূর্যালোক দেহের সংস্পর্শে আসা প্রয়োজনীয়। সামুদ্রিক মাছ, কড লিভার তেল, ডিম, দুধ, গরুর কলিজা, মাখন ইত্যাদি ভিটামিন ‘ডি’সমৃদ্ধ খাবার।

হাড়ের সুরক্ষার জন্য ব্যায়াম

ব্যায়ামের মাধ্যমে সুস্থ হাড় পাওয়া সম্ভব। অন্তত ৩০ মিনিট করে ব্যায়াম করুন, সপ্তাহের প্রতিটি দিনই ব্যায়াম করা ভালো। হাঁটা, দৌড়ানো ও সিঁড়ি বেয়ে ওঠার অভ্যাস রাখুন। এতে শরীরের নিচের অংশের হাড় মজবুত হবে। শরীরের যে অংশে ভর দিয়ে নিয়মিত ব্যায়াম করা হবে, সেই অংশের হাড়ই শক্তিশালী হয়ে উঠবে। তাই বাহুর হাড় মজবুত করতে সাহায্য করবে পুশআপ, ভারোত্তলন ও রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ডের (বাধা সৃষ্টিকারী ব্যান্ড) সাহায্যে ব্যায়াম। নৃত্যচর্চায়ও হাড় হয় সুগঠিত। সাইকেল চালানোর অভ্যাস থেকে থাকলেও সুগঠিত হাড়ের জন্য উল্লিখিত ব্যায়ামগুলো অভ্যাস করুন।

জীবনযাত্রার সঠিক নিয়ম মেনে চলা

* নিয়মিত ব্যায়াম করা।

* ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন করা।

* শরীরে ওজন কমান, ফাস্টফুড ও চর্বি জাতীয় খাদ্য এড়িয়ে চলা।

* বয়স্ক পুরুষ বা নারী এবং মেনোপজ-পরবর্তী মহিলাদের ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘ডি’র পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী হাড় ক্ষয় প্রতিরোধকারী ওষুধ যেমন- বিসফসফোনেট, এলেনড্রোনিক অ্যাসিড, ইবানড্রোমি অ্যাসিড, জোলেনড্রোনিক অ্যাসিড জাতীয় ওষুধ গ্রহণ করা যেতে পারে।

সঠিক সময়ে অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসা না নিলে একান্ত ব্যক্তিগত কাজকর্ম যেমন- নামাজ পড়া, গোসল করা, টয়লেটে যাওয়া, হাঁটাচলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। কাজেই চেষ্টা করবেন ওপরের নিয়মগুলো মেনে সুস্থ জীবনযাপনের।

লেখক: সহকারী রেজিস্টার,এম এইচ শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ, ঢাকা।


ঈদ রেসিপি: গরুর মাংসের শাহী রেজালা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কোরবানির ঈদে খাবারের রেসিপি মানেই গরুর বিভিন্ন পদের রেসিপি। এসবের ভেতর গরুর মাংসের শাহী রেজালার রয়েছে আলাদা কদর। তাই আজকের আয়োজনে থাকছে গরুর মাংসের শাহী রেজালার সহজ এবং প্রিয় একটি রেসিপি।

প্রয়োজনীয় উপকরণ:

বাড়িতে গরুর মাংসের শাহী রেজালা তৈরি করতে প্রয়োজন হবে ১ কেজি গরুর মাংস, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদা বাটা ২ চামচ, রসুন বাটা ২ চামচ, হলুদ ১ চামচ, জিরা ১ চামচ, ধনিয়া ১ চামচ, কিশমিশ ১৫ টি, আলু বুখারা ১০টি, টক দই ১ কাপ, বাদাম বাটা ১ চামচ, চিনি ১ চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ১/২ চামচ, জয়ফল- জয়ত্রী ১ চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ১ চামচ, তেজপাতা ৪ টি ও সয়াবিন তেল ১/২ কাপ।

যেভাবে তৈরি করবেন:

প্রথমে মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার সব উপকরণ পরিমাণমতো নিয়ে একসাথে মিশিয়ে ঘণ্টাখানেক মেরিনেট করে রেখে দিন। মাংস মেরিনেট হয়ে গেলে চুলায় বসিয়ে দিন একটি সসপ্যান। সসপ্যানে তেল গরমে করে পেঁয়াজ কুচি, তেজপাতা, গরম মসলা দিয়ে মেরিনেট করা মাংস দিয়ে দিন।

মাঝারি আঁচে মাংস ভালো করে নেড়েচেড়ে সিদ্ধ হওয়ার জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিন ১০ মিনিটের মতো। এ সময়ের মাঝে ঢাকনা উঠিয়ে একটু নেড়ে দিতে পারেন যেন চুলার তাপে সসপ্যানে মাংস না লেগে যায়।

মাংস সেদ্ধ হয়ে আসলে কিশমিশ ও আলুবোখারা দিয়ে দিন। এরপর ঢাকনা দিয়ে মৃদু আঁচে আরও কিছু সময় রান্না করুন। এ পর্যায়ে লবণ ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখে নিন। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই মাংস থেকে তেল উঠতে শুরু করবে। তেল উঠতে শুরু করলেই চুলা থেকে নামিয়ে নিন গরুর মাংসের সুস্বাদু শাহী রেজালা।


ঈদে ঢাকার আশপাশেই ঘুরে আসুন ৫ স্থানে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৪ ১৬:৫৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অনেকেই ঢাকায় ঈদের ছুটি কাটাবেন। চাইলে একা-দোকা বা সবাইকে নিয়ে ঢাকার আশপাশের কিছু দর্শনীয় জায়গা ঘুরে দেখতে পারেন এই সময়ে। এমন পাঁচটি স্থান সম্পর্কে আসুন জেনে নেওয়া যাক,

মৈনট ঘাট

ঈদের ছুটিতে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন মৈনট ঘাটে। ঢাকার খুব কাছেই স্থানটি ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে পরিচিত। ঢাকার খুব কাছাকাছি হওয়ায় ২ ঘণ্টার মধ্যেই আপনি মিনি কক্সবাজারে যেতে পারবেন। তাও আবার মাত্র ৯০ টাকায়। সারা দিন ঘুরে সন্ধ্যায় আবার ঢাকায় ফিরেও আসতে পারবেন।

ঢাকার দোহার উপজেলার পশ্চিম প্রান্ত ঘেঁষে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর কোলে মৈনট ঘাট। দোহার থেকে দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার। নদীর ওপারে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন। গুলিস্তান থেকে সরাসরি পাকা রাস্তা আছে ঘাট পর্যন্ত। এ রুটে বাস সার্ভিসও চালু আছে বহুদিন ধরে। ঢাকা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে ২-৩ ঘণ্টা। তবে ছুটির দিনে রাস্তা ফাঁকা থাকলে দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব।

মৈনট ঘাটে যাবেন কীভাবে?

ঢাকা থেকে মৈনট ঘাটে যাওয়ার সবচেয়ে সুবিধাজনক উপায় হচ্ছে- গুলিস্তানের গোলাপ শাহর মাজারের সামনে থেকে সরাসরি মৈনট ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া যমুনা পরিবহনে চেপে বসতে পারে। ফেরার সময় একই বাসে আবার ঢাকা চলে আসবেন।

বাহ্রা ঘাট

মিনি কক্সবাজারের মতো ঢাকার আশপাশেই আছে মিনি পতেঙ্গাও। ঢাকার কাছে তেমনই একটি মনোমুগ্ধকর স্থান হলো বাহ্রা ঘাট। দোহার উপজেলায় অবস্থিত এই ঘাট বর্তমানে মিনি পতেঙ্গা নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় রাজধানীবাসী ডে লং ট্রিপের জন্য বেছে নেন দৃষ্টিনন্দন এই স্থান। ঢাকার গুলিস্তান থেকে প্রায় ৩৮ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। আপনিও ঘুরে আসতে পারেন আপনার ছুটির দিনে।

বিগত কয়েক বছর ধরে বাহ্রাঘাট সেজেছে নতুন আঙ্গিকে। নদীভাঙন ঠেকাতে পদ্মা নদীর পাড়ের দীর্ঘ এলাকাজুড়ে বসানো হয়েছে ব্লক। এই ব্লকের উপর দিয়েই ঘুরে বেড়ান দর্শনার্থীরা। মৈনট ঘাটের মতোই মিনি পতেঙ্গার পাড় থেকে পদ্মা নদীতে নৌকায় চড়ে ঘুরে বেড়ানো যায় পাড় ধরে।

কীভাবে যাবেন মিনি পতেঙ্গায়?

ঢাকার গুলিস্তান থেকে বাসে সেখানে যেতে সময় লাগে মাত্র ২ থেকে আড়াই ঘণ্টা। গোলাপশাহ মাজার থেকে দোহারের মৈনট ঘাটে সরাসরি বাসে যেতে জনপ্রতি ভাড়া ৯০ টাকা।

লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর

আবহমান গ্রাম বাংলার লোক সাংস্কৃতিক ধারাকে বিকশিত করার উদ্যোগে ১৯৭৫ সালের ১২ মার্চ শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক পানাম নগরীর একটি পুরোনো বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেন বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন। পরে ১৯৮১ সালে ১৫০ বিঘা আয়তনের কমপ্লেক্সে খোলা আকাশের নিচে বাংলার প্রকৃতি ও পরিবেশে গ্রামীণ রূপকেন্দ্রিক বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের শৈল্পিক কর্মকাণ্ডের পরিচয় তুলে ধরতে শিল্পী জয়নুল আবেদিন এই জাদুঘর উন্মুক্ত পরিবেশে গড়ে তোলার প্রয়াস নেন।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন কমপ্লেক্সটি প্রায় ১০০ বছর পুরোনো সর্দার বাড়িতে স্থানান্তরিত হয়। মোট ১০টি গ্যালারি আছে এতে। গ্যালারিগুলোতে কাঠ খোদাই, কারুশিল্প, পটচিত্র ও মুখোশ, আদিবাসী জীবনভিত্তিক নিদর্শন, গ্রামীণ লোকজীবনের পরিবেশ, লোকজ বাদ্যযন্ত্র ও পোড়ামাটির নিদর্শন, তামা-কাসা-পিতলের নিদর্শন, লোহার তৈরি নিদর্শন, লোকজ অলংকারসহ আছে বহু কিছু।

ভবনটির সামান্য পূর্বে দেখবেন লোকজ স্থাপত্যকলায় সমৃদ্ধ আধুনিক এক ইমারতে প্রতিষ্ঠিত জয়নুল আবেদিন স্মৃতি জাদুঘর। এই ভবননে আছে মাত্র দুটি গ্যালারি। একটি গ্যালারি কাঠের তৈরি, যা প্রাচীন ও আধুনিক কালের নিদর্শনসমৃদ্ধ। তা ছাড়া বাংলাদেশের প্রাকৃতিক, বৈশিষ্ট্য কাঠ ও কাঠ থেকে বিভিন্ন কারুপণ্য তৈরি এমনকি সর্বশেষ বিক্রির সামগ্রিক প্রক্রিয়া, অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে সুন্দর মডেল দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে, দুটি ভবনের বাইরে আছে পাঠাগার, ডকুমেন্টেশন সেন্টার, সেমিনার হল, ক্যান্টিন, কারুমঞ্চ, গ্রামীণ উদ্যান ও বিভিন্ন রকমের বৃক্ষ, মনোরম লেক, লেকের মাঝে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌ-বিহার, মৎস্য শিকারের সুন্দর ব্যবস্থা ও নৌকা। চাইলেই মাত্র ১৫০ টাকার বিনিময়ে ৩০ মিনিটে জন্য চালাতে পারবেন এখানে নৌকা। পানাম নগরী থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরত্বে আছে লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। ৫০ টাকা টিকেট কেটে ঢুকেই হাতের বামে পাবেন, বিশাল দিঘী। আর সেই চিরচেনা ভবন বড় সর্দার বাড়ি।

গোলাপ গ্রাম

ঢাকার সাদুল্লাহপুরের গোলাপ বাগান সম্পর্কে নিশ্চয়ই আপনার জানা আছে! খুবই সুন্দর এই স্থানে যেন লাল চাদর বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কীভাবে গোলাপের চাষ করা হয়, কীভাবে তা সংগ্রহ করা হয় তা নিজ চোখে দেখতে পারবেন। গোলাপের চারা তৈরি, গোলাপ ক্ষেত পরিচর্যা, গোলাপ তোলা দেখতে দেখতে আপনার মন হারিয়ে যাবে ফুলের রাজ্যে। পরিবারসহ ঘুরতে যেতে পারেন গোলাপ গ্রামে।

কীভাবে যাবেন?

সাদুল্লাহপুর যেতে মিরপুর মাজার রোড হয়ে বেড়িবাঁধ সড়কে যাবেন। এক্ষেত্রে মিরপুর ১ থেকে বাস, টেম্পো, অটোরিকশা বা রিকশায় চড়তে হবে। বেড়িবাঁধ তুরাগের তীর শিন্নিরটেক ঘাট থেকে ট্রলারে উঠতে হবে। এই জলযান আপনাকে সাদুল্লাহপুর ঘাটে নিয়ে যাবে। তবে শুকনো মৌসুমে নদী পার হয়ে বেশ খানিকটা পথ হাঁটতে হবে।

বাংলার তাজমহল

সোনারগাঁওতেই অবস্থিত এই তাজমহল মূলত ভারতের আগ্রায় অবস্থিত তাজমহলের একটি হুবহু নকল বা অবিকল প্রতিরূপ। ১৫০ টাকার এক টিকিটে দুই মুভির মতন, বাংলার তাজমহলের সঙ্গে বাংলার পিরামিড দর্শন করতে পারবেন সেখানে। বাংলার তাজমহলের মালিক আহসানুল্লাহ মনি একজন ধনবান চলচ্চিত্র নির্মাতা।

২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তার ‘তাজমহলের কপিক্যাট সংস্করণ’ প্রকল্পের ঘোষণা করেন। এই তাজমহল নির্মাণের কারণ হিসেবে তিনি জানান, দেশের দরিদ্র মানুষ যাদের ভারত গিয়ে প্রকৃত নিদর্শন দেখার সামর্থ্য নেই তারা যেন তাজমহল দেখার স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন, এজন্য দেশেই তিনি তৈরি করেছেন তাজমহলের রেপ্লিকা। হাতে সময় থাকলে সোনারগাঁও গেলে ঘুরে আসতে পারেন বাংলার তাজমহলেও।


ঈদে যেভাবে রাঁধবেন মেজবানি মাংস ও গরুর কালা ভুনা

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

আসছে কোরবানির ঈদ। এ ঈদে প্রায় সব পরিবারের খাবার টেবিলে দেখা যায় মাংসের নানান পদ। মাংস আইটেমের বৈচিত্র্য এ ঈদের আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই এবারের ঈদে ভোজন বিলাসীদের জন্য মাংসের মজাদার ২টি রেসিপি জানানো হলো,

১. মেজবানি মাংস

উপকরণ: গরুর মাংস ২ কেজি, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুন বাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদ ও লাল মরিচ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, ধনে ও জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, সরিষার তেল ১ কাপ, মাংসের মসলা ১ চা চামচ, টক দই ১ কাপ, কাঁচামরিচ ১০/১২টি, গোলমরিচ ১ চা চামচ, দারচিনি ও এলাচ ৫/৬টি, জয়ফল ও জয়ত্রি আধা চা চামচ, মেথি গুঁড়া ১ চা চামচ, লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি: গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার একটি পাত্রে মাংস, তেল, টক দই, হলুদ, মরিচ, আদা, রসুন, পেঁয়াজ, লবণসহ সব মসলা নিয়ে ঘণ্টা খানিক মেরিনেট করে রাখুন। অর্ধেক পেঁয়াজ তেলে ভেজে বেরেস্তা করে নিন। চুলায় হাঁড়ি বসিয়ে মেরিনেট করা মাংস কষিয়ে নিন। হাঁড়িতে ২ কাপ পরিমাণ পানি দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষাতে হবে। মাংস থেকে পানি ঝরে গেলে মৃদু আঁচে মাংস সিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত জ্বাল দিন। মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে কাঁচামরিচ, ধনে, জিরা গুঁড়া দিয়ে মৃদু আঁচে ১০ মিনিট দমে রেখে নামিয়ে তারপর পেঁয়াজ বেরেস্তা দিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন সুস্বাদু গরুর মেজবানি মাংস। মেজবান মাংস রান্নার জন্য দোকানে লাল মরিচের গুঁড়া পাওয়া যায় যেটা খেতে খুব একটা ঝাল না কিন্তু মাংসের লালা রং করার জন্য এই ঝালের গুঁড়া ব্যবহার করা হয়।

২. গরুর কালা ভুনা

উপকরণ: ২ কেজি হাড় ছাড়া গরুর মাংস, ১/২ চামচ বা মরিচ গুড়া, ১ চামচ হলুদ গুড়া, ১/২ চামচ জিরা গুড়া, ১/২ চামচ ধনিয়া গুড়া, ১ চা চামুচ পেঁয়াজ বাটা, ২ চামচ রসুন বাটা, ১/২ চামচ আদা বাটা, সামান্য গরম মশলা (দারুচিনি, এলাচি), ১/২ কাপ পেঁয়াজ কুঁচি, কয়েকটা কাঁচা মরিচ, পরিমান মত লবন, সরিষার তেল।

প্রণালি: গরুর মাংস ধুয়ে নিয়ে একটি চালুনি পাত্রে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। তারপর লবন, তেল ও বাকি সব মশলা দিয়ে ভাল করে মাখিয়ে নিতে হবে (পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ বাদে)। মাখানো মাংসটি এবার চুলায় হালকা আঁচ রেখে জ্বাল দিতে হবে। এবার দুই কাপ পানি দিয়ে আবারো ঢাকনা দিয়ে দিন। মাংস সেদ্ধ হতে সময় লাগবে। যদি মাংস সেদ্ধ না হয় তবে আবারও গরম পানি এবং জাল বাড়িয়ে নিন । ঝোল শুকিয়ে , মাংস নরম হয়ে গেলে রান্নার পাত্রটি সরিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি কড়াই নিয়ে, তাতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি এবং কাঁচা মরিচ ভাঁজতে থাকুন। সোনালি রং হয়ে আসলে সেই কড়াইতে গরুর মাংস দিয়ে হালকা আঁচে ভাজতে হবে। মাংস কালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন, খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাংস পুড়ে না যায়। সবশেষে রান্নাটি নামানোর আগে লবণটি চেখে নিন। কালা ভুনার স্বাদ আরও বাড়াতে খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করুন।


তাভাস এবং ডিমান্ডে ছাড়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফিচার ডেস্ক

সামারে তাভাস এবং ডিমান্ড ফ্যাশর হাউজে চলছে ছাড়। ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে আপনি পাবেন পছন্দের পোশাক।

স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি, এম্ব্রয়ডারির কাজ, জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল এমন অনেক কিছুই থাকছে ‘তাভাস এবং ডিমান্ড’ পোশাকের মোটিফ হিসাবে। এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক নিয়ে বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এছাড়াও কালারের ক্ষেত্রে ভাইব্রেন্ট রাখা হয়েছে।

মেয়েদের জন্য ‘তাভাস’ আছে সিঙ্গেল পিস কামিজ, লন থ্রি পিস, আকর্ষণীয় পার্টি থ্রি পিস, এথনিক কুর্তি, ফ্যাশন টপস, কাফতান ইত্যাদি। সারা বাংলাদেশে ডিমান্ড ব্র্যান্ডের মোট ১৮টি আউটলেট রয়েছে এবং তাভাসের রয়েছে ফ্ল্যাগশিপ আকারের মোট ৫টি আউটলেটস! এ ছাড় চলবে ১৭ জুন পযন্ত।


১২৫ বছর ধরে আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ

আপডেটেড ১১ মে, ২০২৪ ১৩:৩৮
মাহফুজ নান্টু

উঁচু দালান, তার মাঝে ফুলের বাগান। ক্লাসরুমে বসে পাঠগ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। কেউ আবার বাইরে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন অনেকে। সুন্দর পরিপাটি ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসে ছেলে তার বাবা কিংবা বাবার বাবা কিংবা দাদার বাবাও লেখাপড়া করেছেন। বংশ পরম্পরায় সবারই প্রিয় প্রাঙ্গণ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। ১২৫ বছর ধরে আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে যাচ্ছে। পরিপূর্ণ এই ক্যাম্পাসটি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কোনো অংশে কম নেই। কত জ্ঞানীগুণী এই কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেছেন তার ইয়ত্তা নেই। পূর্ব বাংলার অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ভিক্টোরিয়া কলেজটি দেখতে প্রতিদিনই ভিড় করেন দর্শনার্থীরা।

কলেজটির ডিগ্রি শাখা ধর্মপুরে। উচ্চ মাধ্যমিক শাখাটি কুমিল্লা শহরের প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়ে। প্রায় ২৯ হাজার শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে মুখর থাকে এই ক্যাম্পাস। ২২টি বিষয়ে অনার্স ও ১৮টি বিষয়ে মাস্টার্স পড়ানো হয় এখানে। রয়েছে ১২টি সক্রিয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।

ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায, রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায় ১৮৯৯ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষানুরাগী রাজা আনন্দ চন্দ্র রায় একজন ঠিকাদার হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। কলেজটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করেছেন। এই কলেজ এভাবে পরিপূর্ণ বাস্তবে রূপ নেয়। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর ব্রিটিশ সরকার তাকে রায় বাহাদুর উপাধি প্রদান করে।

কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায়ের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। শিক্ষাবিদ সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন এই কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ। যিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত এই পদে কর্মরত ছিলেন।

প্রথমে জমিদার রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায় ১৮৮৬ সালে ‘রায় এন্ট্রান্স ইস্কুল’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৮৮ সালে মহারানি ভিক্টোরিয়ার ‘জুবিলি জয়ন্তী স্মারক চিহ্ন স্বরূপ এটিকে ভিক্টোরিয়া স্কুলে রূপান্তরিত করা হয়। পরবর্তীকালে ১৮৯৯ সালে তা পূর্ণাঙ্গ কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ও ভিক্টোরিয়া কলেজ নাম ধারণ করে। একই বছর এই কলেজটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ হিসেবে গণ্য হয়।

১৯০২ সালে এক প্রচণ্ড অগ্নিকাণ্ডের ফলে এই কলেজটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়। পরে আবারও তা পুনর্নির্মাণ করা হয়।

বর্তমানে কলেজটিতে ১৫৭টি সৃষ্ট পদে ১৭০ জন শিক্ষক পাঠদান করেন। শিগগিরই কলেজটিতে আরও ৩৩০টি পোস্ট তৈরি করা হবে। যার মধ্যে প্রত্যেক বিভাগে ২ জন অধ্যাপক, ৪ জন সহযোগী অধ্যাপক, ৪ জন সহকারী অধ্যাপক ও ৬ জন প্রভাষক থাকবেন। পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজি বিভাগে শিক্ষক থাকবেন কুড়িজন করে। খুব শিগগিরই আইসিটি বিভাগও তৈরি করা হবে। বর্তমান শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উচ্চ মাধ্যমিক শাখায় একটি দশ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

বর্তমানে কলেজটির ডিগ্রি শাখায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফুলের বাগান, পিচঢালা সংযোগ সড়ক, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য মিলে এক নয়ানাভিরাম ক্যাম্পাস। নিয়ন আলোয় রাতের ক্যাম্পাস আরও মোহনীয় হয়ে ওঠে।

কলেজটিতে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণ করেন চলচ্চিত্র শিল্প নির্দেশক ও চিত্রশিল্পী উত্তম গুহ। উত্তম গুহ বলেন, ১৯ নভেম্বর ২০১৬; এক ঐতিহাসিক দিন পূর্ববঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই বিদ্যাপীঠ তথা বাঙালি জাতিসত্তার জন্য। সেদিন ধর্মপুরস্থ ডিগ্রি শাখায় স্থাপন করা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, যাতে নির্মাণ করেছি ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের একটি আবহ, যা শিক্ষার্থীদের স্মরণ করিয়ে দেবে বাঙালির রক্তঝরা সংগ্রাম, স্বাধীনতার কথা আর আহ্বান জানাবে সে স্বাধীনতাকে রক্ষার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার কথা এবং হৃদয়ে ধারণ করবে বাংলার ভাষা-সংগ্রাম- স্বাধীনতা- বঙ্গবন্ধুকে, এর অবগুণ্ঠন উন্মোচিত হবে সবার একাত্মতায়।

কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ১০ লাখ ৫০০ টাকা ব্যয়ে ম্যুরাল তৈরি করা হয়। এর মূল বেদি ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫০ ফুট প্রস্থ। ৪টি স্তম্ভে এর উচ্চতা ৩৬ ফুট। ম্যুরালের ৩ পাশের সিঁড়ির ফাঁকা অংশে জাতীয় পতাকার আদলে সবুজ পাতার ঘাস এবং লাল পাতার গাছ রোপণ করা হয়েছে।

স্থাপত্য নকশা ম্যুরাল ও টেরাকোটা নির্মাণ শিল্পী উত্তম গুহ আরও জানান, ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’ স্মারক ম্যুরালে বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ভাষা আন্দোলনে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ ৫ শহীদের প্রতিকৃতি অঙ্কিত হয়েছে। কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আবদুর রশীদ জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে শিক্ষার্থীসহ নতুন প্রজন্মের নিকট তুলে ধরতে ‘হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু’ স্মারক ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়েছে। এই ম্যুরালটি নির্মাণের পর কলেজ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে বেসরকারি টেলিভিশন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের কুমিল্লা প্রতিনিধি তানভীর খন্দকার দিপু বলেন, উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ সংগীতজ্ঞ শচীন দেব বর্মণ, মাতৃভাষা বাংলা দাবি আদায়ের আন্দোলনের প্রথম প্রস্তাব উত্থাপনকারী ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত থেকে শুরু করে বর্তমানে জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী আসিফ আকবর কিংবা অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মিমের মতো হাজারো কৃতী মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ।

শুধু পড়াশোনা নয়, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের জন্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ঐতিহ্য সারা দেশ জুড়ে। আন্ত কলেজ ক্রিকেট ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ কিংবা বিতর্ক প্রতিযোগিতা, এমন অনেক ক্ষেত্রে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরবে এই কলেজ কখনোই পিছপা হয়নি। সমৃদ্ধ ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও সক্রিয়ভাবে সৃজনশীল করেছে এখানকার শিক্ষার্থীদের।

এই কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে কলেজটির অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মহিবুবুল হক ছোটন বলেন, অনেক তাজা স্মৃতি এ কলেজ নিয়ে। এ কলেজ আমাদের দ্বীপান্বিত জীবনের অংশীদার। এখানে আমি পেয়েছি প্রায় দেড় শতাধিক সহপাঠী ও শতাধিক প্রাজ্ঞ শিক্ষক। মূলত শিক্ষকদের সাহচর্য ছিল আমাদের জীবন বদলে দেওয়ার মহৌষধ। আমার ভাবতে ভালো লাগে উনিশ-বিশ শতকের সন্ধিক্ষণে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যায়তন অনেক বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, মুক্তিসংগ্রামী, ভাষাবিদ, উচ্চপর্যায়ের সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তার জন্ম দিয়েছে। বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের বিকাশের ক্ষেত্র এ কলেজ। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরপরই এ কলেজ ছড়িয়েছে তার আলো, সে আলোয় আলোকিত হয়েছে এ সমতটের জনপদ তথা বিশ্বমণ্ডল।

কলেজটির সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে এই কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জুবাইদা নূর খান বলেন, আব্বার মুখে গর্বের সাথে উচ্চারিত হতো এন. জি রয়, লায়লা নূর, আমির আলী চৌধুরী প্রমুখ শিক্ষকদের নাম। আব্বা ছিলেন ৬০-এর দশকে দক্ষিণ বাংলার অন্যতম বিদ্যাপীঠ, কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। আব্বা পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। আর আমি যখন ১৯৯১ সালে এসএসসি পাস করলাম, স্বভাবতই সচেতন পিতামাতা যেভাবে ভাবেন সেভাবেই তাদের প্রথম সন্তানের কলেজ ভর্তি নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা এমনকি সিদ্ধান্তহীনতায় তাঁরা ভুগছিলেন। কারণ, মাত্র এক বছর আগে ১৯৯০ সালে কলেজে কো-এডুকেশন চালু হয়েছিল। সম্পূর্ণ মেয়েদের স্কুল থেকে এসএসসি পাস করে ছেলেদের সঙ্গে পড়ার বিষয়টা উনাদের ভাবিত করেছিল। যা-ই হোক, স্বপ্ন ছিল আব্বার কলেজে পড়ব, ভর্তি হলাম; কৃতিত্বের সঙ্গে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পাস করলাম। মনে পড়ে, এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন পদার্থবিদ্যা পরীক্ষার মিনিট দশেক আগে পেছনে তাকিয়েছিলাম বলে হল পর্যবেক্ষক খাতা নিয়ে যান। আমাদের সময়ে পরীক্ষার কেন্দ্র আমাদের কলেজেই ছিল এবং আমাদের শিক্ষকরাই পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন। সেই খাতা কিন্তু আমাকে আর দেওয়া হয়নি। কতটা নিষ্ঠার সঙ্গে শিক্ষকরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করতেন- এই ঘটনাটি তার সামান্য একটা উদাহরণ। আজ আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের একজন শিক্ষক। যেখানে আমি ত্রিশ বছর পূর্বে পাঠ গ্রহণ করতাম, আজ সেই প্রতিষ্ঠানে আমি পাঠদান করি। নিশ্চিতভাবেই অদ্ভুত এক মিশ্র অনুভূতি। আমার ছোট দুই বোন- একজন প্রকৌশলী এবং অপরজন চিকিৎসক- তারাও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ছিল। এ রকম বহু প্রাক্তন কৃতী শিক্ষার্থী এই প্রতিষ্ঠানের নিবিড় সাহচর্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন। দেশে-বিদেশে উজ্জ্বল ভূমিকা এবং অবদান রেখে চলেছেন। এই কলেজের মাঠ, জামতলা, মেয়েদের কমনরুম, পুরনো ক্লাসরুম- আমার আবেগের কুঁড়েঘরে মাঝে মাঝেই কড়া নাড়ে। আমি স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ি। প্রাক্তন শিক্ষাগুরুদের ছায়া অনুভব করি; দায়িত্ব পালনে নিজেকে নতুন করে প্রতিশ্রুতিবদ্ধতায় আবদ্ধ করার শক্তি অনুভব করি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। গত ১২৪ বছর ধরে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিক বিকাশ এবং মুক্তিসংগ্রামের গৌরবময় ইতিহাসের ধারক ও বাহক কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খানের সাহসী, বুদ্ধিদীপ্ত ও গতিশীল নেতৃত্বে এবং উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মৃণাল কান্তি গোস্বামীর সার্বিক সহযোগিতায় কলেজে অভূতপূর্ব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন হয়েছে। একসময় কলেজে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকত। স্যারের মেধা ও বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপের ফলে জলাবদ্ধতা দূর হয়েছে। ডিগ্রি শাখার খেলার মাঠটি জলাবদ্ধতার কারণে খেলাধুলার অনুপযোগী ছিল। মাননীয় সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহারের সার্বিক দিক নির্দেশনা ও অধ্যক্ষ স্যারের প্রচেষ্টায় মাটি ভরাট করে মাঠটিকে বর্তমানে খেলার উপযোগী করা হয়েছে। এ সময়ে কলেজে একটি জুলজি মিউজিয়াম স্থাপিত হয়েছে। ডিগ্রি শাখার গ্রন্থাগারটি আধুনিকীকরণ হয়েছে এবং ডিগ্রি শাখায় একটি দৃষ্টিনন্দন ডে কেয়ার সেন্টার নির্মিত হয়েছে। স্যারের গতিশীল নেতৃত্বে কলেজটি প্রাতিষ্ঠানিক, একাডেমিক ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অনেক সাফল্য অর্জন করেছে। অধ্যক্ষ মহোদয়ের সততা, স্বচ্ছতা এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতার ফলস্বরূপ মাউশি কুমিল্লা অঞ্চল কর্তৃক বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে শ্রেষ্ঠ কলেজের স্বীকৃতি লাভ করেছে। গত বছর জাতীয় পর্যায়ে অধ্যক্ষ স্যার প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে জাতীয় পর্যায়ে কলেজটি গত দুই বছরে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। একাডেমিক কাউন্সিল ও শিক্ষক পরিষদের সভায় সব সদস্যের সম্মতির ভিত্তিতে অধ্যক্ষ মহোদয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। বর্তমানে অধ্যক্ষ মহোদয়ের তত্ত্বাবধানে কলেজের ডিগ্রি শাখার কলা ভবনের সামনের দেয়াল নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। অধ্যক্ষ স্যারের চৌকস নেতৃত্বে আগামীতে কলেজে আরও প্রাতিষ্ঠানিক ও একাডেমিক উন্নয়ন সাধিত হবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে কলেজটি অগ্রণী ভূমিকা রাখবে- এমনটিই আমাদের প্রত্যাশা।

কলেজটির শিক্ষক পরিষদের সাবেক সম্পাদক সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন বলেন, পরিপূর্ণ ক্যাম্পাসে আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ৫৪তম অধ্যক্ষ হলেন অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে ১ম শ্রেণীতে সম্মান ও মাস্টার্স ডিগ্রিধারী। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেছেন পি.এইচ.ডি ডিগ্রিও। অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি কলেজে সূচনা করেছেন উন্নয়ন-অগ্রগতির নবধারা। প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত, একাডেমিক প্রভৃতিক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন তিনি ।

একজন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষার্থীদের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয়, নিবেদিতপ্রাণ ও মেধাবী শিক্ষাবিদ এবং একজন চৌকস প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ ও জাতীয় পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেষ্ঠ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন। সারা দেশের ১৫০০০ বি.সি.এস (শিক্ষা ক্যাডার) কর্মকর্তাদের সংগঠনের নির্বাচিত সহ-সভাপতি তিনি। কুমিল্লা গণিত ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন দীর্ঘদিন ধরে।

অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণের পর কলেজে সূচনা করেছেন উন্নয়ন-অগ্রগতির নবধারা। প্রশাসনিক, অবকাঠামোগত, একাডেমিক প্রভৃতিক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছেন।

অধ্যক্ষের বক্তব্য

অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান

কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান। তিনি ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট কলেজটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গণিতের এই শিক্ষক ২০০১ সাল থেকে ভিক্টোরিয়া কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। মাঝে দুই বছর কুমিল্লা মহিলা কলেজে ছিলেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি শাখার অবকাঠামোগত অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেন। এখানে একটি বিশ্বমানের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গ্রন্থাগার তৈরি করেছেন। যেখানে ৬০ হাজার বই রয়েছে। কলেজে প্রাণীবিদ্যা জাদুঘর করেছেন। কলেজের একমাত্র খেলার মাঠটি বদ্ধ ডোবায় পরিণত হয়েছিল। সেই বদ্ধ ডোবা পরিষ্কার করে মাটি ভরাট করেছেন। এখন সেই মাঠে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত খেলাধুলা করে। শুধু ক্যাম্পাসের অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, কলেজের সব ছাত্রাবাস-ছাত্রীনিবাসের উন্নয়ন করেন।

অধ্যক্ষ ড. আবু জাফর খান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেছি মাত্র। শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, আমার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার মনোন্নয়ন। যদি বলি সর্বশেষ প্রাণীবিদ্যা বিভাগ থেকে ৯৩ জন স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েছে। সেখানে ৬৩ জন প্রথম শ্রেণি অর্জন করেছে। এমন ফলাফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যারপরনাই আনন্দিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির এমন সাফল্য কিংবা অবকাঠামোগত উন্নয়নে আমার সহকর্মী, শিক্ষার্থী এবং কলেজের কর্মকর্তা-কর্মচারী সবার ভূমিকা রয়েছে। তবে ভিক্টোরিয়া কলেজের এমন অগ্রগ্রতির নেপথ্য আমাদের সবাইকে যিনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেন তিনি আমাদের সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। উনার সঠিক নির্দেশনায় ঐতিহ্যের এই কলেজটি আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে দিচ্ছে এই জনপদে।

লেখক: কুমিল্লা প্রতিনিধি

বিষয়:

গরমে বার্ডস আইয়ের পলো টি শার্ট

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফিচার ডেস্ক

ফ্যাশন হাউজ বার্ডস আই এই গরমে রকমারি ডিজাইনের পলো টি-শার্ট নিয়ে হাজির হয়েছে । সেই সাথে ছেলেদের সব ধরনের পোশাক থাকছেই যেমন, টি শার্ট , পলো টি শার্ট, শার্ট, পাঞ্জাবি ইত্যাদি ।

চায়না, ইন্ডিয়া বাংলাদেশী কাপড়ের তৈরি বিভিন্ন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শার্ট , পলো টি শার্ট সারাদেশে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা বার্ডস আই।

আজিজ সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় বার্ডস আইয়ের ২টি মেগা শোরুম শো-রুমে রয়েছে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়ের ব্যবস্থা।


গ্রীষ্মে প্রকৃতি রাঙানো জারুল ফুলের পসরা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হাসান মাহমুদ রিপন, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

সারা দেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গ্রীষ্মের এ খরতাপের মধ্যেই বাংলার প্রকৃতিতে দেখা যায় নানা প্রকার ফুলের সমারোহ। বিভিন্ন জাতের অনেক ফুলের মধ্যে মানুষের নজর কাড়ছে বেগুনি রঙের থোকা থোকা জারুল ফুল। পাপড়ির নমনীয় কোমলতা, দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে যেন আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছে এ জারুল ফুল। এমন অনিন্দ্যসুন্দর মনকাড়া দৃশ্য কতই না চমৎকার!

সবুজ প্রকৃতির মধ্যে রোদ ঝলমলে জারুল গাছগুলোয় শোভা পাচ্ছে গাঢ় বেগুনি রঙের ফুল। চলার পথে পথিক থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন জারুল ফুলের বেগুনি রঙের আভা। থোকা থোকা ফুলগুলোও যেন চোখ ধাঁধিয়ে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। বাংলার প্রাচীন রাজধানী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের নৈসর্গিক অঙ্গনে ফুটে থাকা জারুল ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলি মানুষকে বিমুগ্ধ করছে।

এখানে ঝাড়লণ্ঠনের মতো পুষ্পগুচ্ছ-রূপের পসরা সাজিয়ে বসেছে এ জারুল ফুল। জারুল গাছে বেগুনি রঙের যেন ফুলের বন্যা। ফাউন্ডেশনের দৃষ্টিনন্দন লেকের পাড়ে জারুল ফুলের দীর্ঘ মঞ্জরি যে কোনো পর্যটককে বিমোহিত করে। পথের ধারে জারুল ফুলের সৌন্দর্য দেখে মনটাও প্রাণবন্ত হয়ে যায় লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরে বেড়াতে আসা সৌন্দর্য পিপাসুদের।

গ্রীষ্মের শুরুতে জারুলের উজ্জ্বল প্রস্ফুটনে চারিদিকে উচ্ছলতার বিকিরণ সব সৌন্দর্য-পিপাসু মানব মনকে মুগ্ধ করে রাখে। এ যেন গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে এক টুকরো রঙিন হিমেল হাওয়া। কবি জীবনানন্দ দাশের কাব্যে গ্রীষ্মের খরতাপের একটু প্রশান্তিতে বেগুনি আভার জারুল ফুলের সরব উপস্থিতি লক্ষণীয়। কবি তার কবিতায় বলেছেন-

এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে- সবচেয়ে সুন্দর করুণ

সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকৃপী ঘাসে অবিরল;

সেখানে গাছের নাম : কাঁঠাল, অশ্বথ, বট, জারুল, হিজল;

সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ

আরও বলেছেন- ভিজে হয়ে আসে মেঘ দুপুরে চিল একা নদীটির পাশে

জারুল গাছের ডালে বসে বসে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে।

রূপময়ী জারুলের প্রতি কবি জীবনানন্দ দাশ তো সাহিত্যের এক মহিমান্বিত রসদ জ্ঞান করছেন। জারুল ফুল আর ফলের বিপুল সমাহার গ্রীষ্মে প্রকৃতিকে দিয়েছে অনন্য মনোরম মর্যাদা। পাশাপাশি রসালো আম, জাম, কাঁঠাল ও ফলফলাদির সঙ্গে ফুলের মাধ্যমে প্রতি বছর নয়নাভিরাম অস্তিত্বের জানান দেয়। জারুল ফুল এ মৌসুমেরই অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ফুল। গরমের মাত্রা যতই বাড়ছে জারুল ফোটার তীব্রতা ততই বাড়ছে। তাপমাত্রা কমার সঙ্গে সঙ্গে জারুলের মুগ্ধতা কমতে থাকে।

গ্রামবাংলায় জারুল গাছ একটি অতি পরিচিত নাম। প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখতে জারুল ফুলের কোনো জুড়ি নেই। জারুল সাধারণত জমির আইলে, রাস্তার পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় এমনিতেই জন্মায়। পাপড়ির নমনীয় কোমলতায় দৃষ্টিনন্দন বর্ণচ্ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে জারুল ফুল। পাতাঝরা বড় আকারের বৃক্ষ। বাকল মসৃণ ও রং ধূসর বা পিতাভ ধূসর। ফুল বেগুনি। কাঠ শক্ত মসৃণ ও টেকসই। সহজে কাজ করা যায়। পানির নিচেও ব্যবহার করা যায়। গাছের উচ্চতা ৮০ থেকে ১০০ ফুট বা তদূর্ধ্ব। উদ্ভিদ বিজ্ঞান অনুযায়ী জারুল লিথ্রাসি গোত্রের উদ্ভিদ। এর অর্থ সুন্দর-শোভন। ইংরেজি নাম কুইন ফ্লাওয়ার। এর বৈজ্ঞানিক নাম লিরগার্সট্রোমিয়া স্পোসিওসা।

জারুল ফুলের আদি নিবাস শ্রীলংকা। জারুল ভারতীয় উপমহাদেশের নিজস্ব বৃক্ষ। বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, শ্রীলংকা, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন প্রভৃতি অঞ্চলে জারুল গাছের দেখা মেলে। নিম্নাঞ্চলের জলাভূমিতেও এটি ভালোভাবে বেড়ে উঠতে পারে, তবে শুকনো এলাকাতেও এদের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয় না। সোনারগাঁয়ের গ্রামাঞ্চলে, লোকশিল্প ফাউন্ডেশন এলাকায় ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ধারে জারুল গাছ পাওয়া যায়।

জারুল গাছে এপ্রিল থেকে জুন মাসে ফুল আসে। জারুল গাছ যখন ফুলে ফুলে ভরে যায় তখন চারদিক ঘ্রাণে মোহিত হয় না বটে, দৃষ্টিনন্দন নিলাভ, বেগুনি রাশি শোভায় সবারই চোখ আটকে যায়। আকৃতি ভিন্ন হলেও জারুল ফুলের রং সাধারণত কচুরিপানা ফুলের মতো বেগুনি আর সাদার মিশেল। তবে ইটভাটার ‘ক্ষুধা’ নিবারণসহ নানা কারণে এ গাছটি আগের মতো দেখা যায় না। জারুল ফুল শুধুই চোখের মজা জোগালেও এ গাছের কাঠ ঘর-গেরস্থালির কাজে লাগে। শক্ত ও ভারী বলে জারুল কাঠ নৌকা, লাঙ্গলসহ অনেক আসবাবপত্র ও খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। জারুল কাঠ লালচে রঙের, অত্যন্ত শক্ত ও মূল্যবান। জারুল গাছের ভেষজ গুণাগুণ রয়েছে। এর বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া জ্বর, অনিদ্রা, কাশি ও অজীর্ণতায় জারুল উপকারী।

জারুলকে বাংলার চেরি বলা হয়। কী অপূর্ব হয়ে ফোটে। চোখ ভরে যায় তার রূপে। সোনারগাঁয়ে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের (সোনারগাঁ জাদুঘর) বিশাল চত্বরে এ মৌসুমে যখন ফুল ফুটতে থাকে, তখন জাদুঘরের প্রবেশ পথ থেকে চোখ ফেরানো দায়। বেগুনি রঙের আগুন কি হয়? হওয়া উচিত। জারুল যেন বেগুনি আগুন। আমাদের কেন জারুল উৎসব হয় না, চেরি উৎসবের মতো। একপাশে জারুল, আরেক পাশে কৃষ্ণচূড়া, একটু না হয় সোনালু। আহ্ কি অপূর্ব। কী অপূর্ব তার শোভা এবং আকর্ষণ।

সোনারগাঁয়ের কবি শাহেদ কায়েস বলেন, জারুল ফুল আসলে অনেক সুন্দর গাছ হওয়ায় আমাদের এলাকার পরিবেশকে বেশ সজ্জিত করেছে। এই সৌন্দর্যময় পরিবেশ দেখে যে কেউ বিমোহিত হয়। আশ্চর্যের বিষয়, জারুল ফুলে ভরপুর এই প্রাকৃতিক পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে পথের পথিক কিছুটা সময় হলেও এখানে ব্যয় করে।

কবি রহমান মজিব বলেন, বৈশাখ মাসে গ্রামগঞ্জসহ রাস্তার ধারে জারুল গাছ এখন বেগুনি রংয়ের ফুলে প্রকৃতিকে এক অপার সৌন্দর্যে ফুটিয়ে তুলেছে। চমৎকার এই ফুল সবারই নজর কাড়ছে প্রতিনিয়ত। জারুল গাছের বেগুনি রঙের ফুলে মনোমুগ্ধকর এক আবেশ তৈরি হয়। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই ভালো লাগে, যদিও বর্তমানে জারুল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তাই সড়কের দুই পাশসহ বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য এই গাছটি বেশি করে রোপণ করা খুবই জরুরি।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তা লেখক এ কে এম মুজ্জাম্মিল হক মাসুদ জানান, লোক ও কারুশিল্প জাদুঘরের ভেতরে অসংখ্য জারুল গাছ রয়েছে। এখন শুধু দৃষ্টিপাত হয় জারুল ফুলে। সভ্য মানুষের অসভ্য চাপে আছে প্রকৃতি জননী। তথাপি চাকরির সুবাদে আমরা দুদশক পুষ্পশোভিত অপরূপ জারুল তরুর রূপসুধা পান করে আসছি। তিনি বলেন, প্রতিদিন প্রাতর্ভ্রমণে জারুলের দীর্ঘ পুষ্পমঞ্জরির উচ্ছ্বাস দেখে বিমোহিত হয়েছি। জাদুঘর অঙ্গনের সৌন্দর্য বর্ধনে এবং পরিবেশের সামগ্রিক শুচিতা রক্ষায় ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ জারুল তরু রোপণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পথতরু হিসেবে জারুল আদর্শ। জারুল পরিবেশ রক্ষায় বিশেষ উপযোগী। তাই জারুল তরুর সুসমন্বিত বিন্যাশে প্রাণের পটভূমি সোনারগাঁ জাদুঘরের প্রতিবেশ অপরূপ নান্দনিক শোভামণ্ডিত হয়ে উঠতে পারে।


গরমে যত্ন নিন পোষা প্রাণীর

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:১৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শখ বা প্রয়োজনে যে কারণেই হোক অনেক ঘরেই দেখতে পাওয়া যায় পোষ্য প্রাণী। এই তীব্র দাবদাহে নিজেদের সুস্থাতার পাশাপাশি পোষ্য প্রাণিদের সুস্থাতার দিকটিও নজরে রাখতে হবে। তাদের সুস্থ রাখতে কি করতে হবে আসুন জেনে নেই-

১. প্রতিনিয়ত পোষা প্রাণীকে গোসল করাতে হবে। তার শরীরের বেশি লোম বড় থাকলে গরম বেশি লাগবে এমন ধারণা ভুল। লোমই তাদের দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তবে লোম যেন খুব বেশি বড় না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

২. সূর্যের তাপ থেকে যতটা পারা যায় পোষ্যকে আড়াল করে রাখা ভালো। তাই বিশ্রামের জন্য এমন জায়গার নির্বাচন করা ভালো যেখানে সেভাবে সূর্যের আলো র্পৌঁছতে পারে না।

৩. পোষ্যের থাকার জায়গায় যেন বাতাস চলাচলের যথেষ্ট সুযোগ থাকে। গরমের দিনে ভেজা তোয়ালের ওপরেও কুকুর বা বিড়ালকে শোওয়ানো যায়।

৪. গরমে পোষ্যের খাবার তালিকার ওপর বাড়তি নজর দিতে হবে। যেসব ফলে পানি বেশি তা বেশি করে খেতে দিতে হবে। তরমুজ, আপেলের মতো ফল খাওয়ানো ভালো।

৫. এ সময় দিনে বাইরে প্রচণ্ড রোদ থাকে। তাই বাড়ির বাইরে কম ঘোরাতে নিয়ে যাওয়া ভালো। চেষ্টা করুন বাড়ির ভেতরেই পোষ্যকে খেলাধুলো করাতে। তবে রোদ কমলে সন্ধ্যায় হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে।

৬. চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পোষ্যকে এ সময়ে একটি করে মাল্টিভিটামিন নিয়মিত খাওয়ানো যেতে পারে। এতে করে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ রোগের প্রবণতা কমবে।


রান্নাঘরের গরম থেকে বাঁচার ১০ কৌশল

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশজুড়ে চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। অতিরিক্ত গরমে জনজীবন ওষ্ঠাগত। যারা নিয়মিত রান্না করেন তাদের কষ্ট আরও বেশি। এই কষ্ট কিছুটা লাঘব হতে পারে এই টিপসগুলো মানলে। এক নজরে দেখে নিন টিপসগুলো-

১. রান্নার সময় পরিবর্তন করুন। সকাল সকাল রান্নাঘরে ঢুকে দুপুর হওয়ার আগেই রান্নার শেষ করুন। এতে তীব্র গরমের সময়টায় বিশ্রাম নিতে পারবেন।

২. দিনে দুইবার বা তিনবার খাবার রান্না করার বদলে একবারে রান্না শেষ করে ফেলুন।

৩. দ্রুত রান্না করা যায় এমন রেসিপি অনুসরণ করে অল্প সময়ের মধ্যে রান্না শেষ করে ফেলুন।

৪. দিনে দুইবার বা তিনবার খাবার রান্না করার বদলে একবারে রান্না শেষ করুন।

৫. রান্না ছাড়াই খাওয়া যায় এমন আইটেম বেছে নিতে পারেন দিনের যেকোনো একবেলায়। ফল, সালাদ এবং হালকা, সেদ্ধ খাবার খান। এই গরমে এসব খাবার হজমও হবে দ্রুত, আবার দীর্ঘক্ষণ রান্নাঘরে থাকার অস্বস্তি থেকেও মিলবে রেহাই।

৬. খাবার সেদ্ধ করার জন্য প্রেসার কুকার ব্যবহার করুন। এতে দ্রুত রান্না সম্ভব হবে।

৭. ঢিলেঢালা, পাতলা পোশাক পরুন রান্নার সময়।

৮. রান্নার আগে শাকসবজি কাটা, মসলার মিশ্রণ প্রস্তুত করা এবং এই জাতীয় অন্যান্য কাজগুলো অনেক সময় এবং শক্তি কেড়ে নেয়। তাই কিছু সময় বের করে আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখতে পারেন এগুলো। একবারে পেঁয়াজ কেটে রাখা বা একসঙ্গে অনেকগুলো সবজি কেটে রাখার মতো কাজগুলো অনেকটা সময় বাঁচিয়ে দেবে আপনার।

৯. রান্নাঘরে অবশ্যই এগজস্ট ফ্যান ব্যবহার করবেন। রান্না করার সময় রান্নাঘরের জানালা খুলে রাখবেন।

১০. রান্নার সময় প্রচুর ঘাম হয়। এজন্য অবশ্যই হাইড্রেটেড থাকুন। ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে প্রতি ৫০০ মিলি পানিতে এক চিমটি লবণ এবং ২ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।


এই গরমে কয় কাপ চা খাবেন

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:২৩
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চায় পান করতে কমবেশি সবাই পছন্দ করে। তবে সারা দেশে এবার তীব্র দাবদাহ চলায় স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা মাথায় রেখে চাপ্রেমীরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। বিশেষজ্ঞরাও এ সময় ঘনঘন চা পান করা থেকে বিরত থাকতে বলছেন। তবে চাপ্রেমীদের কাছে তা মানা কিছুটা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য অনেকেই প্রশ্ন করছেন গরমে ঠিক কত কাপ চা পান স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

ভারতের কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত বলেন, চা হলো অত্যন্ত রিফ্রেশিং একটি পানীয়। তাই হাজার চাপের মধ্যে এক কাপ চা খেলে মাথা হালকা হয়, দুশ্চিন্তা কমে। শুধু মানসিক প্রশান্তি আনার কাজেই নয় নিয়মিত চা খেলে হার্ট ভালো থাকে।

তবে এই তাপপ্রবাহে গরম চা এড়িয়ে চলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। না হলে পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। তবে এতসব কথা জানার পরও যারা গরম চা পান করতে আগ্রহী তারা একদম সকাল-সকাল এক কাপ ধূমায়িত চা পান করতে পারেন। গরমে শরীরের খেয়াল রাখতে চাইলে গরম চা পান করার পরিবর্তে ঠাণ্ডা চা বা কফি পান কর যেতে পারে। তাতেই শরীর ঠাণ্ডা থাকবে বলে জানিয়েছেন শর্মিষ্ঠা রায় দত্ত।

দুধ-চিনি ছাড়া চা পান করতে পারলে বিষয়টি আরও ভালো। চায়ের সঙ্গে দুধ মিশিয়ে খেলে এই পানীয়টির অ্যান্টি অক্সিডেন্ট নষ্ট হয়ে যায়। ফলে চা পান করে আর তেমন কোনো উপকার আসে না উল্টো গ্যাস-অ্যাসিডিটির সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই গরমকাল অথবা সারা বছর; দুধ চা পান করা এড়িয়ে চলা ভালো। তার বদলে সুস্থ থাকতে বরং রং চা পান করলে মিলবে উপকার।

তবে সারা দিন অথবা তাপপ্রবাহে ঠিক কত কাপ চা পান করা ভালো তা একান্তই নিজের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। শরীরে বেশি কষ্ট অনুভব করলে তখন নিজের থেকেই চায়ের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া ভালো। নিজের স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয় এমন কোনো অভ্যাসই ধরে রাখা ভালো নয়।


নারকেল দুধে কোপ্তা পোলাও

আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৪ ২৩:৪৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদ মানেই ভুরিভোজ খাওয়া-দাওয়া। আর যেকোনো উৎসবেই পোলাও আমরা অনেকভাবেই খেয়ে থাকি। ঈদ আয়োজনে ব্যতিক্রমী স্বাদের পোলাও রান্না করে ফেলতে পারেন। নারকেল দুধে কোপ্তা পোলাও রান্না করে পরিবেশন করতে পারেন অতিথি আপ্যায়নে। প্রশংসা কুড়াবেন নিশ্চিত। জেনে নিন রেসিপি।

কোপ্তা তৈরির উপকরণ

মুরগি/খাসি অথবা গরুর মাংসের কিমা ২ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, চিনাবাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, গরম মসলা গুঁড়া ২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ বাটা ২ চা চামচ, জিরা গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, ধনিয়া গুঁড়া ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ২ চা চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১/৪ কাপ, পেঁয়াজ বাটা ২ টেবিল চামচ, নারকেল দুধ আধা কাপ, কাঁচা মরিচ ৫/৬টি, ঘি ২ টেবিল চামচ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ ও চিনি স্বাদ মতো।

পোলাও রান্নার উপকরণ

পোলাও এর চাল ২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ২ টেবিল চামচ, গাজর কুচি ১/৪ কাপ, এলাচ ২টি, দারুচিনি ১ টুকরা, তেজপাতা ২টি, নারকেলের দুধ ১ কাপ, পানি ৩ কাপ, লেবুর রস ১ টেবিল চামচ, ঘি ৩ টেবিল চামচ, তেল ৩ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ৭/৮টি, লবণ ও চিনি স্বাদ মতো।

প্রস্তুত প্রণালি

কিমার সাথে বাটা মসলাগুলো অর্ধেক পরিমাণে মিশিয়ে ১৫ মিনিট মেখে রাখুন। ছোট ছোট বলের আকারে কোপ্তা বানিয়ে নিন এবার কড়াইতে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি বাদামী করে ভেজে সমস্ত বাটা মসলা দিয়ে মসলা কষিয়ে নিন। কষানো মসলায় কোপ্তা দিয়ে ৫ মিনিট ঢেকে রাখুন। এবার নারকেলের দুধ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন। ঝোল ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে আরেকটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করুন। এতে পেঁয়াজ হালকা ভেজে গরম মসলা ও চাল দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন। তারপর পানি, ১ কাপ নারকেল দুধ, লবণ ও চিনি দিয়ে নেড়ে বলক আসলে মৃদু আঁচে ২০ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। পোলাও রান্না হলে কিছু অংশ তুলে রেখে রান্না করা কোপ্তা, গাজর, বেরেস্তা, লেবুর রস দিয়ে ২/৩টি লেয়ার দিয়ে বাকি নারকেলের দুধ দিয়ে ১৫ মিনিট দমে রেখে পছন্দ মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন


ঈদে অতিরিক্ত খাবার খেয়েছেন, যা করবেন

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদের দিন বেশি খেয়ে ফেলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীসহ নিজের পারিবার পারিজন সব মিলিয়ে সবার আবদার রাখতে গেলে উৎসব-আয়োজনে স্বাভাবিকভাবেই বেশি খাওয়া হয়ে যায়। এদিন সবার ঘরেই বাহারি সব খাবার তৈরি হয়। এটা সেটা খেতে খেতে সবারই অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায়। অনেক সময় ব্যস্তার কারণে খুব দ্রুত খাবার খেতে হয়। ফলে ঈদের দিন ক্লান্তি আর অবসাদ কাজ তরে। তাই ঈদে অতিরিক্ত খেয়ে ফেললেও কয়েকটি কাজের মাধ্যমে সমস্যা এড়ানো যেতে পারে।

হাঁটাহাঁটি করা

বেশি খেয়ে ফেললে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই খাওয়ার পর একটু হাঁটাহাঁটি করুন। এতে খাবার দ্রুত হজম হবে এবং যথেষ্ট পরিমান পানি পান করেুন। এতে খাবারের মাধ্যমে শরীরে জমা হওয়া অতিরিক্ত লবণের মাত্রা কমবে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।

খেয়েই শুয়ে পরা থেকে বিরত থাকা

বেশি খাবার খাওয়ার পর অনেকে শুয়ে পরেন। ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয় ও অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়। পেট ফুলে যায়, বুকে ব্যথা ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়।

কোমল পানীয় পান না করা

অতিরিক্ত খাওয়ার পর কোমল পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন। কোমল পানীয় বলতে কার্বোনেটেড ব্রেভারেজ ডিংকস। এর ফলে গ্যাস্ট্রিক আরও বেড়তে পারে। ফলে পেট ভরা ভরা ও অস্বস্তি লাগতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া

ঈদ খেকে শুরু করে অনেক দিন পাড়া মহল্লার ওষুধের দোকান বন্ধ থাকে। অনেকেরই অতিরিক্ত খাওয়ার পর বমি বমি ভাবসহ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। এমনটি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আগে থেকে ওষুধ আনতে হবে।

খাওয়া শুরু করার ২০ মিনিটের মধ্যে মস্তিষ্ক সক্রিয় হয়ে ওঠে, তাই প্রথম ১০ মিনিট খুবই ধীরে ধীরে খাবার খেতে হবে। একবার খাবার মুখে নিয়ে অনন্ত ৯০ বার চাবানো উচিত। ধীরে ধরে খাবার খেলে কম ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়। এর ফলে ওজনও কমে।

খাবার খাওয়ার সময় যখনই মনে হবে অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে তখনই খাওয়া বন্ধ করতে হবে। খাবার খাওয়া সময় গল্প, ফোন ও টিভির মনিটরে তাকিয়ে থাকা যাবে না। একবেলা ভারি খাবার খেলে অন্যবেলায় কম ক্যালোরি ও হালকা খাবার খাওয়া ভালো।

বিষয়:

ঈদে ঝটপট তৈরি করুন শাহী বোরহানি

আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:৫৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঈদ মানেই আনন্দ ঈদ মানেই খুসি। সারা পৃথিবীর সকল মুসলিমদের কাছে এ দিনটি অনেক বৈশিষ্টমণ্ডিত। রমজান মাসে সারাদিন উপোশ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যেমন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ করেন তেমনি ঈদের দিন না খেয়ে থাকাকেও অনেকে ইসলামের দৃষ্টিতে সুচোখে দেখেন না।

আর বাঙালি মুসলমানদের ঈদ মানেই সকাল থেকে সন্ধ্যা খাবারের ফোয়ারা। সকালে মিষ্টান্ন, দুপুরে ভারি খাবার। সন্ধায় ঝাল খাবারসহ কত রকমরে পদ। পদের আলাপের যাওয়ার আগে এমন একটি পদ নিয়ে আলোচনা করব যে পদটি না থাকলে আসল পদটিই যেন পূর্ণতা পায় না। সে পদটির নাম বোরহারি। এটি একটি পানীয় যা কিনা খাবার হজম করতে সহায়তা করে।

পানীয়টির নামের উৎপত্তি অজানা। আরবি বুরহান শব্দ থেকে এসেছে শব্দটি যার অর্থ ‘প্রমাণ’। বিকল্পভাবে, এটি ফারসি শব্দ বোরানি থেকেও উদ্ভূত হতে পারে, যা দই এবং সবুজ শাক দিয়ে তৈরি একটি খাবারকে বোঝায়। সে হিসেবে আমরা অনায়াসে দ্বিতীয় ব্যাখ্যাটাই নিতে পারি।

বাজারে হরেক রকমের নামিদামি বোরহানি পাওয়া গেলেও ভোজন রসিকরা কিন্তু সব সময় বাহিরের আশায় বসে থাকেন না। দেখা যায় যে যারা ভোজন রসিক তারা কিঞ্চিত রান্নাতেও পারদর্শি।

ঘরেই তৈরি করুন শাহী বোরহানি

পথমে আধা কাপ পানি সঙ্গে ৪ টেবিল চামচ পুদিনা পাতা, ১ টেবিল চামচ ধনেপাতা, কয়েকটি কাঁচামরিচ, ২ টেবিল চামচ চিনি, সামান্য লবণ ও আধা চা চামচ ছেঁচে নেওয়া আদা ব্লেন্ড করে নিন। একটু সময় নিয়ে ব্লেন্ড করে মিহি করুন। এরপর আড়াই কাপ টক দই, ১ চা চামচ বিট লবণ, ১ চা চামচ সাদা গোলমরিচের গুঁড়া, ১ চা চামচ টালা ধনিয়ার গুঁড়া, ১ চা চামচ টালা জিরার গুঁড়া ও ১ চা চামচ সরিষা বাটা দিয়ে আবার ব্লেন্ড করুন। ভালো করে সব মিশে গেলে গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করুন দারুণ স্বাদের বোরহানি। এই বোরহানি এক সপ্তাহ পর্যন্ত ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে।

বিষয়:

banner close