বিজয়ের এই মাসে ফ্যাশন হাউসগুলোর আয়োজনে থাকে ভিন্নতা। বৈচিত্র্যপূর্ণ ডিজাইন আর লাল-সবুজ রঙের প্রাধান্য দিয়ে ফ্যাশন হাউসগুলো বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশীয় কাপড় দিয়ে তৈরি করেছে শাড়ি, থ্রি-পিস, টি-শার্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া ও শিশুদের পোশাক।
পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে নিজস্ব উইভিংয়ে করা ডিজাইন, টাই অ্যান্ড ডাই, স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, অ্যাপলিক, অ্যামব্রয়ডারিসহ বিভিন্ন মাধ্যম। কারও পোশাকে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মানচিত্র, কারোর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে জাতীয় পতাকা, কোনোটায় রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের নানা ছবি, লেখা, কবিতার লাইন ও জাতীয় ফুল। অর্থাৎ বিজয় উৎসবের বিভিন্ন প্রতীক ব্যবহার করে ডিজাইন করা হয়েছে বিজয় দিবসের পোশাকগুলোতে। সাতকাহনের আজকের মূল প্রতিবেদনে রইল তারই খোঁজখবর।
বিশ্বরঙ
দেশের স্বাধীনতার গৌরব এবং সৃজনশীল শিল্পের স্বাধীনতা এ দুইয়ের প্রতি রয়েছে বিশ্বরঙ-এর বিনম্র শ্রদ্ধাবোধ। দেশীয় সব উৎসব-পার্বণে ফ্যাশন হাউস ‘বিশ্বরঙ’-এর থাকে বিশেষ বিশেষ আয়োজন। ‘বিশ্বরঙ’-এর ফ্যাশনের মূল ভাবনা গড়ে উঠেছে দেশীয় আত্মপরিচয়কে ঘিরে। বিজয় দিবসের পোশাকগুলো ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নয়, দায়িত্ব ও মূল্যবোধ থেকেই করা হয়েছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্বরঙ-এর রয়েছে লাল-সবুজের বিশেষ আয়োজন, দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ রয়েছে পোশাকের নকশায়। টি-শার্টে রয়েছে বাংলাদেশের পতাকার গ্রাফিক্যাল ফর্মের নান্দনিক উপস্থাপনায় টাইফোগ্রাফি, ক্যালিওগ্রাফির সমন্বয়। শাড়ির আঁচল যেন একটি সবুজ জমিনের মাঝে টকটকে লাল সূর্যে থাকছে দেশাত্ববোধক গানের টাইফোগ্রাফি। দেশীয় রং, দেশীয় কাপড় এ আয়োজনের মূল উপাদান।
এ ছাড়া প্রখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার বিপ্লব সাহার পরিকল্পনায় ‘যাপিত জীবনে লাল-সবুজের প্রভাব’ শিরোনামে নির্মিত হয়েছে ফ্যাশন ভিডিও। ভিডিওতে প্রকাশ পেয়েছে লাল-সবুজ রঙ কীভাবে আমাদের যাপিত জীবনে প্রভাব ফেলে। আমাদের নাগরিক সময়ের যাপিত জীবনের প্রেমময়তায়, সুখে-দুঃখে, ভালোবাসায়, দেশমাতৃকার আরাধনায় লাল-সবুজের প্রভাব আমাদের মননে, সময়ে... ।
শীতের আগমনে পোশাকগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে মোটা সুতি ও খাদি কাপড়। ‘বিশ্বরঙ’-এর শাড়ি, থ্রি-পিস, পাঞ্জাবি, টি-শার্ট, উত্তরীয়, মগ ইত্যাদিতে তুলে ধরা হয়েছে বাংলাদেশ সংবলিত লেখা ও লাল-সবুজ রঙের মাধ্যমে উঠে এসেছে দেশীয় ভাবনা। পাশাপাশি দেশীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান এসেছে ডিজাইনের অনুসঙ্গ হিসেবে। কাজের মাধ্যম হিসেবে এসেছে টাইডাই, ব্লক, বাটিক, এপ্লিক, কাটওয়ার্ক, স্ক্রিনপ্রিন্ট ইত্যাদি।
‘বিশ্বরঙ’-এর বিজয় দিবসের বিশেষ আয়োজনে বিশেষভাবে থাকছে ‘বাংলাদেশ’ লেখা সংবলিত টি-শার্ট। শুধু বিজয়ের মাসেই নয়, বরং সারা বছরই লাল-সবুজ হতে পারে ফ্যাশন সচেতনদের ফ্যাশন ভাবনা, দেশপ্রেমী মনের পরিচয়।
বিজয়ের এই ডিসেম্বর মাসজুড়ে ‘লাল-সবুজের উৎসব’ চলছে মাসব্যাপী বিশ্বরঙ-এর সব শোরুম এবং অনলাইনে। পোশাক সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য পেতে পারেন ‘বিশ্বরঙ’-এর ই-কমার্স সাইট এবং ফেসবুক পেইজে।
অঞ্জন’স
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত মহান বিজয় দিবস আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। প্রত্যেক বাংলাদেশি এই দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করে থাকে। এই উদযাপনকে আরও বেশি প্রাণবন্ত ও উৎসবমুখর করতে অঞ্জন’স প্রতি বছর পোশাকের বিশেষ আয়োজন করে থাকে। এবারের বিজয় দিবসের পোশাকগুলো বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার রঙ লাল ও সবুজ রং দিয়ে সাজানো হয়েছে। মোটিফ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে জাতীয় ফুল শাপলা ও বিভিন্ন ধরনের জ্যামিতিক নকশা। শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ-ওড়না, ফতুয়া, টি-শার্ট থাকছে এবারের আয়োজনে। বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের পোশাকও থাকছে এবারের এই বিজয় দিবস আয়োজনে। নতুন এই ডিজাইনের পোশাকগুলো অঞ্জন’সের সব শোরুম ও অনলাইন স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
রঙ বাংলাদেশ
দেশের স্বনামধন্য ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘রঙ বাংলাদেশ’-এর এবারের বিজয় উৎসব আয়োজন পোশাকে বিজয়ের ঐতিহ্য। পোশাকের ডিজাইনে রয়েছে দেশের প্রথম জাতীয় পতাকার ছাপ, বাংলাদেশের মুদ্রা ও জিওমেট্রিক থিম। লাল-সবুজ কালার কম্বিনেশনে পোশাকে তুলে ধরা হয়েছে বিজয় উল্লাসের ছাপ। বিজয় উৎসবের পোশাক হিসেবে তৈরি করা হয়েছে পাঞ্জাবি, শাড়ি, কামিজ, টিউনিক, উত্তরীও এবং ব্যান্ডেনা, যা ছোট-বড় সবার জন্য সমানভাবে মানানসই।
দেশে এবং দেশের বাইরে পজিটিভ বাংলাদেশকে তুলে ধরতে চাওয়ার প্রত্যাশায় গড়া ‘আমার বাংলাদেশ’ সাব-ব্র্যান্ডের অধীনে তৈরি হয়েছে সব সামগ্রী। শুধু বড়দেরই নয়, প্রতিটি উপলক্ষে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে থাকে বলেই বাচ্চাদের সংগ্রহও হয় বিশেষভাবে আকর্ষণীয়।
রয়েছে পরিবারের সবার জন্য একই ধরনের ম্যাচিং পোশাক। বাবা-মা, মা-মেয়ে, বাবা-ছেলে, এমনকি পরিবারের সবাই একই থিমের পোশাক পরে উদযাপন করতে পারবে এবারের বিজয় উৎসব।
রঙ বাংলাদেশের ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব আউটলেটেই পাওয়া যাচ্ছে বিজয় উৎসবের আয়োজন। এ ছাড়া অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও অর্ডার করা যাবে পোশাকগুলো।
কে-ক্র্যাফট
বিজয়ের আবেগ ছড়িয়ে দিতে প্রতি বিজয়েই থাকে কে ক্র্যাফটের বিশেষ আয়োজন, যা লাল-সবুজে উজ্জীবিত। বিজয় দিবসের এ দিনটি কাটুক না লাল-সবুজের পোশাকে।
সময়, আবহাওয়া ও পরিবেশ অনুযায়ী পোশাক ভাবনায় এই দিনে মেয়েদের প্রধান সঙ্গী হতে পারে লাল-সবুজের শাড়ি। এ ছাড়া বেছে নিতে পারেন আরামদায়ক সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি কিংবা ভিন্ন কোনো প্যাটার্নের টপ বা টিউনিক। শীতে উষ্ণতার প্রয়োজনে অন্য কোনো রঙের পোশাকে জড়িয়ে নিতে পারেন লাল-সবুজের শাল।
প্রতি বছরের মতোই ছেলেদের পোশাকে থাকছে পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, শাল, কটি, মাফলার। বিজয়ের ফ্যাশনে লাল অথবা সবুজ রঙের পাঞ্জাবির সঙ্গে মিলিয়ে পরতে কটি বেছে নিতে পারেন চমৎকার সব সংগ্রহ থেকে। শিশুদের জন্য রয়েছে নানা পোশাকের আয়োজন এবং বরাবরের মতোই থাকছে যুগল ও পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে মিলিয়ে পরার জন্য উপযোগী পোশাক।
কে-ক্র্যাফটের এবারের বিজয়-২৩ আয়োজন করা হয়েছে প্রধানত রাগ, ডুডলিং, জিওমেট্রিক, জামদানি, ট্যাডিশনালসহ নানা মোটিফের অনুপ্রেরণায়। এ ছাড়া থাকছে বাংলাদেশের পতাকা এবং মানচিত্র নিয়ে করা নানা পোশাক। কটন, ডিজাইন্ড কটন, কোটা কটন, লিনেন, নিট ও তাঁতের মতো আরামদায়ক ফ্যাব্রিকে তৈরি পোশাকগুলোতে নকশা ফুটিয়ে তুলতে স্ক্রিনপ্রিন্ট, হাতের কাজ ও অ্যামব্রয়ডারি করা হয়েছে। রঙ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে গ্রিন, বোটল গ্রিন, ফরেস্ট গ্রিন, পেইল গ্রিন, রেড, অরেঞ্জ, অফ-হোয়াইট । তবে অন্যান্য রঙের সমন্বয়ও থাকছে। বিজয়ের ভাবনায় লাল-সবুজের পোশাক ছাড়াও নানা রকম স্যুভেনির ও উপহার সামগ্রীও থাকবে। কে-ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, কুমিল্লা, খুলনাসহ সব আউটলেট ছাড়াও অনলাইন শপ থেকে বিজয়ের পোশাক কেনা যাবে।
সাদাকালো
বিজয়ের ৫২ বছরে সাদাকালো’র এবারের থিম ‘অপরাজেয় বাংলা’। মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদের নির্মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে অবস্থিত ‘অপরাজেয় বাংলা’ ভাস্কর্যটির নামকরণ করেছিলেন মুক্তিযাদ্ধা ও সাংবাদিক সালেহ চৌধুরী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের সম্মিলিত প্রতিরোধ ও আক্রমণে পাক বাহিনী পরাজিত হয়েছিল। স্বাধীনতা সংগ্রামে সর্বস্তরের মানুষের এই অংশগ্রহণের প্রতীকী চিহ্নই ‘অপরাজেয় বাংলা’। সাদাকালো অপরাজেয় সব স্তরের মানুষের এই আত্মদানকে সম্মান জানাতে এবারের বিজয় দিবসের থিম হিসেবে বেছে নিয়েছে ‘অপরাজেয় বাংলা’।
এ ছাড়া শাড়ি, পাঞ্জাবি ও কামিজের বিভিন্ন নকশায় ফুটে উঠেছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জোগাতে রচিত গান ‘গোবিন্দ হালদার’-এর রচয়িত ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’-এর বিভিন্ন লাইন। সাদাকালো-এর ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব আউটলেটেই পাওয়া যাবে চমৎকার এই বিজয় সমারোহ। আউটলেট ছাড়াও কেনাকাটার সহজ উপায় প্রতিষ্ঠানটির ই-কমার্স সাইট ও ফেসবুক পেজে পাওয়া যাবে বিজয় আয়োজনের সব সংগ্রহ, সঙ্গে এবার অনলাইন অর্ডারে থাকছে বিশেষ অফার।
পাঞ্জাবি হচ্ছে ঈদের নামাজের অন্যতম অনুষঙ্গ। পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদের নামাজে যেন তৃপ্তিই পাওয়া যায় না। যার কারণে শার্ট, প্যান্ট, টি-শার্টসহ বিভিন্ন পোষাকের পর পাঞ্জাবি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ঈদের জন্য পাঞ্জাবি শুধু গুরুত্বপূর্ণই না বরং অপরিহার্য। নতুন পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদের আনন্দ যেন ধুসর ও বর্ণহীন। আর এক্ষেত্রে যদি ডিজাইন ও রঙের বৈচিত্র্য ও ভিন্নতা থাকে তাহলে ঈদের আনন্দ হয়ে ওঠে আরেকটু বর্ণিল।
আনন্দপ্রিয় ও ফ্যাশন সচেতন তরুণদের ঈদকে আরও রঙিন করে তুলতে শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউজ ইজি তাদের ঈদের সমাহারে মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবির সমাহার ঘটিয়েছে। বাহারি ডিজাইনের বৈচিত্র্যময় নতুন নান্দনিক পোশাকে সবসময় নিজেদের ভিন্নতা তুলে ধরার লক্ষ্যে এবারের ঈদেও ইজি তাদের স্বকীয়তা বজায় রেখেছে। রঙ ছড়িয়েছে নতুন ও মনকাড়া ডিজাইনের পাঞ্জাবিতে।
ফ্যাশন প্রিয়দের মন রাঙাতে আকর্ষণীয় সব পোশাক ও ফ্যাশন অনুষঙ্গে সেজেছে দেশীয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির। এই মুহূর্তেও সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ইজি’র ফ্যাশন হাউসের আউটলেটগুলো।
ছেলেদের ফ্যাশনে এক্সক্লুসিভ কালেকশনে বরবারই একধাপ এগিয়ে ইজি। সব ধরনের ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখে এবারের ঈদে বাহারি সব ডিজাইন কালেকশন রয়েছে ইজির শোরুমগুলোতে।
পাঞ্জাবির পাশাপাশি থাকছে নতুন-নতুন ডিজাইনের সব শার্ট। অসংখ্য নতুন ডিজাইনের টি-শার্ট, পলো-শার্ট, ফরমাল শার্ট, ক্যজুয়াল শার্ট, পাঞ্জাবি, কটি, কাবলি-পাঞ্জাবি ও প্যান্টসহ আরও অনেক কিছু।
ইজির স্বত্তাধিকারী ও ডিজাইনার তৌহিদ চৌধুরী বলেন, ‘শুধু মুনাফা নয় ক্রেতাদের সেবা দেওয়া মূল লক্ষ্য। ঢাকা ছাড়াও আমাদের বাংলাদেশের সকল জেলাতেই ইজির শোরুম রয়েছে।’
ঈদের দিনে অতিথি আপ্যায়নে কিংবা পরিবারের সদস্যদের জন্য নানা পদের রান্নার আয়োজন থাকে। ঈদের দিনের সেই আয়োজনে যুক্ত হতে পারে দুটি পদ। আর মজাদার এই দুটি পদের রেসিপি দিয়েছেন রন্ধন শিল্পী নাজমা আক্তার।
শাহি টুকরা
উপকরণ: পাউরুটি: ৫ পিস (সাইড কেটে তিন কোনা বা যেকোনো শেপে কেটে নিতে হবে), দুধ হাফ কাপ, জাফরান ১-৪ চা-চামচ, ঘি হাফ কাপ, কাঠবাদাম ২ টেবিল চামচ, কাজুবাদাম ২ টেবিল চামচ, এলাচি গুঁড়া ১ চিমটি, পানি ১ কাপ, চিনি হাফ কাপ, গরুর দুধ হাফ লিটার, কনডেন্স মিল্ক হাফ কাপ, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালি:
প্রথম এক চা-চামচ ঘি প্যানে গরম করে বাদামগুলো হালকা ভেজে তুলে রাখতে হবে। বেশি ভাজা যাবে না। এরপর হাফকাপ দুধে জাফরান ভিজিয়ে সাইডে রেখে বাকি হাফ লিটার দুধ একটা প্যানে জাল করতে হবে। বারবার নেড়ে মিডিয়াম আঁচে জ্বাল করতে হবে যেন সর না পরে। দুধ একটু ঘন হয়ে আসলে তাতে দুধে ভেজানো জাফরান দিতে হবে। (এখানে জাফরান বা কেওড়া জল যেকোনো একটা দেওয়া যাবে। দুটো একসঙ্গে দেওয়া যাবে না। এরপর একে একে গুঁড়া দুধ, কনডেন্স মিল্ক, এলাচ গুঁড়া, ভেজে রাখা বাদাম কিছু সাজানোর জন্য রেখে বাকি সব দিয়ে ভালো করে জ্বাল করে মালাই তৈরি করে নামিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে। এরপর আরেকটা পাত্রে ১ কাপ পানি হাফ কাপ চিনি জ্বাল করে পাতলা সিরা তৈরি করে নামিয়ে রাখতে হবে। এরপর আবার একটা পাত্রে ঘি গরম করে তাতে কেটে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো ভেজে নিতে হবে গোল্ডেন রং করে। এরপর ভেজে রাখা পাউরুটির টুকরোগুলো হালকা গরম চিনির সিরায় ৩০ সেকেন্ড ডুবিয়ে উঠিয়ে সার্ভিং ডিশে নিয়ে তার ওপর আগে থেকে তৈরি করা ঠাণ্ডা মালাই দিয়ে তার ওপর বাকি বাদাম কুঁচি দিয়ে সাজিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের শাহি টুকরা।
ক্যারামেল পুডিং
উপকরণ: গরুর দুধ ১ কেজি, গুঁড়া দুধ হাফ কাপ, ডিম ৪টি, চিনি হাফ কাপ, ভেনিলা এসেন্স ১-৪ চা-চামচ, ক্যারামেল-এর জন্য চিনি ৪ টেবিল চামচ, পানি ২ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালি:
প্রথমে চুলায় একটা পাত্র বসিয়ে তাতে লিকুইড দুধ, গুঁড়া দুধ ও চিনি নিয়ে জাল করে নিতে হবে। ভালো করে নেড়ে জ্বাল করে শুকিয়ে ৩ কাপ করে নিতে হবে। এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে রেখে অন্য একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ চিনি, দুই টেবিল চামচ পানি দিয়ে ক্যারামেল করতে হবে। চুলায় মিডিয়াম আঁচে বসিয়ে নাড়াচাড়া করা যাবে না। যখন হালকা রং আসতে শুরু করবে তখন পাত্রের হাতল ধরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ক্যারামেল তৈরি করে নিতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ চিনি গলে যখন একটা সুন্দর রং আসবে চুলা বন্ধ করে অনবরত নেড়ে ক্যারামেল তৈরি করতে হবে, না হলে চুলার জ্বাল অন তাকলে ক্যারামেল পুরে তেঁতো হয়ে যাবে।
এরপর যে পাত্রে পুডিং তৈরি করতে হবে সেই পাত্রে ক্যারামেল ঢেলে ঠাণ্ডা করে সেট করে নিতে হবে। এরপর ডিমগুলো ফেটিয়ে জ্বাল করা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে দুধ যেন গরম না থাকে। একদম ঠাণ্ডা করে ডিম মেশাতে হবে। তার সঙ্গে সামান্য ভেনিলা এসেন্স মিশিয়ে যে পাত্রে ক্যারামেল সেট করা আছে, সেই পাত্রের ওপর চালনি বসিয়ে দুধ, ডিমের মিশ্রণ ঢেলে ঢাকনা লাগিয়ে চুলায় একটি পাত্র বসিয়ে তাতে একটা কিচেন টাওয়াল দিয়ে তার ওপর পুডিংয়ের পাত্র বসিয়ে দিতে হবে যেন ভাব দেওয়ার সময় পাত্রটা নড়ে না যায়, তাহলে পুডিংয়ের ভেতর ভালো হবে না। এরপর পানি এমনভাবে দিতে হবে, যাতে পুডিংয়ের পাত্র একদম ডুবে না যায় আবার পানি যেন একদম তলায় না থাকে। ২৫-৩০ মিনিট জ্বাল করে নরমাল টেম্পারেচারে ঠাণ্ডা করে ২-৩ ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা করে মোল্ড আউট করে নিতে হবে। তৈরি হয়ে যাবে দারুণ স্বাদের পারফেক্ট ক্যারামেল পুডিং।
(গরম পুডিং কখনোই মোল্ড আউট করতে নেই। ভালো করে ঠাণ্ডা করে তারপর মোল্ড আউট করতে হবে।)
রাজধানীতে সম্প্রতি উদযাপিত হলো ফ্যাশন হাউজ 'ভিভা ক্রিয়শন্স' এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর গুলশান এভিনিউতে অবস্থিত ফ্যাশন হাউজটির নিজস্ব কার্যালয়ে এর দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এমপি। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী, ভোলা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আলী আজম। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) কামরুল আহসান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য অলিলা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভিভা ক্রিয়শন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান এবং অলিলা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ভিভা ক্রিয়শন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসিনা নাহিদ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ভিভা ক্রিয়েশন্সের বৈচিত্র্যময়, লাক্সারী ও রুচিশীল সংগ্রহ দেখে আমি মুগ্ধ। বর্তমানে রুচি ও মননে বাংলাদেশের মানুষের পোশাক ও সাজসজ্জা চোখে পড়ার মতো। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি খুব অল্প সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে দেখে ভালো লাগছে। প্রতিষ্ঠানটির আরও সমৃদ্ধি কামনা করছি।'
অলিলা গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও ভিভা ক্রিয়েশন্সের ডিরেক্টর জিল্লুর রহমান এমপি সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গ্রাহকদের মুগ্ধতা এবং প্রশংসায় আমরা অনুপ্রাণিত। সাশ্রয়ী মূল্যে একই ছাদের নিচে ভারতীয় উপমহাদেশের ৩০০ ডিজাইনারের কালেকশন ক্রেতাদের হাতের নাগালে এনেছে ভিভা ক্রিয়শন্স। আগামী দিনে আমাদের কালেকশন আরও সমৃদ্ধ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।'
ভারতীয় উপমহাদেশের অত্যাধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী বিয়ের সব কালেকশন নিয়ে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে শপিংমল ভিভা ক্রিয়েশন্স।
দরজায় কড়া নাড়ছে আসন্ন ঈদুল উল ফিতর। এরই মধ্যে ওয়েস্টার্ন-ফিউশন ঘরানার দেশীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের ঈদ আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আজকে রইল তেমনই তিনটি ব্র্যান্ডের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।
ঈদে ফ্যাশনে ‘ট্রেন্ডজ’
সময় উপযোগী সব ফ্যাশনেবল কালেকশন নিয়ে কাজ করে থাকে দেশের অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড ‘ট্রেন্ডজ’। তারুণ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এবারের রমজানের ঈদেও ‘ট্রেন্ডজ’ চলতি আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে ডিজাইনগুলো করেছে তাদের এবারের ঈদ কালেকশনে। নারী ও পুরুষের জন্য তৈরি করা এসব পোশাকের রং আর ডিজাইনের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া হয়েছে চলতি সময়টাকে।
এবারের ঈদে ফ্যাশন সচেতন ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, ফরমাল শার্ট, ক্যাজুয়াল শার্ট, টি-শার্ট, পলো শার্ট, টুইল ও ডেনিম প্যান্ট। আর অন্যদিকে নারীদের জন্য রয়েছে আকর্ষণীয় ফিউশন লেডিস টপস, ফতুয়া, লেডিস শার্ট, টি-শার্ট এবং ফরমাল ও ডেনিম প্যান্ট। ছেলেদের ফরমাল শার্ট ও প্যান্টগুলো করা হয়েছে করপোরেট অফিস এবং বিভিন্ন পার্টিতে যাওয়ার উপযোগী করে। আর ক্যাজুয়াল পোশাকগুলো করা হয়েছে ফ্যাশন ও স্টাইলের বিষয়টিকে মাথায় রেখেই। একই সঙ্গে টি-শার্টগুলোতে রাখা হয়েছে আধুনিক প্রিন্ট, টুইল এবং ডেনিম প্যান্টগুলোতে রয়েছে আকর্ষণীয় ফিট ও ওয়াশ শেড।
‘ট্রেন্ডজ’-এ এবার ঈদে পাওয়া যাবে ছেলেদের বাহারি রঙের এক্সক্লুসিভ ডিজাইনের পাঞ্জাবি। সময় উপযোগী এসব পাঞ্জাবির ডিজাইন বর্তমানের ট্রেন্ডটাকে মাথায় রেখেই করা হয়েছে। পাঞ্জাবি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে উন্নতমানের হ্যান্ডলুম সিল্ক, কটন সিল্কসহ কটন কাপড়। সব মিলিয়ে অন্যবারের চাইতে এবারের ঈদে ‘ট্রেন্ডজ’-এর পোশাকগুলো অনেকটা আলাদা হয়েছে বলা যায়। ফিট, ডিজাইন, কাপড়ের ধরন- সব ক্ষেত্রেই রয়েছে নতুনত্বের ছোঁয়া।
অন্যদিকে নারীদের পোশাকগুলোর ক্ষেত্রে রঙের দিকটি খুব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়েছে। বর্তমান আবহাওয়ার সঙ্গে মিল রেখেই এসব পোশাকের রং নির্বাচন করা হয়েছে। সাদা, লাল, মেরুন, কালো, গোলাপিসহ বিভিন্ন রঙের পোশাক রয়েছে এবারের আয়োজনে। সব পোশাকে রয়েছে হাতের কারচুপি, মেশিন এমব্রয়ডারির কাজসহ ভিন্নধর্মী কিছু কারুকাজের উপস্থিতি।
‘ট্রেন্ডজ’-এর সব ঈদ কালেকশন পাওয়া যাবে বসুন্ধরা সিটি ও উত্তরা-১-এর শোরুমগুলোয়।
‘সারা’র বর্ণিল আয়োজন
বরাবরের মতোই প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে বাহারি ডিজাইনের পোশাকের আয়োজন থাকে দেশের অন্যতম ফ্যাশন লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা’তে। ‘উৎসবের আলিঙ্গন’ থিমে ‘সারা লাইফস্টাইল’-এর এবারের ঈদুল ফিতর কালেকশন পাওয়া যাবে ‘সারা’-এর ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের সব আউটলেট এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।
‘সারা’র এবারের ঈদ আয়োজনের পোশাকের ডিজাইনে স্ক্রিন প্রিন্ট, সাবলিমেশন প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারি, অল ওভার প্রিন্ট থাকছে। পোশাকের মোটিফ ও নকশায় রাখা হয়েছে উৎসবের আমেজ। এ ছাড়া এবস্ট্র্যাক্ট, ফ্লোরাল, ট্র্যাডিশনাল ও জিওমেট্রিক বিভিন্ন মোটিফ রয়েছে এসব পোশাকের ডিজাইনে। আনারকলি, প্রিন্সেস লাইন, ডাবল লেয়ার, এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এসব পোশাকে ফ্যাব্রিক হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে জর্জেট, কটন, ভিসকস, ডবি সিল্ক, ক্রেপ জর্জেট, নিট, ডেনিম, জ্যাকার্ড কটন ইত্যাদি।
ঈদুল ফিতরের এবারের আয়োজনে মেয়েদের জন্য ‘সারা লাইফস্টাইল’ এনেছে শাড়ি, থ্রি পিস, ফ্যাশন টপস, আনারকলি থ্রি পিস, কুর্তি, কো অর্ডস, ডেনিম প্যান্ট, শ্রাগ, ওয়ান পিস, টু পিস, স্কার্ফ, সারারা, কাফতান, টি-শার্ট। ‘সারা’র এবারের আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, কোটি, পায়জামা ইত্যাদি।
‘সারা’র ঈদ আয়োজনে গুণগত মান ও ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আকার, ডিজাইন ও প্যাটার্নের ভিন্নতার দিক বিবেচনা করে এসব পোশাকের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ক্রেতারা এসব পোশাক পেয়ে যাবেন ২৫০ টাকা থেকে ৯,৯৯০ টাকার মধ্যে। পাশাপাশি এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি ও শাড়ি থাকছে এবারের ‘সারা’র ঈদের কালেকশনের অন্যতম আকর্ষণ।
মেয়ে শিশুদের জন্য থাকছে টি-শার্ট, পার্টি ফ্রক, কটন ফ্রক, থ্রি পিস, ফ্যাশন টপস, টু পিস, লেহেঙ্গা। এ ছাড়া ছেলে শিশুদের জন্য থাকছে সিঙ্গেল শার্ট, ফ্যাশনেবল শার্ট-প্যান্ট সেট, পাঞ্জাবি, পায়জামা, ডেনিম প্যান্ট, নিট প্যান্ট, টি-শার্ট, ইনফ্যান্ট সেট, নিউ বর্ন সেট, ইনফ্যান্ট পাঞ্জাবি সেট, পলো শার্ট ইত্যাদি।
এ ছাড়া ‘সারা’র এবার ঈদের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে থাকছে ফুল ফ্যামিলি একই ডিজাইনের পোশাকের সংগ্রহ (বাবা-ছেলে-মা-মেয়ে)। তা ছাড়া কাপলদের জন্য থাকছে একই ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাকের আয়োজন।
তাভাস এন্ড ডিমান্ড
‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ লাইফস্টাইলও এবার ঈদের সংগ্রহে নিয়ে এসেছে সব বয়সীদের জন্য আকর্ষণীয় ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাকের আয়োজন।
এই ফ্যাশন হাউস দুটির ঈদ কালেকশনের এবারের থিম সমুদ্র এবং রোদ্রোজ্জ্বল আবহ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়া। স্ক্রিন প্রিন্ট, ডিজিটাল প্রিন্ট, কারচুপি, এমব্রয়ডারির কাজ, জিওমেট্রিক, ট্র্যাডিশনাল, ফ্লোরাল এমন অনেক কিছুই থাকছে পোশাকের মোটিফ হিসেবে। এ লাইন, সিমেট্রিক, এসিমেট্রিক নিয়ে বিভিন্ন কাজ থাকছে পোশাকগুলোর প্যাটার্নে। এ ছাড়া কালারের ক্ষেত্রে ভাইব্রেন্ট রাখা হয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে।
মেয়েদের জন্য ‘তাভাস’ এনেছে সিঙ্গেল পিস কামিজ, লন থ্রি পিস, আকর্ষণীয় পার্টি থ্রি পিস, এথনিক কুর্তি, ফ্যাশন টপস, কাফতান ইত্যাদি।
‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ এবারের আয়োজনে ছেলেদের জন্য থাকছে পাঞ্জাবি, কাবলি সেট, সিঙ্গেল পিস কাবলি, ক্যাজুয়াল শার্ট, ফরমাল শার্ট, টি-শার্ট, পোলো শার্ট, ফতুয়া, কাতুয়া, ডেনিম প্যান্ট, চিনো প্যান্ট, কার্গো প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি। প্রকৃতি ও ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুতিসহ আরামদায়ক কাপড়ে তৈরি এসব পোশাকের কাটিং ও প্যাটার্নে রয়েছে বৈচিত্র্য। এসব পোশাকে ব্যবহার করা হয়েছে কটন, ভিসকস, শার্টিন, নেট, ডেনিম ও টুইল ফ্যাব্রিক্স, জ্যাকার্ড কটন, ডবি কটন, জর্জেট, সিল্ক ইত্যাদি। এ ছাড়া এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি রয়েছে ঈদ কালেকশনের মূল আকর্ষণ হিসেবে।
শুধু বড়দের জন্য নয় ‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ ঈদ আয়োজনে রয়েছে ছেলে শিশুদের শর্ট স্লিভ, ফুল স্লিভ শার্ট, ফতুয়া, লং প্যান্ট, কোয়ার্টার প্যান্টসহ ভাইব্রেন্ট কালারের পাঞ্জাবি। এর বাইরেও রয়েছে কাতুয়া, লং ও শর্ট স্লিভ শার্ট, পলো টি-শার্ট, ফ্যাশনেবল শার্ট-প্যান্ট সেট, বয়েজ কার্গো ইত্যাদি। থাকছে বাবা-ছেলের পাঞ্জাবি ও কাবলির মিনিমি।
‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’ এবার ঈদের বিশেষ আয়োজনের মধ্যে থাকছে ফুল ফ্যামিলি (বাবা-ছেলে-মা-মেয়ে) একই ডিজাইনের পোশাকের সংগ্রহ।
সারা বাংলাদেশে ‘তাভাস এন্ড ডিমান্ড’-এর আউটলেটে পেয়ে যাবেন সব ঈদ কালেকশন।
ঈদ মানেই আনন্দ। আর এই আনন্দের বেশ বড় একটা অংশ জুড়েই থাকে বাহারি নকশার নতুন পোশাক। আর তাই দেশীয় ফ্যাশন হাউসগুলো ঈদকে কেন্দ্র করে ক্রেতাদের পছন্দের কথা বিবেচনায় রেখে আয়োজন করে থাকে নানা ডিজাইনের পোশাক ও আনুষঙ্গিক পণ্যের। সাতকাহনের ঈদ আয়োজনের প্রথম পর্বে রইল দেশীয় অন্যতম তিন শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন হাউসের ঈদ আয়োজনের খোঁজখবর।
অঞ্জন’স
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই উৎসব। আমাদের সবচেয়ে বড় উৎসবের এই দিনটিকে আরও বেশি উৎসবমুখর ও আনন্দময় করতে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ফ্যাশন হাউস অঞ্জন’স নিয়ে এসেছে এক্সক্লুসিভ ঈদ কালেকশন-২০২৪। সব বয়সীদের জন্য এই আয়োজন সাজানো হয়েছে ট্রেন্ডি, স্টাইলিশ ও বৈচিত্র্যময় ডিজাইনের পোশাক দিয়ে।
এবারের ঈদ কালেকশনে মেয়েদের জন্য রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ওড়না, টপস ও বিভিন্ন ধরনের জুয়েলারি, ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, ফতুয়া, টি-শার্ট ও কটি। শিশু-কিশোরদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি-পাজামা, শার্ট, সালোয়ার-কামিজ ও ফ্রক। এবারের ঈদ বসন্তের শেষ এবং গ্রীষ্মের শুরুতে; পোশাক ডিজাইন, রং নির্বাচন ও ফ্যাব্রিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে।
শাড়ি : রাজশাহী বলাকা সিল্ক, মসলিন, হাফসিল্ক, কটন সিল্ক, লিনেন কটন, টাঙ্গাইল কটন ও ভয়েল কাপড়ের শাড়িগুলোতে ব্লকপ্রিন্ট, স্ক্রিনপ্রিন্ট ও এম্ব্রয়ডারি করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এক্সক্লুসিভ শাড়িগুলোতে অলওভার এম্ব্রয়ডারি ও কারচুপি করা হয়েছে।
সালোয়ার-কামিজ, ওড়না: কটন, লিনেন কটন, জ্যাকার্ড কটন, রেয়ন কটন, সফট সিল্ক, ডুপিয়ান-সহ বিভিন্ন কাপড়ে মেয়েদের সালোয়ার-কামিজ, সিঙ্গেল কামিজ ও শট, লং ও মিডিয়াম লেন্থের টপস করা হয়েছে। কামিজ ও টপসগুলোতে সমসাময়িক ট্রেন্ড ও প্যাটার্ন বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। স্ক্রিন প্রিন্ট, এম্ব্রয়ডারি ও ডিজিটাল প্রিন্টের আনস্টিচ সালোয়ার-কামিজ পাওয়া যাবে এবারের ঈদ আয়োজনে।
পাঞ্জাবি: সাদা, লাল, মেরুন, কালো, নীল, সবুজ, বাদামিসহ বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি রয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে। কটন, জ্যাকার্ড কটন, এন্ডি কটন, রেয়ন কটন, ভয়েল-সহ বিভিন্ন কাপড়ের পাঞ্জাবিগুলোয় এমব্রয়ডারি, কারচুপি, ডিজিটাল প্রিন্ট ও স্ক্রিন প্রিন্ট করা হয়েছে। কলিদার কাট, রেগুলার ফিট ও স্লিম ফিট পাঞ্জাবি দিয়ে সাজানো হয়েছে ছেলেদের ঈদ কালেকশন। পাঞ্জাবি ছাড়াও কাতান, জ্যাকার্ড ডিজাইন ও ভারী কটন কাপড়ের কটি ও কটন কাপড়ে ফুল স্লিভ ও হাফ স্লিভ শার্ট ও ফতুয়া রয়েছে ঈদ কালেকশনে।
জুয়েলারি: সিলভার ও বেইজ মেটাল ব্যবহার করে পাথর এবং অন্যান্য বিডসের সমন্বয়ে নিজস্ব ডিজাইনে আধুনিক ও ঐতিহ্যমণ্ডিত নকশায় নেকলেস, চোকার, আংটি, কানের দুল, নাকফুল, চুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের গয়না রয়েছে এবারের ঈদ কালেকশনে।
প্রতিবারের মতো এবারের ঈদ কালেকশনেও একই পরিবারের জন্য রয়েছে একই রঙের একই ডিজাইনে গ্রুপ পোশাক। অঞ্জন’সের সব আউটলেট ও অনলাইন স্টোরে ঈদ কালেকশনগুলো পাওয়া যাচ্ছে।
কে ক্র্যাফট
ঈদ আয়োজনের পোশাক নিয়ে হাজির হয়েছে কে ক্র্যাফট। ঈদের সকাল, বিকেল এবং সন্ধ্যায় কাঙ্ক্ষিত পোশাক নির্বাচনে ক্যাজুয়াল কিংবা এক্সক্লুসিভ সবই মিলবে এবার। এবং অবশ্যই হবে আবহাওয়া, পরিবেশ উপযোগী ও স্বাচ্ছন্দ্যময়।
বিভিন্ন মোটিফের বিচিত্র ব্যবহার তুলে ধরা হয়েছে পোশাকে। ফ্লোরাল, জিওমেট্রিক, মুঘল, কাশ্মীরি, ইউক্রেনিয়ান, বেলারুশ ও ইজিপ্সিয়ানের বিভিন্ন মোটিফ অনুপ্রেরণায় এবারের সিরিজ পোশাক। এ ছাড়া ট্র্যাডিশনাল, ট্রাইবাল, ফোক, জামদানি, ওরিয়েন্টাল, আলাম, মিক্সড-সহ নানা মোটিফ ফুটিয়ে তুলতে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, কারচুপি, স্ক্রিন ও ব্লক প্রিন্ট, সিকুইন ওয়ার্ক, ডিজিটাল প্রিন্ট এবং টাই-ডাই মিডিয়ার ব্যবহার হয়েছে।
কাট, প্যাটার্ন ও নকশার সমন্বয়ে করা পোশাকের জন্য ফ্যাব্রিক নির্বাচন করা হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ ও স্বস্তিতে থাকাকে প্রাধান্য দিয়ে। বৈচিত্র্যময় রং নির্বাচন করে থাকছে- কটন, জ্যাকার্ড কটন, জর্জেট, লিনেন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, দুবাই সিল্ক, অরগানজা, ডুপিয়ন সিল্ক, মমো সিল্ক, সুইস কটন, ভিসকজ, নীব কটন, এলেক্স, টু-টোন, সাটিন ফ্যাব্রিক।
মেয়েদের জন্য ট্র্যাডিশনাল, ক্ল্যাসিক, এথনিক, রেট্রো, ফিউশন, ইয়ক বেইজড, লং প্যাটার্ন-সহ বিভিন্ন প্যাটার্নের পোশাক সারিতে থাকছে- সালোয়ার-কামিজ, ডাবল লেয়ার্ড সালোয়ার কামিজ, লং-কুর্তি, রেগুলার কুর্তি, টপস্, ডাবল লেয়ার্ড কুর্তি, টিউনিক, কাফতান, প্যান্টসহ টপস-স্কার্ট, টপস-পালাজো সেট ও বিভিন্ন প্যাটার্নের প্যান্ট ।
এ ছাড়া ঈদকে সামনে রেখে কটন, সিল্ক, হাফ সিল্ক, মসলিন, খাদি মসলিন শাড়ির বৈচিত্র্যপূর্ণ ডিজাইনের একটি বড় আয়োজন থাকছে।
ছেলেদের জন্য রয়েছে পছন্দের ব্র্যান্ড কে ক্র্যাফটের রেগুলার ও ফিটেড পাঞ্জাবি। এ ছাড়া রয়েছে কাট বেইজড একরঙা পাঞ্জাবিও। এ ছাড়া পাওয়া যাবে রেগুলার ও স্লিম ফিট ক্যাজুয়াল শার্ট, এথনিক শার্ট, শেরওয়ানি, কটি, ফতুয়া, পলো শার্ট ও টি-শার্ট।
মেয়ে শিশুদের জন্য উৎসব ভিত্তিক পোশাকে থাকছে সালোওয়ার-কামিজ, ফ্রক, কুর্তি, টপস, কাফতান, লেহেঙ্গা সেট, টপস সেট, স্কার্ট, পার্টি ফ্রক, টপস-কটি সেট, পালাজো। ছোট ছেলেদের পোশাক আয়োজনে নানা রঙের পাঞ্জাবি, হাফহাতা কাট-এর শার্ট এবং ফতুয়া। শিশুদের পোশাকে প্যাটার্ন, ফ্যাব্রিক এবং রঙের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্যাটার্নে ভিন্নতা এবং রঙে উৎসবের আমেজ বহন করবে।
এ ছাড়া ছোট মেয়েরা, বোন অথবা মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে পরার জন্য সালোওয়ার-কামিজ, কুর্তি এবং বাবা ও ছেলের জন্য পাঞ্জাবি, শার্ট ও ফতুয়া থাকবে বরাবরের মতো। এবারে যুগলদের জন্য থাকবে বিশেষ আয়োজন।
কে ক্র্যাফটের ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, কুমিল্লার সব শো-রুম ছাড়াও অনলাইন শপে ঈদ আয়োজনের পোশাক পাওয়া যাবে।
রঙ বাংলাদেশ
বছরের সবচেয়ে বড় উৎসব রমজানের ঈদ। রোজা শুরুর আগে থেকেই আরম্ভ হয়ে গেছে উদযাপনের প্রস্তুতি। ঈদের আনন্দকে আরও বেশি উৎসবমুখর ও রঙিন করে তুলতে দেশের শীর্ষ সারির অন্যতম ফ্যাশন ব্র্যান্ড রঙ বাংলাদেশ প্রস্তুতি নিয়েছে ব্যাপক।
প্রতিবারের মতো এবারও থিমনির্ভর কালেকশন তৈরি করেছে রঙ বাংলাদেশ। এ বছরের মূল থিম ক্লাসিক্যাল ফোর এলিমেন্টস। আগুন, পানি, মাটি ও বাতাস গ্রিক মিথোলজি মতে এই চার উপাদানে গঠিত হয়েছে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। মাটি, আগুন, পানি ও বাতাসের নানান রূপ-বৈচিত্র্যের চমৎকার বিন্যাস ঘটানো হয়েছে এই আয়োজনের রঙ ও নকশায়। এ ছাড়া পাখির রং, আলপনা ও জিওমেট্রিক থিমের সামগ্রী তৈরি করা হয়েছে এবারের ঈদে।
এবারের ঈদ কালেকশন তৈরি করা হয়েছে আরামদায়ক কাপড়ে। বিভিন্ন ধরনের কটন, স্লাব কটন, জ্যাকার্ড কটন, লিনেন, হাফসিল্ক, জর্জেট, ভিসকস ও বারফি কাপড় দিয়ে পোশাকগুলো করা হয়েছে। মূল রং হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে মেরুন, নীল, ফিরোজা, আকাশী, ব্রাউন, লাল, লাইট অরেঞ্জ, কফি ও ডিপ সবুজ।
পোশাকের নকশাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে নানা ভ্যালু অ্যাডেড মিডিয়ার ব্যবহারে। নানান আধুনিক ও ঐতিহ্যগত প্যাটার্নের কাট এন্ড সুইং ছাড়াও রয়েছে স্ক্রিন প্রিন্ট, ব্লক প্রিন্ট, হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি ও কারচুপি কাজের ব্যবহার।
শুধু বড়দের নয়- ঈদে ছোটদের পোশাককে সমান গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাচ্চাদের আকর্ষণীয় পোশাক। রয়েছে পরিবারের সবার জন্য একই ধরনের ম্যাচিং পোশাক। ফলে বাবা-মা, মা-মেয়ে, বাবা-ছেলে এমনকি পরিবারের সবাই একই ডিজাইন বা থিমের পোশাক পরে উদযাপন করতে পারবে এবারের ঈদ উৎসব। এ ছাড়া আমাদের সাব ব্র্যান্ড হিসেবে থাকছে: তরুণ প্রজন্মের পছন্দকে মাথায় রেখে তৈরি করা ওয়েস্ট রঙের পোশাক, বয়োজ্যেষ্ঠদের আপন ভুবন শ্রদ্ধাঞ্জলি আর শিশুতোষ ফ্যাশনের আনন্দময় জগৎ রঙ জুনিয়রের ঈদ আয়োজন।
রঙ বাংলাদেশ-এর এবারের সংগ্রহে আছে:
মেয়েদের পোশাক: শাড়ি, থ্রি পিস, সিঙ্গেল কামিজ, কুর্তি, টিউনিক, টপস, ওড়না, রেডি ব্লাউজ, ব্লাউজপিস, আনস্টিচড থ্রি পিস, গাউন ইত্যাদি।
ছেলেদের পোশাক: পাঞ্জাবি, পায়জামা, কাতুয়া, কাবলি সেট, শার্ট, টি-শার্ট, পোলো টি-শার্ট, টুপি, উত্তরীয়, ইত্যাদি। ছোটদের পোশাক: থ্রি পিস, সিঙ্গেল কামিজ, ফ্রক, স্কার্ট টপস, পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট। আছে টিনএজারদের উপযোগী টপস। এ ছাড়া আরও রয়েছে জুয়েলারি, মেয়েদের ব্যাগ, পার্স, লেডিস জুতা, মানিব্যাগ, বেড কাভার, পিলো কাভার, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, শো-পিস, জুট আইটেম। উপহার সামগ্রী হিসেবে রয়েছে নানা ডিজাইনের ব্যাগ ও মগ।
রঙ বাংলাদেশ-এর ঢাকা ও ঢাকার বাইরের সব আউটলেটেই পাওয়া যাবে এই ঈদ আয়োজনের সামগ্রী। এ ছাড়া ঈদ আয়োজনের সব পণ্যই পাবেন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।
ঋতুরাজ বসন্তকে বরণে প্রস্তুত হচ্ছে প্রকৃতি। বসন্ত রাজাকে বরণ করতে প্রকৃতিতে যেমন লাগছে রঙের ছোঁয়া ঠিক তেমনি বসন্ত বরণে কী পরবেন, কেমন সাজবেন… এমন পরিকল্পনাও ঘুরছে অনেকের মনে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কেমন হতে পারে পয়লা ফাল্গুনের সাজসজ্জা।
শাড়িতে ফাল্গুনি সাজ
বাঙালি ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দিয়ে আটপ্রৌড়ে করে বাসন্তী রঙা সুতি, তাঁতের টাটকা শাড়িতে নিজেকে জড়াতে পারেন বসন্ত বরণে। তবে প্রকৃতির রং বদলে শামিল হতে সবুজের বিভিন্ন শেড যেমন- কচি পাতা সবুজ, গাঢ় সবুজ ইত্যাদি রং বেছে নিতে পারেন। আবার হলুদ-কমলা গাঁদা ফুলের মতো প্রস্ফুটিত হতে পারেন। এদিকে পরের দিনটাতেই কিন্তু ভালোবাসা দিবস। সেদিন বেছে নিতে পারেন লাল রং বা প্রিয়জনের পছন্দের রঙের পোশাক।
শাড়ির সঙ্গে চাই হাতভর্তি রিনিঝিনি রেশমি কাঁচের চুড়ি। গলায় ফুলের মালা না পরতে চাইলে আজকাল বাজারে কাঠ, পুঁতি, মাটি, মেটাল, পাথর বিভিন্ন ধরনের কারুকার্যময় কানের ও গলার সেট পাওয়া যায়। পায়ে চাইলে পরে নিতে পারেন চিকন কাজের নূপুর।
ফাল্গুনের সাজসজ্জার পাশাপাশি খেয়াল রাখতে হবে আরও একটি জরুরি বিষয়ে। আর তা হলো সারা দিনের হাঁটাহাঁটির কথা মাথায় রেখে হিল না পরে ফ্ল্যাট জুতা পরাই হবে বুদ্ধিমতির কাজ।
ফাল্গুনে মেকআপ
বসন্তের শুরুর দিনটাতে মেকআপটা খুব ভারী করা ঠিক নয়। মেকআপ নেওয়ার আগে অবশ্যই মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে সানস্ক্রিন লাগিয়ে ১০ মিনিট অপেক্ষা করবেন। এরপর মুখে লাগাবেন ম্যাট ফাউন্ডেশন। তারপর খানিকটা ফেস পাউডার লাগাবেন হালকাভাবে। আর সব সময় মনে রাখবেন পোশাকের রং অনুযায়ী হবে মেকআপের রং।
চোখে গাঢ় করে কাজলের রেখা টেনে দিয়ে ঠোঁট রাঙাতে পারেন লাল লিপস্টিকে। কাজল, আইলাইনার, আইশ্যাডো, গ্লিটার- যেটাই ব্যবহার করুন না কেন, সব যেন হয় একই রঙের। এরপর কপালে টিপ আর হাতে পরুন কাচের চুড়ি। আর বসন্তের সাজে ফুলের কোনো না কোনো অনুষঙ্গ তো রাখতেই হবে। হোক তা চুলে, হাতে কিংবা ভিন্ন কোনো গয়না হিসেবে।
ফাগুন দিনে চুলের সাজে নানা রঙের তাজা ফুলের ব্যবহার নারীকে করে তোলে অনন্যা। খোঁপা বা বেণি করে চুলে গাদা ফুলের মালা পেঁচিয়ে নিতে পারেন। কেউ যদি চুল ছেড়ে রাখতে চান তাহলে একপাশে গুঁজে নিতে পারেন গোলাপ বা জারবেরা ফুল। যখন বড় ফুল পরবেন, তখন গলা ও কানের গয়নাটা খানিকটা হালকা বেছে নেবেন। মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলা ফুলগুলোও বেছে নিতে পারেন গাঁদা, গোলাপের বিকল্প হিসেবে।
জীবনের বিশেষ মুহূর্ত বিয়ে। আর এর মূল আকর্ষণ কনের সাজ। কনের সাজে বা ব্রাইডাল সাজে ভিন্নমাত্রা যোগ করে বিয়ে উৎসবকে দেওয়া যায় অনন্যতা। এখন চলছে বিয়ে মৌসুম। ট্রেন্ডি, ফিউশন ও ট্রাডিশনসহ বিভিন্ন সাজ নিয়ে ইদানীং তাই যথেষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। সাতকাহনের আজকের মূল প্রতিবেদনে রইলো বর্তমান সময়ের বর-কনের সাজের নানা আয়োজনের খোঁজ।
মনের মতো বিয়ের পোশাক
বিয়ের পোশাকের দিকেও রাখতে হবে আলাদা নজর। কোন রঙের পোশাকে কনেকে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় এবং উজ্জ্বল দেখাবে বিষয়টি মাথায় রেখে তা নির্বাচন করতে হবে। প্রথাগত লাল বেনারসি শাড়িতেই যেসব কনেকে অপরূপ লাগবে এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। বেনারসি-কাতানের পাশাপাশি নানা রঙের জামদানি, অরগানজা, সিল্ক ও মসলিনে ঝুঁকছেন কনেরা। এসব কাপড় দিয়ে তৈরি করা লেহেঙ্গা আর গাউনের আবেদনও রয়েছে ব্যাপক।
বর্তমান সময়ে রঙের ক্ষেত্রে এসেছে বেশ পরিবর্তন। কনেরা প্রাধান্য দিচ্ছেন সাদা, মিন্ট, হালকা গোলাপি, আইভরি, মিন্ট, ল্যাভেন্ডার ও গোল্ডেন রঙের মতো হালকা রংগুলোকে। তবে বিয়ের শাড়ি বা এর অনুষঙ্গ উজ্জ্বল রঙের হওয়া ভালো।
গয়নায় বৈচিত্র্য
বিয়ের সাজ মানেই জমকালো পোশাক-গহনা হতে হবে, এ ধারণা থেকে বেরিয়ে ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মেলবন্ধনে নিজেদের সাজিয়ে তুলছেন এখনকার কনেরা। একটা সময় পর্যন্ত ভাবাই যেত না বিয়ের দিনে বউয়ের গায়ে সোনা ছাড়া ইমিটেশনের গহনা উঠবে। এখন কিন্তু বিয়েতে প্রাধান্য পাচ্ছে সোনার বাইরেও সোনার প্রলেপ দেওয়া বা ভিন্ন ভিন্ন ধাতুর তৈরি ঐতিহ্যবাহী নকশার গহনা। কাটা কাজের নকশা, গলাজুড়ে ভরাট নকশা, মিসরীয় সভ্যতার গহনার নকশা এখন শোভা পায় আধুনিক কনের গহনায়।
আরেকটি বিষয় পোশাকের সঙ্গে মানানসই গহনা, ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি এক্সেসরিজও থাকা চাই। বিয়ের জুতা মানেই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ঝাঁ চকচকে জুতা- এমন ধারণা এখন অনেকটাই ফিকে। বরং একটু আরামদায়ক জুতাই এখন পছন্দ বেশিরভাগ কনের।
কনের ব্যাগের দিকেও কিন্তু নজর থাকে সবার! আর তাই ব্যাগ কেনার সময় বিয়ের পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে কেনাই ভালো। পোটলি, বটুয়া বা বক্স ক্লাচ এখন ট্রেন্ডি ব্রাইডাল ব্যাগ। এর বাইরে অনেক কনের পছন্দের তালিকায় থাকে কাজ করা ছোট পার্সও।
বিয়ের সাজে নিজস্বতা
একেবারেই ন্যাচারাল লুক মনে হয় এমন সাজ-ইদানীং ব্রাইডাল সাজের ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। তাই বিউটিশিয়ানকে বলতে হবে, ন্যাচারাল মনে হয়; এমন সাজে সাজিয়ে দিতে। এখনকার কনেরা আগের সময়ের মতো ভারী মেকআপ একদমই পছন্দ করছেন না। নিজেকে মেকআপ দিয়ে পরিবর্তন না করে বরং নিজস্বতাকে ফুটিয়ে তোলাই যেন এখনকার মেকআপ ট্রেন্ড। ন্যুড মেকআপের চলের পাশাপাশি লাটে মেকআপ, গ্লোয়ি-ডিউই মেকআপই বেছে নিচ্ছেন এখনকার কনেরা।
আটপৌরে সাবলীল মেকআপকেও প্রাধান্য দিচ্ছেন অনেকেই। এমন মেকআপ করা হচ্ছে এখনকার সময়ে, যাতে করে মেকআপ অনেকটা সময় ঠিকঠাক থাকে। হালকা কিন্তু অনেক লম্বা সময় থাকে এমন স্টাইলের গ্রহণযোগ্যতাই বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিয়ের আগে ত্বকের বিশেষ যত্ন
মেকআপ যতই ভালো হোক না কেন, ত্বক ও চুল যদি সুন্দর ও উজ্জ্বল না হয় তাহলে দেখতে মোটেও সুন্দর লাগবে না। তাই বিউটি এক্সপার্টদের পরামর্শ মেনে, মাসখানেক সময় হাতে রেখেই রূপচর্চা শুরু করতে হবে। নিয়ম মেনে ভালোভাবে করতে হবে খাওয়া-দাওয়া। বিয়ের সপ্তাহখানেক আগেই ত্বকের বিশেষ যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে। হাত-পায়ের ওয়াক্সিং, ফেসিয়াল, চুলের ট্রিটমেন্ট আগেই করে ফেলা উচিত।
নয়তো বিয়ের আগে একসঙ্গে সব কাজ করতে গেলে এগুলো আপনার গোটা সাজকেই মাটি করে দিতে পারে। বিয়ের ঠিক এক বা দুদিন আগে ভ্রু প্লাক করতে হবে। বিয়ের দিন সাজার সময় ভ্রু প্লাক করতে গেলে সেখানে দ্রুত মেকআপ করার সময় ভ্রুর জায়গাটিতে যন্ত্রণা, চুলকানি, লাল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে, যা আপনার সুন্দর সাজগোজকে মাটি করে দিতে পারে।
নিয়মিত ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি ফাস্টফুড, কোল্ড ড্রিঙ্কস, ভাজাভুজি ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন। প্রচুর ফল ও সবজি খান ও মেডিটেশন করুন। বিয়ের অনুষ্ঠানের আগের রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এতে আপনার ত্বকে ব্রণ বা অন্য কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে এবং মেকআপ ত্বকে খুব সুন্দরভাবে বসবে।
চোখ থাকুক বরের সাজেও
এবার আসা যাক বরের সাজসজ্জায়। বরবেশে বিয়েতে বরের সাজও এখন কম যায় না। বরের পোশাক এখন একই ধরনের রং থেকে বেরিয়ে আরও বর্ণিল হয়েছে। লাল ছাড়াও মেরুন, নীল, সোনালি, গোলাপি, ফিরোজা, সবুজ বা কালো রঙের বরের পোশাক দেখা যায় এখন। এখনকার বরেরা আবার কনের শাড়ি কিংবা লেহেঙ্গার সঙ্গে মিল রেখে নিজের পোশাক বাছাই করেন। তা হতে পারে কনের পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে রং কিংবা কনট্রাস্ট কোনো কালার।
বর সাজতে হলে ভারী শেরওয়ানি পরতে হবে এমনও নয়। ফুল আর পাখির নকশা করা প্রিন্স কোট পরেও ভিন্ন বেশে বর সাজতে পারেন। অভিনবত্ব চাইলে যোধপুরি প্যান্টের সঙ্গে প্রিন্স কোট পরা যেতে পারে। বর সাজতে পারেন স্যুট-বুটেও। অনুষঙ্গ হিসেবে কোটপিন, টাই, বো, পকেট স্কয়ার জুতার প্রতি বিশেষ নজর থাকতে হবে। সঙ্গে এক জোড়া কাফলিংস যেন থাকে। বরের সাজটা তাতে আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। সনাতন ধর্মের বর শেরওয়ানি ছাড়াও তসর, সিল্কের ভারী কাজের পাঞ্জাবির সঙ্গে ধুতি, দোপাট্টা পরতে পারেন। মাথায় পাগড়ির বদলে পরতে পারেন শোলার টোপর।
বরের বিয়ের পাগড়ি পরার নকশা এবং রঙে এখন ব্যাপক বৈচিত্র্য এসেছে। কেনা পাগড়ির বদলে হাতে বাঁধা পাগড়িতে বিয়ের সাজে আসে ভিন্নতা। সোনালি, তামাটে, লালের মতো উজ্জ্বল রঙ কিংবা ঘিয়ে রঙের পাগড়িতে বর বেশি জমকালো হয়ে ওঠে। আর তা যদি হয় জামদানি, কাতান, মসলিন, হাফসিল্ক কাপড়ের তবে তা আরও চমৎকারভাবে ফুটে ওঠে।
এখন বাজারে প্রচুর শীতকালীন সবজি পাওয়া যাচ্ছে। এসব সবজি দিয়ে মজাদার রান্না করা যায়। আজ আপনাদের জন্য রইল শীতকালীন সবজি দিয়ে সুস্বাদু চিকেন স্ট্যুর রেসিপি। তো, আসুন রেসিপিটি জেনে নেওয়া যাক।
উপকরণ: চিকেন ১টি, আলু ৩টি, গাজর ২টি, পেঁপে ৩০০ গ্রাম, টমেটো ১টি, বরবটি ৫/৬টি, পেঁয়াজ কুচি আধা কাপ, রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, কাঁচা মরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল ২ টেবিল চামচ, চালের গুঁড়া ২ টেবিল চামচ, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, তেজপাতা ৩/৪ পিস করে, তরল দুধ আধা কাপ, ক্যাপসিকাম আধা কাপ।
রান্নার প্রণালি: চিকেন, লেবুর রস, গোলমরিচ গুঁড়া, লবণ দিয়ে মেরিনেট করুন ৩০ মিনিট। কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে এলাচ দারুচিনি লবঙ্গ তেজপাতা ফোড়ন দিন। পরে পেঁয়াজ কুচি ও রসুন কুচি দিয়ে নেড়ে সামান্য ভেজে মেরিনেট করা চিকেন ছেড়ে দিন। এরপর হলুদ গুঁড়া, আদা ও রসুন বাটা, আলু, পেঁপে, গাজর, লবণ, টমেটো, কাঁচা মরিচ কুচি, বরবটি দিয়ে পরিমাণ মতো পানি দিন।
সব সবজি সিদ্ধ হওয়া পর্যন্ত রান্না করুন। নামানোর আগে চালের গুঁড়া গুলিয়ে সেই পানি, ক্যাপসিকাম, দুধ দিয়ে নেড়ে মিশ্রণ বানিয়ে কড়াইতে মিশিয়ে দিন। পরিবেশনের সময় বিট লবণ, ছেঁকা পাউরুটি দিয়ে পরিবেশন করুন। ব্যস, এভাবেই রান্না হয়ে গেল শীতকালীন সবজি দিয়ে সুস্বাদু চিকেন স্ট্যু।
লেখক: স্বত্বাধিকারী, শৌখিন কারুশিল্প
এসে গেছে শীত। চারদিকে শীতের আমেজ ছড়িয়ে যাচ্ছে জোর কদমে। এখনো পর্যন্ত কনকনে ঠান্ডা না লাগলেও গরম পোশাক পরার মতো শীতল বাতাস লেগে যাচ্ছে শরীরে। যারা স্টাইলিশ পোশাক পরতে চান, তাদের জন্য এ সময় থেকে শুরু করে পুরো শীত জুড়েই উপযোগী সময়। চমত্কার সব স্টাইলিশ পোশাক হতে পারে আপনার এ সময়ের সঙ্গী। শুধু পোশাক নয় এসময় পোশাকের সাথে মিল রেখে বদল করতে পারেন অন্যান্য সাজসজ্জাও।
শীতকালে চাদর, জ্যাকেট, সোয়েটার বা যত ধরনের ভারী পোশাক সবই পরা যায়। সব ধরনের পোশাক পরা গেলেও মেয়েরা শীতে মেরুন অথবা কালো রঙের পোশাক পরতে পারেন। তরুণীরা এখন বেশি জ্যাকেট পছন্দ করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে ডেনিম, ফ্লানেল, কর্ড, উল, মোটা ক্যানভাসের কাপড়, প্যারাসুটের কাপড় এবং চামড়ার তৈরি জ্যাকেট। ভারী কাপড়ের লম্বা পোশাকও আরামদায়ক শীতে। ভেলভেটের কোটি জড়িয়ে নিলে শীত এবং ফ্যাশন দুইদিকই বজায় থাকবে। অন্যদিকে পার্টি কিংবা দাওয়াতে গেলে ভেলভেটের ফুলহাতা বা হাতাকাটা হলে ওপরে আড়াআড়ি কিংবা লম্বা করে নরম বা পশমি চাদর জড়িয়ে নিতে পারেন।
আঁটসাঁট জিনস থেকে শুরু করে ঢোলা জিনস, সবই চলছে মেয়েদের হাল ফ্যাশনে। ব্যাগি, স্ট্রেট কাট, বুটকাট লেগ, ফ্লেয়ার জিনস হাল ফ্যাশনে পছন্দ করছেন প্রায় সব বয়সী নারীরা। মোটা কাপড়ের থ্রি পিসের সঙ্গে পরতে পারেন জেগিংস। এর সঙ্গে গায়ে জড়িয়ে নেওয়া যায় পাতলা চাদর।
শীতে অফিসে ফর্মাল ভাবে বেনী, পনিটেইল বা চুল হালকা ফুলিয়ে বাধা যেতে পারে। পার্টি হলে চুল খোলা রাখতে পারেন বা হালকা ফুলিয়ে স্টাইল করতে পারেন। বিয়ের অনুষ্ঠান হলে মানানসই খোপা করতে পারেন।
শীতকালে যথাসম্ভব পা ঢাকা জুতা পরুন। এতে করে পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন এবং পায়ে ঠাণ্ডাও লাগবে না। মেয়েরা কেডস, পার্টি স্যু, অফিসে নর্মাল স্যু বা পোশাক বুঝে বুট বা উঁচু হিলের সু পরতে পারেন।
উপহার দেওয়ার আনন্দকে দ্বিগুণ করতে নতুন কনসেপ্ট নিয়ে হাজির হয়েছে অনলাইন ফ্ল্যাটফর্ম কিউরেটো। পারসোনালাইজড গিফট বক্সের মাধ্যমে কিউরেটো সাধারণ মুহূর্তগুলোকে অসাধারণ স্মৃতিতে পরিণত করবে। কিউরেটেড উপহারের শিল্পকে চমৎকারভাবে চিন্তাশীল জীবনধারার সাথে মিলিয়েছে বাংলাদেশের উদ্ভাবনী ও আধুনিক গিফটিং প্ল্যাটফর্ম কিউরেটো। শুধু অনুষ্ঠানের সময়কালের বাইরেও এই উপহারের রেশ রয়ে যাবে দীর্ঘদিন।
বিভিন্ন উৎসব কিংবা বিশেষ দিবসকে কেন্দ্র করে কিউরেটো’র পারসোনালাইজড গিফট বক্স তৈরি করে নেয়া যাবে। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, বিশেষ কোনো দিবস, বিয়ে, কর্পোরেট কোনো অনুষ্ঠানে কিউরেটোর এসব গিফট বক্স তৈরি করে নেয়া যাবে। এমনকি প্রিয়জনের বিভিন্ন পছন্দের ভিত্তিতেও তৈরি করে নেয়া যাবে এই গিফট বক্স। যেমন কেউ যদি চা পছন্দ করেন, তার জন্য বিভিন্ন ধরনের চায়ের সংগ্রহ। কফি পছন্দ করলে কফি এমনকি কেউ যদি পাস্তা পছন্দ করেন তার জন্য পাস্তা ও পাস্তার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সাজানো যাবে গিফট বক্সটি।
কিউরেটো প্ল্যাটফর্মটিতে সব সময়ের জন্য রয়েছে, পার্টির জন্য ‘হাউজ ওয়ার্মিং’ কালেকশন, ‘পিংক আওয়ার’ সেট। ভালো কফি পছন্দ করেন এমন মানুষের জন্য আছে ‘কফি কনোইজার’ ও ‘কফি লাভার’স ডিলাইট’ নামে দুটি কালেকশন। চা-প্রেমীদের জন্য আছে ‘চা অ্যান্ড টা’ ও ‘টি টাইম ব্লিস’ কালেকশন দুটি। ‘টেস্ট অফ ইতালি’ ও ‘পাস্তা নাইট’ সিলেকশন দিচ্ছে আন্তর্জাতিক স্বাদ চেখে দেখার সুযোগ। ‘চকলেট ফন্ডি ফান’ কালেকশনে পাবেন বিভিন্ন ধরনের চকোলেট। যারা হাতে-কলমে কিছু করতে চান, তাদের জন্য থাকছে ‘ডিওয়াইআই পপসিকল কিট।’
এছাড়া করপোরেট ক্ষেত্রে কাস্টমাইজড উপহার দেওয়ার সুবিধাও রয়েছে কিউরেটোতে। এতে সহকর্মীদের পছন্দ জেনে আপনার অনুভূতি কিউরেটেড উপহারের মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবেন।
যেভাবে পাবেন কিউরেটোর কাস্টমাইজড গিফট বক্স
এই গিফট বক্স তৈরি করে নিতে আপনাকে যেতে কিউরেটোর www.curato.com.bd ওয়েবসাইটে। সেখানে গিয়ে আপনার পছন্দ কিংবা দিবস অনুযায়ী কী কী দিয়ে বক্স সাজাতে চান সেগুলো সিলেক্ট করবেন। এমনকি সেখানে আগে থেকে তৈরি করা কিছু গিফট বক্সও থাকে। চাইলে সেগুলোও নিতে পারবেন।
দাম
গিফট বক্সে কী কী নিতে চান সেগুলোর দাম ওয়েবসাইট থেকেই নির্বাচন করতে পারবেন। এমনকি আপনি কত টাকা থেকে কত টাকার মধ্যে বক্স তৈরি করে নিতে চান সেটিও সেখান থেকেই নির্বাচন করতে পারবেন।
সুন্দর ও আকর্ষণীয় দেখাতে মেকআপের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে নারীদের জন্য এটা অনেক সময়ই জরুরি হয়ে যায়। বিভিন্ন উৎসব, পার্টি বা বিয়েতে নতুন করে সাজতে দেখা যায় সবাইকে। তবে সময়, বয়স এবং উৎসবের ধরন বুঝে মেকআপ সবাই করতে পারেন না। যারা অভিজ্ঞ এবং মেকআপ নিয়েই যাদের কাজ, তারাই কেবল আপনাকে সুন্দর ও সুশ্রী হিসেবে দেখাতে পারেন। এবং সেটা সম্ভব হয় অনিন্দ্য সুন্দর মেকআপের ফলে।
আর এই কাজটি অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করেন ফারজানা রহমান। যাকে সবাই চেনেন ইপশিতা নামে। তবে এক দিনে তিনি সবার প্রিয় মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে অভিজ্ঞ হয়ে ওঠেননি। দিনে দিনে তিনি রপ্ত করেছেন এবং ভরিয়েছেন মেকআপ-সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার ঝুলি।
আন্তর্জাতিকভাবে মেকআপ এবং ত্বকের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ফারজানা রহমান ইপশিতা। নারীদের সুন্দর ও আকর্ষণীয় করে তোলার পেছনে তার মেকআপের হাত রয়েছে। কারণ, অসংখ্য তারকা অভিনেত্রী ও শিল্পী তার কাছে নিয়মিত মেকআপ নিয়ে থাকেন।
ফারজানা রহমান ইপশিতার পরিচয় দেয়ার আগে তার স্বপ্ন সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। তিনি ছোটবেলা থেকেই একজন বড় মেকআপ আর্টিস্ট হতে চেয়েছিলেন এবং এটাই ছিল তার স্বপ্ন। আর এ কারণেই তিনি তার স্বপ্ন পূরণ করতে মেকআপের ওপর দেশ-বিদেশ থেকে নানা ধরনের ডিগ্রি নিয়েছেন। তবে তার আগে ২০১৫ সালে তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। তারপর যুক্তরাষ্ট্রের এলিজাবেথ গ্র্যাডি বোস্টন থেকে মেকআপ আর্টিস্ট্রিতে ডিপ্লোমা করেছেন। এরপর তিনি লন্ডন থেকে এশিয়ান ব্রাইডাল মেকআপ কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনি বিখ্যাত মেকআপ আর্টিস্ট মারিও ডেডিভানোভিকের কাছ থেকে মাস্টার ক্লাস সম্পন্ন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি এসব ট্রেনিং ও কোর্সের মাধ্যমে জেনেছি কীভাবে একজন নারীকে সব সময় সুন্দরী ও আকর্ষণীয় দেখায়। এটাই আমার কাজের ও সফলতার বড় বিষয়।’
ব্যাংকার বাবা ও রাজনীতিবিদ মায়ের সুসন্তান ইপশিতা মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি ২০১৯ সালে ইন্টারন্যাশনাল বিউটি ইন্ডাস্ট্রি (আইবিএ) থেকে সেরা আন্তর্জাতিক মেকআপ শিল্পীর পুরস্কার জিতেছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের টেলিভিশন রিপোর্টার ইউনিটি থেকে ২৭তম টিভি পুরস্কারে ২০২১ সালের সেরা মেকআপ শিল্পী হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন। এ ছাড়া দেশের মিরর ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে সেরা মেকআপ বিশেষজ্ঞের পুরস্কার জিতেছেন।
নতুন মেকাপ আর্টিস্ট তৈরিতে ইপশিতা প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তার প্রয়োজন হলে আমি তাদের সাহায্য করি। আমি সবাইকে অনুপ্রাণিত করি। নতুনদের নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করি। আমি মেকআপ এবং ত্বকের ওপর প্রফেশনাল ওয়ার্কশপের আয়োজন করি এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেই।’
তিনি সবশেষ স্বপ্ন সম্পর্কে বলেন, ‘এখন আমার লক্ষ্য হলো মেকওভারের ওপর একটি স্কুল খোলা। যেখানে আমরা আন্তর্জাতিক একাডেমির মতো প্রশিক্ষণ দিতে পারব। যাতে করে মেয়েরা স্বাবলম্বী হিসেবে সমাজে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেন।’
পছন্দের কলেজে মনোনীত হওয়ার পর তোমরা হয়তো সবাই উদগ্রীব হয়ে বসে আছ কবে ক্লাস শুরু হবে, কবে যাবে তোমাদের কাঙ্ক্ষিত ক্যাম্পাসে। পুরোদমে ক্লাস শুরু হতে বেশ কিছু দিন লাগতে পারে। তার আগে নিজেকে আরো গুছিয়ে নেওয়া জরুরি। নতুন পরিবেশে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়তে হয় সেজন্য আগেভাগে সব জেনে নাও।
ভর্তি প্রক্রিয়া
ভর্তির কার্যক্রম যথাযথভাবে সেরে ফেল। কলেজে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যা যা দরকার সব জোগাড় করে রাখো। এখন প্রতিটি কলেজেরই অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থাকে। তাই নিজের কলেজের ফেসবুক পেইজ খুঁজে বের করে অবশ্যই ফলো করবে। কলেজের যাবতীয় নোটিশ বা ভর্তিসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওখান থেকেই জানতে পারবে।
বই কেনা
বই কেনা শুরু করে দাও। বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি। এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ই দুটি করে পত্র। আপাতত প্রথম পত্রটাই কিনে রাখো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কোন প্রকাশনীর বই কিনবে তা স্যার কিংবা সিনিয়র কারো সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারো। তাছাড়া অনেক কলেজ থেকেই নির্দিষ্ট একটা বুকলিস্ট দেওয়া হয়। তোমাদের কলেজে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কিনা তা আগে থেকে জেনে নিয়ো।
প্রাইভেট-কোচিং
এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে অনেকে প্রাইভেট পড়া শুরু করে দিয়েছ হয়তো। কোন স্যার কী পড়ান, কতটুকু পড়ান, কেমন বোঝান- এসব খুঁটিনাটি বিষয় সিনিয়র কারো সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে তারপর প্রাইভেট বা কোচিং শুরু করলে ভালো হয়।
সিলেবাস আয়ত্ত করা
আগের পড়াশোনা থেকে এখন আরেকটু ওপরের ধাপে এসেছ তোমরা। নতুন শ্রেণির পড়ার সিলেবাসটা আয়ত্ত করো আগে। তবে বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি ব্যাকরণ আগের থেকে তুলনামূলক সহজ হয়েছে। পূর্বের শ্রেণিতেই তোমরা অনেক কিছু পড়ে এসেছ। এখন কিছু টপিক কেবল বেড়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করো। তাছাড়া আগে সকল বিষয়ের প্রশ্নের প্যাটার্ন ও মান বণ্টন জেনে পড়তে গেলে ভালো লাগবে।
পড়ার টেবিল
এখন পড়ার টেবিল সাজাও নতুন বই দিয়ে। পুরনো বইগুলো টেবিল থেকে সরিয়ে ফেল। ঝকঝকে তকতকে করে রাখবে পড়ার টেবিল। এতে পড়ার আগ্রহ পাবে। তবে শুরুতেই এত সিরিয়াস পড়াশোনা করার দরকার নেই। হাসি-আনন্দে অল্প অল্প পড়ো। মাত্র তো কলেজে পা দিলে। কীভাবে পড়তে হবে, কতটুকু পড়তে হবে তা নিজে নিজেই একসময় বুঝতে পারবে।
ক্যাম্পাস
কলেজের ক্যাম্পাসে মানিয়ে নেওয়া শিখতে হবে। ভিন্ন একটা পরিবেশে প্রবেশ করবে তোমরা। পড়ার পরিবেশ, সহপাঠী, কলেজের ভবন, স্যার-ম্যাডাম সবই যেন অপরিচিত। তাই হীনম্মন্যতা ভর করতে পারে কারো কারো। দ্বিধাবোধ হবে হয়তো। এজন্য নিজেকে গুটিয়ে নিলে চলবে না। সহপাঠীদের সঙ্গে নম্র-ভদ্র ব্যবহার করবে। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ হলে সব কিছু কাটিয়ে উঠা সহজ হয়। চেষ্টা করবে কলেজের ইউনিফর্ম পরে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে। ইউনিফর্ম বানিয়ে রাখো এখনই। বাসায় পরে ট্রায়াল দাও। কেননা হঠাৎ করে নতুন পোশাক পরলেও আমাদের লজ্জা ও অস্বস্তিবোধ হয়।
এক্সট্রা কারিকুলাম
কলেজের লাইব্রেরি, বিতর্ক ক্লাব, স্পোকেন ইংলিশ ক্লাব, খেলাধুলার সংগঠন, সাহিত্য সংগঠন ইত্যাদি বিষয়েও খোঁজখবর নিতে পারো। পড়াশোনার পাশাপাশি একজন ভালো শিক্ষার্থীর এসব ক্ষেত্রেও মনোযোগী হওয়া উচিত। যার যে-বিষয়ের প্রতি ঝোঁক আছে, সে সেখানে সময় দিতে পারো।
সবার কলেজ-জীবনের জার্নি স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে উঠুক এই কামনা করি।