মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ছবি ও গল্পের মানুষ ড্যাডিকে স্মরণ

গোলাম কাসেম ড্যাডি স্মরণে আলোচনাসভা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৪৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৪৪

‘‘গোলাম কাসেম ড্যাডি কেবল আলোকচিত্রী ছিলেন না। ছিলেন বাংলা ছোটগল্পের দিকপাল। বাংলার আলোকচিত্রীদের কাছে পরিচিত ছিলেন ‘ড্যাডি’ হিসেবে।’’

সোমবার সন্ধ্যায় কাঁটাবন পাঠক সমাবেশে গোলাম কাসেম ড্যাডির ২৫তম প্রয়াণ দিবসের আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজের সঞ্চালনায় নগরবিদ ও শিল্প সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছবি তোলার জন্য তেমন আধুনিক সুবিধা ছিল না। তবু্ও ড্যাডি তার ক্যামেরার পাণ্ডিত্য দিয়ে বাংলার ইতিহাসে এক নতুনত্ব জুড়ে দিয়ে গেছেন। গল্পের মধ্যে মায়া ঢেলেছেন। সৃষ্টিকর্তা ড্যাডিকে ছবি ও গল্পের জাদুকর হিসেবে এ গ্রহে পাঠিয়েছেন।’

কথাসাহিত্যিক স্বকৃত নোমান বলেন, ‘ড্যাডি বাংলা সাহিত্যের ছোটগল্পের দিকপাল। সত্যিকার অর্থে তার গল্পগুলোকে মহাকালে নিয়ে গিয়েছেন। তার মৃত্যুর বহু বছর পর এক তরুণ তুর্কির জন্য নতুন করে আমরা ড্যাডিকে জানতে পেরেছি।’

কাউন্টার ফটোর অধ্যক্ষ সাইফুল হক অমি বলেন, ‘ড্যাডি তার ছবিতে রাজনৈতিক কলঙ্ক দেননি। তাকে বুঝতে হলে আমাদের আরও একশ বছর অপেক্ষা করতে হবে।

পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনিস্টিটিউটের বিভাগীয় প্রধান তানভীর মুরাদ তপু বলেন, ‘ছবি তোলার নেশা তাকে নিয়ে গেছে বিশ্বযুদ্ধের ময়দানে। তিনি তার কাজের মাধ্যমে জাতির ফটোগ্রাফির ড্যাডিতে রূপান্তরিত হয়েছেন।’

স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন স্থপতি সালমা এ শফি, স্থপতি শামিম আমিনুর রহমান, অধ্যাপক হরষিদ বালা, আলোকচিত্রী সাহাদাত পারভেজ, সুদীপ্ত সালাম, শাহীন আহমেদ তনু, সিরাজুল হক প্রমুখ।


বর্ণিল মানবচিত্র

আনসার ভিডিপি একাডেমিতে সমবেত হন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা
আপডেটেড ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৫৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গত ১২ ফেব্রুয়ারি আনসার ভিডিপির বার্ষিক জাতীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গাজীপুরের সফিপুরে আনসার ভিডিপি একাডেমিতে সমবেত হয়েছিলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সদস্যরা। ছবিগুলো তুলেছেন মো. ফখরুল ইসলাম


পুরোনো পদ্ধতি, নতুন লেন্স

লেন্সের বক্রতা নিয়ন্ত্রণের যন্ত্র
আপডেটেড ২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:২২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি গলির ভেতর এখনো মেলে চশমার লেন্স তৈরির ছোট ছোট কারখানা। সেখানে স্বয়ংক্রিয় মেশিনের ব্যবহার নেই, পুরোনো ও দক্ষ কর্মীরাই ভরসা। অনেকে পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে কাজটিকে ধরে রেখেছেন। সম্প্রতি ছবিগুলো পাটুয়াটুলী থেকে তুলেছেন ওসমান গনি

গ্লাস মসৃণের কাজ চলছে
গ্লাস মসৃণ করতে বালির ব্যবহার
লেন্সের পাওয়ার যাচাই
অমসৃণ গ্লাস আসে দেশের বাইরে থেকে


ডিমেনশিয়া এবং যা করণীয়...

প্রাথমিক অবস্থায় ডিমেনশিয়া সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও সময়ের সঙ্গে সম্ভাবনা কমতে থাকে
আপডেটেড ২০ নভেম্বর, ২০২২ ১৭:৩৭
ইসমাত আদনুন

আশি ছুঁই ছুঁই এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক, তার চারপাশে কী ঘটছে, কারা আছে, এমন অনেক কিছুই আর বুঝতে পারেন না। কিন্তু ছোট একটি বাচ্চাকে চিনতে ভুল হয় না তার। অন্যদের কাছে তার নানান গল্প বলেন, সবাইকে খুব করে বলেন বাচ্চাটার যত্ন-আত্তির যেন কোনো কমতি না হয়। এই গল্প আর গল্পের বাচ্চা তার অতীত থেকে উঠে আসা কোনো স্মৃতির অংশ, যা তিনি বর্তমান ভাবছেন। যাদের পরিবারে ষাটোর্ধ্ব মানুষজন আছেন, এমন ঘটনার সম্মুখীন আমরা কমবেশি হয়ে থাকি। এই যে ভুলে যাওয়া বা অতীতের কোনো স্মৃতিতে বাস করা, এমনটা মূলত কেন হয়! মস্তিষ্কের নানান অসুখের একটি উপসর্গ হচ্ছে ডিমেনশিয়া। এর সাধারণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়া বা ভুলে যাওয়া। আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে তার অতীতের চেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনা মনে রাখা বেশি কঠিন হয়ে পড়ে। সাধারণত ৬৫ বছরের পর থেকে এর ঝুঁকি বাড়ে। তবে এটি তরুণদেরও প্রভাবিত করতে পারে।

ডিমেনশিয়ার কিছু প্রকারভেদ রয়েছে, সবচেয়ে বেশি পরিমাণে দেখা যায় আলঝেইমার্সজনিত ডিমেনশিয়া, যা বংশগত। এ ছাড়া রয়েছে, ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া, লিউই বডি ডিমেনশিয়া, ফ্রন্টো টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া এবং পারকিনসন্সজনিত ডিমেনশিয়া। বাংলাদেশে এই অসুখটি এখনো পশ্চিমা দেশগুলোর মতো প্রকট নয়। কিংবা এর ব্যাপারে মানুষের মাঝে সচেতনতার হার কম বলে হরহামেশা ডাক্তার পর্যন্ত পৌঁছান না, এমনটাও হতে পারে।

সাধারণত এ রোগীদের মাঝে প্রাথমিকভাবে যে লক্ষণগুলো দেখা দেয়- সহসাই ঘটছে এমন বিষয়গুলো ভুলে যাওয়া। যেমন ধরা যাক, দুপুরের খাবারের পর তাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় তিনি খেয়েছেন কি না, প্রতিউত্তরে তিনি বলছেন খাননি। একই গল্প বা প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি। এইমাত্র পরিচয় করিয়ে দেয়া কাউকে পরক্ষণেই আর চিনতে পারছেন না এমন। চেনাজানা গণ্ডির মাঝে হারিয়ে যাওয়া এবং এটি এই রোগের অন্যতম একটি লক্ষণ যে অভ্যস্ত দৈনন্দিন কার্য তালিকায় অনভ্যস্ত হয়ে ওঠা। ক্রমেই পরিচিত কাজগুলোয় দক্ষতা লোপ পাওয়া। সময়, মানুষ, স্থান এসব বিষয় ধীরে ধীরে ভুলতে শুরু করা। পরিবারের মানুষজন চিনতে পারেন না, কোথায় আছেন বুঝতে পারেন না। দিন, মাস কিংবা বছরের ধারণা থাকে না। প্রয়োজন বা অনুভূতি বুঝতে না পারা। কী চাচ্ছেন বা কেমন বোধ করছেন স্পষ্ট করে বলে বোঝাতে পারেন না। খাওয়া, পরা, নিজের শারীরিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় অন্যের মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েন।

প্রাথমিক অবস্থায় ডিমেনশিয়া সেরে ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও সময়ের সঙ্গে সম্ভাবনা কমতে থাকে। লক্ষণ দেখে অনুমান হলে অথবা শনাক্ত হওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ছাড়া পরিবারের মানুষজন যা করতে পারেন- রোগীকে যথেষ্ট সময় দেয়া, যথাযথ সম্মান করা, শারীরিক ও মানসিক পরিচর্যায় যথেষ্ট যত্নবান হওয়া। বয়স বাড়ার সঙ্গে মানুষ ভুলতে শুরু করবেন- এমনটাই ভাবি আমরা। তাই এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতনতাও থাকে না। ডিমেনশিয়া বয়স্ক ব্যক্তিদের হবে- এমনটাই স্বাভাবিক ধরা হলেও বর্তমানে তরুণদের মাঝেও এই রোগের হার বাড়ছে।

সুস্থাবস্থায় দৈনন্দিন কার্যতালিকায় এমন কিছু অভ্যাস আমরা যোগ করতে পারি, যেসব এই রোগের ঝুঁকিকে কমিয়ে আনতে পারে। আপনার প্রতিদিনকার রুটিনে একটি নির্দিষ্ট সময় হাঁটা বা শারীরিক ব্যায়াম রাখতে পারেন। মস্তিষ্ক সচল রাখবে এমন খেলাধুলা, চিন্তাভাবনায় কিছুটা সময় কাটান। নতুন কিছু শিখুন। হতে পারে কোনো ভাষা, কোনো বাদ্যযন্ত্র কিংবা নৃত্য। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিশেষত মধ্য বয়সে আমাদের জীবন ভীষণ একঘেয়ে হয়ে ওঠে। সেই একঘেয়ে জীবন থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। পরিবারের মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান, আশপাশের মানুষদের সঙ্গে মিশুন, তাদের খোঁজখবর নিন। সম্ভব হলে কোনো সামাজিক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখুন।

খাদ্যতালিকায় তাজা ফলমূল, শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার রাখার চেষ্টা করুন। চর্বিযুক্ত খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন, তবে মাছের তেল মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী। প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত ঘুম মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত জরুরি। রক্তচাপ, ব্লাড সুগার ও চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। ধূমপান, মদ্যপান কিংবা যেকোনো তামাকজাত দ্রব্য বর্জন করুন। সর্বোপরি, নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের ও আশপাশের মানুষগুলো আর সম্পর্কগুলোর যত্ন নিন।

সূত্র: ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, লন্ডন


banner close