শনিবার, ২২ নভেম্বর ২০২৫
৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

মায়ের কাছ থেকে নবজাতকে নিপাহ ভাইরাসের অ্যান্টিবডি

আপডেটেড
২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:১৮
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:১১

প্রথমবারের মতো মা থেকে সন্তানের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসের অ্যান্টিবডি বা সম্ভাব্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রবাহের প্রমাণ মিলেছে। সম্প্রতি আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী এবং সহযোগীদের একটি নতুন গবেষণার ফলাফল ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণাটি প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছে যে, নবজাতক সন্তান মায়ের কাছ থেকে নিপাহ ভাইরাসের হিউমোরাল অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পায়। এই গবেষণা প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা ব্যক্তি থেকে অন্যজনে সম্ভাব্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার প্রবাহের নতুন তথ্য প্রদান করা হয়েছে।

মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার আনুমানিক ৪০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশ। আর বাংলাদেশে এই হার ৭১ শতাংশ। এ ছাড়া নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে গুরুতর স্নায়বিক জটিলতা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং গর্ভবতী নারীদের গভাবস্থার শেষের দিকে এই জটিলতা আরও খারাপ হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে নিপাহ ভাইরাসে ফরিদপুর জেলায় পাঁচ বছরের কম বয়সী একটি মেয়ে এবং তার মা সংক্রমিত হয়। তাদের উভয়েই খেজুরের কাঁচা রস পান করেছিল। এরপর শিশুটি মারা যায় এবং মা গুরুতর স্নায়ুবিক জটিলতার শিকার হন। ২০২১ সালের নভেম্বরে সেই মা ফের গর্ভধারণ করেন এবং তিনি প্রসবের পূর্বে জাতীয় নিপাহ সার্ভেইল্যান্স কর্তৃপক্ষের নিবিড় তত্ত্বাবধানে সেবা পেয়েছেন।

ওই বছরের আগস্টে তার একটি সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। রুটিন সারভাইভার ফলোআপের অংশ হিসেবে নবজাতকের দেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং ভার্টিকেল ট্রান্সমিশন বা মা থেকে থেকে শিশুতে সংক্রমণের সম্ভাবনা বাদ দেয়ার জন্য রেফারেন্স ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছিল। যদিও পরীক্ষা করে র‌্যাপিড ও পিসিআর টেস্টে নিপাহ সংক্রমণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু অ্যান্টি-নিপাহ আইজিজির একটি উচ্চ টাইটার দেখতে পাওয়া যায়। এভাবেই প্রথমবারের মতো নিশ্চিত হওয়া যায় যে, মা থেকে সন্তানের মধ্যে নিপাহ ভাইরাসের হিউমোরাল এন্টিবডি পৌঁছে।

এই গবেষণার প্রধান গবেষক আইসিডিডিআরবির ইনফেকশাস ডিজিজেস ডিভিশনের অন্তর্গত ইমার্জিং ইনফেকশন্স শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট সায়েন্টিস্ট এবং ডেপুটি প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মইনুদ্দীন সাত্তার বলেন, ‘আমাদের জানা মতে, এই গবেষণাই প্রথম নিপাহ ভাইরাসভিত্তিক ইমিউন প্রপার্টিজের ভার্টিকেল ট্রান্সফার বা মা থেকে শিশুতে পরিবাহিত হওয়ার প্রমাণ নিশ্চিত করে। ভাইরাস নিউট্রিলাইজেশনের কার্যকারিতা এবং নবজাতকের সুরক্ষার সম্ভাব্যতার বিষয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন। এটি নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে গর্ভবতী ও কম বয়সী নারীদের জন্য টিকা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে একটি রেফারেন্স হিসেবেও কাজ করবে বলে আশাবাদী।’

আইসিডিডিআরবির নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ, আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআবির তত্ত্বাবধায়নে জাতীয় নিপাহ সার্ভেইল্যান্সের প্রশংসা করে বলেন, ‘আইসিডিডিআরবি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিপাহ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্তকরণ, রোগের সংক্রমণের ধরন এবং মারাত্মক সংক্রমণের বিরুদ্ধে থেরাপিউটিকস এবং ভ্যাকসিন তৈরিতে নতুন তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহে বিশ্বের দীর্ঘতম নিপাহ ভাইরাস সার্ভেইল্যান্স পরিচালনা করছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি সফল প্রচেষ্টা এবং আশা করি, আমরা শীঘ্রই নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা বের করতে পারব, যা অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হবে।’

নিপাহ ভাইরাস একটি জুনোটিক ভাইরাস (অর্থাৎ এটি প্রাণী থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়) এবং এটি দূষিত খাদ্য অথবা সরাসরি মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে। টেরোপাস জেনাসের ফলখেকো বাদুড় এই ভাইরাসের প্রাকৃতিক ধারক এবং বর্তমান সময়ের একটি অন্যতম এমারজিং মহামারি সৃষ্টিকারী রোগের মধ্যে একটি। বাংলাদেশে ২০০১ সালে প্রথম এই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় এবং তখন থেকে এই জনবহুল দেশে প্রায় প্রতি বছরই অনেক মানুষ মারা যায়। আজ ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩৩১ জন মানুষ নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২৩৬ জন মারা যান।


ভূমিকম্পে আহতদের সুষ্ঠু চিকিৎসার নির্দেশ: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের সব সরকারি হাসপাতালে ভূমিকম্পে আহতদের যথাযথ চিকিৎসার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম

আজ শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পৌঁছে ভূমিকম্পে আহত চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের খোঁজখবর নেন। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, “সব হাসপাতালে বলেছি, ভূমিকম্পে আহতদের চিকিৎসায় যেন কোনো ত্রুটি না হয়। সব সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেওয়া আছে।”

তিনি আরও বলেন, “যে মাত্রায় ভূমিকম্প হয়েছে, হয়তো কাছাকাছি থাকার কারণে এই মাত্রা বেশি মনে হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় মাত্রা ছিল ৫.৭ রিখটার স্কেলে। তবে আহতের সংখ্যা সেই তুলনায় বেশি হয়েছে। ঢাকার যেসব ছাত্র আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে অনেকেই আতঙ্কে দুই-তিন তলা থেকে লাফ দিয়েছেন। আমরা সবাই মিলে সুষ্ঠু চিকিৎসার চেষ্টা করছি।”

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া, আরও একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে; তার বাবাও আহত এবং তাঁর অবস্থা গুরুতর। রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে তিনজন নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেলের শিক্ষার্থী।

তিনি আরও জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আহতদের খবর পাওয়া যাচ্ছে। গাজীপুরের কয়েকজন আহত এবং অনেকে প্যানিকের কারণে হাসপাতালে এসেছেন। “ডাক্তাররা তাদের চিকিৎসা দিয়েছেন। শারীরিকভাবে আহতদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে,” বলেন তিনি।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দুপুর পৌনে তিনটা পর্যন্ত ঢামেকে ৪১ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ ছয়জনকে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড় দেওয়া হয়েছে।


ময়মনসিংহ মেডিকেলে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুজনের মৃত্যু, ভর্তি ৭৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

গত ২৪ ঘন্টায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে শান্তি বেগম (৯০) এবং আব্দুস সালাম (৫৩) নামে দুজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। শান্তি বেগম সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার এবং আব্দুস সালাম ভালুকা উপজেলার বাসিন্দা।

তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু বিভাগের ইনচার্জ ডা. এমদাদ উল্লাহ খান বলেন, শান্তি বেগম বুধবার সন্ধ্যায় এবং আব্দুস সালাম মঙ্গলবার বিকেলে হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে বর্তমানে ৭৪ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে পুরুষ রোগী ৪৪, মহিলা ২০ জন ও ১০ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৭ জনসহ চলতি বছরে এ নিয়ে ২০ জন ব্যক্তি ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে মমেক হাসপাতালে মারা গেছেন।


অর্থের অভাবে আবারও অনিশ্চয়তায় ময়মনসিংহের শিশু হাসপাতাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ময়মনসিংহ ব্যুরো

টাকা বরাদ্দ না থাকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে ময়মনসিংহের শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ। এর আগে প্রায় সাত বছর আগে ময়মনসিংহ শিশু হাসপাতাল নির্মাণের প্রশাসনিক অনুমোদন মেলে। তবে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য জমি কিনতে চলে যায় প্রায় পাঁচ বছর। এ নিয়ে শুরুতেই এক ধরণের অনিশ্চিয়তার সৃষ্টি হয়েছিল।

পরে ২০২৩ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এক বছরের বেশি সময় আগে তা টাকার অভাবে বন্ধ রয়েছে। এতে হাসপাতালটির ভবিষ্যৎ আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শিশু হাসপাতালটি নির্মাণের জন্য ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ওই বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালটি দুতলা পর্যন্ত হওয়ার কথা রয়েছে। পরবর্তীতে তা আরও বাড়ানো হবে। কাজ পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদার। এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ৩০ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ৩০ জুনের পর টাকা না পাওয়ায় কাজটি বন্ধ হয়ে গেছে। সরজমিনে দেখা গেছে, প্রকল্প এলাকায় এখন কোনো কাজ হচ্ছে না। তবে ইতোমধ্যে বেজমেন্ট এর কাজ শেষ হয়ে ১ তলা পর্যন্ত কাজের দৃশ্য চোখে পড়ে।

আরও জানা যায়, এ শিশু হাসপাতালটি ময়মনসিংহ জেলাবাসীর জন্য বহুলকাঙ্ক্ষিত। প্রাচীন জেলা ও বিভাগীয় নগর হওয়ার পরও ময়মনসিংহ কোন শিশু হাসপাতাল নেই। বৃহত্তর ময়মনসিংহের ছয় জেলাসহ দেশের উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা, সুনামগঞ্জ ও গাজীপুর জেলার রোগীরা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। সেখানে রয়েছে একটি নবজাতক ও শিশু ওয়ার্ড। তবে শিশু ওয়ার্ড রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খায়। যে কারণে ময়মনসিংহ জেলায় একটি শিশু হাসপাতাল জরুরি হয়ে ওঠে। এ প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে সরকারের বিশেষ বরাদ্দে ময়মনসিংহে একটি আধুনিক শিশু হাসপাতালের অনুমনোদন মেলে। এ হাসপাতলের জন্য অন্তত ৩ একর জমি প্রয়োজন ছিল। পরে ওই কেনা নিয়ে চলে যায় ৫ বছরের বেশি সময়। অবশেষে ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসন ময়মনসিংহ নগরের বাইপাস এলাকায় জমি কিনে গণপূর্ত বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাসপাতলটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্ধারিত সময় পার পেয়ে গেলেও এখনো তা শেষ হয়নি। উল্টো বরাদের অভাবে কাজই বন্ধ হয়ে গেছে।

হাসপাতালটি নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের দাবি দ্রুত আবারও নির্মাণ কাজ শুরু হোক। ‘ময়মনসিংহ নাগারিক সমাজ’ নামের নাগরিক সংগঠনের সদস্য সচিব শামসুদ্দোহা মাসুম বলেন, ময়মনসিংহে একটি শিশু হাসপাতাল খুবই জরুরি। শিশু হাসপাতালের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। দ্রুত সরকারের অর্থ বরাদ্দের মাধ্যমে আবারো কাজটি চালু হওয়ার দাবি জানাই।

কাজটির দায়িত্বে থাকা ময়মনসিংহ গর্ণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. ইফতেখার আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ইতোমধ্যে কাজটির ৩০থেকে ৩৫ শতাংশ সমাপ্ত হয়েছে। ২০২৪ সালের ৩০ জুনের পর থেকে টাকা বরাদ্দ না হওয়ায় কাজটি বন্ধ রয়েছে। তবে আবার কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।


সাড়ে তিন মাস চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরল যমজ বোন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে প্রায় সাড়ে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরল ১০ বছর বয়সি যমজ দুই বোন সারিনাহ জাহান সায়রা ও সাইবাহ জাহান সায়মা। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এ দুই শিশু আহত হয়েছিল। এ পর্যন্ত বিমান দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ ৩৩ জন চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছে।

গতকাল বুধবার ইনস্টিটিউটের পরিচালকের কার্যালয়ে দুই শিশুকে বিদায় জানান হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীরা।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

এ সময় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মাইলস্টোন স্কুলের বিমান দুর্ঘটনায় আহত ৫৭ জন এই ইনস্টিটিউট থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে ২০ জন। একজনকে ট্রমা ম্যানেজমেন্টের জন্য মানসিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজন এখনো চিকিৎসাধীন, তবে তারা সবাই আশঙ্কামুক্ত।’

যমজ দুই শিশুর মধ্যে সায়রা ৩০ শতাংশ এবং সায়মা ১৫ শতাংশ দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্টাফ দগ্ধ প্রত্যেক রোগীকে আন্তরিক সেবা দিয়েছেন। তারা কঠোর পরিশ্রম করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকেও আমাদের প্রয়োজনীয় সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।

‘আহতদের মধ্যে যারা বাড়ি ফিরেছেন, তাদের সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং ফলোআপ চিকিৎসা দিচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।

এ সময় তিনি সিঙ্গাপুর, ভারত, চীন ও যুক্তরাজ্যসহ যেসব বিদেশি চিকিৎসক আহতদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করেছেন, তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।

যমজ দুই শিশুর বাবা-মা ইয়াসিন মজুমদার ও আকলিমা আক্তার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় মোট ৩৬ জন নিহত এবং ১২৪ জন আহত হয়। তদন্ত কমিটি দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে যুদ্ধবিমানের পাইলটের উড্ডয়ন-ত্রুটি চিহ্নিত করেছে।


রূপগঞ্জে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেল ৮ শতাধিক  মানুষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজ কল্যাণ পরিষদ তারাবো পৌরসভার উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সুবিধাবঞ্চিত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৮ শতাধিক মানুষকে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। সোমবার দিনব্যাপী উপজেলার খাদুন এলাকায় হাজী আয়াত আলী ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ে এ চক্ষুসেবা প্রদান করা হয়।

ইসলামী পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদের তারাব পৌর শাখার সভাপতি খন্দকার আল-আমীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ আনোয়ার হোসেন মোল্লা।

দিনব্যাপী এ মেডিকেল ক্যাম্পে আট শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে ওষুধ ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এছাড়া বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, মেডিসিন, গাইনি, শিশু ও কিশোরকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেবাসহ ডায়াবেটিস, রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হয়।

ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মুগদা শাখার মেডিকেল টিমের সদস্য গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. আজরিনা আফরিনের তত্ত্বাবধানে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার গোলাম কিবরিয়া, এবং শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাইমা রহমান চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।

ইসলামী পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল-আমীন বলেন, আমরা তারাব পৌর ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদ ও ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মুগদা শাখার উদ্যোগে এ চিকিৎসাসেবা প্রদান করছি। ইতোমধ্যে উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় আমরা চক্ষুসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। এতে শত শত রোগী বিনামূল্যে সেবা গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন।

তিনি বলেন, এ পর্যায়ে আমরা সুবিধাবঞ্চিত এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মেডিসিন, গাইনি, শিশু ও কিশোর রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মাধ্যমে সেবা প্রধানম করছি। সেই সাথে বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, ব্লাড গ্রুপ ও ডায়াবেটিস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় আট শতাধিক মানুষকে সেবা দিতে পেরেছি। পর্যায়ক্রমে আমাদের এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম রূপগঞ্জের সকল পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ইসরাফিল হোসাইন। ইসলামী পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং নারায়ণগঞ্জ লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট আয়নাল হক আরও অনেকে।


ডেঙ্গুতে আরও ৬ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ১৯৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৯৫ জন।

এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩১৩ জনে এবং শনাক্ত রোগী বেড়ে ৭৮ হাজার ৫৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩২ জন, ঢাকা বিভাগে ২৭৮ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২২০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১৫ জন, খুলনা বিভাগে ১১৪ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ১১৩ জন ও সিলেট বিভাগে ৯জন রয়েছেন।

২৪ ঘণ্টায় যে ছয়জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে দুজনের ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে, দুজনের ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ও দুজনের বরিশাল বিভাগে মৃত্যু হয়েছে।

এই সময়ে এক হাজার ১০৮ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ছাড়পত্র পেয়েছেন ৭৪ হাজার ৮৯৩ জন।

এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৭৮ হাজার ৫৪৩ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৩১৩ জনের।

২০২৪ সালে দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে ডেঙ্গুতে মারা যান সর্বোচ্চ ১ হাজার ৭০৫ জন এবং আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।


ভৈরবে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগী আতঙ্কে এলাকাবাসী

*এক পরিবারে ৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত *প্রতিরোধে পৌর প্রশাসনের নেই কার্যকরী পদক্ষেপ
ভৈরব উপজেলা হাসপাতালে ডেঙ্গুরোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এক পরিবারে ৬ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত। আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা। প্রশাসনের নেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে কোনো কার্যক্রম। তা ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাচ্ছে না পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা, শুধু স্যালাইন আর নাপা দিয়ে চলছে ডেঙ্গুরোগীদের চিকিৎসা।

প্রতিদিন গড়ে প্রায় অর্ধশতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু আক্রান্ত হচ্ছেন ভয়ংকর এই জ্বরে। ইতোমধ্যে হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। অথচ, মশানিধনে নেই পৌর প্রশাসনের তেমন কোনো জোরালো কার্যক্রম। ফলে ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত মানুষজন।

রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী মহিলা ওয়ার্ডে গিয়ে কথা হয় পৌর শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজিয়া বেগমের সাথে। তিনি বলেন, আমার ৪ ছেলে-মেয়ে নাতি ও আমি নিজে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছি। এক সপ্তাহ যাবত পরিবারের ৬ জন সদস্য ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন হাসাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন আমাদের পরিবারে ডেঙ্গু আক্রান্তদের সেবা করার জন্য কেউ সুস্থ নেই। সে জন্যই আজকে (রোববার) সবাই হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় চলে যাব। সেখানেই সবাই এক সাথে থাকব যেন একজন আরেকজনকে সেবা করতে পারি।

ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্বাস মিয়া ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত তার মেয়ে সুমি বেগমকে নিয়ে দুদিন আগে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করান। কিন্তু হাসপাতালে আসার পর ডাক্তারদের দেখা মেলেনি শুধু নার্সরাই স্যালাইন আর নাপা দিয়ে চিকিৎসা করছেন। হাসপাতালে আসার পর তার মেয়ের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। আজ (রোববার) সকালে এক নার্স এসে বলল আপনার মেয়েকে কিশোরগঞ্জ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এইভাবে যদি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা হয় তাহলে আমরা গরিব মানুষ কোথায় যাব।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চলতি মৌসুমে আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে এই ডেঙ্গু জ্বর। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দুই থেকে তিনগুণ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য খোলা হয়েছে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা দুটি ওয়ার্ড। তবে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ভৈরবের সর্বত্র ডেঙ্গুর এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতেও পৌরসভা বা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিরোধমূলক কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করা হয়নি। মশানিধন বা সচেতনতায় নেওয়া হচ্ছে না কোনো কর্মসূচি।

এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আবদুল করিম জানান, এ বছর ভৈরবে অন্যান্য বছরের তুলনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রতিদিনই হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হচ্ছেন। রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে ১৭ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩ জন রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতারে রেফার্ড করা হয়েছে। আক্রান্তদের মাঝে গত সেপ্টেম্বর মাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮০ জন। তবে, আক্রান্তদের মাঝে অধিকাংশরা নিজ বাড়ি এবং শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া প্রতিদিন অসংখ্য রোগী জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

ভৈরব পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন জানান, পৌরসভার পক্ষ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনামূলক কর্মসূচির পাশাপাশি প্রতিদিনই পৌর এলাকায় প্রতিটি ওয়ার্ডে জনসচেতনতা লক্ষ্যে সভা সমাবেশসহ মশা রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম করছেন বলে তিনি জানান।


সেবাপ্রত্যাশী অনেক, সংকট শয্যা চিকিৎসক ও সরঞ্জামের

*চলছে টিকিট বাণিজ্য *ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক
আপডেটেড ৮ নভেম্বর, ২০২৫ ২০:১২
নওগাঁ প্রতিনিধি

উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এ জেলার সাধারণ মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার ভরসার স্থল নওগাঁ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। সেবাপ্রত্যাশীদের তুলনায় শয্যা, চিকিৎসক ও সরঞ্জাম সংকট লেগেই আছে। তবুও সাধারণ, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা আসেন সেবা নিতে। সরকারি এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

সরেজমিনে গিয়ে মিলেছে তার প্রমাণও। জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চলছে টিকিট বাণিজ্য। টিকিটের দাম ১০ টাকা নির্ধারিত হলেও রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।

২৫০ শয্যার এই জেনারেল হাসপাতালে নওগাঁর ১১ উপজেলা ছাড়াও বগুড়ার আদমদিঘী, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরসহ আশেপাশের অনেক জেলা ও উপজেলা থেকেও রোগীরা আসেন সেবা নিতে।

জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘাটনগর থেকে দুদিন আগে আমাশয়জনিত কারণে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রুপালী রানি। তার ছেলে আকাশ কুমার জানান, ‘ভর্তি ফি ২০ টাকা এবং জরুরি বিভাগে প্রথম ডাক্তার দেখানোর জন্য ১৫ টাকা নিয়েছেন কাউন্টারে।’

সদর উপজেলার বক্তারপুরের রিমু খাতুন ভর্তি হয়েছেন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। রিমুর দুলাভাই আল আমিন হোসেন বলেন, ‘ফি ২০ টাকা নিয়েছেন। বাকি টাকা ফেরত চাইলে তারা বলেন, খুচরা নাই।’

এদিকে জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে ভর্তি রোগীর কাছ থেকে ১০ টাকার বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শুধু টিকিট বাণিজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধতা নয়, এখানে পেইংবেইড ও কেবিনের জন্য রোগীদের গুণতে হয় বাড়তি টাকা। নির্ধারিত ফির বাইরে বাড়তি টাকা নিয়ে থাকেন দায়িত্বরত স্টাফরা।

সদর উপজেলার শিবপুর এলাকায় প্রফুল্ল কুমার বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে ভর্তি করালাম। প্রথমে ১০ টাকা দিয়ে টিকিটি কেটে পরে ভর্তি ফি নিয়েছেন ৩০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার তো নিয়ম নাই তবুও তারা নিয়েছে। কিছু বলার নাই।’

আরিফ চৌধুরিসহ হাসপাতালে আসা আরও বেশ কয়েকজন জানান, টিকিট কাউন্টারে বাণিজ্য হয়। অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। দায়িত্বরতদের দৃষ্টি আকর্শন করছি যাতে বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখেন।

জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে দুজন করে ৪ জন পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। তারা আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করছেন। মূলত জরুরি বিভাগ থেকে তোলা বাড়তি টাকা ভাগবাঁটোয়ারা করেন নিজেরাই।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টিকিট কাউন্টারে দায়িত্ব পালন করা মো. মুমিনুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না। অনেক সময় খুচরা টাকা থাকে না। সেবাগ্রহীতারা ৫০০ বা ১০০ টাকা নোট দিলে পরবর্তীতে তারা আবার বাকি টাকা ফেরত নিয়ে যায়। গত সোমবার আমি নিজে ২০ টাকার নোট দিয়েছিলাম আপনি ১৫ টাকা ফেরত না দিয়ে দ্রুত অন্য রোগীদের টিকিট দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বলেন খুচরা নাই। এমন প্রশ্নের জবাবে এ প্রতিবেদককে বলেন, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না, মনে নাই।

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরি বলেন, অভিযোগগুলোর সত্যতা রয়েছে। এক রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে একজনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।

স্পষ্টভাবে বলা আছে জরুরি বিভাগের টিকিট ৫ টাকা, তারা কেন ১০ টাকা বা তার বেশি নেবে। বিশেষ করে ৫ টাকার সিলমোহর টিকেটের ওপর ব্যবহার করতে বলা হয়েছে তাদের। আমরা নিয়মিত বিষয়গুলো মনিটরিং করব।


দে‌বিদ্বা‌রে ছড়িয়ে পড়ছে স্ক্যাবিস, বাড়ছে আতঙ্ক

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বড় অংশই এ রোগে ভুগছে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিস। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বড় একটি অংশ এ রোগে ভুগছেন। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশু ও কিশোরদের মধ্যেও এর প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। এতে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম আতঙ্ক।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে প্রায় দুই থে‌কে আড়াই শতাধিক চর্মরোগে আক্রান্ত রোগী থা‌কে। এদিকে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে কোনো চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চি‌কিৎসক নেই। ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা।

আক্রান্তদের অনেকে প্রথমে গ্রামের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় অবস্থার অবনতি ঘটছে এবং শেষে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে আসছেন।

চিকিৎসকদের মতে, স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে শরীরের আঙুলের ফাঁক, কবজি, কনুই, বগল, নাভি, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ ও হাতের তালুতে তীব্র চুলকানি হয়- বিশেষ করে রাতে। চুলকানোর ফলে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ও ঘা দেখা দেয়, যা থেকে তরল পদার্থ বের হয়। এটি সারকপটিস স্ক্যাবাই নামের এক ধরনের ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, বিছানা, তোয়ালে বা শরীরের সংস্পর্শে এলে অন্যরাও সহজেই সংক্রমিত হয়।

দেবিদ্বারের ছাত্রাবাস, হাফেজিয়া ও কওমি মাদ্রাসাগুলোতে স্ক্যাবিস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বিছানা, বালিশ ও চাদর ভাগাভাগি করে ব্যবহার করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক রোগী স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে তীব্র চুলকানি ও ফুসকুড়ির যন্ত্রণায় ভুগছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সফিক সরকার বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে শরীরে চুলকানি হচ্ছিল। ফার্মেসি থেকে ওষুধ ব্যবহার করেও কাজ হয়নি। অবশেষে হাসপাতালে এসে জানতে পারলাম, এটি স্ক্যাবিস।

ফতেহাবাদের জামাল হোসেন বলেন, আমার ১৮ মাস বয়সি সন্তানের শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার জানিয়েছেন, স্ক্যাবিস হয়েছে এবং পুরো পরিবারকে চিকিৎসা নিতে হবে।

হাসপাতাল এলাকার কয়েকজন ফার্মাসিস্ট জানান, অনেক রোগী স্ক্যাবিস সম্পর্কে ধারণা না থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যালার্জি বা চুলকানির ওষুধ কিনে ব্যবহার করেন। এতে রোগ সারে না, বরং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকাটাও একটি বড় কারণ। তাদের মতে, কয়েক মাসে চর্মরোগের ক্রিম, লোশন ও ওষুধের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কবীর হোসেন বলেন, শিশুদের মধ্যে স্ক্যাবিস সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্যরাও সহজেই সংক্রমিত হয়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।

ডা. কবীর হোসেন আরও বলেন, গরমকালে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। শিশুদের নিয়মিত কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে, ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অ্যালার্জিজনিত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্তের ব্যবহৃত কাপড়, চাদর, বালিশ ও তোয়ালে অন্য কেউ ব্যবহার করলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মহিবুস ছালাম খান বলেন, প্রতিদিনই স্ক্যাবিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দিচ্ছি; কিন্তু সচেতনতার অভাবে রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। আক্রান্তদের ব্যবহৃত পোশাক, গামছা ও বিছানার চাদর নিয়মিত ধুয়ে রোদে শুকানো জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আলাদা বিছানায় ঘুমানো উচিত।


রাউজানে চিকিৎসাসেবা পেলেন হাজারো মানুষ

রাস উৎসবে ব্যতিক্রম উদ্যোগ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের রাউজানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। রাউজান সদর মুন্সিরঘাটা উপজেলা কেন্দ্রীয় মন্দির রাস বিহারী ধামে রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষে্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, বিনামূল্যে ওষুধ ও চশমা বিতরণ এবং রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচী গত বুধবার পালন করা হয়। এই চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহাজাহান। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী এক হাজার নারী-পুরুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। এরমধ্যে বিভিন্ন রোগের ৭০০জন, চক্ষুরোগী ৩০০জন, পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষের মাঝে ওষুধ বিতরণ, ২৫০জন মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। চক্ষুরোগীদের এর মধ্যে চোখের ছানি পড়া ৫০জন রোগীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ, ফ্যাকো সার্জন অ্যান্ড নিউরো অফথালমোলজিস্ট ডা. তনিমা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অনুসেন দাশগুপ্ত, মানসিক রোগ, মনো-যৌনরোগ ও মাদকাসক্তি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডা. হিমাদ্রী মহাজন, প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. চম্পা চৌধুরী, নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ‘চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রোগাক্রান্ত মানুষ সকাল থেকে ভীড় করেন। কেয়ার ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও রাউজান হেলথ কেয়ার সেন্টারের সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা এক হাজারের বেশি মানুষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওষুধ ও চশমা বিতরণ করা হয়েছে। চক্ষুরোগীদের মধ্যে চোখের ছানি পড়া নারী-পুরুষদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হবে। প্রসঙ্গত, রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষ্যে গত সোমবার ৩ নভেম্বর থেকে ৬দিনব্যাপী মতহী ধর্মীয় সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লীলা প্রদর্শনী, মহা প্রসাদ বিতরণ ও ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞসহ নানা কর্মসূচী শুরু হয়েছে।


ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ছেই, একদিনে সর্বোচ্চ ১০ মৃত্যুর রেকর্ড

*নভেম্বরের পাঁচ দিনেই ২৪ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫ হাজার ১৩০ জন *চলতি বছর মৃত্যু দাঁড়াল ৩০২, হাসপাতালে ৭৪ হাজার ৯৯২
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছর এডিশ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও চলতি নভেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া জনমনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করার কথা। সেই রেশ চলতি নভেম্বর মাসে এসেও দেখা দিয়েছে। অক্টোবরের শেষে এবং চলতি মাসের শুরুতে বৃষ্টিপাত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে একাধিক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করেছিলেন। এখন মাসের শুরু থেকে যে হারে রোগী বাড়ছে এবং ডেঙ্গুতে মৃত্যু ঘটছে তাতে এসব শঙ্কা এখন সত্যি হওয়ার পথে।

এদিকে দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা একদিনের হিসাবে এ বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৬৯ জন রোগী। এ নিয়ে চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৯৯২ জনে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, এদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন করে মারা গেছেন বরিশাল বিভাগে ও খুলনা বিভাগে।

এদিকে চলতি বছর এর আগে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর তথ্য আসে ২১ সেপ্টেম্বর। সেদিন দেশে ৯ জনের মৃত্যু ও ৭৪০ জনের হাসপাতালে ভর্তির তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এইডিস মশাবাহিত রোগে এ নিয়ে চলতি বছর ৩০২ জনের প্রাণ গেল। এর মধ্যে নভেম্বরের পাঁচ দিনে মৃত্যু হলো ২৪ জনের। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হন ৫ হাজার ১৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় অক্টোবরে; ৮০ জন। এর আগে ৭৬ জনের মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসে।

এছাড়া অগাস্টে ৩৯ জন, জুলাইয়ে ৪১ জন, জুনে ১৯ জন, মে মাসে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন ও জানুয়ারিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ডেঙ্গু নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন, অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এছাড়া সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন এবং অক্টোরে হাসপাতালে ভর্তি হন ২২ হাজার ৫০ জন।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় এবং ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।


দ্বীপবাসীর চিকিৎসার স্বপ্ন নিয়ে মেডিকেলে পড়ছেন দুই বোন

যেখানে ডাক্তার নেই, সেখানেই ফিরবেন চিকিৎসক হয়ে
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে, সাগরের বুকে জেগে থাকা এক অনিন্দ্য সুন্দর দ্বীপ সেন্টমার্টিন। নীল সাগর, ঝলমলে প্রবাল আর শান্ত প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর এই দ্বীপে বাস করেন প্রায় ১১ হাজার মানুষ। কিন্তু এই সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক কঠিন বাস্তবতা চিকিৎসা সেবার ভয়াবহ অভাব।

এই মর্মান্তিক বাস্তবতার মাঝেই জন্ম নিয়েছে আশার এক নতুন আলো দুই বোন ফাতেমা বেগম তামান্না ও সুমাইয়া আক্তার সুমি। তারা দুজনই সেন্টমার্টিনের সন্তান। ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন, কিভাবে চিকিৎসা না পেয়ে প্রিয়জন হারিয়ে কেঁদেছেন প্রতিবেশীরা। সেই অসহায় কান্না তাদের ভেতরে জন্ম দিয়েছে এক অদম্য ইচ্ছাশক্তি একদিন নিজেরাই চিকিৎসক হবেন, দ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।

ফাতেমা বেগম তামান্না বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষে এবং ছোট বোন সুমাইয়া আক্তার সুমি পড়ছেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে। দুজনের লক্ষ্য একটাই এমবিবিএস শেষ করে ফিরে যাওয়া নিজ দ্বীপে, যেখানে আজও এক ফোঁটা চিকিৎসা সেবা পেতে মানুষকে নির্ভর করতে হয় মূল ভূখণ্ডের ওপর।

ফাতেমা বেগম তামান্না বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখেছি গর্ভবতী মায়েরা ইমার্জেন্সি চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন। সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ যেতে তিন ঘণ্টা লাগে। মাঝপথে অনেকেই মারা যান। তখন মনে হতো আমরা যদি কিছু করতে পারতাম!’

তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে করোনাকালে। সুমি আক্তার সুমি স্মৃতিচারণ করেন, ‘গত চার মাস আগে আমরা বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা দ্বীপে আটকে পড়েছিলাম। তখন আমার ফুফু অসুস্থ হয়ে পড়েন। টেকনাফে নেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। সেন্টমার্টিনের হাসপাতালে কোনো ডাক্তারও ছিল না। চিকিৎসার অভাবে আমার ফুফু মারা যান। তখন মনে হয়েছিল আমি যদি ডাক্তার হতাম, ফুফুকে বাঁচাতে পারতাম। সেই ঘটনার পরই সুমি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন, চিকিৎসক হয়েই নিজের দ্বীপের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন।

দুই বোনের শিক্ষাজীবনও অনুকরণীয়। ফাতেমা বেগম তামান্না ২০১৯ সালে কক্সবাজার বাইতুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি থেকে এসএসসি ও কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। সুমাইয়া আক্তার সুমি ২০২০ সালে একই স্কুল থেকে এসএসসি ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বাকলিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়েছেন। তাদের এই সাফল্য শুধু পারিবারিক গর্ব নয়, পুরো দ্বীপবাসীর গর্ব।

সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা অনেকবার এমন ঘটনা দেখেছি, যখন কারো সামর্থ্য নেই চিকিৎসা নিতে। তখন বুঝেছি এই দ্বীপের মানুষ শুধু দরিদ্র নয়, চিকিৎসা বঞ্চিতও। তাই আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, একদিন এই অভাব আমরা পূরণ করব।’

তামান্না ও সুমির বাবা মৌলভী আবদুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপে চিকিৎসার অভাবে মানুষ মরতে দেখেই মেয়েদের ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখি। তাই তাদের মেডিকেলে পাঠিয়েছি। একদিন তারা আমার সেই আশা পূরণ করবে ইনশাআল্লাহ।’

উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. নাসরিন জেবিন জানান, ‘সেন্টমার্টিনে হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার নেই। দুই মেয়ের স্বপ্ন নিয়ে আমি গর্বিত। তারা অনেক দূর এগিয়েছে। একদিন নিজের জন্মভূমির চিকিৎসা সংকট দূর করবে এটাই আমার বিশ্বাস।’

আজ সেন্টমার্টিনের মানুষ তাদের নাম উচ্চারণ করে আশার আলো হিসেবে। কেউ বলেন, ‘ওরা আমাদের গর্ব,’ কেউ বলেন, ‘ওরা ফিরলে হয়তো আমাদের সন্তানদের আর চিকিৎসার জন্য সাগর পার হতে হবে না।’

সাগরের ঢেউয়ের মতোই প্রবল তাদের ইচ্ছাশক্তি। দারিদ্র্য, দূরত্ব কিংবা ঝড় কিছুই তাদের স্বপ্নকে থামাতে পারবে না। তারা প্রমাণ করতে চায়‘যে দ্বীপে মৃত্যু ছিল নিত্যসঙ্গী, সেখানেও একদিন জন্ম নিতে পারে জীবন বাঁচানোর গল্প।’


বোয়ালখালী ৫০ শয্যার হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা

একযোগে ৯ নার্সের গণবদলি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

হঠাৎ করে চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োজিত ৯ জন নার্স-মিডওয়াইফকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে প্রতিভূ ব্যতীত এ আদেশে অন্তর্বিভাগের (ইনডোর) স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়া আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

গত ২৮ অক্টোবর থেকে পৃথক কয়েকটি পত্রে এ বদলি এবং সংযুক্তির অফিস আদেশ দিয়েছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসাম্মৎ মঞ্জু আখতার। এর বিপরীতে মাত্র একজন নার্সকে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।

এ আদেশের ফলে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তর্বিভাগে (ইনডোর) স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সাথে প্রসূতি সেবা ও অপারেশন থিয়েটারের সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসবে।

জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঞ্জুরিকৃত পদ রয়েছে সিনিয়র স্টাফ নার্স ২৯টি ও মিডওয়াইফ (ধাত্রী) পদ রয়েছে ১০টি। এ পদে কর্মরত রয়েছেন নার্স ২৪ জন ও মিডওয়াইফ ৪ জন। এর মধ্যে ৫ জনকে বদলি ও ৪ জনকে সংযুক্তি করে আদেশ দেওয়া হয়ছে। ২ জন কোর্সে ও ১ মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করছেন।

জানা গেছে, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড রয়েছে। প্রায় সময় নির্ধারিত বেডের চেয়ে অধিক রোগী ভর্তি হন। নরমাল ডেলিভারি, সিজারিয়ান ডেলিভারি, নাক-কান-গলা ও অর্থোপেডিক্স সার্জারি হয়ে থাকে নিয়মিত। নার্স ও মিডওয়াইফ সংকটের কারণে এসব সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ৩৯টি নার্স ও মিডওয়াইফ পদের বিপরীতে ২৮ জন নিয়োজিত ছিলেন। এই স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে তিনটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন সকাল, বিকেল ও রাত—এই তিন পালায় স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হতো। তিনজনের কাজ একজনকে করতে হয়। তার ওপর প্রতিভূ ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত অবিবেচনাবশত।

হঠাৎ উপজেলা থেকে গণহারে নার্স ও মিডওয়াইফদের সরিয়ে নেওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো চিকিৎসাসেবায় স্থবিরতা নেমে আসবে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, ‘৫০ জন রোগীর জায়গায় হাসপাতালে ৮০-১০০ জন ভর্তি থাকে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী থাকলেও নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল। এর মধ্যে বদলি ও সংযুক্তির ফলে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগীয় সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।

এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগের তুলনায় ৪-৫ গুন ডেলিভারি, মাইনর, মেজর সার্জারি চলমান রয়েছে জানিয়ে ডা.জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, ‘হঠাৎ এ বদলি আদেশ বিপাকে ফেলে দিয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে বদলি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। কিন্তু নার্সদের গণহারে যে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে তাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতামত নেওয়া হয়নি। নার্সগণ অনলাইনে বদলীর আবেদন করেছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় না করে এভাবে নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের বদলি ও সংযুক্তি আদেশ করা অত্যন্ত অবিবেচনাপ্রসূত হয়েছে।’

তিনি আরও জানান, বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। জনস্বার্থে নার্স প্রতিভূ ছাড়া ছাড়পত্র দিলে হাসপাতালের সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।


banner close