বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বিএসএমএমইউয়ে সমাবর্তন: ‘এত অপমান, এত অবহেলা, এত অনাদর’

গত ১৩ মার্চ বিএসএমএমইউয়ের চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়।
আপডেটেড
১৫ মার্চ, ২০২৩ ২২:৪৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৩ ২২:৪৫

‘কেমন যে অপমানিত অনুভূতি হচ্ছে সমাবর্তনের পর থেকেই। এত অনাদর, এত অপমান, এত অবহেলা জীবনে কখনো অনুভব করিনি। অথচ দাওয়াত দিয়ে মা-বাবাকে নিয়ে সেই অপমান বয়ে বেড়াচ্ছি সমাবর্তনের পর থেকে।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সমাবর্তনে অংশ নেয়া এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথাগুলো বলছিলেন দৈনিক বাংলাকে। কেবল এই চিকিৎসকই নন, সমাবর্তনে যোগ দেয়া হাজারও চিকিৎসকের কণ্ঠেও একই কথার প্রতিধ্বনি। তার কিছু কিছু উঠে এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভার্চুয়াল পাতাতেও।

চিকিৎসকরা বলছেন, সমাবর্তনে অংশ নিয়ে স্মরণকালের সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতা নিয়ে দিন পার করছেন তারা। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ এই সমাবর্তনে অব্যবস্থাপনা আর নানা ধরনের গাফিলতির দায় কোনোভাবেই কোনো অজুহাত দিয়ে বা অন্য কোনো বিভাগের ওপর দায় চাপিয়ে এড়াতে পারে না।

গত সোমবার বিএসএমএমইউয়ের এই চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে যারা পিএইচডি, এমডি, এমএস, এমফিল, এমএমএড, এমটিএম, এমপিএইচ, ডিপ্লোমা, বিএসসি ইন নার্সিং ও এমএসসি নার্সিং ডিগ্রি অর্জন করেছেন, তারা এই সমাবর্তনে অংশ নেন।

বিএসএমএমইউয়ের তথ্য বলছে, সাড়ে তিন হাজার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর চিকিৎসক ও সেবিকা অংশ নেন। এর মধ্যে মেডিসিন অনুষদের প্রায় আট শ, সার্জারি অনুষদের প্রায় এক হাজার চার শ, শিশু অনুষদে প্রায় তিন শ, বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল অনুষদের পাঁচ শতাধিক, প্রিভেনটিভ অ্যান্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদের প্রায় তিন শ এবং ডেন্টাল অনুষদের শতাধিক স্নাতকোত্তর চিকিৎসক সমাবর্তনের জন্য নিবন্ধিত ছিলেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন নার্সিং অনুষদের শতাধিক স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সেবিকা। সমাবর্তনে তিনজনকে পিএইচডি ডিগ্রি ও ৩৫ জনকে ‘চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক’ দেয়া হয়।

চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনুষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় থেকেই চরম অব্যবস্থাপনার শুরু। সমাবর্তন কত তারিখে হবে, তা শুরুতে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল না। পরে তারিখ জানানো হবে বলে উল্লেখ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে। এরপর দফায় দফায় নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ বর্ধিত তারিখ ছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন নিবন্ধন শেষ হয় এবং ১৩ মার্চ সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। তবে এ তারিখ ঘনিয়ে এলেও সমাবর্তনে অংশ নেয়া চিকিৎসকরা মূল অনুষ্ঠানসূচি নিয়ে ছিলেন অন্ধকারে। আয়োজনের দুয়েকদিন আগেও অনুষ্ঠানের খুঁটিনাটি কেউই জানতেন না। বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইটেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য হালানাগাদ করা হয়নি।

চিকিৎসকদের অভিযোগ, সমাবর্তনের আগে গত ১১ ও ১২ মার্চ গাউন দেয়ার প্রক্রিয়ায় ছিল অব্যবস্থাপনা। কার্ড সংগ্রহ করতে গিয়েও বেগ পেতে হয় তাদের। কারণ প্রত্যেককে নিবন্ধিত সবার তথা প্রায় সাড়ে তিন হাজার কার্ডের মধ্য থেকে নিজের কার্ডটি খুঁজে বের করতে হয়েছে। কার্ড খুঁজে পেতে ঝামেলা হচ্ছে জানালে সেখানে উপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বিরূপ আচরণ করেছেন।

এত বড় একটি আয়োজনের জন্য বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত ছিল না অভিযোগ করে চিকিৎসক ও সেবিকারা বলেন, সমাবর্তনের দিন সকালে ছিল না নাশতার ব্যবস্থা। সমাবর্তনে অংশ নেয়া স্নাতকদের যে গাউন দেয়া ছিল সেটি ছিল অত্যন্ত নিম্ন মানের। হাতলবিহীন একটি কাগজের ব্যাগে সরবরাহ করা গাউনের অধিকাংশই ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ, যার কোনোটাতে ছিল না বোতাম, কোনোটা ছিল ছেড়া, কোনোটার সেলাই খোলা ছিল।

সমাবর্তনের দিনের দুপুরের খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, সেই খাবারের মান ছিল ভয়াবহ। অনেক চিকিৎসক খাবার পাননি। শুধু তাই নয়, ২০০ মিলিলিটার পানির বোতল দিয়ে অনেককে দুজনে মিলে ভাগ করে পান করতে বলা হয়। অন্যদিকে লাল রঙের কার্ডধারী অল্প কিছু চিকিৎসক স্নাতককেই কেবল মূল অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের সুযোগ পান। সবুজ কার্ডধারী বাকিরা মূল অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের কোনো সুযোগ পাননি। তাদের বাইরে বসিয়ে বড় মনিটরে দেখানো হয় সমাবর্তনের অনুষ্ঠান। আবার অতিথি হিসেবে পরিবারের সদস্যদের নামে কার্ড ইস্যু করা হলেও তাদের মধ্যে যারা এসেছেন, তাদের কেউও কনভোকেশনের মূল হলে ঢুকতে পারেননি। অনেক চিকিৎসকের মা-বাবাকে বসতে হয়েছে বাইরের সিঁড়িতে।

সমাবর্তনের প্রকাশনাতেও নানা ধরনের ভুল রয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। সমাবর্তন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সাজানো ব্যানার-ফেস্টুনের লেখাও ছিল ভুল। সমাবর্তনের পর চিকিৎসকদের ক্ষোভের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজ থেকে প্রকাশনা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে এক পোস্ট দেয়া হলেও ১৫ মিনিটের মধ্যেই সেটি সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, সনদ বিতরণের সময় ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। মেডিসিন ফ্যাকাল্টির সনদ দেয়া হয় দুটি বুথ থেকে। সার্জারি ফ্যাকাল্টির সনদ দেয়া হয় একটি বুথ থেকে। কয়েক হাজার চিকিৎসকের সনদ বিতরণে জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি কর্তৃপক্ষের ছিল না। একজনের সনদ আরেকজনকে দিয়ে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এ ছাড়া সমাবর্তনের নামে আর্থিক অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ।

সমাবর্তন নিয়ে চিকিৎসকদের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান দুলাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, প্রথমে এত মানুষের জন্য ভেনু খুঁজে পেতে সমস্যা হয়েছে আমাদের। কারণ রাষ্ট্রপতির সময় পেয়েছি মাত্র ২০ দিন আগে। তাই আমাদের এভাবে অনুষ্ঠানস্থল প্রস্তুত করতে হয়েছে। সেখানে সবার পক্ষে মূল অনুষ্ঠানস্থলে ঢোকার সুযোগ রাখা সম্ভব হয়নি।

চিকিৎসকরা খাবার ও গাউন নিয়ে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রক্টর বলেন, স্টার থেকে খাবার আনা হয়েছে। সেই একই খাবার উপাচার্যসহ আমরা প্রত্যোকে খেয়েছি। তাদের কোনোভাবেই নিম্ন মানের খাবার দেয়া হয়নি। আর কয়েক হাজার গাউনের ভেতরে ছেড়া-ফাটা দুয়েকটি গাউন থাকতেই পারে। যিনি পেয়েছিলেন, আমাদের জানালেই গাউন বদলে দিতাম।

সমাবর্তন প্রকাশনায় একই পাতায় ২৪ চিকিৎসকের একই নামের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসএমএমইউ প্রক্টর বলেন, এই বিভ্রাটের জন্য দুঃখিত। তবে প্রকাশনাটি সবাইকে দেয়া হয়নি। আমরা ফের এটি নিয়ে কাজ করছি। পুরোটা সংশোধন করে এরপর সবাইকে দেব।


স্বাস্থ্যসেবা: ৫ বছরে ব্যয় বৃদ্ধি তিন গুণ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ মার্চ, ২০২৪ ০০:০১
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলছে। স্বাস্থ্য খাতে ক্রমবর্ধমান বাড়তি ব্যয় দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কঠিন সংকটে ফেলেছে। বিগত পাঁচ বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে এ খাতে ব্যয় তিন গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বুধবার সানেমের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের তুলনায় গড় মাথাপিছু স্বাস্থ্য ব্যয় ২০২৩ সালে তিন গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে মাসিক ১ হাজার ৭০৪ টাকায়।

তবে এ বর্ধিত স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় সব আয়ের মানুষের মধ্যে সমান নয়। দরিদ্রতম ২০ শতাংশ পরিবারের জন্য এ বৃদ্ধি মাত্র দ্বিগুণ ছিল, যেখানে সবচেয়ে ধনী ২০ শতাংশ পরিবারের জন্য বৃদ্ধি ছয় গুণ। সানেম মনে করছে, স্বাস্থ্য ব্যয় বাড়ার ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস মহামারির গুরুতর প্রভাব থাকতে পারে।

সানেমের গবেষণায় বলা হয়েছে, করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রধান সাফল্য ছিল যথাসময়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা। বাংলাদেশে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি কোভিড-১৯ টিকা দেওয়া শুরু হয়। এ সময় ৭৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ শতাংশ নারী ভ্যাকসিনের দুটির বেশি ডোজ পেয়েছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ওষুধের দাম ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে, যা স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। করোনা মহামারি ও তার পরবর্তী সময়ে দেশের উৎপাদনমুখী বিভিন্ন খাত মুনাফা সংকটে ভুগলেও ওষুধ কোম্পানিগুলো তাদের ভালো প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে।

ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর মুনাফার প্রবৃদ্ধি গড়ে ১৫ শতাংশের বেশি, যা বাংলাদেশের অন্য যেকোনো খাতের তুলনায় আকর্ষণীয়। ওষুধের দাম বাড়ায় অনেক কোম্পানির মুনাফা বাড়লেও সামর্থ্যহীন মানুষ ওষুধ খাওয়া কমিয়েছেন।

জরিপের তথ্য অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে গ্রামাঞ্চলে দারিদ্র্যের হার কমেছে। একই সময়ে দারিদ্র্যের হার বেড়েছে শহরাঞ্চলে। ২০১৮ সালে গ্রামীণ দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক ৫ থেকে ২০২৩ সালে ২১ দশমিক ৬ শতাংশে নামলেও শহুরে দারিদ্র্যের হার ১৬ দশমিক ৩ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

জরিপে দেখা যায়, উচ্চ দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ, গ্রামীণ এলাকায় ২১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। নিম্ন দারিদ্র্যসীমা অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে চরম দারিদ্র্যের হার পরিমাপ করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, গ্রামীণ এলাকায় ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও শহরাঞ্চলে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বোচ্চ দারিদ্র্যের হার পরিমাপ করা হয়েছে রংপুর ও বরিশালে। রংপুরে এ হার ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ এবং বরিশালে ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ।

বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের সূচকেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা যায়। গ্রামীণ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের হার ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ২৭ দশমিক ৬ শতাংশে। অন্যদিকে, শহরাঞ্চলে তা ২০১৮ সালে ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২০২৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ শতাংশে।

গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সরকার প্রদত্ত সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতায় এসেছে ৩৭ শতাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এর মধ্যে টিসিবি ফ্যামিলি কার্ড সেবা সর্বোচ্চ সংখ্যক তথা ১৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ পরিবারের কাছে পৌঁছেছে। এ ছাড়া বার্ধক্য ভাতা ৮ দশমিক ৯ শতাংশ; বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা ও দুস্থ মহিলা ভাতা ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ, আর্থিকভাবে অসচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা ৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ভাতা ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছেছে। কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই অর্থাৎ ৪৭ শতাংশ সেবা খাতে নিযুক্ত। ৩৬ কৃষি ও ১৮ শতাংশ শিল্প খাতে কর্মরত। জাতীয় পর্যায়ে বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৯ শতাংশ। গ্রামীণ এলাকায় এ হার ৩ দশমিক ৬ ও শহরাঞ্চলে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ।


প্রতি ৬টি শিশুর মধ্যে ১টি শিশু সাইবার বুলিংয়ের শিকার: ডব্লিউএইচও

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৭ মার্চ, ২০২৪ ১৬:২৮
বাসস

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ১১ থেকে ১৫ বছর বয়সী প্রায় ১৬ শতাংশ শিশু সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে যা চার বছর আগে ১৩ শতাংশ ছিল। বিশ্বের ৪৪টি দেশের ওপর এ সমীক্ষা চালানো হয়। খবর এএফপি’র।

বুধবার ইউরোপ বিষয়ক ডব্লিউএইচও’র আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রতিবেদনটি সাইবার বুলিং এবং সহিংসতাকে মোকাবেলায় আমাদের সকলের সজাগ হওয়ার একটি আহ্বান। যখন যেখানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটুক না কেন।’

‘স্কুল পড়ুয়া শিশুদের মধ্যে স্বাস্থ্য আচরণ’ শীর্ষক সমীক্ষা অনুসারে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ১৫ শতাংশ ছেলে এবং ১৬ শতাংশ মেয়ে অন্ততপক্ষে একবার সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

জাতিসংঘের এ সংস্থা উল্লেখ করেছে, মহামারীটি কিশোর-কিশোরীদের একে অপরের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে দেখা গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সহকর্মী সহিংসতার ভার্চুয়াল রূপগুলো বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠে।
বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় লকডাউনের চলাকালে তরুণ সমাজ ক্রমবর্ধমানভাবে ভার্চুয়াল হয়ে উঠে।’

এতে আরও বলা হয়, অন্যান্য বুলিং সামান্য বৃদ্ধি পেলেও অনেকাংশে স্থিতিশীল রয়েছে।

গত কয়েক মাসে ১১ শতাংশ ছেলে ও মেয়ে অন্ততপক্ষে দুই বা তিনবার স্কুলে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। চার বছর আগে এই হার ছিল ১০ শতাংশ।

বিস্তারিত কিছু উল্লেখ না করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, এক্ষেত্রে বুলগেরিয়া, লিথুয়ানিয়া, মলদোভা এবং পোল্যান্ডে ছেলেদের হাতে সবচেয়ে বেশি মাত্রায় সাইবার বুলিংয়ের ঘটনা ঘটে। স্পেনে সবচেয়ে কম এ ধরনের ঘটনা ঘটে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।

সমীক্ষাটি ইউরোপ, মধ্য এশিয়া এবং কানাডা জুড়ে ৪৪টি দেশের ২ লক্ষ ৭৯ হাজার শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।

বিষয়:

আরও ২৪ জনের করোনা শনাক্ত

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৪ জন। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।

মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৬ হাজার ৬৯৪ জন। সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪২৬টি।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ।


চিকিৎসকরা রাস্তায় নেমে আসুক তা চাই না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সমস্যা দ্রুতই সমাধান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘আমি চাই না, আমার কোনো ডাক্তার এভাবে রাস্তায় নেমে আসুক। যত দ্রুত তোমাদের এই সমস্যা সমাধান করা যায়, আমি দেখব।’ শনিবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।

আন্দোলনরত পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকদের সম্পর্কে আমি ভালো করে জানি। তোমরা বাধ্য হয়েই এসেছো। আমি গ্রাম থেকে উঠে এসেছি, আমি জানি। সুতরাং যত দ্রুত তোমাদের সমস্যা সমাধান করা যায়, আমি দেখব। এইটুকু আমি তোমাদের কথা দিলাম।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও হাসপাতালের মূল তোমরা। তোমরা যদি ভালো করে কাজ না করো সব সুনাম-দুর্নাম তোমাদের ওপর। তোমরা ছাড়া আমি উন্নতি করতে পারব না। আমি তোমাদের দাবি দেখব।’

ওই সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. খুরশীদ আলম আন্দোলনরতদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমাদের সময় ভাতা ছিল না। আমরা ভাতা চালু করেছি। স্যার যেহেতু কথা দিয়েছেন, তোমরা এইটুকু আস্থা রাখবে।’

জবাবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা বলেন, ‘আমাদের এর আগেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের ভাতা বন্ধ করে দিল কেন স্যার, আমরা নিরুপায় হয়ে আপনাদের কাছে এসেছি।’

এর আগে টানা কয়েক দিন ধরে বকেয়া ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। গত ১৬ মার্চ বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) ভবনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা।

আন্দোলনরত চিকিৎসকরা জানান, প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা করে ছয় মাসে দেড় লাখ টাকা ভাতা দেওয়া কথা। এর আগে ২০ হাজার করে যখন ভাতা ছিল তখন ছয় মাস পরপর এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হতো। এ হিসেবে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসের টাকা জানুয়ারির শুরুতে দেওয়ার কথা। কিন্তু মার্চের অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও ভাতা দিতে নানাভাবে টালবাহানা করা হচ্ছে। নিয়মিত যদি ভাতা না পাই তাহলে আমরা কীভাবে চলব, আর পরিবার কীভাবে চলবে।

পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের চার দফা দাবি

১. ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং পোস্টগ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করতে হবে। ২. পোস্টগ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের (এফসিপিএস, রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্ট) বকেয়া ভাতা প্রদান করতে হবে। ৩. ১২টি প্রাইভেট ইনস্টিটিউটের নন-রেসিডেন্ট ও রেসিডেন্টদের আকস্মিক ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভাতা পুনর্বহাল করতে হবে। ৪. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।


বাড়ছে করোনা এক দিনে শনাক্ত ৩৯ জনের  

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ সময় নতুন করে ৩৯ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৮ জনে।

বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো করোনাবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৩৯টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩৭৯টি।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গবিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৬ হাজার ৪৬০ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছয় দশমিক ১০ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় একজন আইসোলেশনে এসেছেন এবং আইসোলেশন থেকে দুইজন ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ৯৫০ জন এবং আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৬৮৭ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ২৬২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।


চলতি মাসে করোনায় ঝরেছে তিন প্রাণ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১৯ মার্চ, ২০২৪ ২০:৩৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ময়মনসিংহের বাসিন্দা। এ নিয়ে চলতি মাসে করোনায় তিনজনের মৃত্যু হলো। এর আগে ৮ মার্চ করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছিল। আর চলতি বছর করোনায় মৃত্যু হলো ১৬ জনের।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সবশেষ করোনা শনাক্ত হওয়া ৩১ জনের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে শনাক্ত হয়েছে ২৮ জন। আর বাকি তিনজন চট্টগ্রামে। ওই সময় করোনা সন্দেহে ৬০২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। রোগী শনাক্তের হার ৫ দশমিক ১৫।

দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ ৪৯ হাজার ২১৯ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১৬ হাজার ৪১৪ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৯৩ জন।

বাংলাদেশে করোনার অমিক্রণ ধরনের একটি উপধরন জেএন.১-এ আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। দ্রুত ছড়ানোর কারণে জেএন.১-কে ‘ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিছু সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে।

এ অবস্থায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে, যেমন হাসপাতাল বা চিকিৎসাকেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, তাদের সতর্কতা হিসেবে মাস্ক পরতে হবে। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চতুর্থ ডোজ টিকা নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় সরকার। করোনায় প্রথম মৃত্যুর কথা জানা যায় ওই বছরের ১৮ মার্চ। এর তিন বছর পর গত বছরের মে মাসে করোনার কারণে জারি করা বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

বিষয়:

তিন মাসে ডেঙ্গুতে ২০ মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নির্মূলে করণীয় বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন ছাড়াও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম ও শেখ ফজলে নূর তাপস উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের প্রথম তিন মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি। এ বছর রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। বিভাগভিত্তিক তথ্য বলছে, এ বছর ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪৫ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ৪৫৫ জন, বরিশালে ১৯০ জন, খুলনায় ৯৩ জন, রাজশাহীতে ৩৬ জন, ময়মনসিংহে ২৮, রংপুরে ১৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ৬ জন।

আন্তমন্ত্রণালয় সভায় দেশের সব হাসপাতালকে ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেব। প্রতিটি ওয়ার্ডে মানুষকে সচেতন করা, মানুষকে বোঝানো যে ডেঙ্গু কীভাবে হয়। আমাদের হাসপাতালে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে যে, তারা যেন প্রস্তুত থাকেন।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রোগীরা যখন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয় বা জ্বর হয় তারা যেন অতি দ্রুত হাসপাতালে আসে। অনেক সময় দেখা যায় অনেক দেরিতে আসে। তখন কিছু করা যায় না। এই মেসেজগুলো আমরা দিচ্ছি।’

এদিকে, এক বছর আগে বিটিআই আমদানি নিয়ে কেলেঙ্কারির পর এবার এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে নিজেরাই জৈব কীটনাশক আমদানি করার কথা জানিয়েছেন উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথমে বিটিআই এনেছিলাম একটা ঠিকাদারের মাধ্যমে। এটার মূল্য ছিল ৮৫ লাখ টাকা। টেস্ট কেস হিসেবে বিটিআই চেয়েছিলাম। কিন্তু বিটিআই দেখেছি ৫ টন। যে ঠিকাদার নিয়ে এসেছেন সে এটাকে মিস ডিক্লিয়ারেশন করেছে এবং যা ইচ্ছা তাই করেছে এবং সোশ্যাল মিডিয়ার সবখানে বলেছেন যে, আমরা হাজার হাজার কোটি টাকা বানায় ফেলিছি। ৫ টনের মূল্য ছিল ৮৭ লাখ টাকা। সেই ৫ টন বিটিআই আদালতের নির্দেশনার কারণে ব্যবহার করিনি।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ জন্য এখন সরাসরি প্রথমবারের মতো বিটিআই আমদানি করতে যাচ্ছি। আজকে এখানে যারা বিশেষজ্ঞ আছেন ওনারাও বলেছেন যে কীভাবে অর্গানিক, বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট করা যায়। বিটিআই হচ্ছে বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্টের মধ্যে উত্তম প্রস্তাব। এটি নিয়ে আমরা অলরেডি কাজ করেছি। আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। গুলশান লেক যেদিন প্রথম পরিষ্কার করি সেখান থেকে কোটি কোটি মশা বের হয়ে গেছে। আগামীকাল যাব উত্তরাতে রাজউকের প্রত্যেকটি খাল পরিষ্কার করার জন্য।’

শুক্রবারের মধ্যে বিটিআই আমদানির প্রমাণ না দিতে পারলে ব্যবস্থা

সরকারি সংস্থাগুলোকেও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান ডিএনসিসি মেয়র। তিনি বলেন, ‘আমাদের যে যার যার সংস্থা তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। আপনারা দেখেছেন পেট্রোবাংলার নিচে থেকে লার্ভিসাইড পেয়েছি, জরিমানা করেছি ৫ লাখ টাকা করে। গতবার জাপান গার্ডেনকে জরিমানা করেছি তিন কোটি ৮৭ লাখ টাকা। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। লেটস ওয়ার্ক টুগেদার। আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং আমরা অবশ্যই ফল পাব।’

গত বছর দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সেবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। আর মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

বিষয়:

৩ হাজারের বেশি রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিল বিএসএমএমইউ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নানা আয়োজনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন করা হয়েছে।

আজ রোববার এ উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে ছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে ও ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ ফ্রি সার্জারি ও (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) সেবা প্রদান, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বৃক্ষরোপণ, কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ইত্যাদি।

আজ সকালে এসব কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. রেজাউর রহমান রেজা জানান, ৩ হাজার ৩ ৫২ জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে বহির্বিভাগ-১-এ মেডিসিন, শিশু ও ডেন্টাল অনুষদে ২ হাজার ৭৫ জন এবং বহির্বিভাগ-২-এ সার্জারি অনুষদে ১ হাজার ২৭৭ রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তি


স্ট্রোকের যত কারণ ও জটিলতার চিকিৎসা

আপডেটেড ১৬ মার্চ, ২০২৪ ১০:৪৩
ডা. মো. সফিউল্যাহ প্রধান

স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ। আমাদের মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জটিলতার কারণে এই রোগ দেখা দেয়। প্রতিবছর বিশ্বে ১ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ স্ট্রোক করেন। প্রায় ৬৫ লক্ষ মানুষ স্ট্রোকের কারণে মৃত্যুবরণ করেন। ৫০ লক্ষ মানুষ স্ট্রোকের কারণে স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়েন। প্রতি ৬ জনে ১ জন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। অনেকেই স্ট্রোককে হার্টের রোগ মনে করেন, যা একদমই ভুল। এই ভুল ধারণার কারণে রোগীরা বাড়তি ঝুঁকির সম্মুখীন হন।

স্ট্রোকের যত কারণ
১. উচ্চ রক্তচাপ
২. ডায়াবেটিস
৩. উচ্চ কোলেস্টেরল
৪. হৃদরোগ (করোনারি হৃদরোগ, ধমনী ফাইব্রিলেশন, হার্টের ভালভ রোগ, ক্যারোটিড ধমনী)
৫. অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ
৬. ধূমপান
৭. বেশি ওজন
৮. অপুষ্টি
৯. কায়িক পরিশ্রম না করা
১০. হেমোরেজিক স্ট্রোকে পূর্ববর্তী স্ট্রোক বা টিআইএ
১১. কোয়াগুলোপ্যাথি
১২. প্রদাহ (দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ মস্তিষ্কের কোষের ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে)
১৩. ধমনী বিকৃতি
১৪. অ্যানিউরিজম
১৫. স্থূলতা
১৬. প্রি-একলাম্পসিয়া
১৭. ভাইরাল সংক্রমণ: রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, লুপাস
১৮. উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং মানসিক চাপ

লক্ষণ
১. শরীরের একদিক দুর্বল বা অবশ হয়ে যায়।
২. মুখের যেকোনো একপাশ বেঁকে যায়।
৩. কথা অস্পষ্ট হয়ে যায় বা জড়িয়ে যায়।
৪. চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়।
৫. তীব্র মাথাব্যথা অনুভূত হয়।
৬. অজ্ঞান হয়ে যায়।

স্ট্রোক পরবর্তী জটিলতা
১. পক্ষাঘাত বা চলাফেরা করতে অসুবিধা।
২. পেশির ও অস্থিসন্ধির কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলা বা পঙ্গুত্ব।
৩. কথা বলতে বা গিলতে অসুবিধা।
৪. অবশ অংশে ক্ষত বা বেড সোর হওয়া।
৫. শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা।
৬. মানসিক ও আচার-আচরণে অসুবিধা।

জটিলতার চিকিৎসা
স্ট্রোক-পরবর্তী সময়ের চিকিৎসা কী হবে এটা নিয়েও রয়েছে নানা জটিলতা। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষই জানেন না স্ট্রোকে যদি কেউ প্যরালাইজড বা হয়ে পড়ে তবে তাকে কী চিকিৎসা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কার্যকর একটি পদ্ধতি ফিজিওফেরাপি ও পুনর্বাসন। রোগী যদি খুব দ্রুত ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসার আওতাধীন হয়, তবে প্রায় ৯৫ ভাগই আগের জীবনে ফিরে আসতে পারে। স্ট্রোকের পর রোগীর মাংসপেশি অবশ বা শক্ত হয়ে যায়। এসব রোগীর শারীরিক কার্যক্ষমতা বাড়াতে ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন চিকিৎসার গুরুত্ব অপরিসীম। স্ট্রোকের কারণে অধিকাংশ রোগীর শরীরের যেকোনো একপাশ অবশ বা প্যারালাইজড হয়ে যায়। এসময় রোগী তার স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে না। তাই যত দ্রুত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু করা যাবে, রোগী তত তাড়াতাড়ি সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

লেখক: ফিজিওথেরাপি, ডিজএবিলিটিস ও রিহেবিলিটেশন স্পেশালিষ্ট,
সহযোগী অধ্যাপক (আইআইএইচএস) ও কনসালটেন্ট ডিপিআরসি।


কিডনি রোগ মহামারির আকার ধারণ করতে পারে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ১০ বছর আগে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই কোটিতে। বৃদ্ধির হার এতই বেশি যে, অদূর ভবিষ্যতে এটা মহামারির আকার ধারণ করতে পারে।’

বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই কোটি। তাদের মধ্যে প্রতিবছর আকস্মিক কিডনি রোগীর সংখ্যা ২৫-৩০ হাজার, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগীর সংখ্যা ৩৫-৪০ হাজার। বাংলাদেশে কিডনি রোগের চিকিৎসক রয়েছেন প্রায় ৩০০ জন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দুটি কিডনির প্রতিটিতে প্রায় ১০-১২ লাখ ছাঁকনি রয়েছে। মানুষের জন্মগ্রহণের ৬ সপ্তাহের মধ্যেই কিডনির ছাঁকনি বা ফিল্টার মেমব্রেন পুরোপুরি তৈরি হয়। প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ২০০ লিটার রক্ত পরিশোধন করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীরের ১ থেকে ৩ লিটার বর্জ্য পদার্থ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়। কোনো কারণে এ ফিল্টার যখন বাধাপ্রাপ্ত হয় তখন আকস্মিক বা দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হতে পারে। কিডনির কার্যকারিতা যাচাই করাতে রক্তে ক্রিয়েটিনিন পরিমাপ করা যায়। যার মাধ্যমে কিডনি কতটুকু কাজ করছে বোঝা যায়। এ ছাড়া প্রস্রাবে নির্দিষ্ট মাত্রার বেশি প্রোটিন বা এলবুমিন থাকলে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ আছে বলে ধরা হয়।

এক সমীক্ষার উল্লেখ করে বলা হয়েছে- দেশের শতকরা ১৮ ভাগ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে ১১ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ শতাংশ এবং আইসল্যান্ডে ১০ শতাংশ মানুষ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত। আকস্মিক কিডনি রোগের কারণগুলো ডায়ারিয়া, রক্তক্ষরণ, কিডনি প্রদাহ, তীব্র সংক্রমণ, আকস্মিক হৃদরোগ, কিডনির ক্ষতিকারক কিছু ওষুধ, মূত্রনালির প্রতিবন্ধকতা। লক্ষণগুলো হলো প্রস্রাব কমে যাওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়া, শরীরে পানি আসা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়া। কিডনির কার্যকারিতা তিন মাস বা তার বেশি সময় পর্যন্ত লোপ পেলে তাকে দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগ বলা হয়।

দীর্ঘমেয়াদি কিডনি রোগের কারণগুলো ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, নেফ্রাইটিস ও অন্যান্য। লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব, ক্ষুধা মন্দা, প্রথম দিকে ঘন ঘন প্রস্রাব, পরে কমে যাওয়া, ক্রমান্বয়ে দুর্বলতা বৃদ্ধি পাওয়া, রক্ত স্বল্পতা, ও শ্বাসকষ্ট।

বিএসএমএমইউর কিডনি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. তৌহিদ রমা সাইফুল ইসলাম দিপু, কিডনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম হামিদ আহমেদ, অধ্যাপক ডা. কে বি এম হাদিউজ্জামান, সহযোগী অধ্যাপক ডা. ওমর ফারুক প্রমুখ।


গাজীপুরে দগ্ধ অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক

বৃহস্পতিবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন এবং অন্যান্যরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গাজীপুরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত রোগীদের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে বোর্ড সভা করছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

বৃহস্পতিবার সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ভর্তি হওয়া রোগীদের শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য জানেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ভর্তিকৃতদের মধ্যে কতজন শিশু, কতজনের অবস্থা বেশি গুরুতর, কতজন আইসিইউ, কতজন এইসডিওতে ভর্তি আছেন তার খোঁজ নেন তিনি।

তিনি জানান, দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা নিয়ে সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং এই চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয় তিনি নিজে বহন করবেন বলে আমাকে অবগত করেছেন।

তিনি উপস্থিত চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরণে দগ্ধ রোগীদের শারীরিক কষ্ট অনেক। প্রতিটি রোগীকে নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো করে আমাদের সবাইকে চিন্তা করতে হবে। দগ্ধ রোগীদের অনেকেরই অবস্থা অত্যন্ত আশংকাজনক। আমরা কিছু রোগীকে হয়তো বাঁচাতে পারবো না, কিন্তু কোনো রোগীর প্রতি শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত আমাদের চেষ্টার যেন কোনরকম অবহেলা না থাকে এটি আমাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে।’

সভায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৩২ জন বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানানো হয়। এই ৩২ জনের মধ্যে ৫ জন রোগী আইসিইউ এবং ২ জন এইচডিইউতে ভর্তি রয়েছে। রোগীদের মধ্যে ১০০ ভাগ দগ্ধ রোগী আছেন একজন, ৯৫ ভাগ দগ্ধ রোগী আছে ৩ জন এবং ৫০-১০০ ভাগ দগ্ধ রোগী আছে মোট ১৬ জন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ নওয়াজেস খান, অধ্যাপক (রেডিওলোজি) ডা. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক (এনেস্থিসিওলজি) ডা. আতিকুল ইসলাম, সহযোগি অধ্যাপক (বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি) ডা. হাসিব রহমান, সহযোগি অধ্যাপক (বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি) ডা.হোসাইন ইমাম (ইমু) সহ অন্যান্য উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ও চিকিৎসকবৃন্দ।

বিষয়:

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিচ্ছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ড. সামন্ত লাল সেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১১ মার্চ, ২০২৪ ১৭:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদ

মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর উপর বাড়তি রোগীর চাপ কমাতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী ড. সামন্ত লাল সেন।

তিনি বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে না পারলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ কোনদিনও কমবে না।’

সোমবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।

এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘কোনো হাসপাতাল তাদের পূর্ব শর্ত ছাড়া চলতে পারবে না। একটা অপারেশন করতে গেলে যা যা দরকার। হার্টের রোগী রাখতে গেলে যে ব্যাক সাপোর্ট দরকার, এটা ছাড়া কোনো দিনই কোনো হাসপাতালকে অনুমোদন দেয়া হবে না। সেখানেও যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে তার দায়িত্বও ওই হাসপাতাল ও চিকিৎসককেই নিতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘মেডিকেল কলেজ শুধু চিকিৎসা না এখানে শিক্ষা ও গবেষণাও করা হবে। সুতরাং আমরা জেলা হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোকে উন্নত করব। রাজশাহীতে একটা জেলা হাসপাতাল আছে। অত্যন্ত সুন্দর। কিন্তু সেটা খালি পড়ে আছে। আমরা চেষ্টা করব সেটাকেও চালু করতে। সচল করলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর চাপ কমবে। আশা করি আমরা এগুলোর সমাধান করতে পারব। তবে জনবলের ঘাটতি আছে। বার্ন ইউনিটটি আমারও একটা টপ প্রায়োরিটি প্রজেক্ট। রাজশাহী মেডিকেলেও একটা ইউনিট হবে। এটা হলে মানুষের অনেক উপকার হবে।’

দেশের ২১ শতাংশ চিকিৎসক অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) হিসেবে কর্মরত। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বরাদ্দকৃত সাড়ে সাতশ পোষ্টের বিপরীতে ওএসডি হিসেবে কর্মরত আছেন সাড়ে এগারো হাজার চিকিৎসক। এ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা গেলে এই সংখ্যা কমে আসবে।’

এসময় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বেগম রোকেয়া সুলতান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ নওশাদ আলমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

‘বিশ্বে ক্যান্সার রোগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘বাংলাদেশের ক্যান্সারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে (সেমিনার অন : ক্যান্সার সিচুয়েশন অব বাংলাদেশ)’ শীর্ষক মাসিক সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের এ-ব্লক অডিটোরিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলোজি বিভাগের চেয়াম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ ও অনকোলোজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদিয়া শারমিন একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

সেমিনারে বলা হয়, একবিংশ শতাব্দীতে অসংক্রামক রোগের মধ্যে ক্যান্সার অন্যতম। বিশ্বে ক্যান্সার রোগ প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের দেশেও ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিএসএমএমইউতে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী এবং রেডিও থেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়। বিএসএমএমইউর ক্লিনিক্যাল অনকোলোজি বিভাগের মাধ্যমে গত বছর (২০২৩) এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৪ হাজার রোগী বর্হিবিভাগে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার নতুনভাবে শনাক্তকৃত রোগীর চিকিৎসা গ্রহণ করেন। বাকি প্রায় সাড়ে ৮ হাজার রোগী বিভিন্নভাবে এখানকার চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণের আওতায় রয়েছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডে-কেয়ার সেন্টারে প্রতিদিন ২০ থেকে ২৪ জন ক্যান্সার রোগী প্রতিনিয়ত কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী ও টার্গেটেড থেরাপী গ্রহণ করেছেন।

এ সময় আরও জানানো হয়, বিএসএমএমইউর অন্তঃবিভাগে সর্ব মোট নারী পুরুষ বিছানা সংখ্যা ৬০টি। এখানেও ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর জন্য কেমোথেরাপী, ইমিউনোথেরাপী এবং টার্গেটেড থেরাপী প্রদান করার জন্য ক্যান্সার আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীকে রোগের বর্তমান অবস্থা, পর্যায় অনুযায়ী অত্যাধুনিক মানের চিকিৎসা সেবা হিসেবে রেডিও থেরাপী প্রদান করা হয়। রেডিও থেরাপীর মধ্যে থ্রিডিসিআরটি, ভিএমএটি পদ্ধতি উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে জরায়ু মুখের আক্রান্ত রোগীকে ব্রাকি থেরাপী প্রদান করা হয়। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্সার বিভাগকে আরও অত্যাধুনিক উন্নতমানের ক্যান্সার সেন্টার হিসেবে গড়ে তুলার নিমিত্তে আরও উন্নত প্রযুক্তির ক্যান্সার /রেডিও থেরাপীর মেশিন হিসেবে টমোথেরাপী, সাইবার নাইফ, গামা নাইফ উল্লেখযোগ্য।

সেমিনারে বলা হয়, বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর গত তিন বছর জনগুরুত্বপূর্ণ ৩৪টি সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া সেন্ট্রাল সেমিনার বর্তমান প্রশাসনে উপাচার্য হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ তা পুনরুদ্ধার করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের কাছে ক্যান্সার রোগীর কোনো ডাটা নেই। আমাদের দেশে ক্যান্সারের কোনো স্ক্রিনিং করা হয় না। আজকের সেমিনার থেকে আমার একটাই চাওয়া, বিএসএমএমইউর অনকোলজি বিভাগকে ক্যান্সার বিভাগসহ, অকুলার অনকোলজি, আই, ইএনটি, সার্জিক্যাল অনকোলজি, গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজিসহ সকল বিভাগে ক্যান্সার রোগীদের রেজিস্ট্রি করার দায়িত্ব নিতে হবে। বিএসএমএমইউতে ক্যান্সার চিকিৎসার সর্বাধুনিক লিনিয়াক মেশিন, পেট স্ক্যান মেশিন ক্রয় করার ফান্ডের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে ক্যান্সার চিকিৎসায় সাইবার নাইফ, গামা নাইফ, গামা সার্জারি, রেডিও সার্জারি করা যায় এসব বিষয় তরুণ ক্যান্সার চিকিৎসকদের মাথায় রাখতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্যানেল অব এক্সপার্ট হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. ছয়েফ উদ্দিন আহমদ, অনকোলোজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ্সহ বিভিন্ন বিভাগের সিনিয়র শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সেন্ট্রাল সাব কমিটির চেয়ারম্যান ও মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন হৃদরোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফয়সাল ইবনে কবির। সেমিনারে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন স্তরের শিক্ষক, কনসালটেন্ট, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টগণ উপস্থিত ছিলেন।


banner close