সোমবার, ৬ মে ২০২৪
করোনায় মৃত্যুর তিন বছর

ছায়া দেয়া লোকগুলোর বেশি মৃত্যু-ভোগান্তি

আপডেটেড
১৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০৪
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০

করোনার নিম্নমুখী সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে কমে এসেছে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও। টানা ৩১ দিন ধরে করোনায় মৃত্যুহীন রয়েছে দেশ। এদিকে করোনা মহামারি নিয়ে খুশির খবর দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, চলতি বছরের মধ্যেই করোনা মহামারি শেষ হওয়ার খবর দিতে পারবেন তারা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যখন এমন একটা খবর দিল, তখন গত তিন বছরে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও এই ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করছে। ইতিমধ্যে এই ভাইরাসে দেশের ২৯ হাজার ৪৪৫ জন নাগরিকের প্রাণ গেছে। শূন্য থেকে ১০০ বছর বা তারও ঊর্ধ্বের বয়সের মানুষই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, মারা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী মোট মৃত্যু ১৬ হাজার ৪২১ জন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক, যাদের বয়স ৬০ বছর থেকে ১০০ বা তদূর্ধ্ব।

পরিবারের ছায়া হয়ে থাকা বা নতুনদের পথ দেখানোর দায়িত্ব যাদের, সেই জনগোষ্ঠীর এত বড়সংখ্যক সদস্যকে হারিয়ে ছায়াশূন্য হয়েছে বহু পরিবার। বাংলাদেশে মোট মৃত্যু ৫৬ শতাংশের বয়সই ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে।

মৃতদের মধ্যে ১০ হাজার ৩৩৬ জনের বয়স ৪১ বছর থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। বাকি তিন হাজারে বয়স শূন্য থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

সরকারি হিসাবে দেশে করোনায় মোট শনাক্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৯৫৪ জন।

বিশ্বে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে চীনের উহানে। ফেব্রুয়ারি শেষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীন একটি যৌথ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ৬০ বছরের বেশি বয়সী এবং যাদের উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসতন্ত্রের রোগ আছে, তাদের মৃত্যুঝুঁকি বেশি। চীনে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের ৮০ শতাংশের বয়স ছিল ৬০-এর ওপর।

করোনায় গত ১৩ ফেব্রুয়ারি একজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল। এটিই এখন পর্যন্ত এই রোগে শেষ মৃত্যু। সেদিন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে করোনায় মৃত্যু হলো ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের।

১৬ মার্চ অধিদপ্তর জানায়, নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দেশে রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৯ শতাংশ আর মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বাংলাদেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এর ঠিক ১০ দিন পর ১৮ মার্চে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম রোগীর মৃত্যুর কথাও জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

ডেল্টার তাণ্ডব ছিল সবচেয়ে বেশি
মহামারিকালে করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের তাণ্ডবে দেশে এক দিনে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই রেকর্ডসংখ্যক ১৬ হাজার ২৩০ জন রোগী শনাক্ত হন। আর ২০২১ সালের ৫ ও ১০ আগস্ট এক দিনে ২৬৪ জনের মৃত্যুর খবর দেয়া; যা কি না দেশে মহামারীতে এক দিনে সর্বোচ্চ।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, করোনায় আক্রান্ত ২৯ হাজার ৪৪৫ জনের মধ্যে পুরুষ ১৮ হাজার ৭৮৯ জন আর নারী ১০ হাজার ৬৫৬ জন আর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে ১২ হাজার ৯৪৪ জনের।

বয়সভিত্তিক বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে। এ বয়সে মারা গেছেন ৯ হাজার ৯৯ জন। এ ছাড়া শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে ৯১ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২০৩ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ৬৯৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৭৩৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ হাজার ৪৪৯ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ হাজার ৮৮৭ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৫ হাজার ১৫৯ জন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১ হাজার ৭৪৫ জন, ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে ৩৮০ জন আর ১০০ বছরের ঊর্ধ্বে মারা গেছেন ৩৮ জন।

দেশে মারা যাওয়াদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ২৪ হাজার ৯৭৪ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৬৫৩ জন, বাড়িতে ৭৮৩ জন আর হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে ৩৫ জনকে। তবে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যারা আগে থেকেই অন্য জটিল রোগে আক্রান্ত ছিলেন তাদের মৃত্যু বেশি।

যারা হাসপাতালে মারা গেছেন তারাই তালিকায়
মহামারির শুরু থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ কেবল হাসপাতালে মৃত্যু হলেই সেটি করোনায় মৃত্যু বলে জানাত, বাড়িতে কিংবা হাসপাতালে আনার পথে কারও মৃত্যু হলে সেটি অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত হতো না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় সরকারি হিসাবে যে মৃত্যুর তথ্য দেয়া হয় তারচেয়ে ‍প্রকৃতপক্ষে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। সেই সঙ্গে করোনার উপসর্গ নিয়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের অধিদপ্তরের তালিকাতেই রাখা হয়নি। একই কথা জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থাটি গত বছর ( ২০২২) জানায়, মহামারি শুরুর পর থেকে ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় ১ কোটি ৪৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া এই হিসাব মহামারির প্রথম দুই বছরে করোনায় যত মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছিল, তারচেয়ে ১৩ শতাংশ বেশি। সংস্থাটির গবেষকদের বিশ্বাস, অনেক দেশই করোনায় মৃত্যুর হিসাব ঠিকঠাকভাবে রাখেনি। তাই উঠে আসেনি।

শুরুতে প্রস্তুতি থাকলে মৃত্যু কমত
দেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায়, বিশেষ করে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের তুলনায় করোনায় শনাক্ত এবং মৃত্যু কম হয়েছে। তবে যত মৃত্যু হয়েছে সেটিও কমানো যেত যদি বাংলাদেশের প্রস্তুতি থাকত। মূলত প্রস্তুতিহীন স্বাস্থ্য বিভাগের কারণে ২৯ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

মহামারিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র একাধিকবার জানিয়েছে, অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটি করোনায় মৃত্যু কমানোর উদ্যোগ নেয়ার সুপারিশ করে। কিন্তু আদতে এ নিয়ে কার্যকর বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, বিশ্লেষণ করা হয়নি মৃত্যুর ঘটনাও।

করোনায় শূন্য মৃত্যু লক্ষ্যমাত্রা রেখে কাজ করার দরকার মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় কেন এবং ঠিক কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যু হচ্ছে তার পর্যালোচনা দরকার ছিল। তাতে অন্তত কিছু মৃত্যু কমানো সম্ভব হতো বা হবে। সঙ্গে দরকার ছিল মৃত্যু কমানোর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ।

অথচ সরকারের একাধিক খামখেয়ালিপূর্ণ সিদ্ধান্ত, স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতিহীনতায় এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সরকার পদক্ষেপ নিতে দেরি করেছে, স্বাস্থ্য বিভাগ সরকারকে সঠিক তথ্য দিতে অপারগ ছিল। হাসপাতালগুলোতে পদক্ষেপ নেয়া হয়নি, বেশির ভাগ হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছিল না, ছিল না আইসিইউ। এমনকি করোনাকালে দেশের ৬৪ জেলায় আইসিইউ করার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই আইসিইউ তিন বছর পরও হয়নি।

সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একাধিকবার দ্বিমত পোষণ করে সুপারিশ দিয়েছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। কিন্তু সে সুপারিশ আমলে নেয়নি সরকার। যার কারণে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টিকারী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে বাংলাদেশেও শনাক্ত এবং মৃত্যু বাড়ে সে সময়।

সে সময় ডেল্টার দাপটের কারণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। কিন্তু ঈদুল আজহার কারণে সে লকডাউন শিথিল করা হয়। আর তাতেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামমুখী হয় মানুষ। প্রাইভেট কার, মাইক্রো, বাসে, লঞ্চে কিংবা ফেরিতে গাদাগাদি করে গ্রামে গিয়েছে ঈদ উদযাপন করতে। আবার ঈদের পরের কয়েক দিনে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেই একভাবে ঢাকায় ফিরেছে মানুষ।

সে সময়ই পরামর্শক কমিটির সদস্যরা বলেছেন, শিথিলতার এ নির্দেশনায় তাদের ‘সায়’ ছিল অধিদপ্তর যেখানে বারবার ভিড় এড়িয়ে চলার কথা বলছে, সেখানে সংক্রমণের ‘পিক টাইম’-এ এ ধরনের ঘোষণা দেশকে আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে যাবে। এরপর লকডাউনের ভেতরে সরকার পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার ঘোষণা দেয়। এতে করে কমিটির আশঙ্কাকে সত্যি করে দেশে ঈদের পর থেকে দৈনিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর একের পর এক রেকর্ড দেখতে হয় বাংলাদেশকে। আর এতে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করা তালিকায় বিশ্বে যেসব দেশে দৈনিক রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হচ্ছে, সেই তালিকায় অষ্টম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটি করোনায় মৃত্যু কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে জানিয়ে বলেছিল, করোনায় শূন্য মৃত্যুর টার্গেট নিয়ে কাজ করতে হবে। এ জন্য কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত প্রতিবেদন দেয়া হয়, যেখানে এ-সংক্রান্ত দিকনির্দেশনাও ছিল।

সেই কমিটির সদস্য অধ্যাপক আবু জামিল ফয়সাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সে নির্দেশনা কিংবা প্রস্তাবনা অনুযায়ী কাজ হয়নি।’

‘সংক্রমণের তখনকার তীব্রতা এবং যেভাবে ছড়াচ্ছিল, তখন সেসব প্রস্তাবনা খুব উল্লেখযোগ্য ছিল।’

তিনি বলেন, তখনকার সময়ে যেসব অপ্রতুলতা ছিল, যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল, তার জন্য অবশ্যই মৃত্যু বেশি হয়েছে…আইসিইউ ছিল না, হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা ছিল না, উপজেলা তো দূরে থাক, বিভাগীয় শহরের হাসপাতালেও সেন্ট্রাল অক্সিজেন ছিল না। অথচ তখন সেগুলো প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম বা একেবারেই না থাকার কারণে মৃত্যু বেশি হয়েছে।

এই না থাকার মধ্যেও তখন যদি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার দিকে সরকার বেশি নজর দিত তাহলেও মৃত্যু কমানো সম্ভব হতো, বলেন আবু জামিল ফয়সাল।

মৃত্যু কমানো যেত কি না প্রশ্নে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, সে সময়ে স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুতিহীনভাবে সময় ক্ষেপণ করেছে। হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত করেনি, হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা বাড়াতে পারেনি, ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে এখনো আইসিইউ নেই। যখন জটিল রোগীদের আইসিইউ দরকার হতো, তখন তাদের ঢাকায় পাঠানো হতো। ঢাকার হাসপাতালগুলোতেও আইসিইউ পাওয়া যাচ্ছিল না।

এসব কারণে যখন চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হচ্ছে, তখন তাকে বাঁচানো যায়নি- বলেন তিনি।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনাকালে দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে আসা রোগীদের মৃত্যু বেশি দেখতাম। কারণ তারা নিজ এলাকায় চিকিৎসা পেতেন না, চিকিৎসাব্যবস্থাই ছিল না। পুরো হাসপাতাল-ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা ছিল। এসব কারণে মৃত্যু হয়েছে বেশি।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেনও মনে করেন, উদ্যোগের অভাব ছিল, ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি ছিল, সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয়েছে। যার কারণে সংক্রমণ বেড়েছে এবং সংক্রমণ বাড়ার কারণে মৃত্যু বেড়েছে।


হিট স্ট্রোকে ১৫ দিনে ১৫ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তথ্য মতে, গত ১৫ দিনে হিট স্ট্রোকে সারা দেশে মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল ১১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে আরও তিনজন হিট স্ট্রোক করেছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি নড়াইলের বাসিন্দা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩৪ জন হিট স্ট্রোক করেছেন। মারা যাওয়া ১৫ জনের মধ্যে ১৩ জন পুরুষ ও দুজন নারী। তবে হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ২২ এপ্রিল থেকে, অর্থাৎ তাপদাহ বয়ে যাওয়ার ২০ দিন পর থেকে এই তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে।

অধিদপ্তরের তথ্য আরও বলছে, মৃতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাত জন মারা গেছেন মাগুরায়। এ ছাড়া মৃত্যুর খবর এসেছে চট্টগ্রাম, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, হবিগঞ্জ, রাজবাড়ী, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, বান্দরবান এবং মাদারীপুর থেকে।

এই প্রথম স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হিট স্ট্রোক সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করল।


‘তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক গাইডলাইন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে’

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক গাইডলাইন খুবই সময়োপযোগী। এখানে বর্ণিত নির্দেশিকা সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাপপ্রবাহ এইবারই শেষ নয়। আগামী বছরগুলোতেও এমন গরম আবার আসতে পারে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। তাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাইড লাইন সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে সকল সরকারি হাসপাতালে এই গাইডলাইন প্রেরণ করা হয়েছে এবং চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত তাপমাত্রাজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বিষয়ক জাতীয় গাইডলাইনের আনুষ্ঠানিক মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এই তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকে বাচ্চারা আর বয়োজ্যেষ্ঠরা। যারা একটু শারীরিকভাবে কম সামর্থ্যবান, যাদের ডায়বেটিক, হার্টডিজিস রয়েছে বা যারা বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন- তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন। এই বইয়ে নির্দেশিত গাইডলাইন লিফলেট আকারে স্কুল কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের প্রতি আহবান জানিয়ে- স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা দেখি গ্রামের চেয়ে ঢাকা শহরে তাপমাত্রা অত্যধিক বেশি। এর কারণ, আমরা ভবন নির্মাণ করতে গিয়ে ঢাকা শহরে গাছপালা সব কেটে ফেলেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের উপর হয়তো আমরা খুব প্রভাব ফেলতে পারিনা। কিন্তু, নগর পরিকল্পনা করার সময় যদি এসব বিষয় আমরা মাথায় রাখি, তাহলে এ থেকে অনেকাংশে পরিত্রাণ সম্ভব।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের ডেপুটি রিপ্রেজেনটেটিভ এমা ব্রিগহাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


দেশে উদ্ভাবন হলো ‘ডায়াবেটিক চাল’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সাধারণত ডায়াবেটিস রোগীদের ডাক্তাররা ভাত কম খাওয়ার কথা বলে থাকেন। ফলে রোগীরা ভাত থেকে সব সময় কয়েক হাত দূরেই থাকেন। তবে দেশে নতুন জাতের ‘ডায়াবেটিক চাল’ উদ্ভাবন হয়েছে। যার কারণে এখন থেকে ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলেই এই চালের ভাত খেতে পারবেন।

উচ্চ ফলনশীল দুটি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। যার মধ্যে ব্রি-১০৫ জাতের ধানের চাল বিশেষ বৈশিষ্ট্যের কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দাবি করেছেন ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী ও পুষ্টিবিদরা। আর এ জন্যই এটিকে বলা হচ্ছে ‘ডায়াবেটিক চাল’।

জাতীয় বীজ বোর্ডও এ দুটি ধানকে অনুমোদন দিয়েছে। ফলে এখন দুটি জাতই মাঠপর্যায়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে জানা গেছে।

ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীর চরচান্দিয়া এলাকার ৮০ বিঘা জমিতে চাষ করা হয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী এসব ধান। ৩০ জনেরও বেশি কৃষক এই ধান চাষ করে অধিক ফলনও পেয়েছেন। ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর বিশ্বজিৎ কর্মকার গণমাধ্যমকে বলেন, এ ধানটি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বা জিআই সম্পন্ন হওয়ার কারণেই এটিকে ‘ডায়াবেটিক চাল’ বলা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত ছাঁটাই করা চাল স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের দেশে মাড় ফেলে ভাত খাওয়ার কারণে এমনি পুষ্টি কম পাওয়া যায়। এ অবস্থায় ব্রি-১০৫ বেশ আগ্রহ তৈরি করেছে, কারণ এটিতে পুষ্টিমান যেমন আছে তেমনি জিআই অনেক কম।’

এদিকে নতুন ধানের বৈশিষ্ট্যের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক নতুন উদ্ভাবিত ব্রি-১০৫ ধানের চাল ‘ডায়াবেটিক চাল’ হিসেবে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পাবে বলে আশাও প্রকাশ করেছেন।

কর্মকর্তারা জানান, তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলার পর এই ধানকে অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড।


‘কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস ২০২৪’ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

তৃণমূল মানুষের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাইলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য ও কল্যাণ দিবস ২০২৪’ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যদি সচল থাকে, তাহলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে অবশ্যই পারবে। মন্ত্রী হওয়ার পরে আমি যে কয়েকটা জায়গায় গিয়েছি, প্রত্যেক জায়গায় দেখেছি, সেখানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অবদান সবচেয়ে বেশি দরকার। আমরা যদি তৃণমূল জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাই, তাহলে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে সচল করতে হবে। তাহলেই আমরা এ দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারব।’

স্বাস্থ্যসেবায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে এবং তা মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবাকে প্রান্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছি।’ চিকিৎসকদের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য তাদের ব্যক্তিগত সুযোগ–সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান সচিব।

ওই সময় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের রিহ্যাবিলিটাইজেশন অব কমউনিটি হেলথ কেয়ার ইনিশিয়েটিভ, বাংলাদেশের (আরসিএইচসিআইবি) প্রকল্প পরিচালক ও সাবেক সচিব মাখদুমা নার্গিস বলেন, ‘চিকিৎসকেরা সমাজেরই অংশ। দেশে অবকাঠামোগত দিক থেকে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মনোজাগতিক উন্নয়নের দিকে তাকালে আমরা কিছুটা হতাশ হব। সমাজের দুর্নীতি ও অন্যান্য যেসব ব্যাধি আমাদেরকে আক্রান্ত করছে, এসব আমাদের সামনের যাত্রাকে পেছনে টেনে রাখছে। এগুলোতে যদি আমরা উন্নয়ন করতে না পারি, তাহলে অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে খুব বেশি দূর এগোতে পারব না।’

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার পটভূমি, বঙ্গবন্ধুর দর্শন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন। আরও বক্তব্য দেন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দীন মোহাম্মদ নুরুল হক ও কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যসহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। প্রথম পর্বের অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন চিকিৎসক আলমগীর খান, আরাফাতুর রহমান ও এস এম হাসান মাহমুদ।


বাংলাদেশি চিকিৎসা বেশ অভিজ্ঞ ও দক্ষ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ মে, ২০২৪ ১৬:২৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় চিকিৎসা সেবায় বাংলাদেশি চিকিৎসা বেশ অভিজ্ঞ ও দক্ষ বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।

আজ বুধবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরো সায়েন্সে অনুষ্ঠিত ১২তম আন্তর্জাতিক এবং ২য় এসিএনএস-বিএসএনএস হাইব্রিড কনফারেন্স ও ক্যাডাভেরিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, আমাদের চিকিৎসকদের মেধা ও দক্ষতা বিশ্বের যে কোনো দেশের চিকিৎসকদের চেয়ে কম না৷ আমরা যে জোড়া মাথার যমজ শিশু রোকেয়া-রাবেয়ার অপারেশন করলাম, যদিও সেখানে হাঙ্গেরির চিকিৎসকরা ছিল, কিন্তু সেই অপারেশনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে আমাদের দেশের নিউরো সার্জনরা।’

‘প্রথম যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজে বাচ্চা দুটির এন্ড্রোভাস্কুলার সেপারেশন হয়, সেই রাতের ৩টা-৪টা বাজে আমি নিজের চোখে দেখেছি আমাদের এনেস্থেটিক এবং নিউরো সার্জনদের ইচ্ছা, দক্ষতা এবং সামর্থ্য। যা আমাকে বিস্মিত করেছে।’

তিনি বলেন, আমাদের তো কোনো কিছুর অভাব নেই৷ আমাদের মেধা আছে। সেই মেধা দিয়ে তোমরা সর্বোচ্চ সেবা দাও, তোমাদের সুরক্ষা আমি দেব৷ ডাক্তার হিসেবে তোমাদের প্রতি এটাই আমার প্রতিশ্রুতি।

তরুণ চিকিৎসকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে আমরা এমন এক জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে দেশের মানুষ চিকিৎসক সমাজকে সম্মান করে। আমরা যদি সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে সার্ভিস দেই। রোগীদের সেবা দেই। মানুষ সম্মান করবে।

ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর আক্রমণকে ন্যক্কারজনক উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ভুল চিকিৎসার অজুহাতে চিকিৎসকদের উপর যে আক্রমণ হয় তা ন্যক্কারজনক, খুবই বাজে। ভুল চিকিৎসার নাম করে চিকিৎসকদের মারধর, বিশেষ করে মেয়ে চিকিৎসকদের উপর আক্রমণ মেনে নেওয়া যায় না৷ ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার কারও নাই, আমারও নাই। বাংলাদেশে একমাত্র ভুল চিকিৎসা বলার অধিকার রাখে বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল ডেন্টাল কাউন্সিল)।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউরোসার্জন্স প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসাইনের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই কর্মশালায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন এর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, নিনস্ এর যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম প্রমুখ।


ওষুধের দাম বাড়ানো ঠেকাতে ব্যবস্থার নির্দেশ হাইকোর্টের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সব ধরনের ওষুধের মূল্য বৃদ্ধি রোধকল্পে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে অব্যাহতভাবে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধি রোধকল্পে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না-তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন উচ্চ আদালত। এ ছাড়া বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনুমোদনহীন ওষুধ বিক্রি বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

‘দুই সপ্তাহে ওষুধের দাম বেড়েছে ৭ থেকে ১৪০ শতাংশ’ শিরোনামে গনমধ্যামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করা হয়। কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এ রিট দায়ের করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দুই মাসে দেশের বিভিন্ন কোম্পানি তাদের উৎপাদিত ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বাড়িয়েছে। অন্তত ৫০ ধরনের ওষুধের দাম ২০ থেকে সর্বোচ্চ ১৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। চলতি মার্চের প্রথম সপ্তাহেও দাম বাড়ানো হয়েছে বেশ কয়েকটি ওষুধের। সবচেয়ে বেশি বাড়ানো হয়েছে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, ডায়াবেটিসের রোগীদের ইনসুলিন ও ইনজেকশনের দাম।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা, হাঁপানিসহ বিভিন্ন ওষুধ এবং ভিটামিনের দামও বেড়েছে। বাদ যায়নি জ্বর-সর্দির ট্যাবলেট-ক্যাপসুল, বিভিন্ন অসুখের সিরাপও। বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং বিক্রি থেকে আয়ের হিসেব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দাম বাড়ানোর হার অস্বাভাবিক। এই অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির অজুহাত হিসেবে কোম্পানিগুলো ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়াকে দায়ী করছে।


ডেঙ্গুতে চলতি বছর মারা যেতে পারে ৪০ হাজার মানুষ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বিশ্বে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুয়ায়ী, ২০০০ সালে প্রায় ২০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যায়। চলতি বছর বিশ্বে ৪০ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ম্যালেরিয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে ৩০ শতাংশ।

একটি স্ত্রী এডিস মশা যদি ফ্ল্যাভিভাইরাস প্যাথোজেন বহন করে এবং এ অবস্থায় কাউকে কামড় দেয় তাহলে ভুক্তভোগী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হতে পারেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমণ লক্ষণ ছাড়াই চলে গেলেও দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু ক্ষেত্রে ব্রেকবোন ফিভার দেখা যায়, যা গুরুতরভাবে জয়েন্টে ব্যথা, রক্তক্ষরণ এমনকি মাঝেমধ্যে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটায়। ডেঙ্গুর আফটার-ইফেক্টও যন্ত্রণাদায়ক। ইউনাইটেড স্টেটস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মনে করে, সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়।

সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত অঞ্চল হলো লাতিন আমেরিকা। ২০০০ থেকে ২০০৫ সালে সেখানে বছরে গড়ে পাঁচ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। কিন্তু ২০২৩ সালে অঞ্চলটিতে ৪৬ লাখ মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হন। এদিকে ২০২৪ সালে এরই মধ্যে সেখানে প্রায় ৬০ লাখ কেস শনাক্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্রাজিলের মানুষ।

একদিকে যেমন ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি অঞ্চল ছাপিয়ে তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের সর্বত্র। এডিস মশা তাপমাত্রার ছোট পরিবর্তনের জন্য সংবেদনশীল এবং বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরিসর প্রসারিত হচ্ছে। অ্যানেফিলিস মশা ম্যালেরিয়া ছড়ায়, যা এখন সারা বিশ্বেই পাওয়া যায়; কিন্তু এডিস এখনো সব অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েনি; কিন্তু জলবায়ুর বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, এডিস মশা দক্ষিণ ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এতে আরও ২০০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

নগরায়ণ এই মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। একটি ডেঙ্গু মশা তার দুই সপ্তাহের জীবনে একাধিক ব্যক্তিকে কামড়াতে পারে। কিছু স্থানে এই রোগ আগে ছিল না কিন্তু এখন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রবণতা এখন বাংলাদেশ ও ভারতে দেখা যাচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ক্যালিফোর্নিয়া, দক্ষিণ ইউরোপ, আফ্রিকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য বিশ্বকে অবশ্যই প্রস্তুতি নিতে হবে। যদিও ধনী উত্তর গোলার্ধ ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তবে এতে বিশ্বের দরিদ্র অংশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সিঙ্গাপুর দীর্ঘদিন ধরেই ভালো কাজ করেছে। দেশটি স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে নিয়মিত মনিটরিং করছে। তা ছাড়া কোথাও পানি জমেছে কি না তার খোঁজ করা, লার্ভা সংগ্রহ এবং দায়ীদের জরিমানার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। মশার কেন্দ্রস্থলগুলোতে নিয়মিত ওষুধ ছেটানো হয়।

২০১৬ সাল থেকে সিঙ্গাপুর আরেকটি উচ্চ প্রযুক্তির ডেঙ্গু প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। প্রতি সপ্তাহে এটি ওলবাচিয়া ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত ৫০ লাখ মশা ছেড়ে দেয়, যা ডেঙ্গু সৃষ্টিকারী ভাইরাস ছড়াতে বাধা দেয়। এতে বছরে দেশটির প্রায় ৩৫ লাখ ডলার খরচ হয়। এখনো ডেঙ্গুর কোনো ভ্যাকসিন বাজারে আসেনি, তবে এ ক্ষেত্রে চেষ্টা চলছে।


জোড়া মাথা আলাদা করা রাবেয়া-রোকেয়া সুস্থ আছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) জোড়া মাথা আলাদায় অস্ত্রোপচার শেষে শিশু রাবেয়া ও রোকেয়া সুস্থ আছে। সম্প্রতি তাদের অস্ত্রোপচার-পরবর্তী পর্যবেক্ষণে সিএমএইচে আসেন হাঙ্গেরির চিকিৎসক দল এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এই চিকিৎসক দল চলমান চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। গতকাল রোববার সিএমএইচে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। এ ছাড়াও ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিরল মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু রাবেয়া ও রোকেয়ার অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ফলোআপের জন্য বিদেশি চিকিৎসক দল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী আসেন। বক্তারা বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় জোড়া মাথার শিশুদের বলা হয় ক্রেনিয়োপগাস টুইন্স। মাথা জোড়া লাগানো জমজ শিশু চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য একটি চ্যালেঞ্জিং বিকলতা। ২৫ লাখ জীবিত জমজ শিশুর মধ্যে মাত্র একটি জোড়া মাথার শিশু জন্ম নেয়। প্রায় ৪০ শতাংশ জোড়া মাথার শিশু মৃত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে এবং আরও এক-তৃতীয়াংশ শিশু ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করে। আনুমানিক শতকরা ২৫ ভাগ শিশু জোড়া মাথা নিয়ে বেঁচে থাকে, যাদের শল্য চিকিৎসার মাধ্যমে আলাদা করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এর সাফল্যের হারও খুব বেশি নয়।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় বিরল দুই মাথা জোড়া লাগানো জমজ সন্তান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এই বিরল অস্ত্রোপচারটি প্রথমবারের মতো গত ১ আগস্ট ৩৩ ঘণ্টাব্যাপী ঢাকার সিএমএইচে সম্পন্ন হয়, যা বিশ্বে ১৭তম।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অস্ত্রোপচারের সবচেয়ে জটিল অংশ ‘জমজ মস্তিষ্ক’ আলাদাকরণের কাজটি সম্পন্নের জন্য ২০১৯ সালের ২২ জুলাই রাবেয়া ও রোকেয়াকে সিএমএইচে আনা হয়। ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি এবং ১৩ মার্চ দুই ঘণ্টা ৩০ মিনিটব্যাপী দুটি অস্ত্রোপচার সফলভাবে হয়।

এ অস্ত্রোপচার দুটির মাধ্যমে তাদের মাথায় বিদ্যমান ক্ষতস্থান নতুন কোষ দ্বারা পূর্ণ করা হয়। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির শেষদিকে রাবেয়ার মাথার বাম দিকের চামড়ার ক্ষত শুরু হয় এবং পরে বৃদ্ধি পেয়ে চামড়ার নিচে লাগানো কৃত্রিম মাথার খুলি দৃশ্যমান হয়।

এই জটিলতা সমাধানে বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ২০২২ সালের ৭ মার্চ ক্রেনিয়োপ্লাসটি সার্জারির মাধ্যমে সিএমএইচে সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন। বর্তমানে রোকেয়া ও রাবেয়া দুজনই সুস্থ আছে। ওই অস্ত্রপচারে দেশি ও বিদেশিসহ শতাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অংশ নেন।


‘তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি হলে স্থানীয় প্রশাসন স্কুল বন্ধ করতে পারবে’

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:৪৪
নিজস্ব প্রতিবেদক

তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি বা তার বেশি হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্কুল স্থানীয় প্রশাসন বন্ধ করতে পারবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

আজ রোববার আগারগাঁও ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘তাপমাত্রা সব জেলায় সমান নয়। যেমন, চট্টগ্রামে তাপমাত্রা ৩৫-৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেখানে স্কুল বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’

তিনি বলেন, ‘কিছু হলেই প্রথমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে হবে, এ ধারণা রাখা চলবে না। আমাদের নতুন কারিকুলাম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক; তাই শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে আসা জরুরি। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অনলাইন ক্লাস করা যেতে পারে। মন্ত্রণালয়ের এতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু মাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন কারিকুলামের কারণে অনলাইন ক্লাস নেওয়া সম্ভব নয়।’

রমজান, ঈদুল ফিতর এবং দাবদাহের কারণে এক সপ্তাহের বেশি ছুটি মিলিয়ে এক মাস ৩ দিন পর আজ খুলেছে দেশের স্কুলগুলো। তবে তাপপ্রবাহ এখনো চলমান থাকায় অভিভাবকরা স্কুল খোলার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছেন।

গত জানুয়ারি শীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রা ছিল এমন ১০ জেলায় স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। যেখানে যেখানে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল সেখানে স্কুল খোলা ছিল। এখন গরমের সময়ও একই পদ্ধতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি চালু করতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।


‘রোগীদের প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা বরদাস্ত করব না’

রোববার শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে ৪১তম বিসিএস ক্যাডারের নব নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশক্যাডারের নব নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশনে বক্তব্যে দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে আমার বয়স মাত্র সাড়ে তিন মাস। এই অল্প সময়ে আমি যেখানে গিয়েছি একটা কথাই বলেছি— আমি যেমন চিকিৎসকেরও মন্ত্রী, ঠিক তেমনি রোগীদেরও মন্ত্রী। চিকিৎসকের ওপর কোনো আক্রমণ যেমন আমি সহ্য করব না, তেমনি রোগীর প্রতি কোনো চিকিৎসকের অবহেলাও বরদাস্ত করব না।’

আজ রোববার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত ৪১তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ও বিসিএস (পরিবার পরিকল্পনা) ক্যাডারের নব নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ দেশের মানুষ অতি সাধারণ। তাদের চাওয়া-পাওয়াও সীমিত। ডাক্তারের কাছে এলে তারা প্রথমে চায় একটু ভালো ব্যবহার। একটু ভালো করে তাদের সঙ্গে কথা বলা, একটু মনোযোগ দিয়ে তাদের কথা শোনা। এটুকু পেলেই তারা সন্তুষ্ট। মন্ত্রী হিসেবে শুধু একটা প্রতিশ্রুতিই আমি দিতে পারি, তোমরা তোমাদের সর্বোচ্চ সেবাটুকু দিয়ে যাও, তোমাদের বিষয়গুলোও আমি দেখব।

তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখতেন, তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার। আমি মনে করি সেই স্বপ্ন পূরণ করার কারিগর হচ্ছো তোমরা। যারা আজকে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করতে যাচ্ছো, আমার বিশ্বাস, তোমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হবে।

স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনারা যে কর্মস্থলে যোগ দিতে যাচ্ছেন, সেখানে যারা সেবা নিতে আসবেন... তারা হয়ত আমাদের আত্মীয়স্বজন। যেহেতু আমাদের দেশটা ছোট, সেহেতু এখানে যারা সেবা নিতে আসবেন, তাদের নিজের বাবা, মা কিংবা আত্মীয়স্বজন ভেবে স্বাস্থ্যসেবা দেবেন। আপনাদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা সেবা প্রদানে সতর্ক থাকবেন ও দায়িত্ব পালনে আন্তরিক থাকবেন৷

ওরিয়েন্টেশনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আর বানু।


‘আমার নির্দেশ হলো তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা’

শনিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, ‘আমি মাত্র তিন মাস হলো দায়িত্ব নিয়েছি। এ তিন মাসে আমার নির্দেশ হলো তৃণমূল পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন করা। হাসপাতালগুলোতে কেন ডাক্তার থাকে না; এ বিষয়ে ডিজিসহ মন্ত্রণালয়ের সবাইকে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেককে শোকজ করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আজ শনিবার দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১ শ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘চিকিৎসক সংকট এক দিনের সমস্যা নয়। এটা বহু দিনের সমস্যা। স্ট্যান্ডার্ডে সেটাপের অনুমোদন হয়েছে। জনবল সংকট কাটানোর জন্য দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।’

এর আগে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

এরপর তিনি গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক, গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান এবং অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের প্ল্যান্ট পরিদর্শন করেন।

এসময় জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ও অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।


শুধু চাকরির পেছনেই ছুটবেনা, উদ্যোক্তাও হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্সেসের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘তোমরা স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন কর্মমূখী প্রোগ্রামে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেছ সেই হিসেবে তোমাদের কর্মক্ষেত্র তুলনামূলকভাবে সম্প্রসারিত ও অবারিত। তবে, তোমরা শুধু চাকরির পেছনেই ছুটবেনা, উদ্যোক্তাও হবে। তরুণদের জন্য চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করবে।’

মন্ত্রী বলেন, বিষয়ভিত্তিক ও প্রযুক্তিগত জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সক্ষমতা ও সম্ভাবনার শতভাগ কাজে লাগিয়ে তোমরা স্বনির্ভর জনসম্পদ হিসেবে নিজেদের গিড়ে তুলবে এবং উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অংশীদার হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তোমাদের অপরিসীম ধৈর্য ও মেধাশক্তি কাজে লাগিয়ে, সেই কঠিন পথ পাড়ি দিয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। নিজেদের দক্ষতা গুণে ও যোগ্যতা বলে কর্মজীবনে সাফল্যের স্বর্ণ শিখরে আরোহন করতে হবে।’

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক এ কে আজাদ খান, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক এন্থনি কস্টেলো ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদুল আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিষয়:

নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের মৃত্যুহার কম

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যেসব রোগী নারী চিকিৎসকের দ্বারা চিকিৎসা নেন তাদের মৃত্যুর হার কম। এ ছাড়া নারী চিকিৎসকের সেবা নেওয়া রোগীদের হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনাও কম। চিকিৎসা ও গবেষণাবিষয়ক জার্নাল ‘অ্যানালস অব ইন্টারনাল মেডিসিন’তাদের নতুন গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

২০১৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ৭ লাখ ৭৬ হাজার রোগীর ওপর এই গবেষণা চালানো হয়েছে। যার মধ্যে ৪ লাখ ৫৮ হাজার ১০০ জন ছিলেন নারী। আর পুরুষ ছিলেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৮০০ জন। গবেষণায় দেখা গেছে নারী চিকিৎসকের চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মৃত্যু এবং হাসপাতালে পুনরায় ভর্তি হওয়ার হার কম ছিল।

যেসব নারী রোগী নারী চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের মধ্যে মৃত্যুর হার কম ছিল। নারী চিকিৎসকদের দ্বারা চিকিৎসা নেওয়া নারী রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর পুরুষ চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নেওয়া নারী রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

অপরদিকে যেসব পুরুষ রোগী নারী চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন তাদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ। অপরদিকে পুরুষ চিকিৎসকের দ্বারা চিকিৎসা নেওয়া পুরুষ রোগীদের মৃত্যুর হার ছিল ১০ দশমিক ২৩ শতাংশ।

গবেষক ইয়োসুকে তুগাওয়া বলেন, এটি উল্লেখযোগ্য যে, নারী চিকিৎসকরা ভালো মানের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। সামাজিক দিক দিয়ে নারী চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করালে রোগীরা লাভবান হন।

বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নারী চিকিৎসকরা রোগীদের সঙ্গে কথা বলতে বেশি সময় ব্যয় করেন এবং রোগীদের রোগ সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ নেন। এ ছাড়া নারী চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে নারী রোগীরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।

কেন নারী এবং শিশুরা শ্বেতাঙ্গ রোগীদের চেয়ে খারাপ চিকিৎসা পেয়ে থাকেন সেটি নিয়ে একটি গবেষণা চালানো হচ্ছে। এই গবেষণারই অংশ এটি।

২০০২ সালে চালানো আলাদা একটি গবেষণায় পাওয়া গিয়েছিল একজন নারী চিকিৎসক একজন রোগীর পেছনে গড়ে ২৩ মিনিট সময় ব্যয় করেন। সেখানে পুরুষ চিকিৎসক গড়ে ২১ মিনিট সময় ব্যয় করেন।


banner close