বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

মায়ের দুধ পায় না অর্ধেক শিশু, পরিবার ঝুঁকছে ফর্মুলায়

আপডেটেড
১৯ মার্চ, ২০২৩ ১১:৫৯
মুসলিমা জাহান
প্রকাশিত
মুসলিমা জাহান
প্রকাশিত : ১৯ মার্চ, ২০২৩ ১১:৫৭

রাজধানীর ঢাকা শিশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে সাতটি কক্ষে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। ১৮৪ নম্বর কক্ষে পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে ‘ডাক্তার দেখিয়ে’ বের হন সাদ্দাম হোসাইন ও রোমানা আক্তার দম্পতি। চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্রের সঙ্গে আরেকটি রঙিন স্টিকার দিয়েছেন; যাতে একটি কোম্পানির বয়সভেদে ফর্মুলা দুধের (কৌটাজাত গুঁড়া দুধ) নামের পাশে টিক চিহ্ন রয়েছে।

ঘটনাটি এ বছরের পয়লা ফেব্রুয়ারির। শিশুটির বাবা সাদ্দাম হোসাইন জানান, মেয়ের ওজন কম, ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় ভুগছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এসেছেন। শিশুটির মা বলেন, ‘বুকে দুধ আছে, ডাক্তার বলছে বাবুর ওজন কম, কৌটার দুধ খাওয়ালে ভালো হবে।’

দেশে শিশুদের চিকিৎসার সবচেয়ে বড় হাসপাতালটি বর্তমানে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত। সরকারি অনুদানপুষ্ট স্বায়ত্তশাসিত এই হাসপাতালটির সেই কক্ষে ওই দিন রোগী দেখেন দুজন চিকিৎসক। তাদের একজন আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সাইয়্যেদা মাহিনূর আহমেদ। তিনি বলেন, ‘দুই বছরের কম বয়সী শিশুকে ফর্মুলা দুধের পরামর্শ দিই না। তবে কর্মজীবী মা অথবা কোনো মা বেশি পীড়াপীড়ি করলে শুরুতে বুকের দুধের জন্য কাউন্সেলিং করি, না মানলে বাধ্য হয়ে ফর্মুলা দুধ দিতে হয়।’

বিদেশি একটি ফর্মুলা দুধের (রিপ্রেজেন্টেটিভ) প্রতিনিধির নির্ধারিত কর্ম-এলাকা এই হাসপাতালসহ শ্যামলী, মোহাম্মদপুর। গত পাঁচ বছর ধরে তার প্রাত্যহিক কাজ দুপুর ১২টার পর হাসপাতালটির চিকিৎসকদের ‘সালাম দেয়া’ এবং নার্সসহ অন্য স্টাফদের সঙ্গে ‘হাসি মুখে’ কুশল বিনিময়। তাদের জন্য নানান উপঢৌকনের ব্যবস্থাও করেন তিনি। প্রতিনিধির কাজের ফলাফল হিসেবে হাসপাতাল এলাকায় গত পাঁচ বছরে এই কোম্পানির ফর্মুলা দুধের বিক্রি অন্তত ছয়গুণ বেড়েছে বলে জানান এই প্রতিনিধি।

বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৯-এর তথ্য অনুযায়ী জন্মরে প্রথম ছয় মাসে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ার হার ছিল ৬৫ শতাংশ। ২০১৭ সালে তথ্য নিয়ে জরিপটি করা হয়। অথচ নগর স্বাস্থ্য জরপি বলছে, ২০২১ সালে শহর এলাকায় এ হার ৫২ শতাংশের কম।

শিশুর বিকাশের জন্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মায়ের বুকের দুধের কোনো বিকল্প নেই।

নগর স্বাস্থ্য জরিপ ২০২১ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফের তথ্য ও জরিপ বলছে, ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানো গেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত করা যায়, কমে মৃত্যুঝুঁকি। কিন্তু দেশে জন্মের প্রথম ছয় মাসে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার বাড়ছে না। বরং শহর এলাকায় এ হার কমছে। বুকের দুধ খাওয়াতে চান এমন মায়েরা পাচ্ছেন না সঠিক দিকনির্দেশনা। ফর্মুলা দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ আসে চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের কাছ থেকে।

নিজস্ব অনুসন্ধান এবং জরিপেও ফর্মুলা দুধ ব্যবহারের একই ধরনের প্রবণতা দেখা গেছে। এতে দেখা যায়, কর্মজীবী মায়েরা বাধ্য হয়ে শিশুকে দেন ফরর্মুলা দুধ। ‘বাচ্চা শুকনা’ বলে আত্মীয়স্বজনের চাপেও দিতে হয়। কোনো কোনো মা অবশ্য ফর্মুলা দুধকে পুষ্টিকর ভেবে দেন। অনলাইন প্রচারেও বাড়ছে ফর্মুলা দুধের ব্যবহার।

কর্মস্থলে ফিরতে হবে বলে দুই মাস বয়সে মেয়েকে ফর্মুলা দুধ খাওয়ানো শুরু করেন রুবানা আহমেদ। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিরত এই কর্মকর্তার কথা, ‘আগেভাগে অভ্যাস না করালে হুট করে ফর্মুলা খাবে না।’ মেয়ে প্রথম ছয় মাসে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও নিউমোনিয়ায় ভুগেছে। আবার টাঙ্গাইলের মধুপুরের গৃহিণী চায়না আক্তার বলেন, ‘তোলা (গুঁড়া দুধ) খাওয়ালে শিশুর শরীর বাড়ে, তাই জন্মের পরেই দিয়েছি। বাচ্চা মোটাসোটা না হলে শ্বশুরবাড়িতে কথা শুনতে হতো।’ ইউটিউব চ্যানেলে চিকিৎসকদের ভিডিও দেখে ছেলেকে তিন মাস বয়স থেকে ফর্মুলা দিচ্ছেন বলে জানান সাভারের মোহাম্মদ রনি।

জন্মের প্রথম ছয় মাসে শিশু কী খেয়েছে, এ সময়ে শিশুর রোগে ভোগা, ফর্মুলা দুধের পরামর্শ কার কাছ থেকে এসেছেসহ সাতটি প্রশ্ন রেখে ৭০ জন মায়ের মধ্যে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে একটি জরিপ চালানো হয়েছে। সাক্ষাৎকার নেয়া হয়েছে সরাসরি, অনলাইন, মুঠোফোনে। গ্রাম ও শহরের এই মায়েরা বিভিন্ন বয়সের, নানান পেশার।

সর্বশেষ বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ ২০১৯ (বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে)-এর তথ্য বলছে, ২০১৭ সালে দেশে শিশুকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর হার ৬৫ শতাংশ। জরিপটি চালায় জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট)। নিপোর্টের ২০১১ সালের একই জরিপে এ হার ছিল ৬৪ শতাংশ। দেশের ১১টি সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নিপোর্টের ২০২১ সালের নগর স্বাস্থ্য জরিপে দেখা যায়, এ হার আরও কমে ৫২ শতাংশ হয়েছে।

বুকের দুধের গুরুত্ব সম্পর্কে সঠিক ধারণার অভাব, চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের কাছ থেকে ফর্মুলা দুধের পরামর্শ আসা, ফর্মুলা দুধের বিপণনব্যবস্থার প্রভাব, কর্মজীবী নারীদের ছুটির ঘাটতি, স্বজনদের চাপ, অনলাইনে প্রচার, জনসমাগমস্থলে/পাবলিক প্লেসে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা না থাকার কারণে মূলত মায়েরা ছয় মাস পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াতে পারছেন না।

চিকিৎসকরা দিচ্ছেন ফর্মুলরা পরামর্শ

সকাল ৯টার পর থেকেই ঢাকা শিশু হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করে। চলতি বছরের ১১, ১২ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি এই প্রতিবেদক হাসপাতালটির বহির্বিভাগের সামনে সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেছেন। এ সময় দেখা যায়, সন্তানকে কোলে নিয়ে বাবা অথবা মা হন্তদন্ত হয়ে ব্যবস্থাপত্রে উল্লিখিত কক্ষে ছুটছেন। কেউ বের হন স্বস্তি নিয়ে, কেউ আরও উদ্বিগ্ন হয়ে। তারা বের হলেই ঘিরে ধরেন ওষুধ কিংবা ফর্মুলা দুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। দেখেন চিকিৎসক তাদের কোম্পানির ওষুধ লিখেছেন কি না, ফর্মুলা দিয়েছেন কি না। ছবি তোলেন।

এ সময় দেখা যায়, ব্যবস্থাপত্রের সঙ্গে চিকিৎসকরা আলাদাভাবে একটা রঙিন স্টিকার দেন। এতে বয়স অনুযায়ী ফর্মুলা দুধের পাশে টিক চিহ্ন দেয়া থাকে। ঘণ্টায় কমপক্ষে ১০ জন বাবা-মায়ের কাছে এমন স্টিকার দেখা যায়। তারা জানান, চিকিৎসক এই দুধ খাওয়াতে বলেছেন। এতে সন্তানদের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কামরাঙ্গীরচর থেকে ছেলেকে নিয়ে এসেছেন নুরুন নাহার। তিনি বলেন, প্রতিবার ওষুধ খাওয়ানোর আগে চিকিৎসক এই দুধ খাওয়াতে বলেছেন।

চিকিৎসকদের সরবরাহ করা ফর্মুলা দুধের বেশ কিছু স্টিকারের ছবি তুলেছেন এই প্রতিবেদক। এতে দেখা যায়, বহির্বিভাগের ১৮৪ ও ১৮৫ নম্বর কক্ষ থেকেই এই স্টিকার এসেছে। এই দুটি কক্ষের টেবিলের ওপরওে প্রকাশ্যেই এই স্টিকার রাখা ছিল। হাসপাতালের নথি বলছে, প্রতিটি কক্ষে দুজন করে চিকিৎসক ছিলেন। তারা সবাই হাসপাতালটির আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

বহির্বিভাগের চিকিৎসক ও আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নূর-উজ-জামান বলেন, রোগীর ডায়রিয়া হলে বা আগে থেকে ফর্মুলা দুধ খেলে তখন প্রয়োজন অনুযায়ী ফর্মুলা দুধের পরামর্শ দেয়া হয়। কিনতে যাতে ভুল না হয়, সে কারণে ব্যবস্থাপত্রে না লিখে স্টিকারে টিক দেয়া হয়। তবে এর বিনিময়ে দুধ কোম্পানির কাছ থেকে কোনো উপহার বা আর্থিক লাভ নেননি বলে জানান তিনি।

এই হাসপাতালসহ শ্যামলী, মোহাম্মদপুর এলাকায় কাজ করেন- এমন তিনজন ফর্মুলা দুধ কোম্পানির প্রতিনিধির (নাম প্রকাশ না করার শর্তে) সঙ্গে কথা হয়। এর মধ্যে তুলনামূলক নতুন কোম্পানির প্রতিনিধি জানান, ব্যবস্থাপত্রে ফর্মুলা দুধ লেখা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই চিকিৎসককে তার কোম্পানি থেকে স্টিকার সরবরাহ করা হয়। অনেক চিকিৎসক আলাদা কাগজেও লিখে দেন। তবে বেশির ভাগ সময় এ পরামর্শ থাকে মৌখিক।

কেন তার কোম্পানির দুধ এই চিকিৎসকরা লিখছেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন সাড়ে ১২টার পর চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করি। খাওয়ার পানি, কলমসহ টুকটাক উপহারও দিতে হয়।’ এর বাইরে নিয়মিত মাসোহারার ব্যবস্থা আছে। আয়োজন করতে হয় বৈজ্ঞানিক সেমিনারের। সেখানে চিকিৎসকদের আলোচক হিসেবে রাখতে হয়, দিতে হয় সম্মানী।

ফর্মুলা দুধের ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের ভূমিকা দেখতে শিশুদের জন্য বিশেষায়িত সবচেয়ে বড় হাসপাতালটি নমুনা হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। এমন অভিযোগ আছে দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও।

ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফের যৌথভাবে করা ‘ফর্মুলা দুধের বিপণন কীভাবে শিশুকে খাওয়ানোর বিষয়ে আমাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে’ শীর্ষক জরিপ বলছে, মা হয়েছেন এমন ৯৮ শতাংশ নারীর প্রবল ইচ্ছা ছিল ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানোর। কিন্তু সঠিক পরামর্শের অভাবে তারা পারেননি। প্রসব-পরবর্তী অবস্থায় শিশুকে ফর্মুলা দুধ দেয়ার ৬০ শতাংশ পরামর্শ দেন পেশাদার স্বাস্থ্যসেবাদাতারা।

বাংলাদেশসহ আটটি দেশের ৮ হাজার ৫০০ মা-বাবা, অন্তঃসত্ত্বা নারী ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে জরপিটি করা হয়। জরিপের প্রকাশকাল ২০২২।

হাসপাতালে জন্ম নেয়ারা ফর্মুলা পায় বেশি

নিজস্ব জরিপে দেখা যায়, অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ শতাংশ মা ছয় মাসের আগেই শিশুকে ফর্মুলা দুধ দিয়েছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগই হাসপাতালে সন্তান প্রসব করেছেন। সরকারি জরিপেও এই প্রবণতা লক্ষ করা যায়। তথ্য বলছে, ঘরে জন্ম নেয়া শিশুদের তুলনায় হাসপাতালে জন্ম নেয়া শিশুরা ফর্মুলা দুধ পায় ২০ শতাংশ বেশি।

স্কুলশিক্ষক সুমি আক্তার সন্তান জন্ম দেন মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে। শিশু জন্মের পর কান্নাকাটি করলে চিকিৎসক ফর্মুলা দুধ খাওয়াতে বলেন। বাসায় ফিরে চেষ্টা করলেও শিশু আর মায়ের দুধ মুখে নেয়নি। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে শিশু জন্মদানের পর চিকিৎসক ও সেবিকাদের মাধ্যমে একই ধরনের পরামর্শ পেয়েছেন মা রোকেয়া রহমান। তবে এসব পরামর্শ ছিল মৌখিক।

শিশু ও গাইনি বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশু জন্মের প্রথম তিন দিনে মায়ের বুকে খুব কম পরিমাণে (শাল) দুধ আসে, ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ২ চা-চামচ। এই দুধকে অপর্যাপ্ত মনে করেন মাসহ স্বজনরা। এ সময়ে পেটব্যথা, গরমসহ নানা কারণে কান্নাকাটি করে শিশুরা। সিজারের মাধ্যমে সন্তান হলে প্রথম দিন অনেক সময় দুধ নামে না। তখন অনেক অভিভাবক ফর্মুলা দুধ দিয়ে দেন। আবার অনেক চিকিৎসক ফর্মুলা দুধ কোম্পানির প্রলোভনের ফাঁদে আটকে ফর্মুলা দুধের পরামর্শ দেন। হাসপাতালে বিনা মূল্যে দুধের নমুনাও পান মায়েরা।

হাসপাতাল বা বাড়িতে ডেলিভারির সঙ্গে বুকের দুধ পানের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের গর্ভবতী, প্রসূতি ও গাইনি বিশেষজ্ঞ এবং সার্জন ছাবিকুন নাহার। তিনি বলেন, সি-সেকশন হলে প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে দুধ নামতে কিছুটা দেরি হতে পারে। এ সময় ধৈর্য ধরে সঠিক পজিশনে নিয়ে শিশুকে বারবার খাওয়াতে হবে। এতে দ্রুত অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ হয়ে শিশু দুধ পাবে। শিশু কান্না করলেই ক্ষুধা লাগছে, এ ধারণাও দূর করা জরুরি।

বাধ্য হন কর্মজীবী মায়েরা

গর্ভকালীন অবস্থায় অসুস্থ থাকায় সন্তান জন্মদানের বেশ আগেই ছুটি নিতে হয়েছিল সরকারি কর্মকর্তা সোহানা ইসলামকে। চাকরিতে যোগদান করতে ছেলেকে তিন মাস বয়স থেকেই ফর্মুলা দুধ দিয়েছেন। এ নিয়ে তার অনেক আক্ষেপ। তিনি বলেন, ‘অনেকবার মনে হয়েছে সন্তানকে পুষ্টি থেকে বঞ্চিত করছি। কিন্তু চাকরি বাঁচাতে ফর্মুলা দুধ বেছে নিয়েছি।’ একটি স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আফরিন শাহনাজও আড়াই মাস বয়স থেকে মেয়েকে ফর্মুলা দুধ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মেয়ের বারবার ডায়রিয়া হচ্ছিল, গ্যাসের সমস্যায় ভুগেছে। তবুও ফর্মুলা চালিয়ে গিয়েছি।’ রাত জাগলে সকালে ঠিকভাবে অফিস করতে পারবেন না বলে রাতে ফর্মুলা দুধ দিয়েছেন ব্যাংকার রুমানা সরকার। একই ধরনের কথা বলেন আর কয়েকজন মা।

নিজস্ব জরিপে অংশগ্রহণকারী যেসব মা ছয় মাসের আগেই ফর্মুলা দুধ দিয়েছেন, তাদের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী। ফর্মুলা দেয়ার পর নানা ধরনের রোগে ভোগার হারও এসব শিশুর বেশি। কিন্তু কর্মস্থলে ফেরার তাড়া থেকে দুই মাস পার হতেই ফর্মুলা দুধ দেয়া শুরু করেন বলে জানান মায়েরা। সরকারি জরিপও বলছে, শিশু জন্মের প্রথম মাসে যেখানে ৮৫ শতাংশ মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, শিশুর তিন-চার মাসে সেই হার হয়ে যায় ৪০ শতাংশ। সরকারিভাবে মায়েরা মাতৃত্বকালীন ছুটি দুবার ছয় মাস করে ভোগ করতে পারেন। শ্রম আইন অনুযায়ী, বেসরকারিভাবে এই ছুটি চার মাস।

মায়েরা আরও বলছেন, এর পাশাপাশি শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য যে যত্ন ও খাবার দরকার, সে ব্যবস্থা নেই অনেক চাকরিজীবী মায়ের। তবে কোনো কোনো মা ফর্মুলা দুধকে পুষ্টিকর ভেবেও দেন। কর্মস্থলে এবং পাবলিক প্লেসে দুধ খাওয়ানোর ব্যবস্থা না থাকার কারণেও অনেক মা শিশুকে ফর্মুলা দুধ দেন।

অনলাইন ফর্মুলা দুধের প্রচার

মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে ফর্মুলা দুধের প্রচার জোরেশোরে এখন চলছে অনলাইনে। ফর্মুলা দুধ কোম্পানির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পেজ রয়েছে। চিকিৎসকরাও ইউটিউবে ফর্মুলা দুধের পরামর্শ দিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করেন। মায়েদের বিভিন্ন গ্রুপে ফর্মুলা দুধের গুণগান করা হয়। এমন গুণগান শুনে অনেক মা-ই ফর্মুলা দুধ দেন। এমন একজন মা হচ্ছেন তাসলিমা আক্তার। তিনি ছেলের বয়স দুই মাস পার হতেই ফর্মুলা দুধ দেন। দুধ শুরু করার কয়েক দিনের মাথায় হজমের সমস্যা ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। পরে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। তাসলিমা বলেন, ‘মনে হয়েছে ছেলের ওজন কম। গুঁড়া দুধ খাওয়ালে ছেলের স্বাস্থ্য ভালো হবে। গ্রুপে পোস্ট করে সবার পরামর্শ নিয়ে দুধ দিয়েছি।’ এ রকম দুটি গ্রুপের অ্যাডমিন প্যানেল ঘেঁটে দেখা যায়, তারা ফর্মুলা দুধসহ শিশুখাদ্য বিক্রি করেন। বিভিন্ন পোস্টের মাধ্যমে ফর্মুলা দুধের গুণগান করা হয়।

মায়ের দুধ খাওয়ানো নিয়ে কাজ করে জাতিসংঘের এমন একটি সংস্থার স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও পুষ্টিবিদ (নাম না প্রকাশের শর্তে) বলেন, প্রকাশ্য বা অনলাইনে ফর্মুলা দুধের প্রচার নিষিদ্ধ কিন্তু চলছে। শাস্তিযোগ্য এসব ফৌজদারি অপরাধ প্রকাশ্যেই ঘটছে। পর্যবেক্ষণ নেই। শাস্তি হয় না বলেই দিন দিন ফর্মুলা দুধের আগ্রাসন বাড়ছে বলে মন্তব্য এই জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদের।

করণীয় কী

জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের বিভাগীয় প্রধান (ফিল্ড) মাহবুব আরেফীন রেজানুর বলেন, ‘ফর্মুলা দুধের আধিপত্য কমাতে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে বিদ্যমান আইনটি সম্পর্কে অংশীদারদের সচেতনতার কাজ জোরেশোরে চলছে। লোকবলের অভাবে তদারকি করা যাচ্ছে না। তবে কোনো চিকিৎসক ফর্মুলা দুধ দিচ্ছেন, প্রমাণ পেলে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’ এখন পর্যন্ত এ ধরনের অপরাধে কেউ শাস্তি পেয়েছেন বলে এই কর্মকর্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। যদিও একদল চিকিৎসকের বিদেশ সফর বন্ধ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক এস কে রায় বলেন, গুঁড়া দুধ কোম্পানি অবাধে প্রচার করছে, মায়েরা প্রভাবিত হচ্ছেন। এ পরিস্থিতি আইন লঙ্ঘনকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।


ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬১০ জন।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৫৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা সিটিতে ২০১ জন এবং ঢাকা সিটির বাইরে ৭৫৮ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৫৬৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন।

এতে আরও বলা, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩ লাখ ১০ হাজার ৪৬ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৯ জন ও ঢাকার বাইরে ২ লাখ ২ হাজার ৫৪৭ জন।

সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩ লাখ ৪ হাজার ৮৬৯ জন। ঢাকায় ১ লাখ ৫ হাজার ৫৬৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৩০১ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।


ডেঙ্গুতে মৃত্যু ১৬০০ ছাড়ালো

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১৬০৬ জনে দাঁড়ালো।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯২০ জন। নতুন এসব শনাক্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১৯ জন, আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০১ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৩ হাজার ৪৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ১১ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২ হাজার ৪৮২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৯ হাজার ৮৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৭ হাজার ২৯৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ১ হাজার ৭৮৯ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ লাখ ৩ হাজার ৯৮৮ জন। ঢাকায় ১ লাখ ৫ হাজার ৩৫৭ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬৩৮ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।


দেশের মাতৃত্ব, নবজাতক ও কিশোরীদের স্বাস্থ্য পরিষেবায় মিডওয়াইফদের অর্জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশের মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ২০১০ সালে মিডওয়াইফারি কার্যক্রমের সূচনা করেন। একই সময়ে বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটি (বিএমএস) মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অনুমোদিত বাংলাদেশের সকল মিডওয়াইফদের নিয়ে একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে বলে জানিয়েছে বিএমএস।

সম্প্রতি ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটের নসরুল হামিদ অডিটোরিয়ামে সরকারী ও বেসরকারী স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা এসব তথ্য জানায়।

অনুষ্ঠানে মিডওয়াইফদের কাজের স্বীকৃতি, মাতৃত্ব, নবজাতক এবং কিশোরীদের স্বাস্থ্য বিষয়ে মিডওয়াইফারি পরিষেবাগুলোর শক্তিশালীকরণ এবং মানসম্পন্ন মিডওয়াইফারি শিক্ষা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়। বর্তমানে, বাংলাদেশে ৭২৩০ জন লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিডওয়াইফ (বিএনএমসি রিপোর্ট ৩১-জুলাই-২০২৩ অনুযায়ী) রয়েছেন। যাদের মধ্যে ২,৫৫৭ জন মিডওয়াইফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন সাব সেন্টারে কর্মরত, আনুমানিক প্রায় ৫০০ জন মিডওয়াইফ রোহিঙ্গা রিফুজি ক্যাম্পগুলোতে এবং বাকিরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। মোট ১৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫,৭০৫টি আসন রয়েছে; ৬২টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১,৮২৫টি এবং ১০৮টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে ৩,৮৮০ টি আসন রয়েছে ।

বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সংগঠিত মোট স্বাভাবিক প্রসবের ৭৪% মিডওয়াইফরা সম্পন্ন করছেন। মিডওয়াইফরা নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে মা ও নবজাতক শিশুদের জীবন বাঁচাতে পারলেও স্বীকৃতির দিক থেকে তারা পিছিয়ে। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে মিডওয়াইফরা অপর্যাপ্ত সংখ্যায় কাজ করছেন।

সভায় আরও বলা হয়, মা ও নবজাতক শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষা, সিজারিয়ান ডেলিভারি কমানো ও নরমাল ডেলিভারি বাড়ানোর জন্য সরকারি এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অনতিবিলম্বে আরও মিডওয়াইফ নিয়োগ প্রয়োজন।

মিডওয়াইফ পেশাটিকে সাধারন মানুষের কাছে আরো বেশী পরিচিত করা প্রয়োজন যাতে তারা সেবা নিতে পারে এবং সরকার কর্তৃক মিডওয়াইফদের নির্ধারিত কর্ম বিবরণী অনুযায়ী কাজের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্যও সভায় জানানো হয়।

সভায় বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটির সভাপতি আছমা খাতুন্, সাধারণ সম্পাদক সংগীতা সাহা প্রেমাসহ মিডওয়াইফ সৈয়দা মাহফুজা ঝুমু, নির্বাহী সদস্য জেরিন তাসনিম ও প্রজেক্ট ম্যানেজার শারমিন শবনম জয়া বক্তব্য রাখেন।


ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩ মৃত্যু

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত আরও ৩ জন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৫৯৮ জন মারা গেলেন।

রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার সকাল আটটা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ৯৭১ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ২১৭ এবং ঢাকার বাইরে ভর্তি আছেন ৭৫৪ জন।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৩ হাজার ৫৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৮ হাজার ১৬৭ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৯ জন। ঢাকার বাইরে ২ লাখ ১ হাজার ৮৮ জন।

চলতি বছর ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ লাখ ২ হাজার ৯৭৪ জন।

দেশে গত ১৫ নভেম্বর ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন মারা গেছেন, যা একদিনে এ বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একদিনে ২১ জন মারা যান, যা ডেঙ্গুতে এ বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। তারও আগে গত ২ সেপ্টেম্বরও ডেঙ্গুতে ২১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের জন্য জনবলকে প্রশিক্ষিত করতে হবে: বিএসএমএমইউ উপাচার্য

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন এর অর্থায়নে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ‘টেক স্টক অব দ্য টেকনোলজিক্যাল ইনোভেশনস ইউজড ফর বেটার ট্রিটমেন্ট অব ডিজিজ’ শীর্ষক গবেষণাটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

রবিবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ই-ব্লকে ইপনার শ্রেণিকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ গবেষণাটির উদ্বোধন করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। সামনের দিনগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তি চিকিৎসা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে। সেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার, রোবটিক সার্জারি করার জন্য এখন থেকে জনবলকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো জনবলকে কিভাবে প্রশিক্ষিত করা হবে তার জন্য প্রয়োজন গবেষণা। আজকের এই গবেষণার মাধ্যমেই সেই প্রশিক্ষণের রূপরেখা তৈরি হবে।’

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই প্রকল্পটিতে প্রথমবারের মতো ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত একত্রে কাজ করছে। এই সহযোগিতার লক্ষ্য হলো, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে এবং রোগের চিকিৎসা সেবা উন্নতি করার জন্য একটি নতুন পথ উন্মোচন করা। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী চিকিৎসকরা রোগের উন্নত চিকিৎসা বাড়নোর ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং রোগের চিকিৎসা ও উন্নয়নের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকার উপর একটি উন্মুক্ত আলোচনা করেন।

আলোচনার মাধ্যমে এই বিষয়ের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, সুযোগ এবং আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে। এতে বিভিন্ন সংস্থা, টারশিইয়ারি কেয়ার হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিতসক ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের জনস্বাস্থ্য-২-এর কারিগরি সহায়তা বিশেষজ্ঞ এবং সহ-প্রধান গবেষক ডা জোবায়ের ইবনে জাইদ, গবেষণাটির রূপরেখা এবং স্বাস্থ্য খাতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের চেযারম্যান এবং প্রিভেন্টিভ এন্ড সোস্যাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা.মোঃ আতিকুল হক। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফ হক খান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ডা. মোঃ আখতারুজ্জামান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (অটিজম ব্যবস্থাপনা অধিশাখা) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ডা. মোঃ শিব্বির আহমেদ ওসমানী মো. আনোয়ার হোসেন আকন্দ (বিপিএএ), ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ওঈঊঝঈঙ) এর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সেক্টরের প্রধান ড. রাহিল কামারও জুমের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।


ডেঙ্গুতে আরও ৬ মৃত্যু

আপডেটেড ২৪ নভেম্বর, ২০২৩ ১৯:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৮৩ জনে। এসময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৪৫ জন ডেঙ্গুরোগী।

অন্যদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন তিন হাজার ৮৪৮ জন ডেঙ্গুরোগী।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৬৪৫ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১৫৪ এবং ঢাকার বাইরের ৪৯১ জন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট তিন লাখ ৬ হাজার ৪৩৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা এক লাখ ৬ হাজার ৬৭৮ জন, আর ঢাকার বাইরের এক লাখ ৯৯ হাজার ৭৫৯ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন লাখ এক হাজার ছয়জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা এক লাখ ৪ হাজার ৭০৬ জন এবং ঢাকার বাইরের এক লাখ ৯৬ হাজার ৩০০ জন।


ডেঙ্গুতে আরও ৭ মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৯৪

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৭৭ জনে। এসময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ৯৪ জন ডেঙ্গুরোগী। অন্যদিকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে চিকিৎসাধীন আছেন চার হাজার ১২৪ জন ডেঙ্গুরোগী।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫ হাজার ৭৯২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৬ হাজার ৫২৪ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ২৬৮ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ লাখ ৯১ জন। ঢাকায় ১ লাখ ৪ হাজার ৪৯৫ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৯৫ হাজার ৫৯৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

২০২২ সালে ডেঙ্গুতে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। একই সঙ্গে আলোচ্য বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। একই বছর দেশব্যাপী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

বিষয়:

ডেঙ্গুতে এক দিনে আরও ১১৬২ জন ভর্তি, মৃত্যু ৮

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ হাজার ১৬২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে আরও আটজনের। এ নিয়ে মশাবাহিত এ রোগে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪ হাজার ৬৯৮ জন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৫৭০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২২৯ জন ঢাকা মহানগরে এবং ৯৩৩ জন দেশের অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গত এক দিনে যারা মারা গেছে, তাদের মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সমান সংখ্যক চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

এ বছর ভর্তি রোগীর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৬ হাজার ২৭১ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪২৭ জন। ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৯১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকায়। বাকি ৬৫৭ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছে।

গতকাল সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিল ৪ হাজার ১৭৮ জন রোগী। তাদের মধ্যে ১১০৯ জন ঢাকায় এবং ৩ হাজার ৬৯ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।


ডেঙ্গুতে মৃত্যুর কাতারে আরও ৮ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও আটজন মারা গেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১ হাজার ৫৬২ জন মারা গেলেন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৮৪ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৩ হাজার ৫৩৬ জনে পৌঁছেছে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ৪ হাজার ৪৬২ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সরকারি পরিসংখ্যান গত ২৪ বছরের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। দেশে গত ১৫ নভেম্বর ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৪ জন মারা গেছেন, যা একদিনে এ বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে একদিনে ২১ জন মারা যান, যা ডেঙ্গুতে এ বছর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু। এরও আগে গত ২ সেপ্টেম্বরেও ডেঙ্গুতে ২১ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


ডেঙ্গুতে মারা গেলেন আরও ৫ জন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৫ জন মারা গেছে। এ সময় নতুন করে আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৯৭ জন।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, গত রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ঢাকার মধ্যে ২৮৬ জন এবং ঢাকার বাইরের ৯১১ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ঢাকার ৩ জন এবং ঢাকার বাইরের ২ জন।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৪ হাজার ৬৫৩ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ১৯৩ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৪৬০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ লাখ ২ হাজার ৪৫২ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ লাখ ৫ হাজার ৮২১ জন আর ঢাকার বাইরের ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৩১ জন। চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৫৫৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৯০৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬৫০ জন।

একই সময় পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ২৪৫ জন। এর মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ১ লাখ ৩ হাজার ৭২৪ জন এবং ঢাকার বাইরের ১ লাখ ৯২ হাজার ৫২১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২০২২ সালে ২৮১ জন, ২০২১ সালে ১০৫ জন, ২০২০ সালে ৭ জন ও ২০১৯ সালে ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়।


অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এমি জান্নাত

রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত এই আইনের অনুমোদন দেয় সরকার। তবে রাজধানীর বিভিন্ন ফার্মাসিটিউক্যালস ঘুরে জানা যায়, অধিকাংশই জানে না এ আইন সম্পর্কে। দু-একজন জানলেও প্রয়োগ নেই সেভাবে। ১৮ থেকে ২৪ নভেম্বর বিশ্ব অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতা সপ্তাহ। বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচি, র‍্যালির মাধ্যমে পালিত হচ্ছে এ সপ্তাহ। এবারের প্রতিপাদ্য ‘সম্মিলিতভাবে অণুজীব প্রতিরোধী সক্ষমতা নিশ্চিত করুন।’

অ্যান্টিবায়োটিক সচেতনতার ধারণাটি এসেছে এর রেজিস্ট্যান্স বেড়ে যাওয়ার কারণে। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কী, এটি হওয়ার কারণ, প্রতিরোধ, প্রতিকার এবং এটি নিয়ে আইন সম্পর্কে কথা হয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে।

অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স কী?
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোভায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক শামসুজ্জামান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মানুষের শরীরে অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ অথবা সঠিকভাবে প্রয়োগ করা না হলে শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে নিজ থেকেই প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলে। একে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স। যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে রেজিস্ট্যান্স ডেভেলপ করবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘যত বেশি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হবে, ব্যাকটেরিয়া নিজেদের মতো করে রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে নেবে।’

কারণ

‘আমাদের দেশে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স ডেভেলপ করার অন্যতম কারণ সাধারণ জ্বর বা ঠাণ্ডাজনিত কারণে ফার্মেসিতে গেলে একটা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দেয়া হয়। বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে এভাবে চাইলেই অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায় না। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কোনো অ্যান্টিবায়োটিক সব দেশে কেউ কিনতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য ব্যাপার অনেকেই জানেন না যে, ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ভাইরাসজনিত যেকোনো রোগে অ্যান্টিবায়োটিক লাগে না। এগুলো ৯৯ শতাংই ভাইরাল, ব্যাকটেরিয়াল না। তবে সর্দি-কাশিতেও পরবর্তী সময়ে সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। ভাইরাল ইনফেকশনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে আমাদের শরীরে যে অ্যান্টিবায়োটিক যেমন মুখে বা পেটে যেটা থাকে, এগুলো তখন রেজিস্ট্যান্স ডেভেলপ করে।

অধ্যাপক শামসুজ্জামান বলেন ‘এটি আশার কথা যে এখন যেহেতু আইন হয়েছে তাই যত্রতত্র অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার কমে আসবে। কারণ আগে কোনো দোকানে গিয়ে চাইলেই সহজে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিলে ব্যবস্থা নেয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। এখন ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে এমন কিছু পেলেই আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে পারবেন।’

ঔষধ প্রশাসনের বক্তব্য
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও আইন কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর ৫০ লাখ লোকের মৃত্যু হয় অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সজনিত কারণে। অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বড় উদ্বেগের কারণ হলেও আগের আইনগুলোতে জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্যাকেটে লাল রঙের মার্কিংয়ের নির্দেশনাসহ রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করা হয়েছে।’

আইনে বলা হয়েছে, রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি ও বিতরণ করা যাবে না- এই বিধান রেখে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঔষধ ও কসমেটিকস আইন-২০২৩ অনুমোদন দেয় সরকার। কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও ওষুধের দোকানের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।

অনেক ফার্মাসিটিউক্যালস জানে না, এ ব্যাপারে ওষুধ প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ আছে কি না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি আছে। অ্যান্টিবায়োটিক সপ্তাহে বিশেষ কর্মসূচি রাখা হয়েছে। স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আমরা মিটিং করেছি, আরও আলোচনা করব। মিডিয়ার মাধ্যমেও আমরা জানাচ্ছি।

প্রতিরোধ
অধ্যাপক শামসুজ্জামান বলেন, ‘অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের আগে অ্যান্টিবায়োটিক কালচার সেনসিটিভিটি করে নিতে হবে। কোন রোগে এটি সেনসিটিভ, সেটি নিশ্চিত হতে হবে। ইউরিন এবং ব্লাড কালচার পরীক্ষার মাধ্যমে এটি নিশ্চিত হওয়া যায়। এই টেস্টের নাম সেনসিটিভিটি টেস্ট। কালচার করার উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যাবে- সেটি কোন অ্যান্টিবায়োটিকে কাজ করবে, সে অনুযায়ী ট্রিটমেন্ট করা। কিন্তু আমাদের দেশে এক শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেও এটি করা হয় না। কারণ এই টেস্ট সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল। তাছাড়া সব জায়গায় এটি করার ব্যবস্থাও নেই।

করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স থেকে প্রতিকার পেতে হলে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পলিসি থাকতে হবে। সঠিক গাইডলাইন থাকতে হবে যে কোন রোগে কোন অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হবে।’

  • মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে হবে।
  • কমিউনিটি পর্যায় থেকে শুরু করে সব হাসপাতাল ও ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে কালচার পরীক্ষার ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
  • আইনের প্রয়োগ যথাযথভাবে করতে হবে যেন চাইলেই কোনো ফার্মাসিটিউক্যালস এটি না দেয়।


২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ মৃত্যু

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫৪৩ জনে।

একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯১৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় চিকিৎসাধীন আছেন ২০৪ ও ঢাকার বাইরে ৭১০ জন।

শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে নিয়মিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার সকাল আটটা খেতে পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৫ হাজার ১৮৬ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১৩০৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৮৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে এখন পর্যন্ত ২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৬৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৫ হাজার ২৮৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ লাখ ৯৪ হাজার ৬৭৬ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৩৫ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৩ হাজার ৮২ এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৯০ হাজার ১৫৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বিষয়:

ডেঙ্গুতে আরও ১১ মৃত্যু

ফাইল ছবি।
আপডেটেড ১৭ নভেম্বর, ২০২৩ ১৮:৩৪
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৫৩৯ জনে।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ঢাকায় ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় মোট ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৫৬ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০৬ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭৫০ জন।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৫ হাজার ২৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। এদের মধ্যে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৩৪৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ হাজার ৯০০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।

চলতি বছর সারা দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯৯ হাজার ৫০ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৫ হাজার ৮৪ জন এবং ঢাকার বাইরে রয়েছেন ১ লাখ ৯৩ হাজার ৯৬৬ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ২ লাখ ৯২ হাজার ২৬৬ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ২ হাজার ৮৪১ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪২৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বিষয়:

banner close