করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়ার পর পুরুষের তুলনায় নারীর জটিলতা দেড় থেকে চার গুণ বেশি। অপরদিকে, যারা করোনাতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাদের জটিলতা হাসপাতালে যাদের ভর্তি হতে হয়নি তাদের তুলনায় দুই থেকে তিন গুণ বেশি। সেইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের পরবর্তীতে ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট এবং হৃদযন্ত্রের জটিলতার ঝুঁকিতে থাকতে হয়েছে।
মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) যৌথভাবে ‘লং টার্ম সিকুয়েল অব কোভিড-১৯: অ্যা লংগিটুডিনাল ফলো-আপ স্টাডি ইন ঢাকা, বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি সেমিনারে এক গবেষণার ফলাফলে এ তথ্য জানায়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার প্রথম পাঁচ মাসের ফলো-আপের ফলাফল সম্প্রতি গবেষণা সাময়িকী দ্য ল্যানসেট রিজিওনাল হেলথ সাউথইস্ট এশিয়ায় প্রকাশিত হয়। এশিয়ার মধ্যে এটি প্রথম গবেষণা যেখানে দেখা যায়, কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠা রোগীরা পরবর্তীতে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকে, যাকে পোস্ট কোভিড-১৯ সিনড্রোম (পিসিএস) বা লং কোভিড হিসেবেও অভিহিত করা হয়। ওই সেমিনারে ‘লং কোভিড ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন ফর ফিজিশিয়ানস’ শীর্ষক একটি নির্দেশিকাও উপস্থাপন করা হয়। গবেষণাটি পরিচালিত হয় ইউএসএআইডির অর্থায়নে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গবেষণায় দেখা গেছে, ৪০ বছরের কম বয়সীদের তুলনায় ৬০ বছরের বেশি বয়সী, যারা করোনা থেকে সেরে উঠেছেন তাদের কার্ডিওভাসকুলার বা হৃদযন্ত্রের জটিলতা (উচ্চ রক্তচাপ, দ্রুত হৃদকম্পন বা পা ফুলে যাওয়া) এবং স্নায়বিক (পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বা হাত ও পায়ে অসাড়তা, ঝিম ঝিম করা ও ব্যথা, স্বাদ ও গন্ধের অস্বাভাবিকতা) জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ। এই রোগের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলোও নারী-পুরুষ ভেদে আবার পৃথক; পুরুষের তুলনায় নারীদের এই জটিলতার প্রকোপ দেড় থেকে চার গুণ বেশি। আবার যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যাদের আইসিইউ দরকার হয়েছিল তাদের, যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়নি তাদের তুলনায় দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার সম্ভাবনা দুই থেকে তিন গুণ বেশি।
বিএসএমএমইউ-এর ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ এবং আইসিডিডিআর,বি-র নিউট্রিশন ও ক্লিনিক্যাল সার্ভিস বিভাগের সহযোগী বিজ্ঞানী ও প্রধান গবেষক ডা. ফারজানা আফরোজ গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
তারা জানান, ২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ঢাকার দুইটি করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ১৮ বছরের বেশি বয়সী ৩৬২ জনকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। তাদের করোনা পরবর্তী জটিলতা নির্ণয় করার জন্য সেরে ওঠার ১ মাস, ৩ মাস এবং ৫ মাস পর ফলো-আপ করা হয়। এসব নারীদের স্নায়বিক, হৃদযন্ত্র, শ্বাসযন্ত্র এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ছিল এবং তাদের গত দুই বছর ধরে ফলো-আপে রাখা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত করোনা রোগী সুস্থ হওয়ার পর এবং নিয়মিত ওষুধ খাবার পরও তাদের রক্তে অনিয়ন্ত্রিত শর্করার (ব্লাড সুগার) সম্ভাবনা ছিল যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়নি তাদের তুলনায় ৯ থেকে ১১ গুণ বেশি। তাই যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তাদের ইনসুলিন প্রয়োজন হয়েছিল বেশি।
এটি শঙ্কার বিষয় মন্তব্য করে অনুষ্ঠানে জানানো হয়, হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া রোগীদের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের নতুন করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার ছিল প্রতি ১ হাজার জনে ১০ জন। একইভাবে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর নতুন করে কিডনি জটিলতা (হাই ক্রিয়েটিনিন এবং প্রোটিনিউরিয়া) এবং লিভার জটিলতা (বর্ধিত লিভার এনজাইম) উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ছিল। তবে এখানে স্বস্তির যে তাদের জটিলতাগুলো কমানো গেছে।
তবে শ্বাসকষ্ট, দ্রুত হৃদকম্পন, পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার, উদ্বেগ, বিষণ্ণতার মতো কিছু বিষয় করোনা থেকে সেরে ওঠার ৫ মাস পরও সেভাবে কমানো যায়নি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, করোনা থেকে সেরে ওঠাদের প্রয়োজনীয় ফলো-আপ এবং চিকিৎসা নিতে হবে। উচ্চ ঝুঁকির কারণে বয়স্ক এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের হৃদরোগ জটিলতার জন্য নিয়মিত ফলো-আপে থাকতে হবে।
আবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের নতুন করে ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। কারণ এটি দেশে ডায়াবেটিসের ঝুঁকিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত এই গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসকদের জন্য লং কোভিড চিকিৎসায় ক্লিনিক্যাল ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, ‘একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইনের অভাবে সহজে নির্ণয় করা যায় না এমন কোভিডের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলোর চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আর তাই প্রস্তাবিত গাইডলাইন চিকিৎসকদের সর্বাধিক সাফল্যের সঙ্গে রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনে সহায়তা করবে।’
আইসিডিডিআর,বি’র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, ‘করোনার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব এবং তার ধরন নির্ণয়ে এই গবেষণার ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
এটি প্রমাণিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘করোনায় যারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়।’
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আইসিডিডিআর,বি ও বিএসএমএমইউ যৌথভাবে আরও নতুন নতুন গবেষণার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম।
ইউএসএআইডির হেলথ এক্সপার্ট ডা. সামিনা অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশে ২০ লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের কী ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিয়েছে এবং তার ব্যাপ্তি কেমন ছিল সেটা অজানা ছিল। কিন্তু এই গবেষণা সে বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।’
এক দিনে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এক হাজার ২১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৮৮ জন। তাদের মধ্যে ৯৩ জন পুরুষ ও ৯৫ জন নারী। এ ছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮০৮ জন।
ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৪৫ জন, ঢাকা বিভাগে ২৩৪ জন, ময়মনসিংহে ২১ জন, চট্টগ্রামে ২২১ জন, খুলনায় ৯১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৯ জন, রংপুর বিভাগে ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১০২ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৩৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১৭৫৫ জন; আর ১৬২৪ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
এ বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২১ হাজার ৫১০ জন ঢাকার বাইরের রোগী। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ২৯৮ জন। গত এক দিনে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সেপ্টেম্বর মাসে এ বছরের সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ২৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এ মাসেই সবচেয়ে বেশি ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অক্টোবরের প্রথম সাত দিনে ৬৮৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে এ নিয়ে মোট ২০ জনের মৃত্যু হলো। এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১৮৬।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে আজ রোববার এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮ থেকে আজ সকাল ৮ পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে ১ হাজার ২২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুজন, খুলনা ও রাজশাহীতে একজন করে দুজন মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জন রোগী ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২০৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬৯, খুলনা বিভাগে ১১১, বরিশাল বিভাগে ৮৭, রংপুর বিভাগে ৫৩, রাজশাহী বিভাগে ৪৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ৭ জন ভর্তি হয়েছেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। এ সময় ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন তখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।
গত বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।
অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৩৫৯ জনের। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ৫৯০ জন।
এ সময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৯৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। এরপর ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে।
ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী ও ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ।
এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা। এই বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৬৯৯। মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ২২।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। একই সময় সারা দেশে ৩১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে আজ শুক্রবার পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সাতজন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০ জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৯৫ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর ৩০ হাজার ৭৮৮ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক এক শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক নয় শতাংশ নারী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। চলতি বছরের এ যাবৎ ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৭৭ জন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
গত একমাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এ রোগটিতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিদিনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও এক হাজার ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪১০ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে মধ্যে রোগটি থেকে মুক্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৯১৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশানিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪ হাজার ১২১ জন। এরমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩০ হাজার ৩৯৩ জন। মারা গেছেন ১৭৭ জন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিনই ভয়াবহ হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চলতি বছর এটাই ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এর আগে গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশে ৮ জনের মৃত্যু এবং ১,২২১জন আক্রান্ত হয়েছে বলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে। ওইদিন মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যায় চলতি বছর রেকর্ড করে। আজ মৃত্যু ৮ জন হলেও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা হয় ১০১৭ জনে।
এদিকে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। এ বছর প্রথম ৯ মাসে ১৬৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শুধু গত সেপ্টেম্বরেই মারা গেছেন ৮০ জন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। একই মাসে প্রতি সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে বলা হয়, আজ হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৭৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২২৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬৬, খুলনা বিভাগে ৯২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া, রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৩১ এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩৩ হাজার ৯৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এমনকি চলতি বছরে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৭৪ জনের।
এ ছাড়া, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
জনস্বাস্থ্যবিদ, কীটতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অক্টোবর মাসে আরও বাড়তে পারে। কারণ, রোগটি বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার অভাব রয়েছে বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, এ বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও মার্চ থেকে তা কমে আসে, অন্তত আগের বছরের তুলনায়। তবে আগস্ট মাস থেকে আবার বাড়তে থাকে সংক্রমণের সংখ্যা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার সময়ের মধ্যে রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৪৪ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৩৯ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫০৫ জন।
চলতি বছর রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩২ হাজার ৮২ জন। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ শতাংশ নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে সারা দেশে এক হাজার ১৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬৩ জন।
আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৮৭ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৭ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৮ জন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৯৮২ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, চলতি বছরে মোট ২৭ হাজার ৩১৩ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ শতাংশ নারী রয়েছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব হার্ট দিবস। হার্টের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশে প্রতি বছর আজকের এই দিনে দিবসটি পালন করা হয়। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘হৃদয়ের যন্ত্র হোক সর্বজনীন’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ সংঘটিত হয় অসংক্রামক রোগের কারণে। হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, শ্বাস রোগের মতো এসব অসংক্রামক রোগে প্রতিবছর দেড় কোটি মানুষ মারা যায়; যাদের বয়স ৩০ থেকে ৬৯ এর মধ্যে। এই মৃত্যুর ৮৫ শতাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটে। বাংলাদেশও এরমধ্যে উলেখ্যযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন- তাদের মধ্যে ১৭ শতাংশরই হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন তরুণের একজন হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বয়স, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টোরেলের মাত্রা, অতিরিক্ত মেদ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী।
চিকিৎসকদের মতে, দিনে খাবারের সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা যায়। তবে এর বেশি হলে ডেকে আনবে মারাত্মক বিপদ। বাসার তৈরি খাবারের পাশাপাশি প্যাকেটজাত খাবারেও ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষকরা এসব খাবারে নিরাপদ মাত্রার চেয়েও বেশি লবণ পেয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে এই সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৬০ জন।
এর ফলে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০ জনে। এছাড়া এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ হাজার ৫৬৫ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে নতুন ভর্তি হয়েছেন ৮৬০ জন। এদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায়ই ৩৭৬ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০৯ জন, বরিশাল বিভাগে ১০১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬৪ জন, খুলনা বিভাগে ৫৩ জন, রাজশাহী বিভাগে ২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২ জন, সিলেট বিভাগে ৬ জন ও রংপুর বিভাগে ১৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ের মাধ্য রোগেটিতে আক্রন্ত হয়ে হাসপাতালে ভার্তি হয়েছেন আরও ৩২১ জন। আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৩১ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৯০ জন রোগী। চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৭ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৫২ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২৭ হাজার ৭০৫ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের প্রাণহানি হয়েছে। এ সময়ে ৮২৯ জন নতুন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর মশাবাহিত এ রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪১ জনে। এ ছাড়া এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৩৮৪ জন।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৮২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকাতেই ৩৫২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগে ১৭২ জন, বরিশালে ৭১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯১ জন, খুলনায় ৭৩ জন, ময়মনসিংহে ২২ জন ও রাজশাহীতে ২৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২৭ হাজার ৩৮৪ জন। যাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ১ শতাংশ নারী।
১ জানুয়ারি থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১৪১ জনের মধ্যে ৫২ দশমিক ৫ শতাংশ নারী এবং ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৮৫৪ জন।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১০, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৩, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৫২, খুলনা বিভাগে ৬৪ জন রয়েছেন। এ ছাড়া, রাজশাহী বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৫ জন ও রংপুর ১০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে, গত এক দিনে সারা দেশে ৭৯৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ২৩ হাজার ৫০৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ২৬ হাজার ৫৫৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৩৮ জনের। এ ছাড়া, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলছেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে গণমাধ্যমসহ সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আজ বুধবার বিকেলে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় মুনসেফের চর কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে দিলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি ছাড়াও আরও নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমসহ সমাজের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
নূরজাহান বেগম বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অনেক সমস্যা রয়েছে। সকলের সহযোগিতা পেলে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানো সম্ভব। আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্য পরিচর্যা নিয়েও সচেতন হতে হবে।
দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডাক্তারের সংকট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করতে হবে।
এর আগে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা শিলমান্দি পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র, নরসিংদী সদর হাসপাতাল, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল, মুনসেফের চর কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন।
এসময় নরসিংদী জেলা সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ মো. আমিরুল হক, পরিবার পরিকল্পনা উপ-পরিচালক নিয়াজুর রহমান, নরসিংদী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান, শিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ সজীব, নরসিংদী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. আবু কাউছার সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।