মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
৬ কার্তিক ১৪৩২

১২ জেলাসহ ৩৯ উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস শুরু বৃহস্পতিবার

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড
২৯ মার্চ, ২০২৩ ২৩:৫৫
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৩ ২৩:৫২

সরকারি চিকিৎসকদের প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ১২ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯টি উপজেলা হাসপাতালে এ কার্যক্রম শুরু হবে। কার্যক্রমের আওতায় দ্বিতীয় শিফটে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রোগী দেখবেন চিকিৎসকরা। সপ্তাহে দুইদিন এই সেবা দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক এই পাইলট প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

গত সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে 'ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস' বিষয়ে বিস্তারিত জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে আগামী ৩০ মার্চ থেকে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ইনস্টিটিউশনাল প্র্যাকটিস শুরু করবো। চিকিৎসকরা প্রাতিষ্ঠানিক প্র্যাকটিস এখানে করবেন সরকারি হাসপাতালে। প্রথমে আমরা কয়েকটি জেলা হাসপাতালে এই কার্যক্রম শুরু করবো।

জাহিদ মালেক আরও বলেন, ‘আমরা দেখবো, সেখানে কেমন কার্যক্রম চলছে। সেখানে যদি কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকে, আমরা সেটা সংশোধন করে পর্যায়ক্রমে ৫০০টি উপজেলা এবং ৬৪ জেলায় তা বাস্তবায়ন করবো। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চিকিৎসকরা সরকারি হাসপাতালে চেম্বার করবেন। সপ্তাহে দুই দিন আপাতত এই কার্যক্রম চলবে। তাদের এই সেবা দেয়ার জন্য সম্মানি নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সম্মানির একটি অংশ চিকিৎসক ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী এবং আরেকটি অংশ হাসপাতাল পাবে।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে দেশের ১২ জেলা সদর হাসপাতাল এবং ৩৯ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বৃহস্পতিবার।

হাসপাতালগুলো হচ্ছে— ঢাকা বিভাগের মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল। চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল, খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতাল। ময়মনসিংহ বিভাগের জামালপুর জেলা সদর হাসপাতাল, খুলনা বিভাগের ঝিনাইদহ জেলা সদর হাসপাতাল, রাজশাহীর নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল, রংপুর বিভাগের ঠাকুরগাঁও জেলা সদর হাসপাতাল, কুড়িগ্রাম জেলা সদর হাসপাতাল, বরিশাল বিভাগের ভোলা জেলা সদর হাসপাতাল, সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল।

এছাড়া ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শরীয়তপুর ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

চট্টগ্রামের নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বান্দরবান লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

ময়মনসিংহের জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, শেরপুরের নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

খুলনার যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মাগুরার শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, যশোরের কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রাজশাহীর নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রাজশাহী পবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নওগাঁর সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

রংপুর বিভাগের দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, নীলফামারীর ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

বরিশাল বিভাগের বরগুনার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বিশ্বনাথ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

এদিকে প্রাইভেট প্র্যাকটিসের আওতায় রোগী দেখার ফি নির্ধারণ করেছে মন্ত্রণালয়। সে হিসেবে অধ্যাপক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা। এরমধ্যে ৪০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন, সেবার সহায়তাকারী পাবেন ৫০ টাকা এবং হাসপাতাল পাবে ৫০ টাকা।

এছাড়া সহযোগী অধ্যাপক বা সিনিয়র কনসালটেন্টের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা, যার ৩০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন। সহকারী অধ্যাপক বা জুনিয়র কনসালটেন্ট বা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা, যার ২০০ টাকা চিকিৎসক পাবেন। এমবিবিএস বা বিডিএস বা সমমনা ডিগ্রিধারী চিকিৎসকদের ফি ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, এরমধ্যে ১৫০ টাকা চিকিৎসক পাবেন।

এছাড়া লোকাল অ্যানেস্থেশিয়া প্রয়োগে ছোট সার্জারির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ফি ৮০০ টাকা এবং সার্জারির ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ফি ১ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।


রুমায় চিকিৎসাসেবা পেলেন ৬৪৬ জন চক্ষুরোগী

রুমায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন একজন বক্তা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:৩৩
রুমা (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসায় সেবা পেলেন ৬৪৬জন। তার মধ্যে ওষুধ ও চশমা গ্রহণের মধ্য দিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ২৮০ জন রোগী। বাকি ২৬২ জন ছানি অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়েছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চট্টগ্রামে লায়ন্স হাসপাতালে নিয়ে ছানি অপারেশন করে চক্ষু চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত ২নং সদর ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে এই চক্ষু চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমংয়ের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং, রুমা সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অংসিনু মার্মা, রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিরা বম এর নেতৃত্বে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা ক্যাম্প আয়োজন করা হয়।

কার্যক্রমটি উদ্বোধনকালে উদ্বোধক পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং বলেছেন চক্ষু চিকিৎসাসেবা হচ্ছে- মানব জীবনের সবচেয়ে উত্তম সেবা। নিজ মন থেকে এ কথাটি অনুধাবিত হয়ে এর আগে রোয়াংছড়ি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে তার ব্যক্তিগত সার্বিক ব্যবস্থাপনায় চক্ষু চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।

তার এই ধারাবাহিকতায় নাইক্ষ্যংছড়ি, লামা ও আলীকদম উপজেলাতেও এই কার্যক্রম পরিচালনা পরিচালনা করা হবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ৩৬ বীর রুমা জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী সরকার। তিনি বলেছেন চিকিৎসা ক্যাম্পের মাধ্যমে দুর্গম এলাকার মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সেনাবাহিনী সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রীতি বান্দরবানে সব উন্নয়ন কাজে একসাথে কাজ করা গেলে অদূর ভবিষ্যতে সম্প্রীতির পাশাপাশি আরো উন্নয়ন করা সম্ভব বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

সভাপতিত্ব করেন ১নং পাইন্দু ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা।

এ চক্ষু চিকিৎসাসেবা ক্যাম্পে সহযোগিতা করেন চট্টগ্রাম লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. সৌমেন তালুকদার তার চিকিৎসক দল।

শিক্ষা ও মানবসেবা সংস্থা কোয়ান্টামের পরিচালক সাইফুর রহমান জুয়েল জানান এর আগেও বিভিন্ন সময় চট্টগ্রাম লায়ন্স হাসপাতালের এমন চিকিৎসা কার্যক্রমে তারা সহযোগিতা প্রায় সময় করে আসছেন। তাদের ও এ সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অটুট থাকবে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্পে দুই শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে চোখের প্রাথমিক চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চশমা পেয়েছেন।

এছাড়াও ২৬২ জন চক্ষু রোগীকে চোখের ছানি অপারেশন প্রয়োজন, তাদেরকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের লায়ন্স দাতব্য চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য সম্পূর্ণ বিনা খরচে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এদিকে চক্ষু চিকিৎসা চলাকালে ৩৬ বীর রুমা জোনের উদ্যোগে তোমার সদর ইউনিয়ন পরিষদের মিলনায়তনে বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প আয়োজন করা হয়। এতে চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন ৩৬ বীর রুমা জোনের এসএমসি, আরএমও চিকিৎসক ক্যাপ্টেন মো. সোহাগ মিয়া সজীব, এবং এএমসি, আর এম ও ক্যাপ্টেন ওমর ফারুক। চক্ষু রোগী ব্যতীত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন।

স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ি এলাকার মানুষদের জন্য এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়- এতে অনেক দরিদ্র্য মানুষ ঘরে বসেই কাঙ্ক্ষিত চক্ষু চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন।


অন্ধের চোখে আলো ছড়াচ্ছে সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যান সমিতি আই হসপিটাল

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল
আপডেটেড ২০ অক্টোবর, ২০২৫ ২০:২১
খোরশেদ আলম, নোয়াখালী

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে অনন্য সাধারণ আধুনিক চক্ষু চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে ‘সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল’। অক্লান্ত পরিশ্রম করে দৃষ্টিহীন মানুষকে পৃথিবীর আলো দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে এই হাসপাতালের দায়িত্বরতরা।

বেগমগঞ্জ থানার সাবেক সার্কেল অফিসার (উন্নয়ন) মরহুম তাফাজ্জল আহমদ এবং সোনাইমুড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম ইউনুস মিয়ার উদ্যোগে ১৯৭৮ সালের জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি।

প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম ছাইদুল হক পাটোয়ারী এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার হাত ধরে পথ চলা শুরু হয় এই সমিতির।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ‘আই ক্যাম্প’ পরিচালনার মাধ্যমে দরিদ্র-হতদরিদ্র রোগীদের চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং লেন্স স্থাপন করা ছাড়াও চশমা প্রদান করা হয়। রয়েছে সেমিনার সিম্পোজিয়াম, র‍্যালি, লিফলেট, বুকলেট,ম্যাগাজিনসহ নানা রকমের প্রচার কার্যক্রম।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি ২০১১ সালের ১০ জুলাই সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটাল নামে অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে নোয়াখালী ও তার পাশ্ববর্তী জেলার জনগণকেও। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ৮০ শতাংশ এবং হাসপাতালের ২০ শতাংশ অর্থে প্লুকোমা চিকিৎসা, ইয়াগ লেজার, চোখের আল্ট্রাসনোগ্রাম (বি-স্ক্যান), সেলাই বিহীন ফ্যাকো অপারেশন, ডায়াবেটিক রোগীর চক্ষু পরীক্ষা, চোখের লেন্স পরীক্ষা সহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছে।

চক্ষু চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রিতা রাণী বলেন, তার চোখের চানি হলুদভাব থাবা ঘিরে নিচ্ছে পুরো চোখ। কিন্তু, টাকার অভাবে চোখের অপারেশন করতে পারছেন না। সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়ার সহযোগিতায় স্বল্প খরচে চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন।

আরেকজন সেবা গ্রহিতা ৭০ বছর ছুঁই ছুঁই হতদরিদ্র আবু কালাম রিক্সা চালিয়ে জিবিকা নির্বাহ করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন। ছানি অপারেশন করতে বিভিন্ন স্থানে অর্থের অভাবে চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পরে, নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের নিটক চোখের চিকিৎসায় সহযোগিতার জন্য যান। জেলা প্রশাসক আবু কালামকে সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি আই হসপিটালে পাঠান। এখানে তিনি অল্প খরচে চিকিৎসাসেবা পেয়ে তিনি আনন্দিত।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির দপ্তর সম্পাদক মো. আবুল বাসার বলেন, এই প্রতিষ্ঠান থেকে কোনো রোগী চিকিৎসা সেবা না নিয়ে ফেরত যাবে না।

সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া জানান, সেবাই মানুষকে মহৎ করে- এ স্লোগান নিয়ে ১৯৭৮ সালে কিছু মানুষের উদ্যোগ ও অনুপ্রেরণায় সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতি প্রতিষ্ঠা করা হয়। যার পেছনে ছিল সমাজের কিছু বিত্তমান ও মহান মানুষের দান-অনুদান।

সরকারের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যাণ সমিতির যৌথ অর্থায়নে আধুনিক চক্ষু হাসপাতালটি নির্মাণ করা হয়েছে। এটি পুরোদমে চালু হলে নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার কিছু অংশ নিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।

সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাছরিন আক্তার বলেন, বাংলাদেশে এমন প্রতিষ্ঠান বিরল। আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত সেবারমান অত্যন্ত ভালো। গরিব-দুঃখিরাই বেশি এখান থেকে সেবা নিচ্ছে।

নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি বলেন, সোনাইমুড়ী অন্ধকল্যান সমিতি আই হসপিটালের সেবার কার্যক্রম প্রচার-প্রচারণা করলে এখানে রোগী আরো বাড়বে। প্রতিদিন এই হাসপাতাল থেকে স্বল্প মূল্যে চক্ষু রোগীরা সেবা নিচ্ছে। গ্রাম অঞ্চলের ভূঁইফোড় ও অনুমোদনহীন চক্ষু চিকিৎসালয়ে না গিয়ে এই হাসপাতালে গেলে সেবা পাবে এবং প্রতারিত হবে না।


শেবাচিমে আধুনিক সিসিইউ উদ্বোধন

হৃদরোগীদের জন্য স্বস্তির বার্তা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর গত রবিবার শেবাচিমে সিসিইউ বিভাগ উদ্বোধন করেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল প্রতিনিধি

মুমূর্ষু হৃদরোগীদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা প্রদানে সুযোগ না থাকা কার্ডিওলজি বিভাগের কঠিন অবস্থা থেকে উত্তরণ এখন দৃশ্যমান। করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) দুরবস্থার অবসান ঘটিয়ে ওয়ার্ডটি আধুনিকায়ন করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর আধুনিক সিসিইউ বিভাগ উদ্বোধন করেন।

সূত্র মতে, ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল দোতলা বিশিষ্ট আইসিও নতুন ভবন উদ্বোধনের পর দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তর করা হয় করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) বিভাগ। ৩৩ বছর আগে শুরু হওয়া ইউনিটটি দীর্ঘ সময় ধরে দুরবস্থা ছিল। সেই সময় থেকে শের-ই বাংলা মেডিকেলের সিসিইউ বিভাগে সরকারি খাতা কলমে মোট ৮টি শয্যা থাকলেও পরে তা ১২টিতে উন্নীত করা হয়। শয্যা সংকটের কারণে রোগীরা মেঝেতে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছিলেন। হাসপাতালের মূল ভবন থেকে আলাদা ভবনের দ্বিতীয় তলায় স্থানান্তরের পর ৮টি শীতাতপ মেশিন স্থাপন করা হয়। বছর দুয়েক পর সবগুলো বিকল থাকায় অসহ্য গরমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে শুরু করে রোগীরা। অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসক ও নার্সদের অসহযোগিতা ও অব্যবস্থাপনায় ক্ষুদ্ধতা চরমে পৌঁছায়। দীর্ঘদিন পর শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউ সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে চালু হলো। এটি বরিশালের মানুষের বহুদিনের দাবি পূরণ করেছে। বর্তমান হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মশিউল মুনীরের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল। সোমবার হাসপাতালের আই ব্লকে আইসিইউ ভবনের ২য় তলার পশ্চিম পাশে আধুনিক সিসিইউ বিভাগ উদ্বোধন শেষে হাসপাতালের ৪র্থ তলার সার্জারি সেমিনার হলে সভা অনুষ্ঠিত হয়। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীরের সভাপতিত্বে সভায় সিসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. অসিম বিশ্বাস জানান, হাসপাতাল পরিচালক স্যারের একান্ত প্রজেক্ট অনুযায়ী আধুনিক মানে নতুন করে হৃদরোগ (কার্ডিওলজি) বিভাগের করোনারি কেয়ার ইউনিট সাজানো হয়েছে। এখানে নতুন করে আধুনিক মানের ২৪টি বেড রাখা হয়েছে। প্রতিটি বেডের সাথে কার্ডিয়াক মনিটর, অক্সিজেন, সেন্ট্রাল এসি, ৪টি নতুন টয়লেট নির্মাণ, দেয়ালের পলেস্তারা ঠিক করাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পরিবর্তন করা হয়েছে। সভায় সঞ্চালনার দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. মুনজিবা শিরিন বলেন, শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আধুনিকায়ণের রূপকার আমাদের পরিচালক স্যার। রোগীদের প্রযাপ্ত সেবা নিশ্চিত করতে তিনি একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি আধুনিক মানের ল্যাবরেটরি মেডিসিন বিভাগ ও হেমাটোলজি ল্যাবরেটরি বিভাগ এবং অটো মেশিন প্রক্রিয়া চালু করা হয়েছে। তার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আজ উদ্বোধন করা হলো আধুনিক সিসিইউ বিভাগ। আমরা পরিচালক স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। সভায় পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, আজ আমাদের একটি আনন্দের দিন। শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আধুনিক সিসিইউ বিভাগের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই বিভাগের রোগীদের আর গরমে কষ্ট করতে হবে না।

সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে এখানে সকল সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে। সিসিইউ বিভাগটি আধুনিকায়ন করার জন্য যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের তিনি ধন্যবাদ জানান। সিসিইউ বিভাগ আধুনিকায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. একেএম নজমূল আহসান, সিসিইউ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও সহকারী অধ্যাপক ডা. অসিম বিশ্বাস, হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মোহাম্মাদ মাহামুদ হাসান, কার্ডিওলজি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. এ বি এম ইমাম হোসেন (জুয়েল), ডা. মো. মাহামুদুল হাসান, ডা. মো. আফজাল হোসেন, বরিশাল প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম খসরু, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ, মো. নাসিমুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক, নার্স, এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।


ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ হাজার ছুঁই ছুঁই

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিস মশাজনিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯৫০ ডেঙ্গুরোগী। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৪৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে ২৪৫ জনের মৃত্যু হলো।
গতকাল রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩২ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১৫৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯ জন, খুলনা বিভাগে বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫৬ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৩ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২০ জন রয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৮৪৮ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে। চলতি বছরে এযাবৎ মোট ৫৬ হাজার ৮১১ জন রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।
চলতি বছরের ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ নারী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছরে এযাবৎ ডেঙ্গুতে মোট ২৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট ৫৭৫ জনের মৃত্যু হয়।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।


শীতের শুরুতে রোগ প্রতিরোধে কার্যকর আদা-লেবুর চা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

শীতের সময় ঘনিয়ে আসছে, সঙ্গে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ-আশঙ্কা। ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতকালে প্রতিদিন আদা ও লেবুর চা পান করলে সার্বিক সুস্থতা বজায় থাকে, শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ওজন কমাতে সহায়তা করে, হজমে উন্নতি ঘটে এবং হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

আদা সাধারণত বুকজ্বালা, গ্যাস্ট্রিক, বমি ভাব এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। অন্যদিকে লেবুতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে, রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে, কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং হজমে সহায়তা করে।

দুই উপাদান আলাদা আলাদাভাবে যেমন উপকারী, একসঙ্গে মিশিয়ে পান করলে তা আরও কার্যকর হয়।

হজমে উন্নতি

আদা খাবার হজমের গতি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটির ঝুঁকি কমায়। লেবু পাকস্থলীর অ্যাসিড উৎপাদন বাড়ায়, যা খাবার হজমে সহায়তা করে।

শরীর গরম রাখে

শীতের সময় শরীর গরম রাখা জরুরি। আদার চা পান করলে শরীরে প্রাকৃতিকভাবে উষ্ণতা তৈরি হয়, কারণ আদা ঘাম ঝরানোর মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

আদা ও লেবু উভয়ই শরীরের প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। আদায় রয়েছে প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান, আর লেবু সরবরাহ করে ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাগুণ। একসঙ্গে তারা শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা আরও শক্ত করে।

বুক জ্বালায় আরাম

বুকজ্বালায় আদা উপশম দেয়, কারণ এটি হজমনালীকে শান্ত করে এবং প্রদাহ কমায়। যদিও লেবু অ্যাসিডিক প্রকৃতির, তবে অল্প পরিমাণে গ্রহণ করলে এটি হজম এনজাইমের সঙ্গে মিশে অ্যালকালাইন প্রভাব তৈরি করে, যা পাকস্থলীর অতিরিক্ত অ্যাসিড নিরপেক্ষ করতে সাহায্য করে।

সর্দি-কাশিতে উপকার

শীতকালে সর্দি-কাশি বা ফ্লুর মতো সমস্যা হলে আদা-লেবুর চা প্রাকৃতিক প্রতিকার হিসেবে কার্যকর বলে মনে করা হয়। এতে থাকা অ্যান্টিভাইরাল, প্রদাহনাশক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শ্বাসনালীর বন্ধভাব দূর করে, গলা ব্যথা কমায় ও প্রদাহ হ্রাস করে।

শীত মৌসুমে প্রাচীনকাল থেকেই আদা-লেবুর এই মিশ্রণকে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে আসছে। এটি যেমন সুস্বাদু, তেমনি শরীরের রোগপ্রতিরোধে অত্যন্ত উপকারী।


শীত আসার আগেই ঠোঁট ফাটছে ? 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রকৃতিতে এখন হেমন্তকাল চলছে। শীত আসার আগে এ সময়টায় ত্বকের সাথে সাথে অনেকের ঠোঁটেও দেখা দেয় রুক্ষতা। এ কারণে শীত আসার আগেই ঠোঁটের নিয়মিত যত্ন নেওয়া জরুরি। যাদের এখন থেকেই ঠোঁট ফাটছে বা শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে তারা ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন- অলিভ অয়েল ও চিনির স্ক্রাব: এক চা চামচ অলিভ অয়েল, এক চা চামচ চিনি এবং আধা চা চামচ বেসন মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট ঠোঁটে মেখে রাখুন। শুকিয়ে গেলে ভেজা হাতে ম্যাসাজ করে তুলে ফেলুন। এটি সপ্তাহে দু-এক দিন করতে পারেন।

নারকেল বা ভিটামিন ই তেল: রাতে ঘুমানোর আগে ঠোঁটে নারকেল তেল বা ভিটামিন ই অয়েল লাগিয়ে ঘুমাতে পারেন। সকালে উঠে ধুয়ে ফেলুন। এতে ঠোঁটে আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

বিটরুট ও গোলাপের ভ্যাসলিন: বিটরুটের রস এবং গোলাপের পাপড়ি একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন। ঠান্ডা হলে ভ্যাসলিনের সাথে মিশিয়ে রাখুন। এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ঠোঁট নরম থাকবে।

দৈনন্দিন যত্ন

নিয়মিত ভ্যাসলিন/লিপজেল ব্যবহার: শীতকালে ঠোঁটকে নরম ও কোমল রাখতে নিয়মিত ভ্যাসলিন বা ভালো মানের লিপজেল ব্যবহার করতে পারেন।

পর্যাপ্ত পানি পান: শরীরকে সতেজ রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরি।

ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার: ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে তা ঠোঁটের ক্ষতি করতে পারে।

সূর্যের আলো থেকে সুরক্ষা: বাইরে বেরোনোর সময় এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করুন। তা না হলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ঠোঁটের ক্ষতি করতে পারে।


হার্ট অ্যাটাকের ৯৯ শতাংশ ঝুঁকি এই চার কারণে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

হার্ট অ্যাটাক এখন বিশ্বজুড়ে দ্রুত বাড়তে থাকা স্বাস্থ্যঝুঁকির একটি। চিকিৎসকরা বলছেন, সুস্থ মনে হলেও অনেক মানুষের শরীরে নীরবে তৈরি হয় হৃদরোগের ঝুঁকি। অনেক সময় কোনো লক্ষণ ছাড়াই হঠাৎ ঘটে যায় হৃদ্‌রোগজনিত জটিলতা।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ এবং আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা অনুযায়ী, হার্ট অ্যাটাকের ৯৯ শতাংশ ঘটনার পেছনে মাত্র চারটি কারণই প্রধান ভূমিকা রাখে।

উচ্চ রক্তচাপ

নিয়ন্ত্রণহীন উচ্চ রক্তচাপ হৃদ্‌রোগের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। রক্তচাপ ১৩০/৮০ এর বেশি হলে ধমনীতে চাপ বৃদ্ধি পায় এবং হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।

উচ্চ কোলেস্টেরল

রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বেড়ে গেলে ধমনিতে চর্বি জমতে শুরু করে। এ জমাট ধমনী সংকুচিত করে এবং রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে, যা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে।

রক্তে অতিরিক্ত শর্করা

ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি হলে ধমনিতে প্লাক জমা হয়। এর ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং হৃদ্‌রোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।

ধূমপান

ধূমপানের ফলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড বাড়ে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) কমে যায়। এতে রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা হৃদপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ কমিয়ে দেয়।

কীভাবে ঝুঁকি কমানো যায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত শরীরচর্চা, সুষম খাদ্যগ্রহণ, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার এবং রক্তচাপ ও রক্তশর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব। পাশাপাশি প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাফি, স্ট্রেস টেস্টসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।


মুখের ক্যান্সার রোগী এত বেশি কেন?

অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

একজন বিখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের উক্তি- ‘ক্যান্সারে যত লোকের মৃত্যু হয়, চিকিৎসায় দেরি হওয়ার জন্য মারা যায় সম সংখ্যক লোক’। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য লোক দেরী করে ডাক্তারের কাছে আসেন, যার ফলে ইতোমধ্যে ক্যন্সার মারাত্মক রূপ ধারণ করে। গবেষণায় দেখা যায়, এর কারণ হলো, জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে ‘ক্যান্সার ভীতি,’ এমন ধারণা যে ক্যান্সার দুরারোগ্য ব্যাধি, এর নিরাময় নেই। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অধিকাংশ ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দেহে যে সকল প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়, এ সম্বন্ধে অনেকে অবহিত নন। এলডাস হাক্সলির একটি উক্তি উল্লেখ্য, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অজ্ঞতাই দায়ী, আমাদের অজ্ঞতার কারণ হলো আমরা জানতে চাই না।’ ক্যান্সারকে মোকাবিলা করার প্রথম শর্ত হলো রোগ সম্বন্ধে জানা, এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলোকে সনাক্ত করা এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। কোনো ক্রমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেন বিলম্বিত না হয়, কারণ এতে রোগ অগ্রসর হতে থাকে এবং পরবর্তীতে দেহের বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার কোষের উপনিবেশ গড়ে ওঠে। এই দুরারোগ্য পর্যায়ে রোগী যখন চিকিৎসকের কাছে আসেন তখন করার বিশেষ কিছু থাকে না।
বাংলাদেশে মুখগহ্বর এ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। নতুন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। খাদ্যনালি কিংবা মুখগহ্বরের কোনো অংশে ক্যান্সার হলে একপর্যায়ে রোগীর জন্য খাবারদাবার গ্রহণের স্বাভাবিক নিয়ম কষ্টকর হয়ে পড়ে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবার তো খেতেই হবে সেই সাথে ক্যান্সার সংক্রান্ত অন্যান্য জটিলতা তো আছেই।
মুখগহ্বর এর ক্যান্সারের সঙ্গে একজন মানুষের প্রতিদিনের জীবনধারা বিশেষভাবে সম্পর্কিত। যেসব অভ্যাসের কারণে মুখগহ্বরের সরাসরি ক্ষতি হয়, সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া আবশ্যক। যেমন তামাক মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির শত্রু, সেটা যেভাবেই তা গ্রহণ করা হক না কেন। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের কারণে মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির কোষে ক্ষত সৃষ্টি হতে থাকে। এই ক্ষত থেকেই এক সময় ক্যান্সার হয়।
সিগারেট, ই-সিগারেট, পান, সাদাপাতা, সুপারি, চুন, জর্দা, গুল, খইনি-সবই মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির ক্যানসারের জন্য দায়ী। আমাদের দেশের বহু মানুষ এসব তামাকের কোনো না কোনোটি গ্রহণ করেন। বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার অনেক বেড়েছে। আমাদের দেশের যত মানুষ মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত, তাদের ৮০-৯০ শতাংশেরই তামাক বা তামাকজাত পণ্য সেবনের কারন রয়েছে। সেইসাথে অ্যালকোহল ও অনেকে পানের সাথে জর্দ্দা ব্যবহার করেন, এ ধরনের নেশাও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

যারা পানের সঙ্গে জর্দ্দা খান এবং নিয়মিত অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি হয় এবং লক্ষ্য করা গেছে অনেকেই তামাক পাতাকে হাতের মধ্যে নিয়ে চুনের সঙ্গে মিশিয়ে গালের মধ্যবর্তী স্থানে রাখেন, তাতে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ওই স্থানে ঘা হতে পারে। শুধু ঘা নয় পরবর্তীতে এই ঘা ক্যান্সারেও রূপ নিতে পারে। শুধু বাংলাদেশেই নয় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে যেখানে তামাক পাতা নেশার মতো ব্যবহৃত হয় সে সমস্ত অঞ্চলেও মুখের ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের চাইতে বেশি। অর্থাৎ যারা জর্দ্দা খান বা তামাক পাতা খান তাদের রিস্ক-ফ্যাক্টর বা ঝুঁকি হতে পারে ৬০ ভাগ এবং যারা ধূমপান করেন এবং সেই সাথে তামাক পাতা ও পানের সঙ্গে ব্যবহার করেন তাদের ঝুঁকি শতকরা ৮০ ভাগ।

গত বিশ বছরে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০ গুন বেড়েছে। পুরুষ-মহিলা-শিশু নির্বিশেষে সবারই ক্যান্সার হয়। মুখগহ্বরের ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব পুরুষদের ক্ষেত্রে ২২%-২৩% এবং মেয়েদের মধ্যে ১৬%-১৭%। বর্তমান পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় দুই লক্ষ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মৃত্যুবরণ করে। সারা পৃথিবীতে বর্তমানে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় দুকোটির কাছাকাছি।
ক্যান্সার এমন এক ব্যাধি, যার বৈশিষ্ট্য হলো অস্বাভাবিক কোষের নিয়ন্ত্রণহীন বৃদ্ধিও বিস্তার। স্বাভাবিক অবস্থায় দেহ কোষগুলোর ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল পুনঃজন্ম ঘটে এবং এদের বৃদ্ধি হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মুখগহ্বরের ক্যান্সার বাংলাদেশে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশি হয়।
সূচনায় চিহ্নিত হলে নিরাময়ের সম্ভাবনা খুবই উজ্জল। ডেন্টাল সার্জনরা মুখ গহ্বরের রুটিন পরীক্ষার সময় অনেক ক্ষেত্রে একে শনাক্ত করেন। মুখ গহ্বরের ক্যান্সারের মধ্যে জিহ্বায় হয় ২০%, ঠোঁটে ১৫% এবং লালাগ্রন্থি ১০%। ২৫% শতাংশ হলো গলদেশের ক্যান্সার। এছাড়া মাড়ি, তালু, টনসিল, চোয়ালেও এই ক্যান্সার হয়। যারা ধূমপান করেন, তাদেরই মুখে ক্যান্সার বেশি হয়। বিভিন্ন গবেষনায় বলা হয়েছে সিগার ও পাইপ খেলেও মুখের ক্যান্সার হয় খুব বেশি।
যদি লক্ষ্য করা যায় যে, মুখ গহ্বরের একটি ক্ষত বা ঘা যা শুকাচ্ছে না, এবং সহজেই এ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, গিলতে অসুবিধা হচ্ছে, সব সময় গলায় কোনো কিছুর উপস্থিতি অনুভুত হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন। এরকম লক্ষণ হওয়া মানেই ক্যান্সার নয়- শুধু প্রয়োজন হলো একজন ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়া। এ ব্যাপারে ডেন্টাল সার্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে যেমন মুখ গহ্বর এর রুটিন পরীক্ষার সময় অথবা অন্য সময় যখন দাঁত বা মুখ গহ্বরের চিকিৎসা করছেন তখন তাদের দায়িত্ব হবে মুখ গহ্বরের কোষকলায় কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য করা। সুতরাং কেউ যদি নিয়মিত ডেন্টাল সার্জন দিয়ে বছরে অন্তত একবার মুখের চেক আপ করান, তাহলে এরকম কিছু ঘটে থাকলেও চিকিৎসক সূচনাকালেই একে শনাক্ত করতে পারেন।
গবেষণায় যত রকমের ক্যান্সার দেখা গেছে তার শতকরা ত্রিশ ভাগ ক্ষেত্রের কারণ হলো তামাক। ফুসফুসের ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর শতকরা নব্বই ভাগের জন্যই দায়ী তামাক। তামাক শুধু ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ নয় মুখের ভিতরের বিভিন্ন রকম ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া যারা মুখগহ্বরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যত্নশীল নন কিংবা যাদের দাঁতের অংশ অত্যধিক ধারালো, তাদের মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা খাবার খেলেও হতে পারে মুখের ক্যান্সার। যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তাদের এই মুখের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অন্যদের চাইতে বেশি।

মুখের ভেতরের ক্যান্সার প্রতিরোধে তামাক সেবক অর্থাৎ সিগারেট, বিড়ি, হুক্কা, দোক্তা, কিমা, খৈনী, গুল, নাস্যি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
ক্যান্সার মানেই মৃত্যু কথাটি কোন এক সময় হয়ত সত্য ছিল, কিন্তু আজ আর তা নয়। বর্তমানে অর্ধেক ক্যান্সারকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। বাদবাকী অর্ধেকের বেশি ভাগটাই আমরা সূচনায় ধরে ফেলে সঠিক চিকিৎসা করতে পারি।
প্রতিকার
সাধারণভাবে মুখগহ্বর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার ও রেডিওথেরাপিই মূল চিকিৎসা। কোনো কোনো রোগীর কেমোথেরাপিরও প্রয়োজন হতে পারে। নির্ধারিত থেরাপিরও সুযোগ রয়েছে। যাঁরা নিয়মিত তামাক বা তামাকজাত পণ্য গ্রহণ করেন, তাদের কোনো উপসর্গ না থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো উচিত। কারণ, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসা পদ্ধতি সহজ হয়। যেমন এসব ক্ষেত্রে বায়াপসি বা মাংস পরীক্ষা করা জরুরি। তাহলে সুর্নিদিষ্টভাবে তার রোগ র্নিনয় বা ক্যান্সার কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানা যায়।

প্রতিরোধ
মুখগহ্বর এর ক্যান্সার প্রতিরোধে করনীয়-

• ধূমপান, তামাক ও তামাকজাত কোনো পণ্য সেবন বন্ধ করা ।
• মুখগহ্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রতিদিন দুবেলা দাঁত ব্রাশ এবং খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলকুচি করা প্রয়োজন।
• দাঁতের কোন অংশ ধারালো থাকলে চিকিৎসা করা।
• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ।
• প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ।
• শারীরবৃত্তীয় কারণে মহিলাদের আয়রনের ঘাটতি বেশি হয়। তাদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।
• ফাস্টফুড বা প্রোসেস ফুড বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
• অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা।
• অতিরিক্ত ঝাল কিংবা অতিরিক্ত গরম খাবার ও পানীয় বর্জন করা।
• সব ধরনের মাদক ও অ্যালকোহল বর্জন করা।

সবচেয়ে বড় কথা , যদি আমরা তামাক, ধূমপান, জর্দ্দা ইত্যাদি বর্জন করতে পারি, তাহলে মুখের ক্যান্সার, গলার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সারসহ অনেক ক্যান্সার রোগকেই প্রতিরোধ করতে পারব।

লেখক: একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দসৈনিক।


জানুন কখন, কীভাবে, কোন ফল খাবেন!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ফল শরীরের অন্যতম প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎস। এতে থাকে ভিটামিন, মিনারেলস, কার্বোহাইড্রেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট— যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বকের যত্নে সাহায্য করে এবং হজমের সমস্যাও কমায়। তবে সব কিছুরই যেমন নিয়ম আছে, ফল খাওয়ারও আছে সঠিক সময় ও উপায়। তা না মানলে উপকারের বদলে হতে পারে উল্টো ক্ষতি।

কখন এবং কীভাবে ফল খাবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফল একটি সম্পূর্ণ খাবার। তাই এটি মূল খাবারের সঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।
খাবার খাওয়ার কমপক্ষে আধ ঘণ্টা আগে বা এক ঘণ্টা পরে ফল খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
খাবারের সঙ্গে ফল খেলে এতে থাকা শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট একত্রে হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

দিনের কোন সময় ফল খাওয়া সবচেয়ে উপকারী

ফল খাওয়ার আদর্শ সময় হলো সকাল।
ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে, পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর ফল খেলে এটি সহজে হজম হয়। এসময় ফলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও এনজাইম শরীরে ভালোভাবে কাজ করে।

এছাড়া সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে যখন হালকা ক্ষুধা লাগে, তখন ফল খাওয়া খুব উপকারী। এই সময় ফলের সঙ্গে সামান্য বাদাম বা দানাশস্য নিলে তা হালকা নাশতা হিসেবেও চমৎকার।

শরীরচর্চা করার আগে বা পরে ফল খাওয়াও উপকারী, কারণ এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি দ্রুত শক্তি যোগায়।

কোন ফল কখন খাবেন

রাতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে পরদিন সকালে পেঁপে খান। এতে থাকা পাপাইন এনজাইম প্রোটিন হজমে সাহায্য করে।

বেশি লবণ খেলে পরদিন সকালে তরমুজ খান— এটি শরীরের সোডিয়াম ভারসাম্য ঠিক রাখে।

বেশি কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরদিন সকালে আপেল খেলে শরীর হালকা থাকে ও ফোলাভাব কমে।

কখন ফল খাওয়া ক্ষতিকর

ঘুমানোর আগে ফল খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

মূল খাবারের সঙ্গে ফল খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে।

বিকেলে চা বা নাশতার সঙ্গে ফল খাওয়া অনেক সময় বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।

যেসব ফল একসঙ্গে খাওয়া বিপজ্জনক

কমলালেবু ও গাজর একসঙ্গে খাওয়া গ্যাস ও কিডনির সমস্যা বাড়াতে পারে।

আঙুর ও খেজুর একসঙ্গে খেলে অম্বল হয়।

পেয়ারা ও কলা একসঙ্গে খেলে গ্যাস, বদহজম, মাথা ঘোরা হতে পারে।

পেঁপে ও লেবু একসঙ্গে খেলে রক্তাল্পতা ও হিমোগ্লোবিন ভারসাম্য নষ্ট হয়।

টক ফল (যেমন আঙুর, আপেল) ও মিষ্টি ফল (যেমন কলা, কিশমিশ) একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।

তরমুজের সঙ্গে অন্য ফল খেলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে।

ফল খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবে সময়, পরিমাণ ও সঠিক সমন্বয় জানা জরুরি।
ঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে ফল খেলে শরীর পায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি, বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কমে ক্লান্তি ও হজমজনিত সমস্যা।
পুষ্টিবিদদের মতে, “খালি পেটে পানি, ভরা পেটে ফল”— এই ধারণা বদলে সময় মেনে ফল খাওয়ার অভ্যাসই রাখবে আপনাকে আরও সুস্থ ও সতেজ।


পাউডারে ক্যান্সারের ঝুঁকি, জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে হাজারো মামলা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা জেনেশুনে অ্যাসবেস্টস দূষিত বেবি পাউডার বিক্রি করছে। প্রায় তিন হাজার মানুষ এই মামলায় যুক্ত হয়েছেন। খবর বিবিসির।

মামলার মূল প্রমাণ হিসেবে কিছু অভ্যন্তরীণ নথি ও বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেগুলো বিবিসির হাতে এসেছে।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ১৯৬০-এর দশক থেকেই জনসন অ্যান্ড জনসন জানত তাদের ট্যালকম পাউডারে ট্রেমোলাইট ও অ্যাকটিনোলাইটের মতো ফাইবারসমৃদ্ধ বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো ফাইবার আকারে থাকলে অ্যাসবেস্টস হয়ে যায় এবং এটিই প্রাণঘাতী ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।

আদালতের নথিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ঝুঁকি জানা সত্ত্বেও কোম্পানিটি তাদের বেবি পাউডারের প্যাকেটে কখনো এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেনি। পরিবর্তে তারা পাউডারটিকে বিশুদ্ধতা এবং সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করে প্রচারণা চালায়।

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের বেবি পাউডার সব ধরনের সরকারি মানদণ্ড মেনে তৈরি করা হয়ে থাকে। তারা আরও দাবি করেছে, এতে অ্যাসবেস্টস নেই এবং এটি ক্যানসার সৃষ্টিও করে না।


ল্যাবএইডের কর্ণধার সাকিফ শামীমকে নিয়ে ফিচার করলো ইউএসএ টুডে

আপডেটেড ১৬ অক্টোবর, ২০২৫ ১০:৩১

বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা শিল্পের জন্য এক অনন্য ও গৌরবের মুহূর্ত নিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রকাশনা 'ইউএসএ টুডে'। এই বিশ্বখ্যাত দৈনিকের বিশেষ প্রতিবেদনে ফিচার্ড হয়েছেন ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের দূরদর্শী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ল্যাবএইড গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম। ইউএসএ টুডে-র মত আন্তর্জাতিক পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে তুলে ধরা নিঃসন্দেহে দেশের জন্য বিশাল সম্মান এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা মানচিত্রে বাংলাদেশকে এক উদীয়মান কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

ইউএসএ টুডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র। এর গতিশীল নকশা, সংক্ষিপ্ত, সুস্পষ্ট প্রতিবেদন এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতি বিষয়ক গল্প অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এটি বিশ্বজুড়ে অনেক সংবাদপত্রের শৈলীকে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ পাঠকের কাছে পৌঁছানো এই প্রকাশনায় সাকিফ শামীমের সাক্ষাৎকার ও ল্যাবএইডের কার্যক্রম তুলে ধরায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি এবং চিকিৎসা সক্ষমতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলো।

সাকিফ শামীম বর্তমানে ল্যাবএইড গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা তাঁর বাবার হাতে ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এটি এখন ছয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল, ৪৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একটি মেডিকেল কলেজ, ফার্মাসিউটিক্যালস, রিয়েল এস্টেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১২,০০০-এরও বেশি কর্মচারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা গ্রুপে পরিণত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও এশিয়ার সেরা হাসপাতালগুলোর মধ্যে গণ্য হচ্ছে, যা রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে সমন্বিত ক্যান্সার পরিচর্যা প্রদান করছে।

সাকিফ শামীমের নেতৃত্ব স্বাস্থ্যসেবায় প্রযুক্তিনির্ভর বিপ্লব ঘটিয়েছে। তিনি লাইফপ্লাস বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা তিন লাখেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম হেলথটেক কোম্পানিগুলোর একটি। পাশাপাশি, তিনি Labaid GPT নামে একটি জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন, যা ডাক্তার ও রোগীদের জন্য সেকেন্ড অপিনিয়ন প্রদানের লক্ষ্যে তৈরি এবং এটি ল্যাবএইডের বহু বছরের সংরক্ষিত ডেটা দ্বারা চালিত। তাঁর দূরদর্শী উদ্যোগে, ল্যাবএইড গ্রুপ ভার্চু-কেয়ার এআই (Virtuecare AI)-এর মাধ্যমে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (AR) এবং ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (VR) প্রযুক্তির ব্যবহারও শুরু করেছে, যার লক্ষ্য দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং অনুরূপ অঞ্চলের মানুষের জন্য উন্নত প্রযুক্তি সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করে তোলা।

ল্যাবএইড গ্রুপের সম্প্রসারণ কৌশল সুদূরপ্রসারী; তারা ঢাকায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের (আনুমানিক ২০০০ কোটি টাকা) একটি ৭৫০ শয্যার সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছে এবং আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে দেশজুড়ে ৩০টি ক্যান্সার সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্ভাবন ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ল্যাবএইড বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ে পাবলিক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মত বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর সাথেও তাদের কোশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।

সাকিফ শামীম বলেন, ল্যাবএইড শুধু একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নয়—এটি রূপান্তরের একটি মঞ্চ। সাকিফ শামীমের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা। তিনি বিশ্বাস করেন, সঠিক অবকাঠামো এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের আর চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হতে হবে না, বরং বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রোগীদের আকৃষ্ট করতে পারবে। তাঁর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ল্যাবএইড গ্রুপকে $১০ বিলিয়ন কর্পোরেশনে রূপান্তরিত করা, যার মাধ্যমে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে বছরে প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন মানুষের কাছে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। সাকিফ শামীমের মতে, বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা একটি বিলাসিতা নয়, বরং প্রতিটি মানুষের অধিকার।


অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গাইবান্ধায় পর্যবেক্ষণে বাকৃবি গবেষক দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তারা আক্রান্ত খামার ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে রোগের বিস্তারের ধরন, সংক্রমণের উৎস এবং স্থানীয় জনগণের সচেতনতার মাত্রা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেন। গতকাল বুধবার গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা বাকৃবির প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওই দলে আরও ছিলেন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিমুল এহসান ও অধ্যাপক ড. আজিমুন নাহার, প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগম, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, ড. জায়েদুল হাসান (সদস্য সচিব) এবং সহকারী অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান।

সাম্প্রতিক সময়ে গাইবান্ধা ও রংপুরের কিছু উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় এই কমিটি গঠন করেন বাকৃবি ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান।

গবেষণা দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আমিমুল এহসান জানান, স্থানীয়ভাবে অ্যানথ্রাক্স রোগের সংক্রমণের মূল কারণ নির্ণয় এবং ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রস্তাব করাই এ তদন্তের মূল লক্ষ্য।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে জানা যায়, অনেক গ্রামে এখনো অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে টিকা প্রদান করা হয়নি এবং মৃত পশুর সঠিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্থানীয়দের তেমন কোনো জ্ঞান বা ধারণা নেই।

স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘাঘট নদীর তীরবর্তী কিশামত সদর গ্রামের মধ্যপাড়ার এক নারী (৬০) ওই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার জবাইকৃত অসুস্থ গরুর মাংস নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং আক্রান্ত হন। পার্শ্ববর্তী বাড়িতে মৃত্যুপ্রায় গরু জবাই করে মাংস কাটাকাটির সময় এক ব্যক্তির চোখে রক্ত ছিটকে পড়লে চোখটি আক্রান্ত হয় এবং চোখ মারাত্মকভাবে ফুলে যায়। এই ঘটনায় ১১ জন আক্রান্ত হয়েছে।

পার্শ্ববর্তী গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত একটি ছাগল জবাই করে মাংস কাটাকাটির সময় কেটে যাওয়া আঙুল দিয়ে শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন পর মারা যান। মৃত নারীর নাম রোজিনা বেগম।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত কিছু গরু ও ছাগলের মরদেহ অগভীরভাবে পুঁতে রাখা হয়েছে, আবার কিছু মরদেহ খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত পশু জবাইয়ের পর অব্যবহৃত বা পরিত্যক্ত অংশও খোলা স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে। বালুকাময় মাটির কারণে বৃষ্টি বা বন্যার সময় এসব মরদেহ ও পরিত্যক্ত অংশ থেকে জীবাণু নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

আক্রান্ত এলাকার চরাঞ্চলে কৃষকরা মাঠ থেকে ঘাস কেটে গরু-ছাগলকে খাওয়ান। এসব ঘাস নদীর পানিতে ধোয়ার সময় অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর স্পোর দ্বারা দূষিত হতে পারে। দূষিত পানি বা ঘাস ব্যবহারের কারণে সংক্রমণ হচ্ছে বলে গবেষক দলটি ধারণা করছে।

গবেষণা দল জানায়, কিছু এলাকায় অসুস্থ বা মৃতপ্রায় পশু জবাই করা ও মাংস বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। এসব মাংসের সংস্পর্শে আসা মানুষরাও অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন। এলাকাটিতে পূর্বে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি; টিকা প্রদান করা হয়নি এবং জনসচেতনতার অভাবের কারণে অসুস্থ গরু জবাই হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে।

গবেষক দলের মতে, দ্রুত আক্রান্ত এলাকা কোয়ারেন্টাইনে আনা, মৃত পশু সঠিকভাবে পুঁতে ফেলা এবং স্থানীয় পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম ও সচেতনতা বৃদ্ধি করলেই এ ধরনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

গবেষক দলটি আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষতস্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। টিকাপ্রাপ্ত গবাদিপশুর শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া সংক্রমণের উৎস খুঁজতে মাটি, পানি ও ঘাসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলটি।

অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘মৃত পশুর দেহের সঠিক ব্যবস্থাপনা না করা অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কারণ। আক্রান্ত এলাকায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে মাটি ও পানি দীর্ঘমেয়াদে সংক্রমণের উৎস হিসেবে কাজ করবে।’

দলটির বিশেষজ্ঞরা বলেন, আক্রান্ত পশুর সঠিক ব্যবস্থাপনা না মানলে অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মৃত পশুর দেহ কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ফুট গভীর গর্তে পুঁতে রাখতে হবে এবং গর্তের নিচে, উপরে ও চারপাশে কুইক লাইম বা পোড়াচুন মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সেইসঙ্গে পুঁতে ফেলার স্থান চিহ্নিত রেখে ভবিষ্যতে সেখানে চারণ বা কৃষিকাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অসুস্থ পশু জবাই না করে সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ অফিসকে অবহিত করতে হবে।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার রায় বলেন, ‘আমরা টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। প্রতি বছর সকল গবাদিপশুকে টিকার আওতায় আনতে পারলে এই রোগ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও জনবল সংকট দূর করা জরুরি।’

গবেষক দল স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আক্রান্ত এলাকার টিকাদান, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মৃত পশু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছে। দলটি আশা প্রকাশ করেছে, তাদের এই তদন্তের ফলাফল অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।


নওগাঁর এরশাদ আলীর ভুল চিকিৎসায় বাড়ছে মৃত্যুর শঙ্কা

এরশাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন অনেকেই
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় একসময় অবৈধ কারখানায় ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির দায়ে জেল খাটা এরশাদ আলী (৫৫) এবার শিশু চিকিৎসক সেজে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

‘ডাক্তার’ সেজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার আহসানগঞ্জ এলাকায় মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। অথচ তার কোনো বৈধ চিকিৎসা ডিগ্রি বা সনদ নেই, এমনকি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকও নন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এরশাদ আলীর ভুল চিকিৎসায় শিশুরা মারাত্মক শারীরিক জটিলতায় পড়ছে, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।

জানা যায়, জেলার আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরে আহসানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মার্কেটে অবস্থিত ‘মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভিড় করেন। সপ্তাহে মাত্র একদিন এখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিধান কুমার শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বাকি ছয় দিন ফার্মেসির মালিক এরশাদ আলী নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকায় শিশুদের নানা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন।

স্থানীয়রা জানায়, এরশাদ আলী রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের গাদু শেখের ছেলে। অতীতে তিনি ঢাকার চানখারপুল এলাকায় বাসায় অবৈধ ওষুধ কারখানা স্থাপন করে ভেজাল ওষুধ তৈরি করতেন এবং তা বিভিন্ন ফার্মেসিতে সরবরাহ করতেন। এ ঘটনায় একটি গোপন অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত তার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ জব্দ করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের রায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরশাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন অনেকেই।

উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের হযরত আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ১৩ মাস বয়সি কন্যাশিশু শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। লোকমুখে শোনে এরশাদ আলীর কাছে নিয়ে গেলে তিনি একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকসহ সাতটি ওষুধ দেন। পরে জানতে পারি তিনি কোনো বৈধ চিকিৎসক নন।’

জাত আমরুল গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, ‘তার মেয়ের জন্য প্রকৃত চিকিৎসক যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে গেলে এরশাদ আলী তা পরিবর্তন করে ইনজেকশন দেন। ইনজেকশনটি ভুলভাবে প্রয়োগ করায় তার মেয়ের হাত ফুলে যায় এবং পরবর্তীতে রাজশাহীতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে তাকে নিজের জমি বন্ধক রাখতে হয়েছে।’

স্থানীয় বাসিন্দা রওনক রাজীব বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং ঔষধ প্রশাসন যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এরশাদের মতো ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।’

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এরশাদ আলী দাবি করেন, আমি ফার্মেসিস্ট কোর্স সম্পন্ন করেছি, ফলে আমি চিকিৎসা দিতে পারি। সরকারের পক্ষ থেকে আমার ড্রাগ লাইসেন্সও রয়েছে। হ্যাঁ আমি কিছু দিন জেলে ছিলাম। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আর আপনাদের কোনো সনদ দেখাতে বাধ্য নই।

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


banner close