মঙ্গলবার, ৬ জুন ২০২৩

২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চারজন

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১৭৮ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ফাইল ছবি
আপডেটেড
২৭ মে, ২০২৩ ১৮:৩০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বর্ষা মৌসুম আসার আগেই বাড়ছে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টায় (২৫ মে সকাল ৮টা থেকে ২৬ মে সকাল ৮টা) এ জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন চারজন। এরা সবাই ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি।

শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে তথ্য জানানো হয়।

অধিদপ্তর থেকে বলা হয়, বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ১৭৮ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন। ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১৪৮ এবং অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি ৩০ জন রোগী।

এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে এক হাজার ৬২৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ৪৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫৭৮ জন।

এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে ১৩ জন মারা গেছেন। তবে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৪৩৩ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৮৮৮ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন স্থানে ৫৪৫ জন সুস্থ হয়েছেন।

বিষয়:

‘ভুল চিকিৎসায়’ রোগী মৃত্যুর অভিযোগে সনদ বাতিলের দাবি

আপডেটেড ৬ জুন, ২০২৩ ২১:৪৩

রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় জাকির হোসেন খান (৫১) নামে এক রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ‘দায়িত্বে অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে গ্রীন লাইফ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অনৈতিক রিং বাণিজ্য এবং অপচিকিৎসার দায়ে’ দায়িত্বরত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. গোলাম আজম, ডা. শেখর কুমার মন্ডল ও ডা. রাশেদুল হাসান কনকের শাস্তি চেয়েছে ওই রোগীর পরিবার।

মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এ দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাকিরের পরিবার। এ সময় ওই তিন চিকিৎসকের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি জানানো হয়।

স্বজনদের দাবি, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ না করেই জাকিরের হার্টে রিং বসানো হয়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের অবহেলায় গত ১৬ মার্চ রোগীর মৃত্যু হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন জাকির হোসেনের স্ত্রী নুরুন নাহার। তিনি বলেন, ‘গত ১২ মার্চ বুকে ব্যথা নিয়ে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি হন জাকির। ভর্তির পরেই ইসিজি করা হয়। সকালের ইসিজি রিপোর্টেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানা যায়। তবে সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান কনক সেটি ধরতে পারেননি।’

জাকিরের স্ত্রী আরও বলেন, “একই দিন সন্ধ্যায় বিআরবি হাসপাতালের গ্যাষ্ট্রোলজির চিকিৎসক মো. মাহবুবুল আলম প্রিন্সকে দেখালে তিনি রোগীর ডায়াবেটিক ও বুকের ব্যথার বিষয়টি জেনে একজন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞক দেখানোর পরামর্শ দেন। পরে গ্রীন লাইফ হাসপাতালের ডা. শেখর কুমার মন্ডলকে (ক্লিনিক্যাল ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট) দেখালে তিনি রোগীর ইসিজি ও ইকো করান। এসব পরীক্ষার ফল দেখে ‘রোগী ঘণ্টা দেড়েক-এর বেশি বাঁচবে না’ বলে জানান। একইসঙ্গে যত দ্রুত সম্ভব রোগীর এনজিওগ্রাম করে হার্টে রিং পরাতে বলেন।”

আবার গ্রীন লাইফে ভর্তি প্রসঙ্গে নুরুন নাহার বলেন, ‘আমরা অন্য হাসপাতালে যেতে চাইলেও আমাদেরকে এক প্রকার ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। লিখিতভাবে হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কথা বলা হলেও তিনি আমাদের ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে আসতে বাধ্য করেন। এমনকি রোগী ভর্তি হওয়ার আগেই আমাদের সঙ্গে কোনো ধরনের পরামর্শ না করে বা আমাদের মতামত না নিয়ে তাকে রিং পরানো হয়।’

ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার অভিযোগ করে নুরুন নাহার বলেন, ‘রোগীকে রিং পরানোর পরে হাসপাতালে পোস্ট অপারেটিভ ম্যানেজমেন্ট চরম অবহেলা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ডায়াবেটিক রোগী জানার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে সারারাত ইনসুলিন না দিয়ে ফেলে রাখে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার যন্ত্রপাতি না থাকা থাকায় তাকে ডায়ালাইসিস করানো হয়নি। ফলে মাল্টিপল অর্গান বিকল হয়ে গত ১৬ মার্চ রোগী মারা যান।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিএমডিসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। দায়ীদের শাস্তির দাবিতে কলাবাগান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে নিহতের পরিবার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রীন লাইফ হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান কনক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘জাকির হোসেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বুকে ব্যথা ও অস্বস্তি নিয়ে হাসপাতালে আসেন। সঙ্গে বমি ভাব এবং বুকের ব্যথা পিঠের দিকেও হচ্ছে বলে জানান। এসময় তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হয়, রক্ত পরীক্ষার জন্য নমুনা নেয়া হয়। কিন্তু ইসিজিতে সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন না থাকায় তার আরেক পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণে থাকার জন্য ভর্তির কথা বলেন। কিন্তু প্রাথমিক চিকিৎসায় রোগীর ব্যথা ও অন্যান্য লক্ষণ কমে যাওয়ায় তিনি প্রথমে ভর্তি হতে চাননি, পরে তিনি রাজি হন এবং পরে আরেক দফায় তার পরীক্ষা হয়।’

‘কেবিনে আসার পর তাকে আমি দেখতে যাই সাড়ে ৯টার পর। সেসময় জাকির জানান তিনি ভাল বোধ করছেন, বুকের ব্যথা কমে গিয়েছে এবং তার বাসা কাছে হওয়াতে তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করে জানান। সমস্যা হলে তিনি ফের আসবেন বলেও জানান।’

ডা. কনক বলেন, ‘জাকির হোসেনকে হার্টের সমস্যা হলে ইসিজিতে পরিবর্তন আসতে সময় লাগে জানিয়ে বলা হয়, আরেক দফায় ইসিজি হবে সাড়ে ৩টায়। সেসময়ের মধ্যে তাকে ইকোকার্ডিগ্রাম করার জন্য বলা হয়। কিন্তু সকালের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার আগে তিনি কোনো পরীক্ষা করাতে রাজি হননি। এরপর সাড়ে ১২টার ভেতরে সেই পরীক্ষার রিপোর্ট স্বাভাবিক এলে তিনি আর হাসপাতালে থাকতে রাজি হননি, বাসায় চলে যেতে চাচ্ছিলেন এবং আর কোনো পরীক্ষাও করাতে অনুমতি দেননি। উনি ভালো বোধ করায় চলমান চিকিৎসা দিয়েই ‘ডিসর্চাজ অন রিকোয়েস্ট’ দেয়া হয় এবং কোনো সমস্যা হলে দ্রুত যোগাযোগ করতে বলা হয়।’

‘কিন্তু জাকির হোসেন ছুটি নিয়ে চলে যাওয়ার পর তার সঙ্গে আমার আর যোগাযোগ না হওয়াতে পরের ঘটনা সর্ম্পকে আমি কিছুই জানতাম না। এমনকি সে গ্রীন লাইফে আবার ভর্তি এবং ভর্তি পরবর্তী জটিলতার বিষয়েও আমি কিছু জানি না। আর এ সংক্রান্ত কাগজপত্র ও ফাইল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।’


বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিতে অর্থায়নের সময় বাড়াল গ্যাভি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বাংলাদেশের টিকাদান কর্মসূচিকে বেগবান করার লক্ষ্যে এবং দেশের জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে অর্থায়নের সময় বাড়িয়েছে টিকা ব্যবস্থাপনায় বৈশ্বিক জোট গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন ইনিশিয়েটিভ (গ্যাভি)।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং এর এক মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ সফররত গ্যাভি মিশন তাদের অর্থায়ন অব্যাহত রাখার কথা জানায়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং এর চেয়ারম্যান ডা. মো. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে দেশের স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বৃদ্ধি, টিকার প্রযুক্তি সরবরাহ করা, স্থানীয়ভাবে টিকা প্রস্তুতকরণ, দেশের স্বাস্থ্য বিভাগে লোকবল সংকট নিরসন, তামাকের ব্যবহার কমাতে তামাকপণ্যের কর ও মূল্যবৃদ্ধি, এবং জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতি রক্ষায় অবিলম্বে তামাক আইন সংশোধনের বিষয়গুলো উঠে আসে।

সভায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরামের উপদেষ্টা ডা. আ ফ ম রুহুল হক বলেন, টিকাদানে আমাদের কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে তবে দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় টিকাদান কর্মসূচি নিশ্চিত করতে আমাদের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ টিকাদানের পক্ষে দেশ।

২০৩০ সাল পর্যন্ত তহবিল অব্যাহত রাখার জন্য গ্যাভিকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

গ্যাভির সিনিয়র কান্ট্রি ম্যানেজার নিলগান আয়দোগান ২০০১ সাল থেকে জাতীয় টিকাদান কার্যক্রমে বাংলাদেশকে সহায়তা করছে জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশে এ বছরই শুরু হতে যাচ্ছে এইচপিভি টিকা কার্যক্রম যা জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে ভুমিকা রাখবে। বাংলাদেশে টিসিভি এবং জেই টিকাও চালু করা হবে।

টিকা ব্যবস্থাপনার বৈশ্বিক জোট গ্যাভি বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য ও ভ্যাকসিন নিশ্চিতকরণের অন্যতম প্রধান দাতাসংস্থা।

২০০১ সাল থেকে গ্যাভি বাংলাদেশে শিশু টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করে আসছে। বাংলাদেশের টিকাদান কার্যক্রমে গ্যাভির অর্থায়ন ২০২৬ সালে শেষ হওয়ার কথা। তবে বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিং এর অনুরোধে তা ২০৩০ সাল পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়েছে।


ডেঙ্গু: মাসের প্রথম ৬ দিনে হাসপাতালে ৫৫১ জন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৬ জন। তাদের নিয়ে চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা সাড়ে পাঁচ শ ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার হাসপাতালে ৮৯ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে সাতজন।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৪১৩ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি ৫৩ হাসপাতালে রয়েছে ৩৫২ জন আর অন্যান্য বিভাগের ভর্তি রয়েছে ৬১ জন।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৫৭৩ জন আর হাসপাতাল ছেড়েছেন দুই হাজার ১৪৩ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৭ জন।

অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম ৬ দিনে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৫১ জন আর মৃত্যু হয়েছে চারজনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ৬ জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হয় ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দু’জনের। চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুজন আর গত মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন।

বিষয়:

করোনায় এক দিনে শনাক্ত ১৯৭ জন

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৬ জুন, ২০২৩ ১৮:১৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের সংখ্যা ও হার আগের দিনের চেয়ে বেড়েছে। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এ রোগে মৃত্যু সংবাদ এল।

মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তিন হাজার ৬৫টি। এরমধ্যে করোনা আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ১৯৭ জন। আগের দিন (সোমবার) শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৭৫ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের দিন ছিল ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের দিন দুজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল অধিদপ্তর।

গত বছরের ২৪ অক্টোবর ২০৭ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এর পর গত সাড়ে সাত মাস দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই শয়ের নিচেই ছিল।

কম-বেশি রোগী শনাক্ত হলেও করোনা আক্রান্ত হয়ে অনেকদিন পর্যন্ত মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। প্রায় ৬৬ দিন পর এ বছরের ২ জুন এক দিনে দুজনের মৃত্যুর কথা জানায় অধিদপ্তর। এর আগে সর্বশেষ ২৮ মার্চে একজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছিল।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শনাক্ত হওয়া ১৯৭ জনকে নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৯১১ জন। এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৫১ জন।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছে ৪২ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়ে উঠলেন ২০ লাখ ছয় হাজার ৪৩৭ জন।

নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দেশে এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ১৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

সংক্রমণের ঊর্ধ্বধারায় গত ২৭ মে প্রথম শনাক্তের হার ৬ শতাংশ ছাড়ায়। সংক্রমণের নিম্নগতিতে কয়েকমাস আগেও শনাক্তের হার ছিল ১ শতাংশের নিচে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যার মৃত্যু হয়েছে তিনি একজন নারী। তার বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের ভেতরে। তিনি খুলনা বিভাগের একটি সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৯৭ জন শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে রয়েছেন ১৮৪ জন আর ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১৮৭ জন। বাকিদের মধ্যে জামালপুরে একজন, চট্টগ্রামে তিনজন, কক্সবাজারে চারজন এবং সিলেট জেলায় শনাক্ত হয়েছে দুইজন।


ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০১

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৩ ১৮:৫৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগী সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। চলতি মাসের প্রথম চারদিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৫৫ জন। আর মারা গেছেন চারজন। সব মিলিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১০১ জন। যা আগের দিন ছিল ৯৭ জন। ১০১ জন ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৮৭ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪ জন।

বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৩৯২ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৩৩৬ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৫৬ জন।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৪৭৭ জন আর তাদের মধ্যে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৬৮ জন। এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এই হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ভর্তি হয়েছে ৫২১ জন, মৃত্যু হয়েছে তিনজনের আর বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ১০৮ জন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২২১ জন, মৃত্যু হয়েছে চারজেরন আর ভর্তি রয়েছে ৫৯ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ৬ জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হয় ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের। চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান দুজন আর গত মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন।

বিষয়:

করোনায় ফের একদিনে ২ জনের মৃত্যু

আপডেটেড ৫ জুন, ২০২৩ ১৮:৩৭
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় তার আগের দিনের তুলনায় রোগীর সংখ্যাও বেড়েছে। তবে, কমেছে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার। একদিনে রোগী শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছে। যা আগের দিন ছিল ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ হাজার ২৮৭টি। পরীক্ষায় রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭৫ জন। আগের দিন (রোববার) ৬৮ জন শনাক্ত হবার কথা জানিয়েছিল অধিপ্তর। আর এই নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ, আগের দিন যা ছিল ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ। এই সময়ে আক্রান্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার দুজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল অধিদপ্তর। সেটা ছিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৫ দিন পর মৃত্যু। তার আগে গত ২৮ মার্চে একজনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হওয়া ৭৫ জনকে নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসেবে শনাক্ত হলো ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৭১৪ জন আর এখন পর্যন্ত মৃত্যু হলো ২৯ হাজার ৪৫০ জনের। করোনাতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২০ লাখ ছয় হাজার ৩৯৫ জন।

নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে এখন পর্যন্ত করোনাতে রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তারা দুজনই নারী এবং তাদের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তারা দুজনই রাজধানীর বাসিন্দা।


করোনা শনাক্তের হার ৭ শতাংশ ছাড়াল

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৯:৪২
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

দেশে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি বেড়েই চলেছে। নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৭ শতাংশ ছাড়িয়েছে। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা) করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৮৯০টি, এতে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৮ জন। তাদের নিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে করোনাতে শনাক্ত হলেন ২০ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩৯ জন। দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ এর নিচে থাকছিল বেশ কয়েক মাস ধরে। গত মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে তা আবার একটু একটু করে বাড়তে শুরু করে।

সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ২৯ হাজার ৪৪৮ জন। করোনাতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৬ জন। নতুন এই ২৬ জনকে নিয়ে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেন মোট ২০ লাখ ৬ হাজার ৩৫৭ জন।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ, আগের দিন ছিল ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ আর শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। নতুন শনাক্ত হওয়া ৬৮ জনের মধ্যে ৬৫ জন ঢাকার বাসিন্দা। আর ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও সিলেটের রয়েছেন একজন করে। তবে এ সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।


পলিথিন বন্ধ্যাত্ব ও ক্যান্সারের কারণ

রোববার রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৮:৪১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

পলিথিন প্রজনন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, বন্ধ্যাত্ব ‍ও ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। পলিথিনে মোড়ানো গরম খাবার ক্যান্সার ও চর্মরোগের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ওভেনপ্রুফ প্লাস্টিক কনটেইনারে খাবার গরম করলে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যাডমিয়াম, আর্সেনিক, সীসা মিশে যায়। যার ফলে মারাত্মক রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে। পলিথিন থেকে সৃষ্ট ব্যাকটেরিয়া ত্বকের বিভিন্ন রোগের জন্ম দেয়। সেই ব্যাকটেরিয়া থেকে ডায়রিয়া ও আমাশয় হতে পারে।

রোববার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে। আগামী ৫ জুন (সোমবার) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘পলথিনি নিষিদ্ধ আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাংলামোটরে অবস্থিত বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত পরিচালক ও পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান। সংগঠনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরীসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে বলা হয়, পলিথিন অপচনশীল হওয়ায় মাটিতে সূর্যের আলো, পানি এবং অন্যান্য উপাদান প্রবেশে বাধা দেয়, মাটির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করে, উপকারী ব্যাকটেরিয়া বিস্তারে বাধা সৃষ্টি করে। পলিথিন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হওয়ার আগে ১ হাজার বছর পর্যন্ত স্থায়ী অবস্থায় থাকতে পারে এবং নদী, সমুদ্রে জমা হয়। আর এ অবস্থাতেও দেশে ব্যাপকহারে ব্যবহার হচ্ছে ক্ষতিকর নিষিদ্ধ পলিথিন। অন্যদিকে কাপড়ের মতো দেখতে এক ধরনের রঙিন পলিথিন টিস্যু (চায়না টিস্যু নামে পরিচিত) ব্যাগে বাজার সয়লাব হয়ে গেছে। পরিবেশবান্ধব পাটজাত দ্রব্য, কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙা, কাপড়ের ব্যাগ ইত্যাদি বিকল্প থাকা সত্ত্বেও আইন অমান্য করে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন, মজুত, পরিবহন, বিপণন, বাজারজাত ও ব্যবহার করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রাজধানীসহ সারা দেশে নিষিদ্ধ পলিথিন তৈরির প্রায় ১ হাজার ২০০ কারখানা রয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই পুরান ঢাকায় অবস্থিত। ঢাকা শহরে একটি পরিবার প্রতিদিন গড়ে পাঁচটি পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করে। সে হিসাবে শুধু ঢাকা শহরে প্রতিদিন আড়াই কোটির বেশি পলিথিন ব্যাগ একবার ব্যবহার করে ফেলে দেয়া হয়। এগুলো ড্রেন, নালা-নর্দমা, খাল, ডোবা ইত্যাদি ভরাট হয়ে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও দেশে প্রতিদিন ৩৫ লাখের বেশি টিস্যু ব্যাগ উৎপাদন ও বাজারজাত হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (২০০২ সালের ৯নং আইন দ্বারা সংশোধিত) এর ৬ক ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সরকার সব বা যে কোনো প্রকার পলিথিন শপিংব্যাগ, বা এরূপ সামগ্রীর উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ, বাণিজিক উদ্দেশে পরিবহন বা বাণিজিক উদ্দেশে ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করতে পারলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি, বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে শামিল হই সকলে’ জানিয়ে ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, পর্যাপ্ত বিকল্পের অভাবে নিষিদ্ধ পলিথিন বন্ধ করা যাচ্ছে না। আর মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর তাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য বিকল্পের অজুহাত দিচ্ছে। কিন্তু নিজেদের এবং পরবর্তী প্রজন্মের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য আমাদের পরিবেশ সংরক্ষণের সংগ্রাম আরও বেগবান করতে হবে, কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি প্রতিদিনই আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

সংবাদ সম্মেলনে পলিথিন ব্যবহাররোধে কিছু সুপারিশ করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে— পলিথিন নিষিদ্ধের আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের সক্রিয় ভূমিকা পালন করা, পলিথিন শপিং ব্যাগ ও টিস্যু ব্যাগের উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহারকারীদের আইনের আওতায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া, পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ, কাপড়ের ব্যাগ, কাগজের ব্যাগ ও ঠোঙা ইত্যাদি সহজলভ্য করা এবং এগুলো ব্যবহারে জনগণকে উদ্ভুদ্ধ করা, বন্ড লাইসেন্সের মাধ্যমে আমদানীকৃত পলিপ্রোপাইলিন পলিথিন শপিং ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নেয়া, টিস্যু ব্যাগ তৈরির কাঁচামাল আমদানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।

একই সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, এফবিসিসিআইয়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করারও সুপারিশ করা হয়।


বাজেটে স্বাস্থ্যে বরাদ্দ আরেকটু হলে উপকার হতো: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় নতুন অর্থবছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে। তবে সেটা আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।

রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) নবনির্মিত আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাহিদ মালেক বলেন, নতুন বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ শতাংশ। আগের অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয় মোট বাজেটের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ বা ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। স্বাস্থ্যসেবার যে পরিধি বেড়েছে, সে অনুযায়ী বরাদ্দ আরও কিছুটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল। কারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার পরিধি বেড়েছে, বাজেট আরেকটু বেশি হলে উপকার হতো।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চিনির ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হলেও মিষ্টির দাম কমানো হয়েছে। মিষ্টিতে ভ্যাট দেয়া হয়নি বলে বেশি করে মিষ্টি খেয়ে ডায়াবেটিস বানানো (আক্রান্ত হওয়া) যাবে না। অপরদিকে তামাকজাত পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে, যাতে মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, নিটোরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল গণি মোল্লাহসহ অন্যরা।

বিষয়:

একদিনে ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৯৭

হাসপাতালে মশারি টাঙিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৭:৪১
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলতি বছর একদিনে এটাই সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৭ জন। আর চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৪ ডেঙ্গু রোগী। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এসব তথ্য জানিয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৮৭ জন আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১০ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৮৭ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছে ৩৩৮ জন। ঢাকার বাইরের হাসপাতালে রয়েছেন ৪৯ জন। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন দুই হাজার ৩৭৬ জন আর বাড়ি ফিরে গেছেন এক হাজার ৯৭৩ জন।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া তিনজনসহ এ বছর মৃত্যু হলো ১৬ জনের। মারা যাওয়া তিনজন মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রাজধানীর এই হাসপাতালেই ভর্তি ৪৮৭ জন। যা অন্য হাসপাতালের চেয়ে সর্বাধিক। সেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০৮ জন। বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ৫৩ জন। এখানে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৪০ জন আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের আর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে বাকি ৩ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন। তাদের মধ্যে মারা যান ৬ জন। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হয়, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হয় ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হয় ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের। চলতি মাসে ডেঙ্গুতে মারা যান দুজন আর গত মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন।

এদিকে, ডেঙ্গু চিকিৎসার গাইডলাইনের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত তরল খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। এসময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যাথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যাথা, শাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত দেয়ার প্রয়োজন নাই। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। সেজন্যে মশারী ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পরানো, বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে।

সাধারণত দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, কিন্তু এবার মে মাসেই সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী সারাদেশে শনাক্ত হয়েছে। এই অবস্থায় জ্বর হলেই দ্রুত এনএস-১ পরীক্ষা এবং বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডেঙ্গু আক্রান্তের প্লাটিলেটের প্রয়োজন হয় না।

বিষয়:

কাটা হাত জোড়া লাগানোর কারিগর সাজেদুর রেজা ফারুকী আর নেই

ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী
আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৫:৩৩
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সহযোগী অধ্যাপক, রিকনস্ট্রাক্টিভ ও হ্যান্ড সার্জন ডা. সাজেদুর রেজা ফারুকী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।

ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে রোববার সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ডা. ফারুকী পঙ্গু হাসপাতালের হ্যান্ড অ্যান্ড মাইক্রো সার্জারি বিভাগে কর্মরত ছিলেন। চিকিৎসাসেবায় বহু জটিল অস্ত্রোপচারে তিনি সাফল্য দেখিয়েছেন।

গত বছরের মে মাসে চট্টগ্রামে লোহাগাড়ায় আসামির দায়ের কোপে বিচ্ছিন্ন পুলিশ কনস্টেবল জনি খানের (২৮) কবজি জোড়া লাগিয়ে আলোচনায় আসেন ডা. ফারুকী।

এই চিকিৎসকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটি। সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক মোনায়েম হোসেন ও সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম এক বার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।


প্রোবায়োটিকও প্রয়োজন তবে বুঝে নিতে হবে

আপডেটেড ৪ জুন, ২০২৩ ১৫:৩৯
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী

ব্যাকটেরিয়া শরীরের ভেতর এবং বাইরে সর্বত্র রয়েছে। তবে শরীরে যত না মন্দ জীবাণু, এর চেয়ে কম নয় ভালো জীবাণু। আমাদের শরীরে আছে শত শত কোটি ব্যাকটেরিয়া, এর মধ্যে ১০০ ট্রিলিয়ন ভালো ব্যাকটেরিয়া রয়েছে, যাদের আবার রয়েছে অনেক উপপ্রজাতি।

এরা কেবল ভালো তা-ই নয়, আমাদের বেঁচে থাকার জন্যও খুব প্রয়োজনীয়। এই যে ব্যাকটেরিয়ার সঙ্গে মানুষের পরস্পরের নির্ভর হয়ে বাঁচা। একে বলা হয় মিউচালিয়াজম বা পারস্পরিক মঙ্গলজনক অবস্থান। তারা উভয়ই একত্রে বাস করে সুবিধা পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটি গন্ডারের ওপর ছোট পাখি বসে থাকাকে বলে অক্সপেকার পাখি। এই পাখি গন্ডারের শরীরের পোকা আর পরজীবী ঠুকরে ঠুকরে খায়। পাখির লাভ হলো সে খাদ্য পাচ্ছে, আর গন্ডারের লাভ তার পিঠে পোকা আর পরজীবী কমছে।

যে হিতকর ব্যাকটেরিয়ার কথা আজ বলা হচ্ছে, এরা প্রাথমিকভাবে পরিপাকতন্ত্রে থাকে। এদের নাম প্রোবায়োটিকস।

প্রোবায়োটিক আসলে কী?

প্রোবায়োটিক হলো জীবিত। ক্ষুদ্রান্ত্র আর বৃহদান্ত্রে এদের কাজ হলো খাদ্য থেকে এনার্জি শুষে নেয়া। অর্থাৎ কিছু পুষ্টি উপকরণ দেয়া আর বর্জ্য বের করে দেয়া।

প্রোবায়োটিক গ্রহণ করলে এদের অধিকাংশ কাজ শেষ করে অন্ত্রের শেষ ভাগে কলোন বা মলান্ত্রে। সেই সঙ্গে আমাদের পরিপাক নলে রয়েছে মাইক্রোবায়ম। এটি হচ্ছে এক রকমের ইকোসিস্টেম বা বাস্তুতন্ত্র। এতে আছে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ভাইরাস আর আরকিয়া নামে এক ধরনের এককোষী অণুজীব। এরা আমাদের বাঁচার জন্য প্রয়োজন। কারণ দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের পরিপাকতন্ত্র খাদ্য থেকে সব রকমের পুষ্টি উপকরণ শোষণ করতে পারে না।

বর্তমানে ঘরে ঘরে ক্রনিক রোগে আক্রান্ত মানুষ। মৃত্যুও বেশি এসব রোগে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, স্থূলতা, মানসিক অসুখ, বিষণ্ণতার কারণ হিসেবে মাইক্রোবায়মের অনিয়ম লক্ষ করা গেছে।

তাই মাইক্রোবায়ম সমস্যা আগে এসেছে, নাকি অসুখ আগে এসেছে- এ এক বিতর্ক বহুদিনের। কারণ পাচকতন্ত্র আর মন মগজ- এ দুটির মধ্যে সম্পর্ক কৌতূহল উদ্দীপক। অন্ত্রে আছে যে ব্যাকটেরিয়া এরা নিয়ন্ত্রণ করে মনের বিষণ্ণতা আর আবেগ, মেজাজ ও ক্ষুধা। তাই এখন আমাদের দরকার অন্ত্রের মাইক্রোবায়মকে সুস্থ রাখা। আর সুস্থ রাখতে হলে নজর দিতে হবে খাদ্যতালিকার দিকে।

যেসব খাবার এই মাইক্রোবায়মের জন্য পুষ্টিকর, তার মধ্যে রয়েছে আশসমৃদ্ধ খাবার। এই খাবারকে বলা হয় প্রি-বায়োটিক খাবার। অন্যদিকে রিফাইন্ড শর্করা, যেমন সাদা চাল, ময়দা, চিনি, কৃত্রিম মিষ্টি- এসব খাবার হচ্ছে প্রোবায়োটিকের শত্রু। সঙ্গে অনিদ্রাও এই তালিকায় রয়েছে। সঙ্গে যোগ হয় স্ট্রেস। এসব কিছু মিলিয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে মাইক্রোবায়ম। খারাপ জীবাণু বাড়ে আর ভালো জীবাণু কমে। প্রোবায়োটিক সাপ্লিমেন্ট সাদা চোখে নিরাপদ হলেও শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল হলে প্রতিদিন এই সাপ্লিমেন্ট নেয়া উচিত নয়।

লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ


জ্বরের প্রথম দিনেই ডেঙ্গু পরীক্ষার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

ফাইল ছবি
আপডেটেড ৩ জুন, ২০২৩ ২০:৩৫
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

সাধারণত দেশে জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়, কিন্তু এবার মে মাসেই সর্বাধিক ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় জ্বর হলেই দ্রুত এনএস-১ পরীক্ষা এবং বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, জ্বর হলে আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ডেঙ্গু আক্রান্তের প্লাটিলেটের প্রয়োজন হয় না।

শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে আয়োজিত ‘চেঞ্জিং প্যাটার্ন অফ ডেঙ্গু সিনড্রম’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা রোগ প্রতিরোধে এডিস মশার নিধন, ডেঙ্গুজ্বরের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাইডলাইন অনুসরণের পাশাপাশি রোগ ও রোগীর অবস্থাভেদে চিকিৎসার ওপর গুরুত্ব দেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের ডেঙ্গু চিকিৎসার জাতীয় নীতিমালার প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম। সেমিনার শেষে কেবিন ব্লকের সাধারণ জরুরি বিভাগে ডেঙ্গু কর্নার উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বলা হয়, বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রথম প্রাদুর্ভাব শুরু হয় ২০০০ সালে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ ছিল জ্বর, কাশি, র‌্যাশ হওয়া, মাথা ব্যাথা হওয়া। কিন্তু ২০২১ সালের পর ডেঙ্গুর উপসর্গ পরিবর্তন হয়। তখন ডেঙ্গুতে নতুন উপসর্গ পেটে ব্যাথা পাতলা পায়খানায় পরিবর্তন হয়। এটি এখনো চলমান রয়েছে। সেখানে আরও বলা হয় ২০২২ সালে সর্বমোট আক্রান্ত হন ৬১ হাজার ৭৬৩ জন এবং ২৮১ জন মারা যান, যা অতীতের তুলনায় সর্বাধিক। ২০২৩ সালে ২ জুন পর্যন্ত আক্রান্ত ১৭৯৩ জন এবং মারা যান ১৩ জন। ২০২৩ সালে জানুয়ারিতে ৫৫৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন ও মে মাসে ৭৮৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ডা. কাজী তারিকুল ইসলাম বলেন, ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়লে পর্যাপ্ত পানি জাতীয় খাবার এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। অযাচিত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন থেকে বিরত থাকবেন। এসময়ে অ্যাসপিরিন জাতীয় ও ব্যাথার ওষুধ বন্ধ রাখতে হবে। বমি, পাতলা পায়খানা, পেট ব্যাথা, শাসকষ্ট, শরীরে কোথাও রক্তপাত হলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

তিনি বলেন, চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্লাটিলেট অথবা রক্ত দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রক্ত দেয়ার প্রয়োজন নাই। ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে প্রতিরোধই উত্তম। সেজন্যে মশারি ব্যবহার, বাচ্চাদের ফুল হাতা জামা পরানো, বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য সাধারণ জনগণের সচেতন হতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘একটি গান আছে, ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়, সাদা সাদা ফোটা দেখে এডিস মশা চেনা যায়। এই মশা চিনতে হবে। এই মশাই ডেঙ্গুর জন্য দায়ী। নতুন বিল্ডিং তৈরি করার সময়, উন্নয়নমূলক কাজ করার সময় এবং বৃষ্টির পরে ছাদে পানি জমে থাকে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে দায়ীদের জরিমানা করা যেতে পারে। বাড়ির পেছন পরিষ্কার রাখতে হবে। খালি পাত্র থাকলে তা উল্টো করে রাখতে হবে যাতে করে পাত্রের ভেতরে পানি জমে না যায়। শরীরে ফুল হাতার শার্ট ও পায়ে মোজার ব্যবহারে গুরুত্ব দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ডেঙ্গু হয়েছে কিনা তা জানতে জ্বর হলে শুরুতেই এনএস ওয়ান টেস্টটি করে নিতে হবে এবং জ্বর হলেই এ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়া যাবে না। ফলমূলসহ পানি জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। ডেঙ্গু প্রথমবার হলে মৃত্যু হার কম কিন্তু দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার হলে মৃত্যুহার বেশি। যারা ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছেন তাদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক, ইমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, জ্বর হলে প্রয়োজন ছাড়া অযথা বাড়তি টেস্ট এবং বার বার টেস্ট না দেয়া হয়। ডেঙ্গু জ্বরের কারণে প্লাটিলেট কমে গেলেই রক্ত দিতে এ হবে এই ধারণা ভুল। আবার রক্ত দেয়া যাবেই না এটাও ঠিক না। রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসক সিদ্ধান্ত রোগীকে কি কি চিকিৎসা দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ডেঙ্গু ও কোভিডে একই ধরনের উপসর্গ অর্থ্যাৎ জ্বর, সর্দি, কাশির লক্ষণ দেখা যায়। তাই জ্বর হলে দুটোর জন্যই পরীক্ষা করাতে হবে। বর্তমানে পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড আক্রান্ত রোগীও অনেক পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য জ্বর হলেই প্রথম দিনেই এনএস ওয়ান টেস্টটি করাতে হবে। শরুতে রোগ চিহ্নিত না হলে রোগীর অবস্থার অবনিত হলে রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।

সেমিনারে প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিঞা, অধ্যাপক ডা. এমএ জলিল চৌধুরী, বিএসএমএমইউর ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ আরাফাত, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাসারসহ অন্যরা।

বিষয়:

banner close