বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
৩১ আষাঢ় ১৪৩২

উদাসীনতা, অবহেলায় নিয়ন্ত্রণহীন ডেঙ্গু

জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত : ৬ জুলাই, ২০২৩ ১১:০০

চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই কেবল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর এই ১০ হাজারের তথ্য কেবল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত হাসপাতালের তালিকা থেকে নেয়া হয়। কিন্তু এর অধিদপ্তরের হিসাবের বাইরে শুধু রাজধানী ঢাকাতেই রয়েছে অসংখ্য হাসপাতাল ও ক্লিনিক। পাশাপাশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে অসংখ্য মানুষ চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেন। তারাও অধিদপ্তরের এই তালিকার বাইরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা থেকে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে ঢাকায় প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয়, কিন্তু তখন এর নাম ছিল ঢাকা ফিভার। পরে ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিছু শিশু শনাক্ত হয় এ জ্বরে। তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ নজরে আসে ২০০০ সালে। গত ২৩ বছরেও ডেঙ্গুকে কেন নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি প্রশ্নে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ বা নির্মূলের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু লোকবলসহ সদিচ্ছার অভাব ছিল তাদের। তারা প্রদর্শনমূলক কাজেই বেশি মনোযোগী ছিল, কাজের কাজে নয়।

এদিকে দেশে আশঙ্কাজনক হারে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক মশা নিধনে দায়িত্বরতদের আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

মধা নিধনে দায়িত্বরতদের উদ্দেশে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মশা নিধনে যারা দায়িত্বরত আছেন, তাদের আরও সক্রিয় হতে হবে। আপনারা আপনাদের কার্যক্রম আরও বাড়ান, এখন মশাটা যাতে নিধন হয়, সেই ব্যবস্থাটা করতে হবে।’

হাসপাতালে ভর্তি ছাড়াল ১০ হাজার

গতকাল বুধবার ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আগের দিনের তুলনায় হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও মৃত্যু কমলেও চলতি বছরের প্রথম সাত মাসেই রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৮৪ জন। এই সময়ে মারা গেছেন একজন। এর আগের দিন গত মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৭৮ জন। আর আক্রান্ত হয়ে মারা যান পাঁচজন, যা ছিল চলতি বছরে এক দিনে সর্বোচ্চ ভর্তি রোগী ও সর্বোচ্চ মৃত্যু।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ হাজার ৯১১ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে রয়েছেন ১ হাজার ২৮৫ জন আর অন্যান্য বিভাগের হাসপাতালে রয়েছেন ৬২৬ জন।

অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৪৫৫ জন। আর এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৬২ জনের। কেবল চলতি মাসে এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৪৭৭ জন আর এই পাঁচ দিনে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গুতে শনাক্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৫৬৬ জন, মৃত্যু হয় ছয়জনের। ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন ভর্তি হন, মৃত্যু হয় তিনজনের। মার্চে কারও মৃত্যু না হলেও হাসপাতালে ভর্তি হন ১১১ জন। এপ্রিলে ভর্তি হন ১৪৩ জন আর মৃত্যু হয় দুজনের। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৩৬ জন; মৃত্যু হয় দুজনের, জুনে ৫ হাজার ৯৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হন আর মৃত্যু হয় ৩৪ জনের।

দেশে ২০০০ সালে প্রথম ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় দেশে। সে বছর হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন আর মৃত্যু হয় ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে শুরু হয় করোনা, সে বছরে কমে আসে ডেঙ্গুর প্রকোপ; রোগী শনাক্ত হয় ১ হাজার ৪০৫ জন, মৃত্যু হয় সাতজনের। ২০২১ সালে শনাক্ত হয় ২৮ হাজার ৪২৯ জন, মৃত্যু হয় ১০৫ জনের, আর গত বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে শনাক্ত হয় মোট ৬২ হাজার আর মৃত্যু হয় দেশের সর্বোচ্চ ২৮১ জন।

অবহেলা আর উদাসীনতায় ডেঙ্গুর এই অবস্থা

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, দেশে ২৩ বছর ধরে ডেঙ্গুর প্রকোপ হচ্ছে। এর মধ্যে ২০১৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল সবচেয়ে বেশি, আর গত বছরে (২০২২) সবচাইতে বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

‘আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে, এ বছরে ডেঙ্গুর জটিলতার যে ধরন তাতে করে রোগীর সংখ্যা এবং মৃত্যু দুটিই আগের সব হিসাবকে অতিক্রম করবে, যদি না এডিস মশা নিধন বা নির্মূলে সফল না হই। কিন্তু এযাবৎকালে সিটি করপোরেশন এডিস নিধনে যে কাজগুলো করেছে, সেগুলো বেশির ভাগই ছিল প্রদর্শনমূলক, তারা কাজের চাইতে ফটোসেশন বেশি করেছে, কাজের কাজ কম ছিল।’

সেই সঙ্গে সিটি করপোরেশন সাধারণ মানুষকে সচেতন করবে, কারণ বাসাবাড়ির ভেতর সিটি করপোরেশন যেতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এবার কেবল আবাসিক এলাকায় মশার ওষুধ ছিটালেও সেটি নিয়ন্ত্রণ হবে না। এবার খালি এলাকাতেও এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালে দেখা গেছে, বুনো এডিস অর্থাৎ এডিস অ্যালবোপিকটাসও কিন্তু ডেঙ্গুর বাহক হয়েছে। এগুলো গাছের কোঠরসহ, গাছের পাতায় জমে থাকা পানিতেও বংশবিস্তার করতে পারে। তাই বাড়ির ভেতর, বাড়ির চারপাশ এবং নগরের যেখানে যেখানে গাছপালা রয়েছে, সেখানেও ওষুধ ছিটাতে হবে; কিন্তু এটা কাজ হচ্ছে না।

সিটি করপোরেশন ‘পারসিয়াল’ কাজ করছে, এতে করে মশা নির্মূল হচ্ছে না। যদি নগরের সব জায়গায় একযোগে ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু না করে, সিটি করপোরেশন যদি যুগপৎ পদক্ষেপ না নিতে পারে, তাহলে ডেঙ্গুর লাগাম টেনে ধরা যাবে না। আর চলতি জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুর এক ভয়ংকর রূপ দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে দেশবাসীকে, বলেন ডা. লেলিন চৌধুরী।

ঢাকা শহরে যেসব সরকারি হাসপাতালে সবচাইতে রোগী ভর্তি বেশি, তার একটি হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিচালক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘রোগীরা কোথা থেকে আসছে- তাদের নাম-ঠিকানা, ওয়ার্ড নম্বরসহ সিটি করপোরেশনকে আমরা দিচ্ছি। আমরা রোগীদের চিকিৎসা দিতে পারি, কিন্তু মশা নির্মূলের দায়িত্ব তো তাদের। কিন্তু সেই কাজটি তারা সঠিকভাবে করছেন বলে আমি মনে করি না।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় সরকারকে রোগ নিয়ন্ত্রণে যেসব কার্যক্রম নেয়া দরকার সেগুলোর অভিজ্ঞতা তাদের নেই, লোকবল নেই। এর কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে তারা সফল হয়নি এত বছরেও।

আর তারা একে আমলে নেয়নি বলেও আমার মনে হয়।’

তিনি বলেন, যার কারণে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশন কিটতাত্ত্বিকবিদ, কিটতাত্ত্বিক ল্যাবরেটরি, যন্ত্রপাতিসহ কোনো কিছুতেই তারা মনোযোগী হয়নি, একমাত্র মশক নিধন আর কীটনাশক ক্রয় ছাড়া। কিন্তু যেহেতু কিটতাত্ত্বিক সক্ষমতা তারা বাড়ায়নি, তাই মশাও নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। আর সেই নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার কারণেই দীর্ঘ ২৩ বছর ধরেও দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি, বরং আগে ডেঙ্গুকে শহুরে রোগ বলা হলেও এখন সেটি পুরো দেশে ছড়িয়েছে।

অধ্যাপক ডা. বে-নজির আহমেদ বলেন, এখন পর্যন্ত এডিস নিধনে সিটি করপোরেশন যত পদক্ষেপ নিয়েছে সেগুলো সাফিসিয়েন্ট ছিল না, সাফিসিয়েন্ট যদি হতো তাহলে তো এত বছরে ডেঙ্গু থাকার কথাই না।

কাজে সন্তুষ্ট নয় সিটি করপোরেশন

চলতি বছরের ৪ জুলাইয়ে সর্বাধিক রোগী ও মৃত্যুর দিনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করে। যেখানে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপপ্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার জানান, তারা আগামী ৮ থেকে ১৩ জুলাই এডিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নিতে যাচ্ছেন।

ডেঙ্গুর আজকের এই পরিস্থিতি মে মাসেই টের পাওয়া গিয়েছিল, তাহলে এতদিন পরে কেন ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেয়া হলো প্রশ্নে তিনি এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান, তবে আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কাজে সন্তুষ্ট নন তিনি।


দেশে আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কারো মৃত্যু হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাশাপাশি মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ পর্যন্ত দেশে ২০ লাখ ৫২ হাজার ২২০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সারা দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৫২৪ জনে ঠেকেছে।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৭:২৫
ইউএনবি

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩৮ জন রোগী।

শুক্রবার (১১ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ৬০ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩৮ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৫ জন। ঢাকা বাদে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১১৩ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৪ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী এবং ৫৯ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ।


ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩৭

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এই রোগে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩৭ জন।

এর আগে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয় গত ৭ জুন। সেদিন ৪৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ডেঙ্গু নিয়ে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলছে, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুজনের মধ্যে একজন ঢাকায়; আরেকজন চট্টগ্রাম বিভাগের।

মশাবাহিত এ রোগে চলতি মাসে মৃত্যু হলো ১২ জনের। ১৯ জনের প্রাণ গেছে আগের মাসে। এছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন ও মে মাসে ৩ জন ডেঙ্গুতে মারা যান। ফেব্রুয়ারি মাসে কারো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


সাপে কাটলে কি করবেন? কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা অতীব জরুরি?

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ১৩:৩৯
ইউএনবি

বৃষ্টি মৌসুমগুলোতে ভারী বর্ষণের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে দেখা দেয় বন্যা। আর বন্যা মানেই নানা ধরণের কীট-পতঙ্গের পাশাপাশি শুরু হয় সাপের উপদ্রব। এমনকি এই চিত্র কেবল গ্রামেরই নয়, শহরাঞ্চলগুলোরও একই অবস্থা। এছাড়া যারা বর্ষার সময় বনে বা পাহাড়ে ঘুরতে যান তাদেরও প্রায় সময় সাপের কবলে পড়তে হয়। তাছাড়া বিগত বছরগুলোতে দেশ জুড়ে সাপে কাটার ঘটনা আশঙ্কাজনক মাত্রায় রয়েছে। সব থেকে উদ্বেগের ব্যাপার হলো- সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে অনেকেই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন। তাই চলুন, সাপে কামড়ালে কি করণীয় এবং কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক।

সাপে কাটলে কি করা উচিত

সাপে কাটা ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। হাসপাতালে যাওয়ার পথে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাণরক্ষার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো নেওয়া উচিত:

- সাপে কামড়ানো ব্যক্তি প্রায় ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রে এই মানসিক অবস্থা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির ভয় দূর করে তাকে আশ্বস্ত করতে হবে এবং সাহস দিতে হবে। বিশেষত নির্বিষ সাপের দংশনে মৃত্যু হয় না। আর বাংলাদেশের অধিকাংশ সাপেরই বিষ নেই। বিষধর সাপের সংখ্যা খুবই কম। তাছাড়া এগুলো অধিকাংশ সময় শিকারের শরীরে পর্যাপ্ত বিষ ঢুকিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়।

- ব্যক্তির আক্রান্ত অঙ্গকে অবশ্যই স্থির করে রাখতে হবে। খুব বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। হাঁটাচলা বা অধিক ঝাঁকুনির সম্মুখীন না করে স্থির ভাবে আধশোয়া অবস্থায় রাখা উত্তম।

- ক্ষতস্থানে একটু চাপ প্রয়োগ করে ব্যান্ডেজ বেধে দিতে হবে। এই প্রাথমিক চিকিৎসাটি প্রেসার ইমোবিলাইজেশন নামে পরিচিত। ব্যান্ডেজের বদলে গামছা, ওড়না বা এ জাতীয় কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

- রোগী শ্বাস না নিলে অবিলম্বে তার মুখে শ্বাস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

- আক্রান্ত স্থান জীবাণুমুক্ত করার জন্য সাবান দিয়ে ধুয়ে ভেজা কাপড় দিয়ে হাল্কা ভাবে মুছে নিতে হবে।
পড়নে অলঙ্কার বা ঘড়ি কিংবা তাগা, তাবিজ থাকলে তা খুলে ফেলতে হবে। নতুনবা এগুলো রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যা চিকিৎসা প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।

সাপে কামড়ালে যে ভুলগুলো করা উচিত নয়

- সাপে কাটা ব্যক্তিকে ওঝার কাছে নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।

- আক্রান্ত অঙ্গে কোনও ধরণের ভেষজ ওষুধ, উদ্ভিদের বীজ, লালা, গোবর, কাদা, বা পাথর লাগানো যাবে না।

- অনেকেই মনে করে থাকেন যে, আক্রান্ত স্থানে মুখ দিয়ে টেনে বিষ বের করলে রোগী ভালো হয়ে যায়। কিন্তু সাপের বিষ আসলে লসিকা ও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়, যা এই পদ্ধতিতে বের করা অসম্ভব। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে যিনি মুখ দিচ্ছেন, তার জন্যও বিষয়টি ক্ষতিকর।

- কামড়ানোর স্থানে অনেকে শক্ত বাঁধন বা গিট দিয়ে বাঁধেন। কিন্তু এমনটি একদমি উচিত নয়। বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে কামড়ানোর স্থান থেকে কিছুটা ওপরের দিকে শক্ত করে বাঁধা হয়। মূলত এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এতে বরং উল্টো রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে সঠিক রক্ত প্রবাহের অভাবে টিস্যুতে পচন বা নেক্রোসিস-এর উপক্রম হতে পারে।

- দংশনের স্থানে ছুরি বা ব্লেড দিয়ে আঁচড় দেওয়া যাবে না। বিষ বের করার জন্য অনেকে এমনটি করেন। কিন্তু এর জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সরণাপন্ন হওয়া উচিত।

- ব্যথা দূর করতে মোটেই অ্যাস্পিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।

- কোনও ধরণের রাসায়নিক পদার্থ লাগানো বা তা দিয়ে আক্রান্ত স্থানে সেঁক দেওয়া ঠিক নয়।

- অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার বা ঢোক গিলতে কিংবা কথা বলতে সমস্যা হয়। পাশাপাশি নাসিক কণ্ঠস্বর, বমি, বা অতিরিক্ত লালা নিঃসরণের মত ঘটনা ঘটে। এগুলোর প্রতিকার হিসেবে তাকে কিছু খাইয়ে বমি করানোর চেষ্টা করা হয়। এই কাজটি একদমি অনুচিত।

শেষাংশ

সাপে কাটা ব্যক্তিকে বাঁচাতে তাৎক্ষণিকভাবে এই করণীয়গুলো যথেষ্ট কার্যকর। সাপের বিষ বের করার বা দংশনের ব্যথা উপশমে বিভিন্ন ভুল ধারণাগুলো সমাজে প্রচলিত রয়েছে। এগুলো পরিহার করে ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া না করা এবং অতিরিক্ত চাপ প্রশমনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সাথে দংশিত স্থান জীবাণুমুক্ত করা একটি উৎকৃষ্ট উপায়। সর্বপরি, চিকিৎসা সংক্রান্ত এই প্রাথমিক জ্ঞান যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার আত্মবিঃশ্বাস যোগায়।


বিএমইউতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের পুনর্বাসনে নতুন যুগের সূচনা করছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থাপিত দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে সীমিত পরিসরে পাইলট প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে।

চীনের কারিগরি সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এই সেন্টারটি উন্নত বিশ্বের মানদণ্ডে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে মিলবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও সুনির্দিষ্ট পুনর্বাসন সেবা। গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চীনের সরকার এই প্রকল্পে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি অনুদান দিয়েছে। প্রযুক্তির দিক থেকে এই সেন্টারটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে ওঠবে।

এই সেন্টারে রয়েছে মোট ৬২টি রোবট, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক। এসব রোবটের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফিজিওথেরাপি, স্নায়ুবিক পুনর্বাসন এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা প্রদান করা সম্ভব।

বিএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্টারটি চালুর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে চীনের ৭ সদস্যের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করলে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলে সেন্টারটি পুরোদমে চালু করা হবে।

এই রোবটিক সেন্টার যেসব রোগীরা স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক বৈকল্য, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, নার্ভ ইনজুরি, ফ্রোজেন শোল্ডার, দুর্ঘটনাজনিত জটিলতা বা শরীরের অঙ্গের দুর্বলতাসহ জটিল পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন তাদের উপকারে আসবে।

বিশেষ করে জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন এবং এখনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই সেন্টারে বিনা মূল্যে রোবটিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

সেন্টারটি শুধু বিশেষ উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পরিকল্পিত নীতিমালার আলোকে সাধারণ রোগীদের জন্যও ধাপে ধাপে সেবা উন্মুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে চেষ্টা থাকবে চিকিৎসার ব্যয় রোগীদের আর্থিক সক্ষমতার মধ্যে রাখার।

এই সেন্টার চালু হলে বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পুনর্বাসন চিকিৎসায় এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা মানুষের জীবনে আশার আলো হয়ে ওঠবে।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১ জন করোনায় আক্রান্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় কারো মৃত্যু হয়নি। আর সারা দেশে এই সময়ের মধ্যে ১১ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (৬ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। সোমবার (৭ জুলাই) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ২৪ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাশাপাশি মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৪৩ জন।

এ পর্যন্ত দেশে ২০ লাখ ৫২ হাজার ১৮৮ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সারা দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৫২৩ জনে ঠেকেছে।


ডেঙ্গুতে ২৪ ঘণ্টায় তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৯২ জন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এই রোগে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার (৭ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৯২ জন। চলতি বছরে একদিনে এটিই সর্বোচ্চসংখ্যক হাসপাতালে ভর্তি।

এর আগে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয় গত ২৪ জুন। সেদিন ৩৯৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ডেঙ্গু নিয়ে।

চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ১২ হাজার ৭৬৩ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলছে, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনের মধ্যে দুজন বরিশালের; আরেকজন খুলনার।

মশাবাহিত এ রোগে চলতি মাসে মৃত্যু হলে ছয়জনের। ১৯ জনের প্রাণ গেছে আগের মাসে। এছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিন জন, এপ্রিলে সাত জন ও মে মাসে তিনজন ডেঙ্গুতে মারা যান। ফেব্রুয়ারি মাসে কারো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


স্বাস্থ্যখাতে ফ্যাসিস্ট আমলে সুবিধাভোগীরা গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন : ডা. রফিক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে ফ্যাসিস্ট আমলে সুবিধাভোগীরা গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রয়েছেন।’

আজ শনিবার ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত কামরাঙ্গীরচর থানা যুবদলের আহ্বায়ক মো. হুমায়ুন কবিরের ছোট ভাই মো.সেন্টুকে জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতালে (আইসিইউ) দেখতে গিয়ে তিনি এ সব কথা বলেন।

এ সময় তিনি সেন্টুর শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি রোগীর সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহ্বান জানান।

ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের প্রায় এক বছর হতে চললেও বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে যারা সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন, পতিত স্বৈরশাসকের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন, জুলাই আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা করতে দেয়নি এবং জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকদের নানাভাবে নিপীড়ন করেছেন তারা আজও এই বৈষম্যহীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যপদগুলোতে বহাল তবিয়তে আসীন।’

ডা. আরও রফিক অভিযোগ করে বলেন, জাতীয়তাবাদী ঘরানার চিকিৎসকগণ এখনো তাদের কাঙ্ক্ষিত পদায়ন পাননি কিংবা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। বরং হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। এইসব ফ্যাসিবাদের দোসরদের অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। অন্যথায় হাজারও শহীদের রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশে এই অবমাননা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি-এসকল দোসরদের দ্রুত অপসারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন এবং বঞ্চিতদের যথাযথ মূল্যায়নের ব্যবস্থা নিন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডক্টরস আ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) বক্ষব্যাধি, লেপ্রসি ও ক্যান্সার শাখার সাধারণ সম্পাদক এবং বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. জিয়াউল করিম, সদ্য বিলুপ্ত ড্যাবের সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার লিয়াকত হোসেন বিদ্যুৎ, সহ-দপ্তর সম্পাদক ও বক্ষব্যাধি শাখার সহসভাপতি আশরাফুল আলম খান, ডা. জাকারিয়া মাহমুদ, সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন, ডা. সায়েম ফায়েজি, পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ ডা. রইস উদ্দিন, ডা. সৈয়দা নুরে জান্নাতসহ বক্ষব্যাধি, ক্যান্সার ও গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের বিভিন্ন পর্যায়ের চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।

পরে জাতীয় বক্ষব্যাধি, ক্যান্সার ও গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।


২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২০৪

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

প্রতিদিনই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০৪ জন রোগী।

শুক্রবার (৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ১০১ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ২০৪ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৫৭ জন। ঢাকা বাদে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১৪৭ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১১ হাজার ৬৬০ জন। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এবং ৫৯ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ।


ডেঙ্গুতে আক্রান্তের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে বরিশালে একজনের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বর ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বরিশালে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। মশাবাহিত রোগটিতে এই বিভাগে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (২ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এই মৃত্যু হয়। এই সময়ে সারা দেশের সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৫৮ জন রোগী।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে সর্বোচ্চ ১৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৮ জন। ঢাকা বাদে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৮০ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১১ হাজার ৪৫৬ জন। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী এবং ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ।


যৌথ চেষ্টায় ডেঙ্গু মহামারিকে জয় করবে বাংলাদেশ: চীন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

সরকার, সমাজিক ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ চেষ্টায় বাংলাদেশে ডেঙ্গু মহামারি থেকে উত্তরণ সম্ভব বলে মনে করছে চীন। ঢাকায় নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. লিউ ইউইন বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, প্রতিটি ডেঙ্গু রোগী সর্বোত্তম চিকিৎসা পাবে এবং দ্রুত সেরে উঠবে।’

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময় চীন বাংলাদেশের জন্য ডেঙ্গু প্রতিরোধ সামগ্রী হস্তান্তর করে। চীনা সরকার বাংলাদেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতির প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুরোধ পাওয়ার পরপরই ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেয় বলেও জানান ড. লিউ।

তিনি বলেন, ‘খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা প্রায় ৫০ লাখ টাকা মূল্যের ৭৮৯ বক্স (১৯ হাজার ৭০০ ইউনিট) ডেঙ্গু র‌্যাপিড টেস্ট কিট সংগ্রহ করেছি। এ সহায়তা শুধু মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে নয়, বরং দুই দেশের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতিফলনও।’

তিনি আরও বলেন, ‘জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আমাদের বিস্তৃত কৌশলগত সহযোগিতার এটি আরেকটি বাস্তব উদাহরণ।’

চীনা চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেন, ডেঙ্গু এখন বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা ও বিস্তৃত জলাধার থাকায় এখানে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আরও বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাংলাদেশের সরকার যে সক্রিয় পদক্ষেপ নিয়েছে—যেমন কীটনাশক ব্যবস্থাপনা, নজরদারি ব্যবস্থা উন্নয়ন, জনসচেতনতা বাড়ানো—তা আমরা আন্তরিকভাবে প্রশংসা করি।’

চীন বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে এবং আরও বেশি মানুষের উপকারে স্বাস্থ্যসেবায় পারস্পরিক বিনিময় ও অংশীদারিত্ব জোরদার করবে বলেও জানান ড. লিউ।

এ সময়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর উপস্থিত ছিলেন।


ডেঙ্গু: রাজধানীতে আরও একজনের মৃত্যু, সারাদেশে আক্রান্ত ৪১৬

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৪১৬ জন রোগী।

বুধবার (২ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ১৬৫ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছেন ৪১৬ জন।
নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৯৪ জন। ঢাকা বাদে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩২২ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৪ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১১ হাজার ৯৮ জন। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ নারী এবং ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ পুরুষ।


বাংলাদেশকে ডেঙ্গু প্রতিরোধী উপকরণ দিচ্ছে চীন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে ডেঙ্গু প্রতিরোধী উপকরণ দিচ্ছে চীন সরকার।

এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে এসব উপকরণ বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। হস্তান্তর অনুষ্ঠানটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে (ডিজিএইচএস) অনুষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ড. লিউ ইউইন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর বর্ষা শুরু হওয়ার পর দেশে ডেঙ্গু দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। জুন মাসে মশাবাহিত এই রোগে ১৯ জনের মৃত্যু এবং ৫ হাজার ৯৫১ জন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। এ ছাড়া মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন আক্রান্ত ও ৩ জনের মৃত্যু হয়।


banner close