শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫
১৭ শ্রাবণ ১৪৩২

ওষুধ কিনতেই নাভিশ্বাস

জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত
জাকিয়া আহমেদ
প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট, ২০২৩ ০৮:২২

রোগ সারাতে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধপথ্য সেবন করেন রোগীরা। অসুখ সারবে বলে আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু সেই ওষুধ এখন রোগ সারানোর বদলে উল্টো যেন চেপে ধরছে রোগীদের। ওষুধের বাড়তি খরচই তুলছে তাদের নাভিশ্বাস। বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপের মাত্র একটি ওষুধেই রোগীদের পকেট থেকে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে বছরে ৩ হাজার ৪৭০ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আর ডায়াবেটিসের একটি ওষুধে বছরে রোগীদের অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৮২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা। দুটি ওষুধে রোগীদের মোট বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে ৬ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার ২০২২ সালের এক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, দেশে উচ্চ রক্তচাপের রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৮২ লাখ। এ অসুস্থতায় ভোগা একজনকে দিনে একটি করে এনজিলক খেতে হয়। গত বছরে দাম বাড়ার আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর দাম বাড়ানোর আগে এর দাম ছিল ৮ টাকা (১০টির এক পাতা ৮০ টাকা)। এখন প্রতিটি ট্যাবলেটের দাম ১০ টাকা। মানে এক পাতা ১০০ টাকা। মাসে একজন উচ্চ রক্তচাপের রোগীর খরচ বেড়েছে ৬০ টাকা। এই হিসাবে ৪ কোটি ৮২ লাখ রোগীর মাসে বাড়তি খরচ ২৮৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। বছরে ৩ হাজার ৪৭০ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের ২০২১ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগী ১ কোটি ৩১ লাখ। যদিও ২০২২ সালে বারডেম জানায়, দেশের জনসংখ্যার ২৫ দশমিক ২ শতাংশ অর্থাৎ চার কোটিরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। চিকিৎসকদের ভাষ্যে, ডায়াবেটিস রোগীদের ৬১ শতাংশই জানেন না যে তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ফলে ধরে নেয়া যায়, ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত জেনে ওষুধ খাচ্ছেন।

ডায়াবেটিসের রোগীরা লিনাগ্লিপ নামে একটি ওষুধ সেবন করেন। ২০২২ সালের জুনের আগে এর একটির দাম ছিল ৬০ টাকা (এক পাতা বা ১০টি ট্যাবলেট ৬০০ টাকা)। এখন একটি ট্যাবলেটের দাম ৬৬ টাকা; এক পাতা ওষুধ ৬৬০ টাকা। মাসে এই একটি ওষুধের জন্য রোগীর খরচ বেড়েছে ১৮০ টাকা। বছরে ২ হাজার ১৬০ টাকা। অর্থাৎ বছরে দেশের ডায়াবেটিস রোগীদের মাত্র একটি ওষুধের জন্য বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে ২ হাজার ৮২৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমীন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ওষুধের দাম বাড়ার কারণে সব রোগীই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে ক্রনিক ডিজিজ অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, কিডনি রোগের মতো অসুখে আক্রান্ত রোগীর খরচ অনেক বেশি বেড়ে গেছে। তাদের সারা জীবন এসব ওষুধ কিনে খেতে হবে।’

যদিও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের চিফ অপারেটিং অফিসার রাব্বুর রেজার মতে, সংকট এবং কাঁচামালের দাম বাড়া সত্ত্বেও ওষুধের দাম সেভাবে বাড়েনি। তিনি বলেন, ‘ডলারের সংকট, ওষুধের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। কিন্তু সেভাবে ওষুধের দাম বাড়ানো হয়নি। বরং অনেক ওষুধের দাম কমেছে, সেসব নিয়ে কথা হচ্ছে না।’

চিকিৎসা খরচের ৬৪ শতাংশই ওষুধে

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিট বলছে, দেশে একজন মানুষের মোট চিকিৎসা খরচ যত হয়, তার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে ওষুধ কেনার পেছনে। গত ৫ জানুয়ারি প্রকাশিত স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ‘বাংলাদেশ ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্টস ১৯৯৭-২০২০’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসা ব্যয়ের মধ্যে রোগীর সবচেয়ে বেশি খরচ হয় ওষুধের পেছনে; ৬৪ দশমিক ৬ শতাংশ। যার কারণে মানুষ দরিদ্র থেকে দরিদ্র হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদরা বলছেন, জনগণের এই ওষুধের খরচের পেছনে বিভিন্ন দেশে সরকারের প্রচুর ভর্তুকি থাকলেও এ দেশে তা তুলনামূলক খুবই কম। ৩০ হাজার কোটি টাকার ওষুধের বাজারে সরকার খরচ করে ৩ থেকে ৫ শতাংশ। বাকি ৯৫ শতাংশই খরচ করতে হয় ব্যক্তিকে নিজের পকেট থেকে।

জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. মুশতাক হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এর অন্যতম লক্ষ্য পয়সার অভাবে যেন কেউ চিকিৎসাবঞ্চিত না হয়। কিন্তু এখন যা দেখা যাচ্ছে, তাতে ২০৩০ সাল নাগাদ ওষুধ সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২০১৬ সালে করা স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, চিকিৎসা খরচ মেটাতে গিয়ে বছরে ৮৬ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছে। এখন এই সংখ্যা আরও বেশি বলে মনে হচ্ছে। এসব মানুষকে সংসারের অন্যান্য খাতের খরচ কমিয়ে চিকিৎসায় সে অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।’

সাধারণ ওষুধের হালচাল

দেশে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া ওষুধের অন্যতম নাপা সিরাপ। জ্বর, সর্দি, শরীর ও মাথাব্যথায় শিশুদের জন্য এর বিকল্প কম। ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত এই নাপা সিরাপের দাম ছিল ১৮ টাকা। ২০২২ সালের ৩০ জুন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এ সিরাপের দাম নির্ধারণ করে ২০ টাকা। কিন্তু বছর শেষে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে দাম হয় ২৫ টাকা। আর চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি নাগাদ এক বোতল নাপা সিরাপের দাম দাঁড়ায় ৩৫ টাকা। অর্থাৎ এক সিরাপের দাম বেড়েছে ১৭ টাকা।

একই অবস্থা বহুল বিক্রীত ওষুধ নাপা ট্যাবলেটের। এক পাতায় থাকে ১০টি ট্যাবলেট। ২০২২ সালের জুনের আগে নাপার প্রতি পাতার দাম ছিল ৮ টাকা। ওই বছরের ৩০ জুন ঔষধ প্রশাসনের দাম বাড়ানোর পর হয় ১০ টাকা। চলতি বছরের এপ্রিলে ওই এক পাতার দাম হয়ে যায় ১২ টাকা। অর্থাৎ নাপা ট্যাবলেটের দামও বেড়েছে ৫০ শতাংশ।

বিভিন্ন দূষণের কারণে দেশে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এ জন্য সবচেয়ে বেশি যে ওষুধ চিকিৎসকরা খাওয়ার পরামর্শ দেন তার অন্যতম অ্যাভোলাক সিরাপ। ওষুধ বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পুরো দেশে প্রতিদিন কয়েক লাখ অ্যাভোলাক সিরাপ বিক্রি হয়। সরকার দাম বাড়ানোর আগে অ্যাভোলাকের দাম ছিল ১৪০ টাকা। গত মে মাসের শেষ থেকে সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকায়।

ওষুধ বিক্রেতারা বলছেন, দফায় দফায় দাম বাড়ায় কোম্পানিগুলো। তাই নির্দিষ্ট করে বাড়ানোর দিন-তারিখ বলা কঠিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বিক্রেতা জানান, কোম্পানিগুলো প্রথমে বাজারে ওষুধের সংকট দেখায়। তারপর বিক্রেতাদের মুঠোফোনে সংকটের কথা জানিয়ে খুদেবার্তা পাঠায়। এরপর দাম বাড়ানোর কথা জানায়।

শুধু নাপা অথবা অ্যাভোলাকই নয়, গত বছরের জুলাই মাসের পর থেকে সরকার-নির্ধারিত দাম উপেক্ষা করে বহুল ব্যবহৃত, বিক্রেতাদের ভাষায় ‘ফাস্ট মুভিং’ ওষুধগুলোর দাম বাড়ানো হচ্ছে দফায় দফায়।

দেশে অত্যাবশ্যকীয় তালিকায় ওষুধ আছে ২১৯টি। এর মধ্যে ১১৭টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে অধিদপ্তর। এই ১১৭টির মধ্যে ২০টি জেনেরিকের ৫৩টি ওষুধের খুচরা মূল্য বাড়ানোর অনুমোদন দেয়া হয়।

এতে দেখা গেছে, কোনো কোনো ওষুধের দাম বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। বৃদ্ধির হার ছিল ১৩২ শতাংশ পর্যন্ত। এর বাইরে বাকি সব ওষুধের দাম নির্ধারিত হয় প্রস্তুতকারী কোম্পানির প্রস্তাব এবং সুপারিশের ভিত্তিতে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, দেশে এমন কোনো ওষুধ নেই যার দাম বাড়েনি। কেবল একবার নয়, দফায় দফায় দাম বেড়ে ওষুধ এখন সাধারণ মানুষের এক দীর্ঘশ্বাসের নাম।

সরেজমিন ওষুধের দোকান

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গ্যাস্ট্রিক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধের দাম বেড়েছে ১৩ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত। কোনো কোনো কোম্পানির জীবনরক্ষাকারী ওষুধের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ।

শাহবাগ এলাকা এবং ঢাকা, মুগদা ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ওষুধের দোকানের একাধিক বিক্রেতা দৈনিক বাংলাকে জানান, সরকারিভাবে দাম বেড়েছে একবার। কিন্তু কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে কয়েকবার। দাম বাড়ানোর জন্য কৃত্রিমভাবে ওষুধের সংকটও তৈরি করা হচ্ছে।

বিক্রেতারা জানান, ভিটামিন বি১, বি৬, বি১২-এর মধ্যে বেশি চলে নিউরো বি, ভিটাবিয়ন, নিওবিয়ন, রেনেটার নিউরোবেস্ট, মায়োলিন। এগুলোর প্রতিটির আগে দাম ছিল ৮০ টাকা পাতা। এখন কোনো কোম্পানি করেছে ৯০ টাকা, কেউ করেছে ১০০ টাকা।

অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে বহুল প্রচলিত অ্যাজিথ্রোমাইসিন। যার মধ্যে জিম্যাক্স অন্যতম। জিম্যাক্স ৩৫ টাকা থেকে হয়েছে ৪০ টাকা। তবে কোনো কোনো কোম্পানি করেছে ৪৫ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিক্রি হয় সেফিক্সিম। এই জেনেরিকের পিস হিসেবে সেফথ্রি ২০০ এমজি আগে বিক্রি হতো ৩৫ টাকায়, এখন ৪৫ টাকা। সেফথ্রি ডিএস ৪০০ এমজি ছিল ৫০ টাকা, হয়েছে ৬০ টাকা প্রতি পিস।

কেমন আছেন রোগীরা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শাহেনুর রহমান হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপেও। প্রতি মাসে তার ১ হাজার ৭০০ টাকার ওষুধ লাগত। এখন একই ওষুধের জন্য মাসে তার খরচ হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ টাকা।

রাজধানীর নিকেতন ১ নম্বর গেটের পরের ছোট্ট ব্রিজ পার হয়ে গুলশানে ঢোকার মুখে লেকপাড়ে টং দোকান চালান দ্বীন মোহাম্মদ। ৪৫ বছরের দ্বীন মোহাম্মদ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। সঙ্গে আড়াই বছর আগে যোগ হয়েছে কিডনি রোগ। দ্বীন মোহাম্মদ জানালেন, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ বাদ দিয়েছেন। আর ডায়াবেটিস ও কিডনির ওষুধ খাওয়া কমিয়েছেন। কারণ কেনার সামর্থ্য নেই।

বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন লিটন মুন্সী। জানালেন, ১৩ বছর ধরে স্ট্রোকের কারণে তার মায়ের শরীরের বাম পাশ প্যারালাইজড। সঙ্গে রয়েছে ডায়াবেটিস আর উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি সমস্যা। সপ্তাহে দুই দিন ডায়ালাইসিস করতে হয়।

লিটন মুন্সী বলেন, ‘এখন মাসের শেষ দিকে পরিকল্পনা করতে হয় সামনের মাসে কোন খরচ বাদ দিয়ে সেই টাকায় মায়ের পুরো ওষুধ কিনব। ওষুধের দাম যদি এত বাড়ে, তাহলে মানুষ বাঁচবে কীভাবে?’

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উল্টো দিকে ওষুধের দোকানমালিক গোলাম মেহেদী হাসান আকন্দ বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশে প্রতিদিন কয়েক লাখ অ্যাভোলাক সিরাপ বিক্রি হয়। কয়েক মাস আগে ১৪০ টাকার অ্যাভোলাক-১০০ এমএল ছিল ১৬০ টাকা, এখন সেটি ১৭০ টাকা। বড়টির দাম ছিল ২৫০ টাকা, এখন হয়েছে ২৯০ টাকা।’

নিকেতনের মেসার্স হাসান ফার্মেসির ওষুধ বিক্রেতা সাগর জানান, তার দোকানে দিনে অন্তত পাঁচটি অ্যাভোলাক সিরাপ বিক্রি হয়। সে হিসাবে মাসে বিক্রি হয় ১৫০ বোতল।

এই হিসাবে এক অ্যাভোলাক সিরাপেই এই দোকানের ক্রেতাদের পকেট থেকে ৩০ টাকা বাড়তি ধরে মাসে চলে যাচ্ছে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা বাড়তি খরচ, বছরে যা দাঁড়ায় ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা।

রাজধানীর মগবাজারে মেসার্স রমনা ফার্মেসিতে ওষুধ ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকে। এখানে অ্যাভোলাক ২০০ এমজির দাম ২৫০ টাকা থেকে হয়েছে ২৯০ টাকা। মানুষ বেশি কেনে বড় বোতলটিই। দোকানটি মাঝারি মানের জানিয়ে রমনা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী এজাজ উদ্দিন বলেন, মাসে ৩০টির মতো অ্যাভোলাকের বড় বোতল বিক্রি হয়।

বাংলাদেশ কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির তথ্যমতে, পুরো দেশে আড়াই থেকে তিন লাখ ওষুধের দোকান রয়েছে। বাংলাদেশে কেমিস্টস অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির পরিচালক জাকির হোসেন রনি বলেন, দেশে তাদের নিবন্ধিত ওষুধের দোকান রয়েছে আড়াই থেকে তিন লাখ। তবে অনিবন্ধিত রয়েছে এর প্রায় দেড় গুণ।

ওষুধের দাম বৃদ্ধির পক্ষে যুক্তি দিয়ে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল মুক্তাদির দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আগে ওষুধের যে কাঁচামাল কেনা হতো ৮০ টাকায়, সেটির দাম এখন ১১১ টাকা। তার মানে এখানে দাম বেড়েছে ২৬ টাকা, অর্থাৎ ৩০ শতাংশ। কিন্তু আমাদের ১১১ টাকায় কাঁচামাল কিনে ওষুধ বিক্রি করতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। আমাদের আসলে লোকসান হচ্ছে। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, দাম আপাতত আর বাড়াব না। অর্থনৈতিক অবস্থা একটু স্থিতিশীল হোক, এরপর সরকারের সঙ্গে আমরা কথা বলব।’

যা বলছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর

ওষুধের দাম বাড়ানোর জন্য কোম্পানিগুলোর চাপের কথা জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ। তিনি মনে করেন, কোম্পানিগুলো আগ্রাসী বিপণন নীতি পরিহার করলে, দামি মোড়ক ব্যবহার না করলে এবং উপহার দেয়া বন্ধ করলে ওষুধের দাম কমবে।

মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘ক্যানসার, কিডনি রোগ বা পক্ষাঘাতের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকে শেষ সম্বল ভিটা বা জমি বিক্রি করেন। এসব রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাচ্ছেন।’

তার মতে, ডলারের দাম যেভাবে বেড়েছে, ওষুধের দাম সেভাবে বাড়েনি। তিনি বলেন, ‘যখন ক্রাইসিস (ডলার ক্রাইসিস) শুরু হলো, তখন ওরা (কোম্পানি) এসে আমাদের বলল দাম না বাড়ালে তারা চালাতে পারবে না, কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।’

সবকিছু মিলিয়ে ৫০ শতাংশের বেশি খরচ বেড়েছে জানিয়ে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘এ নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কাঁচামাল তো তাদের আনতে হবে, দেশে তো আর কাঁচামাল তৈরি হয় না। আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হয়েছি, কারণ আমাদের দেশীয় কোম্পানির লোকসান যাচ্ছিল। কিন্তু যেভাবে বাড়ার কথা ছিল, সেভাবে আসলে বাড়েনি।’


ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ২৭৮

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ২৭৮ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৭২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৫ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩৫ জন, খুলনা বিভাগে ১৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩৫ জন এবং রংপুর বিভাগে ৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত একদিনে সারাদেশে ৩০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৯ হাজার ৬৩৫ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২০ হাজার ৯৮০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের।

প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় ও পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।


বিশ্বজুড়ে দ্বিগুণ হতে পারে লিভার ক্যান্সার, প্রতিরোধযোগ্য অধিকাংশ : গবেষণা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বিশ্বব্যাপী লিভার ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় দ্বিগুণ হতে পারে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এক গবেষণায় এমন সতর্ক করা হয়েছে।

তবে স্থূলতা, মদ্যপান ও হেপাটাইটিসের মতো প্রতিরোধযোগ্য ঝুঁকিগুলোর বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিলে অনেক ক্ষেত্রেই এ রোগ এড়ানো সম্ভব।

প্যারিস থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

ল্যানসেট মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত গ্লোবাল ক্যানসার অবজারভেটরির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে লিভার ক্যান্সারে প্রতি বছর নতুন আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৭০ হাজার হলেও ২০৫০ সালের মধ্যে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১৫ লাখ ২০ হাজারে। রোগটির অবস্থান এখন ক্যান্সারের মধ্যে ষষ্ঠ।

তবে মৃত্যু হারের দিক থেকে এটি তৃতীয়। গবেষণা বলছে, ২০৫০ সালের মধ্যে এই ক্যান্সারে ১৩ লাখ ৭০ হাজার মানুষের প্রাণ যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লিভার ক্যান্সারের প্রতি পাঁচটি রোগীর মধ্যে তিনজনই চাইলেই এই রোগ থেকে বাঁচতে পারেন। মূল ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে মদ্যপান, হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস এবং ‘এমএএসএলডি’ (মেটাবলিক ডিসফাংশন অ্যাসোসিয়েটেড স্টিয়াটোটিক লিভার ডিজিজ) নামের এক রোগ। এই রোগে ওজন বাড়ার কারণে লিভারে চর্বি জমা হয়। পূর্বে এটিকে ‘নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ’ নামে ডাকা হতো।

বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবসে (২৮ জুলাই) প্রকাশিত এ গবেষণায় বলা হয়, ২০৫০ সালেও হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাস লিভার ক্যান্সারের প্রধান কারণ হিসেবে থাকবে। জন্মের পরপর টিকা দেওয়া হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর হলেও সাব-সাহারা আফ্রিকাসহ অনেক নিম্নআয়ের দেশে এখনও টিকাদানের হার খুবই কম।

গবেষকদের আশঙ্কা, টিকাদানের হার না বাড়লে ২০১৫ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত হেপাটাইটিস বি-তে বিশ্বজুড়ে ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

অন্যদিকে, ২০৫০ সাল নাগাদ লিভার ক্যান্সারের ২১ শতাংশ কারণ হবে মদ্যপান, যা ২০২২ সালের তুলনায় দুই শতাংশের বেশি। এছাড়া, ওজন বাড়ার কারণে লিভারে জমে থাকা চর্বি থেকে সৃষ্ট ক্যান্সারের হার বেড়ে ১১ শতাংশে পৌঁছাবে। যা এখনকার চেয়ে দুই শতাংশ বেশি।

গবেষণাটি বলেছে, বিশ্বজুড়ে এখনই লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে জরুরি উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে যাঁরা স্থূলতা বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাঁদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগের ঝুঁকি বেশি। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও এশিয়ায় এ বিষয়ে বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।


'সারা পৃথিবীতে ৩০ কোটির বেশি মানুষ হেপাটাইটিস বি ও সি‘তে আক্রান্ত’ 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাহফুজ নান্টু, কুমিল্লা প্রতিনিধি

'সারা পৃথিবীতে ৩০ কোটির বেশি মানুষ 'হেপাটাইটিস বি ও সি‘তে আক্রান্ত। পৃথিবীতে ১৩ লাখ মানুষ প্রতিবছর 'হেপাটাইটিস বি'তে মারা যাচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট হুমকি। আগে বাংলাদেশের প্রতি ১২ জনে একজন আক্রান্ত ছিলেন। বর্তমানে তা কিছুটা কমেছে। তবে ৯০ শতাংশ 'হেপাটাইটিস বি' রোগী ব্যক্তি জানেন না তিনি আক্রান্ত। চিকিৎসা হাতের নাগালে। অনেকে সঠিকভাবে স্ক্রিনিং করছেন না। আবার সচেতনতার অভাবে কেউ চিকিৎসা নিচ্ছেন না। সমাজে কুসংস্কার থাকায় মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। এই কুসংস্কার ভেঙে দিতে হবে।'

সোমবার (২৮ জুলাই) কুমিল্লায় বিশ্ব হেপাটাইটিস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কুমিল্লা লিভার ক্লাব ও রোটারি ক্লাব অব লালমাইয়ের আয়োজনে কুমিল্লা লিভার ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বিনামূল্যে হেপাটাইটিস বি পরীক্ষা ও স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। এর আগে একটি র‌্যালি নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কুমিল্লা লিভার ক্লাবের সহ-সভাপতি লুৎফুর বারী চৌধুরী হিরুর সঞ্চালনায় ও সভাপতি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইজাজুল হকের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নারী নেত্রী রোটারিয়ান দিলনাঁশি মহসিন, রোটারিয়ান ডা. তৃপ্তিশ চন্দ্র ঘোষ, রোটারি ক্লাব অব লালমাইয়ের সভাপতি এনামুল হক জুয়েল, রোটারিয়ান জাকির হোসেন, সাংবাদিক খায়রুল আহসান মানিক, রোটারিয়ান শফিকুল ইসলাম শামিম প্রমুখ।


ডেঙ্গুতে আরও ১৬৪ জন হাসপাতালে ভর্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৪ জন রোগী।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ৬০ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬৪ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪০ জন। ঢাকা বাদে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১২৪ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ হাজার ৭৮৯ জন। এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৪ শতাংশ নারী এবং ৫৮ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ।


চলতি বছরে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার বেড়েই চলছে। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এ বছর সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এই সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে চট্টগ্রামে মৃত্যু হয়েছে একজনের। আর সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩১৯ জন রোগী।

বুধবার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯০ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২২৯ জন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮ হাজার ৩৪৫ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।


২৪ ঘণ্টায় ২ জনের করোনা শনাক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও দুই জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কারো মৃত্যু হয়নি।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। বুধবার (২৩ জুলাই) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২৮ জন। পাশাপাশি মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭১০ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ পর্যন্ত, দেশে ২০ লাখ ৫২ হাজার ২৫৫ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সারা দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৫২৭ জনে ঠেকেছে।


ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনগণ অংশগ্রহণ করলেই আমরা সফলঃ ডিএসসিসি প্রশাসক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) কর্তৃক আজ শনিবার (১৯ জুলাই) বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ডিএসসিসি অঞ্চল-৬ এর ৭৪ নং ও ৭৫ নং ওয়ার্ডে (নন্দীপাড়া-নাসিরাবাদ এলাকা) পরিচালিত এ অভিযানে কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া এঁর উপস্থিতিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ০৬:০০ ঘটিকায় শুরু হওয়া এ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থানা বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ছয় শতাধিক কর্মী এবং স্থানীয় জনগণ এই বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অংশ হিসেবে ড্রেন, নর্দমা ও ফুটপাতের ময়লা পরিষ্কার ও মশার ঔষধ প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিডি ক্লিন সদস্যদের অংশগ্রহণে জনসচেতনতামূলক একটি র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

পরিচ্ছন্নতা প্রোগ্রাম চলাকালীন সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জনাব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, "আমরা যদি নিজ আঙিনা পরিষ্কার রাখি, যত্রতত্র ময়লা না ফেলি তাহলে সিটি কর্পোরেশনের কাজ সহজ হয়ে যায়।" জনগণের অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিচ্ছন্ন নগর ও দেশ গড়া সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, " আমরা সম্মানিত নাগরিকদের দুয়ারে দুয়ারে এসেছি স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন ও সম্পৃক্ত করতে ।" তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনগণ অংশগ্রহণ করলেই ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সফল হবে। এছাড়া নবগঠিত ওয়ার্ড সমূহের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ গৃহীত হবে বলে প্রশাসক জানান।

পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মো: জহিরুল ইসলাম, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয় প্রধান এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


ডেঙ্গু: ২৪ ঘণ্টায় ২ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩৩০

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা দিনে দিনে বাড়ছে। রবিবার (১৩ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকায় একজন ও চট্টগ্রামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৩০ জন রোগী।

সোমবার (১৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে বিভাগটিতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৮৬ জন। বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩০ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭১ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ২৫৯ জন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৫ হাজার ২১০ জন। এর মধ্যে ৫৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৪১ দশমিক ২ শতাংশ নারী।


দেশে আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কারো মৃত্যু হয়নি।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এসব শনাক্তের খবর পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯০ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। পাশাপাশি মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৬৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

এ পর্যন্ত দেশে ২০ লাখ ৫২ হাজার ২২০ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর সারা দেশে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ৫২৪ জনে ঠেকেছে।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত

আপডেটেড ১১ জুলাই, ২০২৫ ১৭:২৫
ইউএনবি

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩৮ জন রোগী।

শুক্রবার (১১ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বরাবরের মতো বরিশাল বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ সময়ে বিভাগটিতে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ৬০ জন।

বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩৮ জন।

নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২৫ জন। ঢাকা বাদে সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ১১৩ জন।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৬ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৪ হাজার ৬৯ জন। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী এবং ৫৯ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ।


ডেঙ্গুতে আরও দুজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩৭

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গেল ২৪ ঘণ্টায় আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে এই রোগে এখন পর্যন্ত ৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, এই সময়ে ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩৭ জন।

এর আগে ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয় গত ৭ জুন। সেদিন ৪৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ডেঙ্গু নিয়ে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলছে, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুজনের মধ্যে একজন ঢাকায়; আরেকজন চট্টগ্রাম বিভাগের।

মশাবাহিত এ রোগে চলতি মাসে মৃত্যু হলো ১২ জনের। ১৯ জনের প্রাণ গেছে আগের মাসে। এছাড়া জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন ও মে মাসে ৩ জন ডেঙ্গুতে মারা যান। ফেব্রুয়ারি মাসে কারো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।


সাপে কাটলে কি করবেন? কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলা অতীব জরুরি?

আপডেটেড ১০ জুলাই, ২০২৫ ১৩:৩৯
ইউএনবি

বৃষ্টি মৌসুমগুলোতে ভারী বর্ষণের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে দেখা দেয় বন্যা। আর বন্যা মানেই নানা ধরণের কীট-পতঙ্গের পাশাপাশি শুরু হয় সাপের উপদ্রব। এমনকি এই চিত্র কেবল গ্রামেরই নয়, শহরাঞ্চলগুলোরও একই অবস্থা। এছাড়া যারা বর্ষার সময় বনে বা পাহাড়ে ঘুরতে যান তাদেরও প্রায় সময় সাপের কবলে পড়তে হয়। তাছাড়া বিগত বছরগুলোতে দেশ জুড়ে সাপে কাটার ঘটনা আশঙ্কাজনক মাত্রায় রয়েছে। সব থেকে উদ্বেগের ব্যাপার হলো- সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে অনেকেই পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যর্থ হন। তাই চলুন, সাপে কামড়ালে কি করণীয় এবং কোন বিষয়গুলো এড়িয়ে চলতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক।

সাপে কাটলে কি করা উচিত

সাপে কাটা ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করা উচিত। হাসপাতালে যাওয়ার পথে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাণরক্ষার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে নিম্নোক্ত পদক্ষেপগুলো নেওয়া উচিত:

- সাপে কামড়ানো ব্যক্তি প্রায় ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। অনেক ক্ষেত্রে এই মানসিক অবস্থা প্রাণঘাতী হতে পারে। তাই আক্রান্ত ব্যক্তির ভয় দূর করে তাকে আশ্বস্ত করতে হবে এবং সাহস দিতে হবে। বিশেষত নির্বিষ সাপের দংশনে মৃত্যু হয় না। আর বাংলাদেশের অধিকাংশ সাপেরই বিষ নেই। বিষধর সাপের সংখ্যা খুবই কম। তাছাড়া এগুলো অধিকাংশ সময় শিকারের শরীরে পর্যাপ্ত বিষ ঢুকিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়।

- ব্যক্তির আক্রান্ত অঙ্গকে অবশ্যই স্থির করে রাখতে হবে। খুব বেশি নড়াচড়া করা যাবে না। হাঁটাচলা বা অধিক ঝাঁকুনির সম্মুখীন না করে স্থির ভাবে আধশোয়া অবস্থায় রাখা উত্তম।

- ক্ষতস্থানে একটু চাপ প্রয়োগ করে ব্যান্ডেজ বেধে দিতে হবে। এই প্রাথমিক চিকিৎসাটি প্রেসার ইমোবিলাইজেশন নামে পরিচিত। ব্যান্ডেজের বদলে গামছা, ওড়না বা এ জাতীয় কাপড় ব্যবহার করা যেতে পারে।

- রোগী শ্বাস না নিলে অবিলম্বে তার মুখে শ্বাস দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

- আক্রান্ত স্থান জীবাণুমুক্ত করার জন্য সাবান দিয়ে ধুয়ে ভেজা কাপড় দিয়ে হাল্কা ভাবে মুছে নিতে হবে।
পড়নে অলঙ্কার বা ঘড়ি কিংবা তাগা, তাবিজ থাকলে তা খুলে ফেলতে হবে। নতুনবা এগুলো রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, যা চিকিৎসা প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষতিকর।

সাপে কামড়ালে যে ভুলগুলো করা উচিত নয়

- সাপে কাটা ব্যক্তিকে ওঝার কাছে নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করা ঠিক নয়।

- আক্রান্ত অঙ্গে কোনও ধরণের ভেষজ ওষুধ, উদ্ভিদের বীজ, লালা, গোবর, কাদা, বা পাথর লাগানো যাবে না।

- অনেকেই মনে করে থাকেন যে, আক্রান্ত স্থানে মুখ দিয়ে টেনে বিষ বের করলে রোগী ভালো হয়ে যায়। কিন্তু সাপের বিষ আসলে লসিকা ও রক্তের মাধ্যমে ছড়ায়, যা এই পদ্ধতিতে বের করা অসম্ভব। এছাড়া আক্রান্ত স্থানে যিনি মুখ দিচ্ছেন, তার জন্যও বিষয়টি ক্ষতিকর।

- কামড়ানোর স্থানে অনেকে শক্ত বাঁধন বা গিট দিয়ে বাঁধেন। কিন্তু এমনটি একদমি উচিত নয়। বিষক্রিয়া ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে কামড়ানোর স্থান থেকে কিছুটা ওপরের দিকে শক্ত করে বাঁধা হয়। মূলত এর কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এতে বরং উল্টো রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে সঠিক রক্ত প্রবাহের অভাবে টিস্যুতে পচন বা নেক্রোসিস-এর উপক্রম হতে পারে।

- দংশনের স্থানে ছুরি বা ব্লেড দিয়ে আঁচড় দেওয়া যাবে না। বিষ বের করার জন্য অনেকে এমনটি করেন। কিন্তু এর জন্য অবশ্যই বিশেষজ্ঞের সরণাপন্ন হওয়া উচিত।

- ব্যথা দূর করতে মোটেই অ্যাস্পিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না।

- কোনও ধরণের রাসায়নিক পদার্থ লাগানো বা তা দিয়ে আক্রান্ত স্থানে সেঁক দেওয়া ঠিক নয়।

- অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির খাবার বা ঢোক গিলতে কিংবা কথা বলতে সমস্যা হয়। পাশাপাশি নাসিক কণ্ঠস্বর, বমি, বা অতিরিক্ত লালা নিঃসরণের মত ঘটনা ঘটে। এগুলোর প্রতিকার হিসেবে তাকে কিছু খাইয়ে বমি করানোর চেষ্টা করা হয়। এই কাজটি একদমি অনুচিত।

শেষাংশ

সাপে কাটা ব্যক্তিকে বাঁচাতে তাৎক্ষণিকভাবে এই করণীয়গুলো যথেষ্ট কার্যকর। সাপের বিষ বের করার বা দংশনের ব্যথা উপশমে বিভিন্ন ভুল ধারণাগুলো সমাজে প্রচলিত রয়েছে। এগুলো পরিহার করে ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আবশ্যক। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া না করা এবং অতিরিক্ত চাপ প্রশমনের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সাথে দংশিত স্থান জীবাণুমুক্ত করা একটি উৎকৃষ্ট উপায়। সর্বপরি, চিকিৎসা সংক্রান্ত এই প্রাথমিক জ্ঞান যে কোনও জরুরি পরিস্থিতি সামলে নেওয়ার আত্মবিঃশ্বাস যোগায়।


বিএমইউতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট দেবে ফিজিওথেরাপি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি স্নায়ুজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীদের পুনর্বাসনে নতুন যুগের সূচনা করছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সুপারস্পেশালাইজড হাসপাতালে স্থাপিত দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে সীমিত পরিসরে পাইলট প্রকল্প শুরু হতে যাচ্ছে।

চীনের কারিগরি সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত এই সেন্টারটি উন্নত বিশ্বের মানদণ্ডে গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে মিলবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও সুনির্দিষ্ট পুনর্বাসন সেবা। গতকাল বুধবার প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চীনের সরকার এই প্রকল্পে প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি অনুদান দিয়েছে। প্রযুক্তির দিক থেকে এই সেন্টারটি হবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম আধুনিক রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা খাতে একটি যুগান্তকারী মাইলফলক হয়ে ওঠবে।

এই সেন্টারে রয়েছে মোট ৬২টি রোবট, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক। এসব রোবটের মাধ্যমে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ফিজিওথেরাপি, স্নায়ুবিক পুনর্বাসন এবং দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাসেবা প্রদান করা সম্ভব।

বিএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেন্টারটি চালুর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে চীনের ৭ সদস্যের বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্বে ইতোমধ্যে ২৭ জন চিকিৎসক ও ফিজিওথেরাপিস্টকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবল অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অর্জন করলে এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হলে সেন্টারটি পুরোদমে চালু করা হবে।

এই রোবটিক সেন্টার যেসব রোগীরা স্ট্রোক, পক্ষাঘাত, স্নায়ুবিক বৈকল্য, দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা, নার্ভ ইনজুরি, ফ্রোজেন শোল্ডার, দুর্ঘটনাজনিত জটিলতা বা শরীরের অঙ্গের দুর্বলতাসহ জটিল পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন তাদের উপকারে আসবে।

বিশেষ করে জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন এবং এখনো দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই সেন্টারে বিনা মূল্যে রোবটিক চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

সেন্টারটি শুধু বিশেষ উদ্দেশ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। পরিকল্পিত নীতিমালার আলোকে সাধারণ রোগীদের জন্যও ধাপে ধাপে সেবা উন্মুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে চেষ্টা থাকবে চিকিৎসার ব্যয় রোগীদের আর্থিক সক্ষমতার মধ্যে রাখার।

এই সেন্টার চালু হলে বাংলাদেশ আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পুনর্বাসন চিকিৎসায় এক নতুন যুগে প্রবেশ করবে। দেশীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য এটি শুধু একটি প্রযুক্তিগত অগ্রগতি নয়, বরং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ও দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতায় ভোগা মানুষের জীবনে আশার আলো হয়ে ওঠবে।


banner close