শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভালোবাসুন নিজের চোখকে

চলছে চোখের পরীক্ষা - নিরীক্ষা
প্রকাশিত
প্রকাশিত : ১২ অক্টোবর, ২০২২ ১৬:০৭

‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে, রয়েছ নয়নে নয়নে।’ মায়াবী কাজল কালো চোখ নিয়ে মানুষের রোমান্টিকতার শেষ নেই। পাশাপাশি অঙ্গ হিসেবেও চোখের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ, বহির্জগতের সঙ্গে মানুষের সংযোগ রক্ষায় চোখ অন্যতম ভূমিকা পালন করে থাকে। একজন দৃষ্টিহীন মানুষই কেবল বুঝতে পারে চোখের কত মূল্য! তাই দৃষ্টিশক্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য চোখের যত্ন নেয়ার বিকল্প নেই। সারা বিশ্বে অন্ধত্ব প্রতিরোধ ও নিবারণে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয়পর্যায়ে পলিসি বিনির্মাণে আরও উদ্যোগ তৈরির লক্ষ্যে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব দৃষ্টি দিবস’ পালন করা হয়। এ বছরও আগামীকাল ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালন করা হবে। সেই দিবস এবং চোখের গুরুত্ব নিয়েই আজকের ‘স্বাস্থ্যকথার’ সব আয়োজন। লিখেছেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. আতিকুল হক

দৃষ্টিহীনতা বা অন্ধত্ব চোখের নানান রোগের কারণে হতে পারে। এর মধ্যে বেশির ভাগ রোগই প্রতিরোধযোগ্য। সচেতনতা বৃদ্ধি এবং চক্ষু রোগের সেবাকে সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করার মাধ্যমে বেশির ভাগ অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব। সমস্যা হচ্ছে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে প্রান্তিকপর্যায়ে চক্ষুসেবার অপ্রতুলতা প্রকটভাবে বিদ্যমান। এই সমস্যা নিরসনে প্রান্তিকপর্যায়ে চক্ষুসেবাকে বিস্তৃত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের ‘ন্যাশনাল আই কেয়ার প্রজেক্ট’-এর অধীনে প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ‘ভিশন সেন্টার’ স্থাপন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নানান বেসরকারি সংস্থাও কাজ করে চলেছে। প্রতিরোধযোগ্য চোখের অসুখের কারণে একটি মানুষও যেন অন্ধ না হন- এ লক্ষ্যেই এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সব উদ্যোগের পাশাপাশি নিজেদেরও চোখের অসুখগুলো সম্পর্কে ধারণা এবং কোথায় এ সব অসুখের সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যাবে তা জানতে হবে। চোখের সাধারণ কিছু রোগ সম্পর্কে দৃষ্টিপাত ও তার মাধ্যমে এই কাজকে আরেকটু এগিয়ে নেয়াই আজকের আলোচনার উদ্দেশ্য।

নবজাতক ও শিশুদের চোখের রোগ

নবজাতক শিশুদের চোখের রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, চোখ ওঠা বা কনজাংক্টিভাইটিস, রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি (আরওপি), জন্মগত ছানি, জন্মগত গ্লুকোমা, রিফ্র্যাক্টিভ এরর বা চোখের পাওয়ারের সমস্যা, অলস চোখ, ট্যারা চোখ, চোখে আঘাত পাওয়া ইত্যাদি। এর প্রায় সবই যথাসময়ে ডায়াগনোসিস হলে চিকিৎসায় ভালো করা সম্ভব। যেসব বাচ্চা প্রিম্যাচুর তাদের অবশ্যই জন্মের এক মাসের মধ্যে চক্ষুবিশেষজ্ঞ দিয়ে চোখ পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত। কারণ, আরওপি একটি নিরাময়যোগ্য রোগ। কিন্তু সঠিক সময়ে ডায়াগনোসিস না হলে অন্ধত্ব নিশ্চিত। এ ছাড়া প্রতিটি শিশুকে স্কুলে ভর্তি করার সময়ই একবার অন্তত চোখের দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিত। ট্যারা চোখ নিয়েও আমাদের সমাজে রয়েছে নানান কুসংস্কার। যার ফলে অনেকেই এর চিকিৎসা করান না। কিন্তু সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ করলে এটা নিরাময়যোগ্য। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বাচ্চাদের খেলাধুলার সময়ে চোখে আঘাত পাওয়া। মাঝে মাঝে এসব আঘাত এমন মারাত্মক হয় যে, চোখ অন্ধ হয়ে যায়। তাই সুচালো, ধারালো বা এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ খেলনা বাচ্চাদের দেয়া উচিত নয়। বাচ্চাদের চোখের যেকোনো সমস্যায় নিবন্ধিত চক্ষুবিশেষজ্ঞ ছাড়া চিকিৎসা নেয়াও উচিত নয়।

অনেকের ধারণা যে ছানি এবং গ্লুকোমা এসব বয়স্কদের রোগ। কিন্তু বাচ্চাদেরও এসব রোগ হতে পারে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা না করালে স্থায়ীভাবে বাচ্চা অন্ধ হয়ে যেতে পারে, যা পরে চিকিৎসায় তেমন একটা লাভ হয় না। দেশের সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে এসব চিকিৎসা ও অপারেশন প্রায় বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল অন্যতম, যেখানে বাচ্চাদের সব রোগের চিকিৎসা প্রায় বিনামূল্যে পাওয়া যায়।

এ ছাড়া বর্তমানে আরও একটি সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সেটি হচ্ছে শিশুদের মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল ফোন বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার। গবেষণায় দেখা গেছে, যে সব শিশু মাত্রাতিরিক্ত ডিভাইস ব্যবহারে আসক্ত তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়া ছাড়াও চোখের পাওয়ারজনিত সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এ বিষয়ে অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে যেন একদম ছোটবেলা থেকেই এই অভ্যাস তৈরি না হয়।

প্রাপ্তবয়স্কদের নিরাময়যোগ্য চক্ষুরোগ

১. চোখের ছানি বা ক্যাটারেক্ট- এটি বয়স্কদের অন্যতম একটি রোগ যার কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি মারাত্মকভাবে কমে যায়। বয়সজনিত এবং আরও কিছু কারণে আমাদের চোখের স্বচ্ছ লেন্সটি ঘোলা হয়ে যায়। এটাই ক্যাটারেক্ট বা ছানি রোগ। এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে যথাসময়ে ছানি অপারেশন করানো। বর্তমানে বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তির মেশিনে চোখের ছানি অপারেশন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও বিনামূল্যে ছানি শনাক্ত ও অপারেশন করে থাকে। তবে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান ছাড়া ছানি অপারেশন করানো উচিত না। অপারেশন এবং হাসপাতালের সার্বিক মান ভালো না হলে বরং আরও ক্ষতি হতে পারে।

২. রিফ্যাক্টিভ এরর বা চোখের পাওয়ারের সমস্যা- এই সমস্যার কারণেও দৃষ্টিশক্তি কমে যেতে পারে, যা অতি সহজেই চশমা ব্যবহারের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। প্রায় প্রতিটি মানুষের বয়স ৪০ পার হলেই কাছের দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে কমে যেতে থাকে। এটি একটি বয়সজনিত সাধারণ সমস্যা। এটাও চশমার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।

৩. ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি- যাদের দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস এবং হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদের চোখের রেটিনা ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে। এগুলো পুরোপুরিই প্রতিরোধযোগ্য অসুখ। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না করালে পুরোপুরি অন্ধত্বও হতে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস ও উচ্চরক্তচাপ রয়েছে তাদের বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো বাধ্যতামূলক। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথির অগ্রগতি থামানো সম্ভব। এ ছাড়া কিছুটা মারাত্মক অবস্থায় চলে গেলেও লেজার, ইনজেকশন ইত্যাদির মাধ্যমে আরও মারাত্মক ক্ষতি থেকে চোখকে রক্ষা করা সম্ভব। ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে। এই রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হলেও এ হাসপাতালে তা প্রায় বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে।

৪. গ্লুকোমা- এটি চোখের ভেতরের প্রেশার বৃদ্ধিজনিত একটি রোগ। একে বলা হয়ে থাকে নীরব ঘাতক। কারণ একদম মারাত্মক অবস্থায় না গেলে রোগী বুঝতেও পারেন না যে তার এই রোগটি রয়েছে। এটি চোখের স্থায়ী অন্ধত্বের একটি কারণ, যা প্রতিরোধযোগ্য। বিশেষ করে যাদের পরিবারে এই রোগের হিস্ট্রি রয়েছে, নিকটাত্মীয় যেমন, বাবা-মা ও ভাই-বোনের কারো এই রোগ থাকলে তাদের উচিত গ্লুকোমা স্ক্রিনিং নিয়মিত করানো। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় ডায়ালোসিস ও নিয়মিত চিকিৎসা গ্রহণের মাধ্যমে অন্ধত্ব প্রতিরোধ করা সম্ভব।

৫. কর্নিয়ার অসুখ- আলসার বা ক্ষত তৈরি হওয়া কর্নিয়ার একটি মারাত্মক অসুখ। আঘাতের কারণে, বিশেষ করে যারা কৃষিকাজ করেন, তাদের কর্নিয়ায় ছত্রাক দ্বারা আলসার তৈরি হতে পারে যা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া যারা ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন, তারা প্রায়ই ওয়েল্ডিংয়ের লোহার টুকরার আঘাত পান কর্নিয়ায়, যাতে কর্নিয়ায় স্থায়ী দাগ পড়াসহ আলসার বা ক্ষত তৈরির ঝুঁকি রয়ে যায়। তাই সংশ্লিষ্টদের মাঝে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি এবং প্রটেকটিভ চশমা ব্যবহার করে কাজ করার উৎসাহ প্রদান করতে হবে। কর্নিয়ার অসুখের কারণে অনেক মানুষ অন্ধত্বের শিকার হন, যা কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নিরাময় সম্ভব। কিন্তু ধর্মীয়সহ নানা কারণে আমাদের দেশের মানুষ মরণোত্তর চক্ষুদানে তেমন উৎসাহ পান না। এ ব্যাপারে ধর্মীয় নেতাসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের ব্যাপক কাজ করার ক্ষেত্র রয়ে গেছে।

৬. বিবিধ- এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের কারণে চোখের রেটিনার রক্তনালি ব্লক, চোখের নার্ভের রক্তনালি ব্লকসহ নানান অসুখ হতে পারে। ধূমপান, মদপানের কারণেও এসব রোগ হতে পারে। তাই এ বিষয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।

চোখ অমূল্য সম্পদ। চোখের যত্ন এবং চোখের নানা প্রতিরোধযোগ্য অসুখের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনেক আগে থেকেই কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এখন সময় এসেছে আমাদের জনগণের নিজেদের সচেতন হওয়ার। আপনার দৃষ্টি, আপনার সম্পদ। তাই আপনার চোখের যত্ন নিন, নিজের চোখ দুটোকে ভালোবাসুন।

লেখক : চক্ষুবিশেষজ্ঞ ও সার্জন,

লং টার্ম ফেলো ইন ভিট্রিও-রেটিনা,

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।


দেশে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত ১, নমুনা পরীক্ষা ৯

আপডেটেড ১৫ মে, ২০২৫ ১৭:৪৪
ইউএনবি

বুধবার (১৪ মে) সকাল ৮টা থেকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও একজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এখন পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৬৫৪ জনে। আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৯৯ জনের।

এতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ সময়ে শনাক্তের হার ছিল ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। মোট করোনা পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এ নিয়ে করোনায় সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ১৯ হাজার ৩৪৯ জনে।


চলামান তীব্র তাপপ্রবাহ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে জনসাধারণকে সতর্ক ও সুরক্ষিত রাখতে নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে বাইরে যেতে হলে মাথায় ছাতা বা কাপড় দিয়ে রোদ থেকে নিজেকে রক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার (১১ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহের পরিচালক ডা. আবু হোসেন মঈনুল আহসানের সই করা এক নির্দেশনায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

নির্দেশনায় তীব্র তাপপ্রবাহে প্রচুর পরিমাণে বিশুদ্ধ পানি পান, হালকা ও ঢিলেঢালা জামা-কাপড় পরা, যদি সম্ভব হয় একাধিক বার গোসল করা এবং বাসি ও খোলা খাবার এড়িয়ে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়াও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি বিশেষ করে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বিশেষভাবে সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

যেকোনো পরামর্শের জন্য ১৬২৬৩ নম্বর ‘স্বাস্থ্য বাতায়নে’ পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, প্রস্রাবের রঙের দিকে লক্ষ্য রাখাসহ, গাড় হলুদ রঙের প্রস্রাব হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে বলা হয়েছে। এছাড়া গরমে অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।


বাংলাদেশি রোগীদের জন্য চিকিৎসার ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করলো চীন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

চীনে চিকিৎসা গ্রহণে ইচ্ছুক বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ সুবিধামূলক ‘গ্রিন চ্যানেল’ ভিসা ব্যবস্থা চালু করেছে ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাস।

এই ব্যবস্থার অধীনে চিকিৎসা ভিসার জন্য আবেদনকারীদের নথিপত্রের প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং দ্রুত ভিসা প্রদানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ রোববার বাংলাদেশে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের ওয়েবসাইটের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের সময় দুই দেশের নেতাদের মধ্যে স্বাস্থ্য সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং কর্মী বিনিময় সহজ করার বিষয়ে যে ঐকমত্য হয়েছিল, তারই অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

নতুন এই ব্যবস্থার আওতায় বৈধ লাইসেন্সধারী স্থানীয় বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সিগুলো এখন চীনে চিকিৎসার জন্য ভ্রমণকারীদের ব্যাংক ডিপোজিট সার্টিফিকেট এবং রক্তের সম্পর্ক প্রমাণ স্বরূপ গ্যারান্টি পত্র ইস্যু করতে পারবে।

এর ফলে আবেদনকারীদের বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত সার্টিফিকেট দাখিল করার বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

অনলাইনে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। ভিসা সেন্টারে চিকিৎসা ভিসার জন্য একটি বিশেষ কাউন্টার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে আবেদনকারীরা কোনো প্রকার অপেক্ষা ছাড়াই তাদের কাগজপত্র জমা দিতে পারবেন। জরুরি চিকিৎসার ক্ষেত্রে একই দিনে ভিসা ইস্যু করার জন্য একটি বিশেষ ‘গ্রিন চ্যানেল’-এর ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, যে সকল রোগীর চিকিৎসা ভিসার জন্য পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েন্টমেন্ট রয়েছে, তাদেরকে সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা না করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাক্ষাৎকারের সুযোগ দেওয়া হবে। তবে কোনও রোগী যদি শারীরিকভাবে উপস্থিত হতে অসমর্থ হয়, সেক্ষেত্রে ট্রাভেল এজেন্সির গ্যারান্টি পত্রের মাধ্যমে দূরবর্তী (অনলাইন) সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

এছাড়া চিকিৎসা ভিসা সংক্রান্ত অনুসন্ধানের জন্য দূতাবাস (০২২২২২৬০১০৩, ০১৭০৮৪৬৪৮০৯) এবং ভিসা আবেদন পরিষেবা কেন্দ্রের তৃতীয় তলা, প্রসাদ ট্রেড সেন্টার, ৬ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, বনানী, ঢাকা (০২২২৬৬০৩২৬১) ডেডিকেটেড হটলাইন এবং একটি হোয়াটসঅ্যাপ পরিষেবা গ্রুপ (০১৮৮৫০৪১৩৬৪) চালু করা হয়েছে।


দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৩৮ জন।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ভর্তি হয়েছে ৩৮ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৪ জন। আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরও ২৪ জন।

বিজ্ঞপ্তি থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৩ দশমিক ৩ শতাংশ নারী।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ২ হাজার ৩৮৭ জন। এর মধ্যে ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ নারী।


দাঁতের মজ্জা থেকে উদ্ভাবিত স্টেম সেলে মানবদেহের ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু প্রতিস্থাপনের সম্ভাবনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে (বিএমইউ) ‘ডেন্টাল পাল্প টিস্যু : রিজেনারেটিভ মেডিসিনের নতুন আশা’ শীর্ষক সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ইউনিভার্সিটির এ ব্লক অডিটোরিয়ামে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা’র সভাপতিত্বে ও ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদের (মামুন) সঞ্চালনায় সেমিনারে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান প্রমুখসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক, চিকিৎসক, রেসিডেন্টবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারে জানানো হয়, দাঁতের মধ্যকার মজ্জা থেকে উদ্ভাবিত স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে মানবদেহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গের চিকিৎসা করার সুযোগ রয়েছে। লিভার, কিডনির ক্ষতিগ্রস্ত টিস্যু প্রতিস্থাপনে এই চিকিৎসাপদ্ধতি কার্যকর। স্নায়ু রোগ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, কার্ডিও ভাসকুলারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসাতেও স্টেম সেল ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এই চিকিৎসা পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে পারলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

সেমিনারে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, ক্লিনিক্যাল অ্যাপ্লিকেশন এবং রিজেনারেটিভ মেডিসিনের ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এছাড়া এফসিপিএস ট্রেনি ডা. সিদ্দিকুল্লাহ, ‘ডেন্টাল পাল্প স্টেম সেলের জীববৈজ্ঞানিক সম্ভাবনা’ এবং রেসিডেন্ট ডা. কামরুল ইসলাম, ‘ডেন্টাল পাল্প টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের সহজ পদক্ষেপ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এসময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির কনজারভেটিভ ডেনটিসট্রি এন্ড এন্ডোডনটিকস বিভাগে স্টেম সেল প্রয়োগের মাধ্যমে দাঁতের আঘাতজনিত ও বিভিন্ন রোগের ফলে মরে যাওয়া দাঁতের মজ্জা পুনরুজ্জীবিত করার কাজ সফলভাবে চলছে। রেসিডেন্টগণসহ উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা এই চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। বিএমইউ’র অন্যান্য বিভাগে দাঁতের মজ্জা থেকে স্টেম সেল সংগ্রহ করে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রয়োগের উদ্দেশ্যে একটি স্টেম সেল ব্যাংক চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ওই স্টেম সেল ব্যাংকিং সেবাকে বিএমইউ’র এস্ট্যাবলিশমেন্ট সেন্ট্রাল রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তিনি আরো বলেন, স্টেম সেল থেরাপি যে একটি সফল চিকিৎসা পদ্ধতি তার প্রমাণ কিংস কলেজ অব লন্ডনের গবেষক দলের উদ্ভাবনী পদ্ধতি। যারা এক যুগ ধরে গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন প্রাপ্ত বয়স্কদের পড়ে যাওয়া দাঁতের ফাঁকা স্থানে নতুন করে দাঁত গজানো সম্ভব।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির বর্তমান প্রশাসন রোগীদের সুবিধার্থে সর্বাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি চালু করতে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। বিএমইউ’তে স্টেম সেল ব্যাংক প্রতিষ্ঠা বা স্টেম সেল ব্যাংকিং সেবাকে পুরো মাত্রায় চালুর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সহায়তা করা হবে।


ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩১ জন হাসপাতালে ভর্তি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও ৩১ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন রয়েছেন। এসময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩২ জন ডেঙ্গু রোগী।

চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ২ হাজার ৩৪৯ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৮ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ২ হাজার ১৭৬ জন। এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮ জন।

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং মারা গেছেন ৫৭৫ জন।


সেভ দ্য চিলড্রেনের ‘সংযোগ’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান

প্রথম মা-বাবা হতে যাওয়া দম্পতির স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বিনিময়
প্রথম মা-বাবা হতে যাওয়া দম্পতির স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের অভিজ্ঞতা বিনিময়
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

প্রথমবারের মতো মা-বাবা হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন, এমন দম্পতিদের জন্য প্রয়োজন প্রসবোত্তর যত্নের এবং প্রসবোত্তর পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা। প্রথমবারের মা-বাবাদের প্রসবপরবর্তী সেবার হার ও মান বৃদ্ধি করা এবং প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের হার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে ‘সংযোগ’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন।

গতকাল বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে সেভ দ্য চিলড্রেনের আয়োজনে প্রকল্প সমাপনী অনুষ্ঠানে সংযোগ প্রকল্পের লক্ষ্য, কার্যক্রম ও নানা সাফল্য তুলে ধরা হয়। নতুন মা-বাবা হয়েছেন বা হতে যাচ্ছেন, এমন দম্পতির স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে এই প্রকল্প তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে উল্লেখ করা হয়। সংযোগ প্রকল্পের এই সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসি এবং এএইচ প্রোগ্রামের লাইন ডাইরেক্টর ডা. এস এম আবদুল্লাহ আল মুরাদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আইইএম বিভাগের পরিচালক মো. তসলিম উদ্দিন খান, পরিচালক ও লাইন ডাইরেক্টর, প্ল্যানিং ইউনিট, সাবিনা পারভীন, পরিচালক, অর্থ, মোঃ এনামুল হক, পরিচালক, অ্যাডমিন, ডিজিএফপি, মীর সাজেদুর রহমান, পরিচালক, এমসিএইচ-সার্ভিসেস ডা. মো. সুলতান আহমেদ প্রমূখ। এই আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ, এনডিসি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারী ইউনিটের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।

আয়োজনের বিশেষ অতিথি সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সুমন সেনগুপ্ত বলেন, “সংযোগ মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থেই পরিবর্তন এনেছে। সহজ পদক্ষেপ যেমন প্রথমবারের মতো বাবা-মায়ের জন্য আমন্ত্রণপত্র এবং প্রসবের আগে কাউন্সেলিংয়ের এর বিরাট প্রভাব রয়েছে।” প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ, এনডিসি বলেন, “সংযোগ প্রকল্প থেকে উদ্ভাবনী ধারণা, যেমন পিডিসিসি এবং প্রথমবারের মতো মায়েদের জন্য আমন্ত্রণপত্র দেখে আমি খুবই আনন্দিত। প্রকল্পের গবেষণাটিকে অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি কাউন্সেলিংয়ের উন্নয়ন, কম বয়সে মাতৃত্বের ঝুঁকি মোকাবেলা এবং মাঠকর্মীদের অনুপ্রাণিত করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানের সভাপতি, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ক্লিনিক্যাল কন্ট্রাসেপশন সার্ভিসেস ডেলিভারী ইউনিটের লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “আমাদের দেশে অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ এখনও একটি গুরুতর সমস্যা, এবং সংযোগ প্রকল্প এটি মোকাবেলায় আমাদের শক্তিশালী অভিজ্ঞতা দিয়েছে।” পাশাপাশি এই উদ্যোগকে তিনি বাংলাদেশের প্রতিটি কোণে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যাক্ত করেন।

সংযোগ প্রকল্প পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নেতৃত্বে "জিরো হোম ডেলিভারী" ক্যাম্পেইন পরিচালনা করেছে যার মাধ্যমে প্রকল্পটি তার কর্ম এলাকায় প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব নিশ্চিতে কাজ করেছে এবং বাড়িতে প্রসব না করানোর তাগিদ দিয়েছে। সেভ দ্য চিলড্রেনের এই প্রকল্পের আরেকটি বড় সাফল্য হলো, পিএনসি প্রি-ডিসচার্জ কাউন্সেলিং চেকলিস্ট যা সরকারি স্বাস্থ্যসেবাকেন্দ্রে ব্যবহারের মাধ্যমে প্রসব পরবর্তী সেবার মান বৃদ্ধি করা। সেভ দ্য চিলড্রেন ও রিসোর্স ইন্টিগ্রেশন সেন্টারের (রিক) সহযোগিতায় প্রকল্পটির নেতৃত্বে ছিল পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। নোয়াখালী ও মাদারীপুর জেলার মোট ৮টি উপজেলায় ২০১৯ সাল থেকে কাজ করেছে সংযোগ প্রকল্প।


শিশুদের পেটের চর্বি কমাতে কী করবেন?

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

মেড ভুরি নিয়ে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ উদ্বিগ্ন থাকেন না এমননিটি খুঁজে পাওয়া যাবে না। পরিণত বয়সের সচেতন সবাই এটি নিয়ন্ত্রণে বেশ চেষ্টা করেন—নিয়ন্ত্রণ করেন খাদ্যাভাস, করেন নানারকম ব্যায়াম বা শরীরচর্চা।

তবে এটি যে শুধুমাত্র পরিণতদের জন্য জরুরি, তা কিন্তু নয়—শিশুদের জন্যও এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। শিশুদের পেটের চর্বি কমাতেও সচেতন হতে হবে অভিভাবকদের। শিশুদের খাদ্যাভাস কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, কীভাবে শরীরচর্চা করে চর্বি কমানো যায় আজ সে বিষয়ে গবেষকদের মতামত তুলে ধরব।

অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, শিশুদের পেটের অতিরিক্ত মেদ কমানোর সর্বোত্তম উপায় হলো একটি মিশ্র পদ্ধতি অনুসরণ করা। শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চ বা ব্যায়াম হলো এই মিশ্র পদ্ধতি।

শনিবার (১২ এপ্রিল) প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাসের সমন্বয় শিশুর স্থূলতা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী ৮ হাজার ১০০ জনের বেশি শিশুর ওপর পরিচালিত ৩৪টি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের তথ্য বিশ্লেষণে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

চার্লস স্টার্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, পেট এবং অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলোর চারপাশে জমা হওয়া চর্বি সাধারণ স্থূলতার চেয়ে বেশি বিপজ্জনক। কারণ এটি হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য দায়ী।

জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেনে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কোমরের আকার কমাতে শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস, শুধুমাত্র ব্যায়াম, সম্পূরক বা ওষুধের মতো স্বতন্ত্র কৌশলগুলোতে উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখা যায়নি।

গবেষণায় উঠে এসেছে, সবচেয়ে সফল কর্মসূচিগুলোর মধ্যে ৬ থেকে ৯ মাস পর্যন্ত কম চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং সপ্তাহে ১৫০ মিনিট পর্যন্ত শারীরিক ব্যায়াম বা কার্যক্রম পরিচালনা করা অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী শৈশবকালীন স্থূলতার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২২ সালে সারা বিশ্বে আনুমানিক ৯ কোটি ৪০ লাখ মেয়ে এবং ৬ কোটি ৫০ লাখ ছেলেকে প্রভাবিত করেছিল। তাই এই সংখ্যানুপাতিক ফলাফল জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে।

গবেষকরা জোর দিয়ে বলেছেন, উদ্ভুত এই সমস্যাগুলোর সমাধানে সরকার, স্কুল এবং স্বাস্থ্যসেবাদানকারী সংস্থাগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আর এমন উদ্যোগ নিলে এর ফলাফলগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে অপুষ্টি দূরীকরণ এবং অসংক্রামক রোগে মৃত্যু হ্রাস করার বৈশ্বিক লক্ষ্যগুলোকে পূরণে সহায়তা করবে।


আবারও ডেঙ্গু সংক্রমণের আশঙ্কা

১ দিনে ১ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ১০
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৬ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০২
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতি বছরই এডিস মশাবাহী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি সংক্রমিত সংখ্যাও বাড়ছে। গত বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও মার্চ থেকে তা কমে আসে, অন্তত আগের বছরের তুলনায়। তবে গত বছর আগস্ট থেকে আবারও বাড়তে থাকে সংক্রমণের সংখ্যা।

অন্যদিকে চলতি বছর আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হওয়ার খবর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে। যাদের মধ্যে ৭১ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ এবং ২৮ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ হাজার ৯০২ জন। এর মধ্যে ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।

এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও একজনের মৃত্যু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন আরও ৬ জন রোগী।

এদিকে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। গত বছর প্রথম ৯ মাসে ১৬৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শুধু গত সেপ্টেম্বরেই মারা গেছেন ৮০ জন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত বছরের শুরু থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ।

এ বছরও ডেঙ্গু সংক্রমণের সঙ্গে এডিস মশার বিস্তার বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃষ্টির মৌসুম শুরু না হতেই চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় এ আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। পুরোপুরি বৃষ্টি শুরু হলে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে আশঙ্কা তাদের। তাই এখুনি ডেঙ্গু মোকাবিলায় কার্যত পদক্ষেপই পারবে এ থেকে পরিত্রাণ মিলাতে।

ডেঙ্গু মূলত বর্ষাকালের রোগ। ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বাড়ে আগস্ট মাসে। কিন্তু ২০২১ সাল থেকে সেই চিত্রের কিছুটা পরিবর্তন হয়। এখন ডেঙ্গু রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর মাসে হচ্ছে। ২০২২ সালে দেশে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয় অক্টোবর মাসে। এবারও এ মাসে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কার কারণ আগের মাসগুলোর অস্বাভাবিক বৃষ্টি।


টানা ছুটিতে কীভাবে চলছে রাজধানীর হাসপাতালগুলো

আপডেটেড ১ এপ্রিল, ২০২৫ ২২:৪৩
unb

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টানা ৯ দিন ছুটিতে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত ও ব্যাংক বন্ধ থাকলেও হাসপাতাল বন্ধ রাখার সুযোগ নেই। ঈদের সময় হাসপাতালগুলোতে রোগীরা আদৌ কাঙ্ক্ষিত সেবা পান কিনা এবং কোন প্রক্রিয়ায় এ সেবা দেওয়া হয়—সেসব নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল জাগে।

ঈদের ছুটিতে সরেজমিনে রাজধানীর বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি হাসপাতালেই পর্যাপ্ত রোগী আছে। যদিও ছুটির এ সময়ে অধ্যাপক পর্যায়ের চিকিৎসকদের পদচারণা কম; তবে রোগীদের ভাষ্যমতে, মেডিকেল অফিসার ও জুনিয়র ডাক্তাররা তাদের খোঁজ খবর রাখছেন; আছেন নার্সরাও।

রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, ঈদের দিন প্রায় ৫০০’র মতো রোগী আছে হাসপাতালটিতে। এদের মধ্যে অনেকের শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দেওয়া হয়নি ছাড়পত্র। ঈদের সময় জ্যেষ্ঠ ডাক্তাররা আসবেন কিনা বা এই সময়ে কতটুকু চিকিৎসাবা পাবেন—এ নিয়ে চিন্তার ভাঁজ রোগীদের কপালে।

কিডনিতে পাথর নিয়ে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সোহরাওয়ার্দীতে ভর্তি আছেন হবিগঞ্জ জেলার আহাদ মিয়া (৬০)।

পেশায় দিনমজুর আহাদ বলেন, ‘ডাক্তার কিডনি ওয়াশ করছে। তবে এখনও কিছু পাথর আছে। ডাক্তারই বলছে ঈদ এখানে করতে। এখন পর্যন্ত চিকিৎসায় কোনো ঘাটতি হয় নাই। ঈদের এ কয়দিনের ছুটিতে ডাক্তার রেগুলার আসছে। দেখি সামনের দিনগুলাতে কী হয়!’

বরগুনা থেকে মূত্রথলিতে টিউমার নিয়ে ২০ দিন ধরে হাসপাতালে আছেন সফেদ হাওলাদার (৭২)। এবারের ঈদ তাকে হাসপাতালেই কাটাতে হয়েছে। চিকিৎসকরা আগামী ৫ এপ্রিল ঈদের ছুটির মধ্যেই তার অস্ত্রোপচার করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান সফেদের মেয়ে পারভীন আক্তার (৪০)।

তিনি বলেন, ‘ঈদের এ কয়দিনের ছুটিতেও ভালো সেবা পাচ্ছি। তবে বড় ডাক্তার না থাকায় ঈদের পর অপারেশন হবে। আগের থেকে আব্বার অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো।’

ঈদের সময় ডাক্তার-নার্স কম থাকা নিয়ে হাসপাতালটির সিনিয়র স্টাফ নার্স সাধনা হালদার বলেন, ‘অন্যান্য সময়ের থেকে ঈদের ছুটির এ সময়ে হাসপাতালে ডাক্তার-নার্স স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা কম থাকে। তবে এটা ভাবার কারণ নেই যে, হাসপাতাল নার্স-ডাক্তারশূন্য থাকবে। যেকোনো রোগীর জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য সার্বক্ষণিক একজন ডাক্তার মজুত থাকেন। ঈদের নামাজের সময় বা দুপুরের দিকে অন্য ধর্মাবলম্বী ডাক্তার-নার্সরা ডিউটি করেন। এতে করে সংকটময় কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় না।’

হাসপাতালটির আরেক সিনিয়র স্টাফ নার্স বিউটি গোমেজ বলেন, ‘ঈদের আগে অনেকেই নিজ থেকে রিলিজ চায়। তবে সিরিয়াস রোগীদের রিলিজ দেওয়ার সুযোগ নেই। ওষুধ দেওয়া, ড্রেসিং করানো, ইনজেকশন পুশের মতো কাজ রোগী বাসায় নিজে করতে পারবে না, আবার এর জন্য তার সিনিয়র ডাক্তারদেরও প্রয়োজন নেই। হাসপাতালে থাকলে প্রাথমিক সেবাগুলো নার্স ও মেডিকেল অফিসারই নিশ্চিত করতে পারেন।’

রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ঘুরেও দেখা যায় একই দৃশ্য। ঈদের ছুটিতে জরুরি বিভাগে ডাক্তারদের তোড়জোড় থাকলেও ভর্তি থাকা রোগীদের ওয়ার্ডে সিনিয়র ডাক্তারদের আনাগোনা অনেকটাই কম।

হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর স্ত্রী শিল্পী খাতুন (৪৫) বলেন, ‘ডাক্তারদের সেবায় কোনো গাফলতি নেই। কিন্তু শুনছি ঈদে বড় ডাক্তাররা আসবেন না। তাদের দেখলে মনে জোর পাই। তারা না আসলে একটু ভয় ভয় লাগে।’

গোপালগঞ্জ থেকে আসা আরেক রোগীর আত্মীয় মিশকাত (২৮) বলেন, ‘ছুটির মধ্যে সেবা পাচ্ছি, কিন্তু যা পাচ্ছি সেটি আসলে আশানূরূপ নয়। তবে শুনেছি যেকোনো প্রাইভেট হাসপাতালের চেয়ে ঈদের ছুটিতে সরকারি হাসপাতালে সেবা ভালো হয়।’

জরুরি বিভাগে প্রয়োজনীয়সংখ্যক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করাসহ জরুরি বিভাগ ও লেবার রুম, ইমার্জেন্সি ওটি (জরুরি অস্ত্রোপচারকক্ষ) ও ল্যাব সার্বক্ষণিক চালু রাখতে দেশের হাসপাতালগুলোকে ১৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল নিশ্চিত করতে ঈদের আগে ও পরে সমন্বয় করে ছুটি নির্ধারণ করা হবে।

ঈদের তিন দিন বন্ধ সরকারি হাসপাতালের আউটডোর সেবা। এ ব্যাপারে ছুটি শুরুর আগে কথা হয় বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুল হকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, ‘ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও পরদিন আউটডোর সেবা বন্ধ থাকবে। তবে এর মানেই এই না রোগী আসলে তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে। আউটডোরে রোগী আসলে তাদের জরুরি বিভাগের মাধ্যমে সেবা নিশ্চিত করা হয়। রোস্টার অনুযায়ী জরুরি বিভাগ চলে।’

‘চেষ্টা থাকে ঈদের দিনটা অন্য ধর্মাবলম্বী ডাক্তারদের দিয়ে জরুরি বিভাগ চালানোর। তবে ঈদের ছুটি হোক বা অন্যকিছু, রোগীদের সেবার ক্ষেত্রে মিস ম্যানেজমেন্ট (অব্যবস্থাপনা) এড়াতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে কর্তৃপক্ষের।’

তবে সরকারি হাসপাতালের চেয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে সেবার মান ভালো দাবি করা হলেও ঈদের দিন প্রাইভেট হাসপাতালে ল্যাব কার্যক্রম প্রায়ই বন্ধ পাওয়া যায়—এমন অভিযোগ এসেছে রোগীদের কাছ থেকে।

ভুক্তভোগী এমন একজন রোগী সাব্বির হোসেন (৩৭) বলেন, ‘এক বছর আগে ঈদের দিন অসুস্থ হয়ে পড়ি। সকালে ডাক্তারের পরমার্শ অনুযায়ী ইমার্জেন্সি টেস্টের জন্য কম করে হলেও পাঁচ-ছয়টা হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে হয়েছে। পরে আরেক ডাক্তার আত্মীয়ের মাধ্যমে তদবির করে টেস্ট করানো গেছে।’

প্রাইভেট হাসপাতালে ঈদের আগে রোগীদের একরকম জোরপূর্বক রিলিজ দিয়ে দেওয়া হয়, সিনিয়র ডাক্তাররা আসেন না, নার্সদের সেবা পাওয়া যায় না—এমন সব অভিযোগের ব্যাপারে রাজধানীর একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. খান রাওয়াত বলেন, ‘ঈদের আগে রোগীরা নিজেরাই বাসায় ফেরার জন্য উতলা হয়ে ওঠেন। অনেক সময় ডাক্তারের সাজেশন না মেনেই তারা বাসায় ফিরতে চান। তাদের মনের অবস্থাটাও আমরা বুঝি। কে না চায় নিজ পরিবারের সঙ্গে শান্তিমতো ঈদ করতে! তাই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকে ঈদের আগে খুব সিরিয়াস কিছু না হলে যেসব রোগী রিলিজ চাইছেন, তাদের বাড়ি যেতে দেওয়া।’

তিনি বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, ঈদের দিনে ডাক্তার-নার্স ছাড়া হাসপাতালগুলো বিরানভূমিতে পরিণত হয়। আসলে মোটেও এমন কিছু নয়। নামাজের পর, আবার দুপুরের পর সিনিয়র ডাক্তারা হাসপাতালে এসে ঘুরে যান; রোগীদের খোঁজখবর নেন। সিরিয়াস কিছু হলে মেডিকেল অফিসাররা যখন তখন তাদের (সিনিয়র ডাক্তার) সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। তাই এটা ভাবার কারণ নেই যে, ঈদ বা ছুটি বলে রোগীদের চিকিৎসাসেবার বিন্দুমাত্র গাফলতি হয়।’

এদিকে, ঈদের দিন হাসপাতালগুলোতে রোগীদের জন্য বিশেষ অ্যাপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।

রাজধানীর বেশ কয়েকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সকালে রোগীদের সেমাই খাওয়ানো হয়েছে; সঙ্গে ছিল পাউরুটি, কলা, দুধ, ডিম ও বিস্কুট। দুপুরে পোলাওয়ের সঙ্গে মুরগির রোস্ট, রেজালা, ডিম কোরমা ও কোক দেওয়া হয়। অনেক হাসপাতালে রোগীদের খাওয়া শেষে আপেল কিংবা কমলাও দেওয়া হয়। আর রাতে নিয়মানুযায়ী থাকে ভাত, ডাল ও সবজি।

তবে আপ্যায়ন যেমনই হোক, হাসপাতালে ঈদ কাটানো একেবারেই কাম্য নয় রোগীদের। আর বাধ্য হয়ে যদি হাসপাতালে থাকতেই হয়, তাহলে পূর্ণাঙ্গ সেবার প্রত্যাশা রোগী ও তাদের আত্মীয়দের।


ঈদে খোলা ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঈদুল ফিতরের ছুটিতে প্রতিবারের মতো এবারও রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব বিভাগ খোলা রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনা, হেড ইনজুরি, হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইল্যুর, রেসপাইরেটরি ফেইল্যুর (তীব্র শ্বাসকষ্ট), অপারেশন-পরবর্তী জটিলতা, সিজার-পরবর্তী অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত জটিলতা, জরুরি ডায়ালাইসিস, অপরিপক্ব শিশুর সর্বাধুনিক ব্যবস্থাপনাসহ সব জটিল ও মুমূর্ষু রোগীর তাৎক্ষণিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে হাসপাতালের সিসিইউ, সিআইসিইউ, আইসিইউসহ আন্তঃবিভাগ ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে।
সেইসঙ্গে হৃদরোগ, স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা এবং শিশুরোগ ও নবজাতকের বহি:বিভাগসহ সার্বক্ষণিক চালু থাকবে জরুরি বিভাগ। জরুরী প্রয়োজনে অথবা ডাক্তারের সিরিয়ালের জন্য ফোন করুন ১০৬৬৭ অথবা ০১৮৪১৪৮০০০০।


বিশ্বে চতুর্থ দূষিত শহর ঢাকা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৫ ১৬:৫৭
unb

বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। নগরীর এই বাতাসকে বাসিন্দাদের জন্য অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টার ২০ মিনিটে ১৫৮ একিউআই স্কোর নিয়ে শহরটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিকে আবারও বাড়িয়ে তুলেছে।

নেপালের কাঠমান্ডু, থাইল্যান্ডের চিয়াং মাই এবং মায়ানমারের ইয়াঙ্গুন যথাক্রমে ১৯৪, ১৮১ এবং ১৭১ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

যখন কণা দূষণের একিউআই মান ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে তখন বায়ুর গুণমানকে ’মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। একিউআই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ’সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে ’অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়, ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে হলে ’খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। এছাড়া ৩০১ এর বেশি হলে ’বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো-বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।


২৯ মার্চ ও ২ এপ্রিল খোলা থাকবে বিএমইউ বহির্বিভাগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পবিত্র ঈদ উল ফিতরের ছুটির দিনগুলোতে যাতে চিকিৎসা ব্যবস্থার কোনো ঘাটতি না হয়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শাহিনুল আলম। রোগীদের সুবিধার্থে শনিবার (২৯ মার্চ) ও বুধবার (২ এপ্রিল) খোলা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগ।

এ দুদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দিনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ইনডোর ও জরুরি বিভাগ প্রচলিত নিয়মে খোলা থাকবে।
হাসপাতালের জরুরি ল্যাব কার্যক্রম সেবাও চালু থাকবে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে ২৮, ৩০, ৩১ মার্চ এবং ১, ৩ ও ৪ এপ্রিল। এর মধ্যে পবিত্র শবে ক্দর উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ মার্চ) এবং সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে ৪ এপ্রিল শুক্রবার বহির্বিভাগ বন্ধ থাকবে। বন্ধের দিনগুলোতে ২৯ মার্চ শনিবার থেকে ৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস, অফিস, বৈকালিক স্পেশালাইজড কনসালটেশন সার্ভিস, সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনসালটেশন সার্ভিস বন্ধ থাকবে।
এদিকে রোগীদের জন্য উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।


banner close