ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ১৫ জন। এ নিয়ে এই বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৯৪৩ জন মারা গেলেন। আর চলতি সেপ্টেম্বর মাসে এ রোগে মারা গেলেন ৩৫০ জন।
এর আগে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল গত বছর। এ ছাড়া ডেঙ্গুতে ২০১৯ সালে মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের। ২০২০ সালে ৭ জন এবং ২০২১ সালে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেয়া তথ্য থেকে এসব জানা যায়।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৩ হাজার ১২৩ জন। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৭৪ জন ঢাকার এবং ঢাকার বাইরে ২ হাজার ৩৪৯ জন।
অধিদপ্তর আরও জানায়, সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১০ হাজার ১৫৬ জন রোগী ভর্তি আছে। এর মধ্যে ঢাকাতেই ৩ হাজার ৫৮১ জন, আর বাকি ৬ হাজার ৫৭৫ জন ঢাকার বাইরে অন্য বিভাগে।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে এবং ছাড়া পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৮২ জন রোগী।
গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। যা চলতি বছরে এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। পাশাপাশি এই সময়ে সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৯১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ নিয়ে চলতি বছর মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২১০ জনে। এদের মধ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসেই ৮০ জন মারা গেছেন। এদিকে, চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনেই ৪৭ জন মারা গেলেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি। তা ছাড়া, এ বছরে এখন পর্যন্ত ৪১ হাজার ৮১০ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ৩৩১ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯৭ জন, বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন, ঢাকা বিভাগে ১০০ জন, খুলনা বিভাগে ৯৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৯ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন ভর্তি হয়েছেন।’
এ ছাড়া, শনিবার সকাল পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৫২২ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ আক্রান্ত ও মৃত্যু ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে। ডেঙ্গুতে এই সিটি করপোরেশনে ৯০৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন সর্বোচ্চ ১১২ জন।
উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
দিন দিন বাড়ছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঝুঁকিতে রয়েছে মহানগরীর বেশিরভাগ এলাকা।
এদিকে চট্টগ্রামে সাত এলাকাকে রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়াও পাঁচ এলাকাকে হলুদ, সাত এলাকাকে নীল ও চার এলাকাকে সবুজ জোন চিহ্নিত করা হয়েছে।
ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে এক মাসের অর্থাৎ ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু আক্রান্তের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
গত এক মাসে কোতোয়ালি এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৬, বাকলিয়ায় ১০৩, বায়েজিদে ৭৬, বন্দরে ৩৩, পাহাড়তলীতে ৩২, খুলশিতে ২৩ ও চকবাজারে ২০ জন। এসব এলাকা রয়েছে রেড জোনের তালিকায়।
এ ছাড়াও পাঁচলাইশে ১৯, হালিশহরে ১৮, পতেঙ্গায় ১৫, চান্দগাঁওয়ে ১১ ও ডবলমুরিংয়ে ১০ জন আক্রান্ত হয়েছে। এসব এলাকা রয়েছে হলুদ জোনে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কীটতত্ত্ববিদরা বলেন, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ। আর এ সাত ওয়ার্ড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জন অধ্যুষিত। এসব এলাকায় মশানিধন কর্মসূচি জোরদার করা উচিত।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় জানায়, শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই ৫১৫ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই চিহ্নিত ৭নং ওয়ার্ডের।
এ বছর ডেঙ্গুতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ১১ জন। গত বছরের মতো এ রোগের প্রকট না হলেও অক্টোবরে আক্রান্তর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, কীটতত্ত্ববিদ ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মতে, এবার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে শরৎকালে। তাই বর্ষা মৌসুমে এবার ডেঙ্গুর হানা ছিল না। কিন্তু সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়েছে, এ জন্য মশাবাহিত এ রোগের বিস্তার ঘটেছে।
তবে ডেঙ্গু এখন মৌসুমি রোগ নয় এর প্রকোপ সারা বছর। অক্টোবরে ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বাসিন্দারা।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রমতে, ৭টি ওয়ার্ডকেই অতি ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করেছে সিটি করপোরেশন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে পাঁচলাইশ, হালিশহর, পতেঙ্গা, চান্দগাঁও, ডবলমুরিং এলাকাও। যেসব এলাকা কম ঝুঁকিপূর্ণ, সেসব এলাকায়ও মশার তীব্র উৎপাত রয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, যেসব এলাকায় বেশি ডেঙ্গু রোগী পাচ্ছি, সেগুলোকে রেড জোন চিহ্নিত করছি। সেই তালিকা সিটি করপোরেশনে দিয়ে এলাকাগুলোতে মশানিধনে বিশেষ নজর দিতে বলেছি।
জেলা কীটতত্ত্ববিদ এনতেজার ফেরদাওছ বলেন, ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যার ভিত্তিতে এসব এলাকাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ ও পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এই তালিকা আমরা সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, তালিকার ভিত্তিতে মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা, ওষুধ ছিটানো এবং মানুষকে সচেতন করার কাজ করবে। আমরা গত মাসের জরিপে দেখতে পেয়েছি, যেখানে মশা বেশি সেখানে রোগীর সংখ্যাও বেশি। এসব বিষয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও সিটি করপোরেশনকে জানানো হয়েছে।
চট্টগ্রামে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছল ১ হাজার ৮৬৭ জনে। যার মধ্যে শুধু সেপ্টেম্বরেই ৯০৭ জন। চলতি মাসের ৭ দিনে আক্রান্ত ৩৬২ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৮৩ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৬৩, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৩০, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১১৬, খুলনা বিভাগে ২৭ জন রয়েছেন।
এ ছাড়াও রাজশাহী বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৯ জন, রংপুর ৭ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৫৬০ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৬ হাজার ৭১১ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪০ হাজার ৪০৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৯৯ জনের।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪০ হাজার ৪০৫ জন। যাদের মধ্যে ৬৩ দশমিক ৩০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশ নারী।
এ ছাড়া এখন পর্যন্ত মৃত ১৯৯ জনের মধ্যে ৫০ দশমিক ৩০ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৯ দশমিক ৭০ শতাংশ নারী।
ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে তারা মারা যান। এ নিয়ে চলতি মাসের ৯ দিনে ডেঙ্গুতে ৩৩ জনের মৃত্যু হলো। এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৯৬ জনের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৩ জন রোগী।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২৬৩ জন রোগী ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এরপর ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ২০৮, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৬৪, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩১, বরিশাল বিভাগে ৮৬, খুলনা বিভাগে ৮০, রাজশাহী বিভাগে ৫৯, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩২, রংপুর বিভাগে ৭ ও সিলেট বিভাগের হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ৩ জন ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৯ হাজার ৮২২ জন। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারী-পুরুষের সংখ্যা সমান। এর মধ্যে ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়।
এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সিরা। এই বয়সি ব্যক্তিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ২০৫। মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ২৩। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬৩ দশমিক ৩ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ নারী।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। তখন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিল সেপ্টেম্বরে, সংখ্যাটি ছিল ৩৯৬। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।
এর পরের মাসে অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৩৫৯ জনের। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন।
বাংলাদেশে গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯৮১ জন রোগী। এ নিয়ে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮ হাজার ৭৮৯ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এ বছর এডিস মশাবাহিত এই রোগে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯৩ জনে।
আজ মঙ্গলবার ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৩৯২ জন, ঢাকা বিভাগে ১৪৩ জন, ময়মনসিংহে ১৭ জন, চট্টগ্রামে ১৬০ জন, খুলনায় ৯৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ জন, রংপুর বিভাগে ৩০ জন, বরিশাল বিভাগে ৯৩ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এক দিনে।
এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২১২ জন রোগী। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৩৮৪ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১৭০৭ জন; আর ১৬৭৭ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
এ বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২২ হাজার ৯৯ জন ঢাকার বাইরের রোগী। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ৬৯০ জন। গত এক দিনে যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের চারজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং একজন বরিশাল বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সেপ্টেম্বর মাসে দেশে সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ২৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ওই মাসেই সবচেয়ে বেশি ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অক্টোবরের প্রথম আট দিনে ৭৮৫১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩০ জনের।
এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। আগস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
এক দিনে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এক হাজার ২১৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, চলতি বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৮৮ জন। তাদের মধ্যে ৯৩ জন পুরুষ ও ৯৫ জন নারী। এ ছাড়া এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা ৩৭ হাজার ৮০৮ জন।
ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৪৪৫ জন, ঢাকা বিভাগে ২৩৪ জন, ময়মনসিংহে ২১ জন, চট্টগ্রামে ২২১ জন, খুলনায় ৯১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬৯ জন, রংপুর বিভাগে ৩৩ জন, বরিশাল বিভাগে ১০২ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৩৭৯ জন ডেঙ্গু রোগী। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ১৭৫৫ জন; আর ১৬২৪ জন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি।
এ বছর ভর্তি রোগীদের মধ্যে ২১ হাজার ৫১০ জন ঢাকার বাইরের রোগী। ঢাকার দুই মহানগর এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজার ২৯৮ জন। গত এক দিনে যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। সেপ্টেম্বর মাসে এ বছরের সবচেয়ে বেশি ১৯ হাজার ২৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালে। এ মাসেই সবচেয়ে বেশি ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অক্টোবরের প্রথম সাত দিনে ৬৮৭০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। এর আগে জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ১ হাজার ৫৫ জন, যাদের মধ্যে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৩৩৯ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। মার্চ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১১ জন; যাদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এপ্রিল মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫০৪ জন, যাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুজনের। মে মাসে ৬৪৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের। জুন মাসে ৭৯৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
জুলাই মাসে ২৬৬৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে ১২ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টে ৬৫২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, যাদের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর তথ্য রাখে ২০০০ সাল থেকে। এর মধ্যে ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় আরও চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম ছয় দিনে এ নিয়ে মোট ২০ জনের মৃত্যু হলো। এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা ১৮৬।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে আজ রোববার এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮ থেকে আজ সকাল ৮ পর্যন্ত) ডেঙ্গু নিয়ে ১ হাজার ২২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুজন, খুলনা ও রাজশাহীতে একজন করে দুজন মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২৮১ জন রোগী ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এরপর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে ২৪৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২০৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৬৯, খুলনা বিভাগে ১১১, বরিশাল বিভাগে ৮৭, রংপুর বিভাগে ৫৩, রাজশাহী বিভাগে ৪৭, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৯ ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ৭ জন ভর্তি হয়েছেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয় গত বছর। এ সময় ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন তখন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ১ হাজার ৭০৫ জনের।
গত বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৩৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল সেপ্টেম্বরে। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৭৯ হাজার ৫৯৮ জন।
অক্টোবরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ৩৫৯ জনের। ওই সময় ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৬৭ হাজার ৭৬৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৬ হাজার ৫৯০ জন।
এ সময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ৯৯ রোগীর মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে। এরপর ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে।
ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী ও ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ।
এ বছর ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও মারা যাচ্ছেন ২১ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা। এই বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৬৯৯। মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা ২২।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক ৮ শতাংশ নারী।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কারও মৃত্যু হয়নি। একই সময় সারা দেশে ৩১৭ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে আজ শুক্রবার পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) পাঁচজন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫০ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) সাতজন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০ জন ও সিলেট বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৯৫ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছর ৩০ হাজার ৭৮৮ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৩৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ দশমিক এক শতাংশ পুরুষ ও ৩৬ দশমিক নয় শতাংশ নারী রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। চলতি বছরের এ যাবৎ ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৭৭ জন। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
গত একমাস ধরে প্রায় প্রতিদিনই ডেঙ্গুতে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) এ রোগটিতে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিদিনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও এক হাজার ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যাদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ৪১০ জন এবং বাকিরা ঢাকার বাইরের। এ সময়ে মধ্যে রোগটি থেকে মুক্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৯১৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সিজনাল নেই, সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশানিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনে পক্ষ থেকে সব জায়গায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেনতনা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৪ হাজার ১২১ জন। এরমধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩০ হাজার ৩৯৩ জন। মারা গেছেন ১৭৭ জন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে দেশের ইতিহাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী আক্রান্ত এবং ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।
চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দিন দিনই ভয়াবহ হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বাড়ায় উদ্বিগ্ন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। গতকাল মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে আজ বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত একদিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চলতি বছর এটাই ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এর আগে গত শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশে ৮ জনের মৃত্যু এবং ১,২২১জন আক্রান্ত হয়েছে বলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে। ওইদিন মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যায় চলতি বছর রেকর্ড করে। আজ মৃত্যু ৮ জন হলেও ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা হয় ১০১৭ জনে।
এদিকে দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু দুটোই বাড়ছে। এ বছর প্রথম ৯ মাসে ১৬৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শুধু গত সেপ্টেম্বরেই মারা গেছেন ৮০ জন। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। একই মাসে প্রতি সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা আগের সপ্তাহের তুলনায় ২০ শতাংশের বেশি হারে বেড়েছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে বলা হয়, আজ হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৭৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫০ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২২৫, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৬৬, খুলনা বিভাগে ৯২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া, রাজশাহী বিভাগে ৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪ জন, রংপুর বিভাগে ৩১ এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আরও জানায়, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৩৩ হাজার ৯৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এমনকি চলতি বছরে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ১৭৪ জনের।
এ ছাড়া, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।
জনস্বাস্থ্যবিদ, কীটতত্ত্ববিদ ও চিকিৎসকেরা জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যা অক্টোবর মাসে আরও বাড়তে পারে। কারণ, রোগটি বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু ডেঙ্গু প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থার অভাব রয়েছে বলেও জানান তারা।
জানা গেছে, এ বছরের শুরু থেকেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও মার্চ থেকে তা কমে আসে, অন্তত আগের বছরের তুলনায়। তবে আগস্ট মাস থেকে আবার বাড়তে থাকে সংক্রমণের সংখ্যা।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারা দেশে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে আজ মঙ্গলবার সময়ের মধ্যে রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক হাজার ১৪৪ জন।
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি থেকে আরও জানা যায়, নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৩৯ জন, আর ঢাকার বাইরের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫০৫ জন।
চলতি বছর রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ২ শতাংশ নারী।
বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩২ হাজার ৮২ জন। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ শতাংশ নারী।
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে এবং একই সময়ে সারা দেশে এক হাজার ১৫২ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের এ যাবত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬৩ জন।
আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৩৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২১৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ২৫২ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৮৭ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৮৬ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ২৭ জন, রাজশাহী বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০ জন, রংপুর বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৮ জন রয়েছেন।
২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৯৮২ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন, চলতি বছরে মোট ২৭ হাজার ৩১৩ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৯৩৮ জন। এর মধ্যে ৬৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৭ শতাংশ নারী রয়েছেন।
২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়, পাশাপাশি ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব হার্ট দিবস। হার্টের বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশে প্রতি বছর আজকের এই দিনে দিবসটি পালন করা হয়। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘হৃদয়ের যন্ত্র হোক সর্বজনীন’।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি বছর মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ সংঘটিত হয় অসংক্রামক রোগের কারণে। হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, শ্বাস রোগের মতো এসব অসংক্রামক রোগে প্রতিবছর দেড় কোটি মানুষ মারা যায়; যাদের বয়স ৩০ থেকে ৬৯ এর মধ্যে। এই মৃত্যুর ৮৫ শতাংশই নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে ঘটে। বাংলাদেশও এরমধ্যে উলেখ্যযোগ্য।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে যারা মারা যাচ্ছেন- তাদের মধ্যে ১৭ শতাংশরই হৃদরোগের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি পাঁচজন তরুণের একজন হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বয়স, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, উচ্চ কোলেস্টোরেলের মাত্রা, অতিরিক্ত মেদ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, মদ্যপান, মানসিক চাপ হার্ট অ্যাটাকের জন্য দায়ী।
চিকিৎসকদের মতে, দিনে খাবারের সঙ্গে এক চামচ পরিমাণ লবণ গ্রহণ করা যায়। তবে এর বেশি হলে ডেকে আনবে মারাত্মক বিপদ। বাসার তৈরি খাবারের পাশাপাশি প্যাকেটজাত খাবারেও ঝুঁকি বাড়ছে। গবেষকরা এসব খাবারে নিরাপদ মাত্রার চেয়েও বেশি লবণ পেয়েছে।