২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৮৪ জনে।
সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকায় ২ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন এলাকায় মোট ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৭৪০ জন ডেঙ্গু রোগী।
আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৩০ জন আর ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৪১০ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৬ হাজার ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন আছেন। ঢাকার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৫৪৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪ হাজার ৪৭২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চলতি বছর সারা দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৭২ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ৩ হাজার ৯০৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৬৪ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ লাখ ৮৬ হাজার ৭১ জন। এদের মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১ হাজার ৪৯৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫৭৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
একজন বিখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের উক্তি- ‘ক্যান্সারে যত লোকের মৃত্যু হয়, চিকিৎসায় দেরি হওয়ার জন্য মারা যায় সম সংখ্যক লোক’। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য লোক দেরী করে ডাক্তারের কাছে আসেন, যার ফলে ইতোমধ্যে ক্যন্সার মারাত্মক রূপ ধারণ করে। গবেষণায় দেখা যায়, এর কারণ হলো, জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে ‘ক্যান্সার ভীতি,’ এমন ধারণা যে ক্যান্সার দুরারোগ্য ব্যাধি, এর নিরাময় নেই। অথচ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে অধিকাংশ ক্যান্সার নিরাময়যোগ্য। ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে দেহে যে সকল প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায়, এ সম্বন্ধে অনেকে অবহিত নন। এলডাস হাক্সলির একটি উক্তি উল্লেখ্য, ‘অধিকাংশ ক্ষেত্রে অজ্ঞতাই দায়ী, আমাদের অজ্ঞতার কারণ হলো আমরা জানতে চাই না।’ ক্যান্সারকে মোকাবিলা করার প্রথম শর্ত হলো রোগ সম্বন্ধে জানা, এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলোকে সনাক্ত করা এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া। কোনো ক্রমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যেন বিলম্বিত না হয়, কারণ এতে রোগ অগ্রসর হতে থাকে এবং পরবর্তীতে দেহের বিভিন্ন স্থানে ক্যান্সার কোষের উপনিবেশ গড়ে ওঠে। এই দুরারোগ্য পর্যায়ে রোগী যখন চিকিৎসকের কাছে আসেন তখন করার বিশেষ কিছু থাকে না।
বাংলাদেশে মুখগহ্বর এ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। নতুন রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে দিন দিন। খাদ্যনালি কিংবা মুখগহ্বরের কোনো অংশে ক্যান্সার হলে একপর্যায়ে রোগীর জন্য খাবারদাবার গ্রহণের স্বাভাবিক নিয়ম কষ্টকর হয়ে পড়ে। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাবার তো খেতেই হবে সেই সাথে ক্যান্সার সংক্রান্ত অন্যান্য জটিলতা তো আছেই।
মুখগহ্বর এর ক্যান্সারের সঙ্গে একজন মানুষের প্রতিদিনের জীবনধারা বিশেষভাবে সম্পর্কিত। যেসব অভ্যাসের কারণে মুখগহ্বরের সরাসরি ক্ষতি হয়, সেগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া আবশ্যক। যেমন তামাক মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির শত্রু, সেটা যেভাবেই তা গ্রহণ করা হক না কেন। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের কারণে মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির কোষে ক্ষত সৃষ্টি হতে থাকে। এই ক্ষত থেকেই এক সময় ক্যান্সার হয়।
সিগারেট, ই-সিগারেট, পান, সাদাপাতা, সুপারি, চুন, জর্দা, গুল, খইনি-সবই মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির ক্যানসারের জন্য দায়ী। আমাদের দেশের বহু মানুষ এসব তামাকের কোনো না কোনোটি গ্রহণ করেন। বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার অনেক বেড়েছে। আমাদের দেশের যত মানুষ মুখগহ্বর ও খাদ্যনালির ক্যানসারে আক্রান্ত, তাদের ৮০-৯০ শতাংশেরই তামাক বা তামাকজাত পণ্য সেবনের কারন রয়েছে। সেইসাথে অ্যালকোহল ও অনেকে পানের সাথে জর্দ্দা ব্যবহার করেন, এ ধরনের নেশাও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
যারা পানের সঙ্গে জর্দ্দা খান এবং নিয়মিত অনেকবার পান খান তাদের মুখের ঘা বেশি হয় এবং লক্ষ্য করা গেছে অনেকেই তামাক পাতাকে হাতের মধ্যে নিয়ে চুনের সঙ্গে মিশিয়ে গালের মধ্যবর্তী স্থানে রাখেন, তাতে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে ওই স্থানে ঘা হতে পারে। শুধু ঘা নয় পরবর্তীতে এই ঘা ক্যান্সারেও রূপ নিতে পারে। শুধু বাংলাদেশেই নয় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে যেখানে তামাক পাতা নেশার মতো ব্যবহৃত হয় সে সমস্ত অঞ্চলেও মুখের ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা অন্যান্য দেশের চাইতে বেশি। অর্থাৎ যারা জর্দ্দা খান বা তামাক পাতা খান তাদের রিস্ক-ফ্যাক্টর বা ঝুঁকি হতে পারে ৬০ ভাগ এবং যারা ধূমপান করেন এবং সেই সাথে তামাক পাতা ও পানের সঙ্গে ব্যবহার করেন তাদের ঝুঁকি শতকরা ৮০ ভাগ।
গত বিশ বছরে বাংলাদেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় ১০ গুন বেড়েছে। পুরুষ-মহিলা-শিশু নির্বিশেষে সবারই ক্যান্সার হয়। মুখগহ্বরের ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব পুরুষদের ক্ষেত্রে ২২%-২৩% এবং মেয়েদের মধ্যে ১৬%-১৭%। বর্তমান পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় দুই লক্ষ লোক ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার মৃত্যুবরণ করে। সারা পৃথিবীতে বর্তমানে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা প্রায় দুকোটির কাছাকাছি।
ক্যান্সার এমন এক ব্যাধি, যার বৈশিষ্ট্য হলো অস্বাভাবিক কোষের নিয়ন্ত্রণহীন বৃদ্ধিও বিস্তার। স্বাভাবিক অবস্থায় দেহ কোষগুলোর ক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল পুনঃজন্ম ঘটে এবং এদের বৃদ্ধি হয়।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে মুখগহ্বরের ক্যান্সার বাংলাদেশে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে বেশি হয়।
সূচনায় চিহ্নিত হলে নিরাময়ের সম্ভাবনা খুবই উজ্জল। ডেন্টাল সার্জনরা মুখ গহ্বরের রুটিন পরীক্ষার সময় অনেক ক্ষেত্রে একে শনাক্ত করেন। মুখ গহ্বরের ক্যান্সারের মধ্যে জিহ্বায় হয় ২০%, ঠোঁটে ১৫% এবং লালাগ্রন্থি ১০%। ২৫% শতাংশ হলো গলদেশের ক্যান্সার। এছাড়া মাড়ি, তালু, টনসিল, চোয়ালেও এই ক্যান্সার হয়। যারা ধূমপান করেন, তাদেরই মুখে ক্যান্সার বেশি হয়। বিভিন্ন গবেষনায় বলা হয়েছে সিগার ও পাইপ খেলেও মুখের ক্যান্সার হয় খুব বেশি।
যদি লক্ষ্য করা যায় যে, মুখ গহ্বরের একটি ক্ষত বা ঘা যা শুকাচ্ছে না, এবং সহজেই এ থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, গিলতে অসুবিধা হচ্ছে, সব সময় গলায় কোনো কিছুর উপস্থিতি অনুভুত হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ প্রয়োজন। এরকম লক্ষণ হওয়া মানেই ক্যান্সার নয়- শুধু প্রয়োজন হলো একজন ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হওয়া। এ ব্যাপারে ডেন্টাল সার্জন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে যেমন মুখ গহ্বর এর রুটিন পরীক্ষার সময় অথবা অন্য সময় যখন দাঁত বা মুখ গহ্বরের চিকিৎসা করছেন তখন তাদের দায়িত্ব হবে মুখ গহ্বরের কোষকলায় কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য করা। সুতরাং কেউ যদি নিয়মিত ডেন্টাল সার্জন দিয়ে বছরে অন্তত একবার মুখের চেক আপ করান, তাহলে এরকম কিছু ঘটে থাকলেও চিকিৎসক সূচনাকালেই একে শনাক্ত করতে পারেন।
গবেষণায় যত রকমের ক্যান্সার দেখা গেছে তার শতকরা ত্রিশ ভাগ ক্ষেত্রের কারণ হলো তামাক। ফুসফুসের ক্যান্সার জনিত মৃত্যুর শতকরা নব্বই ভাগের জন্যই দায়ী তামাক। তামাক শুধু ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ নয় মুখের ভিতরের বিভিন্ন রকম ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
এ ছাড়া যারা মুখগহ্বরের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে যত্নশীল নন কিংবা যাদের দাঁতের অংশ অত্যধিক ধারালো, তাদের মুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশি। বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা খাবার খেলেও হতে পারে মুখের ক্যান্সার। যাদের ডায়াবেটিস আছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে থাকে না, তাদের এই মুখের ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অন্যদের চাইতে বেশি।
মুখের ভেতরের ক্যান্সার প্রতিরোধে তামাক সেবক অর্থাৎ সিগারেট, বিড়ি, হুক্কা, দোক্তা, কিমা, খৈনী, গুল, নাস্যি গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে।
ক্যান্সার মানেই মৃত্যু কথাটি কোন এক সময় হয়ত সত্য ছিল, কিন্তু আজ আর তা নয়। বর্তমানে অর্ধেক ক্যান্সারকে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি। বাদবাকী অর্ধেকের বেশি ভাগটাই আমরা সূচনায় ধরে ফেলে সঠিক চিকিৎসা করতে পারি।
প্রতিকার
সাধারণভাবে মুখগহ্বর ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য অস্ত্রোপচার ও রেডিওথেরাপিই মূল চিকিৎসা। কোনো কোনো রোগীর কেমোথেরাপিরও প্রয়োজন হতে পারে। নির্ধারিত থেরাপিরও সুযোগ রয়েছে। যাঁরা নিয়মিত তামাক বা তামাকজাত পণ্য গ্রহণ করেন, তাদের কোনো উপসর্গ না থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো উচিত। কারণ, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার ধরা পড়লে চিকিৎসা পদ্ধতি সহজ হয়। যেমন এসব ক্ষেত্রে বায়াপসি বা মাংস পরীক্ষা করা জরুরি। তাহলে সুর্নিদিষ্টভাবে তার রোগ র্নিনয় বা ক্যান্সার কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানা যায়।
প্রতিরোধ
মুখগহ্বর এর ক্যান্সার প্রতিরোধে করনীয়-
• ধূমপান, তামাক ও তামাকজাত কোনো পণ্য সেবন বন্ধ করা ।
• মুখগহ্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রতিদিন দুবেলা দাঁত ব্রাশ এবং খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলকুচি করা প্রয়োজন।
• দাঁতের কোন অংশ ধারালো থাকলে চিকিৎসা করা।
• ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ।
• প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ এবং আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ।
• শারীরবৃত্তীয় কারণে মহিলাদের আয়রনের ঘাটতি বেশি হয়। তাদের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।
• ফাস্টফুড বা প্রোসেস ফুড বাদ দেওয়া প্রয়োজন।
• অতিরিক্ত অ্যাসিডিটি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা।
• অতিরিক্ত ঝাল কিংবা অতিরিক্ত গরম খাবার ও পানীয় বর্জন করা।
• সব ধরনের মাদক ও অ্যালকোহল বর্জন করা।
সবচেয়ে বড় কথা , যদি আমরা তামাক, ধূমপান, জর্দ্দা ইত্যাদি বর্জন করতে পারি, তাহলে মুখের ক্যান্সার, গলার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সারসহ অনেক ক্যান্সার রোগকেই প্রতিরোধ করতে পারব।
লেখক: একুশে পদকপ্রাপ্ত শব্দসৈনিক।
ফল শরীরের অন্যতম প্রাকৃতিক পুষ্টির উৎস। এতে থাকে ভিটামিন, মিনারেলস, কার্বোহাইড্রেট ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট— যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বকের যত্নে সাহায্য করে এবং হজমের সমস্যাও কমায়। তবে সব কিছুরই যেমন নিয়ম আছে, ফল খাওয়ারও আছে সঠিক সময় ও উপায়। তা না মানলে উপকারের বদলে হতে পারে উল্টো ক্ষতি।
কখন এবং কীভাবে ফল খাবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফল একটি সম্পূর্ণ খাবার। তাই এটি মূল খাবারের সঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।
খাবার খাওয়ার কমপক্ষে আধ ঘণ্টা আগে বা এক ঘণ্টা পরে ফল খাওয়া সবচেয়ে ভালো।
খাবারের সঙ্গে ফল খেলে এতে থাকা শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট একত্রে হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
দিনের কোন সময় ফল খাওয়া সবচেয়ে উপকারী
ফল খাওয়ার আদর্শ সময় হলো সকাল।
ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে, পানি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর ফল খেলে এটি সহজে হজম হয়। এসময় ফলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও এনজাইম শরীরে ভালোভাবে কাজ করে।
এছাড়া সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়ে যখন হালকা ক্ষুধা লাগে, তখন ফল খাওয়া খুব উপকারী। এই সময় ফলের সঙ্গে সামান্য বাদাম বা দানাশস্য নিলে তা হালকা নাশতা হিসেবেও চমৎকার।
শরীরচর্চা করার আগে বা পরে ফল খাওয়াও উপকারী, কারণ এতে থাকা প্রাকৃতিক চিনি দ্রুত শক্তি যোগায়।
কোন ফল কখন খাবেন
রাতে প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খেলে পরদিন সকালে পেঁপে খান। এতে থাকা পাপাইন এনজাইম প্রোটিন হজমে সাহায্য করে।
বেশি লবণ খেলে পরদিন সকালে তরমুজ খান— এটি শরীরের সোডিয়াম ভারসাম্য ঠিক রাখে।
বেশি কার্বোহাইড্রেট খাওয়ার পরদিন সকালে আপেল খেলে শরীর হালকা থাকে ও ফোলাভাব কমে।
কখন ফল খাওয়া ক্ষতিকর
ঘুমানোর আগে ফল খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
মূল খাবারের সঙ্গে ফল খাওয়া হজমে সমস্যা তৈরি করে।
বিকেলে চা বা নাশতার সঙ্গে ফল খাওয়া অনেক সময় বিষক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
যেসব ফল একসঙ্গে খাওয়া বিপজ্জনক
কমলালেবু ও গাজর একসঙ্গে খাওয়া গ্যাস ও কিডনির সমস্যা বাড়াতে পারে।
আঙুর ও খেজুর একসঙ্গে খেলে অম্বল হয়।
পেয়ারা ও কলা একসঙ্গে খেলে গ্যাস, বদহজম, মাথা ঘোরা হতে পারে।
পেঁপে ও লেবু একসঙ্গে খেলে রক্তাল্পতা ও হিমোগ্লোবিন ভারসাম্য নষ্ট হয়।
টক ফল (যেমন আঙুর, আপেল) ও মিষ্টি ফল (যেমন কলা, কিশমিশ) একসঙ্গে খাওয়া ঠিক নয়।
তরমুজের সঙ্গে অন্য ফল খেলে হজমে ব্যাঘাত ঘটে।
ফল খাওয়ার অভ্যাস শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, তবে সময়, পরিমাণ ও সঠিক সমন্বয় জানা জরুরি।
ঠিক সময়ে ও সঠিকভাবে ফল খেলে শরীর পায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি, বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, কমে ক্লান্তি ও হজমজনিত সমস্যা।
পুষ্টিবিদদের মতে, “খালি পেটে পানি, ভরা পেটে ফল”— এই ধারণা বদলে সময় মেনে ফল খাওয়ার অভ্যাসই রাখবে আপনাকে আরও সুস্থ ও সতেজ।
যুক্তরাজ্যে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে একটি বড় ধরনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা জেনেশুনে অ্যাসবেস্টস দূষিত বেবি পাউডার বিক্রি করছে। প্রায় তিন হাজার মানুষ এই মামলায় যুক্ত হয়েছেন। খবর বিবিসির।
মামলার মূল প্রমাণ হিসেবে কিছু অভ্যন্তরীণ নথি ও বৈজ্ঞানিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সেগুলো বিবিসির হাতে এসেছে।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ১৯৬০-এর দশক থেকেই জনসন অ্যান্ড জনসন জানত তাদের ট্যালকম পাউডারে ট্রেমোলাইট ও অ্যাকটিনোলাইটের মতো ফাইবারসমৃদ্ধ বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে। এগুলো ফাইবার আকারে থাকলে অ্যাসবেস্টস হয়ে যায় এবং এটিই প্রাণঘাতী ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
আদালতের নথিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ঝুঁকি জানা সত্ত্বেও কোম্পানিটি তাদের বেবি পাউডারের প্যাকেটে কখনো এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেনি। পরিবর্তে তারা পাউডারটিকে বিশুদ্ধতা এবং সুরক্ষার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করে প্রচারণা চালায়।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন। কোম্পানির পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের বেবি পাউডার সব ধরনের সরকারি মানদণ্ড মেনে তৈরি করা হয়ে থাকে। তারা আরও দাবি করেছে, এতে অ্যাসবেস্টস নেই এবং এটি ক্যানসার সৃষ্টিও করে না।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা শিল্পের জন্য এক অনন্য ও গৌরবের মুহূর্ত নিয়ে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী প্রকাশনা 'ইউএসএ টুডে'। এই বিশ্বখ্যাত দৈনিকের বিশেষ প্রতিবেদনে ফিচার্ড হয়েছেন ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের দূরদর্শী ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ল্যাবএইড গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম। ইউএসএ টুডে-র মত আন্তর্জাতিক পত্রিকায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতকে তুলে ধরা নিঃসন্দেহে দেশের জন্য বিশাল সম্মান এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্যসেবা মানচিত্রে বাংলাদেশকে এক উদীয়মান কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
ইউএসএ টুডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ ও সবচেয়ে বেশি প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র। এর গতিশীল নকশা, সংক্ষিপ্ত, সুস্পষ্ট প্রতিবেদন এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতি বিষয়ক গল্প অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এটি বিশ্বজুড়ে অনেক সংবাদপত্রের শৈলীকে প্রভাবিত করেছে। বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ পাঠকের কাছে পৌঁছানো এই প্রকাশনায় সাকিফ শামীমের সাক্ষাৎকার ও ল্যাবএইডের কার্যক্রম তুলে ধরায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্যপ্রযুক্তি এবং চিকিৎসা সক্ষমতা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হলো।
সাকিফ শামীম বর্তমানে ল্যাবএইড গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা তাঁর বাবার হাতে ১৯৮৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এটি এখন ছয়টি বিশেষায়িত হাসপাতাল, ৪৫টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, একটি মেডিকেল কলেজ, ফার্মাসিউটিক্যালস, রিয়েল এস্টেট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ১২,০০০-এরও বেশি কর্মচারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা গ্রুপে পরিণত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টার বর্তমানে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও এশিয়ার সেরা হাসপাতালগুলোর মধ্যে গণ্য হচ্ছে, যা রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে সমন্বিত ক্যান্সার পরিচর্যা প্রদান করছে।
সাকিফ শামীমের নেতৃত্ব স্বাস্থ্যসেবায় প্রযুক্তিনির্ভর বিপ্লব ঘটিয়েছে। তিনি লাইফপ্লাস বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন, যা তিন লাখেরও বেশি সক্রিয় ব্যবহারকারী নিয়ে দেশের বৃহত্তম হেলথটেক কোম্পানিগুলোর একটি। পাশাপাশি, তিনি Labaid GPT নামে একটি জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্ম চালু করেছেন, যা ডাক্তার ও রোগীদের জন্য সেকেন্ড অপিনিয়ন প্রদানের লক্ষ্যে তৈরি এবং এটি ল্যাবএইডের বহু বছরের সংরক্ষিত ডেটা দ্বারা চালিত। তাঁর দূরদর্শী উদ্যোগে, ল্যাবএইড গ্রুপ ভার্চু-কেয়ার এআই (Virtuecare AI)-এর মাধ্যমে অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (AR) এবং ভার্চুয়াল রিয়্যালিটি (VR) প্রযুক্তির ব্যবহারও শুরু করেছে, যার লক্ষ্য দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং অনুরূপ অঞ্চলের মানুষের জন্য উন্নত প্রযুক্তি সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করে তোলা।
ল্যাবএইড গ্রুপের সম্প্রসারণ কৌশল সুদূরপ্রসারী; তারা ঢাকায় ২৫০ মিলিয়ন ডলারের (আনুমানিক ২০০০ কোটি টাকা) একটি ৭৫০ শয্যার সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছে এবং আগামী ৫ থেকে ৭ বছরের মধ্যে দেশজুড়ে ৩০টি ক্যান্সার সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে উদ্ভাবন ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ল্যাবএইড বাংলাদেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুর এবং হংকংয়ে পাবলিক হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মত বৈশ্বিক সংস্থাগুলোর সাথেও তাদের কোশলগত অংশীদারিত্ব রয়েছে।
সাকিফ শামীম বলেন, ল্যাবএইড শুধু একটি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নয়—এটি রূপান্তরের একটি মঞ্চ। সাকিফ শামীমের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা। তিনি বিশ্বাস করেন, সঠিক অবকাঠামো এবং অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশীদের আর চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হতে হবে না, বরং বাংলাদেশ পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে রোগীদের আকৃষ্ট করতে পারবে। তাঁর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হলো আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ল্যাবএইড গ্রুপকে $১০ বিলিয়ন কর্পোরেশনে রূপান্তরিত করা, যার মাধ্যমে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে বছরে প্রায় ৭-৮ মিলিয়ন মানুষের কাছে বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। সাকিফ শামীমের মতে, বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা একটি বিলাসিতা নয়, বরং প্রতিটি মানুষের অধিকার।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) আক্রান্ত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তারা আক্রান্ত খামার ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শন করে রোগের বিস্তারের ধরন, সংক্রমণের উৎস এবং স্থানীয় জনগণের সচেতনতার মাত্রা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেন। গতকাল বুধবার গবেষক দলের নেতৃত্বে থাকা বাকৃবির প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই দলে আরও ছিলেন মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমিমুল এহসান ও অধ্যাপক ড. আজিমুন নাহার, প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. জাহান আরা বেগম, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন, ড. জায়েদুল হাসান (সদস্য সচিব) এবং সহকারী অধ্যাপক ড. সাইফুর রহমান।
সাম্প্রতিক সময়ে গাইবান্ধা ও রংপুরের কিছু উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সের উপদ্রব দেখা দেওয়ায় এই কমিটি গঠন করেন বাকৃবি ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান।
গবেষণা দলের সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আমিমুল এহসান জানান, স্থানীয়ভাবে অ্যানথ্রাক্স রোগের সংক্রমণের মূল কারণ নির্ণয় এবং ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা প্রস্তাব করাই এ তদন্তের মূল লক্ষ্য।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণে জানা যায়, অনেক গ্রামে এখনো অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে টিকা প্রদান করা হয়নি এবং মৃত পশুর সঠিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্থানীয়দের তেমন কোনো জ্ঞান বা ধারণা নেই।
স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘাঘট নদীর তীরবর্তী কিশামত সদর গ্রামের মধ্যপাড়ার এক নারী (৬০) ওই গ্রামের পশ্চিম পাড়ার জবাইকৃত অসুস্থ গরুর মাংস নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন এবং আক্রান্ত হন। পার্শ্ববর্তী বাড়িতে মৃত্যুপ্রায় গরু জবাই করে মাংস কাটাকাটির সময় এক ব্যক্তির চোখে রক্ত ছিটকে পড়লে চোখটি আক্রান্ত হয় এবং চোখ মারাত্মকভাবে ফুলে যায়। এই ঘটনায় ১১ জন আক্রান্ত হয়েছে।
পার্শ্ববর্তী গ্রামে জ্বরে আক্রান্ত একটি ছাগল জবাই করে মাংস কাটাকাটির সময় কেটে যাওয়া আঙুল দিয়ে শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন পর মারা যান। মৃত নারীর নাম রোজিনা বেগম।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত কিছু গরু ও ছাগলের মরদেহ অগভীরভাবে পুঁতে রাখা হয়েছে, আবার কিছু মরদেহ খোলা জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া আক্রান্ত পশু জবাইয়ের পর অব্যবহৃত বা পরিত্যক্ত অংশও খোলা স্থানে ফেলে রাখা হয়েছে। বালুকাময় মাটির কারণে বৃষ্টি বা বন্যার সময় এসব মরদেহ ও পরিত্যক্ত অংশ থেকে জীবাণু নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আক্রান্ত এলাকার চরাঞ্চলে কৃষকরা মাঠ থেকে ঘাস কেটে গরু-ছাগলকে খাওয়ান। এসব ঘাস নদীর পানিতে ধোয়ার সময় অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর স্পোর দ্বারা দূষিত হতে পারে। দূষিত পানি বা ঘাস ব্যবহারের কারণে সংক্রমণ হচ্ছে বলে গবেষক দলটি ধারণা করছে।
গবেষণা দল জানায়, কিছু এলাকায় অসুস্থ বা মৃতপ্রায় পশু জবাই করা ও মাংস বিক্রির ঘটনাও ঘটেছে। এসব মাংসের সংস্পর্শে আসা মানুষরাও অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন। এলাকাটিতে পূর্বে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি; টিকা প্রদান করা হয়নি এবং জনসচেতনতার অভাবের কারণে অসুস্থ গরু জবাই হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে।
গবেষক দলের মতে, দ্রুত আক্রান্ত এলাকা কোয়ারেন্টাইনে আনা, মৃত পশু সঠিকভাবে পুঁতে ফেলা এবং স্থানীয় পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম ও সচেতনতা বৃদ্ধি করলেই এ ধরনের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
গবেষক দলটি আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষতস্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। টিকাপ্রাপ্ত গবাদিপশুর শরীরে পর্যাপ্ত অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করার জন্য রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া সংক্রমণের উৎস খুঁজতে মাটি, পানি ও ঘাসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষক দলটি।
অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান বলেন, ‘মৃত পশুর দেহের সঠিক ব্যবস্থাপনা না করা অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণের অন্যতম প্রধান কারণ। আক্রান্ত এলাকায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে মাটি ও পানি দীর্ঘমেয়াদে সংক্রমণের উৎস হিসেবে কাজ করবে।’
দলটির বিশেষজ্ঞরা বলেন, আক্রান্ত পশুর সঠিক ব্যবস্থাপনা না মানলে অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। মৃত পশুর দেহ কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ফুট গভীর গর্তে পুঁতে রাখতে হবে এবং গর্তের নিচে, উপরে ও চারপাশে কুইক লাইম বা পোড়াচুন মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। সেইসঙ্গে পুঁতে ফেলার স্থান চিহ্নিত রেখে ভবিষ্যতে সেখানে চারণ বা কৃষিকাজ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অসুস্থ পশু জবাই না করে সংশ্লিষ্ট প্রাণিসম্পদ অফিসকে অবহিত করতে হবে।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিপ্লব কুমার রায় বলেন, ‘আমরা টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। প্রতি বছর সকল গবাদিপশুকে টিকার আওতায় আনতে পারলে এই রোগ সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তবে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও জনবল সংকট দূর করা জরুরি।’
গবেষক দল স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে আক্রান্ত এলাকার টিকাদান, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মৃত পশু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছে। দলটি আশা প্রকাশ করেছে, তাদের এই তদন্তের ফলাফল অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে জাতীয় পর্যায়ে নীতিনির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় একসময় অবৈধ কারখানায় ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির দায়ে জেল খাটা এরশাদ আলী (৫৫) এবার শিশু চিকিৎসক সেজে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘ডাক্তার’ সেজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার আহসানগঞ্জ এলাকায় মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। অথচ তার কোনো বৈধ চিকিৎসা ডিগ্রি বা সনদ নেই, এমনকি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকও নন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এরশাদ আলীর ভুল চিকিৎসায় শিশুরা মারাত্মক শারীরিক জটিলতায় পড়ছে, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
জানা যায়, জেলার আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরে আহসানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মার্কেটে অবস্থিত ‘মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভিড় করেন। সপ্তাহে মাত্র একদিন এখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিধান কুমার শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বাকি ছয় দিন ফার্মেসির মালিক এরশাদ আলী নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকায় শিশুদের নানা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, এরশাদ আলী রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের গাদু শেখের ছেলে। অতীতে তিনি ঢাকার চানখারপুল এলাকায় বাসায় অবৈধ ওষুধ কারখানা স্থাপন করে ভেজাল ওষুধ তৈরি করতেন এবং তা বিভিন্ন ফার্মেসিতে সরবরাহ করতেন। এ ঘটনায় একটি গোপন অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত তার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ জব্দ করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের রায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরশাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের হযরত আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ১৩ মাস বয়সি কন্যাশিশু শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। লোকমুখে শোনে এরশাদ আলীর কাছে নিয়ে গেলে তিনি একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকসহ সাতটি ওষুধ দেন। পরে জানতে পারি তিনি কোনো বৈধ চিকিৎসক নন।’
জাত আমরুল গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, ‘তার মেয়ের জন্য প্রকৃত চিকিৎসক যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে গেলে এরশাদ আলী তা পরিবর্তন করে ইনজেকশন দেন। ইনজেকশনটি ভুলভাবে প্রয়োগ করায় তার মেয়ের হাত ফুলে যায় এবং পরবর্তীতে রাজশাহীতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে তাকে নিজের জমি বন্ধক রাখতে হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা রওনক রাজীব বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং ঔষধ প্রশাসন যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এরশাদের মতো ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এরশাদ আলী দাবি করেন, আমি ফার্মেসিস্ট কোর্স সম্পন্ন করেছি, ফলে আমি চিকিৎসা দিতে পারি। সরকারের পক্ষ থেকে আমার ড্রাগ লাইসেন্সও রয়েছে। হ্যাঁ আমি কিছু দিন জেলে ছিলাম। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আর আপনাদের কোনো সনদ দেখাতে বাধ্য নই।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই কুমিল্লার দাউদকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ১৯৭২ সালে ২০ শয্যা দিয়ে চালু হয় হাসপাতালটি। বর্তমানে এটি ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় এর গুরুত্ব অপরিসীম। দাউদকান্দি ছাড়াও আশেপাশের উপজেলা থেকে রোগীরা আসে এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে। পরিত্যক্ত হওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের। জীবন বাঁচাতে আসা রোগীদের চিকিৎসা নিতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।
হাসপাতালের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখা যায়, রোগীর মাথার ওপর পলেস্তারা খসে পড়ছে। পিলার ফেটে বেরিয়ে পড়েছে রট। আতঙ্ক কাজ করে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মাঝে।
প্রতিদিন এ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ১শত ৩০ থেকে ১শত ৫০ জন, ইনডোরে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী ভর্তি থাকেন। নরমাল ডেলিভারি হয় ৪ থেকে ৫ জনের, সিজার হয় ৩ থেকে ৪ জনের। আউটডোরে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ শত রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
উপজেলার থৈরখোলার বাসিন্দা মতিন ভূইয়া তার চিকিৎসারত স্ত্রীকে নিয়ে আছেন হাসপাতালে। কিছুক্ষণ পর পর ছাদ থেকে খসে পড়ছে সিমেন্ট। চোখে-মুখে ঢুকে বালি। তিনি বলেন জানিনা কখন পুরো ছাদটাই ভেঙে পড়বে। সারাক্ষণ ভয়ে থাকি।
গজারিয়া থেকে চিকিৎসা নিতে আসা স্বপ্না বেগম বলেন, এটা হাসপাতাল না যেন মৃত্যুপুরি। ওপর থেকে ভিম ভেঙে পড়েছিল শরীরে। চিকিৎসা নিতে এসে উল্টো আহত হতে হয়েছে।
ওয়ার্ড ইনচার্জ আকলিমা আক্তার বলেন, কিছুদিন আগে ৫ নম্বর বেডের নতুন ফ্যান ছাদসহ ভেঙে এক রোগীর মাথায় পড়ে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। আমরা আতঙ্কে কাজ করি। প্রতিদিন মনে হয় কখন ভবনটা ভেঙে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, পরিত্যক্ত ঘোষণার পর এখনও কোনো সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। এত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চিকিৎসা দেওয়া সত্যিই কঠিন। এই হাসপাতালটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হওয়ায় আশপাশের অনেক এলাকা থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন। আমরা জীবনের ঝুঁকি হলেও চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন বর্ষায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে ড্রেন না থাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ কুমিল্লার সহকারী প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, আমরা ভবনটি পরিদর্শন করে দেখেছি। এটি সম্পূর্ণ ব্যবহার অনুপযোগী। তাই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছি। কাজটি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে হবে তাই কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। সরকারের প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে আপাতত টেন্ডার প্রক্রিয়া স্থগিত রয়েছে। কাজ শুরু হলে কুমিল্লার মধ্যে প্রথমেই দাউদকান্দি হাসপাতালের সংস্কারকাজ শুরু করা হবে। তিনি আরো বলেন, হাসপাতালের যেসব অংশ সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ, সেগুলো সাময়িকভাবে মেরামতের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি এ হাসপাতালে রোগীর চাপ তুলনামূলক বেশি থাকায় এটিকে ১ শত থেকে দেড়শ শয্যার করার প্রস্তাব ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।
ডেঙ্গু জ্বরে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৭৫৮ জন।
আজ বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে ২০২ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার।
এর বাইরে ঢাকা বিভাগে ১৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৬২ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ এবং সিলেট বিভাগে ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছর এখন পর্যন্ত এই রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে ৫৭ হাজার ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
দেশে ক্যান্সার চিকিৎসায় অধিক সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। ক্যান্সার রোগী বৃদ্ধি পাওয়ার প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
গতকাল সোমবার রাজধানীর ন্যাশনাল বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শুধু স্তন ক্যান্সার নয়, আমাদের দেশে এখন ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ক্যান্সার প্রতিরোধে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা থেকে শুরু করে আমাদের আরও বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।
পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির আহ্বান জানান তিনি।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, আমাদেরকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে হবে, যাতে করে আমরা ৬৪ জেলায় ক্যান্সার সচেতনতার বিষয়টি পৌঁছে দিতে পারি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি বিভাগীয় হাসপাতালে ক্যান্সার, কিডনি ও ডায়ালাইসিস চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে।
উপদেষ্টা আরো বলেন, ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য লিনাগ মেশিন খুবই প্রয়োজনীয়। বর্তমান সরকার ৩৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ছয়টি লিনাগ মেশিন ক্রয়ের ব্যবস্থা নিয়েছে।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে মেশিন গুলো দেশে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় যুগোপযোগী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ন্যাশনাল বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, এক্ষেত্রে সব ধরনের সহযোগিতা সরকার অব্যাহত রাখবে।
দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে আমলাতান্ত্রিক জটিলতাকে দায়ী করে উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানলে অবাক হবেন যে একটি ফাইল একজনের কাছেই ছিল এক মাস দশ দিন। তাহলে বলুন, উন্নয়ন কাজ কিভাবে এগিয়ে নেয়া যায়?
তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের আরও বেশি আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।
নূরজাহান বেগম আরো বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পর হয়তো আমরা কেউ থাকব না। তবে আমাদের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ এনজিও আপনাদের পাশে থাকবে সব সময়।
তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা সাধারণ মানুষের পাশে থাকব এবং আপনারা আমাদেরকে যখনই ডাকবেন, আমরা তখনই আপনাদের ডাকে সাড়া দেব।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের টাকার অভাব রয়েছে। তাই আমরা হয়তো পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সব সময় বিদেশে যেতে পারি না। কিন্তু বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেশে এনে তো আমরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারি। এক্ষেত্রে তো কোন বাধা নাই।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সকলকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর বলেন, স্তন ক্যান্সার ধরা পড়লে শতভাগ নিরাময় সম্ভব। এজন্য আমাদের লজ্জা বা ভয় না পেয়ে যথাসময়ে স্ক্যানিং করতে হবে।
শসা হলো কম ক্যালোরি সমৃদ্ধ সবজি। এই সবজির প্রায় পুরোটাই পানি (প্রায় ৯৬%)। সকালের নাস্তা থেকে রাতের খাবার পর্যন্ত, বিভিন্ন উপায়ে স্বাস্থ্যকর এবং হাইড্রেটিং খাবার তৈরি করতে শসা ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি ভিটামিন কে, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবারের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে, যা হাইড্রেশন ও সুস্থতায় সাহায্য করে। এর উচ্চ ফাইবার এবং জলীয় উপাদান হজমশক্তি উন্নত করে এবং পেট ফাঁপা রোধ করতে সাহায্য করে।
শসায় উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে কিউকারবিটাসিন এবং ফ্ল্যাভোনয়েড, প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে এবং কোষকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। শসা ভিটামিন কে সরবরাহ করে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, যা ক্যালসিয়াম শোষণ এবং হাড় মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শসার সঙ্গে খেলে শসার পুষ্টিগুণ আরও বেড়ে যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
টমেটো
গবেষণা অনুসারে, টমেটো লাইকোপিন এবং ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে বলে জানা গেছে। শসা এবং টমেটো অলিভ অয়েল এবং বিভিন্ন ভেষজের সঙ্গে মিশিয়ে স্বাস্থ্যকর সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। যা ডিটক্সিফিকেশন এবং হাইড্রেশনের জন্য উপযুক্ত। চাইলে এই সংমিশ্রণ স্যান্ডউইচ স্টাফিং হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন।
দই
দই প্রচুর প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং প্রোবায়োটিক যোগ করে এবং শসা থেকে প্রাপ্ত পানির সঙ্গে মিশে এটি অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য সহায়তা করে। শসার রায়তা বা স্মুদি তৈরি করতে পারেন। যা শীতল, ক্রিমি এবং হজম-বান্ধবও।
ছোলা
ছোলা উদ্ভিজ্জ প্রোটিন, আয়রন এবং ফাইবার সরবরাহ করে বলে জানা গেছে, যা শসার সঙ্গে মিলে আরও বেশি পুষ্টিকর হয়ে ওঠে। এই দুই খাবার একসঙ্গে খেলে তা দীর্ঘ সময় পেট ভরিয়ে রাখে এবং সুষম খাবারের বিকল্প হতে পারে। সেদ্ধ ছোলা, শসা, অলিভ অয়েল, কাঁচা মরিচ এবং পুদিনা পাতা একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।
পুদিনা বা তুলসী
এই ভেষজগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ এবং হজমে সহায়তা করে। সেইসঙ্গে এগুলো শসার শীতল প্রকৃতির পরিপূরক। সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো শসা-পুদিনা মিশ্রিত পানি বা তুলসী-শসার সালাদ যা ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং আপনাকে সতেজ বোধ করায়।
ভরা শরতে হঠাৎ বৃষ্টি আর রোদের পালা বদলে ঘরে ঘরে বাড়ছে জ্বর, সর্দি-কাশি, পেটের সমস্যা। এর সঙ্গে দেখা দিচ্ছে পানিশূন্যতা, যা হতে পারে রোদের তাপে ঘাম, শরীরচর্চা বা পরিশ্রমের পর পর্যাপ্ত পানি না খেলে। গুরুতর ক্ষেত্রে এটি প্রাণঘাতীও হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হয়। শরীর থেকে শুধু পানি নয়, হারিয়ে যায় প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ যেমন সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ক্লোরাইড। এর ফলেই দেখা দেয় ক্লান্তি, মাথা ধরা, দুর্বলতা— এমনকি শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
ডাবের পানি: প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়
পুষ্টিবিদরা বলেন, ডাবের পানি হলো একেবারে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও সোডিয়াম, যা অল্প পানিশূন্যতা দূর করতে কার্যকর। রোদে দীর্ঘক্ষণ হাঁটা, শরীরচর্চা বা উপবাসের পর এক গ্লাস ডাবের পানি শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরিয়ে আনে। এতে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট শরীরকে চাঙ্গা রাখে এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়।
স্যালাইন: গুরুতর অবস্থার নির্ভরযোগ্য সমাধান
তবে বমি, ডায়রিয়া বা আন্ত্রিকের কারণে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হয়ে গেলে তখন প্রয়োজন হয় স্যালাইন। এতে নির্দিষ্ট মাত্রায় সোডিয়াম, পটাশিয়াম ও গ্লুকোজ থাকে, যা দ্রুত শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে।
কতটা খাওয়া উচিত?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:
হালকা পানিশূন্যতায় ডাবের পানি যথেষ্ট কার্যকর। কিন্তু শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি ও লবণ বের হতে থাকলে স্যালাইনই সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প। এছাড়া লবণ–চিনি–দইয়ের পাতলা ঘোল বা পাতিলেবুর শরবতও শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক।
পুষ্টিবিদদের মতে, শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক ইলেক্ট্রোলাইট পানীয় বেছে নিলেই পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
প্রকৃতিতে হেমন্তের বাতাস বইতে শুরু করেছে। এর হাত ধরেই আসবে শুষ্কতার দিন। কারণ দরজার ওপারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে শীতকাল। আবহাওয়ার পরিবর্তনে এমন সময় বাড়তে থাকে দূষণের মাত্রাও। বিশেষ করে কমতে থাকে বাতাসের মান। যে কারণে তা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ফুসফুসের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিছু খাবার ও খাদ্যাভ্যাস ফুসফুসের পরিশ্রম কমিয়ে আপনাকে সহজে শ্বাস নিতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
১. হাইড্রেশন বজায় রাখুন
সুস্থ ফুসফুস বজায় রাখার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অভ্যাস শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মা পাতলা রাখতে সাহায্য করে, যা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেওয়া সহজ করে তোলে। ভেষজ চা, মধু দিয়ে গরম পানি এবং গ্রিন টি এক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অফ রেসপিরেটরি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, গ্রিন টি ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।
২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ করুন
ভিটামিন সি এবং ই-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল এবং শাক-সবজি দূষণের কারণে সৃষ্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে আপনার ফুসফুসকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। কমলা, বেরি, পালং শাক এবং বাদাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চমৎকার উৎস। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণ বৃদ্ধি করলে তা ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে।
৩. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই স্বাস্থ্যকর চর্বিতে প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি প্রদাহ কমিয়ে ফুসফুসের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। পুষ্টিবিদরা স্যামন, ম্যাকেরেল, তিসি এবং আখরোটের মতো ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৪. প্রতিরক্ষার জন্য মসলা
হলুদ, মৌরি, হলুদ এবং আদার মতো মসলা শক্তিশালী প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। এগুলো শ্বাসনালীতে দূষণকারী পদার্থের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। আদার মতো মসলা শ্লেষ্মা ভেঙে দেয়, যা আমাদের শ্বাস নেওয়া সহজ করে তোলে। মসলা ফুসফুসে রক্ত সঞ্চালনও উন্নত করে এবং প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত আদা, রসুন এবং হলুদ খাওয়ার পরামর্শ দেন।
৫. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরকে পরিষ্কার করতে এবং টক্সিন অপসারণে সাহায্য করতে পারে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের কার্যকারিতা বজায় রাখে। আমেরিকান থোরাসিক সোসাইটির একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার প্রাপ্তবয়স্কদের ফুসফুসের কার্যকারিতা উন্নত করে।
লিভার শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অভ্যন্তরীণ অঙ্গের মধ্যে একটি। এর কাজ হলো ডিটক্সিফাই করা, চর্বি ভেঙে ফেলা, পুষ্টি প্রক্রিয়াজাত করা এবং সিস্টেমকে সচল রাখা। আমাদের খাদ্যাভ্যাস, পরিবেশগত কারণ ইত্যাদি অনেক সময় লিভারকে অতিরিক্ত চাপে ফেলে। তবে লিভার সঠিকভাবে পরিষ্কার করার জন্য খুব বেশি কিছু করার প্রয়োজন হয় না। প্রক্রিয়াজাত খাবার বাদ দিয়ে সাধারণ কিছু খাবার প্রতিদিন খাওয়া হলে তা লিভারকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, লিভার ভালো রাখতে কোন ৫ খাবার প্রতিদিন খেতে হবে-
১. পেঁয়াজ
পেঁয়াজ সালফার যৌগ দিয়ে পূর্ণ যা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে, বিশেষ করে যখন লিভারের কথা আসে। এতে কোয়ারসেটিন নামে একটি উপকারী যৌগ রয়েছে, যা একটি উদ্ভিদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের কোষকে যেকোনো ধরনের অক্সিডেটিভ ক্ষতি এবং যেকোনো অঙ্গের প্রদাহ থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন পেঁয়াজ খেলে তা লিভারকে বর্জ্য বিপাকে সাহায্য করে এবং ডিটক্সিফিকেশন উন্নত করে।
২. বাঁধাকপি
বাঁধাকপির উপকারিতা জেনে আপনি অবাক হবেন। এটি লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য সেরা সবজির মধ্যে একটি। বাঁধাকপি একটি ক্রুসিফেরাস সবজি যা ডিটক্সিফাইং এনজাইম বৃদ্ধি করে। এতে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজম এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করে। এতে গ্লুকোসিনোলেট রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া এবং লিভারকে পরিশোধনকারী এনজাইম নিঃসরণে সহায়তা করে। যদি প্রতিদিন এক বা অন্য আকারে খাওয়া হয় তবে এটি ফ্যাটি লিভার তৈরিতে বাধা দেবে এবং প্রদাহ কমাবে।
৩. বিটেরুটের রস
লিভারের জন্য শক্তিশালী অস্ত্র বিটরুট পুষ্টিতে সমৃদ্ধ এবং লিভারকে ডিটক্সিফাইং করতে সহায়তা করে। বিটের রসে উপস্থিত বিটালাইন এবং নাইট্রেট রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং লিভারের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়। এই যৌগগুলো লিভার দ্বারা বিষাক্ত পদার্থ নির্মূল করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ নিরাময়ে সহায়তা করে। প্রতিদিন বিটের রস খেলে পিত্ত উৎপাদনও ভালো হয়, যা হজম এবং চর্বি বিপাকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. গ্রিন টি
আমরা সবাই গ্রিন টি-এর ওজন কমানোর উপকারিতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু আমরা হয়তো যা জানি না তা হলো, এর মৃদু কিন্তু শক্তিশালী লিভারের স্বাস্থ্য উপকারিতা। এতে ক্যাটেচিন রয়েছে, এই্ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারে চর্বি জমা কমায় এবং লিভারের এনজাইমের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাদের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। গ্রিন টি শক্তিও বাড়ায় এবং বিপাকক্রিয়ায় লিভারের কার্যকারিতা বজায় রাখে।
৫. কুমড়া
কুমড়া বিটা-ক্যারোটিন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ যা লিভারের টিস্যুকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এর কোমল পুষ্টি উপাদান খাবার হজমে সাহায্য করে যার ফলে শরীর সহজেই বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে পারে। কুমড়ায় থাকা ফাইবার কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমায় এবং লিভারে চর্বি জমা কমায়। কুমড়া পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেটের একটি ভালো উৎস, এগুলো সবই লিভার-বান্ধব পুষ্টি, যা লিভারের কার্যকারিতায় সহায়তা করে।