বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
১২ চৈত্র ১৪৩১
অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন

চিকিৎসক হওয়ার চাপে ওএমআর ছেঁড়ার ‘বানোয়াট গল্প

ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২২:৫৮

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটেনি। অভিযোগ তোলা শিক্ষার্থী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়ার ওপর পরিবারের পক্ষ থেকে ডাক্তার হওয়ার জন্য অতিরিক্ত চাপ থাকায় তিনি পর্যবেক্ষক কর্তৃক ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার গল্প বানিয়েছেন। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তে এমন তথ্য পাওয়ার দাবি করেছে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া তদন্ত প্রতিবেদন উত্থাপন করেন। সংবাদ সম্মেলনে তদন্ত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে সব তথ্য উপাত্ত সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরা হয়।

তদন্ত কমিটি জানায়, অভিযোগকারী হুমাইরা ইসলাম ছোঁয়া ও তার বাবা-মায়ের প্রদত্ত সাক্ষ্য বিবরণী পর্যালোচনায় স্পষ্ট হয় যে, শুরু থেকেই তার ওপর পরিবার ও সমাজের ডাক্তার হওয়ার প্রত্যাশার চাপ ছিল। এমনকি এর আগের বছরও এই শিক্ষার্থী পরীক্ষায় পাস করেননি। এ বছরও পাস করেননি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. টিটু মিয়া বলেন, সব সাক্ষ্য পর্যালোচনা ও প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তদন্ত কমিটি নিশ্চিত হয় যে, অভিযোগকারীর সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও (টেস্ট স্কোর ২৭.২৫) বাবাকে মায়ের পরামর্শে মিথ্যা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে আরও ভালো রেজাল্ট/স্কোর করে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির মিথ্যা প্রত্যয় ব্যক্ত করেন হুমাইরা। কিন্তু বাস্তবে পরীক্ষায় ৫৭টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যাবে না নিশ্চিত জেনে তার ব্যর্থতার দায় হল পরিদর্শকের উপর চাপিয়ে দেন। একই সঙ্গে ভর্তির সুযোগ লাভের আশায় এই মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক গল্প সাজান তিনি।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, বর্তমান সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মহোদয়ের সঠিক দিক নির্দেশনায় বিগত বছরসমূহের ধারাবাহিকতায় সবার আন্তরিকতা ও ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় একটি স্বচ্ছ ও সুন্দর পরীক্ষা পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রয়াসে তৃতীয় কোনো পক্ষের চক্রান্তের শিকার হয়েছেন কি না, তা উন্মোচনের সুপারিশ করা হলো।

পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাবা-মায়ের উচিত তাদের সন্তানদের এ ধরনের প্রেশার না দেওয়া।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পুরোনো ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ২০২৩–২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন। সংবাদ সম্মেলন শেষে চলে যাওয়ার সময় একজন পরীক্ষার্থী এবং তার পরিবারের সদস্যরা সামন্ত লাল সেনের পথ আগলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, ৯ ফেব্রুয়ারি ভর্তি পরীক্ষার সময় ওই পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন পরীক্ষাকেন্দ্রের একজন পর্যবেক্ষক।

নারী শিক্ষার্থীর কেন্দ্র ছিল রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র (শেখ কামাল ভবন, অষ্টম তলা)। পরীক্ষায় অসৎ উপায় অবলম্বনের সন্দেহে একজন পর্যবেক্ষক ওই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন বলে জানান হুমাইরা। পরে পর্যবেক্ষক তার ভুল বুঝতে পেরে নতুন ওএমআর শিট দেন বলেও দাবি করেন এ পরীক্ষার্থী। তার দাবি, তখন পরীক্ষা শেষ হতে আর মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি ছিল। অনুরোধ করার পরও পর্যবেক্ষক তাদের জন্য পরীক্ষার সময় বাড়াননি।


পাঁচ দফা দাবিতে খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

পাঁচ দফা দাবি নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন। এতে রোগীদের ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।

আজ রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মবিরতি চলছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) সভাপতি ডা. আরাফাত হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার ম্যাটসদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করেছে, যা ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি আত্মঘাতী। আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যখাতের বিপ্লব সাধনের জন্য পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছি।’

এছাড়া আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের এই কর্মবিরতি চলবে বলেও জানান আইডিএ সভাপতি ডা. আরাফাত হোসেন।

পাঁচ দফা দাবিগুলো হলো—

১. ‘এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না’—বিএমডিসির এই আইনের বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সালে হাসিনা সরকার ম্যাটসদেরকে বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া শুরু করেছে, তাদের বিএমডিসি থেকে রেজিস্ট্রেশন দেয়া অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

২. উন্নত বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কেউ ওটিসি ড্রাগ লিস্টের বাইরে ড্রাগ প্রেসকিবেল করতে পারবে না। রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ফার্মেসিগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো ওষুধ বিক্রি করতে পারবে না।

৩. স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসনে—

ক. দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্যপদ পূরণ করতে হবে। আলাদা স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো সপ্তম গ্রেডে নিয়োগ দিতে হবে।

খ. প্রতিবছর ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।

গ. বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য চিকিৎসকদের বয়সসীমা ৩৪ বছর করতে হবে।

৪. সকল মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) ও মানহীন সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ করে দিতে হবে। এরইমধ্যে এসএসসি পাশ করা (ম্যাটস) শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রহিত করে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫. চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।


পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ উদ্যোগ সরকারের

অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে শূন্য পদ পূরণে ৫ হাজার চিকিৎসক নিয়োগে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

আজ রোববার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রথম দিনের দ্বিতীয় কার্য-অধিবেশন শেষে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী) অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের এ অধিবেশন হয়।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘ডিসিরা নানান রকমের প্রশ্ন করেছেন। বিশেষ করে হাসপাতাল সংক্রান্ত সমস্যা, মেডিকেল কলেজ সংক্রান্ত সমস্যা, নানান সমস্যার কথা বলেছেন। সেই সমস্যাগুলো সম্পর্কে আমরা জানি। আমরা চেষ্টাও করছি সেগুলো এড্রেস করার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধমূলক কিছু করা উচিত। যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিক হচ্ছে, এর কারণগুলো কি, এগুলোর জন্য আমরা কি পদক্ষেপ নিতে পারি, মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে কি করতে পারি? ছোট ছোট বাচ্চারা এখন ই-সিগারেটের অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। এগুলো নিয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে পারি। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আইন আছে কিন্তু আইনের প্রয়োগটা নেই।’

‘আইনের প্রয়োগটা দিয়ে যারা দুষ্টামি করছে, তাদেরকে কিভাবে শায়েস্তা করা যায়, তাও আমরা তাদের বলার চেষ্টা করেছি,’ বলেন নুরজাহান বেগম।

বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ‘তাদের (ডিসি) দিক থেকে যেসব ইনপুট এসেছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, কিছু জায়গায় অসঙ্গতি যেমন- জনবলের অভাব রয়েছে। অবকাঠামো তৈরি হয়ে আছে, সেগুলো ফাংশনাল করা যাচ্ছে না। এই সমস্যাগুলোর কথা তারা বলেছেন। কোথাও ৫০০ শয্যার জায়গায় এক হাজার ২০০ রোগী থাকছে। কোথাও কোথাও ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি এগুলো প্রতিষ্ঠা করার চাহিদা রয়েছে বা এগুলো কার্যকর করার জন্য বলেছেন।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের বেআইনি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, এসব ক্ষেত্রে ওনারা (ডিসি) আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে যেন আমাদের স্বাস্থ্য কাঠামোর পাশে থাকেন, সেই বিষয়ে বলা হয়েছে। সেটা মোটা দাগে এই স্বাস্থ্যের যে জনবল কাঠামো, সেটা নিয়ে আরও ভালো স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া সম্ভব। আমরা তাদের কাছে এ আহ্বান জানিয়েছি।’

‘স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা একটি রাষ্ট্রের কল্যাণমুখী রূপান্তরের মৌলিক উপাদান। আমরা আশা করব জেলা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশাসন রাষ্ট্রের কল্যাণমুখী রূপান্তরে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’

বিশেষ সরকারী বলেন, ‘আমরা গত কয়েকদিনে স্পষ্ট দেখেছি যে, এন্ট্রি পদে প্রায় ৫ হাজারের বেশি পদে চিকিৎসক প্রয়োজন। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ পদ এবং অন্যান্য আধুনিক হাসপাতালগুলোতে আমাদের পদের প্রয়োজনীয়তা আছে। পদ সৃষ্টি এবং এর আর্থিক সংশ্লেষ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। আমরা ইতোমধ্যে পাঁচ হাজার পদ সৃষ্টির জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছি। ইউনিয়নেও যেমন পদের ঘাটতি রয়েছে, তেমনি মেডিকেল কলেজেও রয়েছে।’

অধ্যাপক সায়েদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে চেষ্টা করছি আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। অল্প দিনে যদি এই উদ্যোগটি সফল হয়; অল্প দিনে বিশেষ বন্দোবস্তে যদি আমরা নতুন পদে জনবল নিয়োগ করতে পারি; তখন এ সমস্যা থেকে উত্তরণ হবে।’

‘শূন্য পদ পূরণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এখন সর্বোচ্চ অ্যাফোর্ড দিচ্ছে। চিহ্নিত করে শূন্য পদ পূরণে যেগুলো স্থানীয় পর্যায়ে সম্ভব সেগুলো স্থানীয় পর্যায়ে, যেগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সম্ভব সেগুলো পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পূরণ করা হবে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই শূন্য পদপূরণ আমাদের একটি অগ্রাধিকার। যেসব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসকের সৃজন করা প্রয়োজন, অন্যান্য ক্ষেত্রে শূন্য পদপূরণ অগ্রাধিকার।’

এক প্রশ্নের জবাবে বিশেষ সহকারী বলেন, আহতদের চিকিৎসা নিয়ে যেটুকু অসন্তোষ দেখা যাচ্ছে, আমরা মনে করি ১২-১৪ হাজার আহতের তুলনায় সে সংখ্যাটা আসলে খুবই কম। অসন্তোষের মাত্রা কোনোভাবেই এক শতাংশও না।

ওষুধের ভেজাল রোধ করে মান রক্ষায় সব জেলায় মিনি ল্যাব সম্প্রসারণ করতে হবে বলেও জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী।

স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ৪০ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠিয়েছি। আমরা কখনোই টাকার দিকে তাকাইনি। আমরা তাদেরকে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তাদের চিকিৎসা করার জন্য আমরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ডাক্তারদেরও এনেছি।’

তিনি বলেন, আমরা তাদের ট্রমাটা ওইভাবে এড্রেস করতে পারছি না। এটা (চিকিৎসা নিয়ে অসন্তোষ) আস্তে আস্তে কমে যাবে, আমরা তাদের সমন্বিতভাবে পুনর্বাসনের চেষ্টাও করছি। আমরা তাদের পুনর্বাসন করলে আর অসন্তোষ থাকবে না।


দেশে একমাত্র এইচএমপিভি আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) আক্রান্ত নারী সানজিদা আক্তার মারা গেছেন। মহাখালী সংক্রামক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।

তারা বলেন, ‘এইচএমপিভির একটা কেসই আমরা এ বছর পেয়েছি। এই রোগী গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় মারা যান। শুধু এইচএমপিভির কারণে মারা গেছেন, তা মনে হচ্ছে না।’

‘এর সঙ্গে আরও একটি অর্গানিজম পেয়েছি। এ ছাড়া তার অনেকগুলো জটিলতা ছিল। শুধু এইচএমপিভি ভাইরাসের কারণে তিনি মারা গেছেন এমনটি বলা যাবে না। এইচএমপিভি ভাইরাসে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

এ বিষয়ে দুপুর সোয়া ১ টায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্রিফ করবেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান।

গত রোববার (১২ জানুয়ারি) রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ভাইরাসটিতে একজন নারী আক্রান্ত হয়েছেন, যার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় বলে জানা গেছে।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘এইচএমপিভি নামক ভাইরাসটিতে প্রতিবছরই দু-চারজন রোগী আক্রান্ত হচ্ছেন।’

চীনের উত্তরাঞ্চলে রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এতে আরেকটি মহামারির ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় নাগরিকদের পূর্বসতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (সিডিসি)।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিয়াং বলেন, শীত মৌসুমে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগটির সংক্রমণ বেশি ঘটে। তবে আগের বছরগুলোর তুলনায় এবার কমই ছড়িয়েছে।


দেশে প্রথমবারের মতো ৫ জনের শরীরে শনাক্ত রিওভাইরাস

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

দেশে প্রথমবারের মতো রিওভাইরাস শনাক্ত করেছে ইনস্টিটিউট অফ এপিডেমিওলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর)।

৫ জনের শরীরে এই ভাইরাস শনাক্ত হলেও কারও অবস্থাই গুরুতর ছিল না। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রিওভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণ নেই।

এছাড়া ২০২৪ সালে নিপা ভাইরাস লক্ষ্মণ নিয়ে আসা রোগীদের পরীক্ষা করে ৫ জনের শরীরে এটি পাওয়া যায়।

আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরীন ইউএনবিকে বলেন, ‘এটা আমরা ২০২৪ সালে পেয়েছি। আক্রান্তদের মধ্যে কেউই গুরুতর অসুস্থ হননি। চিকিৎসার পর সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।’

শীতে খেজুরের কাঁচা রস পান করার পর প্রতিবছর অনেকেই নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসেন। যে ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস পাওয়া গেছে তারা সবাই নিপা ভাইরাস নেগেটিভ ছিলো। এরা শনাক্ত হয় ২০২৪ সালে। এই রোগটি তেমন বিস্তার লাভ করেনি। দেশে ওই ৫ জনই প্রথম।

যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সহযোগিতায় আইইডিসিআরের নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।


আশার আলো দেখাচ্ছে ক্যানসারের টিকা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ক্যানসারের চিকিৎসায় টিকা নিয়ে দীর্ঘদিনের গবেষণার পর অবশেষে আশাব্যঞ্জক ফলাফল পেতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিশেষায়িত এই টিকা মূলত ইমিউন সিস্টেম বা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রশিক্ষণ দিয়ে টিউমার চিহ্নিত করতে সহায়তা করে। এর পরীক্ষামূলক ব্যবহার নানা ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে ইতিবাচক ফলাফল দেখাচ্ছে।

ক্যানসারের বিরুদ্ধে ইমিউন সিস্টেম সক্রিয় করার ধারণাটি কিন্তু নতুন নয়। ১৯শ শতকের শেষভাগে নিউইয়র্কের সার্জন উইলিয়াম কোলি আবিষ্কার করেছিলেন, ব্যাকরেটিয়ার সংক্রমণ ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। কোলি তার গবেষণায় প্রায় এক হাজার রোগীর শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করিয়ে চিকিৎসা করেছিলেন, যার অনেক ক্ষেত্রেই সফল ফলাফল পাওয়া যায়।

বর্তমানে ক্যানসার টিকার গবেষণা নতুন ধাপে পৌঁছেছে। আধুনিক বিজ্ঞানীরা টিউমারের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করছেন- কোন মিউটেশন বা নিওঅ্যান্টিজেন ইমিউন সিস্টেমকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় করতে পারে। এই প্রক্রিয়ায় আরএনএ ব্যবহার করে শরীরের কোষকে ক্যানসারের নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেন তৈরি করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর ফলে ইমিউন সিস্টেম ক্যানসারের কোষগুলোকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়।

ব্যক্তিকেন্দ্রিক টিকার সাফল্য

দুই মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি মডার্না এবং মার্কের তৈরি একটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক (প্রত্যেকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি) এমআরএনএ ক্যানসার টিকা (এমআরএনএ-৪১৫৭ বা ভি৯৪০) সম্প্রতি মেলানোমা (এক ধরনের স্কিন ক্যানসার) রোগীদের ওপর সফলভাবে পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এই টিকা ক্যানসার পুনরাবৃত্তি বা মৃত্যুর ঝুঁকি প্রায় অর্ধেক কমিয়ে এনেছে। এছাড়া, একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অন্যান্য ক্যানসারের বিরুদ্ধেও পরীক্ষামূলক কাজ চলছে।

উজ্জ্বল সম্ভাবনা

গবেষকরা আশা করছেন, ভবিষ্যতে কেমোথেরাপি ও অস্ত্রোপচারের মতো জটিল চিকিৎসার বিকল্প হয়ে উঠতে পারে ক্যানসারের টিকা। পাশাপাশি, প্রতিরোধমূলক টিকা তৈরি করেও ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের সুরক্ষিত করা সম্ভব হতে পারে। ২০২৪ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ডিম্বাশয়ের ক্যানসার প্রতিরোধে একটি টিকা তৈরির জন্য অর্থায়ন পেয়েছেন।

তবে, এই পথে নানা চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক টিকা তৈরি এখনো বেশ সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ। ‘অফ-দ্য-শেল্ফ’ টিকা উন্নয়নের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, ক্যানসার টিকা নিয়ে ২০২৫ সাল হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ বছর। উইলিয়াম কোলির দৃষ্টিভঙ্গি এক শতাব্দী পর বিজ্ঞানীদের নতুন চিকিৎসা পদ্ধতির পথ দেখাচ্ছে। তবে এই টিকা কতটা কার্যকর হবে, তা নিশ্চিত হতে আরও কিছু গবেষণার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট


ডেঙ্গু: প্রাণে বাঁচলেও নীরবে শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন নারীরা

গত বছর ডেঙ্গুতে প্রাণ হারানো ২৯৫ জন নারীর মধ্যে বেশিরভাগেরই বয়স ছিল ২৬ থেকে ৪০ বছর। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আলেয়া বেগম। রাজধানীতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি। ঘর মোছা থেকে শুরু করে কাপড় ধোয়া—অত্যধিক খাটুনির পর দিন শেষে তার শরীর ব্যথা হবে, এটাই স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছিলেন ২৯ বছর বয়সী এই নারী। তবে একদিন হঠাৎ করে জ্বরে পড়ে ব্যথার চোটে তিনি যখন আর হাত-পা নড়াতে পারছিলেন না, তখন গুরুতর কিছু যে হয়েছে তা তার বুঝতে বাকি ছিল না।

শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটলে তিনি একটি সরকারি হাসপাতালে গিয়ে পরীক্ষা করালে ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ততক্ষণে এই রোগে তিনি কাবু হয়ে গেছেন, যা পরে তার জীবিকার ওপরও প্রভাব ফেলে।

আলেয়ার কথায়, ‘পরের বাড়িতে কাম করি। কাপড় ধুই, ঘর পরিষ্কার করি; প্রথমে কামের চাপের কারণেই শরীরে ব্যথা হইছে বলে মনে হইছিল। তাই এ নিয়ে মাথা ঘামাইনি।’

‘অসুস্থ হইয়া আমি কয়দিন কামে যাইতে পারিনি, এর মধ্যে তারা অন্য কামের লোক ঠিক কইরা ফেলছে। একে তো রোগে ট্যাকা-পয়সা খরচ হয়ে গেছে, তার ওপর কাজও নাই; খুবই বিপদে পইড়া গেছিলাম।’

ডেঙ্গু থেকে সেরে ওঠার তিন মাস অতিবাহিত হলেও এখনও শরীরের বিভিন্ন সংযোগস্থলে ব্যথা অনুভব করেন আলেয়া, যা ডেঙ্গুর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ডেঙ্গুর কারণে দেশের নারীরা কোন ধরনের শারীরিক সমস্যা ও জটিলতার মধ্যে পড়ছেন, আলেয়ার গল্পটি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। গত বছর দেশে ৫৭৫ জনের প্রাণ কেড়েছে এডিস মশাবাহিত এই রোগ, নারীরা যার উল্লেখযোগ্য শিকার।

ডেঙ্গুতে নারীদের দুর্ভোগ বেশি কেন?

২০২৪ সালে ডেঙ্গুতে প্রাণ হারানো ৫৭৫ জনের মধ্যে ২৯৫ জন ছিলেন নারী, যাদের বেশিরভাগের বয়স ২৬ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। হরমোনের মতো জৈবিক পার্থক্য এবং রক্তস্বল্পতা ও উচ্চ রক্তচাপের মতো শারীরিক জটিলতা নারীদের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ডেডিকেটেড হাসপাতালের বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিয়া সুলতানা রেশমা বলেন, ‘নিম্ন আয়ের পরিবারের নারীরা ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে কিছু পদ্ধতিগত বাধার সম্মুখীন হন। এতে তাদের চিকিৎসা পেতে দেরি হয়ে যায়। এর ফলে পরবর্তীতে তারা গুরুতর (শারীরিক) জটিলতার মধ্যে পড়েন।’

নারীর সামাজিক অবস্থান ও মূল্যায়নের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে বলে মনে করেন এই চিকিৎসক। এ বিষয়ে ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের সহকারী অধ্যাপক সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমাদের দেশের নারীদের বেশিরভাগই নিজের স্বাস্থ্যের চেয়ে পরিবারকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। এই বয়সী নারীদের (২৬-৪০) মধ্যে এই প্রবণতা আরও বেশি লক্ষ করা যায়।’

অর্থনীতিতে নারীর অসুস্থতার প্রভাব

দেশের মোট কর্মক্ষম জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশই (২৬ থেকে ৪০ বছর বয়সী) নারী। প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রেখে চলেছেন। ফলে তাদের অসুস্থতায় শুধু নির্দিষ্ট পরিবারটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব।

আলেয়া বেগমের জন্য ডেঙ্গুর আর্থিক প্রভাব ছিল তাৎক্ষণিক ও কঠোর। অসুস্থ হওয়ার পর তিনি জীবিকা হারিয়ে ফেলেন।

ওই সময় আমার চোখ ও ঠোঁট ফুইলা গেছিল। হাঁটা তো দূরে থাক, উইঠা দাঁড়াইতেও কষ্ট হইত’, বলছিলেন এই গৃহকর্মী। তবে সুস্থ হয়ে তিনি কাজে ফিরে যখন দেখেন যে বাসাগুলোতে নতুন গৃহকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তখন তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। দুর্বল শরীর নিয়ে নতুন করে কাজ খুঁজে পেতে ঘাম ছুটে গিয়েছিল বলে জানান তিনি।

সময়মতো চিকিৎসার ঘাটতি

আলেয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা কী ধরনের পদ্ধতিগত সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন। আর্থিক সমস্যা, এমনকি দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সেবাপ্রার্থীদের দীর্ঘ লাইনও নারীর স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে বিলম্ব হওয়ায় প্রভাব রাখে।

সচেতনতা ও স্বাস্থ্যসেবার দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক সাদিয়া ইসলাম বলেন, ‘গ্রামের অনেক নারী জানেনই না প্লাটিলেট কাউন্ট বা সিবিসি টেস্ট কী।’

উত্তোরণের পথ

নারীর স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে ডেঙ্গুর ক্ষেত্রে নারীদের প্রতি আরও আন্তরিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। ডেঙ্গু নিয়ে জনসচেতনতা বিষয়ক কর্মসূচিতে রোগটির লক্ষণ ও প্রতিরোধের বিষয়ে নারীদের জানানো ও সচেতন করার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে নারীদের সচেতনতা বাড়ানো এবং আক্রান্ত নারীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস বুথের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দিয়েছেন অধ্যাপক সাদিয়া।

তার মতে, ‘এসব বুথ থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে তাৎক্ষণিক দিকনির্দেশনাসহ স্যালাইন ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা যেতে পারে।’

‘আপনি প্রথমে ডাক্তার দেখাবেন, তারপর পরীক্ষা করাবেন, তারপর আবার ডাক্তারের কাছে যাবেন—এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। নারীদের জন্য এটি আরও বেশি পীড়াদায়ক। তবে পুরো প্রক্রিয়াটিকে যদি সুবিন্যস্ত করে এক জায়গায় নিয়ে আসা যায়, তাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলতে পারে।’

ডেঙ্গু থেকে নিস্তার পেলেও আলেয়ার মতো নারীরা এমন পদক্ষেপের ফলে বিশেষভাবে উপকৃত হতে পারেন।

২০২৪ শেষ হয়ে নতুন বছর শুরু হলেও ডেঙ্গুর চোখ রাঙানি যেখানে একটুও কমেনি, সেখানে নারীর জীবন ও জীবিকা রক্ষায় পদ্ধতিগত পরিবর্তনের বিকল্প নেই। এতে করে জীবনদায়ী এই রোগ থেকে সেরে উঠলেও ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সর্বোপরি অর্থনৈতিকভাবে যে ক্ষতি হয়, তা পাশ কাটানোর সুযোগ পাবেন আলেয়ার মতো অসংখ্য নারী।


ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে চা ও কফি

প্রতিদিন চার কাপের বেশি ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করলে গলার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে
আপডেটেড ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪ ০০:০২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

অনেকেই প্রতিদিন চা ও কফি পান করেন। এই অভ্যাসের একটি ভালো দিক খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাদের ভাষ্য, নিয়মিত কফি এবং চা পান করলে মুখ, গলা ও কণ্ঠনালি সম্পর্কিত ক্যানসারের ঝুঁকি কমতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।

পূর্ববর্তী ১৪টি গবেষণার ২৫ হাজারেরও বেশি রেকর্ড সংগ্রহ করেন গবেষকেরা। সেগুলোকে একত্রে মূল্যায়ন করে তারা এটি নির্ধারণ করার চেষ্টা করেন যে, মাথা ও গলার বিভিন্ন টিউমারের সঙ্গে রোগীদের খাদ্যাভ্যাসের কী সম্পর্ক রয়েছে।

গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন চার কাপের বেশি ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করলে মাথা বা গলার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ১৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। তবে অনেকেই কফি পছন্দ করেন না। তবে চা প্রেমীদের জন্যও ভালো খবর রয়েছে।

বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যা কিছু আমরা খাই তা আমাদের পেট এবং ফুসফুসের দিকে যাওয়ার পথে টিউমার-সৃষ্টিকারী মিউটেশনকে (জিনগত পরিবর্তন) উসকে দিতে পারে। যারা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করেন, তাদের মাথা ও গলা স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা (এইচএনএসসিসি) হওয়ার ঝুঁকি ১০ গুণ বেশি। প্রতিদিন যে পরিমাণ অ্যালকোহল পান করা হয়, তার ওপর ভিত্তি করে এই ঝুঁকি আরও বাড়ে।

অপরদিকে চা এবং কফির মতো জনপ্রিয় পানীয়গুলোতে ক্যানসার এবং প্রদাহবিরোধী শক্তিশালী উপাদান থাকে। এসব পানীয় ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদানগুলোর কিছু প্রভাব থেকে সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

এই বিষয়ের ওপর গবেষণা কিছুটা অসম্পূর্ণ ছিল। কিছু গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে, প্রতিদিন মধ্যম থেকে উচ্চ স্তরের কফি খাওয়া কিছু সুরক্ষামূলক প্রভাব সৃষ্টি করতে পারে। তবে এই ফলাফল অন্য গবেষণার ফলাফলের বিপরীত। অনেক গবেষণায় মুখ এবং গলার ক্যানসার প্রতিরোধে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি কফি। একইভাবে কিছু গবেষণায় চা-কে মাথা ও গলার ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর সঙ্গে সম্পর্কিত দেখা গেছে। তবে অন্য কিছু গবেষণায় তা দেখা যায়নি।

গবেষকরা নতুন তথ্য এবং বড় পরিসরের ডেটা ব্যবহার করে। যেখানে ৯ হাজার ৫০০ এর বেশি মাথা ও গলা ক্যানসারের রোগী এবং প্রায় ১৬ হাজার সুস্থ ব্যক্তির তথ্য ছিল। কফি এবং চা খাওয়ার পর এগুলো যেসব কোষগুলোকে স্পর্শ করে তা পর্যবেক্ষণ করে গবেষকেরা। সেই কোষগুলো ক্যানসারের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত পরিষ্কারভাবে বুঝতে চেয়েছিলেন তারা।

গবেষণায় দেখা যায়, যারা প্রতিদিন ৪ কাপ বা তার বেশি ক্যাফেইনযুক্ত কফি পান করতেন, তাদের মুখের ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ৩০ শতাংশ এবং গলার ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ২২ শতাংশ কম ছিল। এ ছাড়া, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ কাপ কফি পানের ফলে গলার নিচের অংশে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়।

কফির উপকার পেতে তাতে ক্যাফেইন থাকা জরুরি নয়। মুখগহ্বরের ক্যানসার ২৫ শতাংশ কমার সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল ডিক্যাফ কফি। চা পান করলে গলার নিচের অংশে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৩০ শতাংশ কমে। কিন্ত দুই বা তিন কাপ চা পান করলে কণ্ঠনালী ক্যানসারের ঝুঁকি ৩৮ শতাংশ বাড়তে পারে। তবে এটি কেন ঘটে তা স্পষ্ট নয়।

বিশ্বের অনেক ধনী দেশে মাথা ও গলা ক্যানসার কমে যাচ্ছে। মানব প্যাপিলোমাভাইরাস (এইচপিভি) এর বিরুদ্ধে টিকা দেওয়ার মাধ্যমে জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এই রোগের অন্যতম সাধারণ কারণ থেকে সুরক্ষিত হচ্ছে। তবে, যেসব দেশে সহজ এবং সস্তায় স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না, সেসব দেশের মানুষের মাথা ও গলার ক্যানসার হওয়ার সৃষ্টি বেশি। এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর জনস্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

প্রতি বছর প্রায় ৯ লাখ মানুষের মাথা ও গলার ক্যানসার হয়। এই ধরনের ক্যানসারে বার্ষিক মৃত্যুর সংখ্যা তার প্রায় অর্ধেক। যারা বেঁচে থাকেন, তাদের মুখ বিকৃত হয়ে যেতে পারে। এর ফলে তারা কথা বলার ও খাবার গেলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে।

ইউটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় রোগ বিজ্ঞানী ইউয়ান-চিন আ্যমি লি বলেন, ‘যদিও কফি এবং চা পান করার মাধ্যমে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর বিষয়ে আগে কিছু গবেষণা হয়েছে। এই গবেষণাটি মাথা ও গলার ক্যানসারের বিভিন্ন জায়গায় তাদের বিভিন্ন প্রভাব দেখিয়েছে। এতে এমনও দেখা গেছে যে, ডিক্যাফ কফিরও কিছু ভালো প্রভাব রয়েছে।

ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কফি এবং চা কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে তা আরও ভালোভাবে জানার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন বলে অ্যামি লি দাবি করেন। গবেষণাটি ‘ক্যানসার’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট


ডেঙ্গুতে আরও ৪ মৃত্যু, হাসপাতালে ২৪১ জন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫ জনে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৪১ জন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৮ হাজার ১৮৮ জনে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত চারজনের সবাই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার বাসিন্দা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২১ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৬১ জন রয়েছেন। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৮ জন, ময়মনসিংহে ৮ জন, রংপুরে একজন ও সিলেটে দুইজন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৮ হাজার ১৮৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী। একই সময়ে ৫৪৫ জন ডেঙ্গুরোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৭০ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৩০ শতাংশ পুরুষ।

২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন ৩ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর ১ হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।


ডেঙ্গুতে ঝরল আরও দুই প্রাণ, হাসপাতালে ভর্তি ৪৭৮

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছর মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩১ জন। এই ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭৮ জন, ফলে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ৭০৬ জনে। সোমবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ২ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একজন রয়েছে। হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩৫, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪১ ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাহিরে) ১০৩, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১০৪, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৮৮, খুলনা বিভাগে ৬০, রাজশাহী বিভাগে ৩৩, ময়মনসিংহে ৭, রংপুরে ৪ এবং সিলেটে ৩ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৬ হাজার ৭০৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী। একই সময়ে ৫৩১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৪০ শতাংশ পুরুষ।

প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গেল বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।


ডেঙ্গুতে আরও ৭ মৃত্যু, হাসপাতালে ৫৯৬ জন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও সাত জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এডিস মশাবাহিত এই জ্বরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৫২৯। একই দিন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতলে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন আরও ৫৯৬ জন। এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ২২৮ জনে। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত সাত জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের (সিটি করপোরেশনের বাইরে) একজন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তিন জন, ময়মনসিংহের একজন ও রাজশাহীর একজন রয়েছেন।

এছাড়া হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩১, চট্টগ্রাম বিভাগে ৬৭, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১৩৬, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৯৮, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩০, খুলনায় ৭২, রাজশাহীতে ৩২, ময়মনসিংহে ২০, রংপুরে ৮ এবং সিলেটে ২ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন। দেশের ইতিহাসে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ও মৃত্যুবরণ করেছেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন। ২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে এডিস মশাবাহী এই রোগে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। সে বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল।


ডেঙ্গুতে ঝরল আরও ৫ প্রাণ, নতুন করে শনাক্ত ৫৬২

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে এই সময়ে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে শনিবার পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, হাসপাতালে নতুন ভর্তি হওয়াদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৫৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ৬৪ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৩ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৩৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪৭ জন রয়েছেন। এ ছাড়া রাজশাহী বিভাগে ৩৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন এবং সিলেট বিভাগে ৪ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে গত এক দিনে সারা দেশে ৫০৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৯২ হাজার ৭০২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৫ হাজার ৬৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৫২২ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।


ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ১৮৬

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিনই মৃত্যু হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চলতি বছর এই সংখ্যা রেকর্ড করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৮৬ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১৭ জন এবং শনাক্ত রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ৭০ জনে।

শুক্রবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া তিনজনই ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের। এছাড়া হাসপাতালে নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৪, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪০, ঢাকা উত্তর সিটিতে ৪২, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৬৭, খুলনা বিভাগে ১৭, ময়মনসিংহে ১০ ও সিলেট বিভাগে একজন রয়েছেন।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৯৫ হাজার ৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যার মধ্যে ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৬ দশমিক ৯০ শতাংশ নারী। একই সময়ে ৫১৭ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, যাদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ নারী এবং ৪৮ দশমিক ৪০ শতাংশ পুরুষ।

প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।

আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১ লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।


ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সারা দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত রোগী ও মৃতের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। পাশাপাশি এই সময়ে এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৫৭০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ল ৫১৪ জনে। মারা যাওয়াদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা বেশি। এ ছাড়া চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৯৪ হাজার ৮৮৪ জন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা বেশি।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ১৯৭ জন ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছেন। এর বাইরে (সিটি করপোরেশন বাদে) ঢাকা বিভাগে ১৩৮ জন, খুলনা বিভাগে ৬৪ জন, বরিশাল বিভাগে ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭ জন, সিলেট বিভাগে দুইজন ও রংপুর বিভাগে একজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১৭০৫ জন মৃত্যুবরণ করেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।


banner close