দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সেজন্য তাদের প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এ জন্য দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি ঠিকভাবে কাজ করে তাহলেই এটা সম্ভব হবে। আমি এ জন্য আপনাদের যত রকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করব। আপনারা আমাকে সেবা দিন।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ আলম বলেন, ‘দেশে ডাক্তারের সংখ্যা ১০ হাজার থেকে বেড়ে ৩০ হাজার হয়েছে। বায়োমেট্রিক ব্যবস্থা শুরু করায় অফিসে উপস্থিতি বেড়েছে। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আছে ৫০০টি। এর মধ্যে ৫০ শয্যার হাসপাতাল ৩৭৬টি। প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি বেড়েছে, শিশু মৃত্যুহার কমেছে। ইপিআই টিকাদান প্রায় ৯৪ শতাংশ সফল হয়েছে। রাতকানা রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বর্তমানে ৫ বছরের কম বয়সী খর্বকায় শিশুর জন্মের সংখ্যা ২৪ শতাংশে নেমে এসেছে।’
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। তিনি স্বাস্থ্য ও পুষ্টিসেবা পাওয়াকে জনগণের মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের কর্তব্য হিসেবে সংবিধানে সংযোজনের পাশাপাশি প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব প্রদান করেন। চিকিৎসাসেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন প্রসঙ্গে আলোচকরা বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। যার ফলে গত ১৫ বছরে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস, গড় আয় বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণায়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. জিয়াউদ্দিন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এ জেলার সাধারণ মানুষের একমাত্র স্বাস্থ্যসেবার ভরসার স্থল নওগাঁ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল। সেবাপ্রত্যাশীদের তুলনায় শয্যা, চিকিৎসক ও সরঞ্জাম সংকট লেগেই আছে। তবুও সাধারণ, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষরা আসেন সেবা নিতে। সরকারি এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।
সরেজমিনে গিয়ে মিলেছে তার প্রমাণও। জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চলছে টিকিট বাণিজ্য। টিকিটের দাম ১০ টাকা নির্ধারিত হলেও রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত।
২৫০ শয্যার এই জেনারেল হাসপাতালে নওগাঁর ১১ উপজেলা ছাড়াও বগুড়ার আদমদিঘী, জয়পুরহাটের আক্কেলপুরসহ আশেপাশের অনেক জেলা ও উপজেলা থেকেও রোগীরা আসেন সেবা নিতে।
জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ঘাটনগর থেকে দুদিন আগে আমাশয়জনিত কারণে শয্যা না পেয়ে মেঝেতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রুপালী রানি। তার ছেলে আকাশ কুমার জানান, ‘ভর্তি ফি ২০ টাকা এবং জরুরি বিভাগে প্রথম ডাক্তার দেখানোর জন্য ১৫ টাকা নিয়েছেন কাউন্টারে।’
সদর উপজেলার বক্তারপুরের রিমু খাতুন ভর্তি হয়েছেন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। রিমুর দুলাভাই আল আমিন হোসেন বলেন, ‘ফি ২০ টাকা নিয়েছেন। বাকি টাকা ফেরত চাইলে তারা বলেন, খুচরা নাই।’
এদিকে জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে ভর্তি রোগীর কাছ থেকে ১০ টাকার বিপরীতে নেওয়া হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শুধু টিকিট বাণিজ্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধতা নয়, এখানে পেইংবেইড ও কেবিনের জন্য রোগীদের গুণতে হয় বাড়তি টাকা। নির্ধারিত ফির বাইরে বাড়তি টাকা নিয়ে থাকেন দায়িত্বরত স্টাফরা।
সদর উপজেলার শিবপুর এলাকায় প্রফুল্ল কুমার বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে ভর্তি করালাম। প্রথমে ১০ টাকা দিয়ে টিকিটি কেটে পরে ভর্তি ফি নিয়েছেন ৩০ টাকা। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার তো নিয়ম নাই তবুও তারা নিয়েছে। কিছু বলার নাই।’
আরিফ চৌধুরিসহ হাসপাতালে আসা আরও বেশ কয়েকজন জানান, টিকিট কাউন্টারে বাণিজ্য হয়। অতিরিক্ত ফি নেওয়া হয়। দায়িত্বরতদের দৃষ্টি আকর্শন করছি যাতে বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখেন।
জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টারে দুজন করে ৪ জন পালাক্রমে দায়িত্ব পালন করেন। তারা আউটসোর্সিং হিসেবে কাজ করছেন। মূলত জরুরি বিভাগ থেকে তোলা বাড়তি টাকা ভাগবাঁটোয়ারা করেন নিজেরাই।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে টিকিট কাউন্টারে দায়িত্ব পালন করা মো. মুমিনুল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয় না। অনেক সময় খুচরা টাকা থাকে না। সেবাগ্রহীতারা ৫০০ বা ১০০ টাকা নোট দিলে পরবর্তীতে তারা আবার বাকি টাকা ফেরত নিয়ে যায়। গত সোমবার আমি নিজে ২০ টাকার নোট দিয়েছিলাম আপনি ১৫ টাকা ফেরত না দিয়ে দ্রুত অন্য রোগীদের টিকিট দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বলেন খুচরা নাই। এমন প্রশ্নের জবাবে এ প্রতিবেদককে বলেন, তখন আমি দায়িত্বে ছিলাম না, মনে নাই।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরি বলেন, অভিযোগগুলোর সত্যতা রয়েছে। এক রোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে একজনের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
স্পষ্টভাবে বলা আছে জরুরি বিভাগের টিকিট ৫ টাকা, তারা কেন ১০ টাকা বা তার বেশি নেবে। বিশেষ করে ৫ টাকার সিলমোহর টিকেটের ওপর ব্যবহার করতে বলা হয়েছে তাদের। আমরা নিয়মিত বিষয়গুলো মনিটরিং করব।
কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিস। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বড় একটি অংশ এ রোগে ভুগছেন। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশু ও কিশোরদের মধ্যেও এর প্রকোপ বেশি দেখা দিচ্ছে। এতে অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চরম আতঙ্ক।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে প্রায় দুই থেকে আড়াই শতাধিক চর্মরোগে আক্রান্ত রোগী থাকে। এদিকে প্রায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে কোনো চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন অন্যান্য বিভাগের চিকিৎসকরা।
আক্রান্তদের অনেকে প্রথমে গ্রামের ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনে ব্যবহার করছেন। কিন্তু সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় অবস্থার অবনতি ঘটছে এবং শেষে বাধ্য হয়ে হাসপাতালে আসছেন।
চিকিৎসকদের মতে, স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হলে শরীরের আঙুলের ফাঁক, কবজি, কনুই, বগল, নাভি, নিতম্ব, যৌনাঙ্গ ও হাতের তালুতে তীব্র চুলকানি হয়- বিশেষ করে রাতে। চুলকানোর ফলে ছোট ছোট ফুসকুড়ি ও ঘা দেখা দেয়, যা থেকে তরল পদার্থ বের হয়। এটি সারকপটিস স্ক্যাবাই নামের এক ধরনের ক্ষুদ্র মাইট দ্বারা ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত কাপড়, বিছানা, তোয়ালে বা শরীরের সংস্পর্শে এলে অন্যরাও সহজেই সংক্রমিত হয়।
দেবিদ্বারের ছাত্রাবাস, হাফেজিয়া ও কওমি মাদ্রাসাগুলোতে স্ক্যাবিস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বিছানা, বালিশ ও চাদর ভাগাভাগি করে ব্যবহার করে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে, অনেক রোগী স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হয়ে তীব্র চুলকানি ও ফুসকুড়ির যন্ত্রণায় ভুগছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সফিক সরকার বলেন, ‘তিন সপ্তাহ ধরে শরীরে চুলকানি হচ্ছিল। ফার্মেসি থেকে ওষুধ ব্যবহার করেও কাজ হয়নি। অবশেষে হাসপাতালে এসে জানতে পারলাম, এটি স্ক্যাবিস।
ফতেহাবাদের জামাল হোসেন বলেন, আমার ১৮ মাস বয়সি সন্তানের শরীরে ফুসকুড়ি দেখা দিলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার জানিয়েছেন, স্ক্যাবিস হয়েছে এবং পুরো পরিবারকে চিকিৎসা নিতে হবে।
হাসপাতাল এলাকার কয়েকজন ফার্মাসিস্ট জানান, অনেক রোগী স্ক্যাবিস সম্পর্কে ধারণা না থাকায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যালার্জি বা চুলকানির ওষুধ কিনে ব্যবহার করেন। এতে রোগ সারে না, বরং দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে। সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ না থাকাটাও একটি বড় কারণ। তাদের মতে, কয়েক মাসে চর্মরোগের ক্রিম, লোশন ও ওষুধের বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কবীর হোসেন বলেন, শিশুদের মধ্যে স্ক্যাবিস সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। এটি অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। একজন আক্রান্ত হলে পরিবারের অন্যরাও সহজেই সংক্রমিত হয়। তাই আক্রান্ত ব্যক্তি ও পরিবারের সবাইকে একসঙ্গে চিকিৎসা নিতে হবে।
ডা. কবীর হোসেন আরও বলেন, গরমকালে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। শিশুদের নিয়মিত কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে, ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে এবং অ্যালার্জিজনিত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আক্রান্তের ব্যবহৃত কাপড়, চাদর, বালিশ ও তোয়ালে অন্য কেউ ব্যবহার করলে রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মহিবুস ছালাম খান বলেন, প্রতিদিনই স্ক্যাবিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যথাসাধ্য চিকিৎসা দিচ্ছি; কিন্তু সচেতনতার অভাবে রোগটি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ছে। আক্রান্তদের ব্যবহৃত পোশাক, গামছা ও বিছানার চাদর নিয়মিত ধুয়ে রোদে শুকানো জরুরি। আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত আলাদা বিছানায় ঘুমানো উচিত।
চট্টগ্রামের রাউজানে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেয়েছেন ১ হাজারের বেশি মানুষ। রাউজান সদর মুন্সিরঘাটা উপজেলা কেন্দ্রীয় মন্দির রাস বিহারী ধামে রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষে্য বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা, বিনামূল্যে ওষুধ ও চশমা বিতরণ এবং রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচী গত বুধবার পালন করা হয়। এই চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন রাউজান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শাহাজাহান। পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী এক হাজার নারী-পুরুষ চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। এরমধ্যে বিভিন্ন রোগের ৭০০জন, চক্ষুরোগী ৩০০জন, পাঁচ শতাধিক নারী-পুরুষের মাঝে ওষুধ বিতরণ, ২৫০জন মানুষের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। চক্ষুরোগীদের এর মধ্যে চোখের ছানি পড়া ৫০জন রোগীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ, ফ্যাকো সার্জন অ্যান্ড নিউরো অফথালমোলজিস্ট ডা. তনিমা রায়, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অনুসেন দাশগুপ্ত, মানসিক রোগ, মনো-যৌনরোগ ও মাদকাসক্তি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ডা. হিমাদ্রী মহাজন, প্রসূতি এবং স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. চম্পা চৌধুরী, নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন ডা. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ‘চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রোগাক্রান্ত মানুষ সকাল থেকে ভীড় করেন। কেয়ার ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও রাউজান হেলথ কেয়ার সেন্টারের সহযোগিতায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা এক হাজারের বেশি মানুষকে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওষুধ ও চশমা বিতরণ করা হয়েছে। চক্ষুরোগীদের মধ্যে চোখের ছানি পড়া নারী-পুরুষদের বিনামূল্যে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা হবে। প্রসঙ্গত, রাধাকৃষ্ণের রাস উৎসব উপলক্ষ্যে গত সোমবার ৩ নভেম্বর থেকে ৬দিনব্যাপী মতহী ধর্মীয় সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, লীলা প্রদর্শনী, মহা প্রসাদ বিতরণ ও ষোড়শ প্রহরব্যাপী মহানামযজ্ঞসহ নানা কর্মসূচী শুরু হয়েছে।
চলতি বছর এডিশ মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও চলতি নভেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বেড়ে যাওয়া জনমনে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিল, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে ডেঙ্গু ভয়াবহ রূপ ধারণ করার কথা। সেই রেশ চলতি নভেম্বর মাসে এসেও দেখা দিয়েছে। অক্টোবরের শেষে এবং চলতি মাসের শুরুতে বৃষ্টিপাত ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে একাধিক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করেছিলেন। এখন মাসের শুরু থেকে যে হারে রোগী বাড়ছে এবং ডেঙ্গুতে মৃত্যু ঘটছে তাতে এসব শঙ্কা এখন সত্যি হওয়ার পথে।
এদিকে দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০ জনের মৃত্যুর তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, যা একদিনের হিসাবে এ বছরের সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এক হাজার ৬৯ জন রোগী। এ নিয়ে চলতি বছর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৯৯২ জনে।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে বলা হয়েছে, এদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্তদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটিতে ৩ জন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন করে মারা গেছেন বরিশাল বিভাগে ও খুলনা বিভাগে।
এদিকে চলতি বছর এর আগে এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর তথ্য আসে ২১ সেপ্টেম্বর। সেদিন দেশে ৯ জনের মৃত্যু ও ৭৪০ জনের হাসপাতালে ভর্তির তথ্য দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এইডিস মশাবাহিত রোগে এ নিয়ে চলতি বছর ৩০২ জনের প্রাণ গেল। এর মধ্যে নভেম্বরের পাঁচ দিনে মৃত্যু হলো ২৪ জনের। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হন ৫ হাজার ১৩০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় অক্টোবরে; ৮০ জন। এর আগে ৭৬ জনের মৃত্যু সেপ্টেম্বর মাসে।
এছাড়া অগাস্টে ৩৯ জন, জুলাইয়ে ৪১ জন, জুনে ১৯ জন, মে মাসে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন ও জানুয়ারিতে ১০ জনের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসে কোনো মৃত্যুর তথ্য দেয়নি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
ডেঙ্গু নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১৭৭৩ জন, জুনে ৫ হাজার ৯৫১ জন, অগাস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এছাড়া সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন এবং অক্টোরে হাসপাতালে ভর্তি হন ২২ হাজার ৫০ জন।
২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক লাখ এক হাজার ২১৪ জন এবং ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৭৫ জন। এর আগে ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয় এবং ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন মোট তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন।
বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তে, সাগরের বুকে জেগে থাকা এক অনিন্দ্য সুন্দর দ্বীপ সেন্টমার্টিন। নীল সাগর, ঝলমলে প্রবাল আর শান্ত প্রকৃতির সৌন্দর্যে ভরপুর এই দ্বীপে বাস করেন প্রায় ১১ হাজার মানুষ। কিন্তু এই সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক কঠিন বাস্তবতা চিকিৎসা সেবার ভয়াবহ অভাব।
এই মর্মান্তিক বাস্তবতার মাঝেই জন্ম নিয়েছে আশার এক নতুন আলো দুই বোন ফাতেমা বেগম তামান্না ও সুমাইয়া আক্তার সুমি। তারা দুজনই সেন্টমার্টিনের সন্তান। ছোটবেলা থেকেই দেখেছেন, কিভাবে চিকিৎসা না পেয়ে প্রিয়জন হারিয়ে কেঁদেছেন প্রতিবেশীরা। সেই অসহায় কান্না তাদের ভেতরে জন্ম দিয়েছে এক অদম্য ইচ্ছাশক্তি একদিন নিজেরাই চিকিৎসক হবেন, দ্বীপের মানুষের পাশে দাঁড়াবেন।
ফাতেমা বেগম তামান্না বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে তৃতীয় বর্ষে এবং ছোট বোন সুমাইয়া আক্তার সুমি পড়ছেন আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজে দ্বিতীয় বর্ষে। দুজনের লক্ষ্য একটাই এমবিবিএস শেষ করে ফিরে যাওয়া নিজ দ্বীপে, যেখানে আজও এক ফোঁটা চিকিৎসা সেবা পেতে মানুষকে নির্ভর করতে হয় মূল ভূখণ্ডের ওপর।
ফাতেমা বেগম তামান্না বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখেছি গর্ভবতী মায়েরা ইমার্জেন্সি চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাচ্ছেন। সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফ যেতে তিন ঘণ্টা লাগে। মাঝপথে অনেকেই মারা যান। তখন মনে হতো আমরা যদি কিছু করতে পারতাম!’
তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় মোড় আসে করোনাকালে। সুমি আক্তার সুমি স্মৃতিচারণ করেন, ‘গত চার মাস আগে আমরা বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা দ্বীপে আটকে পড়েছিলাম। তখন আমার ফুফু অসুস্থ হয়ে পড়েন। টেকনাফে নেওয়ার মতো অর্থ ছিল না। সেন্টমার্টিনের হাসপাতালে কোনো ডাক্তারও ছিল না। চিকিৎসার অভাবে আমার ফুফু মারা যান। তখন মনে হয়েছিল আমি যদি ডাক্তার হতাম, ফুফুকে বাঁচাতে পারতাম। সেই ঘটনার পরই সুমি দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেন, চিকিৎসক হয়েই নিজের দ্বীপের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন।
দুই বোনের শিক্ষাজীবনও অনুকরণীয়। ফাতেমা বেগম তামান্না ২০১৯ সালে কক্সবাজার বাইতুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি থেকে এসএসসি ও কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। সুমাইয়া আক্তার সুমি ২০২০ সালে একই স্কুল থেকে এসএসসি ও ২০২২ সালে চট্টগ্রাম বাকলিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পেয়েছেন। তাদের এই সাফল্য শুধু পারিবারিক গর্ব নয়, পুরো দ্বীপবাসীর গর্ব।
সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা অনেকবার এমন ঘটনা দেখেছি, যখন কারো সামর্থ্য নেই চিকিৎসা নিতে। তখন বুঝেছি এই দ্বীপের মানুষ শুধু দরিদ্র নয়, চিকিৎসা বঞ্চিতও। তাই আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি, একদিন এই অভাব আমরা পূরণ করব।’
তামান্না ও সুমির বাবা মৌলভী আবদুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপে চিকিৎসার অভাবে মানুষ মরতে দেখেই মেয়েদের ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখি। তাই তাদের মেডিকেলে পাঠিয়েছি। একদিন তারা আমার সেই আশা পূরণ করবে ইনশাআল্লাহ।’
উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছা. নাসরিন জেবিন জানান, ‘সেন্টমার্টিনে হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার নেই। দুই মেয়ের স্বপ্ন নিয়ে আমি গর্বিত। তারা অনেক দূর এগিয়েছে। একদিন নিজের জন্মভূমির চিকিৎসা সংকট দূর করবে এটাই আমার বিশ্বাস।’
আজ সেন্টমার্টিনের মানুষ তাদের নাম উচ্চারণ করে আশার আলো হিসেবে। কেউ বলেন, ‘ওরা আমাদের গর্ব,’ কেউ বলেন, ‘ওরা ফিরলে হয়তো আমাদের সন্তানদের আর চিকিৎসার জন্য সাগর পার হতে হবে না।’
সাগরের ঢেউয়ের মতোই প্রবল তাদের ইচ্ছাশক্তি। দারিদ্র্য, দূরত্ব কিংবা ঝড় কিছুই তাদের স্বপ্নকে থামাতে পারবে না। তারা প্রমাণ করতে চায়‘যে দ্বীপে মৃত্যু ছিল নিত্যসঙ্গী, সেখানেও একদিন জন্ম নিতে পারে জীবন বাঁচানোর গল্প।’
হঠাৎ করে চট্টগ্রাম বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োজিত ৯ জন নার্স-মিডওয়াইফকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে প্রতিভূ ব্যতীত এ আদেশে অন্তর্বিভাগের (ইনডোর) স্বাস্থ্যসেবা ভেঙে পড়া আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে পৃথক কয়েকটি পত্রে এ বদলি এবং সংযুক্তির অফিস আদেশ দিয়েছেন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোসাম্মৎ মঞ্জু আখতার। এর বিপরীতে মাত্র একজন নার্সকে বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।
এ আদেশের ফলে ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্তর্বিভাগে (ইনডোর) স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। একই সাথে প্রসূতি সেবা ও অপারেশন থিয়েটারের সেবা কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসবে।
জানা যায়, বোয়ালখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মঞ্জুরিকৃত পদ রয়েছে সিনিয়র স্টাফ নার্স ২৯টি ও মিডওয়াইফ (ধাত্রী) পদ রয়েছে ১০টি। এ পদে কর্মরত রয়েছেন নার্স ২৪ জন ও মিডওয়াইফ ৪ জন। এর মধ্যে ৫ জনকে বদলি ও ৪ জনকে সংযুক্তি করে আদেশ দেওয়া হয়ছে। ২ জন কোর্সে ও ১ মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করছেন।
জানা গেছে, ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড রয়েছে। প্রায় সময় নির্ধারিত বেডের চেয়ে অধিক রোগী ভর্তি হন। নরমাল ডেলিভারি, সিজারিয়ান ডেলিভারি, নাক-কান-গলা ও অর্থোপেডিক্স সার্জারি হয়ে থাকে নিয়মিত। নার্স ও মিডওয়াইফ সংকটের কারণে এসব সেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, ৩৯টি নার্স ও মিডওয়াইফ পদের বিপরীতে ২৮ জন নিয়োজিত ছিলেন। এই স্বল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে তিনটি ওয়ার্ডে প্রতিদিন সকাল, বিকেল ও রাত—এই তিন পালায় স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হতো। তিনজনের কাজ একজনকে করতে হয়। তার ওপর প্রতিভূ ছাড়া এমন সিদ্ধান্ত অবিবেচনাবশত।
হঠাৎ উপজেলা থেকে গণহারে নার্স ও মিডওয়াইফদের সরিয়ে নেওয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো চিকিৎসাসেবায় স্থবিরতা নেমে আসবে বলে মত দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, ‘৫০ জন রোগীর জায়গায় হাসপাতালে ৮০-১০০ জন ভর্তি থাকে। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী থাকলেও নার্সের সংখ্যা অপ্রতুল। এর মধ্যে বদলি ও সংযুক্তির ফলে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগীয় সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হবে।
এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগের তুলনায় ৪-৫ গুন ডেলিভারি, মাইনর, মেজর সার্জারি চলমান রয়েছে জানিয়ে ডা.জাফরিন জাহেদ জিতি বলেন, ‘হঠাৎ এ বদলি আদেশ বিপাকে ফেলে দিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি চাকরিতে বদলি একটি সাধারণ প্রক্রিয়া। কিন্তু নার্সদের গণহারে যে বদলির আদেশ দেওয়া হয়েছে তাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতামত নেওয়া হয়নি। নার্সগণ অনলাইনে বদলীর আবেদন করেছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় না করে এভাবে নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরের বদলি ও সংযুক্তি আদেশ করা অত্যন্ত অবিবেচনাপ্রসূত হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জন মহোদয়সহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারী অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়েছে। জনস্বার্থে নার্স প্রতিভূ ছাড়া ছাড়পত্র দিলে হাসপাতালের সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস উপলক্ষে ফরিদপুরে বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা ও রক্তদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের আয়োজনে রোববার এ কর্মসূচির সূচনা করা হয়। প্রথমে বর্ণাঢ্য র্যালিটি সিভিল সার্জন অফিস প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের সভাকক্ষে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সোহরাব হোসেন। এ সময় সন্ধ্যানী ফরিদপুর ডোনার ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান শামিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবক অধ্যাপক এমএ সামাদ, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আল আমিন সরোয়ারসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
সভায় বক্তারা বলেন, রক্তদান একটি মানবিক ও মহৎ কাজ, যা অন্যের জীবন বাঁচাতে সহায়তা করে। সবাইকে সঠিক ও সরকারি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ও দক্ষ টেকনিশিয়ানের মাধ্যমে ব্লাড স্ক্যানিং করানোর আহ্বান জানান তারা।
এছাড়া মরণোত্তর চক্ষুদানের গুরুত্ব সম্পর্কেও আলোচনা হয়। বক্তারা বলেন, চক্ষুদান একটি পবিত্র ও মহৎ কাজ। যে মানুষটি জীবদ্দশায় পৃথিবীর আলো দেখতে পারেননি, তাকে মৃত্যুর পর নিজের চোখ দান করে আলো দেখার সুযোগ করে দেওয়া সবচেয়ে বড় মানবিক অবদান।
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভ্যাকসিন নিতে এসেছেন বাবা ও কন্যা। কারণ হাসপাতালে আসার একটু আগেই বাসায় শখের বিড়ালকে খাবার খাওয়াতে গিয়ে দুজনকেই কামড় দিয়েছে পোষা টম (বিড়াল)। তাই ভবিষ্যতে জটিল কোনো রোগে আক্রান্তের শঙ্কা থেকে হাসপাতালে ভ্যাকসিন নিতে দিগ্বিদিক ছুঁটছেন বাবা ও কন্যা।
সম্প্রতি জেলার সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দেখা মিলে এমন দৃশ্য। রক্তাক্ত আঙুল নিয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছেন বাবা-মেয়ে দুজনেই। সময়মতো ভ্যাকসিন না দিতে পারলে নিজেদের দেহে বাসা বাঁধতে পারে জটিল কোনো মরণঘাতী রোগ। এ সময় মেয়ের ওপর মেজাজ হারাতেও দেখা গেছে এই পিতাকে। কেননা মেয়ের শখের পোষা বিড়ালের কারণেই আজকের এই জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন না থাকায় সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। তাই মাঝে মধ্যে অবস্থা দেখে অগ্রাধিকার ভেদে ভ্যাকসিনের সেবা দিতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
হাসপাতালের তথ্যানুযায়ী এ বছরের মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শুধু বিড়ালের আচড় ও কামড়ের জন্য ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৯৫ জনকে। যা অসাবধানতা এবং অসচেতনাতার কারণে দশ ও দেশের সম্পদের অপচয় হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যদি এ নিজেদের পোষা প্রাণীকে রোগ প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দিয়ে দেওয়া হতো তাহলে এ পরিমাণ ভ্যাকসিন হাসপাতালে মজুত থাকত।
এদিকে এ বছরের মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কুকুর, শিয়ালের আক্রমণে ১ হাজার ১৯২ জনকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে বিড়ালের কামড় বা আচড়ের রোগীর সংখ্যা বেশি যার কারণে ভ্যাকসিন সে খাতেই বেশি অপচয় হয়ে যাচ্ছে। মাঝে মধ্যে এমনো সময় মোকাবিলা করতে হচ্ছে কোনো পথিক রাস্তায় কুকুরের আক্রমণের শিকার হলেন, অথচ ভ্যাকসিন সেবাটা বিনামূল্যে তিনি পেলেন না। কারণ বিড়ালের আক্রমণের রোগী এত বেশি যে অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের রোগীদের বাহির থেকে ভ্যাকসিন ক্রয় করতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহ্বান জানান, যারা শখের বসে বিড়াল পালন করছেন তারা যদি একটু সচেতন হয়ে বিড়ালকেই ভ্যাকসিন দেয় তাহলে এত ঝুঁকি থাকে না। শুধু সচেতন না হওয়ার কারণে বিড়ালের ভ্যাকসিন নিজেদের নিতে হচ্ছে। এতে করে দেশ ও দশের ক্ষতি হচ্ছে। একটু সচেতন হলে হাসপাতালে ভ্যাকসিনের সংকট হয় না। আমরা সবাইকে আহ্বান করব যারা বিড়াল পালন করছেন বা কুকুর পালন করছেন তারা যেন ওই প্রাণীকে ভ্যাকসিন দিয়ে দেন।
হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছেন, বিড়ালের কামড়ে সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন (র্যাবিস টিকা) না নিলে সবচেয়ে মারাত্মক যে রোগটি হতে পারে তা হলো র্যাবিস বা হাইড্রোফোবিয়া। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রান্ত করে এবং চিকিৎসা না নিলে প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যু ঘটে।
বিড়াল, কুকুর, শিয়াল, বাদুড় ইত্যাদি প্রাণীর লালা থেকে র্যাবিস ভাইরাস সংক্রমিত হয়। কামড়, আঁচড় বা খোলা ঘায়ে বিড়ালের লালা লাগলে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
চিকিৎসা হিসেবে বলা হচ্ছে রোগটি একবার শুরু হলে কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। তাই কামড়ের পরপরই ভ্যাকসিন নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
ভ্যাকসিন নিতে আসা নিহা আক্তার বলেন, আমি বিড়াল খুবই পছন্দ করি। বিড়ালকে খাবার দিতে গিয়ে আঙুলে কামড়ে দিয়েছে। এখন ভ্যাকসিন নিতে এসেছি। আমার ভুল হয়েছে। বিড়ালকে আগেই ভ্যাকসিন দিলে এমন দিন দেখতে হতো না। আমি ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমার মতো যারা বিড়াল পোষেণ তারা যেন অবশ্যয় বিড়ালকে ভ্যাকসিন দেন।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রকিবুল আলম বলেন, অত্র হাসপাতালে জলাতঙ্কের পোস্ট এক্সপোজার ভ্যাকসিন নিতে আসা রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিড়ালের আঁচড়ে আগত রোগীর সংখ্যা কুকুরের আঁচড়, কামড়ে আগত রোগীর সংখ্যার প্রায় তিনগুণ। এবং বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পোষা বিড়াল নাড়াচাড়া করার কারণেই এটি ঘটে। সে ক্ষেত্রে পোষা বিড়াল বা কুকুরের আগে থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া থাকলে এই সংখ্যক ভ্যাকসিন রাস্তার কুকুর, বিড়াল অথবা শিয়ালের কামড়ে ব্যবহার করা সম্ভব। এতে করে এই হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট ও কেটে যাবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: ইজাহার আহমেদ খান বলেন, জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধে আমরা সমস্ত উপজেলা গুলোতে প্রচারণা চালাচ্ছি। সচেতন করছি এবং বিনামূল্যে প্রাণীদের ভ্যাকসিন সেবাও দিচ্ছি।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) এর বহির্বিভাগ টিকেট কাটতে এখন থেকে আর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হবে না। রোগীরা বিএমইউ এর ওয়েবসাইটে (https://bmu.ac.bd) গিয়ে অনলাইনে পেমেন্ট সম্পন্ন করে ব্যবস্থাপত্রটি (টিকেট) প্রিন্ট করে টিকেটে উল্লেখিত বিভাগ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে ডাক্তার দেখিয়ে পরামর্শ নিতে পারবেন। মূলত রোগীদের ভোগান্তি নিরসন ও দুর্ভোগ লাঘবসহ অযাচিত ভিড় এড়াতে এবং বহিবির্ভাগ চিকিৎসাসেবা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যেই অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম চালু করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। এরফলে এখন থেকে বাসায় বসেই অনলাইনে কাটা যাবে বিএমইউ এর বহির্বিভাগের টিকেট। একইসঙ্গে সকাল থেকেই হাসপাতালে এসে ডাক্তার দেখাতে করতে হবে না দীর্ঘ অপেক্ষা। আজ বুধবার ২৯ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে এই কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে বিএমইউ ও পূবালী ব্যাংক এর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
বিএমইউ এর সম্মানিত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালানায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, অনলাইন টিকেট সিস্টেম দেশের প্রয়োজনে চালু করা হয়েছে। যেকোনো দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সবসময় জনগণ কেন্দ্রিক হয়। শিক্ষা ও গবেষণা দেশের মানুষের জন্যই হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হয়েছে দেশের মানুষের জন্য। আমরা অনেকদিন থেকে ভাবছিলাম রোগীদের যেন দীর্ঘ অপেক্ষা করতে না হয়। অনলাইন টিকেটিং সিস্টেম দীর্ঘ অপেক্ষা ও ভোগান্তি কমাবে। এই পদ্ধতিতে রোগীরা তাদের চাহিদামতো সময়ে চিকিৎসককে দেখাতে পারবেন। সময়ের ব্যবধানে সবকিছু অনলাইন সিস্টেমে হবে। অনলাইন নানাদিক থেকে সুবিধা দিবে। টিকেট কাটতে আর হাসপাতালে দীর্ঘ লাইন দিতে হবে না জানিয়ে অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, ওয়েটিং টাইমটাকে চেম্বার বা হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে যেতে চাই। হাসপাতালে অপেক্ষা করা লাগবে না। তবে এই কার্যক্রমে শুরুর দিকে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তা ওভারকাম করার জন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে সাংবাদিক, গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। তারা ইতিবাচকভাবে তুলে ধরলে বিএমইউ এর এই প্রচেষ্টা অবশ্যই সাফল্য পাবে। প্রায় সকল রোগীই বিএমইউ এর চিকিৎসাসেবায় সন্তুষ্ট। কিন্তু দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কাটা, ডাক্তার দেখাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা তাদেরকে কষ্ট দেয়। সেই কষ্ট দূরীকরণের লক্ষ্যেই আজকের এই উদ্যোগ। বিএমইউকে ডিজিটালাইজড হাসপাতালে রূপান্তরেরর কার্যক্রম চলমান আছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হলে অটোমেশনের বিকল্প নাই। বিএমইউ এর অটোমেশন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতেই হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ, আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ডা. একেএম আখতারুজ্জামান, পূবালী ব্যাংক লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
তারা বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাসেবা, উচ্চতর মেডিক্যাল শিক্ষা ও গবেষণায় একটি আস্থার নাম। আজকেরই এই উদ্যোগ দেশের জন্য একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে মূলত রোগীরাই সবচাইতে বেশি উপকৃত হবেন। আগামী দিনে সেবার সকলক্ষেত্রেই এটা চালু করতে পারলে রোগীরা স্বাছন্দ্যে টিকেট কাটা থেকে শুরু করে সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন করে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা নিতে পারবেন।
এক বছর চার মাস আগে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ সম্পন্ন হওয়া অত্যাধুনিক ১৫০ শয্যার নয়তলা হাসপাতাল ভবনটি অবশেষে সীমিত পরিসরে চালু হচ্ছে-তাও সরকারি বরাদ্দ ছাড়াই। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, আসবাবপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনার জন্য এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ না আসায় স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ মিলে নিজস্ব উদ্যোগে তহবিল গঠন করে এই সেবা চালুর প্রস্তুতি নিয়েছে।
জানা গেছে, আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন ভবনটি নির্মাণ শেষে এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। এতে পঞ্চগড় জেলার সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে এবং আর্থিক ক্ষতিও গুনতে হচ্ছে।
পাশেই অবস্থিত ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি থাকেন। তীব্র চিকিৎসক সংকটে অনেক রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হয়। অনেকে বাধ্য হয়ে চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর, রংপুর বা ঢাকায় যাচ্ছেন-পথেই কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করছেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীর ঘাটতির কারণে হাসপাতালের পরিবেশও নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নতুন ভবনে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরুর নির্দেশনা দিয়েছে, তবে অর্থ বরাদ্দ দেয়নি। স্থানীয়ভাবে অর্থ সংগ্রহের নির্দেশনা পেয়ে জেলা প্রশাসক সাবেত আলী ও সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান মাঠে নেমেছেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, চেম্বার নেতা, এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে মতবিনিময় করে ইতোমধ্যে ২১ লাখ ১৫ হাজার টাকার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। ‘স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা তহবিল’ নামে গঠিত এ ফান্ড থেকে বেড ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয় করা হবে। আপাতত ৫০ লাখ টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. মিজানুর রহমান জানান, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আপাতত সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগ নতুন ভবনে স্থানান্তরের প্রস্তুতি চলছে।’ সেখানে ১০০ শয্যার মেডিসিন ইউনিট চালু করা হবে। ১৫ নভেম্বর স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এ হাসপাতালের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে, এবং তিনি আরো জানান যেকোনো কারণে ডেট চেঞ্জ হতে পারে।
নতুন ভবনে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু করতে ৩৮৮ জন জনবল, আসবাবপত্র ও যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৭ কোটি ২৫ লাখ টাকার বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে বলেও তিনি জানান।
জেলা প্রশাসক সাবেত আলী বলেন, ‘চিকিৎসক দেওয়ার আশ্বাস আমরা পেয়েছি, তবে অর্থ বরাদ্দে সময় লাগবে। তাই স্থানীয়ভাবে তহবিল গঠন করা হয়েছে। আপাতত সংগৃহীত টাকা দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালু করা হবে এবং ভবিষ্যতে দরিদ্র রোগীদেরও সহায়তা করা হবে।’
এনসিপি নেতা সারজিস আলম বলেন, ‘আমি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঁচটি দপ্তরে গিয়ে পঞ্চগড়ের স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থা তুলে ধরেছি। নভেম্বরের ২০ তারিখের মধ্যে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ চিকিৎসক পদ পূরণের আশ্বাস দিয়েছে তারা। সবাই মিলে সহযোগিতা করলে শিগগিরই এ জেলার স্বাস্থ্যসেবায় পরিবর্তন আসবে।’
এদিকে, পঞ্চগড় জেলার পাঁচটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরেই চিকিৎসক সংকট চলছে। বর্তমানে জেলায় মোট ১১৪টি চিকিৎসক পদ শূন্য—যার মধ্যে সদর হাসপাতালে ২১টি, তেঁতুলিয়ায় ২০টি, আটোয়ারীতে ২১টি, বোদায় ২০টি, দেবীগঞ্জে ২৪টি এবং সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ২টি পদ ফাঁকা রয়েছে।
রূপগঞ্জে ৫ শতাধিক মানুষকে বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ চশমা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদ তারাবো পৌরসভার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও ইস্পাহানী ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগিতায় বিনামূল্যে এ চক্ষু চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার দিনব্যাপী উপজেলার রূপসী এলাকায় রূপসী ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় এ চক্ষুসেবা প্রদান করা হয়। জানা গেছে, এ সময় রোগীদেরকে বিনামূল্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানো, চোখের ছানী পরীক্ষা, চশমা বিতরণ, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় অপারেশনের ব্যবস্থা। ওষুধসহ চক্ষু হাসপাতালে যাতায়াতসহ বিভিন্ন সেবা প্রদান করা হয়।
ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউটের মেডিকেল টিমের সদস্য ডা. নজরুল ইসলাম চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন।
ইসলামি পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদের তারাব পৌর শাখার সভাপতি খন্দকার আল-আমীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ ১ রূপগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ আনোয়ার হোসেন মোল্লা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইসরাফিল হোসাইন, এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ইসলামি পাঠাগার ও সমাজক কল্যাণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং নারায়ণগঞ্জ লিগ্যাল এইডের প্যানেল আইনজীবী অ্যাডভোকেট আয়নাল হক, ইসমাইল হোসেনসহ আরও অনেকে।
ইসলামি পাঠাগার ও সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আল আমিন বলেন, বর্তমান বাজারে সব পণ্যের দাম উর্ধ্বগতি। সাধারণ জীবনযাপনে দরিদ্র্যরা হিমসিম খাচ্ছে।
এর মাঝে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাই আমরা তারাব পৌর ইসলামিক পাঠাগার ও সমাজকল্যাণ পরিষদ ও ইস্পাহানি ইসলামিয়া চক্ষু ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে এ সেবাদান অব্যাহত রেখেছি। ইতোমধ্যেই উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় আমরা চক্ষুসেবা কার্যক্রম পরিচালিত করেছি। এতে শত শত রোগী বিনামূল্যে সেবা গ্রহণ করে উপকৃত হয়েছেন। সেবা নিতে আসা কিছু রোগীকে বিনামূল্যে অপারেশনের জন্য বাছাই করা হয়েছে। বিনামূল্যে তাদের অপারেশন করা হবে। পর্যায়ক্রমে আমাদের এই চক্ষুসেবা কার্যক্রম রূপগঞ্জের সকল পৌরসভা ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হবে।
স্তন ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠার পর কি আবারও মা হওয়া সম্ভব? ক্যান্সার চিকিৎসা শেষে শরীর ও মন যখন ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে, তখন অনেক নারীর মনে জাগে একটাই প্রশ্ন– এই অবস্থায় গর্ভধারণ কি আদৌ ঝুঁকিপূর্ণ? সম্প্রতি অঙ্কোলজি (ক্যান্সার চিকিৎসা) ও প্রজনন চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সেই প্রশ্নের উত্তর এখন অনেকটাই আশাব্যঞ্জক। একসময় যা ছিল একরকম অসম্ভব কল্পনা, ক্যান্সার জয় করার পর মাতৃত্বের স্বপ্ন দেখা– এখন তা পরিণত হয়েছে সম্ভাবনায়।
এখন এমন বহু নারী আছেন, যারা স্তন ক্যান্সারকে পরাজিত করে জীবনের নতুন অধ্যায়ে পা রাখছেন; গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন। তবে, এই যাত্রাকে নিরাপদ ও সফল করতে হলে সঠিক সময় নির্বাচন, হরমোন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা উচিৎ। একই সঙ্গে প্রজনন চিকিৎসা পদ্ধতিকে ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থার সঙ্গে মিল রেখে এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকাও অত্যন্ত জরুরি।
ভারতের আভা সার্জি সেন্টারের প্রতিষ্ঠাতা ডা. বাণীকুমার মিত্র বলেন, সাধারণত চিকিৎসকেরা ক্যান্সার চিকিৎসা শেষ হওয়ার পর অন্তত দুই থেকে তিন বছর অপেক্ষা করে গর্ভধারণের চেষ্টা শুরু করার পরামর্শ দেন। এতে শরীর আরোগ্যের সুযোগ পায় এবং ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সময় পার হয়ে গেছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
তিনি বলেন, হরমোন রিসেপ্টর–পজিটিভ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে এই অপেক্ষার সময় আরও দীর্ঘ হতে পারে। কারণ, তাদের অনেক সময় ট্যামোক্সিফেন বা অ্যারোমাটেজ ইনহিবিটরের মতো ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করতে হয়। এই ওষুধগুলো ক্যান্সার পনঃরায় হওয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ হলেও গর্ভাবস্থায় সেগুলো খাওয়া নিরাপদ নয়।
স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা যেমন– কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা হরমোন থেরাপি নারীদের প্রজনন ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে কেমোথেরাপি ডিম্বাশয়ের রিজার্ভ কমিয়ে দিতে পারে, যার অর্থ হলো নারীদের গর্ভধারণের জন্য প্রয়োজনীয় ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণমান কমে যাওয়া।
চিকিৎসা শেষে কিছু নারীর মাসিক (পিরিয়ড) চক্র ফিরে এলেও সব সময় প্রজনন ক্ষমতা পুরোপুরি ফিরে আসে– এমন নিশ্চয়তা তা দেয় না। তাই, গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগে চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে একটি পরিপূর্ণ প্রজনন মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি।
দাউদকান্দির শহীদনগরে প্রায় দুই দশক আগে নির্মিত ট্রমা সেন্টারটি আজও পুরোপুরি চালু হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের প্রাণকেন্দ্রে স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানটি দুর্ঘটনায় আহতদের জরুরি চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নির্মিত হলেও আজ সেখানে চলছে কেবল জ্বর, ঠান্ডা-কাশি আর পেটব্যথার রোগীর আউটডোর সেবা।
এখানে অর্থো-সার্জারি, অ্যানেসথেসিয়া, মেডিকেল অফিসার, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ ২৬টি পদ রয়েছে। অথচ কর্মরত আছেন মাত্র ১৫ জন। তাদের অনেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেন। ফলে মহাসড়কে দুর্ঘটনায় আহত রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, তিনতলা ভবনের নিচতলায় জরুরি বিভাগ ও চিকিৎসক-নার্সদের কক্ষ মিলিয়ে সীমিত পরিসরে কিছু চিকিৎসাসেবা চলছে। বাকি ভবনজুড়ে ধ্বংসপ্রায় চিত্র। দোতলা ও তিনতলার দেয়ালে পলেস্তারা খসে পড়ছে। দরজা-জানালা নষ্ট। কোথাও লোহায় মরিচা ধরেছে। আধুনিক কাঠামোয় নির্মিত কক্ষগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
২০০৬ সালের ৬ অক্টোবর তৎকালীন বিএনপি জোট সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে সেন্টারটির উদ্বোধন করেন। প্রায় ৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে গণপূর্ত বিভাগের অর্থায়নে নির্মিত এই ২০ শয্যার ট্রমা সেন্টারটি উদ্বোধনের কিছুদিন পরেই সরঞ্জাম ও জনবল সংকটে বন্ধ হয়ে যায়। পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো উদ্বোধন করা হলেও পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম আর শুরু হয়নি।
চাঁদগাঁও গ্রামের তসলিম আহমেদ বলেন, ট্রমা সেন্টার নির্মিত হয়েছিল দুর্ঘটনায় আহতদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। কিন্তু ট্রমা সেন্টারটি পুরোপুরি চালু হয়নি অদ্যাবদি। সরকার চাইলে এখানেই একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল গড়ে তুলতে পারে বলেন তিনি।
সুন্দলপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পরিষদের পক্ষ থেকে ভবনের আশপাশ পরিষ্কার রাখার উদ্যোগ নিয়েছি। কিন্তু এ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি চালু করতে সরকারের নীতিগত পদক্ষেপ জরুরি।
স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এই ট্রমা সেন্টার ছিল আমাদের বহুদিনের স্বপ্ন। রাজনৈতিক হিংসা আর অবহেলার কারণেই ১৯ বছরেও এটি চালু হয়নি। আমরা সরকারের কাছে দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
বর্তমানে সেখানে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রোকসানা বানু জানান, যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন সাধারণ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. নাজমুল হাসান বলেন, আমি একাই দায়িত্ব পালন করছি। ইনডোর কার্যক্রম বন্ধ। জনবল ও সরঞ্জাম পেলে সেবা কার্যক্রম বাড়ানো সম্ভব।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান বলেন, জনবল ও সরঞ্জামের ঘাটতির কারণে ট্রমা সেন্টারটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা যায়নি। একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দুর্ঘটনায় আহতরা এখানেই উন্নত চিকিৎসা পাবেন।
প্রতিদিনই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঘটে দুর্ঘটনা। কিন্তু কাছাকাছি এই বিশেষায়িত ট্রমা সেন্টারটি অচল পড়ে থাকায় অনেক আহত রোগীকে কুমিল্লা বা ঢাকায় পাঠাতে হয়, ফলে বিলম্বে চিকিৎসা পেয়ে অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন। স্থানীয়দের প্রত্যাশা দীর্ঘ ১৯ বছরের স্থবিরতা কাটিয়ে দ্রুত চালু হোক শহীদনগর ট্রমা সেন্টার।