কুশান আঁটা শিঙাপুরি বেতের চেয়ারে এলিয়ে বসেন এলাদি, শান্তিনিকেতনি চামড়া বাঁধানো মোড়ায় পা রেখে। পাতলা তার পা দুটি, তার মুখের চেয়েও ফর্সা, নীলচে সরু শিরায় আরও সুন্দর। তাকে দেখার আগে আমি কখনো ভাবিনি মানুষের পায়েরও এত রূপ হতে পারে। আমি তাকিয়ে থাকি সেই পায়ের দিকে, যেখানে লুটিয়ে পড়ে তার শাড়ির পাড়, ময়ূরের বুকের মতো নীল; মানুষের পা নিয়েও কত সুন্দর করে ভাবা যায়, তাই না! বুদ্ধদেব বসু তার এলাদির পা নিয়ে এমন করেই ভেবেছিলেন।
সাহিত্যের পাতা থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তব জীবনের দিকেও যদি তাকাই, এমন করেই হয়তো অনেকেই ভাবেন। একটা সুন্দর মুখাবয়বের পরেই হয়তো পায়ের সৌন্দর্য লক্ষ করে থাকেন অনেকেই। কেউবা বলে থাকেন সুন্দর, পরিচ্ছন্নতার খোঁজ একটা মানুষের পায়ের দিকে তাকালে অনেকটা আন্দাজ করা যায়। কখনো সে পায়ে থাকে নুপূর, কখনো আলতা রাঙা, কখনো নখের ওপর রঙিন নেইলপলিশে আঁকা শৈলী কিংবা কখনো ছিমছাম, পরিচ্ছন্ন এক জোড়া নগ্ন-নির্জন পায়েই ডুবে যায় দৃষ্টি, জুড়িয়ে যায় মন।
পায়ের যত্নে, সৌন্দর্য চর্চায় তাই একটুও অবহেলা নয়। আমরা অনেক সময় ত্বকের নানান যত্নআত্তি করলেও পায়ের দিকে তেমন নজর দিই না। কিন্তু পায়ের যত্নআত্তি ছাড়া সৌন্দর্য চর্চা পূর্ণ হয়ে ওঠে না। এক জোড়া সুন্দর পা যেমন আমাদের সৌন্দর্য বাড়ায়, তেমনি ব্যক্তিত্বেও প্রভাব ফেলে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক পায়ের যত্নে, সৌন্দর্য চর্চায় কিছু করণীয়-
রোজকার যত্ন বাইরে কিংবা ঘরে নানাভাবেই আমাদের পা ধুলাবালির সংস্পর্শে আসছে প্রতিদিন। শরীরের অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় পা অপরিচ্ছন্ন হয় সবচেয়ে বেশি, তাই বাইরে থেকে ফিরেই ভালোভাবে পা পরিষ্কার করাটা আবশ্যক। সম্ভব হলে লিকুইড সাবান, শ্যাম্পু বা বডি ওয়াশার মিশিয়ে কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, এতে সহজে পা পরিষ্কার হয়ে যায়।

প্রতিবার পরিচ্ছন্নতা শেষে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে পারেন, যদি পায়ের শুষ্কতা ও পা ফাটার সমস্যা এড়ানো যাবে সহজেই। নখ খুব বড় না রাখা এবং নিয়মিত পরিচর্যা করা, নেইলপালিশ থাকলে তা দুই দিন পরপর উঠিয়ে ফেলা, এসব দিকে নজর রাখতে হবে। প্রতি রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে পা ধুয়ে নিজের পছন্দমতো ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে মোজা পরে ফেলুন। এতে পায়ে ধুলাবালি তো লাগবেই না, বরং পা হয়ে উঠবে মসৃণ ও কোমল। সেই সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত একবার পেডিকিউর করা যেতে পারে।
এখন ঘরোয়াভাবে পেডিকিউর করার উপায় কম-বেশি সবাই জানে। বর্তমানে পায়ের যত্নে ‘ফ্রেঞ্চ পেডিকিউর’ খুবই জনপ্রিয়। এটি জটিল নয় তেমন, সাধারণ নিয়মে পেডিকিউর করে তার পর নেইলপালিশ লাগানোর যে কায়দা-কানুন তাই ফ্রেঞ্চ পেডিকিউর। এ ছাড়া ভালোভাবে পেডিকিউর করাতে মাসে একবার পার্লারে যাওয়া যেতেই পারে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা