আপডেট : ১৬ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৫৩
সরকার উন্নয়নের মুলা ঝুলাচ্ছে: জোনায়েদ সাকি

সরকার উন্নয়নের মুলা ঝুলাচ্ছে: জোনায়েদ সাকি

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন জোনায়েদ সাকি। ছবি: দৈনিক বাংলা

‘সরকার উন্নয়নের মুলা ঝুলাচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, ‘এই উন্নয়নে জনগণ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মেট্রোরেল চালু হয়েছে সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য। আর এদেশে এমনভাবে মেট্রোরেল চালু করেছে, যেখানে সাধারণ মানুষ চড়তে পারবে না ভাড়ার জন্য। মানুষের ট্যাক্সের টাকায় মেট্রোরেল বানাবেন, আর সাধারণ মানুষ সেটাতে চড়তে পারবে না, এমন উন্নয়ন জনগণ চায়নি।’

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে সাকি এসব কথা বলেন। বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে সরকার ও শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনের ১৪ দফা আদায় এবং বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

সমাবেশে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বলেছিল, তারা বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করবে। সেই সময় থেকে আমরা বলে আসছি, কীভাবে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান হবে? একটি পথ হচ্ছে, আত্মনির্ভরশীল হয়ে টেকসই বিদ্যুৎ ব্যবস্থা তৈরি এবং দাম সাশ্রয়ী রাখা। কিন্তু ওনারা (সরকার) এই পথে গেলেন না।’

সাকি আরও বলেন, ‘দেশপ্রমিক বিশেষজ্ঞ এবং রাজনৈতিক দলগুলো টেকসই এবং সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের পথ দেখিয়েছিলেন। সরকার সেই পথে যায়নি। বরং বিদ্যুৎ সংকটকে পুঁজি করে কীভাবে কতিপয়ের পকেট ভরা যায়, সেই নীতি গ্রহণ করেছে।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘তারা (সরকার) গেলেন ভাড়া করা বিদ্যুতের দিকে। ভাড়া করা বিদ্যুৎ নির্ভর করে বিদেশ থেকে আমদানি করা তেল, ডিজেল, বার্ণিশ ওয়েলের উপর। এখন এগুলোর দাম বেশি পড়ছে। তাই সরকার বলছে, বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কাজেই বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে।’

সরকারের ভুলনীতির জন্য আজকে সমস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে মন্তব্য করে সাকি আরও বলেন, ‘এর দায় তারা জনগণের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ঘাড় একটাই পেয়েছেন যেখানে তারা সমস্ত কিছু চাপিয়ে দেন।’

বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকার ভোটের মোকাবিলা করতে সাহস পায় না। গত ১৪ বছরে তারা এত অপরাধ করেছে, এত লুট করেছে, যে ভোটের মুখোমুখি হওয়ার সাহস তাদের নেই।’

সাকি আরও বলেন, ‘দেশে জনগণের ভোটাধিকার না থাকলে, সরকার ভোটের তোয়াক্কা না করে কেবল রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে। দমন-পীড়নের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষের কী পরিণতি হয়, এক বিদ্যুৎ খাতের দিকে তাকালে বোঝা যায়। মাসে মাসে জনগণের পকেট কেটে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা কতিপয় মানুষেরা। এটিই হচ্ছে ভোটারবিহীন সরকারের আসল রূপ।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এ সরকারকে বিদায় দিতে হবে। আজকে সংবিধানের এমন ক্ষমতা কাঠামো দরকার, যেখানে সরকার, সংসদ, বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকে। এই ব্যবস্থা তৈরির মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ফিরবে, ভোটাধিকার সুরক্ষিত হবে।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার ও ভাসানী অনুসারি পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ। গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণঅধিকার পরিষদের কোনো নেতাকর্মী এই কর্মসূচিত অংশগ্রহণ করেনি।