আপডেট : ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৪৩
আয়কর দাখিল সহজ হচ্ছে

আয়কর দাখিল সহজ হচ্ছে

আয়কর দাখিলের প্রক্রিয়া সহজ করতে নতুন আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এই আইন পাস হলে আয়কর কর্মকর্তা নিজের ইচ্ছেমত ট্যাক্স নির্ধারণ করতে পারবেন না। উৎসে কর কর্তনে ২৯টি বিবরণী দাখিল না করে ১২টি দাখিল করলেই হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে আয়কর আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।

সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ১৯২২ সালে প্রণীত ইনকাম ট্যাক্স আইন ছিল। ১৯৮৪ সালে এটাকে অধ্যাদেশ করা হয়। ওই অধ্যাদেশের আলোকেই ইনকাম ট্যাক্স সংক্রান্ত বিষয়গুলো চলছিল।

সামরিক শাসনামলে প্রণীত আইন ও অধ্যাদেশের মধ্যে যেগুলোর প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলোকে নতুন করে বাংলায় রূপান্তর করে আইনে পরিণত করতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা রয়েছে। এজন্য আগের আইনকে নতুন করে করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

মাহবুব হোসেন বলেন, আগের আইনটিকে সহজবোধ্য করে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংযোগ-বিয়োজন করা হচ্ছে। বিশেষ করে যেখানে জটিলতা বেশি ও অস্পষ্টতা ছিল সেগুলো বাতিল করা হয়েছে। আমাদের ট্যাক্স কর্মকর্তাদের যে অবাধ ডিসক্রিয়েশনি পাওয়ার ছিল তা সীমিত করা হয়েছে। রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে যেসমস্ত কাগজপত্র দরকার হবে, বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে সেগুলো সহজতর করা হয়েছে।

‘বিদ্যমান আইনে কেবলমাত্র উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত ২৯টি রিটার্ন ও বিবরণী দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে সেটি ১২টি করা হয়েছে। ডিসক্রিয়েশনি পাওয়ারের বিষয়ে ২০টি ক্ষেত্রে আগে অফিসারের নিজের ক্ষমতাবলে তিনি যেটা যৌক্তিক মনে করতেন সেভাবে হতো। এখন সেটা গাণিতিক ফর্মুলা দেয়া হয়েছে। ওই ফর্মুলায় যে রেজাল্ট আসবে সেটাই হবে তার জন্য নির্ধারিত ট্যাক্স। অফিসার ইচ্ছা করলেই বাড়াতে বা কমাতে পারবেন না। আমরা এখন আইসিটি নির্ভর হতে যাচ্ছি ইনকাম ট্যাক্স পদ্ধতিতে, সেটাকে প্রাতিষ্ঠানিককরণের চেষ্টা করা হয়েছে।’

মাহবুব হোসেন বলেন, আয়কর কর্মকর্তা ইচ্ছা অনুযায়ী ট্যাক্স নির্ধারণ করে দেয়ায় আপিলের সংখ্যা বেড়ে যেত। নতুন আইনে এটাকে আয়কর কর্মকর্তার সাবজেক্টিভ জাজমেন্টের উপর নয় বরং একটা ফর্মুলা দিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে কেউ অবজেক্টিভ ইনফরমেশনগুলো দেবেন, ফর্মুলা ক্যালকুলেট করে দেবে। এতে হয়রানির সুযোগ কমে যাবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আয়কর সংক্রন্ত পুরো প্রক্রিয়াকে যাতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে তুলনা করা যায়, খসড়া আইনে সেদিকে নজর দেয়া হয়েছে বলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ জানিয়েছে। ট্যাক্সের বেজটা যাতে সম্প্রসারণ হয়, নতুন আইনে সেই সুযোগ তৈরি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা। নতুন আইন পাস হলে অনলাইনে আয়কর দেয়া আরও সহজ হবে। অনলাইনে এখন যেভাবে আয়কর দেয়া হয়, যেভাবে প্রশ্নগুলো আসে সেগুলো অনেক সহজ করা হবে।