আপডেট : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৯:৫৯
৬ আসনে কম ভোটের কারণ জানাল ইসি
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

৬ আসনে কম ভোটের কারণ জানাল ইসি

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা। ছবি: দৈনিক বাংলা

বিএনপির ছেড়ে দেয়া ৬ আসনের উপ-নির্বাচনে কম ভোট পড়ার তিন কারণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা মনে করছেন, বগুড়া বিএনপির ঘাঁটি, কিন্তু বিএনপি ভোটে আসেনি। উপ-নির্বাচনে ভোট একটু কম কাস্ট হয়। আবার এই ভোটে সংসদ সদস্যদের মেয়াদকাল কম হওয়ায় ভোটাররা আগ্রহ পাননি।

বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

গত বুধবার ঠাকুরগাঁও-৩, বগুড়া-৪ বগুড়া-৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ উপনির্বাচনের ভোট হয়। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। নির্বাচন কমিশনের দাবি শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু ভোট হয়েছে।

এদিকে অনিয়মের কারণে দুইবার উপ-নির্বাচন হওয়া গাইবান্ধায়–৫ এ যে ভোট পড়েছে তার চেয়ে প্রায় ১০ শতাংশ কম ভোট পড়েছে গত বুধবার ভোট হয়ে যাওয়া ৬ আসনে। গাইবান্ধা– ৫ আসনের উপ- নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে এই ৬ আসনে গড় ভোট পড়েছে ২৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ। তবে কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময়কালে সংসদীয় আসনে ভোট করা ফরিদপুরে– ২ আসনে ভোট পড়েছে ২৬ দশমিক ২৭ শতাংশ। এই কমিশনের করা কোনো সংসদীয় আসনে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনে। মাত্র ১৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ঠাকুরগাঁও– ৩ আসনে ৪৬ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া বগুড়া– ৪ আসনে ভোট পড়েছে ২৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। বগুড়া– ৬ আসনে ২২ দশমিক ৩৪ শতাংশ। চাঁপানবাবগঞ্জ-২ আসনে ভোট পড়েছে ৩৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ। চাঁপানবাবগঞ্জ-৩ আসনে ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

ভোটার উপস্থিতি কম হওয়ার পিছনে ইসির কোনো পর্যবেক্ষণ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘ঠাকুরগাঁওয়ে ভোটার উপস্থিতি ভালো। চাপাইনবাবগঞ্জে যেটা সেটাও ভালো। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একটু কম। বগুড়ায় কম।’

বগুড়ার প্রসঙ্গ টেনে এই কমিশনার বলেন, ‘বগুড়া বিএনপির দুর্গ এটা সবাই জানেন। ওখানে বেশিরভাগ ভোটার বিএনপির। বিএনপি যেহেতু নির্বাচনে আসে নাই। সঙ্গত কারণে কিন্তু ওখানে বিএনপির ভোটাররা আসে নাই। এ কারণে ভোটার ওখানে কমে গেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একই ব্যাপার। বিএনপি যেহেতু আসে নাই। ওখানেও তাদের সমর্থন আছে। সেই সমর্থকগুলো ভোট দিতে আসে নাই।’

উপ-নির্বাচনে ভোট কাস্টিং কম হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটু কমই হয়।’ কম হওয়ার আরেকটি কারণ তুলে তিনি বলেন,‘সংসদ সদস্যদের মেয়াদকাল খুব কম ধরেন ৮-৯ মাস। এই অল্প সময়ের জন্য আসলে ভোটাররা ইন্টারেস্টবোধ করে না।’- ভোটের এই উপিস্থিতি নিয়ে নির্বাচন কমিশন সন্তুষ্ট বলে মনে করেন এই কমিশনার।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিখোঁজ হওয়া প্রার্থী সম্পর্কে জানতে চাইলে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘নিখোঁজ হওয়ার এই ঘটনাকে ইলেকশন ম্যাকানিজম হিসেবে দেখছেন এই কমিশনার। তিনি বলেন,‘ যারা ম্যাকানিজম কেরে তারা কিনউত আমাদের সাথে আলোচনা করে না এই পদ্ধতিতে আমরা আগাচ্ছি। এটা আসলে কৌশল।’

জাতীয় নির্বাচনে যদি একিই কৌশল হয় তখন ইসির ভূমিকা কি হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘কৌশল দেখা ইলেকশন কমিশনের কাজ না। এটা সম্ভব ৩৯ দল কি ম্যাকানিজম করছে এটা কমিশন খুঁজে খুঁজে বের করবে। এটা সম্ভব। আদোও সম্ভব না। এটা যার যার রাজনৈতিক কৌশল।’

সিসি ক্যামের না থাকায় ভোট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে কি না জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন,‘ সরাসরি যে জিনিসটা দেখতে পাচ্ছি সেটা যে ধরনের আর যেটা মাধ্যম হয়ে আসছে সেটা যে ধরনের সে অসুবিধা তো থাকবেই। কিছুটা তো থাকবেই। সিসি ক্যামেরা থাকলে ভালো অবশ্যই তো ভালো হয়। এটা আমরা চোখ দিয়ে দেখতে পারছি।’

সিসি ক্যামেরা থাকলে নির্বাচন আরও স্বচ্ছ হতো বলে মনে করেন এই কমিশনার। তিনি বলেন ,‘ তাই যদি না হয়। তাহলে সব মহল থেকে আমাদের কেন জানালো হলো সিসি ক্যামেরা করেন। আমি মনে করি সিসি ক্যামেরা থাকলে আরও বেশি স্বচ্ছতার সাথে কাজ করতে পারবো। এটা বলতে কো দ্বিধা নাই।’