আপডেট : ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:১৩
বেসামাল মিয়ানমারের প্রভাব পড়ছে সীমান্তে

বেসামাল মিয়ানমারের প্রভাব পড়ছে সীমান্তে

অধ্যাপক ড. দেলোয়ার। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সীমান্তে গোলা ছোড়ার ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তৃতীয়বারের মতো তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। তবে আমার মনে হয়, স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় তলব করার পাশাপাশি আমাদের পক্ষ থেকে সে দেশের সরকারকে আরও একটু চাপ দেয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে সাবধানতাও অবলম্বন করতে হবে।

সার্বিক বিষয়ে আমার যেটা মনে হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ নতুন নয়। তারা যে শুধু বাংলাদেশকে উদ্দেশ করে মর্টার শেল বা গুলি ছুড়েছে বিষয়টি কিন্তু তা নয়। মিয়ানমার এর আগে চীন ও থাইল্যান্ডের সঙ্গেও এ ধরনের আচরণ করেছে। মূলত আরাকান আর্মির সঙ্গে তাদের যে সামরিক সংঘর্ষ চলছে, তার ফলেই সীমান্তে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে আমি মনে করি।

কিন্তু সে দেশের সরকারি বাহিনীর উচিত ছিল এসব ক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা। আমাদের আকাশসীমা বা স্থলসীমায় ঢুকে না পড়তে সীমান্তে তাদের আরও সংযত আচরণ করা দরকার।

তা ছাড়া আমার যেটা মনে হয়, বাংলাদেশ এ বিষয়গুলো কূটনৈতিকভাবে যেভাবে মোকাবিলা করছে মিয়ানমারও সেভাবেই করছে। সেটা ওই পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের এটাও মাথায় রাখা উচিত যে, মিয়ানমারের ৫৫ বছরের সাময়িক শাসনের ইতিহাস রয়েছে। তাদের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থাও বেশ টালমাটাল। একসময় যারা শাসন করতেন তাদের কেউ কেউ এখন জেলও খাটছেন। এ রকম একটা শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আমাদের ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

আর আরেকটি বিষয় হলো, অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফরের সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র আছে কি না? কিন্তু আমার পরিষ্কার মত, এটার সঙ্গে সীমান্তে গুলি আসার কোনো সম্পর্ক নেই। আমি মনে করি, তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবই সীমান্তে দেখা যাচ্ছে। সেটার কারণে অসচেতনতাবশত গুলি আসছে।

আরেকটি বিষয় হলো, ইচ্ছাকৃতভাবে মিয়ানমারের সরাসরি আমাদের আক্রমণ করার সাহস আছে বলেও আমার মনে হয় না।

[লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) সদস্য]