যানজট নিরসনে ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা মহানগরী একটি ভিন্ন রেল যোগাযোগের সাক্ষী হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, রেল খাতে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নব-দিগন্তের সূচনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩টি প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ৬৯ দশমিক ২০ কিলোমিটার রেলপথে রূপপুর (ঈশ্বরদী), শশীদল (কুমিল্লা) এবং জয়দেবপুর (গাজীপুর) স্টেশন থেকে যুগপৎভাবে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর, শশীদল ও জয়দেবপুরে একযোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইনশাল্লাহ ২০৩০ সালের মধ্যে এই ঢাকা শহরেই রেল যোগাযোগের একটা আলাদা পরিবেশ তৈরি হবে। এতে মানুষের যোগাযোগ, যাতায়াত এবং আমাদের তেলের খরচ-অনেক কিছুই বাঁচবে। ঢাকা শহর যানজটও মুক্ত হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।’
‘ইতোমধ্যে আমরা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছি- যেটা পরবর্তীতে উত্তরা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে আমরা পাতালেও যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এমআরটি লাইন-১-এর অধীনে পাতাল রেলের নির্মাণ কাজেরও শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘রেল খাতে সব প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশীয় এবং আন্তঃদেশীয় রেল যোগাযোগ ব্যবস্থায় নব-দিগন্তের সূচনা হবে এবং রেল পরিসেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে।’
১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যেসব রেল-লিংক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকার সেগুলো একে একে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি-১) এর অর্থায়নে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (ডিটিজেডিএলপি) শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে। এই প্রকল্পের আওতায় টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ১১ দশমিক ০৯ কিলোমিটার রুটে ডাবল লাইন নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই সেকশনে ডাবল লাইনে ট্রেন চালু করা হলে ধীরাশ্রম স্টেশনে ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। ফলে সব ট্রেনের যাত্রায় সময় বাঁচবে এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা কমবে।’
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ার কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, রেলের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও ’৭৫ পরবর্তী সময়ে অন্য সরকারগুলো রেল নিয়ে নানা খেলা খেলেছে। রেল লাভজনক নয় অজুহাত তুলে এটিকেও বন্ধ করে দেয়ার প্রচেষ্টাও চালানো হয়।
তবে সেই অবস্থা থেকে রেলকে টেনে তুলে আওয়ামী লীগ সরকার এই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রেলপথ সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির স্বাগত বক্তব্য রাখেন। আরও বক্তব্য রাখেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ। অনুষ্ঠানে রেলের তিনটি প্রকল্পের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা