আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১১:২৩
ভেঙে পড়ে রয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভ
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট 

ভেঙে পড়ে রয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভ

ভেঙে পড়ে রয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভটি। সম্প্রতি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায়। ছবি: দৈনিক বাংলা

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদ মিনারে। অথচ অযত্ন-অবহেলায় ভেঙে পড়ে রয়েছে ভাষাশহীদদের স্মরণে নির্মিত জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর এলাকায় অবস্থিত একমাত্র শহীদ মিনারের স্মৃতিস্তম্ভটি।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারি আসতে আর মাত্র ১৫ দিন বাকি। এ সময়ের মধ্যে নতুন করে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি জানিয়েছে উপজেলার বিভিন্ন সচেতন মহল।

জানা গেছে, আক্কেলপুর রেল স্টেশনের উত্তর পাশে শহীদ মিনার স্থাপিত হয় ২০১১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু। আর এ শহীদ মিনার ২০১১ সালের ১ জুলাই উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন।

সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার একমাত্র শহীদ মিনারের স্তম্ভটি ভেঙে পড়ে রয়েছে। মিনারটির পাশে বাঁশে দড়ি বেঁধে শুকানো হচ্ছে কাপড়। কাপড় শুকানোর কাজে বাদ পড়েনি শহীদ মিনার ঘিরে রাখা দেয়ালটিও। প্রবেশপথে দেখা গেছে শুকাতে দেয়া আছে গোবরের লাকড়ি (জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত)। দেয়ালের সঙ্গে রাখা আছে পায়খানার ভাঙা স্লাব। বিবর্ণ হয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভ ও দেয়ালের রং। আবার স্তম্ভটি ভাঙার পর দেখা গেছে ভেতরের গাঁথুনি মাটির মিশ্রণ দিয়ে করা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাসখানেক আগে ভেঙে গেছে শহীদ মিনারের স্মৃতিস্তম্ভটি। বছরের অন্য সময় শহীদ মিনারটি অযত্নে অরক্ষিত অবস্থায় থাকলেও প্রতিবছর শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে পরিপাটি করা হয়। বাচ্চারা ভেতরে খেলাধুলা করে। খেলার সময় বেখেয়ালে হয়তো এটি ভেঙে গেছে।

আক্কেলপুর পৌর শহরের শান্তা মহল্লার বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, ‘সদিচ্ছা ও অবহেলার কারণে শহীদ মিনারের এ অবস্থা। শহীদ মিনারের বিষয়ে স্থায়ী একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সবার নজরদারি রাখা প্রয়োজন।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ বলেন, ‘এ শহীদ মিনারের বিষয়ে একাধিকবার উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য উপজেলায় একটি উন্নত শহীদ মিনার তৈরি করা উচিত।’

আক্কেলপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু বলেন, ‘উপজেলার একমাত্র কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন এবং ভালো মানের একটি শহীদ মিনার তৈরি করা উচিত। পাশাপাশি শহীদ মিনারের যথাযথ তদারকি করা প্রয়োজন।’

আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুল আলম চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এ শহীদ মিনার সংস্কার করে এ বছর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করা হবে। আগামী বছর নতুন করে শহীদ মিনার স্থাপনে জেলা পরিষদে দরপত্র আহ্বানের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। দরপত্র অনুমোদন পেলে নতুন শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।’

আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘দ্রুত শহীদ মিনারের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।’