আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ২৩:০২
চবিতে সাংবাদিক হেনস্তায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চবিতে সাংবাদিক হেনস্তায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বহিষ্কার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলামকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। রোববার বিকেলে সংগঠনটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জানানো যাচ্ছে যে, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলাপরিপন্থী, অপরাধমূলক এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলামসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জনকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হলো।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে শিক্ষাক্ষেত্রে যে জাগরণ ও অভূতপূর্ব অগ্রগতি, সেটিকে কোনোভাবে বানচাল করার বা ভূলুণ্ঠিত করার সুযোগ নেই। যদি কেউ কোনোভাবে চেষ্টা করে, অবশ্যই তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে, যেমনটি আমরা এ ঘটনায় করেছি।’

এর আগে রোববার সকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিকদের হেনস্তা ও হুমকির ঘটনায় জড়িতদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিচার নিশ্চিতের আলটিমেটাম দেয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)। এক যৌথ বিবৃতিতে চবিসাসের সভাপতি মাহবুব এ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু এ ঘটনার বিচার দাবিতে এ সময় বেঁধে দেন। একই সঙ্গে মুক্ত গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালনে যাবতীয় প্রতিবন্ধকতা রুখতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান তারা।

একই সময়ে সাংবাদিক হেনস্তার বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে প্রক্টরের কার্যালয়ে গিয়ে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়া ও হামলার অভিযোগ ওঠে শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ ভিএক্স (ভার্সিটি এক্সপ্রেস) ও বিএমের (বাংলার মুখ) কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই দিন পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দৈনিক সমকালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মারজান আকতার, আরটিভির ফটো সাংবাদিক এমরাউল কায়েস মিঠুসহ বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের হাতে হেনস্তার শিকার হন। আন্দোলনে বাধা দেয়ার ঘটনা ভিডিও চিত্রে ধারণ করার সময় ছাত্রলীগের কর্মীরা মারজান আক্তারের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দেয় চবিসাস। পরে এ ঘটনায় গত শনিবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- ভিএক্স গ্রুপের অনুসারী ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মারুফ ইসলাম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী তৌহিদুল হক ফাহাদ, একই সেশনের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শহীদুর রহমান স্বপন, ইতিহাস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমানসহ আরও ১০-১৫ জন।