ভারতে চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের দ্বিতীয় দিনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সফরসূচি অনুযায়ী মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ৩৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে) এ বৈঠক শুরু হয়।
দুই প্রধানমন্ত্রীর দুই দফায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করার কথা রয়েছে। এর মধ্যে বৈঠকে একান্ত কথা বলবেন দুই দেশের সরকারপ্রধান। এ ছাড়া দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে প্রতিনিধি পর্যায়েও আলোচনা হবে।
বহুল আকাঙ্ক্ষিত এ বৈঠকে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সহায়তা, নিত্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ, আরোপিত বাণিজ্যিক বাধা অপসারণ, আঞ্চলিক কানেকটিভিটি, বিবিআইএন কার্যকর, নেপাল ও ভুটানের জন্য বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারের নিশ্চয়তা চাইতে পারে বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। পাশাপাশি বাংলাদেশ পরিবর্তিত বিশ্বে কূটনীতি, ব্যাবসা-বাণিজ্য ও জ্বালানি নিরাপত্তা ও রোহিঙ্গাদের ফেরাতে ভারতের জোর সহায়তা চাইতে পারে বলেও জানিয়েছে সূত্রগুলো।
বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে পানিসহ সব অমীমাংসিত সমস্যা সমাধান নিয়েও। তার আগেই ভারতকে ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার রাতে এক অনুষ্ঠানে তিনি আর বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক রাজনীতির ঊর্ধ্বে।
এর আগে, মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে স্বাগত জানান নরেন্দ্র মোদি। দুই প্রধানমন্ত্রী এ সময় কর্মরদন করেন। পরে সেখানে গার্ড অব অনার দেয়ার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানানো হয় শেখ হাসিনাকে।
গার্ড অব অনার নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করছে। এতে শুধু ভারত ও বাংলাদেশের মানুষই নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ উন্নত জীবন পেতে পারে। এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য।
রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। আমি যখনই ভারতে আসি, এটি আমার জন্য খুবই আনন্দের। বিশেষ করে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের অবদানের কথা আমরা সবসময় স্মরণ করি। আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, আমরা একে অন্যকে সহযোগিতা করছি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আমি আশা করি এটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আমাদের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ। আশা করি, আমরা এগুলো করতে সক্ষম হব। বন্ধুত্বের মাধ্যমে আপনি যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেন। আমরা সবসময় এটা করি।
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার দুপুরে নয়াদিল্লি পৌঁছান। এরপরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। জ্বালানিসহ বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় নানা বিষয়ের পাশাপাশি আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন তারা। পরে দিল্লির নিজামুদ্দিন আউলিয়া দরগাহ পরিদর্শন করেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন-
নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
নয়াদিল্লির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী
আঞ্চলিক সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ দিল্লিতে
ভারত সফর থেকে বাদ পড়লেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে শেখ হাসিনাকে গার্ড অব অনার
বন্ধুত্ব যেকোনো সমস্যার সমাধান আনতে সক্ষম: প্রধানমন্ত্রী
ভারতের সঙ্গে অমিমাংসীত সমস্যার সমাধান আলোচনায়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর, পাহাড়সম বাণিজ্য ঘাটতি কমানো বড় লক্ষ্য
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা