আপডেট : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৭:৫৮
‘ছাত্রলীগের নিপীড়নের প্রতিবাদে’ রাবি অধ্যাপকের প্রতীকী অনশন
রাজশাহী ব্যুরো

‘ছাত্রলীগের নিপীড়নের প্রতিবাদে’ রাবি অধ্যাপকের প্রতীকী অনশন

প্রতীকী অনশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খাঁন। ছবি: দৈনিক বাংলা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নৈরাজ্য ও নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রতীকী অনশন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন খাঁন।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্ত্বরে সকাল ১০টায় অনশনে বসেন তিনি। বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনশন করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ও দখলমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়ে অনশনকালে অধ্যাপক ফরিদ বলেন, ‘দেশজুড়ে ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর একের পর এক যে নিপীড়ন আর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, সেটি রীতিমতো মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটি মেনে নেয়া যায় না। একজন সাধারণ শিক্ষক হিসেবে আমি ব্যথিত, ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন। এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করছি।’

অর্থনীতির এই শিক্ষক বলেন, ‘বর্তমানে হলের বৈধ শিক্ষার্থীদের মাঝরাতে হল থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। তাদের নির্যাতন করা হচ্ছে। আমার কাছে অনেক অভিযোগ আসে। এগুলো দেখে আমার হৃদয়ে নাড়া দেয়। আমাদের শিক্ষার অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা নিপীড়ন ও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়ে প্রশাসনের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মুক্ত চিন্তার বিকাশ ঘটে, কিন্তু একশ্রেণির শিক্ষার্থী দ্বারা সেটা সম্ভব হচ্ছে না। স্বাধীনতার এত বছর পরে এসে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কার্যক্রম চলতে পারে না।’

গত রোববার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে আটকে রেখে কৃষ্ণ রায় নামে এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে হল শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে। সেইসঙ্গে তাকে মেরে ‘শিবির’ বলে চালিয়ে দেয়ারও হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতে হল প্রাধ্যক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী কৃষ্ণ রায় উল্লেখ করেন, ‘‘গত রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের ৭-৮ জন অনুসারী আমার রুমে এসে আমাকে বের হয়ে যেতে হুমকি দেয়। আমি রাজি না হলে আমার বিছানাপত্র ফেলে দিয়ে আরেকজনকে তুলে দেয় তারা। এ সময় সোলাইমান নামে এক ছাত্রলীগ নেতা আমাকে মারধর করে। এরপর আমাকে সাধারণ সম্পাদক নাঈম ইসলামের রুমে নিয়ে মারধর ও মানসিক নির্যাতন করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম বলেন, ‘তোকে মেরে শিবির বলে চালিয়ে দেব।’ কিন্তু আমি হিন্দু জানার পর বলে, ‘এখন তো তোকে মেরে ফেললেও কেউ কিছু করতে পারবে না।’’