নেত্রকোনা উদীচীর কার্যালয়ে বোমা হামলার মামলায় জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য ইউনুছ আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এ রায়ের ফলে দেড় যুগ আগে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বোমা হামলা মামলায় আসামি ইউনুছের চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকল।
আসামি ইউনুছ আলীর করা আপিল খারিজ করে বুধবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। এ রায়ের ফলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রিভিউ ছাড়া আর কোনো আইনগত বাধা রইলো না বলে জানিয়েছেন আইনজীবী।
আদালতে ইউনুছ আলীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
ডিএজি সারওয়ার হোসেন বাপ্পী দৈনিক বাংলাকে বলেন, এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত তিনজন আসামি ছিলেন। তার মধ্যে দুজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এখন ইউনুছ আলীরও মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকল।
সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘বাকি দুই আসামির তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেছেন। তাছাড়া তার আপিল গ্রহণ করার মত কোনো গ্রাউন্ডই ছিল না। যে কারণে আদালত তার আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের সাজা বহাল রেখেছেন।’
২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনায় উদীচী কার্যালয়ে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালত এ ঘটনায় করা মামলায় আসাদুজ্জামান পনির, সালাউদ্দিন সোহেল ও ইউনুছ আলীর ফাঁসির রায় দেন।
তবে এ মামলার অপর আসামি সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাই ও আতাউর রহমান সানির ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় এ দুজনকে অব্যাহতি দেয়া হয়। পরে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিলের শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ৩১ জানুয়ারি হাইকোর্ট বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
এর মধ্যে শুনানি শেষে ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ আসাদুজ্জামান পনিরের আপিল খারিজ করে দিয়ে ফাঁসি বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পরে এ রায় রিভিউ করেন পনির। সেটিও ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর খারিজ হয়ে যায়। পরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ২০২১ সালের ১৫ জুলাই গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। পনির ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার কানাইকরস্থানের ফজলুল হক চৌধুরীর ছেলে। আর আসামি সালাউদ্দিন সোহেলকে আরেকটি মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা