পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ- ভারতীয়দের সমর্থন পাওয়ার জন্য এটুকুই যথেষ্ট ছিল আফগানিস্তানের। আজ তো এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিল ভারতের স্বার্থও। আজ আফগানিস্তান জিতলে এশিয়া কাপে টিকে থাকত ভারত। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচটা তখন আর আনুষ্ঠানিকতায় রূপ নিত না।
কিন্তু ভারতের আশা পূরণ হয়নি। ১৭ থেকে ১৯-এই তিন ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল পাকিস্তান।কিন্তু শেষ ওভারে টানা দুই ছক্কায় খাদের কিনার থেকে দলকে উদ্ধার করেছেন নাসিম শাহ। এশিয়া কাপে আজ আফগানিস্তানকে ১ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। আফগানিস্তানের সঙ্গে সঙ্গে তাই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হলো ভারতেরও।
দুই ম্যাচ আগেই তাই ফাইনালের দুই দলের নামও জানা হয়ে গেল। ১১ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি পাকিস্তান।
ম্যাচের ভাগ্য টসের পরই নিশ্চিত হয়ে গেছে। হংকংয়ের দুই ম্যাচ ছাড়া এশিয়া কাপে এবার আগে ব্যাট করা দলটি হেরেছে। আজ টসে জিতে তাই ফিল্ডিং বেছে নেওয়ার আগে দুবার ভাবতে হয়নি পাকিস্তানকে।
ঝোড়ো শুরুতে পাকিস্তানকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজ। চতুর্থ ওভারে দলীয় ৩৬ রানে গুরবাজের বিদায় আফগানদের থমকে দেয়। একটু পর জাজাইও সে পথে হাটেন। পাওয়ার প্লেতে তবু ৪৮ রান পেয়েছে আফগানরা। করিম জানাত ও ইব্রাহিম জাদরান সে রানরেট ধরে রাখতে না পারলেও ভালো ভিত্তি গড়ছিলেন। ১১ ওভার শেষে আফগানিস্তানের রান ছিল ৭৭।
৮ উইকেট হাতে শেষ ৭ ওভারে স্কোরটা ১৬০-এর ওপারেই নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ১৩ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে আফগানিস্তান। ৩৭ বলে ৩৫ রান তোলা ইব্রাহিম রানের গতি বাড়ানোর মুহূর্তে বিদায় নেন। রশিদ ও আজমাতুল্লাহ ওমরজাই ২১ বলে ২৫ রান করলে ১২৯ রান তোলে দলটি।
তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছে উল্টো। দ্বিতীয় বলেই শূন্য হাতে ফিরেছেন ফর্ম হারিয়ে ফেলা বাবর আজম। দলকে ১৮ রানে রেখে ফখর জামানও ফিরেছেন। ফর্মে থাকা রিজওয়ানেই ভরসা ছিল পাকিস্তানের। শারজার উইকেটে ২৬ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে আইসিসির রেটিংয়ের বর্তমান সেরা ব্যাটসম্যানের বিদায়।
নবম ওভারে রিজওয়ান যখন বিদায় নিয়েছেন, পাকিস্তানের রান তখন ৪৫। ৬৮ বলে দরকার তখন ৮৫ রান। ইফতিখার আহমেদ ওয়ানডে ছন্দে এগোচ্ছিলেন, কিন্তু শাদাব খানের ব্যাটে প্রয়োজনীয় রান চলে আসছিল। প্রথম ৩ ওভারে ৫ রান দেওয়া মুজিব উর রহমান ও ১২ রান দেওয়া রশিদ খানকেও ছক্কা মেরেছেন।
তবে রশিদ ছক্কার প্রতিশোধ পরের বলেই নেওয়ায় ২৬ বলে ৩৬ রানে থামেন শাদাব। ২২ বলে তখন দরকার ৩৩। আসিফ আলী নামলেন, প্রথম বলেই রশিদকে আছড়ে ফেললেন গ্যালারিতে। রশিদের স্পেল যখন শেষ, ১৮ বলে ২৫ দরকার তখন পাকিস্তানের।
বাবরকে গোল্ডেন ডাক উপহার দেওয়া ফজল হক ফারুকি দ্বিতীয় স্পেলে এসেই নাটক জমালেন। প্রথম বলেই স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডাব্লিউ ভারত ম্যাচের নায়ক মোহাম্মদ নওয়াজ। ওভারের শেষ বলে ভাঙল খুশদিল শাহর স্টাম্প। মাঝে এল মাত্র ৪ রান।
২ ওভারে দরকার ২১, বল হাতে ফরিদ আহমেদ। দ্বিতীয় বলেই তার বলে স্টাম্পে টানলেন হারিস রুফ, পাকিস্তান হারাল অস্টম উইকেট। ১০ বলে দরকার ২০ রান, নন-স্ট্রাইকে আসিফ আলী। ১ বল পর স্ট্রাইক পেলেন। চতুর্থ বলটি ডিপ মিড উইকেট দিয়ে সীমানার বাইরে। পরের বল ছিল শর্ট বল। মারার উপযুক্ত বল, কিন্তু বলটা স্লোয়ার থাকায় টাইমিংয়ে গড়মিল, তাতে শর্ট ফাইনলেগে ধরা পড়লেন। ৮ বলে ১৬ রানে ফিরলেন আসিফ।
পাকিস্তানের তখন দরকার ১২, আফগানদের দরকার ১ উইকেট। ফারুকির ওভারের প্রথম বলেই লং অফ দিয়ে ছক্কা মারলেন নাসিম। ৫ বলে ৫ দরকার। নাসিমের অত দরকার হয়নি। পরের বলই সেই লং অফ দিয়ে সীমানার বাইরে।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা