যুক্তরাষ্ট্রের মেমফিস শহরে এলোপাতাড়ি গুলিতে চারজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে এজেকেল কেলি নামে ১৯ বছর বয়সী এক তরুণকে আটক করেছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলি করার সময় কেলি তা ফেসবুকে সরাসরি দেখান।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বুধবার সন্ধ্যায় গাড়ি চালনো অবস্থায় এলোপাতাড়ি গুলি শুরু করেন হামলাকারী। ঘটনা সম্পর্কে জানার পরপরই মেমফিস শহর কর্তৃপক্ষ টুইটার বার্তায় বাসিন্দাদের ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করে। গভীর রাতে হামলাকারীকে আটকের পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মেমফিস যুক্তরাষ্ট্রের টেনিসি অঙ্গরাজ্যের একটি শহর। টিআরটি ওয়ার্ড এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় পুলিশ সন্দেহভাজন ব্যক্তির হামলার উদ্দেশ্য সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করেন মেমফিস পুলিশ বিভাগের প্রধান সেরেলিন ডেভিস। সেখানে তিনি হত্যাকাণ্ডের বিশদ টাইমলাইন তুলে ধরেন।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেলির হত্যাযজ্ঞ মূলত শুরু হয় মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে। তখন তিনি লিন্ডেল অ্যাভিনিউয়ের একটি ব্লকে ২৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গুলি করেন। বুধবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ কেলি আবার হত্যাযজ্ঞে নামেন। তখন স্থানীয় পুলিশ বিচ্ছিন্নভাবে দুটি পৃথক স্থানে দুজনকে গুলি করার খবর পায়।
এরপর আনুমানিক সন্ধ্যা ৬ টার দিকে কেলি ফেসবুক লাইভে আসেন। তখন তার লাইভে আরেক ব্যক্তিকে গুলি করতে দেখা যায়। এর পরপরই পুলিশ সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে স্থানীয়দের সতর্ক করে। ফেসবুক লাইভ চলাকালে আরও কয়েকবার গুলির ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার সময় ওয়ালমার্টে কেনাকাটা করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ক্রিস স্মিথ (৪৭)। তখনই তিনি প্রথম জানতে পারেন একজন বন্দুকধারী শহরের চারপাশে গাড়ি চালাচ্ছে।
নিউ ইয়র্ক টাইমসকে ক্রিস স্মিথ বলেন, তিনি ওয়ালমার্টের ভেতর মরতে চাননি। এ জন্য দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে শহরের পপলার অ্যাভিনিউয়ে নিজের বাসায় আসেন। তখন প্রতিবেশী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে থেকে বন্দুকধারীর বর্ণনা শোনেন।
বন্দুকধারী কেলি এর আগেও একাধিক অপরাধমূলক কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আদালতের নথির বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার কেলিকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। তবে তা কোন অপরাধের জন্য তা স্পষ্ট না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালে কেলির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা ও আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ আনা হয়। তখন তার বয়স ছিল ১৭। অভিযোগটি করা হয়েছিল কিশোর আদালতে। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তা পূর্ণাঙ্গ আদালতে স্থানান্তর করা হলে কেলিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
মেমফিসের মেয়র জিম স্ট্রিকল্যান্ড জানিয়েছেন, কেলি মাত্র ১১ মাস কারাভোগের পর গত মার্চে মুক্তি পান। যদি তিনি (কেলি) পূর্ণাঙ্গ সাজা ভোগ করতেন তাহলে হয়তো বুধবারের হত্যাকাণ্ড ঘটতো না।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা