আগামীতে নারী আইনজীবীরা বিচার বিভাগের নেতৃত্ব দেবেন বলে আশা জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, ‘আমার বিশ্বাস এক সময় বিচার বিভাগের নেতৃত্ব দেবেন নারীরা। আমাদের নারীরা অনেক এগিয়ে গেছেন।’
বুধবার সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে দুটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এসব কথা বলেন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের লেখা ‘বঙ্গবন্ধু-রবীন্দ্রনাথ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ’ও তার সহধর্মিনী নাফিসা বানুর লেখা ‘বঙ্গবন্ধু শুদ্ধাচার নারীর ক্ষমতায়ন ও অন্যান্য’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গে এক আলোচনার সূত্র ধরে হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘এক সময় নারীরাই বাংলাদেশের বিচার বিভাগে নেতৃত্বে দেবেন। তিনি বলেন, আমারা যখন জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা নেই। তখন দেখেছি, পুরুষদের চেয়ে আমাদের নারীরা অনেক বেশি পরিশ্রমী। আমাদের নারীরা অনেক এগিয়ে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘জুডিশিয়ারিতে ভাইভাবোর্ডে পুরুষেরা ইনিবিনিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন। কিন্তু নারীরা দেখেছি সুন্দর করে আস্তে আস্তে টু দ্য পয়েন্টে উত্তর দেয়। নারী বিচারকেরা অনেক ভালো করছেন।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ধর্ম নিয়ে আমাদের চরিত্র নিজের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। যখন গুজরাটে দাঙ্গা হয়, মুসলামানরা নির্যাতিত হয়, তখন এদেশের সাম্প্রদায়িক মুসলমানরাও ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলেন। আবার বাংলাদেশে কোন ঘটনা ঘটলে তখন আর আমরা ধর্ম নিরপেক্ষ থাকি না। তখন আমরা সাম্প্রদায়িক।’
অনুষ্ঠানের মূখ্য আলোচক মুনতাসির মামুন বলেছেন এখনো বাংলাদেশের ৩০ ভাগ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে মানে না। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তারা সেই সকল লোক, যারা পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পন করার পরেও বাংলাদেশকে স্বীকার করেনি। তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে স্বাধীনতা বিরুদ্ধে কাজ করছেন।’
বইয়ের বিষয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান যে বই লিখেছেন, তার প্রতিটা লেখার ভেতর তার অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা, মানুষ সম্পর্কে তার অনুভূতি ফুটে উঠেছে। নাফিসা বনুর বইয়েও তার চিন্তা চেতনা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার এক অনন্য সম্মিলন ঘটিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মূখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ নুরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি ও আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এবিএম খায়রুল হক, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, প্রখ্যাত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রওশন আরা বেগম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, জার্নিম্যান প্রকাশনীর প্রকাশক কবি তারিক সুজাত এবং মাওলা ব্রাদার্সের প্রকাশক আহমেদ মাহমুদুল হক।
১৯৮/সি, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮
©দৈনিক বাংলা